[আবু বাকর বাগদাদির নেতৃত্বাধীন “আইসিস”/”আইএস” নামক দলটির পক্ষ থেকে তানযী ক্বা’ইদাতুল জিহাদ প্রতি উত্থাপিত অসংখ্যা অভিযোগসমূহের মধ্যে অন্যতম হল – তানযীম ক্বা’ইদাতুল জিহাদের প্রতি সালাফি জিহাদের প্রকৃত মানহাজ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ২০১৪ এর এপ্রিলে তাদের কথিত খিলাফাহ ঘোষণার প্রায় দু মাস আগে, আল-ফুরক্বান মিডিয়া থেকে প্রকাশিত জামাতুল বাগদাদির মুখপাত্র আবু মুহাম্মাদ আল আদনানীর “এটা আমাদের মানহাজ নয় আর কখনো হবেও না” শীর্ষক বক্তব্যে সর্বপ্রথম তারা অফিশিয়ালি দাবি করে বর্তমান আল-ক্বা’ইদার নেতৃবৃন্দ, সালাফি জিহাদ ও শায়খ উসামার মানহাজ থেকে পথভ্রষ্ট হয়েছে। এ দাবির স্বপক্ষে কিছু অভিযোগ এ বক্তব্য পেশ করা হয়। পরবর্তীতে তাদের সাতেহ সংশ্লিষ্ট সকলেই নানাভাবে এ সকল অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করতে থাকে।
এ প্রবন্ধগুলোতে আমরা দালীলিক আলোচনার মাধ্যমে অনুসন্ধানের চেষ্টা করবো সালাফি জিহাদের প্রকৃত মানহাজ কোনটি এবং কারা সে মানহাজের অনুসরণ করছে আর কারাই বা বিচ্যুত হয়েছে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত আল-আদনানী মহাসত্য উচ্চারন করেছে যখন সে বলেছে ““এটা আমাদের মানহাজ নয় আর কখনো হবেও না”। সত্যই আল-ক্বাইদার মানহাজ এবং জামাতুল বাগদাদির মানহাজ এক নয়, আর না কখনো হবে।]
=========
উসামার আল-ক্বায়িদা থেকে আইমানের আল-ক্বায়িদা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে এর পক্ষে আদনানির অনেকগুলোর অভিযোগের মধ্যে একটি হচ্ছে রাফিদাদের ব্যাপারে আল-ক্বা’ইদা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এখন পালটে ফেলেছে! তো এই ব্যাপারে আদনানি “এটা না আমাদের মানহাজ আর না কখনো হবে” শিরনামে একটি বার্তাতে বলেন যে, বর্তমান আল-ক্বা’ইয়দা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারা বলেন যে, “আর তারা (আল-ক্বা’ইদা) এখন বলছে নাপাক রাফিদা মুশরিকিনদের ব্যাপারে মতপার্থক্য আছে[1], এবং এটি (সম্মিলত ভাবে রাফিদাদের বিষয়টি) হল দাওয়াতী ময়দানের কাজ
অথচ আল-ক্বা’ইদার সাথে জামা’আতুল জিহাদের[2] সংযুক্তির আগেও ড. আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর অবস্থান এটিই ছিল। শি’আদের ব্যাপারে তিনি বলেছিলেন, “সাধারণ মুর্খ শি’আদের ব্যাপারে অবস্থান হল, তারা তাদের অজ্ঞতার কারনে ওজর পাবে।”[3] এবং আজ পর্যন্ত ডঃ যাওয়াহিরি তার এ অবস্থান পরিবর্তন করেন নি, এবং এমন কিছুই বলেন নি যা তার পূর্বের এ বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক। এমনকি দুটি জামা’আ একীভূত হবার সময়েও শাইখ উসামাও কিন্তু শর্ত হিসেবে ডঃ যাওয়াহিরিকে বলেনি তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বা এ অবস্থান থেকে সরে আসতে।[4] যদি এটি স্পষ্ট গোমরাহিই হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে এরকম গোমরাহিপূর্ণ বক্তব্য ডঃ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী দেয়ার পরও জামা’আহ দুটি একীভূত হল? আর কেনই বা শায়খ উসামা, এরকম “গোমরাহ” ব্যক্তি আইমান আয্*-যাওয়াহিরীকে নিজের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও আল-ক্বা’ইদার শূরা সদস্য হিসেবে গ্রহন করলেন?
আর ড. আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর এ বক্তব্যের ব্যাপারে এত অবাক হবারই বা কি আছে, যেখানে উসামা আল-ক্বা’ইদার আমীরা থাকাকালীন অবস্থাতেই ডঃ যাওয়াহিরী তার প্রথম সম্মুখ সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেছিলেন: “শি’আদের সাধারণ জনগণের ব্যাপারে আমার অবস্থান হচ্ছে, আহলুস সুন্নাতের আলিমদের অবস্থান, এবং সেটা হল যে তারা তাদের অজ্ঞতার জন্য (তাকফির থেকে) ওজর পাবে (উযর বিল জাহল)… এবং যেসব সাধারণ শি’আ, মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোন যুলুমে অংশগ্রহণ করে নি, তাদের প্রতি আমাদের পথ হল দাওয়াহ এবং সত্য উপস্থাপন করার পথ।”[5]
২০০৫ এ আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীকে লেখা চিঠিতেও ডঃ যাওয়াহিরী বলেছিলেন – “কেন সাধারণ শি’আদের হত্যা করা হচ্ছে যখন তাদের ব্যাপারে অজ্ঞতার অজুহাত (উযর বিল-জাহল) রয়েছে?”[6]
এ বক্তব্যের ব্যাপারে খুরাসানের নেতৃত্বও একমত ছিলেন। শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবী[7], আল-যারক্বাউয়ীর কাছে লেখা চিঠিতে ড. আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর চিঠির উল্লেখ করে বলেন, “তারা (খুরাসানের নেতৃবৃন্দ) কিছু বিষয় এবং নির্দেশনাবলীর ব্যাপারে একমত হয়েছেন, যার সারসংক্ষেপ আপনি ডঃ সাহেবের চিঠিতে পাবেন, এবং এটাই আমাদের ভাইদের, বিশেষ করে শায়খদের, এবং উলামা–উমারা যারা এখানে আছেন তাদের সকলের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে।”[8]
এতো কিছুর পরও, আল-যারক্বাউয়ী বলেন নি যে তারা (আল-ক্বা’ইদা) পথভ্রষ্ট!
এবং আতিয়াতুল্লাহ, যিনি উসামার আল-ক্বা’ইদারই সদস্য ছিলেন, বলেছিলেন, “বরং সঠিক অবস্থান হল, তারা (রাফিদা) বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্তিযোগ্য, এবং রাফিদা শি’আদের সাথে সংযুক্ত সকলেই যে নিশ্চিত ভাবে কাফির, এমন না। বরং আমরা তাদের প্রত্যেককে তাদের বিশ্বাস এবং কাজের ভিত্তিতে উপযুক্ত শ্রেণীতে বিভক্ত করবো।”[9]
আরো বিস্ময়কর ব্যাপার হল শুধু উসামা আর আইমানের আল-ক্বা’ইদাই না, বরং খোদ আইসিসের সবচেয়ে বড় তাত্ত্বিকরাও একই অবস্থানের কথাই ইতিপূর্বে বলেছে। তুর্কি বিন’আলী (তাদের প্রধান শার’ঈ) ইন্টারনেটে প্রচারিত অডিং রেকর্ডিং এ বলেছে:
“শি’আদের ব্যাপারে আলিমগণের মধ্যে মতপার্থক্য আছে…এবং ব্যক্তিগত ভাবেও প্রত্যেক শি’আ কি কুফরের উপর আছে, নাকি তাদের কুফর হল দলগত ভাবে কোন দলের কুফরের উপর থাকার অনুরূপ, সেটার ব্যাপারেও মতপার্থক্য রয়েছে…আমরা এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান এভাবেই উপস্থাপন করি যে, যখন সালাফগণ ইমামিয়্যাহ শি’আদের তাকফির করেছিলেন, তখনও তারা কি শুধুমাত্র দলগতভাবে কাফির নাকি তারা প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে কাফির, এ ব্যাপারে সালাফগণের মধ্যে মতপার্থক্য ছিল। সংক্ষিপ্তভাবে এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হল, তাদের মধ্যে যারা দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং মুসলিমদের উপর শক্তি প্রয়োগ করেছে, তাদের প্রত্যেকের উপর ব্যক্তিগতভাবে তাকফির করা হবে, যেমন রাফিদা সরকার এবং রাফিদা মিলিশিয়াদের উপর। এবং যারা তাদের মত না তাদের প্রত্যেকের অবস্থা আলাদা ভাবে বিচার করতে হবে। দেখতে হবে তারা কি সুস্পষ্টভাবে ইমান নষ্টকারী কোন কাজ করেছে কি না। এবং সে অনুযায়ী সে ব্যক্তির ব্যাপারে হুকুম হবে। যদি সে (সুস্পষ্ট ভাবে ইমান নষ্টকারী কোন আমল) করে থাকে তবে তার উপর তাকফির করা হবে। অন্যথায় করা হবে না। এবং আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত।”
আরো অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে যে, বেশিরভাগের মুজাহিদিনের মতও এটিই। আবু মুস’আব আস-সুরী বলেন, “জা’ফরী শিয়া –‘আল-ইমামিয়্যাহ’, হল ইরানে সংখ্যাগরিষ্ঠ, এবং লেবানন, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংখ্যালঘু…এবং অধিকাংশ জিহাদি (জাআ’আহ) এদেরকে গোমরাহ বিদা’তী বলে মনে করে। যদিও কিছু জিহাদি শি’আদের ঢালাওভাবে কাফির ঘোষণা করেছে। তবে বেশিরভাগ জিহাদিরা শি’আদের মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত আহলুল ক্বিবলা (যারা ক্বা’বার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করে) বলে গণ্য করে যারা গোমরাহ হয়েছে এবং বিদ’আতী।”[10]
বরং এমনকি শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসীও এই মতই গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন, “এই ব্যাপারে আমার মত হল, আমি মূলত এই ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইব্*ন তাইমিয়্যাহর মতের অনুসরণ করি যে শি’আদের সাধারণ জনগণের উপর তাকফির করা হবে না… শিয়াদের জনসাধারণদের মধ্যেও এমনও লোক আছে যারা কিনা সালাত অথবা সিয়াম বাদে আর কিছুর ব্যাপারেই ধারণা রাখে না, এবং আক্বীদার ক্ষেত্রেও বিস্তারিত কোন জ্ঞানই তাদের নেই। যেমন, কুরআন বিকৃত হয়ে গিয়েছে এবং আরো শি’আদের এধরনের যেসব ঈমান ভঙ্গকারী আক্বীদাসমূহ রয়েছে, যেগুলো উপর ভিত্তি করে আহলুস সুন্নাহ রাফিদা শি’আদের উপর তাকফির করে, এরকম অনেক কিছুর ব্যাপারে সাধারণ শি’আদের অনেকেরই কোন ধারণাই নেই।”[11]
এবং শায়খ আল-মাকদিসীর এ বক্তব্য সত্ত্বেও, এবক্তব্যের প্রত্যুত্তর দেয়ার সময় শায়খ আল-যারক্বাউয়ী তাকে বলেন নি যে, “আপনি পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছেন কারণ শি’আদের সাধারণ জনগনকে আপনি কাফির ঘোষণা করেন না।” বরং তিনি তাকে বলেছেন, “হে মহান শায়খ! আপনি জেনে রাখুন, আমি নিজের ব্যাপারে সন্দেহপোষণ করতে পারি, কিন্তু দ্বীনের ব্যাপারে আপনার প্রতি সন্দেহকারীদের মধ্য হতে আমি নই… শেষ করার আগে আমি বলতে চাই, শায়খ মাকদিসী, আল্লাহ তাকে হিফাযাত করুক, হচ্ছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত যাদের মর্যাদা এবং প্রচেষ্টার প্রতি সবার খেয়াল রাখা উচিৎ। এবং তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত, যাদের ব্যাপারে শুধুমাত্র সুধারনাই রাখা যায়। এবং যারা অজুহাত পাবার এবং ভুলের ক্ষেত্রে ক্ষমা পাবার সর্বাধিক যোগ্য। এবং আমি মনে করি না যে বর্তমানে এমন কোন মুওয়াহহিদ (তাওহিদের অনুসরণকারী) আছে, যে কিনা শায়খের দ্বারা উপকৃত হয় নি, যে শায়খের কাছে কৃতজ্ঞ না। সুতরাং যদি কোন ব্যাপারে তার ভুল হয়ে থাকে তবে তার অর্থ এই না যে, তার অবস্থান এবং জ্ঞানকে অপমান করতে হবে, এবং তার অতীত অবদান এবং ত্যাগকে ভুলে যেতে হবে।”[12]
এবং শি’আদের ব্যাপারে শায়খ আল মাকদিসী এরকম অবস্থান গ্রহন করা সত্ত্বেও আইসিস চেষ্টা করেছিল শায়খকে নিজেদের দলে টানার, এবং তখন তারা বলে নি শায়খ পথভ্রষ্ট হয়ে গেছেন। তুর্কি বিন’আলি তার প্রাক্তন শিক্ষক শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিল – “বস্তুত আমীরুল মু’মিনীন আবু বকর আল-বাগদাদী, আল্লাহ তাকে হিফাযাত করুক, আপনাকে জানিয়েছিলেন যে তিনি আপনাকে তার কাছে নিয়ে আসতে পারেন, কিন্তু আপনি সেটাতে সক্ষম হন নি, যদিও সে সময় আপনি একাধিকবার গাযা ও খুরাসানে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন।”[13]
অবাক করা বিষয় হচ্ছে যে, যাদের মানহাজই ভুল (আইসিসের দাবি অনুযায়ী), একদিকে আইসিস তাদেরকয়ে নিজেদের দলে আনার চেষ্টা করছে কিন্তু সিরিয়ার কোন দলে যদি কোন ধূমপায়ী থাকে তখন সেটার কারনে তারা সে দলের সমালোচনায় উঠে পড়ে লাগছে!
আর ঢালাও ভাবে সব রাফিদাকে হামলার নিশানা না বানানো যদি গোমরাহি হয়, তাহলে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ী গোমরাহদের অন্তর্ভুক্ত। কারন তিনি রাফিদার কিছু অংশকয়ে হামলার লক্ষ্য বানানো থেকে বিরত থেকেছিলেন। এ ব্যাপারে ১৫ই শাবান, ১৪২৬ হিজরি, সোমবার (১৯/০৯/২০০৫) তানযীম আল-ক্বা’ইদাহ্* ফী বিলাদ আর-রাফিদাইনের পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল, যার শিরোনাম ছিল (দুই নদের দেশের আল-ক্বা’ইদার পক্ষ থেকে সংগঠনে অবস্থানের ব্যাপারে শায়খ আবু মুস’আবের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু সংশয়ের নিরসন -“Clarification from Al Qaida in the Land of the Two Rivers regarding the stance of the organization after the statement of the Sheikh Abu Mus’ab”]। এ বক্তব্যে বলা হয়েছিল, “সংগঠনের কাছে এই ব্যাপারটি স্পষ্ট যে (রাফিদাদের অন্তর্ভুক্ত) কিছু গোষ্ঠি আছে যারা সুন্নীদের গণহত্যায় অংশগ্রহণ করে নি, এবং আরো কিছু আছে যারা দখলদার বাহিনীকে কোন সহায়তা দেয় নি, এবং তাদের দখলদারদের অপরাধের বিরোধিতা করেছে। যেমন সাদরী, খালিসী, হাসানী এবং আরো অন্যান্যরা। তাই সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এ দলগুলোর নেতা এবং সাধারণদের উপর সংগঠন কোনপ্রকার হামলা চালাবে না, যতক্ষণ এ দলগুলো (সুন্নীদের উপর) আক্রমণের কোন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকব।”
এ অব্যহতির ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ী বলেছিলেন, “তাদের এই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, কারণ রাফিদাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা এর মাধ্যমে আহলুস সুন্নাহ সাথে যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ার ফলাফলকয়ে ভয় করে। তাই এধরনের রাফিদাদের এই সুযোগটা দেয়া দরকার যাতে করে আমরা তাদের বলতে পারি, “তোমরা যদি নিরাপত্তা চাও তবে আমাদের পথ হতে সরে দাড়াও, এবং আমরিকাকে সাহায্য করা বন্ধ কর, এবং আমাদের এবং ক্রুসেডরদের যুদ্ধে কোন বাধা সৃষ্টি করো না।”[14]
শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী (উসামার আল-ক্বা’ইদার সময়ে) সায়্যিদ ইমামের যুক্তিখন্ডন এবং শায়খ আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর কথার অর্থকে স্পষ্ট করতে বলেন, “অতঃপর বইটিতে শি’আ এবং শি’আদের হত্যার ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। আমি একটি ব্যাপার স্পষ্ট করতে চাই, তা হল যে তেল’আফারের ঘটনার পর, যেখানে শি’আ মিলিশিয়ারা মুসলিমদের সম্মানের উপর চরম যুলুম চালিয়েছিল, আমাদের শহীদ ভাই আবু মুস’আব আয-যারক্বাউয়ী, আল্লাহ তার উপর রহম করুক, একটি বার্তা প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি ইরাকে সকল শি’আদের বিরুদ্ধে সর্বাত্বক যুদ্ধের ঘোষণা দেন। এ বার্তার ব্যাপারে মিডিয়ার খুব আগ্রহ ছিল। এর দুইদিন পর তানযীম আল-ক্বা’ইদা ফী বিলাদ আর-রাফিদাঈন একটি বার্তা প্রকাশ করে, যেটাতে তেল আফারের ভয়ঙ্কর ঘটনার প্রেক্ষিতে যে বার্তা প্রকাশ করা হয়েছিল সেটির অস্পষ্ট অংশগুলো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। এবং সেখানে স্পষ্ট করা হয় যে আল-ক্বায়িদা ফী বিলাদ আর-রাফিদাঈন শি’আদের জনসাধারণদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাবে না, বরং বদর ব্রিগেডের মতো ভাড়াটে মিলিশিয়া গুলোর উপর হামলা চালাবে। তবে মিডিয়া এ বার্তাটি এড়িয়ে যায়।[15]
অন্যদিকে যদি দাওয়াহ না বরং শি’আদের সাথে সর্বাত্বক ভাবে যুদ্ধ করাই একমাত্র সঠিক অবস্থান হয়, তাহলে দাউলাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল ইরাকের আমির, আবু উমার আল বাগদাদিও গোমরাহ। কারন তিনি রাফিদাদের প্রতি বলেছিলেন, “ তাওবার দরজা এখনো তোমাদের জন্য খোলা, এবং এরকম ভেব না যে আমরা তামকীন পেলে/কতৃত্ব অর্জন করলে তোমাদের সকলকে হত্যা করে ফেলবো বা তোমাদের সমূলে ধ্বংস করে ফেলবো; কারণ শরীয়াহ নিয়মের অনুসরণ ছাড়া বাছবিচারহীন হত্যা আল্লাহর দ্বীনে হারাম করা হয়েছে। তোমাদের সাথে আমরা সেভাবেই বোঝাপড়া যেভাবে শরীয়াহ আমাদের তোমাদের মতো যারা আছে তাদের প্রতি আচরণের নির্দেশ দেয়, আর তা হল সত্যের আহবান, সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দান, সন্দেহ দূরীকরণ এবং এসকল ক্ষেত্রে কোমলতার পন্থা অবলম্বন। আর যে তা প্রত্যাখান করবে, সে জেনে রাখুক বিচার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর জন্যই।“[16]
তাহলে এসব গুলো বিবৃতির দ্বারা বোঝা যায় যে,
– উসামার আল-ক্বা’ইদাও গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট ছিল কারণ উসামার সময়েও বার বার শি’আদের ব্যাপারে ওই একই অবস্থানের কথা বলা হয়েছে যা আইমানের আল-ক্বা’ইদার সময় বলা হচ্ছে।
– অধিকাংশ জিহাদী জামা’আই বিভ্রান্ত
– আবু উমার আল-বাগদাদিও একইরকমভাবে গোমরাহ ছিল
– আবু বাকর আল বাগদাদির রাষ্ট্র এধরণের বিভ্রান্ত লোকদের নিজেদের সাথে ভেড়াতে চাচ্ছে, কিন্তু অন্য দলগুলো একই কাজ করলে তারা সেটা মানতে রাজি না!
– শাইখ আল-যারক্বাউয়ীর কাছে গোমরাহির সংজ্ঞা আর যারা দাবী করে যে তারা তার পথে আছে, তাদের মধ্যকার “বিভ্রান্তির” সংজ্ঞা এবং মানদন্ড একই না!
=====================
রেফারেন্স
[1] শি’আদের এমন কিছু কাজ আছে যার মাধ্যমে তারা শিরকে পতিত হয়েছে এবং যা তাদের ইসলামের মৌলিক ভিত্তিতে বাতিল করে দিয়েছে। তবে সাধারণ শি’আদের ঢালাও ভাবে ইসলামের গন্ডির বাইরে অবস্থিত কাফির বলে ঘোষণা করা হবে কি না, এ নিয়ে আহলুস সুন্নাহ ওয়া জামা’আর ‘আলিমগণে মধ্যে মতপার্থক্য আছে। আহলুস সুন্নাহর আলিমগণের মধ্যে অনেকে তাদের ঢালাওভাবে কাফির ঘোষণা করেছেন, আবার অনেকে বলেছেন তাদেরকে ঢালাও ভাবে তাকফির (কাফির ঘোষণা) করা যাবে না, কারন যেসব শিরকই কাজে শি’আরা লিপ্ত সেগুলো শিরক হবার ব্যাযপারে তারা অজ্ঞ। একারনে যতোক্ষন এ কাজগুলো শিরক ও কুফর হবার ব্যাপারটি তাদের কাছে পরিষ্কার করা হবে না ততোক্ষণ তাদের অজ্ঞতার কারনে তাদেরকে কাফির বলা যাবে না। এখানে আদনানি, শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর বিরোধিতা করছে কারন শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী ঢালাও ভাবে সকল শি’আর উপর তাকফির করছেন না। আদনানির দাবি হল শি’আদের ব্যাপারে শুধুমাত্র একটি অবস্থান আছে আর তা হল শি’আরা কাফির। এবং এটাই স্পষ্টভাবে বলতে হবে। এবং আদনানির মতে তাদের সাথে শুধু এক ধরনের আচরণই করা বৈধ, আর তা হল লড়াই করা এবং তাদের দাওয়াহ দেয়া যাবে না। আদনানির বক্তব্য হল এটি এমন একটি বিষয় যাতে উসামার সময় আল-ক্বা’ইদার যে অবস্থান ছিল তা থেকে আজকের আল-ক্বা’ইদা বিচ্যুত হয়েছে।
[2] الجهاد الإسلامي المصري বা الجهاد الإسلامي। ডঃ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর নেতৃত্বাধীন মিশরিয় জিহাদি সংগঠন যা আল-ক্বা’ইদার সাথে একীভূত হয়।
[3] আল আনসার ম্যাগাযিন, সংখ্যা ৯১, পৃষ্ঠা ১৮, তারিখঃ বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল
[4] অর্থাৎ যখন শায়খ উসামার নেতৃত্বাধীন সংগঠন আল-ক্বা’ইদা ও শায়খ আইমানের নেতৃত্বাধীন সংগঠন “আল-জিহাদ” ১৯৯৮ সালে একত্রিত হল, এবং এ একীভূত সংগঠনের নাম দেওয়া হল “তানযীম ক্বা’ইদাতুল জিহাদ”। [দেখুন সেপ্টেম্বর ২০০৬ এ “আস-সাহাব” মিডিয়া কতৃক প্রকাশিত “ম্যানহাটন রেইড” শীর্ষক ভিডিওর প্রথম পর্ব]
[5] “শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর সকল প্রবন্ধ, রিসালাহ, চিঠি ও বক্তব্যের সংকলন”, পৃষ্ঠা ৪৭১ “
[6] ডঃ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর পক্ষ থেকে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর প্রতি চিঠি, পৃষ্ঠা ১৩
[7] শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল লিবি ছিলেন আফগানিস্তানে আল-ক্বা’ইদার সকল কর্মকান্ডের দায়িত্বশীল। দেখুন শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবীর সকল বক্তব্য, বিবৃতি ও লেখার সংকলন, পৃষ্ঠা ৫০
[8] আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবীর পক্ষ থেকে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর প্রতি চিঠি, পৃষ্ঠা ৮
[9] আজউয়িবাসুল হিসবাহ (আল-হিসবাহ ফোরামে প্রশ্নসমূহের উত্তর), পৃষ্ঠা ৩০১
[10] দাওয়াতুল মুক্বাওয়ামা আল ইসলামিয়্যাহ আল ‘আলামিয়্যা, পৃষ্ঠা ৭৯২
[11] শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল-মাক্বদিসি- আল জাযিরার সাথে সাক্ষাৎকার ২০০৫, পৃষ্ঠা ১২/১৩
[12] শায়খ আবু মুস’আব আল যারক্বাউয়ীর সকল বক্তব্য ও বিবৃতির সংকলন, পৃষ্ঠা ৩৩১
[13] “আমার প্রাক্তন শায়খ, এ হল আমার ও আপনার মাঝে সম্পর্কচ্ছেদ”, পৃষ্ঠা ৮
[14] আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর সাথে আবুল ইয়ামান আল-বাগদাদির কথোপকথন, পৃষ্ঠা ১৮
[15] তাবরিয়াত উম্মাতিল ক্বালাম ওয়া সাইফ মিন মানক্বাশাহ তুহমাত আল খাওর ওয়াদদ্ব’আফ, শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী, পৃষ্ঠা ১৬৪। ইংরেজীতে Exoneration, পৃষ্ঠা ২১৭
[16] দাউলাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল ইরাকের নেতৃবৃন্দের সকল বক্তব্যের পূর্ণাঙ্গ সংকলন, পৃষ্ঠা ৩০
এ প্রবন্ধগুলোতে আমরা দালীলিক আলোচনার মাধ্যমে অনুসন্ধানের চেষ্টা করবো সালাফি জিহাদের প্রকৃত মানহাজ কোনটি এবং কারা সে মানহাজের অনুসরণ করছে আর কারাই বা বিচ্যুত হয়েছে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত আল-আদনানী মহাসত্য উচ্চারন করেছে যখন সে বলেছে ““এটা আমাদের মানহাজ নয় আর কখনো হবেও না”। সত্যই আল-ক্বাইদার মানহাজ এবং জামাতুল বাগদাদির মানহাজ এক নয়, আর না কখনো হবে।]
=========
প্রথম অভিযোগঃ শি’আদের কাফির ঘোষণা এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা
উসামার আল-ক্বায়িদা থেকে আইমানের আল-ক্বায়িদা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে এর পক্ষে আদনানির অনেকগুলোর অভিযোগের মধ্যে একটি হচ্ছে রাফিদাদের ব্যাপারে আল-ক্বা’ইদা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এখন পালটে ফেলেছে! তো এই ব্যাপারে আদনানি “এটা না আমাদের মানহাজ আর না কখনো হবে” শিরনামে একটি বার্তাতে বলেন যে, বর্তমান আল-ক্বা’ইয়দা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারা বলেন যে, “আর তারা (আল-ক্বা’ইদা) এখন বলছে নাপাক রাফিদা মুশরিকিনদের ব্যাপারে মতপার্থক্য আছে[1], এবং এটি (সম্মিলত ভাবে রাফিদাদের বিষয়টি) হল দাওয়াতী ময়দানের কাজ
অথচ আল-ক্বা’ইদার সাথে জামা’আতুল জিহাদের[2] সংযুক্তির আগেও ড. আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর অবস্থান এটিই ছিল। শি’আদের ব্যাপারে তিনি বলেছিলেন, “সাধারণ মুর্খ শি’আদের ব্যাপারে অবস্থান হল, তারা তাদের অজ্ঞতার কারনে ওজর পাবে।”[3] এবং আজ পর্যন্ত ডঃ যাওয়াহিরি তার এ অবস্থান পরিবর্তন করেন নি, এবং এমন কিছুই বলেন নি যা তার পূর্বের এ বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক। এমনকি দুটি জামা’আ একীভূত হবার সময়েও শাইখ উসামাও কিন্তু শর্ত হিসেবে ডঃ যাওয়াহিরিকে বলেনি তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বা এ অবস্থান থেকে সরে আসতে।[4] যদি এটি স্পষ্ট গোমরাহিই হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে এরকম গোমরাহিপূর্ণ বক্তব্য ডঃ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী দেয়ার পরও জামা’আহ দুটি একীভূত হল? আর কেনই বা শায়খ উসামা, এরকম “গোমরাহ” ব্যক্তি আইমান আয্*-যাওয়াহিরীকে নিজের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও আল-ক্বা’ইদার শূরা সদস্য হিসেবে গ্রহন করলেন?
আর ড. আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর এ বক্তব্যের ব্যাপারে এত অবাক হবারই বা কি আছে, যেখানে উসামা আল-ক্বা’ইদার আমীরা থাকাকালীন অবস্থাতেই ডঃ যাওয়াহিরী তার প্রথম সম্মুখ সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেছিলেন: “শি’আদের সাধারণ জনগণের ব্যাপারে আমার অবস্থান হচ্ছে, আহলুস সুন্নাতের আলিমদের অবস্থান, এবং সেটা হল যে তারা তাদের অজ্ঞতার জন্য (তাকফির থেকে) ওজর পাবে (উযর বিল জাহল)… এবং যেসব সাধারণ শি’আ, মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোন যুলুমে অংশগ্রহণ করে নি, তাদের প্রতি আমাদের পথ হল দাওয়াহ এবং সত্য উপস্থাপন করার পথ।”[5]
২০০৫ এ আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীকে লেখা চিঠিতেও ডঃ যাওয়াহিরী বলেছিলেন – “কেন সাধারণ শি’আদের হত্যা করা হচ্ছে যখন তাদের ব্যাপারে অজ্ঞতার অজুহাত (উযর বিল-জাহল) রয়েছে?”[6]
এ বক্তব্যের ব্যাপারে খুরাসানের নেতৃত্বও একমত ছিলেন। শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবী[7], আল-যারক্বাউয়ীর কাছে লেখা চিঠিতে ড. আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর চিঠির উল্লেখ করে বলেন, “তারা (খুরাসানের নেতৃবৃন্দ) কিছু বিষয় এবং নির্দেশনাবলীর ব্যাপারে একমত হয়েছেন, যার সারসংক্ষেপ আপনি ডঃ সাহেবের চিঠিতে পাবেন, এবং এটাই আমাদের ভাইদের, বিশেষ করে শায়খদের, এবং উলামা–উমারা যারা এখানে আছেন তাদের সকলের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে।”[8]
এতো কিছুর পরও, আল-যারক্বাউয়ী বলেন নি যে তারা (আল-ক্বা’ইদা) পথভ্রষ্ট!
এবং আতিয়াতুল্লাহ, যিনি উসামার আল-ক্বা’ইদারই সদস্য ছিলেন, বলেছিলেন, “বরং সঠিক অবস্থান হল, তারা (রাফিদা) বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্তিযোগ্য, এবং রাফিদা শি’আদের সাথে সংযুক্ত সকলেই যে নিশ্চিত ভাবে কাফির, এমন না। বরং আমরা তাদের প্রত্যেককে তাদের বিশ্বাস এবং কাজের ভিত্তিতে উপযুক্ত শ্রেণীতে বিভক্ত করবো।”[9]
আরো বিস্ময়কর ব্যাপার হল শুধু উসামা আর আইমানের আল-ক্বা’ইদাই না, বরং খোদ আইসিসের সবচেয়ে বড় তাত্ত্বিকরাও একই অবস্থানের কথাই ইতিপূর্বে বলেছে। তুর্কি বিন’আলী (তাদের প্রধান শার’ঈ) ইন্টারনেটে প্রচারিত অডিং রেকর্ডিং এ বলেছে:
“শি’আদের ব্যাপারে আলিমগণের মধ্যে মতপার্থক্য আছে…এবং ব্যক্তিগত ভাবেও প্রত্যেক শি’আ কি কুফরের উপর আছে, নাকি তাদের কুফর হল দলগত ভাবে কোন দলের কুফরের উপর থাকার অনুরূপ, সেটার ব্যাপারেও মতপার্থক্য রয়েছে…আমরা এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান এভাবেই উপস্থাপন করি যে, যখন সালাফগণ ইমামিয়্যাহ শি’আদের তাকফির করেছিলেন, তখনও তারা কি শুধুমাত্র দলগতভাবে কাফির নাকি তারা প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে কাফির, এ ব্যাপারে সালাফগণের মধ্যে মতপার্থক্য ছিল। সংক্ষিপ্তভাবে এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হল, তাদের মধ্যে যারা দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং মুসলিমদের উপর শক্তি প্রয়োগ করেছে, তাদের প্রত্যেকের উপর ব্যক্তিগতভাবে তাকফির করা হবে, যেমন রাফিদা সরকার এবং রাফিদা মিলিশিয়াদের উপর। এবং যারা তাদের মত না তাদের প্রত্যেকের অবস্থা আলাদা ভাবে বিচার করতে হবে। দেখতে হবে তারা কি সুস্পষ্টভাবে ইমান নষ্টকারী কোন কাজ করেছে কি না। এবং সে অনুযায়ী সে ব্যক্তির ব্যাপারে হুকুম হবে। যদি সে (সুস্পষ্ট ভাবে ইমান নষ্টকারী কোন আমল) করে থাকে তবে তার উপর তাকফির করা হবে। অন্যথায় করা হবে না। এবং আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত।”
আরো অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে যে, বেশিরভাগের মুজাহিদিনের মতও এটিই। আবু মুস’আব আস-সুরী বলেন, “জা’ফরী শিয়া –‘আল-ইমামিয়্যাহ’, হল ইরানে সংখ্যাগরিষ্ঠ, এবং লেবানন, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংখ্যালঘু…এবং অধিকাংশ জিহাদি (জাআ’আহ) এদেরকে গোমরাহ বিদা’তী বলে মনে করে। যদিও কিছু জিহাদি শি’আদের ঢালাওভাবে কাফির ঘোষণা করেছে। তবে বেশিরভাগ জিহাদিরা শি’আদের মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত আহলুল ক্বিবলা (যারা ক্বা’বার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করে) বলে গণ্য করে যারা গোমরাহ হয়েছে এবং বিদ’আতী।”[10]
বরং এমনকি শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসীও এই মতই গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন, “এই ব্যাপারে আমার মত হল, আমি মূলত এই ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইব্*ন তাইমিয়্যাহর মতের অনুসরণ করি যে শি’আদের সাধারণ জনগণের উপর তাকফির করা হবে না… শিয়াদের জনসাধারণদের মধ্যেও এমনও লোক আছে যারা কিনা সালাত অথবা সিয়াম বাদে আর কিছুর ব্যাপারেই ধারণা রাখে না, এবং আক্বীদার ক্ষেত্রেও বিস্তারিত কোন জ্ঞানই তাদের নেই। যেমন, কুরআন বিকৃত হয়ে গিয়েছে এবং আরো শি’আদের এধরনের যেসব ঈমান ভঙ্গকারী আক্বীদাসমূহ রয়েছে, যেগুলো উপর ভিত্তি করে আহলুস সুন্নাহ রাফিদা শি’আদের উপর তাকফির করে, এরকম অনেক কিছুর ব্যাপারে সাধারণ শি’আদের অনেকেরই কোন ধারণাই নেই।”[11]
এবং শায়খ আল-মাকদিসীর এ বক্তব্য সত্ত্বেও, এবক্তব্যের প্রত্যুত্তর দেয়ার সময় শায়খ আল-যারক্বাউয়ী তাকে বলেন নি যে, “আপনি পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছেন কারণ শি’আদের সাধারণ জনগনকে আপনি কাফির ঘোষণা করেন না।” বরং তিনি তাকে বলেছেন, “হে মহান শায়খ! আপনি জেনে রাখুন, আমি নিজের ব্যাপারে সন্দেহপোষণ করতে পারি, কিন্তু দ্বীনের ব্যাপারে আপনার প্রতি সন্দেহকারীদের মধ্য হতে আমি নই… শেষ করার আগে আমি বলতে চাই, শায়খ মাকদিসী, আল্লাহ তাকে হিফাযাত করুক, হচ্ছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত যাদের মর্যাদা এবং প্রচেষ্টার প্রতি সবার খেয়াল রাখা উচিৎ। এবং তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত, যাদের ব্যাপারে শুধুমাত্র সুধারনাই রাখা যায়। এবং যারা অজুহাত পাবার এবং ভুলের ক্ষেত্রে ক্ষমা পাবার সর্বাধিক যোগ্য। এবং আমি মনে করি না যে বর্তমানে এমন কোন মুওয়াহহিদ (তাওহিদের অনুসরণকারী) আছে, যে কিনা শায়খের দ্বারা উপকৃত হয় নি, যে শায়খের কাছে কৃতজ্ঞ না। সুতরাং যদি কোন ব্যাপারে তার ভুল হয়ে থাকে তবে তার অর্থ এই না যে, তার অবস্থান এবং জ্ঞানকে অপমান করতে হবে, এবং তার অতীত অবদান এবং ত্যাগকে ভুলে যেতে হবে।”[12]
এবং শি’আদের ব্যাপারে শায়খ আল মাকদিসী এরকম অবস্থান গ্রহন করা সত্ত্বেও আইসিস চেষ্টা করেছিল শায়খকে নিজেদের দলে টানার, এবং তখন তারা বলে নি শায়খ পথভ্রষ্ট হয়ে গেছেন। তুর্কি বিন’আলি তার প্রাক্তন শিক্ষক শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিল – “বস্তুত আমীরুল মু’মিনীন আবু বকর আল-বাগদাদী, আল্লাহ তাকে হিফাযাত করুক, আপনাকে জানিয়েছিলেন যে তিনি আপনাকে তার কাছে নিয়ে আসতে পারেন, কিন্তু আপনি সেটাতে সক্ষম হন নি, যদিও সে সময় আপনি একাধিকবার গাযা ও খুরাসানে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন।”[13]
অবাক করা বিষয় হচ্ছে যে, যাদের মানহাজই ভুল (আইসিসের দাবি অনুযায়ী), একদিকে আইসিস তাদেরকয়ে নিজেদের দলে আনার চেষ্টা করছে কিন্তু সিরিয়ার কোন দলে যদি কোন ধূমপায়ী থাকে তখন সেটার কারনে তারা সে দলের সমালোচনায় উঠে পড়ে লাগছে!
আর ঢালাও ভাবে সব রাফিদাকে হামলার নিশানা না বানানো যদি গোমরাহি হয়, তাহলে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ী গোমরাহদের অন্তর্ভুক্ত। কারন তিনি রাফিদার কিছু অংশকয়ে হামলার লক্ষ্য বানানো থেকে বিরত থেকেছিলেন। এ ব্যাপারে ১৫ই শাবান, ১৪২৬ হিজরি, সোমবার (১৯/০৯/২০০৫) তানযীম আল-ক্বা’ইদাহ্* ফী বিলাদ আর-রাফিদাইনের পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল, যার শিরোনাম ছিল (দুই নদের দেশের আল-ক্বা’ইদার পক্ষ থেকে সংগঠনে অবস্থানের ব্যাপারে শায়খ আবু মুস’আবের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু সংশয়ের নিরসন -“Clarification from Al Qaida in the Land of the Two Rivers regarding the stance of the organization after the statement of the Sheikh Abu Mus’ab”]। এ বক্তব্যে বলা হয়েছিল, “সংগঠনের কাছে এই ব্যাপারটি স্পষ্ট যে (রাফিদাদের অন্তর্ভুক্ত) কিছু গোষ্ঠি আছে যারা সুন্নীদের গণহত্যায় অংশগ্রহণ করে নি, এবং আরো কিছু আছে যারা দখলদার বাহিনীকে কোন সহায়তা দেয় নি, এবং তাদের দখলদারদের অপরাধের বিরোধিতা করেছে। যেমন সাদরী, খালিসী, হাসানী এবং আরো অন্যান্যরা। তাই সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এ দলগুলোর নেতা এবং সাধারণদের উপর সংগঠন কোনপ্রকার হামলা চালাবে না, যতক্ষণ এ দলগুলো (সুন্নীদের উপর) আক্রমণের কোন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকব।”
এ অব্যহতির ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ী বলেছিলেন, “তাদের এই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, কারণ রাফিদাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা এর মাধ্যমে আহলুস সুন্নাহ সাথে যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ার ফলাফলকয়ে ভয় করে। তাই এধরনের রাফিদাদের এই সুযোগটা দেয়া দরকার যাতে করে আমরা তাদের বলতে পারি, “তোমরা যদি নিরাপত্তা চাও তবে আমাদের পথ হতে সরে দাড়াও, এবং আমরিকাকে সাহায্য করা বন্ধ কর, এবং আমাদের এবং ক্রুসেডরদের যুদ্ধে কোন বাধা সৃষ্টি করো না।”[14]
শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী (উসামার আল-ক্বা’ইদার সময়ে) সায়্যিদ ইমামের যুক্তিখন্ডন এবং শায়খ আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর কথার অর্থকে স্পষ্ট করতে বলেন, “অতঃপর বইটিতে শি’আ এবং শি’আদের হত্যার ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। আমি একটি ব্যাপার স্পষ্ট করতে চাই, তা হল যে তেল’আফারের ঘটনার পর, যেখানে শি’আ মিলিশিয়ারা মুসলিমদের সম্মানের উপর চরম যুলুম চালিয়েছিল, আমাদের শহীদ ভাই আবু মুস’আব আয-যারক্বাউয়ী, আল্লাহ তার উপর রহম করুক, একটি বার্তা প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি ইরাকে সকল শি’আদের বিরুদ্ধে সর্বাত্বক যুদ্ধের ঘোষণা দেন। এ বার্তার ব্যাপারে মিডিয়ার খুব আগ্রহ ছিল। এর দুইদিন পর তানযীম আল-ক্বা’ইদা ফী বিলাদ আর-রাফিদাঈন একটি বার্তা প্রকাশ করে, যেটাতে তেল আফারের ভয়ঙ্কর ঘটনার প্রেক্ষিতে যে বার্তা প্রকাশ করা হয়েছিল সেটির অস্পষ্ট অংশগুলো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। এবং সেখানে স্পষ্ট করা হয় যে আল-ক্বায়িদা ফী বিলাদ আর-রাফিদাঈন শি’আদের জনসাধারণদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাবে না, বরং বদর ব্রিগেডের মতো ভাড়াটে মিলিশিয়া গুলোর উপর হামলা চালাবে। তবে মিডিয়া এ বার্তাটি এড়িয়ে যায়।[15]
অন্যদিকে যদি দাওয়াহ না বরং শি’আদের সাথে সর্বাত্বক ভাবে যুদ্ধ করাই একমাত্র সঠিক অবস্থান হয়, তাহলে দাউলাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল ইরাকের আমির, আবু উমার আল বাগদাদিও গোমরাহ। কারন তিনি রাফিদাদের প্রতি বলেছিলেন, “ তাওবার দরজা এখনো তোমাদের জন্য খোলা, এবং এরকম ভেব না যে আমরা তামকীন পেলে/কতৃত্ব অর্জন করলে তোমাদের সকলকে হত্যা করে ফেলবো বা তোমাদের সমূলে ধ্বংস করে ফেলবো; কারণ শরীয়াহ নিয়মের অনুসরণ ছাড়া বাছবিচারহীন হত্যা আল্লাহর দ্বীনে হারাম করা হয়েছে। তোমাদের সাথে আমরা সেভাবেই বোঝাপড়া যেভাবে শরীয়াহ আমাদের তোমাদের মতো যারা আছে তাদের প্রতি আচরণের নির্দেশ দেয়, আর তা হল সত্যের আহবান, সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দান, সন্দেহ দূরীকরণ এবং এসকল ক্ষেত্রে কোমলতার পন্থা অবলম্বন। আর যে তা প্রত্যাখান করবে, সে জেনে রাখুক বিচার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর জন্যই।“[16]
তাহলে এসব গুলো বিবৃতির দ্বারা বোঝা যায় যে,
– উসামার আল-ক্বা’ইদাও গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট ছিল কারণ উসামার সময়েও বার বার শি’আদের ব্যাপারে ওই একই অবস্থানের কথা বলা হয়েছে যা আইমানের আল-ক্বা’ইদার সময় বলা হচ্ছে।
– অধিকাংশ জিহাদী জামা’আই বিভ্রান্ত
– আবু উমার আল-বাগদাদিও একইরকমভাবে গোমরাহ ছিল
– আবু বাকর আল বাগদাদির রাষ্ট্র এধরণের বিভ্রান্ত লোকদের নিজেদের সাথে ভেড়াতে চাচ্ছে, কিন্তু অন্য দলগুলো একই কাজ করলে তারা সেটা মানতে রাজি না!
– শাইখ আল-যারক্বাউয়ীর কাছে গোমরাহির সংজ্ঞা আর যারা দাবী করে যে তারা তার পথে আছে, তাদের মধ্যকার “বিভ্রান্তির” সংজ্ঞা এবং মানদন্ড একই না!
=====================
রেফারেন্স
[1] শি’আদের এমন কিছু কাজ আছে যার মাধ্যমে তারা শিরকে পতিত হয়েছে এবং যা তাদের ইসলামের মৌলিক ভিত্তিতে বাতিল করে দিয়েছে। তবে সাধারণ শি’আদের ঢালাও ভাবে ইসলামের গন্ডির বাইরে অবস্থিত কাফির বলে ঘোষণা করা হবে কি না, এ নিয়ে আহলুস সুন্নাহ ওয়া জামা’আর ‘আলিমগণে মধ্যে মতপার্থক্য আছে। আহলুস সুন্নাহর আলিমগণের মধ্যে অনেকে তাদের ঢালাওভাবে কাফির ঘোষণা করেছেন, আবার অনেকে বলেছেন তাদেরকে ঢালাও ভাবে তাকফির (কাফির ঘোষণা) করা যাবে না, কারন যেসব শিরকই কাজে শি’আরা লিপ্ত সেগুলো শিরক হবার ব্যাযপারে তারা অজ্ঞ। একারনে যতোক্ষন এ কাজগুলো শিরক ও কুফর হবার ব্যাপারটি তাদের কাছে পরিষ্কার করা হবে না ততোক্ষণ তাদের অজ্ঞতার কারনে তাদেরকে কাফির বলা যাবে না। এখানে আদনানি, শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর বিরোধিতা করছে কারন শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী ঢালাও ভাবে সকল শি’আর উপর তাকফির করছেন না। আদনানির দাবি হল শি’আদের ব্যাপারে শুধুমাত্র একটি অবস্থান আছে আর তা হল শি’আরা কাফির। এবং এটাই স্পষ্টভাবে বলতে হবে। এবং আদনানির মতে তাদের সাথে শুধু এক ধরনের আচরণই করা বৈধ, আর তা হল লড়াই করা এবং তাদের দাওয়াহ দেয়া যাবে না। আদনানির বক্তব্য হল এটি এমন একটি বিষয় যাতে উসামার সময় আল-ক্বা’ইদার যে অবস্থান ছিল তা থেকে আজকের আল-ক্বা’ইদা বিচ্যুত হয়েছে।
[2] الجهاد الإسلامي المصري বা الجهاد الإسلامي। ডঃ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর নেতৃত্বাধীন মিশরিয় জিহাদি সংগঠন যা আল-ক্বা’ইদার সাথে একীভূত হয়।
[3] আল আনসার ম্যাগাযিন, সংখ্যা ৯১, পৃষ্ঠা ১৮, তারিখঃ বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল
[4] অর্থাৎ যখন শায়খ উসামার নেতৃত্বাধীন সংগঠন আল-ক্বা’ইদা ও শায়খ আইমানের নেতৃত্বাধীন সংগঠন “আল-জিহাদ” ১৯৯৮ সালে একত্রিত হল, এবং এ একীভূত সংগঠনের নাম দেওয়া হল “তানযীম ক্বা’ইদাতুল জিহাদ”। [দেখুন সেপ্টেম্বর ২০০৬ এ “আস-সাহাব” মিডিয়া কতৃক প্রকাশিত “ম্যানহাটন রেইড” শীর্ষক ভিডিওর প্রথম পর্ব]
[5] “শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর সকল প্রবন্ধ, রিসালাহ, চিঠি ও বক্তব্যের সংকলন”, পৃষ্ঠা ৪৭১ “
[6] ডঃ আইমান আয্*-যাওয়াহিরীর পক্ষ থেকে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর প্রতি চিঠি, পৃষ্ঠা ১৩
[7] শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল লিবি ছিলেন আফগানিস্তানে আল-ক্বা’ইদার সকল কর্মকান্ডের দায়িত্বশীল। দেখুন শায়খ আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবীর সকল বক্তব্য, বিবৃতি ও লেখার সংকলন, পৃষ্ঠা ৫০
[8] আতিয়াতুল্লাহ আল-লিবীর পক্ষ থেকে আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর প্রতি চিঠি, পৃষ্ঠা ৮
[9] আজউয়িবাসুল হিসবাহ (আল-হিসবাহ ফোরামে প্রশ্নসমূহের উত্তর), পৃষ্ঠা ৩০১
[10] দাওয়াতুল মুক্বাওয়ামা আল ইসলামিয়্যাহ আল ‘আলামিয়্যা, পৃষ্ঠা ৭৯২
[11] শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল-মাক্বদিসি- আল জাযিরার সাথে সাক্ষাৎকার ২০০৫, পৃষ্ঠা ১২/১৩
[12] শায়খ আবু মুস’আব আল যারক্বাউয়ীর সকল বক্তব্য ও বিবৃতির সংকলন, পৃষ্ঠা ৩৩১
[13] “আমার প্রাক্তন শায়খ, এ হল আমার ও আপনার মাঝে সম্পর্কচ্ছেদ”, পৃষ্ঠা ৮
[14] আবু মুস’আব আল-যারক্বাউয়ীর সাথে আবুল ইয়ামান আল-বাগদাদির কথোপকথন, পৃষ্ঠা ১৮
[15] তাবরিয়াত উম্মাতিল ক্বালাম ওয়া সাইফ মিন মানক্বাশাহ তুহমাত আল খাওর ওয়াদদ্ব’আফ, শায়খ আইমান আয্*-যাওয়াহিরী, পৃষ্ঠা ১৬৪। ইংরেজীতে Exoneration, পৃষ্ঠা ২১৭
[16] দাউলাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল ইরাকের নেতৃবৃন্দের সকল বক্তব্যের পূর্ণাঙ্গ সংকলন, পৃষ্ঠা ৩০
Comment