Announcement

Collapse
No announcement yet.

হাক্ব হাক্বের জায়গায়, সম্মান সম্মানের জায়গায় - আমরা বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেছি আল্লাহর স

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • হাক্ব হাক্বের জায়গায়, সম্মান সম্মানের জায়গায় - আমরা বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেছি আল্লাহর স

    ইন্নাল হামদালিল্লাহ, ওয়াস সলাতু ওয়াস সালামু 'আলা রাসূলিল্লাহ ওয়া 'আলা আলহি ওয়া আসহাবিহি ওয়া সাল্লাম তাসলিমান কাসিরা।

    'আম্মা বা'আদ

    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন -

    যারা ঈমানদার তারা যে, ক্বিতাল করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফির তারা ক্বিতাল করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা ক্বিতাল করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল। [সুরা নিসা: ৭৬]

    যারা

    এই থ্রেডের শিরোনামটি নেওয়া, শায়খ আবু ফিরাস আস-সুরি রাহিমাহুল্লাহর একটি উক্তি থেকে। আর রিসালাহ ম্যাগাযিনের দ্বিতীয় সংখ্যায় শায়খ বিন বায, শায়খ উসাইমীন সহ বিভিন্ন সমমনা আলেমদের ব্যাপারে মুজাহিদিনের অবস্থান কি হওয়া উচিত সে প্রশ্নের প্রেক্ষিতে শায়খের গভির অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন উত্তর থেকে "হাক্ব হাক্বের জায়গায়, সম্মান সম্মানের জায়গায়" - এ লাইনটি নেওয়া হয়েছে।

    শায়খের এই কথায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি ফুটে উঠেছে আর তা হল নিম্নরূপ-

    একজন মুসলিমের, একজন মুওয়াহিদের আনুগত্য সর্বপ্রথম আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সল্লালল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি - আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূল সল্লালল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহর প্রতি। আর মানুষের মধ্যে মু'মিন মূওয়াহিদ তাদেরকেই অন্তরঙ বন্ধু হিসেবে গ্রহন করবে যারা এই দুটি বিষয় - ক্বুর'আন ও সুন্নাহকে আকড়ে ধরে, এবং এগুলোর উপর আমল করে - যারা কুফর বিত ত্বগুত ও ইমান বিল্লাহর হাক্ক আদায় করে - যারা আল ওয়ালা আল বারার হাক্ক আদায় করে। একই সাথে তারা শত্রু হিসেবে গ্রহন করবে শয়তানকে,সকল তাওয়াগীতকে এবং ত্বগুতের সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় সৈন্যদের। তারা শত্রু হিসেবে গ্রহন করবে ওই সকল লোককে যারা ত্বগুতের আনুগত্য করে, ত্বগুতের আনুগত্যের দিকে আহবান করে, ত্বগুতকে বৈধতা দেয়, ত্বগুতের জন্য অজুহাত তৈরি করে, ত্বগুতের জন্য আল্লাহর দ্বীনের অপব্যাখ্যা করে, এবং ত্বগুত বর্জন করা থেকে ত্বগুতকে প্রত্যাখ্যান করা থেকে মুসলিমদের দূরে সরিয়ে রাখতে চায়।

    এমন সকল লোকের প্রতি সম্পর্ক ছিন্ন করা মু'মিন-মুওয়াহিদের দায়িত্ব। হোক সে আআদের কারো বাবা, মা, সন্তান, সহোদর, স্ত্রী, স্বামী, বন্ধু, উস্তাদ, প্রতিবেশী কিংবা শায়খ। আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর অবশ্যই আল্লাহর দ্বীনের দাবি প্রাধান্য পাবে। পরম উপকারী অন্তরং সুহৃদ যদি ত্বগুতের প্রতি আহবানকারী হয়, যদি আল্লাহর দ্বীনের সাথে খিয়ানতকারী হয়, আল্লাহর শত্রুদের বন্ধু হিসেবে গ্রহনকারী হয় - তবে আমাদের তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে এবং তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহন করতে হবে। কারন ব্যক্তির প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা, আমার রবের প্রতি আমার দাসত্বের চেয়ে অধিক প্রাধান্য পেতে পারে না। ব্যক্তির প্রতি আমার সহমর্মিতা আমাকে কখনো আমার দায়িত্ব ভুলিয়ে দিতে পারে না। হোক সে আওয়ামের কোন একজন কিংবা একজন বিন বায, একজন ইবন উসাইমীন, কিংবা ফজলুল হক আমিনি কিংবা আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর কিংবা অন্য কেউ। ব্যক্তির প্রতি সম্মান কখনও হাক্বের উপর প্রাধ্যন পাবে না। হাক্ব হাক্বের জায়গায়, সম্মান সম্মানের জায়গায়। আর এটাই মিল্লাতু ইব্রাহীম, এটাই সরল ও সুস্পষ্ট পথ।

    তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে। [সূরা মুমতাহিনা, ৪]

    আমাদের বন্ধুত্ব ও শত্রুত্ব, আনুগত্য ও বিদ্রোহের ভিত্তি হবে শারীয়াহ এবং একমাত্র শারীয়াহ। কোন জাতি-বর্ন, ভাষা, মাযহাব, মাসলাক এখানে বিবেচ্য হবে না। ব্যক্তিগত অনুরাগ বিরাগ, ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য কিংবা সংকট, ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা, অন্তরঙ্গতা, সখ্য, দুর্বলতা, ঋণগ্রস্থতা কিংবা আত্মীয়তা এখানে শারীয়াহর মাপকাঠির উপর প্রাধান্য পাবে না। শারীয়াহই আমাদের জন্য নির্ধারন করে দেবে, কাদেরকে আমরা বন্ধু হিসেবে গ্রহন করবো আর কাদেরকে আমরা শতুর হিসেবে গ্রহন করবো। আর আমাদের কাছে এটা পরিশকার এবং যেমনটা আল্লাহ যার কাছ থেকে দৃষ্টি শক্তি ছিনিয়ে নেন নি এমন সবার কাছে পরিষ্কার - বর্তমান দুনিয়াতে হাক্কের সর্বাধিক নিকটবর্তী, ক্বুর'আন ও সুন্নাহর সর্বাধিক পাবন্দি করছেন মুজাহিদিন ফি সাবিলিল্লাহ।

    দুঃখজনক বিষয় হল বর্তমানে নিজেদের "জিহাদি মানহাজের" বলে দাবি করা এবং যারা আওয়ামের চোখে "জিহাদী মানহাজের" ভাই বলে পরিচিত এমন অনেকই এই মূলনীতি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। আর সব কিছুর আগে শারীয়াহর ভিত্তিতে আল ওয়ালা ওয়াল বারা, তাওহীদের দাবি, মিল্লাতু ইব্রাহীমের দাবি বুঝতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরেই এই অসুখ বিদ্যমান কিন্তু সম্প্রতি আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইদের প্রতিক্রিয়া থেকে তা পুর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে অধিক স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। আমাদের "জিহাদী মানহাজের" ভাইরা শায়খ আব্দুর রাহমান, আতাউর রাহমান সানি, সিদ্দিকুল ইসলাম সহ এই ভুমীর মুওয়াহিদিনের কথা ভুলে গেছেন - যারা এই ভূমিতে "আল্লাহর ইবাদাত ও ত্বগুতকে বর্জন"-এর দাওয়াহ দিয়েছিলেন তাদের রক্তের দাবি ভুলে গেছেন। ত্ত্বগুতের কারাগারে বন্দী বিভিন্ন তানযীমের শত শত ভাইদের কথা ভুলে গিয়েছেন। তাদের নির্যাতিত মা বোন স্ত্রীদের কথা ভুলে গেছেন। আল্লাহর রাস্তায় সস্তায় জীবন বিলিয়ে দেওয়া মিশর, লিবিয়া, আলজেরিয়া, আফগানিস্তান, শিশান, বসনিয়া, ইরাক, শাম, ইয়েমেনের মুজাহিদিনের কতাহ তারা ভুলে গেছেন, ত্বগুতের কারাগারে বন্দী শায়খুল মাশায়েখ উমর আব্দুর রাহমান, শায়খ আবু হামযা, শায়খ নাসির আল ফাহাদ, শায়খ সুলাইমান আল 'উলওয়ান, শায়খ ওয়ালিদ সিনানি, শায়খ খালিদ শেইখ মুহাম্মাদ, শায়খ আবু যুবাইদা, শায়খ হারুন ইজহার, শায়খ জসীমুদ্দীন রাহমানীদের কথা তাদের কাছে হালকা হয়ে গেছে। শায়খ ফারিস আয যাহরানি, শায়খ ইউসুফ আল উয়ায়রি, শায়খ হামুদ বিন উক্বলা আশ-শু'আইবি, শায়খ আব্দুর রশীদ গাজীদের রক্তের কথা তারা ভুলে গেছেন। আর তাই তাদের কাছে এই সব কিছু ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে একজন আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর। এই একজনের মৃত্যুতে তারা শোকে মুহ্যমান হয়ে তাকে দ্বীনের হাক্ক পূরনকারী আখ্যায়িত করছে অথচ এই মযলুমদের উপর যে যুলুম করা হয় তা যে করা হয় আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরদের মতো ব্যক্তিদের ব্যাখ্যা ও ফাতাওয়ার ভিত্তিতে তা তারা ভুলে যাচ্ছেন। ওয়ালা হাওলা ওয়ালা ক্বু'আতা ইল্লাহ বিল্লাহ।

    অথচ আমরা মুজাহিদিনকে আমাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেছি। যে যুলুম শায়খ আব্দুর রাহমান রাহিমাহুল্লাহর সাথে হয়েছে তা কি আমি বা আপনি ক্ষমা করতে পারি? যে খিয়ানত আল্লাহর দ্বীনের সাথে করা হয়েছে তা কি আমি বা আপনি ক্ষমা করতে পারি? বিশ্বব্যাপী যে মুজাহিদিনকে খাওয়ারিজ বলে চিত্রায়ীত করা হয়েছে - তাদের উপর করা যুলুম কি আমি বা আপনি আমাদের ব্যক্তিগত লাভ ক্ষতির হিসেবে মিলিয়ে মিটিয়ে দিতে পারি? অথচ আমরা মুজাহিদিনকে আমাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেছি। আমরা কি পারি তাকে অনুসরনীয় হিসবে গ্রহন করতে যে ত্বগুতের আনুগত্যের দিকে আহবান করে? যে ত্বগুতের আনুগত্যকে ওয়াজিব বলে, যে ত্বগতের শাসন আর খিলাফাতের মধ্যে পার্থক্য দেখে না? যে এই কুফরী সংবিধানকে ইসলামসম্মত বলে? যে বলে এসব শাসক বৈধ শাসক, এসব রাস্ট্র দারুল ইসলাম আর মুজাহিদিনরা হল বিভ্রান্ত, গোমরাহ, অবিবেচক, হঠকারী ও যুল খুওয়াইসারা উত্তরসূরি, অথচ আমরা মুজাহিদিনকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেছি।

    হাক্ব হাক্বের জায়গায়, সম্মান সম্মানের জায়গায়

    আমি আমার ভাইদের প্রতি আহবান জানাই, শায়খ আবু ফিরাস আস সুরি রাহিমাহুল্লাহর এই কথাটি নিয়ে ব্যাপকভাবে চিন্তা করার জন্য। এবং এই মূলনীতিটি এবং তার বাস্তবায়ন নিয়ে চিন্তা করার জন্য। এবং মিল্লাতু ইব্রাহীম ও তাঁর দাবিকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরার জন্য এবং তিরস্কারকারীর তিরস্কারের পরওয়া না করার জন্য। হানাফি-সালাফি, আযহারি-মাদানি-দেওবন্দি, মাসলাক-মাযহাব দিয়ে আমরা হাক্কের বিচার করি না। আমরা হাক্ককে পরিমাপ করি শারীয়াহর পাল্লায় আর তাই আমরা মুজাহিদিনকে আমাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহন করেছি, আর আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে আমরা আমাদের বিবেচনাকে আবেগের তোড়ে ভাসিয়ে দিতে ইচ্ছুক নই। এটাই মিল্লাতু ইব্রাহীম, এটাই সরল পথ, এটাই আমাদের মানহাজ।

    সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আল দাহুক আল-ক্বাত্তাল ইমামুল মুজাহিদিন নাবীউর মারহামা, নাবীউল মালহামা মুহাম্মাদ আল আরাবী সল্লালল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর
    আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি হয়, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপরও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।

  • #2
    যাজাকাল্লাহ খইর আঁখি......কৌশলগত পর্যালোচনার শেষ কবে পাচ্ছি ?

    Comment


    • #3
      হাক্ব হাক্বের জায়গায়, সম্মান সম্মানের জায়গায়
      অথচ এই মযলুমদের উপর যে যুলুম করা হয় তা যে করা হয় আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরদের মতো ব্যক্তিদের ব্যাখ্যা ও ফাতাওয়ার ভিত্তিতে তা তারা ভুলে যাচ্ছেন।ربما كان الحق مرا

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ ভাই, সুন্দর লিখেছেন।

        Comment


        • #5
          Originally posted by Shabab Abdullah View Post
          যাজাকাল্লাহ খইর আঁখি......কৌশলগত পর্যালোচনার শেষ কবে পাচ্ছি ?
          ওয়া ইয়্যাক। ব্যস্ততার জন্য শেষ পর্ব লেখা হচ্ছে না। তাড়াহড়োর মধ্যে লিখলে লেখা হাক্ব আদায় হবে না, এজন্য ভেঙ্গে ভেঙ্গে লেখা হচ্ছে না।
          আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি হয়, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপরও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।

          Comment


          • #6
            Originally posted by Jihadi View Post
            মাশাআল্লাহ ভাই, সুন্দর লিখেছেন।
            আলহামদুলিল্লাহ
            আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি হয়, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপরও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।

            Comment


            • #7
              শারীয়াহর মাপকাঠি, দালিল-আদিল্লাকে পাশ কাটিয়ে অন্ধভাবে ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের অনুসরন (আলেম, দা'ঈ ও তলিবুল 'ইলম)জিহাদি মানহাজের অনুসারী বলে আওয়ামের কাছে পরিচিত অনেক ভাইকেই নিস্ক্রিয়তার মানহাজে নিয়ে গেছে। আবার তাদের পরিচিতির কারনে অনেকের কাছে তাদের বিভ্রান্তিকর অবস্থান মানহাজের অবস্থান বলে প্রচার পাচ্ছে। মানহাজের বিশুদ্ধতার জন্য নিস্ক্রিয়তার মানহাজের অনুসারীদের চিন্তাগত ত্রুটিগুলো তুলে ধরা একান্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি একটি উদাহরণ দিচ্ছিঃ

              নিমোক্ত লেখাটি আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর ফেইসবুকে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় -

              "১৯৯১ সালে মদীনায় যাচ্ছি কিং সাঊদ বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে। তিনি খুশি হয়েছিলেন। কিং সাঊদের ইসলামিক স্টাডিজ তাঁর পছন্দ ছিলো না। তিনি তখন পিএইচডি থিসিস শুরু করেছেন। বিদেশিদের মাঝে ইসলামের দাওয়াত ছড়াতেন। ইংরেজিতে খুব ভালো ছিলেন বলে আমেরিকান সেনা ছাউনিতে তিনি ইসলাম পৌঁছানোর কাজ করতেন। জিজ্ঞাসা করলাম- ভাই, কয়জন ইসলাম কবুল করেছেন? তিনি বললেন, "বলা নিষেধ, তবে আপনাকে একটা কথা বলি, ওদের মাঝে ইসলাম পৌঁছাতে পারলে তারা উন্মুখ হয়ে আছে"। ঐ বছরেই শুনেছিলাম ড. জগলুল নাজ্জার ও জাহাঙ্গীর ভাইদের দাওয়াতে তিন শতাধিক সৈন্য মুসলিম হয়ে যায়। সরকারি হস্তক্ষেপে এই দাওয়াতি কাজ বন্ধ রাখা হয়।

              ঈমানের সাথে ইলম, ইলমের সাথে আমল এবং আমলের সাথে এত হিলম আমি আর কারো মাঝে পাইনি। তিনি সবার সাথে মিশতে পারার এক দুর্লভ গুণ অর্জন করেছিলেন। তবে সহীহ হাদীসের এক চুল দূরে যেতে ছিলো তাঁর প্রচন্ড আপত্তি।

              "ভাই, জামাআতে ইসলামির সাথে বা তাবলীগের সাথে, বা কোন অর্গানাইজেশনের সাথে থেকে কাজ করলে কি বেশি ভালো হত না?"- আমার এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, "সালাম ভাই, বাংলাদেশে ৯০% মুসলিম, এদের মাঝে দল করা মানে এদেরকে বিভক্ত করে ফেলা। বাংলাদেশের সব মুসলমানের সাথেই আমি থাকি, সে ভালো"। আমি বললাম, "কিন্তু কেও তো আপনাকে মেনে নেবে না, তাছাড়া, কারো না কারো সাথে থাকলে একটু সাহায্য পাবেন"। তিনি বললেন, "সবাই মেনে নেবে সালাম ভাই। কারণ কালেমার দাওয়াত এমন যে, ঐটা ব্যবহার করে দেখেন না একজন ভিক্ষুকও সব মুসলমানদের দয়া আর সাহায্য পায়। আমি না হয় ঐক্যের ভিক্ষুক হই। কালেমা নিয়ে সবার কাছে যাই, তাড়ায়ে দিলেও মারতে পারবেনা কেও"। চোখ খুলে দিলেন আমাকে।"

              [শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের স্মৃতিচারণে শায়খ আব্দুস সালাম আজাদীর বক্তব্যের একাংশ]


              এই লাইনটির দিকে লক্ষ্য করুন-

              ঐ বছরেই শুনেছিলাম ড. জগলুল নাজ্জার ও জাহাঙ্গীর ভাইদের দাওয়াতে তিন শতাধিক সৈন্য মুসলিম হয়ে যায়। সরকারি হস্তক্ষেপে এই দাওয়াতি কাজ বন্ধ রাখা হয়।

              অর্থাৎ আব্দুল্লাহ জাহানগির সাহেব জাযিরাতুল আরবে, বিলাদুল হারামাইনে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস উপেক্ষে করে যেসব মুশরিক-কাফির আমেরিকান সেনা আনা হয়েছিল তাদের কে গিয়ে ইসলামের দাওয়াহ দিচ্ছিলেন। যদিও একজন আলেম হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল ক্বুর'আন সুন্নাহ পরিপন্থী এই সিদ্ধান্তের (জাযিরাতে কাফির সেনার প্রবেশ) প্রতিবাদ করা। যদি আসলেই "তবে সহীহ হাদীসের এক চুল দূরে যেতে ছিলো তাঁর প্রচন্ড আপত্তি" - এই কথা সত্য হয়ে থাকে তবে নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুশয্যায় যে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন, সেই নির্দেশের এরকম নির্লজ্জ উপেক্ষা ও স্পষ্ট অবাধ্যতা মেনে নিতে তার "প্রচন্ড আপত্তি" থাকার কথা ছিল। তবে তার এতে প্রচন্ড কেন, কোন রকমের আপত্তি ছিল বলে জানা যায় না। যাই হোক, আমরাও আপাতত নাহয় এ বিষয়টুকু বাদ দিলাম। কিন্তু তবুও এর চাইতেও গুরুতর একটি বিষয় থেকে যায়। আব্দুস সালাম আজাদী বক্তব্য অনুযায়ী কাফিরদের মধ্যে দাওয়াতী কাজ চলছিল পরে, সরকারের অর্থাৎ আল সাউদের নির্দেশে দাওয়াতী কাজ বন্ধ করা হয়।

              আমাদের সহাল মিডিয়ার ভাইরা এ লেখাটি পড়ে, উম্মাহর ঐক্যনিয়েআব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সবাই আবেগে গদগদ হয়ে পরেন। অথচ এই আপাত নির্দোষ লেখার মধ্যে কতো গুরুতর বিষয় লুকিয়ে আছে তা আমাদের বুঝদার বলে পরিচিত ভাইদের চোখে ধরা পরে নি, কিংবা ধরা পড়লেও তারা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন নি।

              প্রশ্ন হল আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীররা কাফিরদের কিসের দাওয়াত দিচ্ছিলেন? দ্বীন ইসলামের। আজাদী সাহেবের ভাষ্য মতে ৩০০ সেনা এতে ইসলাম গ্রহনও করেছিল। পরে এই দাওয়াত কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কার নির্দেশে? আল সাউদ সরকারের নির্দেশে। প্রশ্ন হল এর আগে ঐ পবিত্র ভূমিতে শেষবার কখন দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দেয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল?

              সকল মুসলিম এটা জানে, আলেমরা তো অবশ্যই জানে এর আগে এই পবিত্র ভূমিতে দ্বীন ইসলামের দাওয়াতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, মক্কার ক্বুরাইশরা। আবু জাহল, আবু সুফিয়ান, ওয়ায়লিদ বিন মুগীরা, উমাইয়্যা বিন খালাফরা। এবং মক্কা বিজয়ের পর থেকে আর কেউ বিলাদুল হারামাইনে দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নি। আল সাউদ ছাড়া।

              নিশ্চিত ভাবেই এ হল আল সাউদের কুফর বাওয়াহ বা সুস্পষ্ট কুফর। শুধুমাত্র মক্কার ক্বূরাইশ না, যুগে যুগে কাফিরদের সবার মধ্যে যে একটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান ছিল তা হলে তারা আল্লাহর দ্বীনের প্রতি মানুষকে আহবান করাকে বেআইনী ঘোষনা করতো। নূহ আলাইহিস সালামের ক্বওম থেকে শুরু করে নমরুদ, ফিরআউন, 'আদ, সামুদ, ক্বওমে লূত, প্রতিটি কাফির ক্বওম এবং তাদের নেতৃবৃন্দের অবস্থান ছিল এটাই - আল্লাহর দ্বীনের প্রতি আহবান করাকে বেআইনি ঘোষণা করা, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।

              এবং আল্লাহ শত্রু ও উম্মাহর শত্রু মুরতাদ আল-সাউদ ঠিক এই একই কাজ করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে হাদীসের বিরোঢিতার ব্যাপারে "প্রচন্ড আপত্ত্তি" থাকা, "সাহীহ" বুঝ সম্পন্ন, উম্মাহর ঐক্যের ব্যাপারে এতো চিন্তিত আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেবরা যখন এই সুস্পষ্ট কুফর দেখলেন তখন তারা কি করলেন?

              আমরা যা প্রকাশ্যে তার ভিত্তিতে বলতে পারি তিনি সহ অন্যান্য এ ঘরানার শায়খরা তা উপেক্ষা করলেন, এবং আল সাউদের এই কুফরের আনুগত্য করলেন এবং তাদের সাসঙ্কে বৈধতা দিয়ে যেতে লাগ্লেন তাদের বক্তব্য, কলম এবং ফাতাওয়ার মাধ্যমে এবং যারা এধরনের কুফরকে কুফর বলে প্রকাশ করলো, সেসব মুওয়াহিদীনকে তারা খাওয়ারিজ, অবিবেচক, মূর্খ, হঠকারী আখ্যা দিলেন। তাহলে কিভাবে আপনি এরকম একটি অবস্থানের পক্ষে অজুহাত খুজে বের করবেন? এবং কিভাবে আপনি এর পক্ষে যুক্তি দেবেন? এবং ে পর্যায়ের বিচ্যুতি উপেক্ষা করবেন? যে খিয়ানত আপনার সাথে হয়েছে আপনি সেটা মাফ করতে পারেন, কিন্তু আল্লাহ-র দ্বীনের সাথে, কিতাব ও সুন্নাহর সাথে এই খিয়ানত মাফ করার আমি বা আপনি কে? আর তা উপেক্ষা করার আমার বা আপনার এখতিয়ার কি? কিভাবে এই সুস্পষ্ট বিচ্যুতি উপেক্ষা করে আমি দাবী করতে পারি যে ব্যক্তি এরকম করেছে সে আল্লাহ-র দ্বীনের দা'ঈ হিসেবে দায়িত্ব পূর্ণ করেছে? দ্বীনের হাক্ক আদায় করেছে? 'ইলমের সংরক্ষন করেছে এবং উম্মাহকে পথ দেখিয়েছে?

              অথচ আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনুগত্য করার শপথ নিয়েছি!
              আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি হয়, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপরও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।

              Comment


              • #8
                যাজাকাল্লাহ ভাই, খুব সুন্দর হয়েছে।
                মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
                রোম- ৪৭

                Comment


                • #9
                  সুবহানআল্লাহ এই ভয়ংকর কুফর তো মাথায় আসলো না, অথচ আমি নিজেও এই বিষয়ে গদগদ হয়ে গিয়েছিলাম। আল্লাহ্*র কাছে পানাহ চাই... আর আপনাকে যাজাকাল্লাহ খইর... আল্লাহ্* আপনার ইলম ও সময়ে বারাকাহ দান করুক আমীন

                  Comment


                  • #10
                    যেকোন ঘটনা, বক্তব্য কিংবা কাজকে তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখলে তার প্রকৃত অর্থ ও তাৎপর্য সম্পূর্ণ রূপে অনুধাবন করা সম্ভব হয় না। কোন কাজটি কখন করা হচ্ছে, কোন প্রেক্ষাপটে করা হচ্ছে তার উপর অনে কিছুই নির্ভর করে। একইভাবে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপট অনুযায়ী একই কথার ভিন্ন অর্থ হতে পারে। কুফফার মিডিয়া যখন ৯/১১ এর বরকতময় হামলায় মৃত কাফিরদের নিয়ে হাহুতাশ করে তখন আমরা তাদের মনে করিয়ে দেই, “ইতিহাসের শুরু ৯/১১ তে না”। ইরাকের ১০ লক্ষ শিশুর লাশ আর ফিলিস্তিনের আর্তনাদের বদলা হল ৯/১১। যদি আমরা এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে বিচ্ছিন্ন করে ৯/১১কে নিছক একটী হামলা হিসেবে বিচার করতে চাই তবে আমরা ইনসাফ করতে পারবো না, এবং এই বরকতময় ঘটনার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য, কৌশলগত তাৎপর্য, ঐতিহাসিক প্রভাব ইত্যাদি বুঝতে ব্যর্থ হবো। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে বিচ্ছিন্ন করে কোন কথা, বক্তব্য, কাজ কিংবা ঘটনার সঠিক বিচার করা সম্ভব না।
                    আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের ইসলাম ও জঙ্গিবাদ নামক বইটির তাৎপর্য বুঝতে হলে, এই বইয়ের অবস্থান, দর্শন ও বক্তব্য বুঝতে হলে এবং বাংলাদেশের ইসলামি দাওয়াতী অঙ্গনে এবং সর্বোপরি সমাজে এর প্রভাব কি তা বুঝতে হলে, আমাদের অবশ্যই দেখতে হবে বইটি কোন সময়ে, কোন প্রেক্ষাপটে কোন ঘটনা প্রবাহের আলোকে লেখা। আর আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের অন্ধ মুকাল্লিদ কোন উসুলী মাদ্বখালি থেকে শুরু করে, তার জন্য “ইজতিহাদ” কিংবা “আন্তরিক ভুলের” অজুহাত উত্থাপনকারী “জিহাদি” ভাই পর্যন্ত সকলেই ঠিক এ বিষয়টিকেই এড়িয়ে যান।
                    ইসলামের নামের জঙ্গিবাদ বইটি প্রথম প্রকাশ ২০০৬ সালের আগস্টে। এর আগে “ইসলামিক ল রিসার্চ সেন্টার এড লিগাল এইড বাংলাদেশ”- এর ত্রৈমাসিক গবেষণা পত্রিকা ইসলামি আইন ও বিচার- এ প্রবন্ধ আকারে বইটির কিছু অংশ প্রকাশিত হয়। বলাই বাহুল্য এই বই লেখা হয়েছিল জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের তৎকালীন কর্মকান্ডের প্রতিক্রিয়া হিসেবে। তৎকালীন বাস্তবতার প্রেক্ষিতে।
                    ২০০৫ সালের আগস্টে সিরিজ বোমা হামলার মাধ্যমে শায়খ আবদুর রাহমানের রাহিমাহুল্লাহ নেতৃত্বে জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ, জাতীয় পর্যায়ে আত্বপ্রকাশ করে। সিরিজ বোমা হামলা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাহিনী এবং রটনা পরবর্তীতে করা হয়েছে, কিন্তু সেদিনের অপারেশানের লক্ষ্য কখনই মানুষের জান-মালের ক্ষতি করা ছিল না, বোমাতে কোন রকমের শ্র্যাপনেল ব্যবহার করা হয় নি। কারন সে হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় ভাবে, প্রশাসনের কাছে, মিডীয়ার কাছে, বিচারকদের কাছে, মন্ত্রীদের কাছে, সশস্ত্র বাহিনীর কাছে, ‘আলিমদের কাছে, জনগণের কাছে একটি দাওয়াহ পৌছে দেওয়া। এ উদ্দেশ্যে তারা লিফলেট ছাপিয়েছিল এবং সে লিফলেট পৌছে দেওয়া হুয়েছিল উপরোক্ত সব শ্রেণীর কাছে।
                    আর সে দাওয়াহ ছিল নববী – আল্লাহর ইবাদাত ও ত্বগুতকে বর্জনের দাওয়াহ। সে দাওয়াহ ছিল এই কুফর রাস্ট্র ব্যবস্থাকে ছূড়ে ফেলে ইসলামী হুকুমাত কায়েম করার। এই দাওয়াহ ছিল ইসলামের দিকে ফিরে আসার। এ দাওয়াহ ছিল শিরককে ত্যাগ করবার, এবং তাওহীদকে আকড়ে ধরবার। এ দাওয়াহ ছিল মানব রচিত সংবিধান এর বদলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সংবিধান গ্রহন করবার। এ দাওয়াহ ছিল আল ওয়ালা ওয়াল বারার। এ দাওয়াহ ছিল পরিপূর্ণ তাওহীদের শুধুমাত্র তাওহীদ আর-রুবুবিয়াহ কিংবা তাওহীদ আল আসমা ওয়াস সিফাতের না। এ ছিল সে নববী দাওয়াত যে দাওয়াত নিয়ে এসেছেন সকল রাসূল আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস সালাম। এ হল সেই দাওয়াত যে দাওয়াতের কারনে যুগে যুগে হাক্ব ও বাতিলের লড়াই হয়েছে। এ হল সে দাওয়াহ যার জন্য বদরের ময়দানে দুটি দল মুখোমুখি হয়েছিল। এ হল সে দাওয়াহ যার জন্য মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের দান্দান মুবারাক শহীদ হয়েছিল, শিরস্ত্রানের অংশ রাহমাতুললিল আলামীনের মাথার সাথে গেথে গিয়েছিল, এ হল সে দাওয়াত যার কারনে তায়েফের প্রান্তরে রাসূলুল্লাহ রক্তান্ত হয়েছিলেন – সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম।এ হল সে দাওয়াত যে দাওয়াহ চিরন্তন। দাওয়াহ ইলাল্লাহ -
                    “আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি (এই নির্দেশ দেয়ার জন্য যে)ঃ আল্লাহর ইবাদাত কর, এবং ত্বগুতকে বর্জন করো।“ [আন-নাহল, ৩৬]

                    যদি কেউ এ তথ্য যাচাই করে দেখতে চান তারা ইউটিউবে খুজুন, “Worship Allah, Avoid Taghoot”। এই সুস্পষ্ট তাওহীদের দাওয়াহ নিয়েই জেএমবি এসেছিল এবং এই দাওয়াহর কারনেই এই ভুমির ত্বগুত সরকার তাদের বিরোধিতা করেছিল। জেএমবি কৌশলের, তাদের পদ্ধতির বিরোধিতা আমরা করতে পারি, হাজারবার করতে পারি, লক্ষ-কোটি বার করতে পারি। কিন্তু এই দাওয়াহর বিরোধিতা কোন মুসলিম করতে পারে না। আল্লাহ শায়খ আবদুর রাহমান এবং তার ছাত্রদের উপর রহম করুন, তাদের উত্তম প্রতিদান দিক, নিশ্চয় এ ভূমির মুসলিমরা, এভূমির শাবাবরা,এ ভূমির ’আলিমরা তাদের প্রতি যুলুম করেছিলেন। নিশ্চয় তাদের ক্বওম তাদের উপর যুলুম করেছিল।
                    জেএমবির পদ্ধতি নয় বরং তাদের এই দাওয়াহ এবং ইসলামী হুকুমাত কায়েম, ত্বগুত বর্জন, আল ওয়ালা ওয়াল বারার এই আদর্শের জন্যি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবতীর্ন হয়েছিল।এই প্রেক্ষাপটেই ইসলাম ও জঙ্গিবাদ বইটী লেখা। এক দিকে ছিল একটি দল যারা আল্লাহর ইবাদাত ও ত্বগুতকে বর্জনের দিকে আহবান করছিল, আরেক দিকে একটি দল আহবান করছিল আলাহর ইবাদাত তহা আনুগত্য বর্জন, এবং ত্বগুতের আনগুত্যের প্রতি। এ হল এমন দুটি সাঙ্ঘর্ষিক আদর্শ যার মধ্যে কখনোই সমন্বয় সম্ভব নয়। আর তাই তারা একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ন হল।
                    এই দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা সম্পর্কে বিতর্ক করে। [আল হাজ্জ, ১৯]

                    নবগঠিত র*্যাবের উপর দেওয়া হয় জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব। রাষ্ট্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় তাওহীদের দিকে আহবানকারী এই দলের বিরুদ্ধে, কুফরকে টিকিয়ে রাখার জন্য। ত্বগুতের রাহে। আর মুওয়াহিদুন যুদ্ধে অবতীর্ন হয় আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টায়।
                    যারা ঈমানদার তারা যে, জিহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফির তারা লড়াই করে ত্বগুতের পক্ষে সুতরাং তোমরা জিহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল। [আন-নিসা, ৭৬]
                    আমি আবারো বলছি জেএমবির পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি থাকতেই পারে। কিন্তু তাদের যে দাবি তা নিয়ে মতবিরোধের কোন অবকাশ ছিল না। তাদের দাওয়াহ ছিল সুস্পষ্ট এবং প্রকাশ্য। শায়খ আবদুর রাহমান রাহিমাহুল্লাহ কোন অপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন না। শায়খ আবদুর রাহমানের পরিবার কোন অপরিচিত পরিবার ছিল না। বিশেষ করে বাংলাদেশের তথা উপমহাদেশের আহলে হাদীসদের মধ্যে এবং যারা বাংলাদেশ থেকে বিলাদুল হারামাইনে পড়াশুনা করেছেন এমন ‘আলিমদের মধ্যে। শায়খ আবদুর রাহমান কোন মূর্খ ব্যক্তি ছিলেন না, একজন উচ্চ মানের ‘আলিম ছিলেন। তিনি নিজের খেয়াল খুশির অনুসরণ করছিলেন না বরং নববী দাওয়ার করছিলেন। এ কথা গুলো আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের জানা না থাকার কোন কারন নেই। এই হল সে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট যার প্রেক্ষিতে আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ বইটি লেখা হয়েছিল।
                    এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা এই বইতে তিনি কি করেছেন? তিনি দাবি করেছেন বর্তমান মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ইসলামী রাষ্ট্র। এগুলো দারুল ইসলাম। এগুলোর অধিকাংশ আইন ইসলামী। এগুলোর সাথে উমাইয়্যা বা আব্বাসী বা উসমানীদের শাসনের কোন তফাৎ নেই, বরং অনেক দিকে দিয়ে বর্তমান রাষ্ট্রগুলো ভালো। এই রাষ্ট্রগুলোকে ত্বগুত বলা যাবে না। আল্লাহর নাযিল করা আইন দিয়ে শাসন করা না করার সাথে দারুল ইসলাম বা দারুল কুফর হবার কোন সম্পর্ক নেই। তার এধরনের কথার মাধ্যেম তিনি বৈধতা দিয়েছেন ত্বগুতকে। অন্যদিকে তিনি নানাধরনের অপবাদ মুজাহিদিনের উপর চাপিয়েছেন এবং কোন এক্ষেত্রে প্রমান উপস্থাপন করেন নি।তাদের ক্রমাগত খাওয়ারিজের সাথে তুলনা করেছেন, জিহাদের ক্ষেত্রে ভিত্তিহিন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন, মুজাহিদিনকে হঠকারী, অপরিপক্ক, ‘ইলমহীন আখ্যা দিয়েছেন, এবং তাদের কাজের কোন ইসলামী ভিত্তি নেই তা প্রমানে সচেষ্ট হয়েছেন।
                    একথা অনস্বীকার্য বাঙ্গাদেশের তৎকালীন প্রেক্ষাপটে এবই শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের সেনাদের হাতে মুওয়াহিদুনদের দমনের ইসলামী বৈধতার সার্টিফিকেট তুলে দিয়েছিল। যদি এই রাষ্ট্র দারুল ইসলাম হয়, এবং এই সংবিধান কেন্দ্রিক শাসনের সাথে উমাইয়্যা কিংবা আব্বাসী খিলাফার কোন মৌলিক পার্থক্য না থেকে থাকে, এবং যদি মুওয়াহিদুন আসলে খাওয়ারিজ হয় তবে র*্যাবের মাধ্যেম তাদের রাষ্ট্রের নামে দমন করা তো গুনাহর কোন কাজ না! এই বৈধতা এই বই ত্বগুতকে দিয়েছে। ত্বগুতের কুফর এবং কুফরকে টিকিয়ে রাখার জন্য ক্বিতাল ফি সাবিলিত ত্বগুতকে ইসলামি মোড়ক দিয়েছে এ বই। শুধুমাত্র এই একটি বই বা এই একজন ‘আলিম কি সে সময় এরকম অবস্থান নিয়েছিলেন? না। বরং বলা যায় অধিকাংশই তখন এরকম এ অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি প্রচার পাওয়া এবং সবচেয়ে বেশি প্রভাব সৃষ্টিকারী বই এবং বক্তব্যগুলোর তালিকাতে এ বইটি নিঃসন্দেহে উপরের দিকেই থাকবে।
                    সুতরাং আমরা যখন আব্দুল্লাহ জাহাংগীরের অনস্বীকার্য অন্যান্য ভালো কাজের কারনে উনার এ বই এবং এহেন কাজের জন্য অজুহাত দেয়ার চেষ্টা করবো, এরকম কাজকে ইজতিহাদ বলে জায়েজ করার চেষ্টা করবো, তখন আমাদের উচিত হবে কোন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে এ বইটি লেখা হয়েছিল তা নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করা। আমাদের উচিত শায়খ আবদূর রাহমান রাহিমাহুল্লাহ সহ জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের অন্যান্য মাযলুম নেতা-কর্মী এবং তাদের পরিবারেরা যদি আল্লাহ সুবহানাহু ও তা’আলার দরবারে তাদের ক্বউমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেন, তখন আমাদের জবাব কি হবে তা নিয়ে চিন্তা করা। আমাদের উচিত শায়খ আব্দুর রাহমান রাহিমাহুল্লাহ, আতাউর রাহমান সানী, সিদ্দিকুল ইসলামসহ শুহাদার (আমরা তাদের ব্যাপারে তাই ধারনা করি এবং আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত) ফোটা ফোটা রক্তের ওজন নিয়ে চিন্তা করা। টিএফআই সেলে তাদের দেহে করা প্রতিটী আঘাতের কথা চিন্তা করা। আল্লাহর কাছে এই মাযলুমদের ফরিয়াদের কথা চিন্তা করা। যদি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর আর শায়খ আব্দুর রাহমান রাহিমাহুল্লাহকে আখিরাতে একত্রে রাখেন তাহলে তো রাখলেন ওয়া হুওয়া ‘আলা কুল্লি শাঈ’ঈন ক্বাদির। কিন্তু যদি এই দুজন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আখিরাতে আলাদা আলাদা রাখেন তাহলে আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত আমরা কার সাথে থাকাটা পছন্দ করবো। যিনি “আল্লাহর ইবাদাত ও ত্বগুত বর্জন”-এর আহবান জানিয়েছিলেন তার সাথে? নাকি যিনি আহলুস সুন্নাহর প্রজন্মের পর প্রজন্মে ধরে চলে আসা ও স্বীকৃত অবস্থানকে ছেড়ে একটির পর একটি, একটির পর একটি ভুল ব্যাখ্যা , এবং ‘ইলমের ও দ্বীনের আমানতের খিয়ানত করা পূর্বক ত্বগুতের আনুগত্যকে শার’ঈ বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন, ত্বগুতের আনুগত্যের দিকে আহবান করেছিলেন, এবং মুওয়াহিদুনের বিরুদ্ধে ত্বগুতের পক্ষ নিয়েছিলেন তার সাথে?

                    আল্লাহ শায়খ আব্দুর রাহমান ও তার ছাত্রদের উপর রহম করুন, তাদের ভুল ত্রুটি গুলো মাফ করে দিন এবং তাদের ভালো আমল গুলোর আজর বৃদ্ধি করে দিন এবং তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন। আল্লাহ যেন শায়খ আবদুর রাহমানের প্রকৃত যে ছাত্ররা এখনো জীবিত আছেন এবং তাওহীদের হাক্ব আদায়ে শপথবদ্ধ আছেন তাদের কল্যানময় মুক্তি ত্বরান্বিত করেন এবং তাদেরকে গুলুহ থেকে, খাওয়ারিজের ফিতনা থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ যেন এ ভূমির উলামা, তলিবুল ‘ইলম, দা'ঈদের দ্বীনের সাথে খিয়ানত করা থেকে রক্ষা করেন। তাওহীদের প্রতি, শারীয়হার প্রতি আনুগত্যে তিনি যেন তাদের দৃঢ়পদ রাখেন।
                    আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি হয়, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপরও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।

                    Comment


                    • #11
                      যাজাকাল্লাহ খইরান,

                      Comment


                      • #12
                        ওয়া ইয়্যাক
                        আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি হয়, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপরও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।

                        Comment

                        Working...
                        X