আল-কা/য়ে-দার উত্থান মুসলিম উম্মাহকে কী দিয়েছে?? - চার
ইসলামি খিলাফাহ হারানোর পর সবচেয়ে মারাত্মক যে ক্ষতিটা হয়েছে সেটা হলো, মুসলমানরা নিজেদের সভ্যতা-সংস্কৃতি ও স্বকীয়তাবোধও ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলেছে৷ আত্মপরিচয় ভুলে গেছে। একসময় তারা সিংহের জাতি ছিল এ বাস্তবতাকে কাল্পনিক ভাবতে শুরু করেছে। যুগের পর যুগ কাফেরদের অনুশাসন মেনে চলতে চলতে মুসলমানদের একটা বড় সংখ্যা নামে মুসলমান থাকলেও আদর্শের দিক থেকে ইসলামের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে গেছে অনেক আগেই৷ এই দীর্ঘসময়ে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সর্বনাশ যেটা হয়েছে সেটা হলো মানসিক বিপর্যয়। বিশ্বমঞ্চে কাফেরদের জয়জয়কার দেখে মুসলিমরা দিন দিন ভীত হয়েছে। পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানোর হিম্মত হারিয়েছে। তারা ভেবে নিয়েছে কাফেরদের অধীন থেকে যতটুকু দীন পালন করা যায় ততটুকুই যথেষ্ট। নামায, রোজা, হজ্জ, আর তাদের বেঁধে দেওয়া সীমানার ভেতরে থেকে ব্যক্তিগত পরিসরে দ্বীনের কিছু বিধান পালন করেই তারা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছে। ফলে খিলাফাহ হারানোর প্রায় শত বছর পরেও খিলাফাহ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মপন্থা অবলম্বন করতে পারেনি। যুগের পর যুগ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবেই চলেছে।
.
এক্ষেত্রেও মুসলিমদের দিল থেকে পরাজিত মানসিকতা ঝেড়ে ফেলে তাদেরকে বিজয়ের স্বপ্ন দেখানো সময় ও সমাজের সবচেয়ে জোরালো দাবি ছিল। প্রয়োজন ছিল মুসলিমদের অন্তর থেকে কাপুরুষতার আগাছা পরিষ্কার করে সেখানে সাহসিকতার চারা রোপণ করা, একসময় যা ঈমানী সার পেয়ে আপনা-আপনি বড় হবে, তরতাজা ও প্রাণবন্ত হবে এবং সমগ্র উম্মাহকে উপকারী ফসল দেবে। মানসিকভাবে বিজয়ী হওয়া ছাড়া কোনো জাতিই ময়দানে বিজয়ী হবার কল্পনাও করতে পারবে না। এমন আশা করা নিরর্থক। এই মাজলুম উম্মাহর একটি বড় অংশ পরাজিত মানসিকতা লালন করেই অতিক্রম করেছে প্রায় একটি শতাব্দী। উম্মাহর অন্তর থেকে কাফেরদের ভীতি দূরীভূত করে তাদেরকে বিজয়ের স্বপ্নে স্বাপ্নিক করবার এই মহান দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে এগিয়ে এসেছে আল-কা/য়ে।দা আল-কা/য়েদা তাদের অন্তর থেকে বের করে দিয়েছে কাফেরদের ভয়, অতি যত্নের সঙ্গে রোপণ করে দিয়েছে সাহসিকতার চারা। ফলে কাশগর থেকে মরক্কো পর্যন্ত সর্বত্রই মুসলমানরা বৈশ্বকি রাজনীতি নিয়ে নতুন করে ভাববার সুযোগ ও সাহস পাচ্ছে। আগামীর বিশ্বকে ইসলামী শাসনের আওতায় এনে সকল জুলুম নি/র্য|তনের অবসান ঘটিয়ে অনাবিল শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেবার স্বপ্ন দেখছে। সারাবিশ্বের মুসলমানদের মাঝে আজ চিন্তাগত যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তা আল-কা/য়েদ|র অবিশ্রান্ত মেহনতের মুবারক ফসল। টুইন=টাও'য়ার বা ৯/১১ আক্রমণ করে আল-কা/য়েদ| বিশ্ববাসীর সামনে এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বিশ্ব মোড়ল আ-মে-রিকা অপরাজেয় কোনো দৈত্য নয়। আল-কা/য়েদ|র এই এক টুইন=টাও'য়ার আক্র*মণ সারা বিশ্বের মুসলমানদের পরাজিত মানসিকতায় কত বিপুল সাহসের সঞ্চার করেছে, ৯/১১ আক্র*মণ সম্পর্কে সামান্যতম ধারণাও যার আছে তার সামনে এ সত্য পরিষ্কার। আ-মে-রিকার দ্বারা নি/র্য|তনের শিকার হাজার হাজার নিরিহ মুসলিমদের মুখে সেদিন হাসি ফুটেছিল, যারা তখনও পর্যন্ত এই ভেবে নীরবে অশ্রু ঝরাত যে, আ-মে-রিকার থেকে প্রতিশোধ নেবার শক্তি কারও নেই। টুইন=টাও'য়ার আক্র*মণের সেই চিত্র আজও মুমিনদের অন্তরে প্রেরণা জোগায়।
Comment