Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪৩ || তাওহীদের পতাকাবাহীদের প্রতি ।। পঞ্চম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪৩ || তাওহীদের পতাকাবাহীদের প্রতি ।। পঞ্চম পর্ব

    আত তিবয়ান পাবলিকেশন্স মিডিয়া পরিবেশিত
    “‘তাওহীদের পতাকাবাহীদের প্রতি
    ।।এর থেকে– পঞ্চম পর্ব


    পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রকাশ হয়ে যায় মুনাফিকদের পরিচয়

    আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা পরীক্ষার মাধ্যমে মু’মিনদের কাতার থেকে ছেঁকে ফেলেন মুনাফিকদের এবং মু’মিনদেরও তাদের ঈমানের স্তর অনুযায়ী শ্রেণীবিন্যাস করে দেন। তিনি এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনঃ

    মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি এই কথা বললেই উহাদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেয়া হবে? আমি তো ইহাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা সত্যবাদী এবং তিনি অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা মিথ্যাবাদী। (সূরা আনকাবুত ২৯:২-৩)

    এছাড়া বহু হাদীস থেকেও দেখা যায় যে, সবচেয়ে বেশি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন নবীরা, তারপর যাদের ঈমান ছিল সবচেয়ে বেশি, তারপর তাদের চেয়ে কিছুটা কম ঈমান যাদের, এভাবে শেষ পর্যন্ত।

    মুনাফিকরা এইসব পরীক্ষা থেকে বেঁচে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ইসলামকে সহজ করে নিতে সবরকম প্রচেষ্টা চালায়। যদিও এই সহজ করে নিতে গিয়ে তাদের বড় মূল্য দিতে হয় (অর্থাৎ ঈমান এবং আখিরাত দুই দিকই হারাতে হয়)। প্রাথমিক পরীক্ষাতেই মু’মিনদের সারি থেকে এই মুনাফিকরা আলাদা হয়ে যাবে। এরা কাফিরদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে, দাওয়াকে বিকৃতি করে, জিহাদের পথে চলতে নিষেধ করে। তারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়া খরিদ করে নেয়।

    তারাই সৎ পথের বিনিময়ে ভ্রান্ত পথ এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করেছে; আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল! (সূরা বাকারা ২:১৭)

    এরা সেই সব মানুষ যারা দাওয়াহ (ইসলামের দিকে আহবান)-কে বিকৃত করে; তারা দাওয়াহকে হালকা করতে থাকে এবং এর কিছু অংশ গোপন করতে থাকে যতক্ষণ না তাগুত এদের কাজে খুশি হয়। তারা এর সাথে সাথে তাদের অন্যান্য কুকাজও চালাতে থাকে, আর দাবী করতে থাকে যে তারা এসব করছে ‘দাওয়াহ এবং মুসলিমদের উপকারের জন্যই’। অর্থাৎ, হয় তারা নিজেদের কুকর্মকে সৎকাজের আবরণ দিতে চায়, আর নয়তো শয়তানের কুমন্ত্রণায় তারা নিজেরাই হয়তো কুকর্মকেই সৎকাজ মনে করে। তবে যখনই তাদের কাজকর্মকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং ‘আল-ওয়ালা ওয়াল বারাআ-এর পাল্লায় মাপা হয়, তখনই তাদের কুরূপ প্রকাশ হয়ে যায়- কারণ সত্য মিথ্যাকে পরাস্ত করে। তারা যে কত বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা স্পষ্টই বোঝা যায় তাদের ব্যাপারে আমাদের সাবধান করতে নাযিলকৃত আয়াতের সংখ্যা এবং এগুলোর বক্তব্যের তীব্রতা থেকে, রাসূল বলেন, “আমি তোমাদের জন্য যা ভয় করি তা হলো, বিদ্বান এবং ভাল বক্তা কোন মুনাফিকের পেশ করা যুক্তি।” (ইমরান ইবনে হুসেন থেকে বর্ণিত, ইবনে হিব্বান)

    আর আল্লাহ আমাদের সতর্ক করেছেনঃ

    তাদেরকে যখন বলা হয়, পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি কর না, তারা বলে, আমরাই তো শান্তি স্থাপনকারী। সাবধান! এরাই অশান্তি সৃষ্টিকারী কিন্তু এরা বুঝতে পারে না। (সূরা বাকারা ২:১১-১২)

    তারা তাদের শপথগুলিকে ঢাল স্বরূপ ব্যবহার করে আর তারা আল্লাহর পথ হতে মানুষকে নিবৃত্ত করে। তারা যা করছে তা কত মন্দ! (সূরা মুনাফিকূন ৬৩:২)

    তুমি যখন উহাদের দিকে তাকাও উহাদের দেহাকৃতি তোমার নিকট প্রীতিকর মনে হয় এবং উহারা যখন কথা বলে, তুমি সাগ্রহে উহাদের কথা শ্রবণ কর যদিও উহারা দেওয়ালে ঠেকান কাঠের স্তম্ভ সদৃশ; উহারা যে কোন শোরগোলকে মনে করে উহাদেরই বিরুদ্ধে। উহারাই শত্রু, অতএব উহাদের সম্পর্কে সতর্ক হও; আল্লাহ উহাদেরকে ধ্বংস করুন! বিভ্রান্ত হইয়া উহারা কোথায় চলছে! (সূরা মুনাফিকূন ৬৩:৪)

    তারা তাদের এই রোগে (নিফাক) ভুগতে থাকে প্রধানত এসব কারণেঃ


    (১) তাগুতকে বেশি ভয় করা এবং আল্লাহকে ভয় না পাওয়া –

    মানুষের মধ্যে কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি, কিন্তু আল্লাহর পথে যখন উহারা নিগৃহীত হয়, তখন উহারা মানুষের পীড়নকে আল্লাহর শাস্তির মত গণ্য করে এবং তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে কোন সাহায্য আসলে উহারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সংগেই ছিলাম। বিশ্ববাসীর অন্তঃকরণে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?” (সূরা ‘আনকাবুত ২৯:১০)

    এবং যাদের অন্তঃকরণে ব্যাধি রয়েছে তুমি তাদেরকে সত্বর তাদের সাথে মিলিত হতে দেখবে এই বলে, আমাদের আশংকা হয় আমাদের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটবে….. (সূরা মা‘য়িদা ৫:৫২)

    তুমি কি তাদেরকে দেখ নাই যাদেরকে বলা হয়েছিল, তোমরা তোমাদের হস্ত সংবরণ কর, সালাত কায়েম কর এবং যাকাত দাও? অতঃপর যখন তাদের যুদ্ধের বিধান দেওয়া হল তখন তাদের একদল মানুষকে ভয় করছিল আল্লাহ ভয় করার মত অথবা তদপেক্ষা অধিক, এবং বলতে লাগল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে যুদ্ধের বিধান কেন দিলে? আমাদেরকে কিছুদিনের অবকাশ দাও না?’ বল, ‘পার্থিব ভোগ সামান্য এবং যে মুত্তাকী তার জন্য পরকালই উত্তম। তোমাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও যুলুম করা হবে না।’” (সূরা নিসা ৪:৭৭)

    আর স্মরণ কর, মুনাফিকরা ও যাদের অন্তরে ছিল ব্যাধি, তারা বলছিল, আল্লাহ এবং তার রাসূল আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা প্রতারণা ব্যতীত কিছুই নয়। (সূরা আহযাব ৩৩:১২)


    (২) দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা, এর আরাম-আয়েশের প্রতি আকর্ষণ এবং ত্যাগ স্বীকারে অনিচ্ছাঃ

    যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তা গোপন করে, আর আমি আখিরাতে কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। (সূরা নিসা ৪:৩৭)

    মুমিনরা বলে, একটি সূরা অবতীর্ণ হয় না কেন? অতঃপরযদি দ্ব্যর্থহীন কোন সূরা অবতীর্ণ হয় এবং তাতে যুদ্ধের কোন নির্দেশ থাকেতুমি দেখবে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা মৃত্যু ভয়ে বিহ্বল মানুষের মততোমার দিকে তাকাচ্ছে। শোচনীয় পরিণাম উহাদের। (সূরা মুহাম্মদ ৪৭:২০)

    “…….. এবং বলতে লাগল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান কেন দিলে? আমাদেরকে কিছুদিনের অবকাশ দাও না?’ বল, ‘পার্থিব ভোগ সামান্য এবং যে মুত্তাকী তার জন্য পরকালই উত্তম। তোমাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও যুলুম করা হবে না।’” (সূরা নিসা ৪:৭৭)


    (৩) বুদ্ধির অভাব বা হৃদয়ের কোমলতার এতই অভাব যে তারা বর্তমানে নির্যাতিত মুসলিম-মুসলিমাদের কষ্ট বুঝতে পারে নাঃ

    ইহা এই জন্য যে, শয়তান যা প্রক্ষিপ্ত করে তিনি উহাকে পরীক্ষাস্বরূপ করেন তাদের জন্য যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, যারা পাষাণহৃদয়। নিশ্চয়ই যালিমরা দুস্তর মতভেদে রয়েছে। (সূরা হাজ্জ ২২:৫৩)

    তারা বধির, মূক, অন্ধ, সুতরাং তারা ফিরবে না। (সূরা বাকারা ২:১৮)

    এই মুনাফিকরা মু’মিনদের যেসব ক্ষতি করতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হলো- মু’মিনদের জিহাদ এবং তাওয়াক্কুলের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা এবং মু’মিনদের মনে কাফিরদের প্রতি ভয় ঢুকিয়ে দেয়া। তারা এসব কাজে লিপ্ত কারণ, তারা আল্লাহ সঠিকভাবে চেনে না, আর তারা চিনবেই বা কিভাবে? তারাতো আল্লাহর কথা খুব কমই স্মরণ করে এমনকি তারা যদি কখনো ভাল কাজও করে তাতেও নিয়তের বিশুদ্ধতা থাকে না, বেশির ভাগই হলো মানুষকে দেখানোর জন্য ও তাদের প্রশংসা পাবার জন্য।

    নিশ্চয়ই মুনাফিকগণ আল্লাহর সহিত ধোঁকাবাজি করে; বস্তুতঃ তিনি তাদেরকে উহার শাস্তি দেন আর যখন তারা সালাতে দাড়ায় তখন শৈথিল্যের সহিত দাড়ায়, কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে। (সূরা নিসা ৪:১৪২)

    কোন মানুষ যদি ভালো বক্তা হয়, অথচ তার ‘রব’-এর ক্ষমতা বোঝার জন্য বা এই দুনিয়ার জীবন এবং আখেরাতের জীবনের মর্ম বোঝার জন্য যে ইলম দরকার, সেই ইলম চর্চা না করে – তাহলে তার এই সীমিত জ্ঞান তাকে নিশ্চিতভাবেই ভুল পথে নিয়ে যাবে।

    আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ বলেছেন, “কেউ যদি এমন কোন জ্ঞান শিক্ষা করে যা দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যায়, অথচ সে সেটা করলো দুনিয়াবি কোন লাভের আশায় – তাহলে কিয়ামতের দিন সে জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না।” (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী)

    রকম মানুষ কোরআন-হাদীসের জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও দ্বীনের সঠিক বুঝ থেকে বঞ্চিত থাকে। এ জন্যই আল্লাহর রাসূল বলেছেন, “একজন মুনাফিকের মধ্যে কখনোই দুইটি গুণ এক সাথে থাকবে না – জ্ঞান এবং ভাল আচরণ।”

    এবং আল-কোরআনে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ আমাদের সর্তক করে বলছেনঃ

    তুমি যখন উহাদের দিকে তাকাও উহাদের দেহাকৃতি তোমার নিকট প্রীতিকর মনে হয় এবং উহারা যখন কথা বলে, তুমি সাগ্রহে উহাদের কথা শ্রবণ কর যদিও উহারা দেওয়ালে ঠেকান কাঠের স্তম্ভ সদৃশ;” (সূরা মুনাফিকূন ৬৩:৪)

    উহারা উহাদের শপথগুলিকে ঢালস্বরূপ ব্যবহার করে আর উহারা আল্লাহর পথ হতে মানুষকে নিবৃত্ত করে। উহারা যা করছে তা কত মন্দ! (সূরা মুনাফিকূন ৬৩:২)

    মুনাফিকরা যে ধরনের ওজুহাত দেখায়, যেভাবে মু’মিনদের জিহাদ ও তাওয়াক্কুল থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করে, আর যেভাবে মু’মিনদের মনে কাফিরদের প্রতি ভয় ঢুকিয়ে দেয়- এই সবই আল্লাহ ফাঁস করে দিয়েছেন। একজন আলেম সত্যিই বলেছেন, ‘যাদের মন এই দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা এবং মৃত্যুর প্রতি ঘৃণায় পরিপূর্ণ, তারা ভীরু-কাপুরুষ ছাড়া কি হতে পারে? বর্তমানে

    এসব লোকেরা তাদের মিথ্যা অজুহাত এবং ভ্রান্ত চিন্তাধারাকে, ইসলামী ভাষায় মুখোশ পরিয়ে এবং নিজেদের তথাকথিত জ্ঞান এবং যুক্তির মাধ্যমে, গোপন রাখতে চায়- আর দাবী করে তারা ইসলামের ভালোর জন্যই কাজ করছে। তবে প্রথম কাতারের মু’মিনগণ বসে থাকবে না, তারা ঠিকই তাগুতকে ধ্বংস করে তাওহীদের দাওয়াহ এবং তরবারি নিয়ে এগিয়ে যাবে- আর মুনাফিকরা তাদের মিথ্যা অজুহাত নিয়েই পড়ে থাকবে, এরা নিজেরাও বিভ্রান্ত এবং অন্যদের বিভ্রান্তিতে নিতে চায়।

    তোমরা উহাদের নিকট ফিরে আসলে উহারা তোমাদের নিকট অজুহাত পেশ করবে। বলিও অজুহাত পেশ কর না, আমরা তোমাদেরকে কখনও বিশ্বাস করবো না; আল্লাহ আমাদেরকে তোমাদের খবর জানিয়ে দিয়েছেন এবং আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন এবং তাঁহার রাসূলও……। (সূরা তাওবা ৯:৯৪)

    এ চরিত্রের মানুষেরা পূর্বেও বলতোঃ

    “…….. আমাকে অব্যাহতি দাও এবং আমাকে ফিতনায় ফেল না। (সূরা তাওবা ৯:৪৯)

    “…….. গরমের মধ্যেঅভিযানে বের হইও না,” (সূরা তাওবা ৯:৮১)

    “…….. যদি যুদ্ধ সংঘটিত হবে তা জানতাম তবে নিশ্চিতভাবে তোমাদের অনুসরণ করতাম (সূরা আলি ’ইমরান ৩:১৬৭)

    “…….. হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান কেন দিলে? আমাদেরকে কিছুদিনের অবকাশ দাও না?” (সূরা নিসা ৪:৭৭)

    “…….. ইহাদের দ্বীন ইহাদিগকে বিভ্রান্ত করেছ। (সূরা আনফাল ৮:৪৯)

    “…….. নির্বোধগণ যেরূপ ঈমান এনেছে আমরাও কি সেইরূপ ঈমান আনব?” (সূরা বাকারা ২:১৩)

    “…….. এখানে তোমাদের কোন স্থান নেই, তোমরা ফিরে চল,” (সূরা আহযাব ১৩)

    “…….. ‘হে মুসা! সেখানে এক দুর্দান্ত সম্প্রদায় রয়েছে এবং তারা সেই স্থান হতে বাহির না হওয়া পর্যন্ত আমরা কখনই সেখানে কিছুতেই প্রবেশ করব না; তারা সেই স্থান হতে বাহির হয়ে গেলেই আমরা প্রবেশ করব।’” (সূরা আহযাব ১৩)

    “…….. ‘আমাদের ধন-সম্পদ ও পরিবার-পরিজন আমাদেরকে ব্যস্ত রেখেছে, অতএব আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।’” (সূরা মা‘য়িদাঃ ২২)

    “…….. আমাদের বাড়িঘর অরক্ষিত; অথচ ঐগুলি অরক্ষিত ছিল না, আসলে পলায়ন করাই ছিল উহাদের উদ্দেশ্য। (সূরা ফাতহ ১১)

    কিন্তু আল্লাহ তা’আলা সত্য প্রকাশ করে দিয়েছেনঃ

    উহারাতোমাদের সহিত বাহির হলে তোমাদের বিভ্রান্তিই বৃদ্ধি করত এবং তোমাদের মধ্যেফিতনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের মধ্যে ছুটাছুটি করত। তোমাদের মধ্যেউহাদের জন্য কথা শুনবার লোক আছে। আল্লাহ যালিমদের সম্বদ্ধে সবিশেষ অবহিত। (সূরা আহযাব ৩৩:১৩)

    তোমরা কি মনে কর যে, তোমাদেরকে এমনি ছাড়িয়া দেয়া হবে যখন পর্যন্ত আল্লাহ না প্রকাশ করেন তোমাদের মধ্যে কারা মুজাহিদ এবং কারা আল্লাহ ও তাঁহার রাসূল ও মুমিনগণ ব্যতীত অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নাই? তোমরা যা কর, সে সম্বদ্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। (সূরা তাওবা ৯:৪৭)

    যারা ঘরে বসে রইল এবং তাদের ভাইদের সম্বদ্ধে বলল যে, তারা তাদের কথামত চললে নিহত হত না, তাদেরকে বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে নিজদেরকে মৃত্যু হতে রক্ষা কর। (সূরা তাওবা ৯:১৬)

    পরীক্ষার মাধ্যমে আল্লাহ প্রথম সারির মু’মিনদের সামনে মুনাফিকদের চিহিৃত করে দেন-

    এবং মুমিনগণ বলবে, ‘ইহারাই কি তারা যারা আল্লাহ নামে দৃঢ় শপথ করেছিল যে, তারা আমাদের সঙ্গেই আছে?’ তাদের কার্য নিষ্ফল হয়েছে; ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। (সূরা মা‘য়িদা ৫:৫৩)

    প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আসুন আমরা আল্লাহর কাছে তওবা করি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করি;

    “…….. আল্লাহ যাকে ইচ্ছা দীনের প্রতি আকৃষ্ট করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী তাকে দীনের দিকে পরিচালিত করেন। (সূরা শূরা ৪২:১৩)

    হে আল্লাহ! তোমার নবীরা মানুষের সতর্ককারী হিসেবে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। হে আল্লাহ, আমাদের ঐ মুনাফিকদের মতো করেন না যাদের ব্যাপারে আপনি বলেছেনঃ

    মুনাফিকগণ তো জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে এবং তাদের জন্য তুমি কখনও কোন সহায় পাবে না। (সূরা নিসা ৪:১৪৫)

    হে আল্লাহ! আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে জান্নাত সত্য, জাহান্নামও সত্য। হে আল্লাহ, আমরা সেই আগুনকে ভয় করি যার চারপাশ আকর্ষণীয় বস্তু এবং লোভনীয় এই পথ দিয়ে ঘেরা- হে আল্লাহ, আপনি আমাদের এর থেকে রক্ষা করুন। আল্লাহ আমাদের নিফাক এবং এর শাখা প্রশাখা যা আমরা জানি বা না জানি – তার থেকে আমাদের রক্ষা করুন। আমাদের মিথ্যা, বিশ্বাসঘাতকতা, খারাপ আচরণ, সালাতে অলসতা, আপনার স্মরণের অভাব, তাগুতের প্রতি ভয়, লোক দেখানোর প্রবণতা, ধার্মিক মুসলিম ও মুজাহিদদের ব্যাপারে কুৎসা রটানো, দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা এবং জিহাদের প্রতি ঘৃণা থেকে দূরে রাখুন। হে আল্লাহ আমাদের মনকে তুমি তোমার প্রতি, তোমার পছন্দের কাজের প্রতি এবং তোমার পছন্দের বান্দার প্রতি ভালবাসা পরিপূর্ণ করে দাও, আমাদের মনকে জিহাদের প্রতি ভালবাসায় এমনভাবে পূর্ণ করে দাও, যেন এর কথা শুনলেই জান্নাত এবং সেখানে তুমি যেসব আরাম আয়েশের ব্যবস্থা করে রেখেছো তা আমাদের মনে ভেসে উঠে, যেমন তুমি বলেছ

    আমি আমার সত্যপন্থী বান্দাদের জন্য এমন কিছু প্রস্তুত করে রেখেছি যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান কখনো শুনেনি, কোন মন কখনো উপলব্ধি করেনি।” (বুখারী, মুসলিম)

    হে আল্লাহ! আমাদের আপনার প্রতি তেমন অনুগত করে দিন যেমন আপনি বলেছেনঃ

    হে মুমিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সম্মুখে তোমরা কোন বিষয়ে অগ্রণী হইও না এবং আল্লাহকে ভয় কর; আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা হুজুরাত ৪৯:১)

    হে আল্লাহ! আমাদের জিহ্বাকে মুনাফিকদের মতো কথা বলা থেকে বিরত রাখুন; আমাদের জিহ্বাকে রক্ষা করুন, যা সেই চরমভীতির দিনে (কিয়ামতের দিন) আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে, আমাদের জিহ্বাকে রক্ষা করুন, যার কারণে অতীতে অসংখ্য মানুষ জাহান্নামী হয়েছে, হে আল্লাহ, একমাত্র আপনিই পারেন বাতাসে ঘূর্ণায়মান পালকের মতো করে আমাদের মনকে ঘুরিয়ে দিতে – “ইয়া মুকালি­বাল ক্বুলুব, ছাব্বিত ক্বুলুবানা আ’লা দ্বীনিকা (হে অন্তরের নিয়ন্ত্রণকারী, আমাদের অন্তরকে আপনার দ্বীনের উপর রাখুন)”।

    হে আমাদের রব! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনপ্রবণ করিও না এবং তোমার নিকট হতে আমাদেরকে করুণা দাও, নিশ্চয়ই তুমি মহাদাতা। (সূরা আলি ’ইমরান ৩:৮)

    তারা বলল, হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর এবং দয়া না কর তবে তো আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব। (সূরা আ‘রাফ ৭:২৩)





    ​আরও পড়ুন
Working...
X