আত তিবয়ান পাবলিকেশন্স মিডিয়া পরিবেশিত
“‘তাওহীদের পতাকাবাহীদের প্রতি
।।এর থেকে– ষষ্ঠ পর্ব
“‘তাওহীদের পতাকাবাহীদের প্রতি
।।এর থেকে– ষষ্ঠ পর্ব
পরীক্ষার মাধ্যমে মু’মিনদের পরিশুদ্ধি এবং উন্নতি
পরীক্ষার মাধ্যমে মু’মিনদের ঈমানের স্তর অনুযায়ী তাদেরকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। প্রত্যেকেই তাদের ভালো আমল এবং আত্মত্যাগের মাত্রানুযায়ী আখিরাতে তাদের পুরষ্কার পাবে এবং দুনিয়াতেও একই হিসেব মতো অন্যান্য মু’মিনদের থেকে ওয়ালা লাভ করবে। প্রত্যেক মুসলিমেরই উচিত সর্বোচ্চ স্তরের মুসলিম অর্থাৎ সাবেকুন হওয়ার জন্য চেষ্টা করা।
“আর অগ্রবর্তীগণই তো অগ্রবর্তী, উহারাই নৈকট্যপ্রাপ্ত- নি‘আমতপূর্ণ উদ্যানে; বহু সংখ্যক হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে; এবং অল্প সংখ্যক হবে পরবর্তীদের মধ্য হতে।” (সূরা ওয়াকি‘য়াহ ৫৬:১০-১৪)
যেসব মুসলিম সৎকাজে এগিয়ে আছে তাদের উচিত ঐসব মুসলিম ভাইদের উপদেশ দেয়া যারা পিছিয়ে পড়ছে। কারণ, হিসবাহ ছাড়া অর্থাৎ একে অন্যকে সৎকাজ এবং সবরের জন্য উপদেশ দেয়া ছাড়া, মু’মিনরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
আল্লাহ পরীক্ষা সৃষ্টি করেছেন তাঁর সেরা বান্দাদের অবস্থান উন্নয়ন করতে, যাদের গুণাবলীর আল্লাহ বর্ণনা দিয়েছেন। আসুন আমরা এসব পরীক্ষার মুখোমুখি হই এবং নফসের ওয়াস ওয়াসা না শুনে ঠিক যেভাবে আল্লাহ চান সেই ভাবেই এর মোকাবেলা করি। আল্লাহ আমাদেরকে সাবেকুনদের মতো গুণাবলী অর্জন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
“মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাতে সন্তুষ্ট এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। ইহা মহাসাফল্য।” (সূরা তাওবা ৯:১০০)
সাবেকুন তারাই যারা তাদের ঈমানের বর্মে সজ্জিত হয়ে যে কোন পরীক্ষার মুখোমুখি হয় এবং যে কোন শত্রুর মোকাবেলা করে (আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে সাহায্য পেয়ে)। জান্নাতের পুরষ্কার সমূহের প্রতি তাদের ইয়াক্বীন আর তা অর্জনের আকাঙ্ক্ষার কারণে এই দুনিয়ার সমস্ত সম্পদ ও আনন্দই তারা তুচ্ছ বলে মনে করে। ফলে সহজেই তারা তাদের জীবন এবং সম্পদ আল্লাহর কাছে বিক্রি করে দিয়ে সফলতা লাভ করে, আর অন্যরা দেরি করতেই থাকে যতক্ষণ না তাদের জীবন ও সম্পদ আপনা থেকেই তাদের কাছ থেকে চলে যায় আর মৃত্যু তাদের গ্রাস করে নেয়। আল্লাহর শপথ ইবনে নুহাস (আল্লাহ তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন), তার জিহাদ বিষয়ক বইতে সত্যি কথাই বলেছেন, ‘সাহস কখনো সাহসী ব্যক্তির জীবনকে ছোট করে দেয় না, আর বিরত থাকাটা কখনো যারা পিছিয়ে পড়ে তাদের জীবনকে দীর্ঘ করে না।’ সাবেকুনরা, শিরকী এবং কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদে, সর্বদা দৃঢ় থাকে। এমনকি প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হলেও তারা ধৈর্য ধারণ করে। তারা সহজে হতাশ হয় না, কারণ তাদের আছে তাওয়াক্কুল ও ইয়াকীন। তারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পায় না। তাই তাদের দুর্বল অবস্থা আল্লাহর সাথে তাদের সম্পর্ক আরো মজবুত করে দেয়। শত্রুর সংখ্যা তাদেরকে কোন রকম দুশ্চিন্তায় ফেলতে পারে না- কারণ, তারা তাদের রবের ক্ষমতার ব্যাপারে জানে, আর গায়েব তাদের কাছে কোন বক্তৃতার বিষয় নয়, বরং এর উপর তাদের আছে শক্ত ইয়াক্বীন। তাদের একমাত্র চিন্তা হলো নিজেদের দৃঢ় রাখা (তাওহীদে, তাওয়াক্কুলে, আনুগত্যে, সাহসে এবং ক্বিতালে) কুৎসারটনাকারীর কুৎসা তাদেরকে থামাতে পারেনা, মুনাফিকদের প্ররোচনা তাদেরকে তাগুতের ভয়ে ভীত করতে পারেনা। তারা ক্ষমতাধর যালিমদের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে হক্ব ঘোষণা করে। কোন ধরনের অত্যাচার বা শাস্তির সাধ্য নেই তাদের অন্তরকে কাবু করার, তাদের সবরকে কমানোর বা তাদের শহীদ হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করার। অত্যাচারের মুখে তারা শ্রেষ্ঠ পথটিই অবলম্বন করে, যা রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের শিখিয়েছেন, “আল্লাহর সাথে কখনো শরীক করো না, এমনকি যদি তোমাকে খন্ড খন্ড করা হয় বা পুড়িয়েও মারা হয়, তবুও না।” (ইবনে মাজাহ এবং বায়হাকীতে বর্ণিত, সহীহ আত-তারগীবে আল-আলবানী কর্তৃক সত্যায়িত) যালিমের প্রতি তাদের কথা হলো ফেরাউনের জাদুকররা ঈমান আনার পর যেমন কথা বলেছিল। এমনকি চরম হতাশাজনক (যাদের ইয়াক্বীন, তাওয়াক্কুল ও রবের ব্যাপারে জ্ঞানের অভাব তাদের বিবেচনায়) অবস্থাতেও এরা সেই কথাই বলবে যা এক আলেম একবার বলেছিলেন –
বন্ধুরা, আমি আমার মর্যাদা নিয়েই বেঁচে থাকবো,
আর চিরকাল মুনাফিকদের চূর্ণ করতে থাকবো।
মর্যাদার পথে আমি চলতেই থাকবো।
এমনকি শত্রুরা আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেললেও
আমি দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবো শাহাদার দিকে।
কারণ মৃত্যুর সাথে আমার চলছে প্রতিযোগিতা।
তাই যারা আমাকে চেনো, তারা কখনো বল না-
কেন তুমি নিজেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছো?
তাই যারা আমাকে চেনো, তারা কখনো বল না-
কেন তুমি নিজেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছো?
কারণ আমি তো এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী মু’মিন
আর আমি তো অসম্মান আর অমর্যাদায় সন্তুষ্ট নই
আর আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য তো আল্লাহর সন্তুষ্টি
আর আমি এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সফল হবই,
তাই তারা যদি প্রতিদিনই আমার রক্ত ঝরায়
আর আমার ও ভাইদের মাঝে দেয়াল তুলে দেয়
আর আমার জীবনকে কষ্টপূর্ণ করে দেয়
আর বিশ্ব আমার জন্য চিরঅন্ধকার হয়ে যায়,
(এমনকি) তখনও, তারা পারবে না,
আমার অন্তরে পৌঁছাতে, বা আমার দৃঢ়তা থেকে সরাতে।
আমি তাদের অবজ্ঞা করতেই থাকবো
আমি তাদের অবজ্ঞা করতেই থাকবো, কারণ
আমার পাথেয় হলো আমার কিতাব (কোরআন)
এবং আল-মুস্তফার বাণী,
এগুলোই আমার অনুপ্রেরণা।
আমি এক দুর্ভেদ্য দুর্গই রয়ে যাবো
রয়ে যাবো মর্যাদার আকাশে উঁচু হয়ে,
এবং অচিরেই ফিরে আনবো হারানো সেদিনগুলো,
সালাহ্উদ্দিন আর অন্যান্য সিংহদের স্মৃতিতে।
অচিরেই আসবে সে দিন যখন যালিম
এবং মুনাফিক সর্দাররা ছটফট করবে কষ্টে।
মানুষ সুখ খোঁজে তাদের কামনা বাসনা, বিলাস বাসনে
অথচ বেশির ভাগকেই পুড়তে হবে অনন্ত আগুনে।
আর আমি সুখ খুঁজি মর্যাদাপূর্ণ পথে-
সবচেয়ে সুমধুর সুখ, জান্নাতে।
আর চিরকাল মুনাফিকদের চূর্ণ করতে থাকবো।
মর্যাদার পথে আমি চলতেই থাকবো।
এমনকি শত্রুরা আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেললেও
আমি দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবো শাহাদার দিকে।
কারণ মৃত্যুর সাথে আমার চলছে প্রতিযোগিতা।
তাই যারা আমাকে চেনো, তারা কখনো বল না-
কেন তুমি নিজেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছো?
তাই যারা আমাকে চেনো, তারা কখনো বল না-
কেন তুমি নিজেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছো?
কারণ আমি তো এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী মু’মিন
আর আমি তো অসম্মান আর অমর্যাদায় সন্তুষ্ট নই
আর আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য তো আল্লাহর সন্তুষ্টি
আর আমি এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সফল হবই,
তাই তারা যদি প্রতিদিনই আমার রক্ত ঝরায়
আর আমার ও ভাইদের মাঝে দেয়াল তুলে দেয়
আর আমার জীবনকে কষ্টপূর্ণ করে দেয়
আর বিশ্ব আমার জন্য চিরঅন্ধকার হয়ে যায়,
(এমনকি) তখনও, তারা পারবে না,
আমার অন্তরে পৌঁছাতে, বা আমার দৃঢ়তা থেকে সরাতে।
আমি তাদের অবজ্ঞা করতেই থাকবো
আমি তাদের অবজ্ঞা করতেই থাকবো, কারণ
আমার পাথেয় হলো আমার কিতাব (কোরআন)
এবং আল-মুস্তফার বাণী,
এগুলোই আমার অনুপ্রেরণা।
আমি এক দুর্ভেদ্য দুর্গই রয়ে যাবো
রয়ে যাবো মর্যাদার আকাশে উঁচু হয়ে,
এবং অচিরেই ফিরে আনবো হারানো সেদিনগুলো,
সালাহ্উদ্দিন আর অন্যান্য সিংহদের স্মৃতিতে।
অচিরেই আসবে সে দিন যখন যালিম
এবং মুনাফিক সর্দাররা ছটফট করবে কষ্টে।
মানুষ সুখ খোঁজে তাদের কামনা বাসনা, বিলাস বাসনে
অথচ বেশির ভাগকেই পুড়তে হবে অনন্ত আগুনে।
আর আমি সুখ খুঁজি মর্যাদাপূর্ণ পথে-
সবচেয়ে সুমধুর সুখ, জান্নাতে।
হে আল্লাহ, আপনি আমাদের এই কাতারের মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করুন, আপনার কথা আমাদের আশা যোগায়-
“এবং অল্প সংখ্যক হবে পরবর্তীদের মধ্যে হতে।” (সূরা ওয়াকি‘য়াহ ৫৬:১৪)
এই কাতারে অন্তর্ভুক্ত করার আগে আল্লাহ অবশ্যই আমাদের পরীক্ষা করবেনঃ
“তোমরা হীনবল হইও না এবং দুঃখিতও হইও না; তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মু’মিন হও। যদি তোমাদের আঘাত লাগে থাকে, অনুরূপ আঘাত তো উহাদেরও লেগেছিল। মানুষের মধ্যে এই দিনগুলির পর্যায়ক্রমে আমি আবর্তন ঘটাই, যাতে আল্লাহ মু’মিনগণকে জানতে পারেন এবং তোমাদের মধ্যে হইতে কতককে শহীদ রূপে গ্রহণ করতে পারেন। এবং আল্লাহ যালিমদেরকে পছন্দ করেন না; তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, যখন আল্লাহ তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে আর কে ধৈর্যশীল তা এখনও প্রকাশ করেন নাই? মৃত্যুর সম্মুখীন হওয়ার পূর্বে তোমরা তো উহা কামনা করতে, এখন তো তোমরা তা স্বচক্ষে দেখলে। মুহাম্মাদ একজন রাসূল মাত্র; তাহার পূর্বে বহু রাসূল গত হয়েছে। সুতরাং যদি সে মারা যায় অথবা সে নিহত হয় তবে তোমরা কি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে? এবং কেউ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনও আল্লাহর ক্ষতি করতে পারবে না; বরং আল্লাহ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদেরকে পুরস্কৃত করবেন। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কারও মৃত্যু হতে পারে না, যেহেতু উহার মেয়াদ অবধারিত। কেহ পার্থিব পুরষ্কার চাইলে আমি তাকে তার কিছু দেই এবং শীঘ্রই কৃতজ্ঞদিগকে পুরস্কৃত করব। এবং কত নবী যুদ্ধ করেছে, তাদের সাথে বহু আল্লাহওয়ালা ছিল। আল্লাহর পথে তাদের যে বিপর্যয় ঘটেছিল তাতে তাহারা হীনবল হয় নাই, দুর্বল হয় নাই এবং নত হয় নাই। আল্লাহ ধৈর্যশীলদেরকে ভালবাসেন। এই কথা ব্যতীত তাদের আর কোন কথা ছিল না, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপ এবং আমাদের কার্যে সীমালঙ্ঘন তুমি ক্ষমা কর, আমাদের পা সুদৃঢ় রাখ এবং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর।” (সূরা আলি ’ইমরান ৩:১৩৯-১৪৭)
“যেদিন দুই দল পরস্পরের সম্মুখীন হইয়াছিল, সেদিন তোমাদের উপর যে বিপর্যয় ঘটেছিল তা আল্লাহরই হুকুমে….।” (সূরা আলি ’ইমরান ৩:১৬৬)
“তোমরা কি মনে কর যে, তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হইবে যখন পর্যন্ত আল্লাহ না প্রকাশ করেন তোমাদের মধ্যে কারা মুজাহিদ এবং কারা আল্লাহ ও তাঁহার রাসূল ও মু’মিনগণ ব্যতীত অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নাই? তোমরা যা কর, সে সম্বদ্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।” (সূরা তাওবা ৯:১৬)
“অতএব যখন তোমরা কাফিরদের সহিত যুদ্ধে মুকাবিলা কর তখন তাদের গর্দানে আঘাত কর, পরিশেষে যখন তোমরা উহাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পরাভূত করবে তখন উহাদেরকে কষিয়া বাঁধবে; অতঃপর হয় অনুকম্পা, নয় মুক্তিপণ। তোমরা জিহাদ চালাবে যতক্ষণ না যুদ্ধ ইহার অস্ত্র নামিয়ে ফেলে। ইহাই বিধান। ইহা এইজন্য যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে উহাদেরকে শাস্তি দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি চান তোমাদের একজনকে অপরের দ্বারা পরীক্ষা করতে। যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তিনি কখনও তাদের কর্ম বিনষ্ট হতে দেন না।” (সূরা মুহাম্মদ ৪৭:৪)
“আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব, যতক্ষণ না আমি জানে নেই তোমাদের মধ্যে জিহাদকারী ও ধৈর্যশীলদেরকে এবং আমি তোমাদের ব্যাপারে পরীক্ষা না করি।” (সূরা মুহাম্মদ ৪৭:৩১)
“সুতরাং যারা আখিরাতের বিনিময়ে পার্থিব জীবন বিক্রয় করে তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করুক এবং কেহ আল্লাহর পথে জিহাদ করলে সে নিহত হোক অথবা বিজয়ী হোক আমি তাকে মহা পুরষ্কার দান করবই।” (সূরা নিসা ৪:৭৪)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মু’মিনদের নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে ইহার বিনিময়ে। তারা আল্লাহ পথে যুদ্ধ করে ও নিহত হয়। তাওরাত, ইনজীল ও কুরআনে এই সম্পর্কে তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি রয়েছে। নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর কে আছে? তোমরা যে সওদা করেছ সেই সওদার জন্য আনন্দিত হও এবং উহাই তো মহা সাফল্য।” (সূরা তাওবা ৯:১১১)
“হে মু’মিনগণ! তোমাদের মধ্যে কেহ দ্বীন হতে ফিরে গেলে নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনবেন যাদেরকে তিনি ভালবাসেন এবং যারা তাঁকে ভালবাসবে; তারা মু’মিনদের প্রতি কোমল ও কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে; তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবে না; ইহা আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।” (সূরা মা‘য়িদা ৫:৫৪)
“তারাই মু’মিন যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনে, পরে সন্দেহ পোষণ করে না এবং জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে, তারাই সত্যনিষ্ঠ।” (সূরা হুজুরাত ৪৯:১৫)
“যারা আল্লাহর পথে নিহত হইয়াছে তাদেরকে কখনই মৃত মনে করও না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত। আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে তারা আনন্দিত এবং তাদের পিছনে যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয় নাই তাদের জন্য আনন্দ প্রকাশ করে, এইজন্য যে, তাদের কোন ভয় নাই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। আল্লাহর নিয়ামত ও অনুগ্রহের জন্য তারা আনন্দ প্রকাশ করে এবং ইহা এই কারণে যে, আল্লাহ মু’মিনদের শ্রমফল নষ্ট করেন না। যখম হওয়ার পর যারা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে তাদের মধ্যে যারা সৎকার্য করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে চলে তাদের জন্য মহা পুরষ্কার রয়েছে। এদেরকে লোকে বলেছিল, তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে, সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় কর; কিন্তু ইহা তাদের ঈমান দৃঢ়তর করেছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কত উত্তম কর্মবিধায়ক। তারপর তারা আল্লাহর নিয়ামত ও অনুগ্রহসহ ফিরে এসেছিল, কোন অনিষ্ট তাদেরকে স্পর্শ করে নাই এবং আল্লাহ যাতে রাযী তারা তারই অনুসরণ করেছিল এবং আল্লাহ অনুগ্রহশীল।” (সূরা আলি ’ইমরান ৩:১৬৯-১৭৪)
“অতঃপর তালূত যখন সৈন্যবাহিনীসহ বাহির হল সে তখন বলল, আল্লাহ এক নদী দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করবেন। যে কেহ উহা হতে পান করবে সে আমার দলভুক্ত নহে; আর যে কেহ উহার স্বাদ গ্রহণ করবে না সে আমার দলভুক্ত; ইহা ছাড়া যে কেহ তার হস্তে এক কোষ পানি গ্রহণ করবে সেও। অতঃপর অল্প সংখ্যা ব্যতীত তারা উহা হতে পান করল। সে এবং তাহার সংগী ঈমানদারগণ যখন উহা অতিক্রম করল তখন তারা বলল, জালূত ও তার সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মত শক্তি আজ আমাদের নাই। কিন্তু যাদের প্রত্যয় ছিল আল্লাহর সহিত তাদের সাক্ষাত ঘটবে তারা বলল, আল্লাহর হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাভূত করেছে! আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। তারা যখন যুদ্ধার্থে জালূত ও তার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হল তখন তারা বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ধৈর্য দান কর, আমাদের পা অবিচলিত রাখ এবং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য দান কর।” (সূরা বাকারা ২:২৪৯-২৫০)
যেমন আসহাবুল উখদুদের ব্যাপারে বলা হয়েছে “…….. রাজা তখন একটি গভীর গর্ত খুড়ে তার ভেতরে আগুন জ্বালাতে আদেশ দিলো এবং বললোঃ যে এই বালকের দ্বীন থেকে সরে না আসবে তাকেই এই আগুনে নিক্ষেপ করো বা তাকেই আগুনে লাফ দিতে আদেশ করো। তারা এমনটাই করতে থাকলো যতক্ষণ না এক মহিলা তার শিশুসন্তান সহ আসলো। সে আগুনে ঝাঁপ দিতে দ্বিধা করছিল। কিন্তু শিশুটি বলে উঠলোঃ মা, সহ্য করো (এই পরীক্ষা), কারণ তুমি সঠিক পথে আছো।” (সহীহ মুসলিম)
আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমার প্রিয় মানুষটি ﷺ আমাকে উপদেশ দিলেন, “আল্লাহর সাথে কখনো শরীক করোনা, এমনকি যদি তোমাকে খন্ড খন্ড করা হয় বা পুড়িয়ে মারা হয়, তবুও না।” (ইবনে মাজা, বায়হাকী)
রাসূল ﷺ বলেছেন, “তিনটি (অবস্থা) – এগুলোতে যারা আছে তারা ঈমানের মিষ্টতা সঠিকভাবে বুঝতে পারবে….” আর বলেছিলেন, “….সে কুফরীতে ফিরে যাওয়াকে এমনভাবে ঘৃণা করবে যেমন সে ঘৃণা করে জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করতে।” (বুখারী, মুসলিম)
রাসূল ﷺ বলেছেন, “…. তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিদের মাঝে, কাউকে ধরে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তাকে পুঁতে রাখা হতো, তারপর করাত দিয়ে তার মাথা থেকে শরীর আলাদা করে ফেলা হতো; অথচ তার পরও সে তার ঈমান থেকে একচুলও সরতো না….।” (বুখারী)