Announcement

Collapse
No announcement yet.

শাইখ উসামা বিন লাদেন কি সিআইএ এর এজেন্ট? || মুনশি আব্দুর রহমান

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শাইখ উসামা বিন লাদেন কি সিআইএ এর এজেন্ট? || মুনশি আব্দুর রহমান

    শাইখ উসামা বিন লাদেন কি সিআইএ এর এজেন্ট?
    মুনশি আব্দুর রহমান


    সামাজিক মাধ্যমে আমার একটি পোস্টের কমেন্টে S. M. Ali নামক একজন ভাই প্রশ্ন করেছেন-

    "হযরত, আমার এক বন্ধু তালে//বান কে হক্ব মনে করে, কিন্তু Somehow সে শাইখ তোরাবোরা(রহিমাহুল্লাহ) কে জানি না কেনো বাট CআইA এর Aজেন্ট মনে করে। তাকে আমি কীভাবে বোঝাতে পারি?"


    আসুন, সংক্ষেপে ভাইয়ের এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা কিছু আলোকপাত করি ইনশা আল্লাহ-


    প্রিয় ভাই,
    আপনি তালেবানকে হক্ব মনে করেন এবং সেটি নিঃসন্দেহে আপনার ঈমানি চেতনারই প্রকাশ। তবে আপনি শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহকে সিআইএ- এর এজেন্ট মনে করছেন, যেটি একটি বড় দাবি। এমন একটি দাবি করার আগে আমাদের কিছু প্রশ্নের জবাব এবং প্রমাণ খুঁজতে হবে। আসুন আমরা নিরপেক্ষভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করি:

    ঐতিহাসিক পটভূমি:

    শাইখ উসামা বিন লাদেনের জিহাদ শুরু হয়েছিল সোভিয়েত দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্তান দখল করে। তখন পুরো মুসলিম বিশ্ব থেকে হাজার হাজার মুজাহিদ আফগান ভাইদের সাহায্যে আফগান ভূমিতে আসেন। শাইখ উসামা ব্যক্তিগত অর্থ, শ্রম ও জীবন উৎসর্গ করে এই জিহাদে শরিক হন।

    যে সময়ে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে লড়াই চলছিল, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও অনেক আফগান মুজাহিদদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করত। কিন্তু এটি রাষ্ট্র-রাষ্ট্রের বৈশ্বিক রাজনৈতিক খেলা ছিল; শাইখ উসামা আমেরিকার সাহায্য নিয়েছেন- এমন কোন প্রমাণ নেই। তিনি কোনো সময় আমেরিকার সরাসরি মিত্র হিসেবে বা সিআইএ- এর নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন—এমন কোনো দলিলও নেই।

    বরং শাইখ উসামা নিজের অর্থ ও লজিস্টিক দিয়ে মুজাহিদদের সাহায্য করেছেন। সিআইএ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আফগান কমান্ডাররা (যেমন আহমাদ শাহ মাসুদ প্রমুখ) শাইখ উসামার কর্মকাণ্ডকে অনেক সময় সন্দেহের চোখে দেখেছে, কারণ তিনি তাদের কাফির মিত্রদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রাখেননি।

    তালেবান এবং শাইখ উসামার সম্পর্ক:

    তালেবান যখন ক্ষমতায় আসে (১৯৯৬), তখন শাইখ উসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে আশ্রয় নেন। যদি তিনি সিআইএ-এর এজেন্ট হতেন, তাহলে কি তালেবান নেতৃত্ব (যারা পশ্চিমা ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অত্যন্ত সজাগ) তাকে আশ্রয় দিত?

    তালেবান বারবার ঘোষণা করেছে, শাইখ উসামা একজন মেহমান এবং তিনি ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমনদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন। শাইখ মোল্লা উমর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনো তালেবান নেতা কখনো শাইখ উসামার বিরুদ্ধে সন্দেহ বা সিআইএ-এর এজেন্ট হওয়ার ইঙ্গিতও দেননি।

    ৯/১১ এবং শাইখ উসামার অবস্থান:

    যারা শাইখ উসামাকে সিআইএ -এর এজেন্ট বলেন, তারা প্রায়ই ৯/১১ তথা মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে হামলার ঘটনাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখান। অথচ শাইখ উসামা নিজে বিভিন্ন ভিডিওতে এবং বিবৃতিতে স্পষ্ট করে এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছেন। তিনি কোরআন-সুন্নাহর যুক্তি দিয়ে এ ধরনের হামলার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন: আমেরিকা কর্তৃক মুসলিম ভূমি দখল, মুসলমানদের হত্যা, পবিত্র ভূমিগুলোতে কাফির সেনার উপস্থিতি, ইত্যাদি। এটা যদি আমেরিকার ষঢ়যন্ত্রই হতো, তাহলে আমেরিকা নিজ দেশের এমন কোন জায়গায় সাজানো হামলাটি সংঘটিত করতো যেখানে হামলা হওয়াটা তাদের জন্য লজ্জাজনক ব্যর্থতা নয়। পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রই আজো পর্যন্ত আমেরিকার মাটিতে হামলা করতে পারেনি, এ বিষয়টা ছিল আমেরিকার জন্য গর্বের। সেখানে একটি জিহাদী সংগঠনকে মার্কিনীরা নিজেদের প্রতিরক্ষা সদর দফতরে হামলা চালানোর সুযোগ দিয়ে বিশ্বব্যাপী নিজেদেরকে অপমানজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি করবে, নিজেদের অপূরণীয় ক্ষতি নিজেরাই করবে-এমন কথা কল্পনা করাও অস্বাভাবিক।

    যদি তিনি সিআইএ-এর এজেন্ট হতেন, তাহলে নিজের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কীভাবে মার্কিন বাহিনীর নিশানা হতেন? কেন মার্কিন বাহিনী তাকে হত্যা করতে এত খরচ ও চেষ্টা করত?

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিডিয়ার শত্রুতা:

    শাইখ উসামা বিন লাদেনকে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় "শত্রু" হিসেবে ঘোষণা করেছে মার্কিন প্রশাসন। তার মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল কোটি কোটি ডলার। সিআইএ, এফবিআই, এবং পেন্টাগন তার পিছু নিয়েছিল। আপনি কি মনে করেন, একজন সিআইএ এজেন্টকে তারা এভাবে দুনিয়ার সামনে শত্রু হিসেবে তুলে ধরবে, তার পিছনে এইভাবে ১০ বছরেরও বেশি সময় অভিযান চালাবে?

    শাইখ উসামার আদর্শ ও বক্তব্য:

    তার সমস্ত বক্তৃতা, লেখা ও সাক্ষাৎকারগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়: তাওহীদ, জিহাদ, হাকিমিয়াহ, উম্মাহর স্বাধীনতা ইত্যাদি ইসলামের মৌলিক বিষয় ছিল তার দাওয়াতের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি সবসময় ইসলামি উম্মাহকে জাগানোর চেষ্টা করেছেন, পশ্চিমা কাফির শক্তির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন মুসলমানদের মুক্তির জন্য, এমনকি তার পরিবার, ধন-সম্পদ, বিলাসিতা সব কিছু ত্যাগ করেছেন।

    অন্তিম প্রশ্ন:

    যদি তিনি সিআইএ-এর এজেন্ট হতেন, তাহলে:
    - তিনি কীভাবে নিজেকে, পরিবারকে, সহযোদ্ধাদেরকে জিহাদের দুর্গম পথ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে কঠিন দুর্যোগের দিকে ঠেলে দিলেন?
    - তিনি কীভাবে সেই সিআইএ এরই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট হয়ে গেলেন?
    - তালেবান কেন তাঁকে শাহাদাতের মান ও মর্যাদা দিয়েছে? কেন মোল্লা উমর রহিমাহুল্লাহ থেকে শুরু করে অন্যান্য তালেবান মুজাহিদগণ তাঁকে অত্যন্ত সম্মান প্রদর্শন করতেন?

    উপসংহার:

    কোনো প্রমাণ বা বিশ্বাসযোগ্য দলিল ছাড়া একজন সাধারণ থেকে সাধারণ মুসলিমের উপরও উপর এতো বড় অভিযোগ (যেমন CIA এজেন্ট) তোলা ভয়াবহ অন্যায়। সেখানে মুজাহিদদের একজন মহান ইমাম-যিনি আল্লাহর রাস্তায় নিজের জান-মাল সবকিছু লুটিয়ে দিয়েছেন, আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত বরণ করেছেন; তাঁকে কোন ধরনের দলীল প্রমাণ ছাড়াই সিআইএ এজেন্ট বলা কতটা ভয়াবহ!

    মুসলিম ইতিহাস ও জিহাদ নিয়ে যারা গভীরভাবে গবেষণা করেছেন, তারা একমত যে শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ মুসলিম উম্মাহর একজন মুজাহিদ নেতা ছিলেন, যিনি উম্মাহর মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন এবং শাহাদাত বরণ করেছেন।

    আপনার বন্ধুকে কীভাবে বোঝাতে পারেন?

    তাকে বলুন-
    – নিরপেক্ষভাবে প্রমাণ পেশ কর!
    – শাইখের আসল বক্তব্যগুলো পড়তে বা শুনতে হবে (যা পশ্চিমা মিডিয়া কাটছাঁট করেনি)। (১)
    – শাইখ উসামার সম্পর্কে তালেবান ও অন্যান্য হক্বপন্থী মুজাহিদদের বক্তব্য যাচাই করে দেখ!


    তাকে মনে করিয়ে দিন যে, কোনো বড় কথা বলার আগে প্রমাণ থাকা আবশ্যক। যদি প্রমাণ না থাকে, তাহলে এটি বড় জুলুম। আল্লাহর কাছে এর জবাব দিতে হবে আপনাকে।
    *****

    সংশ্লিষ্ট টীকা-
    (১) শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ’র বেশ কিছু রচনার বাংলা অনুবাদ- https://gazwahডটnet/?cat=263 (বাংলা ডট এর বদলে . বসিয়ে দিন!)
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 1 hour ago.
    “ধৈর্যশীল, সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”
    -শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ

  • #2
    আকল আল্লাহ তায়ালার এক বড় নিয়ামত আলহামদুলিল্লাহ
    এই প্রশ্নগুলো এমন লোকদের নিকট থেকেই সাধারণত আসে, যারা আল্লাহ তায়ালার এই আকলের নিয়ামতকে কাজে লাগায় না।

    নয়তো এটা বুঝতে কারো বেগ পাওয়ার কথা না। এমন প্রশ্ন আসারই কথা না।

    এই ধরনের প্রশ্ন যারা করে, তারা এটাও বলে যে- আফগানিস্তান আক্রমণের বাহানা তৈরি করতেই আমেরিকা নিজের উপর ৯/১১ এর এমন ফলস ফ্ল্যাগ এটাক করেছে। তারপর শাইখ উসামা (যিনি কিনা সিআইএ'র এজেন্ট) এই আক্রমণের দায় স্বীকার করে আমেরিকাকে মুসলিম ভূমিগুলোতে আক্রমণের বাহানা দিয়েছে।

    এই ভাইদের কাছে প্রশ্ন
    - ইরাক কে আমেরিকা কেন ধ্বংস করেছে? শুধু শুধু গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে, এটুকু অজুহাতেই তো ইরাকে আক্রমন করলো, সাদ্দাম কে উৎখাত করলো।
    - কিছুদিন আগে ইরান কে কেন আমেরিকা আক্রমণ করলো? যেখানে পারমাণবিক বোমা তারা বানায়ও নাই, এর নাম গন্ধও নাই।

    এই দুইদেশে তো আক্রমণের আগে আল-কায়েদা থাকার অজুহাতও ছিলো না, আমেরিকার নিজ দেশে কোন ফলস ফ্ল্যাগ এটাকেরও দরকার পড়ে নাই।
    ভিয়েতনাম, লাওস, কোরিয়ার মত দেশে আক্রমণ করতে আমেরিকাকে নিজ দেশে কোন ধরনের ফলস ফ্ল্যাগ আক্রমণের দরকার পড়েছিলো?

    মূলত আহলুস সুন্নাহর প্রতি হিংসার কারণে ইরানি শিয়াপন্থি কিছু ব্যক্তি বা মিডিয়া এমন প্রোপাগান্ডা ছড়ায়।
    এদের থেকে সত্যানুসন্ধানি ভাইদের সতর্ক থাকা কাম্য।

    Comment

    Working...
    X