Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪০ || ‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব।। ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী || ষষ্ঠ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪০ || ‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব।। ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী || ষষ্ঠ পর্ব

    আল হিকমাহ মিডিয়া পরিবেশিত
    “‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব
    ।।ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী||
    এর থেকে– ষষ্ঠ পর্ব




    তৃতীয় পর্যালোচনা : আল-কায়েদা ও আইএসের বিরোধের কারণসমূহ
    1. তাকফিরের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা। উক্ত তাকফিরের ভিত্তিতে হত্যা করা ও লড়াই করা।
    2. খেলাফতের ঘোষণা।
    3. আস-সিয়াসাতুশ শারইয়্যাহ (রাষ্ট্রনীতি)।
    4. রণকৌশল।

    ১. তাকফিরের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা। উক্ত তাকফিরের ভিত্তিতে হত্যা করা ও লড়াই করা।


    অন্যসব বিষয়ের মতো তাকফির করার ক্ষেত্রেও আল-কায়েদা আহলে সুন্নাহর নীতি অনুসরণ করে। অজ্ঞতা, তাবীলের অবকাশ, ইকরাহ (বাধ্যকরণ) এবং ভুলক্রমে কোনো কিছু ঘটে যাওয়াকে ওজর হিসেবে গণ্য করে। রক্তপাত ও মানুষের ধন-সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে আল-কায়েদা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে।

    অপরদিকে, খাওয়ারিজুদ দাওলাহ তথা আইএসের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো ‘নির্বিচারে তাকফির করা’। এক্ষেত্রে আহলে সুন্নাহর নীতিমালার কোনও বালাই তাদের কাছে নেই। মুসলমানের রক্তের এবং তাঁর ধন-সম্পদের কানাকড়ি মূল্য তাদের কাছে আছে বলে মনে হয় না।

    ‘কতলুল মাসলাহাহ’ আইএসের নিজস্ব পরিভাষা। যখন কোনও ব্যক্তির অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হয় তখন তারা তাকে হত্যা করে দেয়। এটি তাদের মাঝে ‘কতলুল মাসলাহাহ’ নামে পরিচিত।

    সন্দেহ নেই, গণতন্ত্র একটি কুফরি মতবাদ। তবে যারাই গণতন্ত্র করে তাদের সকলেই আইএসের দৃষ্টিতে কাফের। মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডকে তারা তাকফির করেছে। এক্ষেত্রে তাকফিরের শর্তাবলী ও প্রতিবন্ধকসমূহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেনি।

    অপরদিকে আল-কায়েদা যেহেতু আহলে সুন্নাহর অনুসারী, তাই তারা মুসলিম ব্রাদারহুডকে তাকফির করা থেকে বিরত থেকেছে। জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মনে করা, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে কুরআন সুন্নাহর উপর প্রাধান্য দেওয়া, চার স্বাধীনতার (বিশ্বাসের স্বাধীনতা,মত প্রকাশের স্বাধীনতা,অবাধ ব্যক্তি মালিকানার স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতা) বিশ্বাস করা বা না করার ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকদের ক্ষেত্রে তাকফিরের ফতোয়া ভিন্ন হতে পারে।

    যারা গণতন্ত্রের উপরোক্ত নীতিমালায় বিশ্বাসী তারা সুস্পষ্ট কুফরে লিপ্ত হওয়ার কারণে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে। অপরদিকে যারা গণতন্ত্রকে কেবল রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে তাদেরকে তাকফির করার সুযোগ কোথায়?! উভয় শ্রেণির মাঝে অবশ্যই পার্থক্য আছে।

    এখানে মুসলিম ব্রাদারহুডের আলোচনা করা হয়েছে দৃষ্টান্তস্বরূপ। অন্যথায় আইএস প্রায় সকল ইসলামি দলকেই তাকফির করে। আর বিশ্বের সাধারণ মুসলিমদের মধ্য থেকে হাতেগোনা কিছু লোক তাদের তাকফিরের আওতামুক্ত থাকলে থাকতেও পারে।

    অন্যায়ভাবে রক্তপাত করতে আইএস যে কতটা পারদর্শী, তা কারো অজানা নয়। মসজিদ ও মার্কেটে হামলা চালানো এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ। আল-কায়েদা বরাবরই তাদের এহেন কর্মকাণ্ডের সাথে কোনও ধরণের সম্পর্ক না থাকার ঘোষণা দিয়ে আসছে।

    আল-কায়েদা কখনোই ভুলের শিকার হয়নি, বিষয়টি এমন নয়। তবে স্বেচ্ছায় এবং জ্ঞাতসারে আল-কায়েদা তা করে না। সন্দেহ নেই, কোনও কোনও সময় ভুল করা স্বত্বেও সাওয়াব অর্জিত হয়।


    ২. খেলাফতের ঘোষণা:

    খেলাফত সহীহ হওয়ার ক্ষেত্রে আল-কায়েদা আহলে ‍সুন্নাহর নীতিমালা অনুসরণ করে। যেমন তামকিন (সক্ষমতা), আহলুল হাল ওয়াল আকদের দিকনির্দেশনায় উম্মাহকে খলীফা নির্বাচনের স্বাধীনতা প্রদান ইত্যাদি।

    খাওয়ারেজুদ দাওলাহ (আইএস) এসব শর্তের পরোয়া করেনি। পরিপূর্ণ তামকিন তথা সক্ষমতা অর্জন ছাড়াই তারা খেলাফত ঘোষণা করেছে এবং এক্ষেত্রে আহলুল হাল ওয়াল আকদের মতামত তারা গ্রহণ করেনি। যারা বাগদাদীকে খলীফা বানিয়েছে তারা উম্মাহর প্রতিনিধি নয় এবং তারা কোনও কালে অনুসরণীয় ব্যক্তি ছিল না। ইমামতে উযমা তথা খলিফা নির্বাচনের ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান নিয়ে এই হলো তাদের অবহেলা ও অবজ্ঞার চিত্র।

    আল-কায়েদা মনে করে, যে অঞ্চলে খেলাফত ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে শত্রুদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তারা মুসলিমদের যে কোনও উত্থানের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করতে পারছে। তাই সেখানে প্রকৃত তামকিন তথা সক্ষমতা অনুপস্থিত। সুতরাং যেখানে উম্মাহর কর্তৃত্ব নেই সেখানে খেলাফত প্রতিষ্ঠা হয় কীভাবে!

    উপরন্ত খেলাফত ঘোষণার পর উম্মাহ শাসিত হচ্ছে এমন সব দুরাচারীদের মাধ্যমে, যারা উম্মাহর স্বার্থের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করে না। তাইতো তাদের ওখানে আহলুল হাল ওয়াল আকদের অস্তিত্ব নেই। সুতরাং খলীফা নির্বাচিত হয় কীভাবে!

    সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

    أَخْبَرَنَا عِمْرَانُ بْنُ بَكَّارٍ قَالَ: حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو الزِّنَادِ، مِمَّا حَدَّثَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ الْأَعْرَجُ، مِمَّا ذَكَرَ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّمَا الْإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ وَيُتَّقَى بِهِ، فَإِنْ أَمَرَ بِتَقْوَى اللَّهِ وَعَدَلَ فَإِنَّ لَهُ بِذَلِكَ أَجْرًا، وَإِنْ أَمَرَ بِغَيْرِهِ فَإِنَّ عَلَيْهِ وِزْرًا»


    অর্থঃ “আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ
    তিনি বলেনঃ ইমাম ঢাল সদৃশ, যার আড়ালে লোকে যুদ্ধ করে এবং তার দ্বারা পরিত্রাণ লাভ করে। যদি ইমাম আল্লাহ্‌র ভয়ের আদেশ করে এবং ইনসাফের সাথে আদেশ করে, তবে এর জন্য তার সওয়াব রয়েছে। আর যদি এর অন্যথা করে, তবে তার উপর এর পরিণতি বর্তাবে”(সুনানে আন-নাসায়ী - ৪১৯৬)।

    তাই ভাবতেও অবাক লাগে, পালিয়ে বেড়ানো তথাকথিত খলিফা যিনি নিজের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তিনি কিভাবে দেড় বিলিয়ন মুসলিমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন!

    খলীফা নির্বাচনের অধিকার উম্মাহর। এ মর্মে উমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু’র বাণী বুখারি শরীফে নিম্নরূপ বর্ণিত হয়েছে।
    “আমার কাছে একথা পৌঁছেছে যে, তোমাদের কেউ একথা বলেছে যে, আল্লাহর কসম! যদি উমর মারা যায় তাহলে আমি অমুকের হাতে বাইআত দিবো। কেউ যেন একথা বলে ধোঁকায় না পড়ে যে, আবু বকরের বাইআত ছিল আকস্মিক ঘটনা তবুও তা সংঘটিত হয়ে হয়েছে। জেনে রেখো! তা অবশ্যই এমন ছিল, তবে আল্লাহ এ বাইআতের ক্ষতি প্রতিহত করেছেন। তোমাদের কেউ আবু বকর রাযি. এর মর্যাদায় পৌঁছাতে পারবে না। যে কেউ মুসলিমদের পরামর্শ ছাড়া কোনও লোকের হাতে বাইআত দিবে, তার অনুসরণ করা যাবে না। ওই লোকেরও না, যে তার অনুসরণ করবে। কেননা উভয়েরই হত্যার শিকার হওয়ার আশংকা রয়েছে।


    ৩. আস সিয়াসাতুশ শারইয়্যাহ: ইসলামী রাষ্ট্রনীতি

    এ ক্ষেত্রে আল-কায়েদা এমন ভাষা ব্যবহার করে যা সর্বসাধারণের পক্ষে বোঝা সহজ এবং কর্মতৎপরতার জন্য এমন নীতি গ্রহণ করে যা সর্বসাধারণের রুচিবোধ ও বিবেকের সাথে মানানসই। যথাসম্ভব এমন সব বিষয় থেকে দূরে থাকে যা মানুষকে স্বজাতিদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে তোলে।

    আল-কায়েদার বিশ্বাস, সর্বসাধারণকে ব্যাপকভাবে জিহাদে অংশগ্রহণ করানো না গেলে চূড়ান্ত বিজয় সম্ভব হয়ে উঠবে না। এপথেই আল-কায়েদা চেষ্টা করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সম্ভাব্য সকল উপায়ে উম্মাহকে বুঝানোর চেষ্টা করছে যে, পরিবর্তন আনতে হলে জিহাদের বিকল্প নেই।

    উম্মাহর সন্তানদের মাঝে শরিয়তের জ্ঞান কম থাকার বিষয়টি আল-কায়েদা সর্বদা বিবেচনায় রাখে। যে সকল বিষয় বৈধ হওয়া সত্ত্বেও মানুষকে জিহাদ-বিমুখ করতে পারে বলে ধারণা হয়, সেগুলো আল-কায়েদা পরিহার করে। অপরদিকে আইএসকে ঠিক এর উল্টোটি করতে দেখা যায়। বক্তব্যের ক্ষেত্রে তারা এমন দুর্বোধ্য কৌশল গ্রহণ করে যা সর্বসাধারণ বুঝতে সক্ষম নয়। আর কাজের ক্ষেত্রে তাদের নীতি মানুষকে জিহাদবিমুখ করে তোলে। যেমন- আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা, পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা, উঁচু স্থান থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা। এ সকল কর্মকাণ্ড মানুষকে শুধু জিহাদবিমুখই করে না বরং এগুলো শরিয়ত বিরোধীও।

    শরিয়ত সর্বক্ষেত্রে মানুষকে দয়া ও অনুগ্রহশীল হওয়ার আদেশ করে। মুসলিম সহ অন্যান্য হাদিসে এসেছে –

    أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَبِي الْأَشْعَثِ، عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ قَالَ: اثْنَتَانِ حَفِظْتُهُمَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْإِحْسَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ، فَإِذَا قَتَلْتُمْ فَأَحْسِنُوا الْقِتْلَةَ، وَإِذَا ذَبَحْتُمْ فَأَحْسِنُوا الذِّبْحَةَ، وَلْيُحِدَّ أَحَدُكُمْ شَفْرَتَهُ، وَلْيُرِحْ ذَبِيحَتَهُ»


    অর্থঃ “শাদ্দাদ ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ
    তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে দু’টি বিষয় স্মরণ রেখেছি। তিনি বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক বস্তুর প্রতি সদয় আচরণ (ইহসান করা) ফরয করেছেন। অতএব তোমরা যখন কাউকে হত্যা করবে, তখন উত্তমরূপে হত্যা করবে। আর যখন কোন জন্তু যবেহ করবে, তখন উত্তম পন্থায় যবেহ করবে এবং তোমাদের প্রত্যেকে যেন ছুরি ধার দিয়ে নেয়। আর যবেহকৃত পশুকে ঠান্ডা হতে দেয়”। (সুনানে আন-নাসায়ী - ৪৪০৫)

    এখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে হত্যা করার ক্ষেত্রে এবং পশু জবেহের ক্ষেত্রে দয়াশীল হওয়ার আদেশ করেছেন। আর আইএস বেশি কষ্ট দেয়ার জন্য পাশবিক ও নির্মমভাবে হত্যা করে।

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলা করতে (নিহত ব্যক্তির নাক-কান ইত্যাদি কাটতে) নিষেধ করেছেন। আর বাগদাদীর দল হত্যার পর মাথাকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তার ছবি গর্বের সঙ্গে প্রচার করে।

    তাদের অনেকে দাহ্য পদার্থ দিয়েও মানুষ হত্যা করেছে। সুতরাং রাসূলের শরিয়ত কোথায় আর তারা কোথায়? তারা কি এসব পন্থায় শরিয়ত প্রতিষ্ঠা করছে?!



    ৪. রণকৌশল:


    আল-কায়েদা স্থানীয় শাসকদের পরিবর্তে বহিঃশত্রু তথা আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াই করাকে প্রাধান্য দেয়। আত্মরক্ষার্থে বা এদেরকে (স্থানীয় শাসকবর্গকে) শায়েস্তা করা জরুরি হয়ে পড়লেই কেবল আঞ্চলিক তাবেদারদের সাথে লড়াই করে।

    বহিঃশত্রু হচ্ছে মূল চালিকাশক্তি। স্থানীয় সরকারগুলো তাদের স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার। বহিঃশত্রুর সাহায্য ছাড়া এরা নিতান্তই দুর্বল। বহিঃশত্রুকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানোর রহস্য এখানেই।

    অপরদিকে আইএসের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে স্থানীয় শত্রুরা। নির্বোধের মতো তারা ভাবছে, তারা এমন কিছু করতে পেরেছে যা পূর্ববর্তীরা পারেনি। কে জানে, হয়তো তারা ভাবছে, আমেরিকার সাথে জিহাদে না জড়িয়ে স্থানীয় শত্রুদের নিয়ে ব্যস্ত থাকলে আমেরিকা তাদেরকে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বাধা দেবে না!!

    বাস্তবতাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ না করাই তাদের নির্বুদ্ধিতার কারণ। টিনের চশমাটা খুলে যদি ডানে-বামে একটু তাকাত তাহলে তারা বুঝতে পারত যে, গোটা পৃথিবী ইহুদি ও খৃস্টানদের যৌথ সিস্টেমে আবদ্ধ। যে কেউ এই সিস্টেম থেকে বেরিয়ে আসতে চায় সে তাদের দৃষ্টিতে বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

    আশাকরি এমন চিন্তা কেউ করবে না যে, তারা তাদের মোড়লগিরীর শৃঙ্খল ভাঙ্গাতেও নিশ্চুপ হয়ে থাকবে। এমন চিন্তা কেবল সেই করতে পারে যার মাথায় আইএসের মগজ ঢুকানো হয়েছে।

    অবশ্য আমেরিকার প্রতি আইএসের সুধারণা যে ভুল ছিল তা বুঝতে তাদের খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। তারা নিজেদের তথাকথিত খেলাফত সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। আর এখন তাদের খেলাফতের ধ্বংসাবশেষটুকুই কেবল অবশিষ্ট আছে। আর এই তথাকথিত খেলাফত অস্তিত্বের সংকটের মুখে পড়েছে।



    পরিশিষ্ট


    যারা বলেছিল যে, আইএস সৃষ্টির পেছনে সি.আই.এ সহ আরও কিছু ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের হাত আছে, তারা খুব মন্দ বলেনি। আমার বক্তব্যের উদ্দেশ্য এই নয় যে, এসব গোয়েন্দা বাহিনী আইএসকে সৃষ্টি করেছে। আমি কেবল বলতে চাচ্ছি, এরা আইএসের আত্মপ্রকাশে সাহায্য করেছে এবং উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে দিয়েছে।

    তারা কেন আইএসকে সাহায্য করেছিল? কয়েকটি কারণ নিম্নরূপ
    • আইএসের প্রধান টার্গেট স্থানীয়রা, আমেরিকা নয়। আর আল-কায়েদার প্রধান টার্গেট আমেরিকা, স্থানীয়রা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।
    • আইএসের কর্মকাণ্ড মানুষের সামনে জিহাদকে বিকৃত করে তুলে, জিহাদবিমুখ করে, আর এটি মূলত আমেরিকা ও যারা জিহাদ ও মুজাহিদদেরকে ধ্বংস করতে চায় তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
    • আইএস নিজেদের সদস্য ও সৈনিকদের ব্যাপারে যত্নবান নয়। আইএস নিজ সেনাদেরকে অনেক সময় নিরর্থক যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দেয়, ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। কুবানী, বাইজী ও ইত্রাদি অঞ্চলে এমনটিই দেখা গেছে। আর মসুলে তো তারা নিজেরাই নিজেদের সেনাভর্তি সাজোয়া যান বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে।




    আরও পড়ুন​
    পঞ্চম পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------- সপ্তম পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 1 day ago.

  • #2
    মাশাল্লাহ ভাই,সহজ সাবলীল ভাষায় বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছেন এবং লেখাগুলোর প্রত্যেকটা লাইন খুব সুন্দর গুছালো হওয়ার কারণে পড়তে খুবই সহজ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আপনার লেখায় আরও বারাকাহ দান করুন, আমিন।
    [ গুরাবা হয়ে লড়তে চাই, গুরাবা হয়েই শাহাদাহ চাই ]

    Comment

    Working...
    X