আল হিকমাহ মিডিয়া পরিবেশিত
“‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব
।।ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী||
এর থেকে– অষ্টম পর্ব
“‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব
।।ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী||
এর থেকে– অষ্টম পর্ব
১০. আল-কায়েদা কি হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে? তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আল-কায়েদার কোনও ফ্রন্ট রয়েছে কি?
উত্তর : আল-কায়েদার বড় একটি লক্ষ্য হচ্ছে উম্মাহকে ব্যাপকভাবে জিহাদে অংশগ্রহণ করানো। এজন্য স্থানীয় শত্রুদের সাথে যথাসম্ভব সংঘর্ষ এড়িয়ে চলে এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধকে প্রাধান্য দেয়। কারণ আমেরিকাকে সবাই শত্রু মনে করে। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অপরিহার্য হওয়ার ব্যাপারে সাধারণের মাঝে কোনো মতভেদ নেই।
আল-কায়েদার আরও একটি লক্ষ্য হচ্ছে, উম্মাহর দ্বীন, মর্যাদা ও তাদের ধন-সম্পদের হিফাজত করা। সুতরাং এসব লক্ষ্যে যারা আঘাত হানবে স্বভাবতই আল-কায়েদা তাদেরকে প্রতিহত করবে। হুথিদেরকে প্রতিরোধ করতে উম্মাহ যখন যুদ্ধ করছে তখন আল-কায়েদার পিছিয়ে থাকার প্রশ্নই আসে না।
সালাফিদের উপর যখন হুথিরা হামলা করল তখন তাদের সহায়তায় সর্বপ্রথম এগিয়ে এসেছিল আল-কায়েদা। কাতাফ অঞ্চলে হুথিদের সাথে যুদ্ধ করতে আল-কায়দার আলাদা ফ্রন্ট রয়েছে। হুথিদের বিরুদ্ধে অপারেশনসমূহের একটি হলো, বদরুদ্দিন হুথিকে হত্যার সফল অপারেশন। সে হুথিদের ধর্মগুরু ও আধ্যাত্মিক নেতা ছিল। তাকে হুথিদের বড় আলেমদের মাঝে গণ্য করা হতো।
রাদা, ইব্ব ও হুদাইদাতে আল-কায়েদা হুথিদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ করেছে এবং হুথিদের বহু নেতা ও ক্যাডারকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে। অপরদিকে হুথিরা হুদাইদাতে আল-কায়েদার কিছু সেল ভেঙ্গে দিতে সক্ষম হয়েছে। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন মুজাহিদ শাহাদাতবরণ করেছেন। সানায় হুথিদের উপর হামলাকারী স্লিপার সেলের বহু মুজাহিদ শাহাদাতবরণ করেছেন এবং অনেকে বন্দি হয়েছেন।
হুথিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পূর্বে তাইজে আল-কায়েদার বেশ কিছু ঘাটি ছিল। সেখানে মুজাহিদিনের হামলার টার্গেট ছিল সেইসব লোক যারা হুথিদের পক্ষে সৈন্য রিক্রুট করত। তাইজের বহু যুবক মুআজ মাশমাশার নাম জানে। হুথিদের জন্য সৈন্য রিক্রুটকারীদের উপর তিনি দীর্ঘদিন হামলা পরিচালনা করেছেন। হুথিরা তাইজ দখল করার পর তাদের সাথে এক লড়াইয়ে তিনি শাহাদাতবরণ করেন।
এভন, লাহিজ, শাবওয়াহ ও আবিয়ানে আল-কায়েদার ভাইয়েরা আহলে সুন্নাহর ভাইদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছেন। তবে আল-কায়েদাকে আবদুল লতিফ সায়্যিদের অনুগত কতিপয় আবিয়ানবাসীর সাথেও যুদ্ধ করতে হয়েছে। আবদুল লতিফ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা পালানোর পর আল-কায়েদা আবিয়ানবাসীর সহায়তায় মনোযোগ দেয়।
ইতিপূর্বে লোডারের অধিবাসীরা বায়দা অঞ্চলে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল। তবে হুথিদের অগ্রাভিযানে ভীত হয়ে কতিপয় লোডার জেলার অধিবাসী আল-কায়েদার কাছে অনুরোধ করে যেন তাদেরকে বায়দা ও লোডারের মধ্যবর্তী আকাবা সারায় টহল দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। পূর্বের সবকিছু ভুলে গিয়ে হুথিদেরকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে আল-কায়েদা তাদেরকে আকাবা সারায় টহল দেওয়ার অনুমতি দেয়।
তাইজে প্রথম থেকেই আল-কায়েদা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। আল-কায়েদার ভাইয়েরা যখন তাইজে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিল তখন তারা একটি পথকে নিরাপদ ভেবে সে পথে অগ্রসর হলো। তখন আল হারাক আল জুনুবীর যোদ্ধারা তাদেরকে বাধা দেয় এবং তাদেরকে বন্দি করার চেষ্টা করে। এই ঘটনা যিনি বর্ণনা করেছেন তিনি এবং তার এক সঙ্গী প্রায় শত্রুদের নাগালের মধ্যে ছিলেন। আল্লাহর রহমত না হলে হয়তো তারা গ্রেফতার এড়াতে পারতেন না।
আল-কায়েদার ভাইরা তাইজে যখন প্রথম প্রশিক্ষণ শিবির চালু করেন তখন তা হুথিদের হামলার শিকার হয়। এতে দুই ভাই শাহাদাতবরণ করেন এবং অপর কয়েকজন আহত হন।
সেখানে তারা ফজরুল ইসলাম নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করতেন। এতে বিভিন্ন অপারেশনের সংবাদ থাকত।
আল-কায়েদার নিজস্ব মিডিয়া ‘আল মালাহিম’ ভাইদের বেশ কিছু অপারেশনের ভিডিও প্রচার করেন। আশাকরি সেগুলো পুরোপুরি না হলেও আংশিকভাবে ইউটিউবে রয়েছে।
আসসিলো জেলায় প্রথম পর্যায়ে প্রবেশকারীদের সাথে আল-কায়েদার একটি দলও প্রবেশ করে। সেখানে তারা বেশ কিছু অপারেশন চালায়। শাইখ হাজামের উপর তারাই হামলা চালায়। উক্ত ‘শাইখ’ ষড়যন্ত্র পাকাতে দারুন পটু। যারা সালেহের পক্ষে কাজ করত সে ছিল তাদের মুরুব্বী। ব্যাটালিয়ন ৩৫ এর নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে সে ছাড়া পায়।
বায়দা ও রাদায় এখনো পর্যন্ত আল-কায়েদার কয়েকটি ফ্রন্ট সক্রিয় রয়েছে। তারা আহলে সুন্নাহর বিভিন্ন গোত্রের সাথে তাদের তৎপরতায় শরিক রয়েছে। আর আমেরিকা বরাবরের মতোই উভয় অঞ্চলে বিমান বাহিনীর মাধ্যমে হুথিদের সাহায্য করে যাচ্ছে।
১১. যে সকল ইসলামি দল ও উলামা-মাশায়েখ আল-কায়েদার আদর্শের সাথে একমত নয়, তাদের ব্যাপারে আল-কায়েদার অবস্থান কি?
উত্তর : এই প্রশ্নের উত্তর ডক্টর আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ এর কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক। বিশ্বব্যাপী আল-কায়েদার সকল শাখার প্রতি দিক-নির্দেশনা দিতে গিয়ে তিনি লিখেন-
অপরাপর ইসলামি দলসমূহের ব্যাপারে আল-কায়েদার অবস্থান
১১. ইসলামি দলসমূহের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান-
- যেসব বিষয়ে আমরা একমত সেসব বিষয়ে সহযোগিতা বিনিময় করব। মতবিরোধের ক্ষেত্রে সদুপদেশ দিবো।
- ইসলামের শত্রুদের সাথে লড়াইকে অগ্রাধিকার দিবো। তাই কোনও ইসলামি দলের সাথে মতবিরোধের ফলে শত্রুদেরকে সামরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, নৈতিক ও দাওয়াতী কার্যক্রমের মাধ্যমে পরাজিত করার নীতি থেকে সরে আসব না।
- তারা যখন সঠিক বলবেন তখন তাদেরকে আমরা সমর্থন করব এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। আর তারা ভুলের শিকার হলে সদুপদেশ দেব; গোপন ভুলের ক্ষেত্রে গোপনে এবং প্রকাশ্য ভুলের ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে। এক্ষেত্রে পূর্ণ ভাবগাম্ভির্যতা রক্ষা করব এবং ইলমী ভাষায় উপদেশ দেব। ব্যক্তিগতভাবে কাউকে হেয় করা থেকে বিরত থাকব। কেননা ব্যক্তিগত আক্রমণের তুলনায় দলিল নির্ভর কথাই বেশি প্রভাব সৃষ্টি করে।
১২. আল-কায়েদার কেউ যদি দল ত্যাগ করে তাহলে কি আল-কায়েদা তাকে হত্যা করে?
উত্তর : আল-কায়েদা একটি আদর্শভিত্তিক দল। এই আদর্শের মাধ্যমে আল-কায়েদা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। তাদের মুখ্য বিষয় হলো লক্ষ্যে পৌঁছা। তা আল-কায়েদার মাধ্যমে হোক চাই অন্য কোনও দলের মাধ্যমে। উক্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে আল-কায়েদা মানুষকে তাদের দলে শামিল হতে উৎসাহিত করে। যারা উক্ত চেতনা ধারণ করে ও দলে শামিল হয় তাদের কারণে আল-কায়েদা আনন্দিত হয়। তারপর যারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে অথবা শিথিলতা প্রদর্শন করে সে নিজে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়।
তবে এজন্য সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় না, বরং সে এমন একটি জামাআহ থেকে বেরিয়ে গেল যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। সুতরাং এখানে এমন কিছু নেই যার কারণে সে হত্যার উপযুক্ত হতে পারে।
এসব কল্পিত প্রশ্নের স্রষ্টা হল গোয়েন্দা বিভাগের লোকেরা। তারা বুঝতে পেরেছে, আল-কায়েদার সাথে তাদের লড়াই মূলত অস্তিত্বের লড়াই। এজন্যই তারা অবান্তর প্রশ্ন তুলে মুসলিম উম্মাহ ও আল-কায়েদার মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করতে চায়। যাতে মানুষ আল-কায়েদার আহ্বানে সাড়া না দেয়।
আমি লক্ষ্য করেছি, যেসব এলাকায় আল-কায়েদার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত আছে, সেখানে গোয়েন্দা বিভাগের লোকদের দৃশ্যমান কোনও তৎপরতা নেই। হয়তো আল-কায়েদা থাকবে, নয়তো গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন।
১৩. আল-কায়েদা কি তার মুজাহিদগণকে ইসতিশহাদী হামলা করতে বাধ্য করে?
উত্তর : আলেমগণের প্রণীত কঠোর নীতিমালার ভিত্তিতে আল-কায়েদা ইসতেশহাদী হামলাকে বৈধ মনে করে। তবে মাসআলাটি ইজতেহাদী। এখানে যে কারো মতবিরোধ থাকতে পারে। তাই আল-কায়েদা তার মুজাহিদগণকে ইসতেশহাদী হামলা করতে বাধ্য করা তো দূরের কথা, এই হামলাকে জায়েজ বলে বিশ্বাস করতেও চাপ দেয় না।
১৪. তাইজে গুপ্তহত্যা ও লুটতরাজের জন্য কারা দায়ী? এর সাথে আল-কায়েদার কোনও সম্পর্ক ছিল কি?
উত্তর : আল-কায়েদা এসব ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে বিশ্বাসী নয়। এ ধরনের এলোপাথাড়ি কাজে তারা কখনোই অগ্রসর হয় না। আল-কায়েদা একটি আদর্শভিত্তিক দল। তারা মানুষের কাছে নিজেদের দাওয়াহ ও বার্তা পৌঁছাতে চায়। কিতাল তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়, বরং এটি শরিয়াহ প্রতিষ্ঠার শরয়ী মাধ্যম।
তেমনি যারা আল-কায়েদার দৃষ্টিতে কতলের উপযুক্ত তারা তাদের সকলকেই হত্যা করে না। এর বহুবিধ কারণ রয়েছে। একবারের ঘটনা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এক ব্যক্তি বলল, হে মুহাম্মদ! আপনি ইনসাফ করুন, কারণ আপনি ইনসাফ করেননি। এ ধরনের কথা রাসূল-অবমাননার শামিল এবং এটি কুফরি বাক্য। এর ফলে সে কতলের উপযুক্ত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ছেড়ে দেন। কারণ তাকে হত্যা করা হলে মানুষের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারত। মানুষ বলাবলি করত যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সঙ্গীদেরকে হত্যা করে।
সুতরাং হত্যার উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও যারা কখনো হত্যা করা থেকে বিরত থাকে তাদের ক্ষেত্রে এই অভিযোগ উত্থাপন করা কি যৌক্তিক হবে যে, কেবল দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে তারা হত্যা করে! তেমনি সেনাবাহিনীতে ভর্তি হওয়াই কুফরি নয়, যদি না কুফরির পর্যায়ভুক্ত কোনও সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।
একবার আমাকে অবহিত করা হলো যে, আমাদের কতিপয় ভাই হাসসাম বিগ্রেডের প্রধান আদনান জুরাইককে তাকফির করে, কারণ সে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে। আমি তাদেরকে বললাম, শুধু সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া কুফরির কারণ নয়। কাফেরকে মুসলিমের বিরুদ্ধে সাহায্য করা বা কাফেরকে কুফরি কাজে সাহায্য করাই মূল বিষয়। উক্ত কারণ কারো মধ্যে পাওয়া গেলে আমরা তার উপর কুফরির হুকুম আরোপ করব। আদনান জুরাইক হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এর মাধ্যমে সে কাফেরকে মুসলিমের বিরুদ্ধে সাহায্য করা বা কাফেরকে কুফরির উপর সাহায্য করার মতো কিছু করছে না। সুতরাং তাকে তাকফির করার যৌক্তিকতা ও বৈধতা কোথায়?
বস্তুত তাইজের লুটতরাজ ও গুপ্তহত্যার সাথে আল-কায়েদার কোনোই সম্পর্ক নেই। এসব আইএসের কাজ, অথবা এমন কারো কাজ যাকে বাড়াবাড়ির কারণে পূর্বেই আল-কায়েদা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এখানে আমি একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই যে, আমরা তাইজে প্রবেশ করার পর সেখানকার পরিস্থিতি কঠোরভাবে বিবেচনায় রেখেছি। তাইজকে এমন সব কর্মকাণ্ড থেকে নিরাপদ রাখতে চেষ্টা করেছি, যেসবের কারণে মার্কিনীরা তাদের সন্ত্রাসবাদ তত্ত্বের অভিযোগ উত্থাপন করতে পারে। তাইজে প্রবেশকালে আল-কায়েদার আমীরের উপস্থিতিতে প্রতিরোধ-যোদ্ধাদের উঁচু পর্যায়ের একজন কমান্ডারকে বলেছিলাম, আমরা আপনাদের কোনও ক্ষতি করব না। আপনাদের মনকষ্টের দিকে লক্ষ্য করে আমরা আমাদের পতাকাও উত্তোলন করব না। আমরা আমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ করেছিলাম। আমাদের অধিকৃত অঞ্চল ও গাড়িতে পর্যন্ত আমরা আল-কায়েদার পতাকা উত্তোলন করিনি।
তাইজে আহলে সুন্নাহর উপর হুথিদের হামলা প্রতিহত করা ছিল আমাদের অগ্রাধিকার। হামাসের অধিবাসী অনেক ভাই তাইজে সামাজিক কিছু পাপাচার প্রতিরোধ করার প্রতি মনোযোগ দিতে চেয়েছিল, কিন্তু আল-কায়েদার নেতৃবৃন্দ আপাতত এধরণের কাজে জড়াতে নিষেধ করলেন। কেননা তুলনামূলক বড় সমস্যা থেকে তাইজকে মুক্ত করাই ছিল ফিকহুল মুয়াজানাতের দাবী।
তেমনি গনিমতের মাল বন্টন নিয়ে যখন সীমালঙ্ঘন পরিলক্ষিত হলো তখন আল-কায়েদার নেতৃবৃন্দ তা বন্টন করতে নিষেধ করলেন এবং এ ব্যাপারে নেতৃবৃন্দ কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন, এমনকি কিছু সদস্যকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হয়।
প্রতিরোধ-যোদ্ধাদের কয়েকটি গ্রুপ যখন হায়েল সাঈদ পরিবারের বিপুল সম্পদ হাতিয়ে নিতে শুরু করে এবং সন্দেহের তর্জনী তাক করা হয় আল-কায়েদার দিকে, তখন আল-কায়েদা এ বিষয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে যে, আমাদের সাথে এই ঘটনার সাথে কোন সম্পর্ক নেই, মুসলিমদের সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া আল-কায়েদা বৈধ মনে করে না।
এসব দখলদারিত্ব ও অযাচিত হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করতে আল-কায়েদা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অপরাপর দলসমূহের সাথে মিলে একটি শক্তিশালী ফ্রন্ট গঠনের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছে। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দুজন ঊর্ধ্বতন নেতা মুমিন মিখলাফী এবং আম্মার জুনদুবী আল-কায়েদার উক্ত মহৎ প্রচেষ্টার কথা এখনো স্মরণ করেন।
তাইজে প্রবেশকালে আমরা সংকল্প করেছিলাম যে, আহলে সুন্নাহর ভাইদের জন্য ভালো কিছু করব। এজন্য আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। সকল গোত্রের সাথে আমরা ভাতৃত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক আচরণ করেছি। যারা আমাদেরকে কাছ থেকে দেখেছেন তারা ভালো করেই জানেন যে, তাইজের অরাজকতার সঙ্গে আমাদের দূরতম সম্পর্কও নেই।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আহলে সুন্নাহর ভাইদের জানা থাকা উচিৎ- আইএস তাইজে যেসব অপকর্ম করেছে তা তারা একা করেনি। বরং তাদের সাথে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কয়েকটি দল ও তাদের কিছু নেতৃবর্গও ছিল। এখানে তাদের নাম উল্লেখ করা সমীচীন হবে না। তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমার ভালোই জানা আছে। যাইহোক, এসব নেতাদের উদ্দেশ্য ছিল জিহাদের নামে অপকর্ম করে জিহাদের ব্যাপারে মানুষকে বীতশ্রদ্ধ করা। এসব নেতাদের পেছনে ছিল সেইসব রাষ্ট্রের ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস, যারা তাইজ ও তাইজবাসীর মঙ্গল চায় না, বরং তাইজকে অকৃতকার্য ভূখণ্ড হিসেবে দেখতে চায়।
প্রশ্নোত্তর পর্ব এখানেই শেষ।