৩-যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদেরকে ইসলামের দিকে আহবান করতেন, তার সে আহবানের সঙ্গী ছিল তরবারী, তিনি যাদেরকে আমীর করে পাঠাতেন তাদেরকেও অনুরুপ পদ্ধতি অনুসরণের আদেশ দিতেন, আর যখন লোকেরা ইসলামের দিকে আহবানের এই সর্বাত্মক পদ্ধতিটি দেখত, তখন তা তাদের আল্লাহর দীনের ব্যাপারে সন্দেহ দূর করার জন্যে যথেষ্ট বলে গণ্য হত।
বুখারী ৩৮৯৫ ও মুসলিম বর্ণণা করছেন, সাহল ইবন সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, খায়বারর যুদ্ধে একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আগামীকাল সকালে আমি এমন এক ব্যক্তির হাতে ঝাণ্ডা অর্পণ করবো যার হাতে আল্লাহ খায়বারে বিজয় দান করবেন এবং যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালবাসেন আর সেও আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে। সাহল রা) বলেন, মুসলমানগণ এ জল্পনা কল্পনার মধ্যেই রাত কাটালো যে, তাদের মধ্যে কাকে অর্পণ করা হবে এ ঝাণ্ডা। সকাল হলো, সবাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন, আর প্রত্যেকেই মনে মনে এ ঝাণ্ডা লাভ করার আকাঙ্ক্ষা করছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সা) বললেন, আলি ইবন আবু তালিব কোথায়? সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! তিনি তো চক্ষুরোগে আক্রান্ত অবস্থায় আছেন। তিনি বললেন, তাকে লোক পাঠিয়ে সংবাদ দাও। সে মতে তাঁকে আনা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উভয় চোখে থুথু লাগিয়ে তাঁর জন্যে দুয়া করলেন। ফলে চোখ এরূপ সুস্থ হয়ে গেল যে, যেন কখনো চোখে কোন রোগই ছিল না। এরপর তিনি তাঁর হাতে ঝাণ্ডা অর্পণ করলেন। তখন আলী রা) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! তারা আমাদের মত (মুসলমান) না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বর্তমান অবস্থায়ই তাদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে উপনীত হও , এরপর তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের প্রতি আহবান করো (যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে) ইসলামী বিধানে ওদের উপর যেসব হক বর্তায় সেসব সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করে দিও। কারণ আল্লাহর কসম ! তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ যদি মাত্র একজন মানুষকেও হেদায়েত দান করেন তা হলে তা তোমার জন্য লোহিত বর্ণের (মূল্যবান) উটের মালিক হওয়া অপেক্ষাও অনেক উত্তম।
কাজেই ইসলামের দিকে এই আহবানটি শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে হয়েছিল।
মুসলিম (৩২৬১) বর্ণিত হাদীসে বুরাইদা বলেন, ‘যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন একজন ব্যক্তিকে কমাণ্ডার(আমির) নিযুক্ত করতেন কোন বাহিনীর নেতা হিসেবে কিংবা কোন কাফেলা আক্রমণকারী দলের প্রধান হিসেবে, তিনি সেই ব্যক্তিকে উপদেশ দিতেন আল্লাহকে ভয় করতে, তার নিজের জন্য ও তার সাথী মুসলিমদের জন্য, এরপর তিনি বলতেন,
“…যে আল্লাহর সাথে কুফরী করে, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে তার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ো। যুদ্ধ করো, তবে তোমরা সীমালংঘন করো না, বিশ্বাসঘাতকতা করো না, হাত পা কেটে খণ্ড খণ্ড করে বিকৃত করো না এবং শিশুদেরকে হত্যা করো না। আর যখন তোমার মুশরিক শত্রুদের সাথে যুদ্ধ বেঁধে যায়, তখন তিনটি নীতির দিকে তাদেরকে আহবান জানাও। এর যে কোনটি সে যখন মেনে নেয় তখন তা গ্রহণ করে নাও এবং যুদ্ধ বন্ধ করে দাও। অতঃপর তাদেরকে সর্বপ্রথম ইসলাম কবুল করার দিকে আহবান জানাও। যদি তারা তোমার এ আহবানে সাড়া দেয় তখন তুমি তাদের এ সাড়া কবুল করে নাও এবং জিহাদ বন্ধ করে দাও।…আর যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় তখন তাদেরকে জিযিয়াহ কর প্রদানে বাধ্য করো। যদি তারা তা মেনে নেয়, তোমরা তা কবুল করে নাও এবং তাদের সাথে এ অবস্থায়ও জিহাদ বন্ধ রাখো। আর যদি তারা উক্ত জিযিয়াহ প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়, তখন (তৃতীয় ও শেষ ফয়সালা) আল্লাহর কাছে মদদ ও সাহায্য কামনা করো এবং তাদের সাথে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ো…।“
কাজেই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কমাণ্ডারদের আদেশ করেছেন কুফফারদের আহবান করতে ইসলামের দিকে যখনএই আহবানের সংগী ছিল মাথার উপরে তরবারীর ঝলকানি। যদি তারা মুসলিম হতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে তাদের অবশ্যই জিযিয়াহ কর দিতে হবে বিনয়াবনত হয়ে। আর যদি তারা এতেও রাজী না হয়, তাহলে তাদের জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট থাকল না তরবারী ব্যতীত- “যদি তারা (উক্ত জিযিয়াহ প্রদানে) অস্বীকৃতি জানায়, তখন (তৃতীয় ও শেষ ফয়সালা) আল্লাহর কাছে মদদ ও সাহায্য কামনা করো এবং তাদের সাথে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ো ”
৪- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি কিয়ামত দিবসের পূর্বে তরবারী হাতে এ উদ্দেশ্য প্রেরিত হয়েছি যে, কেবলমাত্র এক আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালারই) ইবাদত করা হবে, আর আমার রিযিক আসে আমার বর্শার ছায়া হতে, আর যারা আমার আদেশের বিরুদ্ধে যাবে তাদের জন্য অপমান (আর লাঞ্ছনা) তাকদীরে নির্ধারিত হয়েছে, আর যে কেউ তাদের অনুকরণ করে সে তাদেরই একজন”। মুসনাদে আহমান, ৪৮৬৯; সহীহ আল জামে’,২৮৩১.
এ ঘটনাটি, অর্থাৎ ইসলামের প্রসারের একটি মাধ্যম হিসেবে তরবারী ও শক্তি ব্যবহৃত হয়েছে এটি ইসলামের জন্য লজ্জা বা হীনমন্যতার কিছু নয়, বরং এটি ইসলামের একটি শক্তি ও গুণ, কেননা এর ফলে মানুষ সেই দীনের সাথে লেগে থাকে যা তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে উপকৃত করবে। বেশির ভাগ লোকেরাই বোকা এবং জ্ঞান ও বিচক্ষণতার অভাব তাদের মধ্যে রয়েছে, আর তাদেরকে যদি তাদের নিজেদের অবস্থার উপর ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে তারা সত্যের প্রতি বরাবরের মতই অন্ধ গাফেল হয়ে থাকে।
তারা তাদের খামখেয়ালী মনোভাব ও কামনা বাসনার মাঝে নিমজ্জিত হতে থাকে। কাজেই আল্লাহ জিহাদের প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন যাতে তাদেরকে সত্যের উপর ফিরিয়ে আনা যায় আর এটা তাদের উপকার করে। নিসন্দেহে বিচক্ষণতা নির্দেশ করে যে, বোকাদেরকে তাদের মূর্খতাপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে এবং তাদেরকে এমন কিছুর দিকে জোর করতে হবে যা তাদের উপকার করবে।
আল বুখারী (৪৫৭৭) বর্ণনা করেছেনঃ “তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে”।(আলে ইমরান ১১০) এই আয়াতটি সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মানুষের জন্য মানুষ কল্যাণজনক তখনই হয় যখন তাদের গ্রীবাদেশে শিকল লাগিয়ে নিয়ে আসে, এরপর তারা ইসলামে প্রবেশ করে”। জিহাদ ব্যতীত কি লোকদের ঘাড়ে শিকল লাগানো অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব?
এটা এমন একটি বিষয়, যার জন্য ইসলাম প্রশংসার দাবীদার, নিন্দনীয় নয়। পরাজিত ধব্জাধারীদের উচিত আল্লাহকে ভয় করা এ কারণে যে তারা আল্লাহর দীনকে বিকৃত করছে, আর একে দূর্বল করে তুলছে বার বার এ দাবী করে যে, এটা হচ্ছে শান্তির ধর্ম। হ্যাঁ, এটা শান্তির ধর্ম ঠিক, কিন্তু যে উদ্দেশ্যে কথাটি বলা হয়ে থাকে তা হচ্ছে, সমস্ত মানবজাতিকে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর ইবাদত করা থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে, আর সমগ্র মানব জাতিকে আল্লাহর আইন বিধানের নিকট আত্মসমর্পণ করার মাধ্যমে। এটা হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার মনোনীত দীন, কোন ব্যক্তি বা মানুষের উর্বর চিন্তাধারার ফসল নয়। কাজেই যারা এর প্রচারের জন্য কাজ করছে তাদের উচিত নয় এই দীনের চূড়ান্ত লক্ষ্য প্রকাশে লজ্জাবোধ করা, আর তা হচ্ছে সকল দীনের উপর আল্লাহর দীন বিজয়ী থাকবে এবং সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যেই হতে হবে।
বুখারী ৩৮৯৫ ও মুসলিম বর্ণণা করছেন, সাহল ইবন সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, খায়বারর যুদ্ধে একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আগামীকাল সকালে আমি এমন এক ব্যক্তির হাতে ঝাণ্ডা অর্পণ করবো যার হাতে আল্লাহ খায়বারে বিজয় দান করবেন এবং যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালবাসেন আর সেও আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে। সাহল রা) বলেন, মুসলমানগণ এ জল্পনা কল্পনার মধ্যেই রাত কাটালো যে, তাদের মধ্যে কাকে অর্পণ করা হবে এ ঝাণ্ডা। সকাল হলো, সবাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন, আর প্রত্যেকেই মনে মনে এ ঝাণ্ডা লাভ করার আকাঙ্ক্ষা করছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সা) বললেন, আলি ইবন আবু তালিব কোথায়? সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! তিনি তো চক্ষুরোগে আক্রান্ত অবস্থায় আছেন। তিনি বললেন, তাকে লোক পাঠিয়ে সংবাদ দাও। সে মতে তাঁকে আনা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উভয় চোখে থুথু লাগিয়ে তাঁর জন্যে দুয়া করলেন। ফলে চোখ এরূপ সুস্থ হয়ে গেল যে, যেন কখনো চোখে কোন রোগই ছিল না। এরপর তিনি তাঁর হাতে ঝাণ্ডা অর্পণ করলেন। তখন আলী রা) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! তারা আমাদের মত (মুসলমান) না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বর্তমান অবস্থায়ই তাদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে উপনীত হও , এরপর তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের প্রতি আহবান করো (যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে) ইসলামী বিধানে ওদের উপর যেসব হক বর্তায় সেসব সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করে দিও। কারণ আল্লাহর কসম ! তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ যদি মাত্র একজন মানুষকেও হেদায়েত দান করেন তা হলে তা তোমার জন্য লোহিত বর্ণের (মূল্যবান) উটের মালিক হওয়া অপেক্ষাও অনেক উত্তম।
কাজেই ইসলামের দিকে এই আহবানটি শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে হয়েছিল।
মুসলিম (৩২৬১) বর্ণিত হাদীসে বুরাইদা বলেন, ‘যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন একজন ব্যক্তিকে কমাণ্ডার(আমির) নিযুক্ত করতেন কোন বাহিনীর নেতা হিসেবে কিংবা কোন কাফেলা আক্রমণকারী দলের প্রধান হিসেবে, তিনি সেই ব্যক্তিকে উপদেশ দিতেন আল্লাহকে ভয় করতে, তার নিজের জন্য ও তার সাথী মুসলিমদের জন্য, এরপর তিনি বলতেন,
“…যে আল্লাহর সাথে কুফরী করে, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে তার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ো। যুদ্ধ করো, তবে তোমরা সীমালংঘন করো না, বিশ্বাসঘাতকতা করো না, হাত পা কেটে খণ্ড খণ্ড করে বিকৃত করো না এবং শিশুদেরকে হত্যা করো না। আর যখন তোমার মুশরিক শত্রুদের সাথে যুদ্ধ বেঁধে যায়, তখন তিনটি নীতির দিকে তাদেরকে আহবান জানাও। এর যে কোনটি সে যখন মেনে নেয় তখন তা গ্রহণ করে নাও এবং যুদ্ধ বন্ধ করে দাও। অতঃপর তাদেরকে সর্বপ্রথম ইসলাম কবুল করার দিকে আহবান জানাও। যদি তারা তোমার এ আহবানে সাড়া দেয় তখন তুমি তাদের এ সাড়া কবুল করে নাও এবং জিহাদ বন্ধ করে দাও।…আর যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় তখন তাদেরকে জিযিয়াহ কর প্রদানে বাধ্য করো। যদি তারা তা মেনে নেয়, তোমরা তা কবুল করে নাও এবং তাদের সাথে এ অবস্থায়ও জিহাদ বন্ধ রাখো। আর যদি তারা উক্ত জিযিয়াহ প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়, তখন (তৃতীয় ও শেষ ফয়সালা) আল্লাহর কাছে মদদ ও সাহায্য কামনা করো এবং তাদের সাথে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ো…।“
কাজেই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কমাণ্ডারদের আদেশ করেছেন কুফফারদের আহবান করতে ইসলামের দিকে যখনএই আহবানের সংগী ছিল মাথার উপরে তরবারীর ঝলকানি। যদি তারা মুসলিম হতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে তাদের অবশ্যই জিযিয়াহ কর দিতে হবে বিনয়াবনত হয়ে। আর যদি তারা এতেও রাজী না হয়, তাহলে তাদের জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট থাকল না তরবারী ব্যতীত- “যদি তারা (উক্ত জিযিয়াহ প্রদানে) অস্বীকৃতি জানায়, তখন (তৃতীয় ও শেষ ফয়সালা) আল্লাহর কাছে মদদ ও সাহায্য কামনা করো এবং তাদের সাথে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ো ”
৪- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি কিয়ামত দিবসের পূর্বে তরবারী হাতে এ উদ্দেশ্য প্রেরিত হয়েছি যে, কেবলমাত্র এক আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালারই) ইবাদত করা হবে, আর আমার রিযিক আসে আমার বর্শার ছায়া হতে, আর যারা আমার আদেশের বিরুদ্ধে যাবে তাদের জন্য অপমান (আর লাঞ্ছনা) তাকদীরে নির্ধারিত হয়েছে, আর যে কেউ তাদের অনুকরণ করে সে তাদেরই একজন”। মুসনাদে আহমান, ৪৮৬৯; সহীহ আল জামে’,২৮৩১.
এ ঘটনাটি, অর্থাৎ ইসলামের প্রসারের একটি মাধ্যম হিসেবে তরবারী ও শক্তি ব্যবহৃত হয়েছে এটি ইসলামের জন্য লজ্জা বা হীনমন্যতার কিছু নয়, বরং এটি ইসলামের একটি শক্তি ও গুণ, কেননা এর ফলে মানুষ সেই দীনের সাথে লেগে থাকে যা তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে উপকৃত করবে। বেশির ভাগ লোকেরাই বোকা এবং জ্ঞান ও বিচক্ষণতার অভাব তাদের মধ্যে রয়েছে, আর তাদেরকে যদি তাদের নিজেদের অবস্থার উপর ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে তারা সত্যের প্রতি বরাবরের মতই অন্ধ গাফেল হয়ে থাকে।
তারা তাদের খামখেয়ালী মনোভাব ও কামনা বাসনার মাঝে নিমজ্জিত হতে থাকে। কাজেই আল্লাহ জিহাদের প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন যাতে তাদেরকে সত্যের উপর ফিরিয়ে আনা যায় আর এটা তাদের উপকার করে। নিসন্দেহে বিচক্ষণতা নির্দেশ করে যে, বোকাদেরকে তাদের মূর্খতাপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে এবং তাদেরকে এমন কিছুর দিকে জোর করতে হবে যা তাদের উপকার করবে।
আল বুখারী (৪৫৭৭) বর্ণনা করেছেনঃ “তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে”।(আলে ইমরান ১১০) এই আয়াতটি সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মানুষের জন্য মানুষ কল্যাণজনক তখনই হয় যখন তাদের গ্রীবাদেশে শিকল লাগিয়ে নিয়ে আসে, এরপর তারা ইসলামে প্রবেশ করে”। জিহাদ ব্যতীত কি লোকদের ঘাড়ে শিকল লাগানো অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব?
এটা এমন একটি বিষয়, যার জন্য ইসলাম প্রশংসার দাবীদার, নিন্দনীয় নয়। পরাজিত ধব্জাধারীদের উচিত আল্লাহকে ভয় করা এ কারণে যে তারা আল্লাহর দীনকে বিকৃত করছে, আর একে দূর্বল করে তুলছে বার বার এ দাবী করে যে, এটা হচ্ছে শান্তির ধর্ম। হ্যাঁ, এটা শান্তির ধর্ম ঠিক, কিন্তু যে উদ্দেশ্যে কথাটি বলা হয়ে থাকে তা হচ্ছে, সমস্ত মানবজাতিকে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর ইবাদত করা থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে, আর সমগ্র মানব জাতিকে আল্লাহর আইন বিধানের নিকট আত্মসমর্পণ করার মাধ্যমে। এটা হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার মনোনীত দীন, কোন ব্যক্তি বা মানুষের উর্বর চিন্তাধারার ফসল নয়। কাজেই যারা এর প্রচারের জন্য কাজ করছে তাদের উচিত নয় এই দীনের চূড়ান্ত লক্ষ্য প্রকাশে লজ্জাবোধ করা, আর তা হচ্ছে সকল দীনের উপর আল্লাহর দীন বিজয়ী থাকবে এবং সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যেই হতে হবে।
Comment