মুরতাদদের আস্ফালন, IS এর তাড়াহুড়াঃ বিশ্লেষণ ও প্রস্তাবনা
আই এসের তাড়াহুড়াপ্রবণতা এবং মুরতাদদের শিম্পাঞ্জির ন্যায় লম্ফঝম্ফ বর্তমান পরিস্থিতিতে মুজাহিদিনদের কিছুটা দ্বিধান্বিত করে ফেলতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে কিছু বিষয় সামনে আসে –
বর্তমানে জঙ্গি ইস্যু বেশ হট টপিক। সবাই এটা নিয়ে আলোচনা করছে... মানুষের আগ্রহ আছে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে। বিশেষত, যখন তারা দেখতে পারছে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে ব্যক্তিরা উচ্চবিত্তের সন্তান।
তাই এই সময়ে একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের মনে উথাপিত প্রশ্নগুলোর উত্তর যথাযথ ভাবে সাধারণের মেজাজের প্রতি লক্ষ্য রেখে। মানুষ ধারণাবশতই নানান মন্তব্য করে যাচ্ছে। সবারই মনে প্রশ্ন জঙ্গিদের নিয়ে। অবস্থাদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে, সাধারণের নিকট জঙ্গি ইস্যু ভীতির পরিবর্তে আগ্রহের সৃষ্টিই করছে বেশি। দাওলা আরও অদ্ভুত ও উদ্ভট অপারেশন অচিরে আবার যে করবে না এটা বলা যায় না। এথেকে এটা স্পষ্ট যে পরিস্থিতি শুধুমাত্র আমাদের কাজের উপর নির্ভর করবে না।
এবং, নিতান্ত উজবুকের মত গুলশানের পর শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে হামলা করার মত হঠকারী সিদ্ধান্ত যারা নিতে পারে তারা আরও পাগলামি সামনে করবে এটা বলাই বাহুল্য। এভাবে নিজেদের জনবিচ্ছিন্ন করে তা কী অর্জন করছে তারাই জানে। তাদের সেফ হাউজগুলো কী তারা আর আগের মত নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ব্যবহার করতে পারবে?
যাই হোক! এবিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। মুজাহিদিনরা যতই জনগণকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করুক না কেন দাওলার হঠকারিতা এবং মুরতাদ কুলাঙ্গারদের প্রোপাগান্ডা বিষয়টা এত মসৃণতার সাথে হতে দিবে না।
মুরতাদরা বহুদিন পর মুজাহিদিনদের জনবিচ্ছিন্ন করার একটা সুযোগ পেয়েছে। এবং কাংখিত লক্ষ্য অর্জনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আল্লাহ্* তা’আলা তাদের ব্যর্থ করুন। আমীন।
মানুষ ক্ষমতা পছন্দ করে। তাগুতের এই আস্ফালনের ফলে সাধারণ মানুষ ভালোই বুঝতে পারছে এই জঙ্গিদের নিয়ে বিগত ৮-৯ বছর ধরে একচ্ছত্র দাপিয়ে বেড়ানোর পর আজ তারা কিছুটা হলেও বেকায়দায়। জঙ্গিরা মুরতাদদের তুলনায় বেশ দুর্বল হলেও, মুরতাদের দল নিজের অজান্তেই এটা মানুষের কাছে এখন অস্পষ্ট করে তুলছে।
এর সুবিধা একটি, অসুবিধা একটি –
ক) সুবিধাঃ সাধারণের কাছে জালিম আওয়ামী সরকারের বিকল্প হিসেবে জঙ্গীদের অবস্থান তৈরির সুযোগ।
খ) খারেজি গোষ্ঠী আই এসের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি। যার ফলে জিহাদিদের কাতারের বিভাজন সৃষ্টি...
হে আমার ভাই! তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সুবিধাটি আদায় করার সর্বোত্তম পন্থা কী? এবং এই অসুবিধাটি দূর করার সর্বোত্তম পন্থা কী হতে পারে?
নিঃসন্দেহে! দাওয়াহ ও মিডিয়ার ক্ষেত্রে জনগণের কাছে ক্ষমতার মায়াজাল সৃষ্টি করা এবং IS এর দুর্বলতা ও আদর্শিক বিচ্যুতি ব্যাপকভাবে তুলে ধরা।।
শায়খ আবু সুলাইমান আল মুহাজির (হাফি)’র একটি চমৎকার উদ্ধৃতি হচ্ছে, নিঃসন্দেহে! দাওয়াহ ও মিডিয়ার ক্ষেত্রে জনগণের কাছে ক্ষমতার মায়াজাল সৃষ্টি করা এবং IS এর দুর্বলতা ও আদর্শিক বিচ্যুতি ব্যাপকভাবে তুলে ধরা।।
“Convince your people of the legitimacy and necessity of your cause, and they will be your shield.”
তাই, এই মুহূর্তে আমাদের উচিৎ দুটি বিষয়ের দাওয়াহ একই সাথে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে চালিয়ে যাওয়া... অন্য যে কোনো বিষয়ের চেয়ে প্রাধাণ্য পাবে এই দুটি বিষয়...
১/ দাওলার সাথে আমাদের সম্পর্কহীনতা এবং দাওলার তাকফিরি ও ভ্রান্ত মানহাজ তুলে ধরা। কেননা দেখুন, কাফির মিডিয়াগুলো আমাদের ইমেজ এসাসিন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে দাওলার সাথে আমাদের মিলিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। তাই এই বিষয়টি সামনে রেখে দাওয়াহ ও মিডিয়ার কাজ জারি রাখা জরুরী।
২/ গ্রহণযোগ্যতা আদায়। এজন্য দুটি বিষয় সামনে রাখা –
ক) মুরতাদ শাসকদের জুলুমের বাস্তবতা তুলে ধরা। ভয় দেখানোর জন্য মুরতাদ প্রশাসন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক-ছাত্র (তাহমিদ-হাসনাত প্রমুখ), অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের উপর যে চাপ সৃষ্টি করছে তার ফায়দা নেয়া।
মানুষের উপর মুরতাদ র*্যব-পুলিশের কৃত জুলুমকে জনগণের সামনে তুলে ধরার মত মিডিয়া ও দাওয়াতি কাজে এগিয়ে যাওয়া... যদি ১০-২০ হাজার লোকের কাছেও প্রতি সপ্তাহে একটি ভিডিও নিয়মিত পৌঁছানো যায়, অনলাইন-অফলাইনে ব্যাপক হারে শুধুমাত্র এই বিষয়কে সামনে রেখে আম দাওয়াহ পৌঁছানো যায়; আল্লাহ্* তা’আলা চাইলে ফায়দা অর্জন সম্ভব হবে।
লক্ষ্য করুন, অধিকাংশ মানুষ জঙ্গিদের দ্বারা আক্রান্ত নয়। সাধারণ মানুষ জানে জঙ্গিরা তাদের উপর আক্রমণ করবে না। কিন্তু পুলিশ-র*্যব-প্রশাসন জোর করে তাদের মাথায় এটা ঢুকাতে চাচ্ছে... তবে বিষয়টা এত সহজ হবে না ইনশা’আল্লাহ। বাংলাদেশের ৯৯% জীবনে সামনা-সামনি কোনো জঙ্গি দেখেনি... তারা শুধুমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই জঙ্গিদের জেনেছে... তাই তাদের কাউন্টারও করতে হবে দাওয়াহ ও মিডিয়ার মাধ্যমে।
এটা তো বাস্তবিক, আমাদের আকিদা-মানহাজ ও জটিল তুলনামূলক ফিকহী আলোচনা দ্বারা কয়েক যুগ ধরেও সাধারণ মানুষকে আমাদের ব্যাপারে আগ্রহী করা প্রায় অসম্ভব। যখন মুরতাদ-কাফির গোষ্ঠী ঢালাও জুলুম শুরু করে তখনই আমাদের দাওয়াহ’র সর্বোচ্চ ফায়দা উঠানোর সময়। বিভিন্ন মারেকাগুলোর উথানের ইতিহাস দেখুন।
উল্লেখ্য যে, এদেশের শাসকগোষ্ঠী জনবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। সর্বত্র তাদের নাক গলানো মানুষের পছন্দ হবে না, কারণ অধিকাংশ মানুষের কাছেই জঙ্গী সমস্যা একেবারেই মাইনর একটি সমস্যা। এখনো অধিকাংশের কাছে মূল সমস্যা নির্বাচন না হওয়া।
বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বৈদেশিক শক্তির চাপ ও ইমেজ সংকটের কারণে জঙ্গি সমস্যা শাসকের কাছে একটি বড় সমস্যা কিন্তু জনসাধারণের কাছে অবশ্যই নয়।
তাই শাসকগোষ্ঠীর জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমকে অগ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য আমাদের দাওয়াতি ও মিডিয়ার কাজ বেশী করে করা দরকার। ইতিমধ্যে শাসকগোষ্ঠীর কিছু ভুল পদক্ষেপ আমাদের কাজকে ইনশা’আল্লাহ আরও সহজ করে দিবে...
আমাদের জন্য মাইনাস পয়েন্ট, আমাদের মিডিয়া ও দাওয়াতি কাজ এত প্রচার-প্রসার পাবে না। এবং আমাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট, এই শাসক ও তাদের মিডিয়াকে মানুষ খুব একটা বিশ্বাস করেনা। তাদের আরগুমেন্টের বিপরীতে যে কোনো ভ্যলিড আর্গুমেন্ট মানুষের মনে স্থান নিতে সক্ষম বি’ইজনিল্লাহ। এটা সম্প্রতি কিছু বিষয় থেকে পরিষ্কার...
মসজিদে মসজিদে, স্কুলে-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে তে জঙ্গিবাদের আলোচনা জঙ্গিদের রিক্রুটমেন্টে নতুন মাত্রা যোগ করবে ইনশা’আল্লাহ।
এছাড়াও, উপজেলা-জেলা-থানায় ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হচ্ছে জঙ্গিবাদ নির্মূলে। এর ফলে ছাত্রলীগ-আওয়ামি নেতারা বিচারবহির্ভূত এক অদৃশ্য ক্ষমতা পেয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এতে সর্বপ্রথম বি এন পি-জামাত আক্রান্ত হবে, তারপর আলেম-দাড়িওয়ালারা এবং শেষে সাধারণ মানুষ। ছাত্রলীগের হিংস্র কুকুরদের মুখে ইতিমধ্যে লালা ঝরতে শুরু করেছে... জঙ্গিদের এদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ইনশা’আল্লাহ তা’আলা। নিপীড়নের শিকার হবে সাধারণ মানুষ। ব্যক্তি স্বাধীনতায় ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপ নিতান্ত আত্মমর্যাদাহীন ব্যক্তিও মেনে নিবেনা।
যা শাসকের জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমকে ইনশা’আল্লাহ খুব সহজেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে...
এর যথাযথ সুযোগ হাসিল করতে পারলে জিহাদি জাগরণ সম্ভব ইনশা’আল্লাহ।
যেমনটা- কেনিয়ার মোম্বাসাতে হয়েছে। সেখানকার ক্রুসেডারদের অন্যায় নিপীড়ন আল-শাবাবের রিক্রুটমেন্ট এবং কেনিয়ার ভেতরে অপারেশন চালানোর জন্য কার্যকর হয়ে দাড়িয়েছিল...
উদাহারণঃ ২০১৩ এর ওয়েস্টগেট এটাক, ২০১৪ এর Gikomba Attack (একদিনে কেনিয়ান শিলিং এর দরপতন হয় .২%। আল্লাহু আকবার), ২০১৫ এর Garissa University Attack,
এথেকে যা বলা যায়,
তাগুত যত বেশী জনগণকে চেপে ধরবে আমাদের দাওয়াহ তত সহজে জনগণের কাছে তুলে ধরা যাবে... কেননা এদেশের জনগণের ৯৫% যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগের পতন চায় যদিও হাসিনা সরকার আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলতে ব্যস্ত থাকায় এসত্য অনুধাবন করতে অক্ষম...
তাই, আবারো বলছি, হাসিনার জঙ্গি-বিরোধী কার্যক্রমকে নস্যাৎ করতে চূড়ান্ত নিরাপত্তা নেয়ার পাশাপাশি আম-ভাবে এই কার্যক্রমের ফলে সাধারণের উপর আসন্ন জুলুম ও নিপীড়নের বাস্তবতা সহজ ও বিশদাকারে তুলে ধরা জরুরী... যার যার অবস্থান থেকে...
এবং – এরজন্য এখনই সর্বোৎকৃষ্ট সময়।
খ) আল-কায়েদা কী চায়, আল-কায়েদার উদ্দেশ্য কী, আল-কায়েদা সফল হলে সাধারণের সাথে তাদের আচরণ কী হবে, আল-কায়েদার ইতিহাস, হারবি হত্যা কেন দরকার, আমেরিকা-ন্যটো জোটকে আক্রমণের হাকিকত- ইত্যাদি সাধারণ কৌতূহলীদ্দিপক বিষয় সামনে নিয়ে আসা... গণহারে এ মৌলিক বিষয়গুলো ছড়িয়ে দেয়া। সব মানুষ বই ঘেটে, ইন্টারনেট ঘেটে কন্সপিরেসি থিওরি আর আত-তিবয়ানের ফতোয়া পড়বে না... তাই কমন প্রশ্ন যা আমাদের সামনে আসে তা স্টোর করে রাখা এবং যে যেভাবে পারেন ছড়িয়ে দেয়া...
হিজবুত তাহরির এমনটা করে কিন্তু কেন তারা সফল হয়না? কেননা শেয়ারবাজার পতন যখন রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ইস্যু তখন খিলাফাহ বনাম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জটিল আলোচনা মানুষ প্রাসঙ্গিক মনে করে না।
কিন্তু এখন, জিহাদ প্রাসঙ্গিক। আল-কায়েদা প্রাসঙ্গিক। হারবি হত্যা প্রাসঙ্গিক... সাধারণের আগ্রহ যখন তুঙ্গে সে সময় যদি আপনি তাদের খোরাক না মেটাতে পারেন তাহলে আর কবে? তাই এখনই এবিষয়কে সামনে রেখে আমাদের বুকলেট, লিফলেট, আম-বয়ান, ভিডিও, পোস্টারিং (নিরাপত্তা বজায় রেখে) – ইত্যাদি যা যা সম্ভব সবই করা উচিৎ।
মনে রাখতে হবে, শুরুতেই কয়েকটা ট্রেনিং ভিডিও দেখে মানুষ আল-কায়েদাকে ভালোবেসে ফেলবে না।
এদেশের মানুষ সারাবছর একদলের হয়ে মিছিল করে নির্বাচনের আগের দিন রাতে বিস্কুট খেয়ে প্রতিপক্ষকে ভোট দেয়। অন্যান্য ভুখন্ডের মানুষ থেকে এরা আলাদা...
হাসিনা সরকারের প্রতি এদের বিদ্বেষ, জামাত-বি এন পি’র চূড়ান্ত ব্যর্থতা ইত্যাদি বিষয়কে সামনে রেখে যদি আল-কায়েদা কিংবা মুজাহিদিনদের বিষয়টা সামনে তুলে ধরা যায় এতে সরাসরি অংশগ্রহণ, সমর্থন কম পাওয়া গেলেও মৌন সমর্থন দেয়ার মত কিংবা ‘দেখি কী করে’ টাইপের পাবলিক ইনশা’আল্লাহ পাওয়া যাবে।
এর বাইরে আরেকটি বিষয় আলোচনা করা দরকার সেটা হচ্ছে –
কোনো কোনো ভাই আপত্তি করছেন যে এই মুহূর্তে হারবি কাফির হত্যার বৈধতা আদায়ের চেষ্টা দাওলার পক্ষে দাওয়াহ হিসেবে কাজ করতে পারে।
কোনো কোনো ভাই আপত্তি করছেন যে এই মুহূর্তে হারবি কাফির হত্যার বৈধতা আদায়ের চেষ্টা দাওলার পক্ষে দাওয়াহ হিসেবে কাজ করতে পারে।
এটার উত্তর দুটি পয়েন্টে সংক্ষেপে দেয়া হচ্ছে –
১/ তাহলে, উম্মাহ’র নির্যাতিত হওয়ার বিষয়, জিহাদের হাকিকত, কুফুরি আইনে শাসনকারী ব্যক্তির মুরতাদ হওয়া ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরলেও তো তাই আই এসের পক্ষে চলে যেতে পারে। তাই নয় কি? তাই বলে কি মুজাহিদিনরা এসব বিষয়ের দাওয়াহ বন্ধ করে থাকবে?
উত্তর হচ্ছে – না।
যেহেতু, দাওলা সামনে চলে এসেছে। তাই এক্ষেত্রে আমাদের দাওয়াহ’র ফায়দা যাতে তারা ঘরে না তুলতে পারে তাই আমাদের দাওয়াহ’র সাথে দাওলার সম্পর্কহীনতার বিষয়টি প্রতিবারই উল্লেখ করে দেয়ার মাধ্যমে এই সমস্যার একটা সমাধান সম্ভব।
এবং- দাওয়াতি ও মিডিয়া নীতির ক্ষেত্রে, পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দাওলার সাথে আমাদের সম্পর্কহীনতা, দাওলার বিধ্বংসী ও তাকফিরি মনোভাবের ব্যাপারে আলাদাভাবে ব্যাপক দাওয়াহ ক্যম্পেইন চলবে যার ফলে আমাদের দাওয়াহ ও মিডিয়ার আউটপুট দ্বারা দাওলার দিকে মানুষ ঝুকে যাবে না ইনশা’আল্লাহ।
২/ অনেক ভাই ধারণা করেন যে, আল-কায়েদা এই ভুখন্ডে জনসমর্থন ঠিকঠাক মত আদায় হওয়া কিংবা একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতি আসার আগ পর্যন্ত হারবিদের উপর আঘাত হানবে না। এটা সত্য যে, আল-কায়েদার দাওয়াতি ও সামরিক নীতি তাড়াহুড়াপ্রবণ নয় বরং ধীরস্থির ও কৌশলী।
তবে এর মানে এই নয় যে, হারবিদের আক্রমণ করার সুযোগ সৃষ্টি হলে আল-কায়েদা চুপচাপ বসে থাকবে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এবং আল-কায়েদার মানহাজও এটি নয়।
শায়খ আইমান আজ জাওয়াহিরি (হাফি) ‘জিহাদের সাধারণ দিক নির্দেশনা’ শুরুতেই উল্লেখ করেছেন –
“আমেরিকাকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর উদ্দেশ্য তাকে নিঃশেষ করে ধ্বংসের দুয়ারে পৌঁছে দেয়া যেন তা পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাগ্যবরণ করে এবং সামরিক, জনবল ও অর্থনৈতিক ক্ষতির দরুন ভেঙ্গে পড়ে। যার ফলে আমাদের ভূমিসমূহে তাদের প্রভাব খর্ব হয় এবং তাদের মিত্রদেরও একের পর এক পতন হতে থাকে।“
আমেরিকাকে আক্রমণের ক্ষেত্রে এলাকাভেদে ভিন্নতার কথা শায়খ একবারের জন্যও বলেননি।
বরং, মুসলিম দেশসমূহে মুরতাদ মিত্রদের আক্রমনের ব্যাপারে এলাকাভিত্তিক ভিন্নতার অবকাশ রয়েছে বলে শায়খ উল্লেখ করেছেন। যা আমাদের সকলের কাছেই স্পষ্ট।
তাই আমেরিকাকে আক্রমণ এবং আমেরিকার তাবেদার হাসিনা সরকারকে আক্রমণ উভয়টি এক নয়। হাসিনা সরকারকে আক্রমণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিস্থিতি ও সময়ের কথা মাথায় রাখা জরুরী।
কিন্তু আমেরিকার ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারেই সুস্পষ্ট যে, সর্বত্রই আমেরিকাকে আক্রমণ হবে আল-কায়েদার সামরিক পদক্ষেপের একবারের প্রথম সারির লক্ষ্য।
তাই, যেহেতু একসময় যেহেতু তানজিম আল-কায়েদা আমেরিকাকে আক্রমণ করবেই তাই পূর্বে থেকেই এই ভুখন্ডের মানুষের কাছে ‘যুদ্ধরত কাফির হত্যা কেন বৈধ’ এপ্রসঙ্গে আলোচনা করার উপযুক্ত সময় এখনই। কেননা এখন এই বিষয়ে মানুষ প্রশ্ন করছে। এখন নিরব থেকে পরবর্তীতে নিজেদের সময়ে সরব হলে লোকজনের সংশয় আরও বাড়বে।
আর ঐপর্যন্ত নিরব থাকার ফলে দরবারি ও মাজারপূজারীরা ঠিকই ফায়দা নিতে পারবে ভ্রান্ত ফতোয়াবাজির মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই আমরা দেখেছি যে, খুতবাগুলোতে কাফিরদের প্রতি দরদ উথলে পরছে।
তাই এই বিষয়ে চুপ থাকার কোনো সুযোগ এই মুহূর্তে আছে বলে মনে করি না। এবং, সম্ভাব্য সৃষ্ট সমস্যার সমাধান কী হতে পারে তা পূর্বেই আলোচনা হয়েছে।
অতএব, পরিশেষে, আমি যা আলোচনা করলাম তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি ,
- ১/ প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে - “বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে দাওলা ও মুরতাদ গোষ্ঠীর বিপরীতে দাওয়াতি ও মিডিয়ার জিহাদে শামিল নিজেদের সর্বোচ্চটা ঢেলে দিতে হবে।“
- ২/ “হারবি হত্যার বৈধতা আলোচনার ফলে দাওলা উপকৃত হবে” – এই সংশয় নিরসন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আল্লাহ্* তা’আলা আমাদের সকল আমল কবুল করে নিন। আমীন।
আল্লাহ্* তা’আলা আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো সংশোধন করে দিন। আমীন।
ওয়াসসালাম।।
Comment