বৈশ্বিক জিহাদি আন্দোলনের প্রবণতা
আহমাদ আল হামদানের সাক্ষাৎকার
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- তোরে হাম্মিং
ইংরেজীতে অনুবাদ- আল মুওয়াহিদীন মিডিয়া
.................................................. .
আল মুওয়াহিদীন মিডিয়া
এখানে আল মুওয়াহিদীন মিডিয়ার লোগো
Almuwahideenmedia.wordpress.com
………………………………………………………….
সূচিপত্রঃ
আহমাদ আল হামদানের পরিচয়
বৈশ্বিক জিহাদের বর্তমান অবস্থা
আল-কায়দার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
প্রজন্মগত পার্থক্য
ভাবাদর্শী চিন্তাশীল ব্যক্তি বা আলেমদের ভূমিকা
ইসলামিক স্টেটের মাঝে চরমপন্থা বা উগ্রবাদের বিস্তার
আল মুওয়াহিদীন মিডিয়ার অন্যান্য প্রকাশনা
……………………………………………………………………………
আহমেদ আল হামদানের পরিচয়
এই বইয়ের সাক্ষাতকার দানকারী আহমেদ আল হামদান হলেন “ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়দার মধ্যকার পদ্ধতিগত বৈষম্য- কারা সত্যপথ থেকে বিচ্যুত?” নামক বিখ্যাত বইয়ের রচয়িতা। বইটিতে মুলত রয়েছে আল-কায়দা ও ইসলামিক স্টেটের কর্মপন্থার মাঝে বিদ্যমান পার্থক্যের জ্ঞান-গভীর বিশ্লেষণ যা দুই পক্ষের সাংগঠনিক উৎসের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে এবং এ বইয়ে এ বিষয়ে উত্তর দেয়া হয়েছে যে, কারা বিচ্যুত হয়েছে সঠিক পথ থেকে, ওই পথ থেকে যেটা ছিল আল-কায়দার পূর্ববর্তী নেতাদের পথ, যাদেরকে মাঝেমাঝে সালাফি জিহাদিদের অনুসারি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ বইয়ের উদ্দেশ্য হল ইসলামিক স্টেটের মুখপাত্র, আবু মুহাম্মাদ আল আদনানির দাবির সত্যতা যাচাই করা। তার দাবিটি ছিল যে- আজ শেখ আইমান আল জাওয়াহিরির নেতৃত্বে আল-কায়দা শেখ উসামা বিন লাদেনের পথ থেকে সরে গিয়েছে। কিন্তু, তারা নিজেরাই শেখ উসামা বিন লাদেনের জীবদ্দশাতে শায়খের নির্দেশিত পথকে অস্বীকার করেছিল। এ বিষয়ে লেখা সবচেয়ে ভালো বইগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম এবং এ সম্পর্কিত বিষয়ের বিশ্লেষকদের কাছে এ বইটি বহুল জনপ্রিয়। বইটির গুরুত্ব বোঝাতে যে বিষয়টি উল্লেখ করাই যথেষ্ট তা হল- এটির মুল আরবি সংস্করণের ইংরেজি অনুবাদ থেকে প্রায় ১০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বইটি রাশিয়ান, তুর্কিস্তানি, উর্দু, ইন্দোনেশিয়ান অনুবাদ করা হয়েছে ও সোমালি, সোয়াহিলি, ফরাসী এবং জার্মানি ভাষায় অনুবাদ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ সাক্ষাৎকারে আহমেদ আল হামদান জিহাদি আন্দোলনের ক্রান্তিকাল সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল আল-কায়দা এবং পরবর্তীতে ISIS আল-কায়দার প্রতিপক্ষরুপে অবতীর্ণ হয়। পাশাপাশি, এ দুইদলের বিতর্কের ক্ষেত্র ও তাদের অগ্রযাত্রায় বিপত্তি নিয়ে আসা ভুলগুলো সম্পর্কে তিনি আলোকপাত করেন।
যাই হোক, লেখকের সম্পর্কে পাঠক যেন আরো কিছু কিছু জানতে পারে সেজন্য এ পর্যায়ে লেখকের সম্পর্কে সামান্য কিছু বিষয় এবং তার ব্যাপারে বিভিন্ন আলেমের সুপারিশ ও অনুমোদন সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করা হল। আহমেদ আল হামদান বলেন, “আমি ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করি এবং বর্তমানে বাহরাইনে বাস করছি। আমি শেখ আব্দুল্লাহ বিন ঈসা আল খালিফা আস সিনায়াহ স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন করেছি। পরবর্তীতে, University of Applied Science নামক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক বিজ্ঞান বা পলিটিকাল সায়েন্স-এর বিশেষায়নের উপর পড়াশোনা করেছি এবং এটি এখনো চলছে। যেসকল আলেম ও ছাত্রদের সাথে আমি পড়েছি এবং তাযকিয়াহ(অনুমোদন) পেয়েছি তাদের মধ্য থেকে যারা উল্লেখযোগ্য তারা হলেন-
পাশাপাশি, আমি তুর্কি বিন’আলি(তিনি ISIS এর একজন অন্যতম অভিজ্ঞ ধর্মীয় নেতা ) সাথেও প্রায় আড়াই বছর ছিলাম এবং তার সাথে আকিদাহ, ফিকহের উসুল, হাদিস ও অন্যান্য বিষয়ে পড়েছি।
আমি বর্তমানে যে পথে রয়েছি সেখানে কিভাবে এলাম এ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, আমি ছোটবেলা থেকেই সালাফিদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান “জামাত আত-তারবিয়াত”-এ কুরআন মুখস্তের জন্য এবং ইখওয়ানুল মুসলিমিনের পরিচালিত গ্রীষ্মকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান(summer institution) “জামাত আল-ইসলাহ”-তে যাওয়া আসা করতাম। যাই হোক, এসবের পরেও আমি তেমন একটা ধার্মিক ছিলাম না এবং আমি মাধ্যমিক স্কুলের শেষ বছরের আগ পর্যন্ত এ পথে পৌছাইনি। অতঃপর, যখন আমি এ পথের পথিক হলাম তখন থেকে অনেক ইতিহাস, রাজনীতি এবং এমনকি কিছু সাহিত্য পড়া শুরু করলাম। আর, আল জাযিরা চ্যানেলের সাথে সংযুক্ত একটি ফোরাম ছিল যেখানে সকল ইসলামিক, রাজনৈতিক, আদর্শিক এবং আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় দলের উপস্থিতি ছিল এবং সেখানে প্রায়শই দীর্ঘ ও সরগরম আলোচনা হত। এসব আলোচনার মাধ্যমে দুপক্ষের মধ্যে কোনটি তার বক্তব্যে বেশি জোড়াল বা শক্তিশালী তা আপনি বুঝতে পারতেন। এরপরে, আমি একজন মহিলার অ্যাকাউন্ট পেলাম যাকে আমি আজ পর্যন্ত চিনতে পারিনি, তিনি তার সিগনেচারে “জিহাদের আর্কাইভ(archive of jihad)”-এর সাথে লংক করে দেয় যা ছিল এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে ৮০-এর দশক থেকে সর্বশেষ প্রকাশকালের সব ধরণের জিহাদি প্রকাশনা জমা করা হয়েছিল। মূলত, এই সাইট থেকে আমি সামরিক অভিযানের পাশাপাশি বেশিরভাগ বড় বড় জিহাদি প্রকাশনা পেতে পারতাম।
আমি হয়তো কখনই অস্ত্রকে বিবেচনায় নিতাম না কারণ, সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে এমন খবর আসছিল যে, সপ্তাহে মাত্র ১টি বা ২টি করে মিলিটারি অপারেশন ঘটছিল এবং আমরা খুব কমই আফগানিস্থান ও ইরাকে আমেরিকার অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে চলা একটানা বা নিরবিচ্ছিন্ন অপারেশনের ব্যাপারে শুনতে পারতাম। আর এসব বিষয় আমাদের মাঝে এমন একটি অনুভূতি জাগিয়েছিল যে, যেহেতু সামরিক অভিযানের সংখ্যা খুব কম আর এ স্বল্প সংখ্যক অভিযান কোনো কিছুই বদলাতে পারবে না তাই, এখন মিলিটারি অপারেশনের আর কোনোই দরকার নেই। যাই হোক, ঐ ওয়েবসাইটের “বিবৃতি(statement)” শিরোনামের লিংকটিতে যাওয়ার পরে আমি দেখলাম যে, দিনে প্রায় ১০টি মিলিটারি অপারেশন ও মাসে প্রায় ৩০০ অপারেশন সংঘটিত হয়। তাই, এ ব্যাপারটি আমার মাঝে আশা জাগিয়ে তুলল এবং আমি বললাম যে, “হ্যাঁ, আমরা পারবো।”
আর এভাবে আমি জিহাদি সংগঠনগুলোর সামরিক অভিযান সম্পর্কে সামান্য পরিমাণে ধারণা পেলাম। কিন্তু, তখনও এসব মিলিটারি কার্যক্রমের ইসলামিক ও শরিয়ত সম্মত বিধি-বিধান সম্পর্কে জ্ঞানের ঘাটতি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েই গেল। আমি তুর্কি আল-বিন’আলির সাথে পরিচয় হবার পরে তিনি আমাকে “হাকিবাত আল মুজাহিদ-৩(মুজাহিদের ব্রিফকেস-৩)” নামক ফাইলটি ডাউনলোড করতে বললেন। এ ফাইলটি আবু যুবায়ের আল গাজি কর্তৃক সংকলিত হয়েছিল। তিনি বর্তমানে জাবহাত ফাতহ আল শামের একজন ধর্ম বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে খেদমত আনজাম দিচ্ছেন। ফাইলটিতে কোনো একক ব্যক্তি বা জিহাদি সংগঠন থেকে আরবি ভাষায় প্রকাশিত সকল জিহাদি বই, আর্টিকেল, চিঠি, ফাতওয়া, বিবৃতি, যুক্তি খণ্ডন, ম্যাগাজিন, পুস্তিকা একটি “.rar” ফাইলে জমা করা হয়েছিল। আমি প্রায়ই আমার অবসর সময় এ ফাইলে থাকা জিনিসগুলো পড়ে কাটিয়ে দিতাম। আর, আমার কাছে যে বিষয়টি বোঝার জন্য কঠিন মনে হত, তা বিন’আলি আমার কাছে বর্ণনা করত। তাই, এভাবে আমি জিহাদের সাগড়ে অবতরণ করি।”
১- “হাকিবাত আল মুজাহিদ-৩(মুজাহিদের ব্রিফকেস-৩)” ছিল আবু যুবায়র আল গাজীর ব্যক্তিগত সংগ্রহ এবং এর আকার ছিল প্রায় ২ গিগাবাইট। কিন্তু,“হাকিবাত আল মুজাহিদ-৪(মুজাহিদের ব্রিফকেস-৪)” হল জিহাদি আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা যার আকার ছিল প্রায় ১৭ গিগাবাইট। যাই হোক, মুজাহিদের ব্রিফকেস-৪ এখনো ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়নি এবং এটি উত্তর সিরিয়ার একটি ছোট দলের অধিকারে রয়েছে। আর, মাঝেমাঝে, আবু যুবায়র আল গাজীর সাথে কেউ দেখা করতে এলে তিনি এ ফাইল হার্ড ডিস্ক বা ফ্লাশ ড্রাইভের মাধ্যমে তাদের দিয়ে থাকেন।
আহমাদ আল হামদানের সাক্ষাৎকার
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- তোরে হাম্মিং
ইংরেজীতে অনুবাদ- আল মুওয়াহিদীন মিডিয়া
.................................................. .
আল মুওয়াহিদীন মিডিয়া
এখানে আল মুওয়াহিদীন মিডিয়ার লোগো
Almuwahideenmedia.wordpress.com
………………………………………………………….
সূচিপত্রঃ
আহমাদ আল হামদানের পরিচয়
বৈশ্বিক জিহাদের বর্তমান অবস্থা
আল-কায়দার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
প্রজন্মগত পার্থক্য
ভাবাদর্শী চিন্তাশীল ব্যক্তি বা আলেমদের ভূমিকা
ইসলামিক স্টেটের মাঝে চরমপন্থা বা উগ্রবাদের বিস্তার
আল মুওয়াহিদীন মিডিয়ার অন্যান্য প্রকাশনা
……………………………………………………………………………
আহমেদ আল হামদানের পরিচয়
এই বইয়ের সাক্ষাতকার দানকারী আহমেদ আল হামদান হলেন “ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়দার মধ্যকার পদ্ধতিগত বৈষম্য- কারা সত্যপথ থেকে বিচ্যুত?” নামক বিখ্যাত বইয়ের রচয়িতা। বইটিতে মুলত রয়েছে আল-কায়দা ও ইসলামিক স্টেটের কর্মপন্থার মাঝে বিদ্যমান পার্থক্যের জ্ঞান-গভীর বিশ্লেষণ যা দুই পক্ষের সাংগঠনিক উৎসের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে এবং এ বইয়ে এ বিষয়ে উত্তর দেয়া হয়েছে যে, কারা বিচ্যুত হয়েছে সঠিক পথ থেকে, ওই পথ থেকে যেটা ছিল আল-কায়দার পূর্ববর্তী নেতাদের পথ, যাদেরকে মাঝেমাঝে সালাফি জিহাদিদের অনুসারি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ বইয়ের উদ্দেশ্য হল ইসলামিক স্টেটের মুখপাত্র, আবু মুহাম্মাদ আল আদনানির দাবির সত্যতা যাচাই করা। তার দাবিটি ছিল যে- আজ শেখ আইমান আল জাওয়াহিরির নেতৃত্বে আল-কায়দা শেখ উসামা বিন লাদেনের পথ থেকে সরে গিয়েছে। কিন্তু, তারা নিজেরাই শেখ উসামা বিন লাদেনের জীবদ্দশাতে শায়খের নির্দেশিত পথকে অস্বীকার করেছিল। এ বিষয়ে লেখা সবচেয়ে ভালো বইগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম এবং এ সম্পর্কিত বিষয়ের বিশ্লেষকদের কাছে এ বইটি বহুল জনপ্রিয়। বইটির গুরুত্ব বোঝাতে যে বিষয়টি উল্লেখ করাই যথেষ্ট তা হল- এটির মুল আরবি সংস্করণের ইংরেজি অনুবাদ থেকে প্রায় ১০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বইটি রাশিয়ান, তুর্কিস্তানি, উর্দু, ইন্দোনেশিয়ান অনুবাদ করা হয়েছে ও সোমালি, সোয়াহিলি, ফরাসী এবং জার্মানি ভাষায় অনুবাদ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ সাক্ষাৎকারে আহমেদ আল হামদান জিহাদি আন্দোলনের ক্রান্তিকাল সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল আল-কায়দা এবং পরবর্তীতে ISIS আল-কায়দার প্রতিপক্ষরুপে অবতীর্ণ হয়। পাশাপাশি, এ দুইদলের বিতর্কের ক্ষেত্র ও তাদের অগ্রযাত্রায় বিপত্তি নিয়ে আসা ভুলগুলো সম্পর্কে তিনি আলোকপাত করেন।
যাই হোক, লেখকের সম্পর্কে পাঠক যেন আরো কিছু কিছু জানতে পারে সেজন্য এ পর্যায়ে লেখকের সম্পর্কে সামান্য কিছু বিষয় এবং তার ব্যাপারে বিভিন্ন আলেমের সুপারিশ ও অনুমোদন সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করা হল। আহমেদ আল হামদান বলেন, “আমি ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করি এবং বর্তমানে বাহরাইনে বাস করছি। আমি শেখ আব্দুল্লাহ বিন ঈসা আল খালিফা আস সিনায়াহ স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন করেছি। পরবর্তীতে, University of Applied Science নামক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক বিজ্ঞান বা পলিটিকাল সায়েন্স-এর বিশেষায়নের উপর পড়াশোনা করেছি এবং এটি এখনো চলছে। যেসকল আলেম ও ছাত্রদের সাথে আমি পড়েছি এবং তাযকিয়াহ(অনুমোদন) পেয়েছি তাদের মধ্য থেকে যারা উল্লেখযোগ্য তারা হলেন-
- শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসি যিনি আমাকে তার বেশিরভাগ কথা বলার ইযাজাহ(অনুমোদন ও সুপারিশ) দিয়েছেন।
- শাইখ আবু কাতাদাহ আল ফিলিস্তিনি যিনি আমার বই- ‘’ ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়দার মধ্যকার পদ্ধতিগত বৈষম্য- কারা সত্যপথ থেকে বিচ্যুত?” এর আরবি সংস্করণের জন্য ভূমিকা বা মুখবন্ধ লিখে দিয়েছিলেন।
- শাইখ উমার আল হাদুচি আমাকে তার সকল বক্তব্যের জন্য ইযাজাহ দিয়েছেন।
- শাইখ ড. সাফা দিয়া আল আদাউই(shaykh Dr. Safa Diyaa al Adawi ) ছিলেন সোভিয়েতের লড়া জিহাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা। শাইখ ওসামা বিন লাদেন মুজাহিদিনের বিভিন্ন বিষয় সমাধানের জন্য তাকে প্রেরণ করতেন। আমি তার দেয়া “ফাতহ আল-বারি শারহ সহিহ আল বুখারি”-এর উপরে দেয়া লেকচারে উপস্থিত ছিলাম।
- শাইখ সাদিক আব্দুল্লাহ আল হাশমি ছিলেন শাইখ সুলায়মান আল উলওয়ানের ছাত্র। আল উলয়ান যদি ক্লাসে উপস্থিত থাকতে না পারতেন তবে তিনি শাইখ আল হাশমিকে ক্লাস নেয়ার জন্য পাঠাতেন।
- শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আল মুহাইসিনি
পাশাপাশি, আমি তুর্কি বিন’আলি(তিনি ISIS এর একজন অন্যতম অভিজ্ঞ ধর্মীয় নেতা ) সাথেও প্রায় আড়াই বছর ছিলাম এবং তার সাথে আকিদাহ, ফিকহের উসুল, হাদিস ও অন্যান্য বিষয়ে পড়েছি।
আমি বর্তমানে যে পথে রয়েছি সেখানে কিভাবে এলাম এ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, আমি ছোটবেলা থেকেই সালাফিদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান “জামাত আত-তারবিয়াত”-এ কুরআন মুখস্তের জন্য এবং ইখওয়ানুল মুসলিমিনের পরিচালিত গ্রীষ্মকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান(summer institution) “জামাত আল-ইসলাহ”-তে যাওয়া আসা করতাম। যাই হোক, এসবের পরেও আমি তেমন একটা ধার্মিক ছিলাম না এবং আমি মাধ্যমিক স্কুলের শেষ বছরের আগ পর্যন্ত এ পথে পৌছাইনি। অতঃপর, যখন আমি এ পথের পথিক হলাম তখন থেকে অনেক ইতিহাস, রাজনীতি এবং এমনকি কিছু সাহিত্য পড়া শুরু করলাম। আর, আল জাযিরা চ্যানেলের সাথে সংযুক্ত একটি ফোরাম ছিল যেখানে সকল ইসলামিক, রাজনৈতিক, আদর্শিক এবং আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় দলের উপস্থিতি ছিল এবং সেখানে প্রায়শই দীর্ঘ ও সরগরম আলোচনা হত। এসব আলোচনার মাধ্যমে দুপক্ষের মধ্যে কোনটি তার বক্তব্যে বেশি জোড়াল বা শক্তিশালী তা আপনি বুঝতে পারতেন। এরপরে, আমি একজন মহিলার অ্যাকাউন্ট পেলাম যাকে আমি আজ পর্যন্ত চিনতে পারিনি, তিনি তার সিগনেচারে “জিহাদের আর্কাইভ(archive of jihad)”-এর সাথে লংক করে দেয় যা ছিল এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে ৮০-এর দশক থেকে সর্বশেষ প্রকাশকালের সব ধরণের জিহাদি প্রকাশনা জমা করা হয়েছিল। মূলত, এই সাইট থেকে আমি সামরিক অভিযানের পাশাপাশি বেশিরভাগ বড় বড় জিহাদি প্রকাশনা পেতে পারতাম।
আমি হয়তো কখনই অস্ত্রকে বিবেচনায় নিতাম না কারণ, সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে এমন খবর আসছিল যে, সপ্তাহে মাত্র ১টি বা ২টি করে মিলিটারি অপারেশন ঘটছিল এবং আমরা খুব কমই আফগানিস্থান ও ইরাকে আমেরিকার অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে চলা একটানা বা নিরবিচ্ছিন্ন অপারেশনের ব্যাপারে শুনতে পারতাম। আর এসব বিষয় আমাদের মাঝে এমন একটি অনুভূতি জাগিয়েছিল যে, যেহেতু সামরিক অভিযানের সংখ্যা খুব কম আর এ স্বল্প সংখ্যক অভিযান কোনো কিছুই বদলাতে পারবে না তাই, এখন মিলিটারি অপারেশনের আর কোনোই দরকার নেই। যাই হোক, ঐ ওয়েবসাইটের “বিবৃতি(statement)” শিরোনামের লিংকটিতে যাওয়ার পরে আমি দেখলাম যে, দিনে প্রায় ১০টি মিলিটারি অপারেশন ও মাসে প্রায় ৩০০ অপারেশন সংঘটিত হয়। তাই, এ ব্যাপারটি আমার মাঝে আশা জাগিয়ে তুলল এবং আমি বললাম যে, “হ্যাঁ, আমরা পারবো।”
আর এভাবে আমি জিহাদি সংগঠনগুলোর সামরিক অভিযান সম্পর্কে সামান্য পরিমাণে ধারণা পেলাম। কিন্তু, তখনও এসব মিলিটারি কার্যক্রমের ইসলামিক ও শরিয়ত সম্মত বিধি-বিধান সম্পর্কে জ্ঞানের ঘাটতি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েই গেল। আমি তুর্কি আল-বিন’আলির সাথে পরিচয় হবার পরে তিনি আমাকে “হাকিবাত আল মুজাহিদ-৩(মুজাহিদের ব্রিফকেস-৩)” নামক ফাইলটি ডাউনলোড করতে বললেন। এ ফাইলটি আবু যুবায়ের আল গাজি কর্তৃক সংকলিত হয়েছিল। তিনি বর্তমানে জাবহাত ফাতহ আল শামের একজন ধর্ম বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে খেদমত আনজাম দিচ্ছেন। ফাইলটিতে কোনো একক ব্যক্তি বা জিহাদি সংগঠন থেকে আরবি ভাষায় প্রকাশিত সকল জিহাদি বই, আর্টিকেল, চিঠি, ফাতওয়া, বিবৃতি, যুক্তি খণ্ডন, ম্যাগাজিন, পুস্তিকা একটি “.rar” ফাইলে জমা করা হয়েছিল। আমি প্রায়ই আমার অবসর সময় এ ফাইলে থাকা জিনিসগুলো পড়ে কাটিয়ে দিতাম। আর, আমার কাছে যে বিষয়টি বোঝার জন্য কঠিন মনে হত, তা বিন’আলি আমার কাছে বর্ণনা করত। তাই, এভাবে আমি জিহাদের সাগড়ে অবতরণ করি।”
১- “হাকিবাত আল মুজাহিদ-৩(মুজাহিদের ব্রিফকেস-৩)” ছিল আবু যুবায়র আল গাজীর ব্যক্তিগত সংগ্রহ এবং এর আকার ছিল প্রায় ২ গিগাবাইট। কিন্তু,“হাকিবাত আল মুজাহিদ-৪(মুজাহিদের ব্রিফকেস-৪)” হল জিহাদি আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা যার আকার ছিল প্রায় ১৭ গিগাবাইট। যাই হোক, মুজাহিদের ব্রিফকেস-৪ এখনো ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়নি এবং এটি উত্তর সিরিয়ার একটি ছোট দলের অধিকারে রয়েছে। আর, মাঝেমাঝে, আবু যুবায়র আল গাজীর সাথে কেউ দেখা করতে এলে তিনি এ ফাইল হার্ড ডিস্ক বা ফ্লাশ ড্রাইভের মাধ্যমে তাদের দিয়ে থাকেন।
Comment