আলহামদুলিল্লাহ, ত্রিশ বিছরের বেশি হবে আমি দাওয়াতের কাজে আছি। দীর্ঘদিনের এই মেহনাত, মুজাহাদা, পরিশ্রম ও অভিজ্ঞতার পর আমি কয়েকটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি -
একঃ- যে কোন জিহাদী তানজীম বা ইসলামী রাজনীতি আত্মশুদ্ধি ও নফসকে শুচিশুদ্ধ করার উপর প্রতিষ্ঠিত হবে না, তার পতন অবশ্যম্ভাবী। তার কাঠামো যতই মজবুত হোক না কেন। কারন, দাওয়াতের স্বভাব হল, এ কাজে যারা সম্পৃক্ত, তাদের সে অহংকারী করে তোলে। তার দাওয়াতে নতুন নতুন লোক যোগদানের ফলে তার মধ্যে সাফল্যের অহংকার ভর করে। এমন অবস্থায় যদি দাঈ সে কাজের উপযুক্ত না হয়, তাহলে সে দাওয়াতের জন্য ও ইসলামের জন্য বিপদ হয়ে দাড়ায়। তাই দাওয়াতের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের আত্মশুদ্ধির ব্যপারে সচেতন হওয়া দরকার। নিজেকে ইবাদতের উদ্দ্যেশ্যে নিশি জাগরণে অভস্ত করতে হবে। নফল নামাজ ও রোজায় আন্তরিক হতে হবে।
দুইঃ- যে ব্যক্তি দাওয়াতের কাজে মশগুল রইল, অথচ নিজের নফসকে পরিশুদ্ধ করে নিল না; তার চিন্তার নির্মল প্রস্রবণ ধারায় সে স্বচ্ছ হল না; তার দাওয়াত আল্লহর সন্তুষ্টির জন্য হতে পারে না। আল্লাহর ইবাদাতে সে আন্তরিক নয়। এদের মনে পংকিলতা জমাট বেধে যায়। এরা সকালে উঠে, রাতে ঘুমায়। ইবাদাত আমালের ভাবনা এদের অন্তরে নেই। কোন ইসলামী সংঘঠনের কর্মীদের এমন স্বভাব কাম্য নয়। অমাবস্যার আধারে ঘেরা এমন সংঘঠন ও তার কর্মীদের ভবিষ্যৎ।
তিনঃ- নিজ দল থেকে কোন কল্যাণমূলক কাজ হলেই তাকে সমর্থন করবে, পছন্দ করবে। অন্য কোন দল তা করলে পছন্দ হবে না, ভাল লাগবে না। এমন অবস্থায় ইবাদাত প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর জন্য হয় না। বরং দলের জন্য হয়। কেননা, যদি ইবাদাত আল্লাহর জন্য হত তাহলে যত ভাবে যত পথে আল্লাহর দ্বীনের প্রচার-প্রসার হত, মন ততই বিমোহিত ও আনন্দিত হত। এক্ষেত্রে যদি তাবলীগ জামাত থেকে কোন কল্যাণমূলক কাজ হয়, তাহলে কেন তুমি তা অপছন্দ কর? যদি সালাফীদের থেকে কোন কল্যাণমূলক কাজ হয়, তাহলে কেন তুমি তা অপছন্দ কর। সালাফী হয়ে যদি তুমি আল্লাহর জন্যই কাজ করতে, তাহলে তুমি সালাফী ছাড়া অন্য দলের কোন ব্যক্তি হাদীসের কোন ভাল নির্ভরযোগ্য কিতাব রচনা করলে তুমি তা দেখে খুব আনন্দিত হতে। বলতে, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ এ কিতাব দ্বারা বহু মুসলমানকে উপকৃত করবেন। যুবকদের তুমি তা অধ্যয়নে উৎসাহিত করতে। উদার মনে দল ও মতের উপরে উঠে এ ধরনের আচরণ করা তখনই সম্ভব, যখন কেউ আল্লাহর জন্য সব কিছু করে। যখন কেউ দলমত নির্বিশেষে মুসলমানদের কল্যাণ কামনা করে।
Comment