আল্লাহকে জানা
মহানআল্লাহবলেন,
ٱللَّهُٱلَّذِىخَلَقَسَبْعَسَمَاوَاتٍوَمِنَٱلأَرْضِ مِثْلَهُنَّيَتَنَزَّلُٱلأَمْرُبَيْنَهُنَّلِّتَعْلَ مُوۤاْأَنَّٱللَّهَعَلَىٰكُلِّشَيْءٍقَدِيرٌوَأَنَّٱ للَّهَقَدْأَحَاطَبِكُلِّشَيْءٍعِلْمَا
“তিনিইআল্লাহ, যিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান এবং এর অনুরূপ যমীন ও , এসবের মধ্যে নাযিল হয় তাঁর আদেশ ; যাতে তোমরা জানতে পারো যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং সব কিছুকে আল্লাহ স্বীয় জ্ঞানে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।” (সূরা, আত্-ত্বালাক্ব৬৫:১২)
ইবনুল ক্বাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন , “এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই সব চেয়ে মহান, উন্নত, মর্যাদাময় জ্ঞান হচ্ছে আল্লাহর ব্যাপারে জানা , তাঁর নাম, গুনাবলী এবং কার্যাবলী সম্পর্কে জানা।এটিই হচ্ছে সমস্ত জ্ঞানের মূল এবং উৎস। সুতরাং যে আল্লাহকে জানবে সে বাকি সমস্ত কিছু সম্পর্কে জানতে পারবে, যে আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ থাকবে সে সমস্ত কিছুর ব্যাপারে অজ্ঞ থাকবে ।……
আল্লাহ কে জানা এটা সমস্ত জ্ঞানের ভিত্তি , এটা বান্দার সফলতা , পরিপূর্নতা, দুনিয়া ও আখিরাতের পূর্নতার ভিত্তি। সুতরাং তাঁকে (আল্লাহকে) জানা তার জন্য সফলতা ও শান্তি, আর তাঁর ব্যাপারে অজ্ঞতা হচ্ছে নিদারুন ক্লেষ ও যন্ত্রনা।
বান্দার আত্মা ও জীবন-জীবিকার জন্য এর চেয়ে উত্তম, সুমিষ্ট অথবা আরামদায়ক ও উন্নত কিছু নেই যে তার ¯স্রষ্টাকে ভালবাসা , তাকে সব সময় স্মরন করা এবং তাকে খুশী করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করা।’’ (মিফতাহদার আস্শাহাদাহ১/৮৬ থেকে সংক্ষেপ করে বর্ননা করা হয়েছে )
কি ভাবে আমরা জানব মহান আল্লাহর ব্যাপারে?
এ ব্যাপারে ইবনুল ক্বাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা তাঁর বান্দাদের আহ্বান করেছেন তাঁর ব্যাপারে জানার জন্য দুইটি উপায়ে:
প্রথম হচ্ছে: আল্লার সৃষ্টির প্রতি লক্ষ্য করা এবং এ নিয়ে চিন্তা করা (তাফাক্বুরকরা)।
দ্বিতীয় হচ্ছে: তাঁর কোরআনের আয়াত নিয়েচিন্তা গবেষনা করা।
[আল ফাওয়াইদ]
সমস্ত প্রশংসা শুধু মাত্র আল্লাহর যার নিয়ামতে ভাল কার্যাবলী সংঘটিত হয়, নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর আল্লাহর তরফ থেকে সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক।
✿✿ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে আসল মহব্বতকারীদের পরিচয়ঃ হাফিয ইবনুল কাইয়ুম রহিমাহুল্লাহ ✿✿
মানুষ তার জান –মালকে জানমালের মালিকের রাস্তায় ব্যয় করবে,এটাই হল প্রেম ও মুহাব্বাত এবং জান্নাত ও তার অফুরন্ত নিয়ামতের দাবি। কেননা মুমিনের জান- মাল তিনি খরিদ করে নিয়েছেন। কোন ভিরু অপদার্থের ও শূন্য হস্ত ফকিরের সাধ্য কি এমন পন্যের দাম হাঁকে। আল্লাহ্র কসম! এ কোন অচল পন্য নয় যে, অভাবী নাখাস্তা লোকও তা করজরুপে চাওয়ার সাহস করতে পারে । এ পণ্য তো জহুরী ও সমঝদারদের বাজারে বিক্রির জন্য ছাড়া হয়েছে। জান্নাতের মালিক তো জানের চেয়ে কম মুল্যে তার পণ্য বেচতে রাজি নন। ভীরু অপদার্থের দল তো মূল্য শুনেই পিছিয়ে এসেছে। আর প্রেমিক মজনুর দল হুড়োহুড়ি করে এগিয়ে গেছে জানের বাজি লাগাতে যে, মালিক দয়া করে তার জানটা যদি জান্নাতের মূল্যরুপে কবুল করেন।
শেষ পর্যন্ত এ মহাপন্য সেই পুণ্যাত্মাদের হাতে চলে গেল যারা মুমিন ভাইদের প্রতি ছিল সদয় ও বিনম্র , কিন্তু কাফিদের বেলায় ছিলেন বর্জ্র কঠোর। ‘ইশক ও প্রেমের দাবীদারদের সংখ্যা যখন বেড়ে গেল তখন তাদের কাছে দাবীর সত্যতার প্রমাণ তলব করা হল। কেননা বিনা প্রমানে সবার দাবি স্বীকার করে নিলে আশিক মজনু আর ভণ্ড মজনুর মাঝে পার্থক্য করার কোন উপায় থাকবে না।
দাবীদাররা হর কিসিমের প্রমাণ পেশ করল কিন্তু তাদের বলা হল বাছাই পরিক্ষায় উর্ত্তিন্ন হওয়া ছাড়া তোমাদের দাবি গৃহীত হবে না। এরপর আল্লাহ্ তাআলা বললেন, ‘আপনি বলে দিন,আল্লাহকে সত্যই যদি তোমরা ভালোবাস তাহলে আমার অনুসরণ করো। আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন’।
এ কঠিন পরীক্ষার কথা শুনে সবাই পিছিয়ে গেল। কাজে-কর্মে, আচরণে, অভ্যাসে ও চরিত্রে তথা জীবনের সর্বেক্ষত্রে যারা রসূল ছল্লাল্লাহুয়ালায়হিওয়াছাল্লাম এর সত্যিকার অনুসারি ছিলেন তারাই শুধু নিজেদের দাবিতে অটল থাকলেন। অতঃপর চূড়ান্ত পরীক্ষার মানদণ্ড ঘোষণা করে ইরশাদ হল, “ আল্লাহ্র পথে তারা জিহাদ করে এবং নিন্দুকের নিন্দা বা সমালোচনার মোটেই পরওয়া করে না”।
এবার কিন্তু প্রেম ও মুহাব্বাতের অধিকাংশ দাবীদার কেটে পড়ল। মুজাহিদরাই শুধু টিকে রইল তখন তাদের লক্ষ্য করে বলা হল, এখন থেকে আশিক ও প্রেমিকদের জান-মালে তাদের মালিকানা নেই। সুতরাং যে পন্যের সওদা হয়ে গেছে তা প্রকৃত মালিক কে বুঝিয়ে দাও। ইরশাদ হচ্ছে, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ্, মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান-মাল খরিদ করে নিয়েছেন এই শর্তে যে , তাদেরকে জান্নাত দেওয়া হবে”।
বিক্রয় চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর বিক্রেতা ও ক্রেতার কর্তব্য হল পণ্য বুঝিয়ে দেওয়া এবং মূল্য পরিশোধ করা। ব্যাবসায়িরা যখন ক্রেতার মর্যাদা,দয়া,মহিমা,ক্ষমতার সর্বব্যাপকতা প্রত্যক্ষ করল এবং মূল্যরুপে প্রাপ্তব্য চিরস্থায়ী জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত সম্পর্কে অবগত হলো তখন তাদের বুঝতে বাকি রইল না যে, জানমালের এ সওদাবাজিতে তারা দারুন জেতা জিতেছে। এখন ক্ষণস্থায়ী জীবনের মোহে পড়ে এ বিক্রয় চুক্তি প্রত্যাহার করা হবে সীমাহীন বোকামি ও নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। তাই তারা খরিদদারদের প্রতিনিধির হাতে সানন্দে ও স্বতস্ফুর্তভাবে নিজেদের সমস্ত ইচ্ছা ও এখতিয়ার বিলুপ্ত করে বাইয়াতে রিজওয়ানে শরীক হলো। নবীর হাতে হাত রেখে তারা তারা শপথ করল- এ মূল্য কখনও আমরা ফেরত নেব না এবং বিক্রয় চুক্তির প্রত্যাহারেরও আবেদন জানাব না। মোটকথা, ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি পুর্নাঙ্গ হয়ে গেছে এবং তারা তাদের সবকিছু সোর্পদ করে দিয়েছে তখন তাদের বলা হল- তোমাদের জীবন ও সম্পদ এখন থেকে আমার হয়ে গেছে। এবং এখন তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে আমি তোমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছি। ইরশাদ হচ্ছে, “ আল্লাহ্র রাস্তায় যারা নিহত হয়েছে তাদের তোমরা মৃত মনে কর না। আপন প্রতিপালকের কাছে তারা জীবিত, তাদের রিজিক প্রদান করা হয়”।
লাভের লোভে আমি তোমাদের জান মাল দাবি করিনি। আমি শুধু আমার দান ও দয়ার প্রকাশ ঘটাতে চেয়েছি। দেখছ না, কেমন তুচ্ছ ও নগণ্য জিনিস নিয়ে কি বিরাট ও অফুরন্ত মূল্য তোমাদের হাতে তুলে দিলাম! তদুপরি তোমাদের জান-মাল তোমাদের জন্যই সঞ্চিত করে রেখেছি।
মানুষ তার ক্ষুদ্র অনুভতি ও উপলদ্ধি দ্বারা আল্লাহ্র দয়া ও করুনা এবং দান ও ইহসানের কতটুকুই বা অনুভব করতে পারে? এ জান মাল আল্লাহই তো দিয়েছেন। বিক্রয় চুক্তি সম্পাদনের তাওফিকও তিনিই দিয়েছেন। যাবতীয় দোষ ও খুঁত সত্ত্বেও সে মাল দয়া করে কবুল করেছেন এবং বান্দার হাতে কল্পনাতীত মূল্য তুলে দিয়েছেন। নিজের দেওয়া মাল দিয়েই নিজের বান্দাকে খরিদ করেছেন। তদুপরি বান্দার তিনি প্রশংসা করেছেন! অথচ তাঁর দেওয়া তৌফিক ছাড়া বান্দার পক্ষে এ বিরাট সওদা করা সম্ভব ছিল না।
আল্লাহর পথে আহবানকারী রসূল ছল্লাল্লাহুয়ালায়হিওয়াছাল্লাম তাঁর সাহসী ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্নদের আল্লাহ ও জান্নাতের দিকে ডাকলেন। ঈমানের নকিব বিবেকসম্পন্নদের আহবান শোনালেন। ফলে জান্নাতের আশায় আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অনুসন্ধানকারী যাত্রী দলের মাঝে মহাযাত্রার এক অভুতপূর্ব কোলাহল জেগে উঠল এবং আশা-প্রত্যাশার স্বর্ণতোরণ পেরিয়ে মনজিলে মকসূদে পৌছার পূর্ব পর্যন্ত কারো মনেই যেন স্বস্তি নেই। আছে শুধু ব্যাকুল প্রতিক্ষার আনন্দ-বেদনা।
(আমিও কি এই দলের অন্তর্ভুক্ত?)
মহানআল্লাহবলেন,
ٱللَّهُٱلَّذِىخَلَقَسَبْعَسَمَاوَاتٍوَمِنَٱلأَرْضِ مِثْلَهُنَّيَتَنَزَّلُٱلأَمْرُبَيْنَهُنَّلِّتَعْلَ مُوۤاْأَنَّٱللَّهَعَلَىٰكُلِّشَيْءٍقَدِيرٌوَأَنَّٱ للَّهَقَدْأَحَاطَبِكُلِّشَيْءٍعِلْمَا
“তিনিইআল্লাহ, যিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান এবং এর অনুরূপ যমীন ও , এসবের মধ্যে নাযিল হয় তাঁর আদেশ ; যাতে তোমরা জানতে পারো যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং সব কিছুকে আল্লাহ স্বীয় জ্ঞানে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।” (সূরা, আত্-ত্বালাক্ব৬৫:১২)
ইবনুল ক্বাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন , “এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই সব চেয়ে মহান, উন্নত, মর্যাদাময় জ্ঞান হচ্ছে আল্লাহর ব্যাপারে জানা , তাঁর নাম, গুনাবলী এবং কার্যাবলী সম্পর্কে জানা।এটিই হচ্ছে সমস্ত জ্ঞানের মূল এবং উৎস। সুতরাং যে আল্লাহকে জানবে সে বাকি সমস্ত কিছু সম্পর্কে জানতে পারবে, যে আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ থাকবে সে সমস্ত কিছুর ব্যাপারে অজ্ঞ থাকবে ।……
আল্লাহ কে জানা এটা সমস্ত জ্ঞানের ভিত্তি , এটা বান্দার সফলতা , পরিপূর্নতা, দুনিয়া ও আখিরাতের পূর্নতার ভিত্তি। সুতরাং তাঁকে (আল্লাহকে) জানা তার জন্য সফলতা ও শান্তি, আর তাঁর ব্যাপারে অজ্ঞতা হচ্ছে নিদারুন ক্লেষ ও যন্ত্রনা।
বান্দার আত্মা ও জীবন-জীবিকার জন্য এর চেয়ে উত্তম, সুমিষ্ট অথবা আরামদায়ক ও উন্নত কিছু নেই যে তার ¯স্রষ্টাকে ভালবাসা , তাকে সব সময় স্মরন করা এবং তাকে খুশী করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করা।’’ (মিফতাহদার আস্শাহাদাহ১/৮৬ থেকে সংক্ষেপ করে বর্ননা করা হয়েছে )
কি ভাবে আমরা জানব মহান আল্লাহর ব্যাপারে?
এ ব্যাপারে ইবনুল ক্বাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা তাঁর বান্দাদের আহ্বান করেছেন তাঁর ব্যাপারে জানার জন্য দুইটি উপায়ে:
প্রথম হচ্ছে: আল্লার সৃষ্টির প্রতি লক্ষ্য করা এবং এ নিয়ে চিন্তা করা (তাফাক্বুরকরা)।
দ্বিতীয় হচ্ছে: তাঁর কোরআনের আয়াত নিয়েচিন্তা গবেষনা করা।
[আল ফাওয়াইদ]
সমস্ত প্রশংসা শুধু মাত্র আল্লাহর যার নিয়ামতে ভাল কার্যাবলী সংঘটিত হয়, নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর আল্লাহর তরফ থেকে সলাত ও সালাম বর্ষিত হোক।
✿✿ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে আসল মহব্বতকারীদের পরিচয়ঃ হাফিয ইবনুল কাইয়ুম রহিমাহুল্লাহ ✿✿
মানুষ তার জান –মালকে জানমালের মালিকের রাস্তায় ব্যয় করবে,এটাই হল প্রেম ও মুহাব্বাত এবং জান্নাত ও তার অফুরন্ত নিয়ামতের দাবি। কেননা মুমিনের জান- মাল তিনি খরিদ করে নিয়েছেন। কোন ভিরু অপদার্থের ও শূন্য হস্ত ফকিরের সাধ্য কি এমন পন্যের দাম হাঁকে। আল্লাহ্র কসম! এ কোন অচল পন্য নয় যে, অভাবী নাখাস্তা লোকও তা করজরুপে চাওয়ার সাহস করতে পারে । এ পণ্য তো জহুরী ও সমঝদারদের বাজারে বিক্রির জন্য ছাড়া হয়েছে। জান্নাতের মালিক তো জানের চেয়ে কম মুল্যে তার পণ্য বেচতে রাজি নন। ভীরু অপদার্থের দল তো মূল্য শুনেই পিছিয়ে এসেছে। আর প্রেমিক মজনুর দল হুড়োহুড়ি করে এগিয়ে গেছে জানের বাজি লাগাতে যে, মালিক দয়া করে তার জানটা যদি জান্নাতের মূল্যরুপে কবুল করেন।
শেষ পর্যন্ত এ মহাপন্য সেই পুণ্যাত্মাদের হাতে চলে গেল যারা মুমিন ভাইদের প্রতি ছিল সদয় ও বিনম্র , কিন্তু কাফিদের বেলায় ছিলেন বর্জ্র কঠোর। ‘ইশক ও প্রেমের দাবীদারদের সংখ্যা যখন বেড়ে গেল তখন তাদের কাছে দাবীর সত্যতার প্রমাণ তলব করা হল। কেননা বিনা প্রমানে সবার দাবি স্বীকার করে নিলে আশিক মজনু আর ভণ্ড মজনুর মাঝে পার্থক্য করার কোন উপায় থাকবে না।
দাবীদাররা হর কিসিমের প্রমাণ পেশ করল কিন্তু তাদের বলা হল বাছাই পরিক্ষায় উর্ত্তিন্ন হওয়া ছাড়া তোমাদের দাবি গৃহীত হবে না। এরপর আল্লাহ্ তাআলা বললেন, ‘আপনি বলে দিন,আল্লাহকে সত্যই যদি তোমরা ভালোবাস তাহলে আমার অনুসরণ করো। আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন’।
এ কঠিন পরীক্ষার কথা শুনে সবাই পিছিয়ে গেল। কাজে-কর্মে, আচরণে, অভ্যাসে ও চরিত্রে তথা জীবনের সর্বেক্ষত্রে যারা রসূল ছল্লাল্লাহুয়ালায়হিওয়াছাল্লাম এর সত্যিকার অনুসারি ছিলেন তারাই শুধু নিজেদের দাবিতে অটল থাকলেন। অতঃপর চূড়ান্ত পরীক্ষার মানদণ্ড ঘোষণা করে ইরশাদ হল, “ আল্লাহ্র পথে তারা জিহাদ করে এবং নিন্দুকের নিন্দা বা সমালোচনার মোটেই পরওয়া করে না”।
এবার কিন্তু প্রেম ও মুহাব্বাতের অধিকাংশ দাবীদার কেটে পড়ল। মুজাহিদরাই শুধু টিকে রইল তখন তাদের লক্ষ্য করে বলা হল, এখন থেকে আশিক ও প্রেমিকদের জান-মালে তাদের মালিকানা নেই। সুতরাং যে পন্যের সওদা হয়ে গেছে তা প্রকৃত মালিক কে বুঝিয়ে দাও। ইরশাদ হচ্ছে, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ্, মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান-মাল খরিদ করে নিয়েছেন এই শর্তে যে , তাদেরকে জান্নাত দেওয়া হবে”।
বিক্রয় চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর বিক্রেতা ও ক্রেতার কর্তব্য হল পণ্য বুঝিয়ে দেওয়া এবং মূল্য পরিশোধ করা। ব্যাবসায়িরা যখন ক্রেতার মর্যাদা,দয়া,মহিমা,ক্ষমতার সর্বব্যাপকতা প্রত্যক্ষ করল এবং মূল্যরুপে প্রাপ্তব্য চিরস্থায়ী জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত সম্পর্কে অবগত হলো তখন তাদের বুঝতে বাকি রইল না যে, জানমালের এ সওদাবাজিতে তারা দারুন জেতা জিতেছে। এখন ক্ষণস্থায়ী জীবনের মোহে পড়ে এ বিক্রয় চুক্তি প্রত্যাহার করা হবে সীমাহীন বোকামি ও নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। তাই তারা খরিদদারদের প্রতিনিধির হাতে সানন্দে ও স্বতস্ফুর্তভাবে নিজেদের সমস্ত ইচ্ছা ও এখতিয়ার বিলুপ্ত করে বাইয়াতে রিজওয়ানে শরীক হলো। নবীর হাতে হাত রেখে তারা তারা শপথ করল- এ মূল্য কখনও আমরা ফেরত নেব না এবং বিক্রয় চুক্তির প্রত্যাহারেরও আবেদন জানাব না। মোটকথা, ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি পুর্নাঙ্গ হয়ে গেছে এবং তারা তাদের সবকিছু সোর্পদ করে দিয়েছে তখন তাদের বলা হল- তোমাদের জীবন ও সম্পদ এখন থেকে আমার হয়ে গেছে। এবং এখন তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে আমি তোমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছি। ইরশাদ হচ্ছে, “ আল্লাহ্র রাস্তায় যারা নিহত হয়েছে তাদের তোমরা মৃত মনে কর না। আপন প্রতিপালকের কাছে তারা জীবিত, তাদের রিজিক প্রদান করা হয়”।
লাভের লোভে আমি তোমাদের জান মাল দাবি করিনি। আমি শুধু আমার দান ও দয়ার প্রকাশ ঘটাতে চেয়েছি। দেখছ না, কেমন তুচ্ছ ও নগণ্য জিনিস নিয়ে কি বিরাট ও অফুরন্ত মূল্য তোমাদের হাতে তুলে দিলাম! তদুপরি তোমাদের জান-মাল তোমাদের জন্যই সঞ্চিত করে রেখেছি।
মানুষ তার ক্ষুদ্র অনুভতি ও উপলদ্ধি দ্বারা আল্লাহ্র দয়া ও করুনা এবং দান ও ইহসানের কতটুকুই বা অনুভব করতে পারে? এ জান মাল আল্লাহই তো দিয়েছেন। বিক্রয় চুক্তি সম্পাদনের তাওফিকও তিনিই দিয়েছেন। যাবতীয় দোষ ও খুঁত সত্ত্বেও সে মাল দয়া করে কবুল করেছেন এবং বান্দার হাতে কল্পনাতীত মূল্য তুলে দিয়েছেন। নিজের দেওয়া মাল দিয়েই নিজের বান্দাকে খরিদ করেছেন। তদুপরি বান্দার তিনি প্রশংসা করেছেন! অথচ তাঁর দেওয়া তৌফিক ছাড়া বান্দার পক্ষে এ বিরাট সওদা করা সম্ভব ছিল না।
আল্লাহর পথে আহবানকারী রসূল ছল্লাল্লাহুয়ালায়হিওয়াছাল্লাম তাঁর সাহসী ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্নদের আল্লাহ ও জান্নাতের দিকে ডাকলেন। ঈমানের নকিব বিবেকসম্পন্নদের আহবান শোনালেন। ফলে জান্নাতের আশায় আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অনুসন্ধানকারী যাত্রী দলের মাঝে মহাযাত্রার এক অভুতপূর্ব কোলাহল জেগে উঠল এবং আশা-প্রত্যাশার স্বর্ণতোরণ পেরিয়ে মনজিলে মকসূদে পৌছার পূর্ব পর্যন্ত কারো মনেই যেন স্বস্তি নেই। আছে শুধু ব্যাকুল প্রতিক্ষার আনন্দ-বেদনা।
(আমিও কি এই দলের অন্তর্ভুক্ত?)
Comment