আমরা দেখতে পাই, অনেক নেককার লোকেরাও বিপ্লব এবং সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের ক্ষেত্রে সুফিবাদী মানহাজ দ্বারা প্রভাবিত।
.
তারা বলে থাকে, আগে আপনার অন্তরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করুন তাহলে এমনিতেই জমিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে। এ কথাটি বর্তমানে কিছু ইসলামী দল এবং সংগঠনেরও স্লোগানে পরিণত হয়েছে।
.
অনুরূপ তারা এর আড়ালে আত্নশুদ্ধি আর তারবিয়ার কথা বলে উম্মাহকে স্থবিরতার মায়াজালে আটকে রাখে। অথচ বাস্তবতার দাবীনুযায়ী প্রকৃত তারবিয়াহ হলো, এ জাতীয় স্লোগানের অনুসরণ থেকে বেঁচে থাকা।
এমন আহবানে সাড়া দিয়ে খানকা, বিভিন্ন মসজিদ আর শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কমপ্লেক্সে সময়ে সময়ে পরিদর্শন আর নিরাপদ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে কল্পরাজ্যের স্বপ্ন দেখা, মূলত নফসকে ক্যান্সারক্রান্ত করারই নামান্তর।
.
এমন দা'য়ী, উলামা বা দলেরা আসলে আত্মশুদ্ধি ও তরবিয়তের বিকৃত সাধনকারী।
আফসোসের সাথে বলতে হয়, তাদের মাঝে নিজেদের সালাফি-দেওবন্দি দাবীদার আলেম-দা'য়ী বা জামাতের অন্তর্গতদেরও সন্নিবেশ ঘটেছে।
.
অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা আলা বলেন,
سُنَّۃَ مَنۡ قَدۡ اَرۡسَلۡنَا قَبۡلَکَ مِنۡ رُّسُلِنَا وَ لَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحۡوِیۡلًا
“আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেনা।”
(সূরা ইসরা, ১৭ঃ৭৭)
.
দুনিয়াবি সকল কিছুতেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কর্তৃক নির্ধারিত রীতিনীতি (Universal Law) বিদ্যমান, যা চিরন্তন ও সুসাব্যস্ত।
.
আসবাবের জগতে আল্লাহ তা আলার রয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, যা মহান সত্তার প্রজ্ঞাপূর্ণ নিযামের অন্তর্ভুক্ত। যেমন- পানি ১০০ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করে এবং কখনই তা ৮০ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করবে না। আল্লাহ তা আলার তাওফিকের কথা ভিন্ন। সেবিষয়ে আলোচনা অন্যত্র হতে পারে।
.
একইভাবে রাস্ট্র, শাসনকর্তৃত্ব বা নের্তৃত্ব ইত্যাদিও জাগতিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। যেমন খাবার-পানীয়-পোশাক ইত্যাদিও জাগতিক বিষয়। এসব ক্ষেত্রে আসবাব গ্রহণ ও ইসলামী শরীয়ার অনুগমন করা আমাদের দায়িত্ব।
.
রাষ্ট্র একটি জাগতিক বিষয়। দ্বীন বা মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের প্রকৃতি নির্ধারিত হয়। একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকে ইসলামী মূল্যবোধের উপর, কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকে কমিউনিজমের উপর কিংবা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর।
.
একটি রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য উপাদান ৩টি, অর্থাৎ ভূমি, জনগণ ও কাঠামো প্রয়োজন।
.
ইসলামী রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই হোক অথবা বাথিস্ট রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই হোক, এই মৌলিক উপাদানাবলীর অস্তিত্ব জরুরী। যে কারণে রেড ইন্ডিয়ানদের ভূমি ও জনগণ থাকা সত্তেও রাষ্ট্রীয় পরিচালনা কাঠামো না থাকায় তারা পরাধীন। আবার ফিলিস্তিনের জনগণ ও সরকার কাঠামো থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব না,*যেহেতু তাদের ভূমি নেই।
.
যেমনিভাবে, রাষ্ট্র একটি জাগতিক বিষয়, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উপায় উপকরণাদিও তদ্রূপ জাগতিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত।
.
.
ইরজায়ী আকিদার প্রভাবাবিস্ট বাতেনিদের সুরে সুর মেলানো শুধু অন্তরের শক্তি দিয়ে শরিয়াহ প্রতিষ্ঠার আহবান জানানো এসকল জামাত বা উলামা ও দাঈদের উপলব্ধি হওয়া প্রয়োজনঃ-
ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা নিশ্চয়ই শারীরিক পরিশ্রমের কাজ, শুধু অন্তরের কাজ নয়।
.
যদি, সুধারণাবশতঃ এই ভ্রষ্ট বিদআতি উক্তি অনুযায়ী ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েও যায়, তারপরও কি বাস্তবিকপক্ষে আমরা এই রাস্ট্রকে পরিচালনা করতে কখনো সক্ষম হব?
কখনই না। কারণ এর কোনো প্রস্তুতিই আমাদের ছিল না।
.
একটি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কঠিন শারিরীক ও মানসিক পরিশ্রমের প্রয়োজন। রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনার জন্য সুপরিকল্পিত ও দীর্ঘ প্রস্তুতির প্রয়োজন। এর কোনটি না করেই কীভাবে আপনি আপনার অন্তরে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবেন!!
.
তারা আরো বলে থাকে, 'আপনি আপনার অন্তরে দৃঢ়সংকল্পের মাধ্যমে একটি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা করুন, তারপর দেখবেন বাস্তবে একটি রাস্ট্র কাঠামো দাড়িয়ে গেছে।'
.
আফসোসের বিষয় উম্মাহর বৃহৎ একটি অংশ এই অবাস্তব ও হতভাগ্য দাওয়াতের অনুগামী, অথচ অন্যান্য ক্ষেত্রে তাকলিফ নিতে তারা পিছিয়ে থাকে না। এমন চিন্তা কেউ করে না, 'ক্ষুধা লাগলে বা পোশাকের প্রয়োজন বোধ করলে অন্তরে রেস্টুরেন্ট বা শপিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার করা যেতে পারে।'
অথচ শরিয়তের শাসন প্রতিষ্ঠার মত মহান বিষয়ের ক্ষেত্রে বালখিল্যতার পরিচয় ঠিকই দেয়া হচ্ছে!
.
ওয়াল্লাহি! এটি কখনোই শরয়ী মানহাজ অনুযায়ী একটি সফল আন্দোলনের আহবান হতে পারে না। কারণ এই ভ্রস্ট বিদআতি উক্তিটি আমাদের ভ্রান্ত চিন্তাধারার দিকে যেতে উৎসাহিত করে। সেই ভ্রান্ত বুঝটি হলো, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইসলামী শরিয়ত কায়েম হয়ে যাওয়া সম্ভব।
.
এমন মানসিকতার ব্যাপকতার ফলে উম্মাহর মাঝে নিস্ক্রিয় ও জড় চিন্তাধারার ব্যাপকতা কেবল বৃদ্ধিই পেতে থাকবে।
.
তারা বলে থাকে, আগে আপনার অন্তরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করুন তাহলে এমনিতেই জমিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে। এ কথাটি বর্তমানে কিছু ইসলামী দল এবং সংগঠনেরও স্লোগানে পরিণত হয়েছে।
.
অনুরূপ তারা এর আড়ালে আত্নশুদ্ধি আর তারবিয়ার কথা বলে উম্মাহকে স্থবিরতার মায়াজালে আটকে রাখে। অথচ বাস্তবতার দাবীনুযায়ী প্রকৃত তারবিয়াহ হলো, এ জাতীয় স্লোগানের অনুসরণ থেকে বেঁচে থাকা।
এমন আহবানে সাড়া দিয়ে খানকা, বিভিন্ন মসজিদ আর শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কমপ্লেক্সে সময়ে সময়ে পরিদর্শন আর নিরাপদ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে কল্পরাজ্যের স্বপ্ন দেখা, মূলত নফসকে ক্যান্সারক্রান্ত করারই নামান্তর।
.
এমন দা'য়ী, উলামা বা দলেরা আসলে আত্মশুদ্ধি ও তরবিয়তের বিকৃত সাধনকারী।
আফসোসের সাথে বলতে হয়, তাদের মাঝে নিজেদের সালাফি-দেওবন্দি দাবীদার আলেম-দা'য়ী বা জামাতের অন্তর্গতদেরও সন্নিবেশ ঘটেছে।
.
অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা আলা বলেন,
سُنَّۃَ مَنۡ قَدۡ اَرۡسَلۡنَا قَبۡلَکَ مِنۡ رُّسُلِنَا وَ لَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحۡوِیۡلًا
“আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেনা।”
(সূরা ইসরা, ১৭ঃ৭৭)
.
দুনিয়াবি সকল কিছুতেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কর্তৃক নির্ধারিত রীতিনীতি (Universal Law) বিদ্যমান, যা চিরন্তন ও সুসাব্যস্ত।
.
আসবাবের জগতে আল্লাহ তা আলার রয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, যা মহান সত্তার প্রজ্ঞাপূর্ণ নিযামের অন্তর্ভুক্ত। যেমন- পানি ১০০ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করে এবং কখনই তা ৮০ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করবে না। আল্লাহ তা আলার তাওফিকের কথা ভিন্ন। সেবিষয়ে আলোচনা অন্যত্র হতে পারে।
.
একইভাবে রাস্ট্র, শাসনকর্তৃত্ব বা নের্তৃত্ব ইত্যাদিও জাগতিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। যেমন খাবার-পানীয়-পোশাক ইত্যাদিও জাগতিক বিষয়। এসব ক্ষেত্রে আসবাব গ্রহণ ও ইসলামী শরীয়ার অনুগমন করা আমাদের দায়িত্ব।
.
রাষ্ট্র একটি জাগতিক বিষয়। দ্বীন বা মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের প্রকৃতি নির্ধারিত হয়। একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকে ইসলামী মূল্যবোধের উপর, কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকে কমিউনিজমের উপর কিংবা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর।
.
একটি রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য উপাদান ৩টি, অর্থাৎ ভূমি, জনগণ ও কাঠামো প্রয়োজন।
.
ইসলামী রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই হোক অথবা বাথিস্ট রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই হোক, এই মৌলিক উপাদানাবলীর অস্তিত্ব জরুরী। যে কারণে রেড ইন্ডিয়ানদের ভূমি ও জনগণ থাকা সত্তেও রাষ্ট্রীয় পরিচালনা কাঠামো না থাকায় তারা পরাধীন। আবার ফিলিস্তিনের জনগণ ও সরকার কাঠামো থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব না,*যেহেতু তাদের ভূমি নেই।
.
যেমনিভাবে, রাষ্ট্র একটি জাগতিক বিষয়, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উপায় উপকরণাদিও তদ্রূপ জাগতিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত।
.
.
ইরজায়ী আকিদার প্রভাবাবিস্ট বাতেনিদের সুরে সুর মেলানো শুধু অন্তরের শক্তি দিয়ে শরিয়াহ প্রতিষ্ঠার আহবান জানানো এসকল জামাত বা উলামা ও দাঈদের উপলব্ধি হওয়া প্রয়োজনঃ-
ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা নিশ্চয়ই শারীরিক পরিশ্রমের কাজ, শুধু অন্তরের কাজ নয়।
.
যদি, সুধারণাবশতঃ এই ভ্রষ্ট বিদআতি উক্তি অনুযায়ী ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েও যায়, তারপরও কি বাস্তবিকপক্ষে আমরা এই রাস্ট্রকে পরিচালনা করতে কখনো সক্ষম হব?
কখনই না। কারণ এর কোনো প্রস্তুতিই আমাদের ছিল না।
.
একটি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কঠিন শারিরীক ও মানসিক পরিশ্রমের প্রয়োজন। রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনার জন্য সুপরিকল্পিত ও দীর্ঘ প্রস্তুতির প্রয়োজন। এর কোনটি না করেই কীভাবে আপনি আপনার অন্তরে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবেন!!
.
তারা আরো বলে থাকে, 'আপনি আপনার অন্তরে দৃঢ়সংকল্পের মাধ্যমে একটি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা করুন, তারপর দেখবেন বাস্তবে একটি রাস্ট্র কাঠামো দাড়িয়ে গেছে।'
.
আফসোসের বিষয় উম্মাহর বৃহৎ একটি অংশ এই অবাস্তব ও হতভাগ্য দাওয়াতের অনুগামী, অথচ অন্যান্য ক্ষেত্রে তাকলিফ নিতে তারা পিছিয়ে থাকে না। এমন চিন্তা কেউ করে না, 'ক্ষুধা লাগলে বা পোশাকের প্রয়োজন বোধ করলে অন্তরে রেস্টুরেন্ট বা শপিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার করা যেতে পারে।'
অথচ শরিয়তের শাসন প্রতিষ্ঠার মত মহান বিষয়ের ক্ষেত্রে বালখিল্যতার পরিচয় ঠিকই দেয়া হচ্ছে!
.
ওয়াল্লাহি! এটি কখনোই শরয়ী মানহাজ অনুযায়ী একটি সফল আন্দোলনের আহবান হতে পারে না। কারণ এই ভ্রস্ট বিদআতি উক্তিটি আমাদের ভ্রান্ত চিন্তাধারার দিকে যেতে উৎসাহিত করে। সেই ভ্রান্ত বুঝটি হলো, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইসলামী শরিয়ত কায়েম হয়ে যাওয়া সম্ভব।
.
এমন মানসিকতার ব্যাপকতার ফলে উম্মাহর মাঝে নিস্ক্রিয় ও জড় চিন্তাধারার ব্যাপকতা কেবল বৃদ্ধিই পেতে থাকবে।
Comment