মানহাজ (আল-আজবিবাতুল মুফীদাহ) নিত্য নতুন মানহাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উপকারী জবাব শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
প্রশ্ন : ‘আকীদা ও মানহাজের ইখতিলাফ সত্ত্বেও কি ঐক্য সম্ভব?
উত্তর : মানহাজ ও আকীদাগত দ্বন্দ্ব থাকলে ঐক্য সম্ভব নয়। এর সবচেয়ে বড় বাস্তব প্রমাণ হলো আরব জাতি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত লাভের পূর্বে যুদ্ধরত ছিল। এরপর তারা যখন ইসলামে প্রবেশ করলো এবং তাওহীদের ঝাণ্ডাতলে সমবেত হলো তাদের আকীদা মানহাজ অভিন্ন হয়ে গেল, তাদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হলো এবং তাদের রাষ্ট্র কায়িম হয়ে গেল।
আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে এবিষয়টি উল্লেখ করে বলেন,
{ وَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنْتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِهِ إِخْوَاناً}
আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তার অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেলে। (সূরা আলি ইমরান আয়াত নং ১০৩)
আল্লাহ তা‘আলা নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বলেন,
{ لَوْ أَنْفَقْتَ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعاً مَا أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْ إِنَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ }
যদি তুমি যমীনে যা আছে, তার সবকিছু ব্যয় করতে, তবুও তাদের অন্তরসমূহে প্রতি স্থাপন করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মধ্যে প্রীতিস্থাপন করেছেন, নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান। (সূরা আল-আনফাল আয়াত নং ৬৩)
আল্লাহ তা‘আলা কখনো কাফির-মুরতাদ এবং ভ্রষ্ট ফিরকা সমূহের অনুসারীদের অন্তরে ভালোবাসা সৃষ্টি করেন না।[1]
আল্লাহ তা‘আলা শুধু মুমিন-মুওয়াহহিদ (বিশ্বাসী ও একত্বী) গণের অন্তরেই ভালোবাসা সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা ইসলামী আকীদা মানহাজা বিরোধী কাফির ও মুনাফিকদের ব্যাপারে বলেন,
{ تَحْسَبُهُمْ جَمِيعاً وَقُلُوبُهُمْ شَتَّى ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لا يَعْقِلُونَ }
তুমি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করছ অথচ তাদের অন্তরসমূহ বিচ্ছিন্ন। এটি এজন্য যে তারা নির্বোধ সম্প্রদায়। (সূরা আল হাশর আয়াত নং ১৪)
আল্লাহ তা ‘আলা আরো বলেন,
{ ولايزالون مختلفين إلا من رحم ربك }
কিন্তু তারা পরস্পর মতবিরোধকারী রয়ে গেছে। তবে যাদেরকে তোমার রব দয়া করেছেন। (সূরা হুদ- আয়াত ১১৮)
আল্লাহ যাদের উপর রহম করেছেন তারা হলেন; যারা মতানৈক্য পরিহার করে সহীহ আকীদা ও মানহাজের অনুসরণ করে।
সুতরাং ভ্রষ্ট আকীদা এবং বিরোধী মানহাজসহ ঐক্যের জন্য যারা চেষ্টা করে তারা মূলত অসম্ভব সাধনে মত্ত রয়েছে। কেননা দু’টি বিপরীতমুখী বস্ত্ত একত্রিত করা সম্ভব নয়।
সুতরাং তাওহীদ বা একত্ববাদের কালিমা ছাড়া ঐক্য ও আত্মিক মিল সম্ভব নয়।[2] তাওহীদের প্রকৃত অর্থ জানা, এর দাবি অনুযায়ী প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সর্বপ্রকার আমল যথারীতি পালন করার দ্বারাই কেবল সে ইপ্সিত ঐক্য সাধিত হতে পারে; কেবল মৌখিক বুলি আওড়িয়ে এর দাবির উল্টা আমল করার দ্বারা নয়।
[1]. বর্তমানের বিভিন্ন দল ও ফিরকার আবস্থাও একইরূপ তারা বইপত্র মতবাদ এবং সবদিক থেকে ভিন্ন। মূলতঃ আকীদা গত মিল থাকলেই আন্তরিক ভালোবাসা প্রতিষ্ঠিত হয়, এছাড়া সম্ভব নয়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘রুহ সমূহ অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত সৈন্যের ন্যায় যদি পরস্পর পরিচিতি লাভ করে তাহলে আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। আর যদি অপরিচিত হয় তাহলে শত্রুতা সৃষ্টি হয় (সহীহ, বুখারী হা/৩১৫৮)।
[2]. বর্তমানে ইখওয়ান এবং সমমনা যে দলগুলো ভ্রষ্ট আকীদা এবং মানহাজগত বিরোধ সহ ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে। তারা তো তাদের দলে রাফিযী, জাহমীয়া, আশ‘আরী, খারিজী, মু‘তাযিলী এমনিভাবে খ্রিষ্টানদেরকেও একত্রিত করে। আপনারা ভুলে যাবেন না।
সম্মানিত পাঠক আপনি পড়েছেন, ইতোপূর্বে এ বইয়ে ইখওয়ানুল মুসলিমীনের কিছু বিদ্বানের মতামত অতিক্রান্ত হয়েছে যে, তারা তাওহীদের পথে আহবান করা এবং শিরক থেকে সতর্ক করাকে গুরুত্ব দেন না। ঠিক একই অবস্থা হলো তাবলীগ জামাত ফিরকার। ইখওয়ানীদের মধ্যে ইখওয়ানী এবং ক্বুত্বুবী ইখওয়ানীদের মাঝে কোন পার্থক্য নাই।
☑ সংগৃহীত
প্রশ্ন : ‘আকীদা ও মানহাজের ইখতিলাফ সত্ত্বেও কি ঐক্য সম্ভব?
উত্তর : মানহাজ ও আকীদাগত দ্বন্দ্ব থাকলে ঐক্য সম্ভব নয়। এর সবচেয়ে বড় বাস্তব প্রমাণ হলো আরব জাতি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত লাভের পূর্বে যুদ্ধরত ছিল। এরপর তারা যখন ইসলামে প্রবেশ করলো এবং তাওহীদের ঝাণ্ডাতলে সমবেত হলো তাদের আকীদা মানহাজ অভিন্ন হয়ে গেল, তাদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হলো এবং তাদের রাষ্ট্র কায়িম হয়ে গেল।
আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে এবিষয়টি উল্লেখ করে বলেন,
{ وَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنْتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِهِ إِخْوَاناً}
আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তার অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেলে। (সূরা আলি ইমরান আয়াত নং ১০৩)
আল্লাহ তা‘আলা নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বলেন,
{ لَوْ أَنْفَقْتَ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعاً مَا أَلَّفْتَ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ أَلَّفَ بَيْنَهُمْ إِنَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ }
যদি তুমি যমীনে যা আছে, তার সবকিছু ব্যয় করতে, তবুও তাদের অন্তরসমূহে প্রতি স্থাপন করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মধ্যে প্রীতিস্থাপন করেছেন, নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান। (সূরা আল-আনফাল আয়াত নং ৬৩)
আল্লাহ তা‘আলা কখনো কাফির-মুরতাদ এবং ভ্রষ্ট ফিরকা সমূহের অনুসারীদের অন্তরে ভালোবাসা সৃষ্টি করেন না।[1]
আল্লাহ তা‘আলা শুধু মুমিন-মুওয়াহহিদ (বিশ্বাসী ও একত্বী) গণের অন্তরেই ভালোবাসা সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা ইসলামী আকীদা মানহাজা বিরোধী কাফির ও মুনাফিকদের ব্যাপারে বলেন,
{ تَحْسَبُهُمْ جَمِيعاً وَقُلُوبُهُمْ شَتَّى ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لا يَعْقِلُونَ }
তুমি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করছ অথচ তাদের অন্তরসমূহ বিচ্ছিন্ন। এটি এজন্য যে তারা নির্বোধ সম্প্রদায়। (সূরা আল হাশর আয়াত নং ১৪)
আল্লাহ তা ‘আলা আরো বলেন,
{ ولايزالون مختلفين إلا من رحم ربك }
কিন্তু তারা পরস্পর মতবিরোধকারী রয়ে গেছে। তবে যাদেরকে তোমার রব দয়া করেছেন। (সূরা হুদ- আয়াত ১১৮)
আল্লাহ যাদের উপর রহম করেছেন তারা হলেন; যারা মতানৈক্য পরিহার করে সহীহ আকীদা ও মানহাজের অনুসরণ করে।
সুতরাং ভ্রষ্ট আকীদা এবং বিরোধী মানহাজসহ ঐক্যের জন্য যারা চেষ্টা করে তারা মূলত অসম্ভব সাধনে মত্ত রয়েছে। কেননা দু’টি বিপরীতমুখী বস্ত্ত একত্রিত করা সম্ভব নয়।
সুতরাং তাওহীদ বা একত্ববাদের কালিমা ছাড়া ঐক্য ও আত্মিক মিল সম্ভব নয়।[2] তাওহীদের প্রকৃত অর্থ জানা, এর দাবি অনুযায়ী প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সর্বপ্রকার আমল যথারীতি পালন করার দ্বারাই কেবল সে ইপ্সিত ঐক্য সাধিত হতে পারে; কেবল মৌখিক বুলি আওড়িয়ে এর দাবির উল্টা আমল করার দ্বারা নয়।
[1]. বর্তমানের বিভিন্ন দল ও ফিরকার আবস্থাও একইরূপ তারা বইপত্র মতবাদ এবং সবদিক থেকে ভিন্ন। মূলতঃ আকীদা গত মিল থাকলেই আন্তরিক ভালোবাসা প্রতিষ্ঠিত হয়, এছাড়া সম্ভব নয়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘রুহ সমূহ অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত সৈন্যের ন্যায় যদি পরস্পর পরিচিতি লাভ করে তাহলে আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। আর যদি অপরিচিত হয় তাহলে শত্রুতা সৃষ্টি হয় (সহীহ, বুখারী হা/৩১৫৮)।
[2]. বর্তমানে ইখওয়ান এবং সমমনা যে দলগুলো ভ্রষ্ট আকীদা এবং মানহাজগত বিরোধ সহ ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে। তারা তো তাদের দলে রাফিযী, জাহমীয়া, আশ‘আরী, খারিজী, মু‘তাযিলী এমনিভাবে খ্রিষ্টানদেরকেও একত্রিত করে। আপনারা ভুলে যাবেন না।
সম্মানিত পাঠক আপনি পড়েছেন, ইতোপূর্বে এ বইয়ে ইখওয়ানুল মুসলিমীনের কিছু বিদ্বানের মতামত অতিক্রান্ত হয়েছে যে, তারা তাওহীদের পথে আহবান করা এবং শিরক থেকে সতর্ক করাকে গুরুত্ব দেন না। ঠিক একই অবস্থা হলো তাবলীগ জামাত ফিরকার। ইখওয়ানীদের মধ্যে ইখওয়ানী এবং ক্বুত্বুবী ইখওয়ানীদের মাঝে কোন পার্থক্য নাই।
☑ সংগৃহীত
Comment