তালেবানের সিয়াসি বিষয়াশয়ে সংশয়ে পড়া ভাইদের প্রতি -০২
গত পর্বে তালেবান ভাইদের সিয়াসি পলিসির শরয়ী দৃষ্টিকোণ নিয়ে কিছুটা আলোচনা হয়েছিল। এ পর্বে আরও দুয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
এক.
আপনি হয়তো শুনেছিলেন –বা সামনে শুনতে পারেন, যিনাকারীকে তালেবান কয়েকটি বেত্রাঘাত করে ছেড়ে দিয়েছে।
আপনি সন্দেহে পড়ে গেলেন, যিনার শাস্তি তো বিবাহিত হলে রজম করে হত্যা আর অবিবাহিত হলে একশো দুররা। তাহলে তালেবান অল্প কয়টা বেত্রাঘাত করেই কেন ক্ষান্ত?!
কেউ কেউ হয়তো আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রশ্ন করবেন, তাহলে কি তালেবান হুকুম বি গাইরি মা আনযালাল্লাহ করছে?!
মুহতারাম ভাই, যারা শরীয়াহর জন্য চার দশক ধরে সর্বস্ব কুরবানি দিয়ে আসছে, তাদের ব্যাপারে আপনি একটা সংবাদ শুনেই কেন বদ জন্ করছেন?
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ. –الحجرات 12
হে ইমানদারগণ, তোমরা অনেক রকমের জন্ থেকে দূরে থাক। কেননা, কিছু কিছু জন্ গুনাহ। -হুজুরাত ১২
হে ইমানদারগণ, তোমরা অনেক রকমের জন্ থেকে দূরে থাক। কেননা, কিছু কিছু জন্ গুনাহ। -হুজুরাত ১২
অর্থাৎ অনেক জন্-ই এমন হতে পারে যে, তা সত্য নয়; কিন্তু আপনি এ ধরনের বদ জন্ পোষণ করে গুনাহগার হয়ে গেলেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
إياكم والظن فإن الظن أكذب الحديث. -صحيح البخاري : 5717
তোমরা (শুধু শুধু) অনুমান (করে কথা বলা) থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, অনুমান (করে বলা কথা) মিথ্যা হয় বেশি। -সহীহ বুখারি ৫৭১৭
তোমরা (শুধু শুধু) অনুমান (করে কথা বলা) থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, অনুমান (করে বলা কথা) মিথ্যা হয় বেশি। -সহীহ বুখারি ৫৭১৭
অর্থাৎ তাহকিক করে নিশ্চিত না হয়ে শুধু অনুমান নির্ভর কোনো কথা বলবে না। কোনো কিছু কানে আসলে আগে তাহকিক করবে। তাহকিক করা ছাড়া শোনামাত্রই বিশ্বাস করে বসবে না এবং সন্দেহের পাহাড় গড়ে তুলবে না। হতে পারে তুমি যা শুনেছো তা মিথ্যা। হতে পারে তুমি যে ধারণা করেছো তা ভুল।
আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا. –الحجرات 6
হে ঈমানদারগণ! কোন ফাসেক তোমাদের নিকট কোন সংবাদ নিয়ে আসলে তোমরা ভালভাবে তা যাচাই করে দেখবে। -হুজুরাত ৬
হে ঈমানদারগণ! কোন ফাসেক তোমাদের নিকট কোন সংবাদ নিয়ে আসলে তোমরা ভালভাবে তা যাচাই করে দেখবে। -হুজুরাত ৬
অর্থাৎ কোনো মুসলিম যদি বিশ্বস্ত দ্বীনদার না হয়, তাহলে কারও বিরুদ্ধে কোনো কথা সে বললে শোনামাত্রই বিশ্বাস করবে না। আগে যাচাই করে দেখবে সত্য না মিথ্যা।
যখন মুসলিমের ব্যাপারেই এ কথা, তখন আপনার ভাইদের ব্যাপারে কুফফার মিডিয়ার কথা আপনি কিভাবে বিশ্বাস করতে পারেন?
বিশেষত যাদের ব্যাপারে আগে থেকেই জানা আছে যে, তারা ভাল, তাদের ব্যাপারে বিপরীত কিছু শুনা গেলে তো একদমই বিশ্বাস করা যাবে না।
ইবনে আশুর রহ. (১৩৯৩ হি.) বলেন,
قال العلماء: إن الظن القبيح بمن ظاهره الخير لا يجوز. -التحرير والتنوير (26/ 252)
উলামায়ে কেরাম বলেছেন, বাহ্যত যে ভাল মানুষ, তার ব্যাপারে মন্দ ধারণা নাজায়েয। -আততাহরির ওয়াততানভির ২৬/২৫২
উলামায়ে কেরাম বলেছেন, বাহ্যত যে ভাল মানুষ, তার ব্যাপারে মন্দ ধারণা নাজায়েয। -আততাহরির ওয়াততানভির ২৬/২৫২
অর্থাৎ যার জাহের ভাল মনে হয় কিন্তু বাতেন কেমন আমি জানি না, তার ব্যাপারেও বদ জন্ করা যাবে না। তাহলে যারা যুগের পর যুগ ধরে শরীয়াহর জন্য লড়াই করে আসছে, তাদের ব্যাপারে আপনি দুয়েকটি সংবাদের ভিত্তিতে কিভাবে বদ জন্ করলেন যে, ক্ষমতা পাওয়ার পর তারা শরীয়াহর খেলাফ হুকুম জারি করছে??
এ ধরনের ক্ষেত্রে তো আমাদের করণীয় ছিল যা আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
لَوْلَا إِذْ سَمِعْتُمُوهُ ظَنَّ الْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بِأَنْفُسِهِمْ خَيْرًا وَقَالُوا هَذَا إِفْكٌ مُبِينٌ. -النور: 12
(হে মুমিনগণ!) যখন তোমরা এ কথা শুনেছিলে তখন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা নিজেদের ব্যাপারে কেন ভাল ধারণা পোষণ করল না এবং (যবানে) এ কথা কেন বললো না যে, এ তো সুস্পষ্ট অপবাদ?! –নূর: ১১-১২
(হে মুমিনগণ!) যখন তোমরা এ কথা শুনেছিলে তখন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা নিজেদের ব্যাপারে কেন ভাল ধারণা পোষণ করল না এবং (যবানে) এ কথা কেন বললো না যে, এ তো সুস্পষ্ট অপবাদ?! –নূর: ১১-১২
অতএব, মুহতারাম ভাই, কুফফার মিডিয়ার কোনো খবর বিশ্বাস করার আগে যাচাই বাছাই করুন। তালেবানের ব্যাপারে এখন অনেক রকম অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষত ভারতীয় মিডিয়াগুলো তো যেন পাগল হয়ে গেছে। এক জন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ দেখলেই বুঝতে পারবে এগুলো সব বানোয়াট।
দুই.
যদি সত্যও হয়ে থাকে যে, আসলে তালেবান রজম বা শো দোররা না লাগিয়ে অল্প কয়টা বেত লাগিয়েই ক্ষান্ত, তাহলেও আপনার বদ জন্ করা ঠিক হবে না। এখানে আরও দুইটা মারহালা আছে-
ক. হদ কায়েমের জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত থাকে, যার কোনো একটা পাওয়া না গেলেও হদ কায়েম করা যায় না। তখন মুনাসিবমতো অন্য শাস্তি দেয়া হয়।
বিশেষত যিনার হদের মতো এমন কঠিন শর্ত আর কোনো হদে নেই। ব্যক্তি নিজে স্বীকার না করলে বায়্যিনাহ ও সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে যিনার হদ কায়েম করা প্রায় অসম্ভব। চার জন দ্বীনদার বিশ্বস্ত মুসলিম ব্যক্তি একেবারে স্বচক্ষে দোয়াত কলমের মতো দেখতে হবে।
মানুষ স্বাভাবিক এত প্রকাশ্যে যিনা করে না।
ইবনে কাসির রহ. বিদায়া নিহায়াতে লিখেছেন, তাতারিরা বাগদাদ দখল করার আগ পর্যন্ত বিগত ছয়শতো বছরের খেলাফতের শাসনে বাগদাদে কোনো যিনার হদ কায়েম হয়নি।
যিনার হদ এমনই এক কঠিন জিনিস। ব্যক্তি স্বীকার না করলে সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে কায়েম করা অসম্ভবই বলা যায়।
হয়তো আপনি দু’জনকে বিছানায় পেয়ে হাতে নাতে ধরে ফেললেন। কিন্তু আপনি কতটুকু দেখেছেন?
দোয়াত কলমের মতো?
অধিকন্তু আপনি একা দেখলে হবে না, চার জন এক সাথে দেখতে হবে। এটা প্রায় অসম্ভব। হয়তো তাদের বিছানায় পেয়েছেন। ধরে ফেলেছেন। তখন আপনি সর্বোচ্চ এতটুকু বলতে পারেন, এদেরকে এক বিছানায় পেয়েছি। কিন্তু তারা যিনা করেছে এটা নিশ্চিত বলতে পারবেন না। অন্যান্য আলামাত দেখে হয়তো আপনি অনেকটা নিশ্চিত, কিন্তু এটা হদের জন্য যথেষ্ট নয়।
এ ধরনের ক্ষেত্রে শরীয়াহর বিধান হলো তা’যির। অর্থাৎ মুনাসিব মতো এমন শাস্তি দেয়া যেন পরবর্তীতে এ ধরনের অপরাধ আর না করে। এ শাস্তি বেত্রাঘাতও হতে পারে, জুতা পেটাও হতে পারে, জনসম্মুখে অপমান করাও হতে পারে। এটা অপরাধী, অপরাধের মাত্রা এবং সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। এখানে সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বা পদ্ধতি নেই। তবে একটা সীমা আছে যে, শাস্তি হদের কম হতে হবে।
যেমন অবিবাহিত লোকের যিনার শাস্তি একশো দোররা। এখন বিছানায় পাওয়া গেলে আপনি একশো লাগাতে পারবেন না, কম লাগাতে হবে।
যাহোক, এ ধরনের ঘটনাই হয়তো মিডিয়াতে এসেছে আর আপনি একে হুকুম বি গাইরি মা আনযালাল্লাহ মনে করে বসেছেন।
খ. এখানে আরেকটি নাজুক বিষয় হলো সামর্থ্য। অনেক সময় পূর্ণ সাক্ষ্য প্রমাণ দিয়ে অপরাধ প্রমাণ হওয়ার পরও সামর্থ্যের দুর্বলতার কারণে শরীয়াহর পূর্ণ শাস্তি দেয়া যায় না।
যেমন অপরাধী একটা গোত্রের নেতা। তার হাত কাটলে গোটা গোত্র ক্ষেপে যাবে। তখন সামাল দেয়া আরও মুশকিল হবে। দুর্বলতার সময়ে অনেক সময় এসব বিষয় লক্ষ রেখে চলতে হয়, যাতে হিতে বিপরীত না হয়।
এ ধরনের ক্ষেত্রে যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু শাস্তি দিয়েই বা কিছু হুমকি ধমকি এবং তিরস্কারের মাঝেই ক্ষান্ত থাকতে হয়। এটা হুকুম বি গাইরি মা আনযালাল্লাহ নয়। এটা সামর্থ্যের কমতি।
এ সামর্থ্যের অভাবেই তো আমরা আমাদের সমাজের হাজারো অপরাধীকে দিব্যি ঘুরে বেড়াতে দেখেও কিছু করতে পারি না।
তো তালেবান বা মুজাহিদরাও এর ব্যতিক্রম নয়। যেক্ষেত্রে তারা সামর্থ্যের কমতি অনুভব করবেন, সেক্ষেত্রে এমনটা করা ছাড়া ভিন্ন পথ নেই। আর শরীয়াহর নিয়মও এটাই।
ইমাম আবু দাউদ রহ. বর্ণনা করেন,
عن جُنادَة بن أبي أُمية، قال: كنا مع بُسْرِ بنِ أبي أرطاةَ في البحرِ، فأتي بسارقٍ يقال له: مِصْدَرٌ، قد سرقَ بُخْتِيَّةً، فقال: سمعتُ رسولَ الله - صلَّى الله عليه وسلم - يقول: "لا تُقطَعُ الأيدي في السَّفر" ولولا ذلك لقطعتُه. سنن ابي داود: 4408، قال الشيخ شعيب الأرنؤوط رحمه الله تعالى: إسناده صحيح. اهـ
জুনাদাহ ইবনে আবু উমাইয়া রহ. থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমরা বুসর বিন আবু আরতাহ রাদি.র সাথে সমুদ্রপথে জিহাদে ছিলাম। তখন একটা চোরকে ধরে আনা হল, যার নাম মিসদার। সে একটা খোরাসানি উট চুরি করেছে। তখন বুসর রাদি. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, জিহাদের সফরে হাত কাটা হবে না। যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ নিষেধবাণী না থাকতো তাহলে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম -সুনানে আবু দাউদ ৪৪০৮
জুনাদাহ ইবনে আবু উমাইয়া রহ. থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমরা বুসর বিন আবু আরতাহ রাদি.র সাথে সমুদ্রপথে জিহাদে ছিলাম। তখন একটা চোরকে ধরে আনা হল, যার নাম মিসদার। সে একটা খোরাসানি উট চুরি করেছে। তখন বুসর রাদি. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, জিহাদের সফরে হাত কাটা হবে না। যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ নিষেধবাণী না থাকতো তাহলে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম -সুনানে আবু দাউদ ৪৪০৮
চোরের হাত কাটা কুরআনে কারীমের সুস্পষ্ট আয়াত দ্বারা ফরয।
কিন্তু শরীয়ত এখানে মাসলাহাতের প্রতি লক্ষ রেখেছে। দারুল হরবে হাত কাটলে দুই দিক থেকে সমস্যা: একেতো আমাদের একজন সৈনিক পঙ্গু হয়ে গেল, দ্বিতীয়ত এমন নাযুক সময়ে শয়তান তাকে আত্মগরীমায় নিপতিত করতে পারে। সে মুরতাদ হয়ে কাফেরদের সাথে যোগ দিয়ে দিতে পারে। হিতে বিপরীত হতে পারে।
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
والأصل أن هذه الواجبات تقام على أحسن الوجوه. فمتى أمكن إقامتها ... أقيمت إذا لم يكن في إقامتها فساد يزيد على إضاعتها. –مجموع الفتاوى (34/ 176)
এক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, এসকল ফরয বিধান সর্বোত্তম পন্থায় কায়েম করতে হবে। যখন কায়েম করা সম্ভব করা হবে, যদি কায়েম করতে গেলে আরও বেশি ভেজাল দেখা দেয়ার আশঙ্কা না হয়। -মাজমুউল ফাতাওয়া ৩৪/১৭৬
এক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, এসকল ফরয বিধান সর্বোত্তম পন্থায় কায়েম করতে হবে। যখন কায়েম করা সম্ভব করা হবে, যদি কায়েম করতে গেলে আরও বেশি ভেজাল দেখা দেয়ার আশঙ্কা না হয়। -মাজমুউল ফাতাওয়া ৩৪/১৭৬
আল্লামা তুসূলী মালেকী রহ. (১২৫৮হি.) বলেন,
إذا تعذّرت إقامة الحدود، ولم تبلغها الاستطاعة، (و) كانت الاستطاعة تبلغ إلى إيقاع تعزيز يزدجر به: تنزّلت أسباب الحدود منزلة أسباب التعزيرات، فيجري فيها ما هو معلوم في التعزير. اهـ
যদি হুদুদ কায়েম করা কষ্টকর হয় এবং কায়েম করার সামর্থ্য না থাকে, কিন্তু এমন তা’যির করার সামর্থ্য থাকে, যার মাধ্যমে অপরাধী বিরত হবে: তাহলে যেসব অপরাধের কারণে হদ সাব্যস্ত হয়, সেগুলো ঐসব অপরাধের স্তরে নেমে আসবে, যেগুলোতে তা’যির সাব্যস্ত হয়। সেগুলোতে তখন তা’যিরের বেলায় জ্ঞাত বিধানসমূহ প্রযোজ্য হবে। -আজবিবাতুত তুসূলী, পৃষ্ঠা ১৫৩
যদি হুদুদ কায়েম করা কষ্টকর হয় এবং কায়েম করার সামর্থ্য না থাকে, কিন্তু এমন তা’যির করার সামর্থ্য থাকে, যার মাধ্যমে অপরাধী বিরত হবে: তাহলে যেসব অপরাধের কারণে হদ সাব্যস্ত হয়, সেগুলো ঐসব অপরাধের স্তরে নেমে আসবে, যেগুলোতে তা’যির সাব্যস্ত হয়। সেগুলোতে তখন তা’যিরের বেলায় জ্ঞাত বিধানসমূহ প্রযোজ্য হবে। -আজবিবাতুত তুসূলী, পৃষ্ঠা ১৫৩
মোটকথা, হুদুদ কেসাস কায়েম করা সামর্থ্যের উপর নির্ভরশীল। সামর্থ্য না থাকলে যতটুকু সম্ভব করা হবে। বাকিটুকুর জন্য চেষ্টা করে যেতে থাকতে হবে। এটা হুকুম বি গাইরি মা আনযালাল্লাহ নয়। দুর্বলতার সময়ে এটাই শরীয়তের বিধান। ওয়াল্লাহু আ’লাম।
অতএব, মুহতারাম ভাই, বিষয়গুলোকে শরীয়তের আলোকে দিল থেকে বুঝার চেষ্টা করুন। আপনার ভাইদের ব্যাপারে মিডিয়ার গুজবে কান দেবেন না। অনর্থক সন্দেহ করবেন না। যবান দারাজি করে নিজের আখের নষ্ট করবেন না। যারা নিজেদের মা হারালো বাপ হারালো, হারালো ভাই বন্ধু স্ত্রী সন্তান সব কিছু শুধু শরীয়াহর জন্যে- আপনি দূরে থেকে দুয়েকটি গুজব শুনে তাদের আঘাত করে বসবেন না। অসম্ভব নয় যে, রাগ হয়ে আল্লাহ তাআলা স্বয়ং আপনাকেই হক থেকে বিচ্যুত করে দেবেন। আল্লাহর পানাহ!
হাঁ, কোনো বিষয় অস্পষ্ট মনে হলে জিজ্ঞাসা করে পরিষ্কার করে নিন এবং আপনার ভাইদের উপর আস্থা রাখুন। এটাই শরীয়াহর শিক্ষা। এ শিক্ষা মেনে চলুন, ইনশাআল্লাহ শয়তান এবং শয়তানি মিডিয়া আপনাকে ধোঁকায় ফেলতে পারবে না।
***
Comment