তা’যির(التعزير) আভিধানিকভাবেতা’যিরের(التعزير)কয়েকটাঅর্থআসে।তবেফিকহশাস্ত্রেরপারিভাষিকঅর্থেরসাথেসবচেয়েসামঞ্জস্যপূর্ণঅর্থহলো- التأديبতথাশিষ্টাচারশিক্ষাদানওমন্দকাজেরশাস্তিপ্রদানএবং المنع তথা নিবৃত্ত রাখা;চাইতাপ্রহারেরমাধ্যমেহোকবাঅন্যকোনভাবেহোক।তদ্রূপপ্রহারবাশাস্তিরপরিমাণকমওহতেপারে, বেশিওহতেপারে।এরনির্ধারিতকোনসীমানেই। আরফিকহশাস্ত্রেরপরিভাষায়তা’যিরবলে, শরীয়তেযেসবঅপরাধেরশাস্তিসুনির্ধারিতনয়, সেসবঅপরাধেরবিপরীতেপ্রদত্তশাস্তি। ইমামুল মুসলিমীন, সুলতান বা কাযি- অপরাধ, অপরাধী ও অন্যান্য বিষয়ের বিবেচনায় শরীয়ত সম্মত যে শাস্তি নির্ধারণ করেন, সেটাই তা’যির। তবে শরীয়তের বিধান হলো, তা’যিরের পরিমাণ হদের চেয়ে কম হতে হবে। যেমন, অবিবাহিত ব্যক্তি যিনা করলে তার উপর হদ্দে যিনারূপে একশোত বেত্রাঘাত বর্তাবে। এখন যদি কোন অবিবাহিত ব্যক্তি কোন মহিলার সাথে চুম্বন, জড়িয়ে ধরা ইত্যাদি কুকর্ম করে কিন্তু সঙ্গম করতে পারেনি- তাহলে তার শাস্তি কি হবে তা শরীয়তে নির্ধারিত নেই। এক্ষেত্রে কাযি সাহেব মুনাসিব মতো শাস্তি দেবেন। তবে তার পরিমাণ হদ্দে যিনা তথা একশো বেত্রাঘাতের চেয়ে কম হতে হবে। তবে একশোর কমে সর্বোচ্চ কত দিতে পারবেন, তাতে আইম্মায়ে কেরামের মতভেদ আছে। তা’যিরের পরিমাণের আলোচনায় তা আসবে ইনশাআল্লাহ্। এবার ফুকাহায়ে কেরামের কয়েকটি বক্তব্য লক্ষ করুন:
ইবনে কুদামা মাকদিসি রহ. (৬২০হি.) বলেন,
التعزير : هو العقوبة المشروعة على جناية لا حد فيها ... يسمى تعزيرا لأنه منع من الجناية. والأصل في التعزير المنع. اهـ “তা’যিরহচ্ছেসেসবঅপরাধেরবিপরীতেপ্রদত্তশরয়ীশাস্তি, যেগুলোতেহদআসেনা। ... তা’যিরকেতা’যিরবলাহয়কারণ, তাঅপরাধথেকেনিবৃত্তরাখে।তা’যিরেরমূলঅর্থ- নিবৃত্তরাখা।” [আলমুগনী: ১০/৩৪২]
‘আদ-দুররুলমুখতারে’ বলাহয়েছে,
(هو) لغة التأديب مطلقا... وشرعا (تأديب دون الحد). اهـ “তা’যিরেরআভিধানিকঅর্থ- শিষ্টাচারশিক্ষাদানএবংমন্দকাজেরবিপরীতেশাস্তিপ্রদান, চাইতাযেভাবেইহোক, যেপরিমাণইহোক। ... আরশরীয়তেরপরিভাষায়তা’যিরবলে, হদেরচেয়েকমপরিমাণেরশাস্তিকে।”
আল্লামাইবনেআবেদীনশামীরহ. (১২৫২হি.) এরব্যাখ্যায়আভিধানিকঅর্থকেআরোপরিষ্কারকরেতুলেছেন।তিনিবলেন,
(قوله هو لغة التأديب مطلقا) أي بضرب وغيره دون الحد أو أكثر منه. اهـ “... অর্থাৎতাপ্রহারেরমাধ্যমেহোকবাঅন্যকিছুরমাধ্যমেহোক।হদেরচেয়েকমহোকবাবেশিহোক।” [ রদ্দুলমুহতার: ৪/৫৯]
ফাতাওয়ায়েহিন্দিয়া-তেএসেছে,
هو تأديب دون الحد ويجب في جناية ليست موجبة للحد. اهـ “তা’যিরবলেহদেরচেয়েকমপরিমাণেরশাস্তিকে।যেসবঅপরাধেহদফরযহয়না, সেসবঅপরাধেতা’যিরআবশ্যকহয়।” [ আলফাতাওয়ালহিন্দিয়া: ২/১৬৭]
ইসলামে তা’যিরের পরিধি অনেক বিস্তৃত
শরীয়তে হদের সংখ্যা সুনির্দিষ্ট কয়েকটি। হানাফি মাযহাব মতে হদ ছয়টি। দ্বিতীয়ত হদ প্রমাণিত হওয়ার জন্য অনেক শর্ত নির্ধারিত আছে, যেগুলো পেরিয়ে হদ কমই প্রমাণিত হয়। কোন শর্ত না পাওয়া যাওয়ার কারণে যখন হদ কায়েম করা যায় না, তখন তা’যির করতে হয়। অপর দিকে হদের বাহিরে অপরাধের সংখ্যা ও ধরণ অনেক। আবার একেক অপরাধীর অবস্থাও একেক রকম। এসবের হিসেবে তা’যিরের ধরণ, প্রকৃতি ও পরিমাণও বিভিন্ন রকম হয়। তাই শরীয়তে তা’যিরের পরিধি অনেক বিস্তৃত। একটি ইসলামী রাষ্ট্র সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এবং সব ধরণের অপরাধ দমন করে শান্তি-শংখলা প্রতিষ্ঠার জন্য যথাযথ তা’যির কায়েম করার ভূমিকা তুলনাহীন।
তা’যিরের প্রকারভেদ ও পরিমাণ
তা’যিরের সংজ্ঞায় আমরা দেখেছি, তা’যির হচ্ছে এমন শাস্তি যা শরীয়তে হদের মতো সুনির্ধারিত নয়; বরং অপরাধ, অপরাধী, পারিপার্শ্বিকতা ও অন্যান্য বিষয়ের বিবেচনায় এর ধরণ ও পরিমাণ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যাকে যে পরিমাণ শাস্তি দিলে সে অপরাধ থেকে বিরত হবে, সেটাই তার তা’যির। তবে এ শাস্তির পরিমাণ হদের চেয়ে কম হতে হবে, যেমনটা সংজ্ঞায় বলা হয়েছে। তবে কারো যদি অপরাধ অনেক হয়ে থাকে, আর সবগুলোর সম্মিলিত শাস্তি হদের চেয়ে বেশি হয়ে যায়, তাহলে তাতে অসুবিধা নেই। কারণ, এখানে প্রত্যেকটা শাস্তি মূলত হদের চেয়ে কম। কিন্তু অপরাধ বেশি হওয়ায় সামষ্টিকভাবে সেগুলো হদের চেয়ে বেশি হয়ে গেছে।
তা’যিরের শাস্তি সুনির্ধারিত না হওয়ার অর্থ এই নয় যে, কাযি বা সুলতান যাকে যেমন ইচ্ছা মন মতো শাস্তি দিয়ে দেবেন। এটা কখনোই উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো- কাযি সাহেব প্রত্যেক ব্যক্তির বেলায় সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেখবেন, তাকে কি পরিমাণ শাস্তি দিলে সে বিরত হবে। যে প্রকার শাস্তি দিলে বিরত হবে বলে মনে করেন, সে প্রকার ব্যতীত অন্য প্রকারের শাস্তি দেয়া জায়েয হবে না। তদ্রূপ, যে পরিমাণে বিরত হবে বলে মনে করেন, সে পরিমাণের চেয়ে বেশি দেয়াও জায়েয হবে না। যে চোখ রাঙানীর দ্বারাই বিরত হয়ে যাবে মনে হয়, তাকে প্রহার করা যাবে না। যে প্রহারের দ্বারাই বিরত হয়ে যাবে, তাকে জেলে দেয়া যাবে না। আবার যে দশ বেত্রাঘাতেই বিরত হয়ে যাবে, তাকে বিশটা লাগানো জায়েয হবে না। অতএব, তা’যিরের বিষয়টা কাযি সাহেবের ইজতিহাদের উপর নির্ভরশীল, খাহেশাতের উপর নয়।
ইবনে দাকিকুল ঈদ রহ. (৭০২হি.) বলেন,
তা’যিরের শাস্তি কোন এক প্রকারে সীমাবদ্ধ নয়
উপরের আলোচনা থেকে আশাকরি স্পষ্ট যে, তা’যির কোন এক প্রকারে সীমাবদ্ধ নয়। এমন নয় যে, সকল অপরাধের শাস্তি শুধু প্রহারের দ্বারা কিংবা জেলের দ্বারাই দিতে হবে। বরং অবস্থাভেদে শাস্তির প্রকার বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেখানে যে প্রকার উপযুক্ত, সে প্রকারই প্রয়োগ করবে।
কুরআন হাদিসে বিভিন্ন প্রকারের তা’যিরের কথা এসেছে। ফুকাহায়ে কেরাম তা’যিরে বিভিন্ন প্রকার শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন-
(চলবে ইনশাআল্লাহ্)
ইবনে কুদামা মাকদিসি রহ. (৬২০হি.) বলেন,
التعزير : هو العقوبة المشروعة على جناية لا حد فيها ... يسمى تعزيرا لأنه منع من الجناية. والأصل في التعزير المنع. اهـ “তা’যিরহচ্ছেসেসবঅপরাধেরবিপরীতেপ্রদত্তশরয়ীশাস্তি, যেগুলোতেহদআসেনা। ... তা’যিরকেতা’যিরবলাহয়কারণ, তাঅপরাধথেকেনিবৃত্তরাখে।তা’যিরেরমূলঅর্থ- নিবৃত্তরাখা।” [আলমুগনী: ১০/৩৪২]
‘আদ-দুররুলমুখতারে’ বলাহয়েছে,
(هو) لغة التأديب مطلقا... وشرعا (تأديب دون الحد). اهـ “তা’যিরেরআভিধানিকঅর্থ- শিষ্টাচারশিক্ষাদানএবংমন্দকাজেরবিপরীতেশাস্তিপ্রদান, চাইতাযেভাবেইহোক, যেপরিমাণইহোক। ... আরশরীয়তেরপরিভাষায়তা’যিরবলে, হদেরচেয়েকমপরিমাণেরশাস্তিকে।”
আল্লামাইবনেআবেদীনশামীরহ. (১২৫২হি.) এরব্যাখ্যায়আভিধানিকঅর্থকেআরোপরিষ্কারকরেতুলেছেন।তিনিবলেন,
(قوله هو لغة التأديب مطلقا) أي بضرب وغيره دون الحد أو أكثر منه. اهـ “... অর্থাৎতাপ্রহারেরমাধ্যমেহোকবাঅন্যকিছুরমাধ্যমেহোক।হদেরচেয়েকমহোকবাবেশিহোক।” [ রদ্দুলমুহতার: ৪/৫৯]
ফাতাওয়ায়েহিন্দিয়া-তেএসেছে,
هو تأديب دون الحد ويجب في جناية ليست موجبة للحد. اهـ “তা’যিরবলেহদেরচেয়েকমপরিমাণেরশাস্তিকে।যেসবঅপরাধেহদফরযহয়না, সেসবঅপরাধেতা’যিরআবশ্যকহয়।” [ আলফাতাওয়ালহিন্দিয়া: ২/১৬৭]
ইসলামে তা’যিরের পরিধি অনেক বিস্তৃত
শরীয়তে হদের সংখ্যা সুনির্দিষ্ট কয়েকটি। হানাফি মাযহাব মতে হদ ছয়টি। দ্বিতীয়ত হদ প্রমাণিত হওয়ার জন্য অনেক শর্ত নির্ধারিত আছে, যেগুলো পেরিয়ে হদ কমই প্রমাণিত হয়। কোন শর্ত না পাওয়া যাওয়ার কারণে যখন হদ কায়েম করা যায় না, তখন তা’যির করতে হয়। অপর দিকে হদের বাহিরে অপরাধের সংখ্যা ও ধরণ অনেক। আবার একেক অপরাধীর অবস্থাও একেক রকম। এসবের হিসেবে তা’যিরের ধরণ, প্রকৃতি ও পরিমাণও বিভিন্ন রকম হয়। তাই শরীয়তে তা’যিরের পরিধি অনেক বিস্তৃত। একটি ইসলামী রাষ্ট্র সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এবং সব ধরণের অপরাধ দমন করে শান্তি-শংখলা প্রতিষ্ঠার জন্য যথাযথ তা’যির কায়েম করার ভূমিকা তুলনাহীন।
তা’যিরের প্রকারভেদ ও পরিমাণ
তা’যিরের সংজ্ঞায় আমরা দেখেছি, তা’যির হচ্ছে এমন শাস্তি যা শরীয়তে হদের মতো সুনির্ধারিত নয়; বরং অপরাধ, অপরাধী, পারিপার্শ্বিকতা ও অন্যান্য বিষয়ের বিবেচনায় এর ধরণ ও পরিমাণ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যাকে যে পরিমাণ শাস্তি দিলে সে অপরাধ থেকে বিরত হবে, সেটাই তার তা’যির। তবে এ শাস্তির পরিমাণ হদের চেয়ে কম হতে হবে, যেমনটা সংজ্ঞায় বলা হয়েছে। তবে কারো যদি অপরাধ অনেক হয়ে থাকে, আর সবগুলোর সম্মিলিত শাস্তি হদের চেয়ে বেশি হয়ে যায়, তাহলে তাতে অসুবিধা নেই। কারণ, এখানে প্রত্যেকটা শাস্তি মূলত হদের চেয়ে কম। কিন্তু অপরাধ বেশি হওয়ায় সামষ্টিকভাবে সেগুলো হদের চেয়ে বেশি হয়ে গেছে।
তা’যিরের শাস্তি সুনির্ধারিত না হওয়ার অর্থ এই নয় যে, কাযি বা সুলতান যাকে যেমন ইচ্ছা মন মতো শাস্তি দিয়ে দেবেন। এটা কখনোই উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো- কাযি সাহেব প্রত্যেক ব্যক্তির বেলায় সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেখবেন, তাকে কি পরিমাণ শাস্তি দিলে সে বিরত হবে। যে প্রকার শাস্তি দিলে বিরত হবে বলে মনে করেন, সে প্রকার ব্যতীত অন্য প্রকারের শাস্তি দেয়া জায়েয হবে না। তদ্রূপ, যে পরিমাণে বিরত হবে বলে মনে করেন, সে পরিমাণের চেয়ে বেশি দেয়াও জায়েয হবে না। যে চোখ রাঙানীর দ্বারাই বিরত হয়ে যাবে মনে হয়, তাকে প্রহার করা যাবে না। যে প্রহারের দ্বারাই বিরত হয়ে যাবে, তাকে জেলে দেয়া যাবে না। আবার যে দশ বেত্রাঘাতেই বিরত হয়ে যাবে, তাকে বিশটা লাগানো জায়েয হবে না। অতএব, তা’যিরের বিষয়টা কাযি সাহেবের ইজতিহাদের উপর নির্ভরশীল, খাহেশাতের উপর নয়।
ইবনে দাকিকুল ঈদ রহ. (৭০২হি.) বলেন,
وليس التخيير فيه ، ولا في شيء مما يفوض إلى الولاة : تخيير تشه ، بل لا بد عليهم من الاجتهاد . اهـ
“তা’যিরে কিংবা কর্তৃত্ত্বশীলদের নিকট সোপর্দ এমন কোন বিষয়েই কোন একটা বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দেয়ার অর্থ নিজ খাহেশাত মতো বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দেয়া নয়। বরং তাদের উপর আবশ্যক- ইজতিহাদ করা।” [ইহকামুল আহকাম: ৩/১৪৪, কিতাবুল হুদুদ]তা’যিরের শাস্তি কোন এক প্রকারে সীমাবদ্ধ নয়
উপরের আলোচনা থেকে আশাকরি স্পষ্ট যে, তা’যির কোন এক প্রকারে সীমাবদ্ধ নয়। এমন নয় যে, সকল অপরাধের শাস্তি শুধু প্রহারের দ্বারা কিংবা জেলের দ্বারাই দিতে হবে। বরং অবস্থাভেদে শাস্তির প্রকার বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেখানে যে প্রকার উপযুক্ত, সে প্রকারই প্রয়োগ করবে।
কুরআন হাদিসে বিভিন্ন প্রকারের তা’যিরের কথা এসেছে। ফুকাহায়ে কেরাম তা’যিরে বিভিন্ন প্রকার শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন-
(চলবে ইনশাআল্লাহ্)
Comment