এই দীনের মূল ভিত্তি হল পথ নির্দেশকারী একটি কিতাব এবং সাহায্যকারী তরবারি
জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাঃ বলেন, “যখন আমাদের একহাতে তরবারি এবং অন্য হাতে কুরআন(mushaf) থাকত। তখন রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আদেশ করতেন যে, এর মাধ্যমে(তরবারি) যারা এর(কোরআন) থেকে দূরে তাদের আঘাত কর।”
পবিত্র কোরআনের আয়াত বর্ণনা দেখা যায় যে, মহান আল্লাহ বলেন,
“আমি আমার রসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে। ” (৫৭:২৫)
সুতরাং নবী-রাসুল এবং আসমানী কিতাব পাঠানোর উদ্দেশ্য হল যাতে করে এর মাধ্যমে মহান আল্লাহর অধিকারকে সর্বোচ্চ স্থানে নিতে পারে এবং মানুষের সাথে নায় বিচার করে। (ফতোয়া শাইখ আল ইসলাম ইবন তাইমিয়াহ ২৬৩/২৮)
এবং মহান আল্লাহর বড় বড় অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, তিনি সমস্ত নবী-রাসুল এবং আসমানি কিতাব পাঠিয়েছেন এজন্য যে এর মাধ্যমে আল্লাহর বান্দা মানুষগণ তাদের জীবনে তাওহীদের প্রয়োগ করবে এবং তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে যথাযথভাবে কেবলমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করবে। সকল নবী-রাসুল গনের বার্তা হল যে কিতাব মহান আল্লাহ তাদের উপর নাজিল করেছেন, তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মহান আল্লাহর মহান অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে.....................
# এই কিতাবের মধ্যে আল্লাহর অধিকার বাস্তবায়ন ও পরিপূরণ করতে বলা হয়েছে। এই কিতাবের দিকে আহবান করতে বলা হয়েছে। এই কিতাবের মাধ্যমে ধৈর্য ধারণ করতে বলা হয়েছে। জিহাদের জন্য এই কিতাবের মাধ্যমে উৎসাহিতকরণ এবং এই কিতাবের জন্য আনুগত্য থাকা এবং এই কিতাবের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করা।
# এই কিতাব আমাদের জানায় যারা এই এই কিতাবের কথা বাস্তবায়ন করে, এই কিতাবের জন্য জিহাদ করে এবং বিজয় লাভ করে। মহান আল্লাহ তাদের জন্য চিরস্থায়ী রহমত ও বরকত এর ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
# কিতাবের বিপরীতে যারা শিরক করতে আহবান করে।তাদের সাথে সম্পর্ক ছেদ করতে বলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা এবং তাদের ধসের জন্য সংগ্রাম করা। সকল প্রকার শিরক পৃথিবী থেকে পরিপূর্ণভাবে দূর করা।
# এই কিতাবের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যারা আল্লাহর অধিকার বাস্তবায়ন করতে বাধা প্রদান করে, যারা এই কিতাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেও তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখে লাঞ্ছনা ও অনুতাপের পরিণতি রয়েছে এবং আল্লাহ তাদের জন্য কিরকমের চিরস্থায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
মহান আল্লাহর সকল নবী-রসূলদের বার্তা এবং সকল আসমানি কিতাবের বার্তা এই অধিকারসমূহ দ্বারা আবর্তিত হয়েছে। এবং স্বচ্ছ লক্ষ্য হল মানুষকে আল্লাহ একটি মহান উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং সকল নবী-রসূল ও কিতাব এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
এবং মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সুরা হাদিদে বলেনঃ
আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণ-শক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী। (৫৭:২৫)
সুতরাং যে ব্যক্তি এই অধিকার থেকে ঘুরে/সরে যায় এবং এর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে না এবং আল্লাহর রসূল ও তার ঘোষণাকারীকে পরিত্যাগ করে সরে যায়। এ রকম হলে তা তলোয়ার এর মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে।
এবং এটাই হল রাসুল (সাঃ) এর এই হাদিসের অর্থঃ
আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে আমাকে তরবারি দিয়ে আমাকে প্রেরন করেছেন। যেন কোন সত্তা ব্যতীত সকলেই কেবল মাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করে। আমার রিজিক আমার বর্শার ছায়াতলে রাখা হয়েছে। যারা আমার আদেশ- নির্দেশ অমান্য করবে তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা ও অপমান। যে ব্যক্তি যে জাতির সাথে সামঞ্জস্য রাখে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। ( ইবনে উমর হতে ইমাম আহমদ বর্ণনা করেন)
সুতরাং যে এই কিতাব থেকে সরে যাবে তাকে লোহা দিয়ে সংশোধন করা হবে।এ জন্য এই দীনের ভিত্তি গড়ে উঠেছে কোরআন এবং তরবারি দ্বারা। ( আল ফতোয়া ২৬৪/২৮)
তাই, প্রকৃত আলেম গণ আল্লাহর হককে কেন্দ্র করেই দাওয়া ও বক্তৃতা দেন। এটাই তাদের ন্যায়ের মাপকাঠি। তাদের দিন কাটে এর কথা বলেই।এতেই তাদের অবাধ বিচরণ। আল্লাহর হক প্রতিষ্ঠায় তারা বন্দি হন, নির্যাতনের শিকার হন। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেন এবং তা করতে করতেই শহীদি সুধা পান করেন।
এবং তারা প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করেছে এটা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোরআন এবং সুন্নাহর আলোকে প্রমাণ ও যুক্তি দ্বারা। এবং কোন ব্যক্তি যদি এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং এটাকে ত্যাগ করেছে, তা সংশোধন করা হয়েছে লোহা দ্বারা।
সুতরাং সবাই এই ধর্মের/দীনের সত্যতা সম্পর্কে জানে। এমনকি এর শত্রুরাও এর তাওহীদ ও জ্বিহাদ, দাওয়াহ ও কিতাল, কুরআন এবং লোহা সম্পর্কে জানে।
এবং এটা তারা পরিস্কার ভাবে জানে যে, যদি তারা এই দীনকে সঠিকভাবে অনুসরণ না করে তবে এই দীন তাদের পরিত্যাগ করবে এবং তাদের কুটচাল/কুচাল নির্মূল করবে অ্যাজ অথবা কাল। তারা জানে যে নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) পাঠানো হয়েছে তাদের কামনা বাসনা ও তাদের বধ করতে। নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) তার আত্মীয়-স্বজন, গোষ্ঠী ও জনগণ এর মুখোমুখি হয়েছেন, যখন তারা সহজভাবে নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) কথা অনুসরণ করতে চাইল না। তখন তিনি তার উদ্দেশ্য তাদের জানালেন, যেন তিনি তা সঠিক ও পরিপূরণ ভাবে সম্পন্ন করতে পারে। তিনি বলেনঃ হে কুরাইশ গণ তোমরা কি আমার কথা শুনছো ? যার হাতে আমার প্রাণ, আমি তোমাদের নিকট কতলকারী হিসেবে এসেছি। এবং যখন মহান আল্লাহ দীন ইসলামকে ও ইসলামের জনগণকে তরবারি দ্বারা সম্মানিত করলেন, তখন তিনি তার কথাকে উত্তমভাবে পরিপূরণ করলেন।
এবং আমরা আল্লাহর ইচ্ছায় তার পদ্ধতি অনুসরণ করতে থাকব, তার পথে চলতে থাকব, তার সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করব এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ করতে থাকব। ( আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।) (৩:১৪৬)
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ বলেন, “ এটা দেখা যায় যে, অনেক জ্ঞানী মানুষ রাসুল (সাঃ) এর সাথে যুদ্ধ করেছে অথবা যুদ্ধ করে শাহাদাতবরণ করেছে। এর অর্থ এটা বহন করে না যে রাসুল (সাঃ) তাদের সাথে/পাশাপাশি যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু যারা রাসুল (সাঃ) এর দীনকে অনুসরণ করত এবং এই দীনের জন্য যারা যুদ্ধ করেছে, তারা রাসুল (সাঃ) এর সাথে যুদ্ধ করেছে, এটাই সাহাবা(রাঃ) বুঝতেন। এই কথার উপর ভিত্তি করে রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করার পর সাহাবা রাঃ গণ বিভিন্ন বড় বড় যুদ্ধে শরীক হয়ে শাম, মিসর, ইয়েমেন, আজম(ajam), রোম, মরক্কো এবং পশ্চিম অঞ্চল বিজয় লাভ করে। তাদের সাথে যুদ্ধ করে অনেকে শাহাদাত বরণ করেছে, আহত হয়েছে, তারা মূলত রাসুল (সাঃ) এর দীনের জন্যই যুদ্ধ করেছে। বিচার দিবসের আগ পর্যন্ত বিশ্বাসীদের জন্য একটি শিক্ষা হল- যারা রাসুল (সাঃ) এর দীনের জন্য যুদ্ধ করবে তারা মূলত রাসুল (সাঃ) এর সাথেই যুদ্ধ করবে যদিও রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন। তারা এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত হবেনঃ মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ(৪৮:২৯) এবং তারা এই আয়াতের ভিতরে থাকবেনঃ আর যারা ঈমান এনেছে পরবর্তী পর্যায়ে এবং ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং তোমাদের সাথে সম্মিলিত হয়ে জেহাদ করেছে, তারাও তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত(৮:৭৫)। সুতরাং কোন ব্যাক্তির জন্য এটা শর্ত নয় যে রাসুল (সাঃ) এর আনুগত্যের জন্য রাসুল (সাঃ) কে দেখতে হবে। ” (মাজমু আল ফতোয়া)
সুতরাং আমরা আমাদের শত্রুদের আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে উচ্চস্বরে বলব এবং আমরা তাদের এটা জানাব যে, যদি আমরা তা (আল্লাহর অধিকার) আজকে পরিপূরণ করতে না পারি, তারা যেন এটা না ভাবে যে, তা আমরা আমাদের হিসাব হতে বাদ দিয়ে দিয়েছি। এবং এটাকে হিসাব হতে বাদ দেয়া কোন মতেই অনুমোদন যোগ্য নয়। এজন্যই আমরা দিনে, রাতে, সকাল ও সন্ধায় মহান আল্লাহর নিকট এই বলে দোয়া করি যে, আমরা যেন দীন ইসলামের প্রত্যেক শত্রুর ঘাড়ে পৌছাতে পারি এবং আমাদের প্রতিটি কাজ ও মুহূর্ত যেন এর প্রস্তুতির জন্য ব্যায় হয়।
আর তারা তা ভাল মতোই জানে আর তারা সেইসব পথভ্রষ্ট আলেমদের সম্পর্কেও জানে যারা কুরআন এবং তলোয়ার কে পৃথক করতে চায়। তারা এই দ্বীনের ব্যাপারে তার মূর্খতা সম্পর্কে অবগত। সে (ঐ আলেম) আল্লাহ্*র আদেশসমূহের ব্যপারে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে আর দ্বীনের ব্যাপারে তার মূলত কোন জ্ঞান নেই।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ বলেন, “এই দীন ইসলাম হল একটি কিতাব এবং এই কিতাবের অনুসরণকারী একটি তরবারি। সুতরাং যদি কোরআন এবং সুন্নাহর জ্ঞান পাওয়া যায় এবং একটি তলোয়ার যদি তাকে অনুসরণ করে তখন ইসলামের আদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে” (আল ফতোয়া ৩৯৩/২০)
এবং তিনি বলেনঃ এই দীনের মূল ভিত্তি হল পথ নির্দেশকারী একটি কিতাব এবং সাহায্যকারী তরবারি কিন্তু যদি তোমার প্রভু পথ নির্দেশকারী ও সাহায্যকারী হয়ে থাকে তবে তা যথেষ্ট হবে।
শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসি
মহরম ১৪২২ হিজরি
জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাঃ বলেন, “যখন আমাদের একহাতে তরবারি এবং অন্য হাতে কুরআন(mushaf) থাকত। তখন রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আদেশ করতেন যে, এর মাধ্যমে(তরবারি) যারা এর(কোরআন) থেকে দূরে তাদের আঘাত কর।”
পবিত্র কোরআনের আয়াত বর্ণনা দেখা যায় যে, মহান আল্লাহ বলেন,
“আমি আমার রসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে। ” (৫৭:২৫)
সুতরাং নবী-রাসুল এবং আসমানী কিতাব পাঠানোর উদ্দেশ্য হল যাতে করে এর মাধ্যমে মহান আল্লাহর অধিকারকে সর্বোচ্চ স্থানে নিতে পারে এবং মানুষের সাথে নায় বিচার করে। (ফতোয়া শাইখ আল ইসলাম ইবন তাইমিয়াহ ২৬৩/২৮)
এবং মহান আল্লাহর বড় বড় অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, তিনি সমস্ত নবী-রাসুল এবং আসমানি কিতাব পাঠিয়েছেন এজন্য যে এর মাধ্যমে আল্লাহর বান্দা মানুষগণ তাদের জীবনে তাওহীদের প্রয়োগ করবে এবং তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে যথাযথভাবে কেবলমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করবে। সকল নবী-রাসুল গনের বার্তা হল যে কিতাব মহান আল্লাহ তাদের উপর নাজিল করেছেন, তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মহান আল্লাহর মহান অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে.....................
# এই কিতাবের মধ্যে আল্লাহর অধিকার বাস্তবায়ন ও পরিপূরণ করতে বলা হয়েছে। এই কিতাবের দিকে আহবান করতে বলা হয়েছে। এই কিতাবের মাধ্যমে ধৈর্য ধারণ করতে বলা হয়েছে। জিহাদের জন্য এই কিতাবের মাধ্যমে উৎসাহিতকরণ এবং এই কিতাবের জন্য আনুগত্য থাকা এবং এই কিতাবের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করা।
# এই কিতাব আমাদের জানায় যারা এই এই কিতাবের কথা বাস্তবায়ন করে, এই কিতাবের জন্য জিহাদ করে এবং বিজয় লাভ করে। মহান আল্লাহ তাদের জন্য চিরস্থায়ী রহমত ও বরকত এর ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
# কিতাবের বিপরীতে যারা শিরক করতে আহবান করে।তাদের সাথে সম্পর্ক ছেদ করতে বলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা এবং তাদের ধসের জন্য সংগ্রাম করা। সকল প্রকার শিরক পৃথিবী থেকে পরিপূর্ণভাবে দূর করা।
# এই কিতাবের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যারা আল্লাহর অধিকার বাস্তবায়ন করতে বাধা প্রদান করে, যারা এই কিতাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেও তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখে লাঞ্ছনা ও অনুতাপের পরিণতি রয়েছে এবং আল্লাহ তাদের জন্য কিরকমের চিরস্থায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
মহান আল্লাহর সকল নবী-রসূলদের বার্তা এবং সকল আসমানি কিতাবের বার্তা এই অধিকারসমূহ দ্বারা আবর্তিত হয়েছে। এবং স্বচ্ছ লক্ষ্য হল মানুষকে আল্লাহ একটি মহান উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং সকল নবী-রসূল ও কিতাব এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
এবং মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সুরা হাদিদে বলেনঃ
আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণ-শক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী। (৫৭:২৫)
সুতরাং যে ব্যক্তি এই অধিকার থেকে ঘুরে/সরে যায় এবং এর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে না এবং আল্লাহর রসূল ও তার ঘোষণাকারীকে পরিত্যাগ করে সরে যায়। এ রকম হলে তা তলোয়ার এর মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে।
এবং এটাই হল রাসুল (সাঃ) এর এই হাদিসের অর্থঃ
আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে আমাকে তরবারি দিয়ে আমাকে প্রেরন করেছেন। যেন কোন সত্তা ব্যতীত সকলেই কেবল মাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করে। আমার রিজিক আমার বর্শার ছায়াতলে রাখা হয়েছে। যারা আমার আদেশ- নির্দেশ অমান্য করবে তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা ও অপমান। যে ব্যক্তি যে জাতির সাথে সামঞ্জস্য রাখে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। ( ইবনে উমর হতে ইমাম আহমদ বর্ণনা করেন)
সুতরাং যে এই কিতাব থেকে সরে যাবে তাকে লোহা দিয়ে সংশোধন করা হবে।এ জন্য এই দীনের ভিত্তি গড়ে উঠেছে কোরআন এবং তরবারি দ্বারা। ( আল ফতোয়া ২৬৪/২৮)
তাই, প্রকৃত আলেম গণ আল্লাহর হককে কেন্দ্র করেই দাওয়া ও বক্তৃতা দেন। এটাই তাদের ন্যায়ের মাপকাঠি। তাদের দিন কাটে এর কথা বলেই।এতেই তাদের অবাধ বিচরণ। আল্লাহর হক প্রতিষ্ঠায় তারা বন্দি হন, নির্যাতনের শিকার হন। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেন এবং তা করতে করতেই শহীদি সুধা পান করেন।
এবং তারা প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করেছে এটা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোরআন এবং সুন্নাহর আলোকে প্রমাণ ও যুক্তি দ্বারা। এবং কোন ব্যক্তি যদি এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং এটাকে ত্যাগ করেছে, তা সংশোধন করা হয়েছে লোহা দ্বারা।
সুতরাং সবাই এই ধর্মের/দীনের সত্যতা সম্পর্কে জানে। এমনকি এর শত্রুরাও এর তাওহীদ ও জ্বিহাদ, দাওয়াহ ও কিতাল, কুরআন এবং লোহা সম্পর্কে জানে।
এবং এটা তারা পরিস্কার ভাবে জানে যে, যদি তারা এই দীনকে সঠিকভাবে অনুসরণ না করে তবে এই দীন তাদের পরিত্যাগ করবে এবং তাদের কুটচাল/কুচাল নির্মূল করবে অ্যাজ অথবা কাল। তারা জানে যে নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) পাঠানো হয়েছে তাদের কামনা বাসনা ও তাদের বধ করতে। নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) তার আত্মীয়-স্বজন, গোষ্ঠী ও জনগণ এর মুখোমুখি হয়েছেন, যখন তারা সহজভাবে নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) কথা অনুসরণ করতে চাইল না। তখন তিনি তার উদ্দেশ্য তাদের জানালেন, যেন তিনি তা সঠিক ও পরিপূরণ ভাবে সম্পন্ন করতে পারে। তিনি বলেনঃ হে কুরাইশ গণ তোমরা কি আমার কথা শুনছো ? যার হাতে আমার প্রাণ, আমি তোমাদের নিকট কতলকারী হিসেবে এসেছি। এবং যখন মহান আল্লাহ দীন ইসলামকে ও ইসলামের জনগণকে তরবারি দ্বারা সম্মানিত করলেন, তখন তিনি তার কথাকে উত্তমভাবে পরিপূরণ করলেন।
এবং আমরা আল্লাহর ইচ্ছায় তার পদ্ধতি অনুসরণ করতে থাকব, তার পথে চলতে থাকব, তার সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করব এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ করতে থাকব। ( আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।) (৩:১৪৬)
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ বলেন, “ এটা দেখা যায় যে, অনেক জ্ঞানী মানুষ রাসুল (সাঃ) এর সাথে যুদ্ধ করেছে অথবা যুদ্ধ করে শাহাদাতবরণ করেছে। এর অর্থ এটা বহন করে না যে রাসুল (সাঃ) তাদের সাথে/পাশাপাশি যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু যারা রাসুল (সাঃ) এর দীনকে অনুসরণ করত এবং এই দীনের জন্য যারা যুদ্ধ করেছে, তারা রাসুল (সাঃ) এর সাথে যুদ্ধ করেছে, এটাই সাহাবা(রাঃ) বুঝতেন। এই কথার উপর ভিত্তি করে রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করার পর সাহাবা রাঃ গণ বিভিন্ন বড় বড় যুদ্ধে শরীক হয়ে শাম, মিসর, ইয়েমেন, আজম(ajam), রোম, মরক্কো এবং পশ্চিম অঞ্চল বিজয় লাভ করে। তাদের সাথে যুদ্ধ করে অনেকে শাহাদাত বরণ করেছে, আহত হয়েছে, তারা মূলত রাসুল (সাঃ) এর দীনের জন্যই যুদ্ধ করেছে। বিচার দিবসের আগ পর্যন্ত বিশ্বাসীদের জন্য একটি শিক্ষা হল- যারা রাসুল (সাঃ) এর দীনের জন্য যুদ্ধ করবে তারা মূলত রাসুল (সাঃ) এর সাথেই যুদ্ধ করবে যদিও রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন। তারা এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত হবেনঃ মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ(৪৮:২৯) এবং তারা এই আয়াতের ভিতরে থাকবেনঃ আর যারা ঈমান এনেছে পরবর্তী পর্যায়ে এবং ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং তোমাদের সাথে সম্মিলিত হয়ে জেহাদ করেছে, তারাও তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত(৮:৭৫)। সুতরাং কোন ব্যাক্তির জন্য এটা শর্ত নয় যে রাসুল (সাঃ) এর আনুগত্যের জন্য রাসুল (সাঃ) কে দেখতে হবে। ” (মাজমু আল ফতোয়া)
সুতরাং আমরা আমাদের শত্রুদের আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে উচ্চস্বরে বলব এবং আমরা তাদের এটা জানাব যে, যদি আমরা তা (আল্লাহর অধিকার) আজকে পরিপূরণ করতে না পারি, তারা যেন এটা না ভাবে যে, তা আমরা আমাদের হিসাব হতে বাদ দিয়ে দিয়েছি। এবং এটাকে হিসাব হতে বাদ দেয়া কোন মতেই অনুমোদন যোগ্য নয়। এজন্যই আমরা দিনে, রাতে, সকাল ও সন্ধায় মহান আল্লাহর নিকট এই বলে দোয়া করি যে, আমরা যেন দীন ইসলামের প্রত্যেক শত্রুর ঘাড়ে পৌছাতে পারি এবং আমাদের প্রতিটি কাজ ও মুহূর্ত যেন এর প্রস্তুতির জন্য ব্যায় হয়।
আর তারা তা ভাল মতোই জানে আর তারা সেইসব পথভ্রষ্ট আলেমদের সম্পর্কেও জানে যারা কুরআন এবং তলোয়ার কে পৃথক করতে চায়। তারা এই দ্বীনের ব্যাপারে তার মূর্খতা সম্পর্কে অবগত। সে (ঐ আলেম) আল্লাহ্*র আদেশসমূহের ব্যপারে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে আর দ্বীনের ব্যাপারে তার মূলত কোন জ্ঞান নেই।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ বলেন, “এই দীন ইসলাম হল একটি কিতাব এবং এই কিতাবের অনুসরণকারী একটি তরবারি। সুতরাং যদি কোরআন এবং সুন্নাহর জ্ঞান পাওয়া যায় এবং একটি তলোয়ার যদি তাকে অনুসরণ করে তখন ইসলামের আদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে” (আল ফতোয়া ৩৯৩/২০)
এবং তিনি বলেনঃ এই দীনের মূল ভিত্তি হল পথ নির্দেশকারী একটি কিতাব এবং সাহায্যকারী তরবারি কিন্তু যদি তোমার প্রভু পথ নির্দেশকারী ও সাহায্যকারী হয়ে থাকে তবে তা যথেষ্ট হবে।
শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসি
মহরম ১৪২২ হিজরি
Comment