এক ভাই জানতে চেয়েছেন:
১. জিহাদ কাকে বলে ?
২. জিহাদ কত প্রকার ও কি কি ?
৩. ক্বিতাল কাকে বলে ?
৪. ক্বিতাল কত প্রকার ও কি কি ?
৫. ২ টার মাঝে পার্থক্য কি কি ?
উত্তর:
এক. জিহাদ কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার উদ্দেশ্যে কাফের-মুরতাদদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করা কিংবা জান-মাল ও বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাতে কোন ধরণের সহায়তা করাকে জিহাদ বলে। আমীরের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী যে যেভাবে সহায়তা করবে সবই জিহাদ হবে। যে যতটুকু কুরবানী দেবে সে ততটুকু সওয়াব পাবে। আশাকরি বুঝতেই পারছেন- জিহাদ বলতে শুধু যুদ্ধ নয়; কাফেরদের বিরুদ্ধে জয় লাভের জন্য যুদ্ধ এবং আমীরের নির্দেশনাধীন যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট অন্য সকল কাজও জিহাদ।
দুই. জিহাদ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর: জিহাদ দুই প্রকার:
১. ইকদামি তথা আক্রমণাত্মক জিহাদ। কাফেরদের দেশ বিজয় করে সেখানে ইসলামী হুকুমত কায়েম করার জন্য এ জিহাদ করা হয়। এটি ফরযে কেফায়া।
২. দিফায়ী তথা প্রতিরক্ষামূলক। কাফেররা মুসলমানদের উপর বা তাদের কোন ভূমিতে আক্রমণ চালালে তা প্রতিহত করা ফরয। একে দিফায়ি জিহাদ বলে। এটি ফরযে আইন।
ফরযে কিফায়া ও ফরযে আইন কাকে বলে, ফরযে আইন কতজনের উপর হয়- কয়দিন আগে এ সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত পোস্ট দেয়া হয়েছিল। আপনি সেটা দেখতে পারেন।
লিংক: https://dawahilallah.com/showthread....2503;&%232472;
জিহাদের প্রকারের ব্যাপারে আপনি এই লেখাটা দেখতে পারেন। এখানে উভয় প্রকার জিহাদ (ইকদামি ও দিফায়ি) সম্পর্কে দলীলভিত্তিক আলোচনা আছে। লেখাটা বিজয়ে লেখা, তাই এখানে পোস্ট করতে পারছি না।
জিহাদের সংজ্ঞা ও প্রকারের গোছানো আলোচনা আপনি ‘ফাযায়েলে জিহাদ’ কিতাবে পাবেন। পৃষ্ঠা: ৩-৩৪
এক ভাই সেটার লিংক দিয়েছেন:
তিন. কিতাল কাকে বলে?
উত্তর: কিতাল অর্থ- যুদ্ধ, লড়াই। কিতালের জন্য দু’টি পক্ষ থাকা জরুরী।
চার. কিতাল কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর: মুহতারাম ভাই, এ প্রশ্নের দ্বারা আপনার কি উদ্দেশ্য বুঝতে পারছি না। বুঝিয়ে বললে হয়তো উত্তর দেয়া যাবে। তবে এতটুকু বলতে পারি যে, কিতাল দুই প্রকার:
১. দ্বীনের জন্য কিতাল: এটা জিহাদ হবে। সওয়াব পাওয়া যাবে। নিহত হলে শহীদ হবে।
২. দুনিয়ার জন্য কিতাল: এটা ফাসাদ ও সন্ত্রাস হবে। গুনাহগার হবে। নিহত হলে বা অন্যকে হত্যা করলে জাহান্নামী হবে।
যেমন- এক হাদিসে হযরত আবু মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এসেছে-
“এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হাজির হয়ে আরজ করলো- কেউ যুদ্ধ করে গনিমতের লোভে, কেউ যুদ্ধ করে প্রশংসা লাভের জন্য আর কেউ যুদ্ধ করে তার বাহাদুরী ও বীরত্ব প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে। এদের কার যুদ্ধ আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদ) গণ্য হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন, আল্লাহর কালিমা বুলন্দীর জন্য যে যুদ্ধ করে, তারটাই কেবল আল্লাহর রাস্তায় গণ্য হবে।” (সহীহ বুখারী: ২৮১০, সহীহ মুসলিম: ৫০২৮)
অন্য হাদিসে হযরত আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
“দুই মুসলমান যদি (না-হক্ব) পরস্পর তরবারি নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে হত্যাকারী এবং নিহত ব্যক্তি উভয়ই জাহান্নামী হবে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! হত্যাকারী জাহান্নামী হওয়ার বিষয়টা তো বুঝতে পারছি, কিন্তু নিহত ব্যক্তি কেন জাহান্নামী হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন- কারণ, সেও তার প্রতিপক্ষকে হত্যার আকাংখায় ছিল।” (সহীহ বুখারী: ৬৮৭৫, সহীহ মুসলিম: ৭৪৩৪)
পাঁচ. জিহাদ ও কিতালের মাঝে পার্থক্য কি?
উত্তর: জিহাদ ব্যাপকার্থবোধক, যার মাঝে কিতাল এবং কিতাল সংশ্লিষ্ট সকল কাজ অন্তর্ভূক্ত। যেমন- মুজাহিদদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা, খানা-পিনার ব্যবস্থা করা, আহত মুজাহিদদের চিকিৎসা করা, জিহাদে অর্থ প্রদান, বুদ্ধি-পরামর্শ বা টেকনোলোজি দিয়ে মুজাহিদদের সহায়তা- ইত্যাদি সব কিছু জিহাদে শামিল।
আর কিতাল হল জিহাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ মারহালা। অতএব, জিহাদ শুধু কিতালের মাঝেই সীমাবদ্ধ না। কিতাল জিহাদের চূড়ান্ত পর্ব। এই মারহালায় পৌঁছতে এবং তা চালিয়ে নিতে অন্য যত কাজের প্রয়োজন সবগুলোই জিহাদ। তবে তা মনমতো হলে হবে না, আমীরের নির্দেশনায় হতে হবে।
মুহতারাম ভাই, আপাতত এতটুকুই উত্তর দিলাম। যদি আপনার প্রশ্নের অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে ব্যাখ্যা করে বললে ইনশাআল্লাহ উত্তর দেয়া যাবে।
ওয়াসসালাম।
১. জিহাদ কাকে বলে ?
২. জিহাদ কত প্রকার ও কি কি ?
৩. ক্বিতাল কাকে বলে ?
৪. ক্বিতাল কত প্রকার ও কি কি ?
৫. ২ টার মাঝে পার্থক্য কি কি ?
উত্তর:
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
মুহতারাম ভাই, কমেন্টে রিপ্লাই দিয়েছিলাম। তবে শুধু এতুটুকুতে হয়তো আপনার চাহিদা পূরণ হবে না। তাই রিপ্লাইটা সহ এখানে আরেকটু বিস্তারিত বলছি। এক. জিহাদ কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার উদ্দেশ্যে কাফের-মুরতাদদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করা কিংবা জান-মাল ও বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাতে কোন ধরণের সহায়তা করাকে জিহাদ বলে। আমীরের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী যে যেভাবে সহায়তা করবে সবই জিহাদ হবে। যে যতটুকু কুরবানী দেবে সে ততটুকু সওয়াব পাবে। আশাকরি বুঝতেই পারছেন- জিহাদ বলতে শুধু যুদ্ধ নয়; কাফেরদের বিরুদ্ধে জয় লাভের জন্য যুদ্ধ এবং আমীরের নির্দেশনাধীন যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট অন্য সকল কাজও জিহাদ।
দুই. জিহাদ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর: জিহাদ দুই প্রকার:
১. ইকদামি তথা আক্রমণাত্মক জিহাদ। কাফেরদের দেশ বিজয় করে সেখানে ইসলামী হুকুমত কায়েম করার জন্য এ জিহাদ করা হয়। এটি ফরযে কেফায়া।
২. দিফায়ী তথা প্রতিরক্ষামূলক। কাফেররা মুসলমানদের উপর বা তাদের কোন ভূমিতে আক্রমণ চালালে তা প্রতিহত করা ফরয। একে দিফায়ি জিহাদ বলে। এটি ফরযে আইন।
ফরযে কিফায়া ও ফরযে আইন কাকে বলে, ফরযে আইন কতজনের উপর হয়- কয়দিন আগে এ সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত পোস্ট দেয়া হয়েছিল। আপনি সেটা দেখতে পারেন।
লিংক: https://dawahilallah.com/showthread....2503;&%232472;
জিহাদের প্রকারের ব্যাপারে আপনি এই লেখাটা দেখতে পারেন। এখানে উভয় প্রকার জিহাদ (ইকদামি ও দিফায়ি) সম্পর্কে দলীলভিত্তিক আলোচনা আছে। লেখাটা বিজয়ে লেখা, তাই এখানে পোস্ট করতে পারছি না।
জিহাদের সংজ্ঞা ও প্রকারের গোছানো আলোচনা আপনি ‘ফাযায়েলে জিহাদ’ কিতাবে পাবেন। পৃষ্ঠা: ৩-৩৪
এক ভাই সেটার লিংক দিয়েছেন:
তিন. কিতাল কাকে বলে?
উত্তর: কিতাল অর্থ- যুদ্ধ, লড়াই। কিতালের জন্য দু’টি পক্ষ থাকা জরুরী।
চার. কিতাল কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর: মুহতারাম ভাই, এ প্রশ্নের দ্বারা আপনার কি উদ্দেশ্য বুঝতে পারছি না। বুঝিয়ে বললে হয়তো উত্তর দেয়া যাবে। তবে এতটুকু বলতে পারি যে, কিতাল দুই প্রকার:
১. দ্বীনের জন্য কিতাল: এটা জিহাদ হবে। সওয়াব পাওয়া যাবে। নিহত হলে শহীদ হবে।
২. দুনিয়ার জন্য কিতাল: এটা ফাসাদ ও সন্ত্রাস হবে। গুনাহগার হবে। নিহত হলে বা অন্যকে হত্যা করলে জাহান্নামী হবে।
যেমন- এক হাদিসে হযরত আবু মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এসেছে-
جاء رجل إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: الرجل يقاتل للمغنم، والرجل يقاتل للذكر، والرجل يقاتل ليرى مكانه، فمن في سبيل الله؟ قال: من قاتل لتكون كلمة الله هي العليا فهو في سبيل الله.
“এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হাজির হয়ে আরজ করলো- কেউ যুদ্ধ করে গনিমতের লোভে, কেউ যুদ্ধ করে প্রশংসা লাভের জন্য আর কেউ যুদ্ধ করে তার বাহাদুরী ও বীরত্ব প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে। এদের কার যুদ্ধ আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদ) গণ্য হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন, আল্লাহর কালিমা বুলন্দীর জন্য যে যুদ্ধ করে, তারটাই কেবল আল্লাহর রাস্তায় গণ্য হবে।” (সহীহ বুখারী: ২৮১০, সহীহ মুসলিম: ৫০২৮)
অন্য হাদিসে হযরত আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
إذا التقى المسلمان بسيفيهما فالقاتل والمقتول في النار. قلت: يا رسول الله! هذا القاتل، فما بال المقتول؟ قال: إنه كان حريصا على قتل صاحبه.
“দুই মুসলমান যদি (না-হক্ব) পরস্পর তরবারি নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে হত্যাকারী এবং নিহত ব্যক্তি উভয়ই জাহান্নামী হবে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! হত্যাকারী জাহান্নামী হওয়ার বিষয়টা তো বুঝতে পারছি, কিন্তু নিহত ব্যক্তি কেন জাহান্নামী হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন- কারণ, সেও তার প্রতিপক্ষকে হত্যার আকাংখায় ছিল।” (সহীহ বুখারী: ৬৮৭৫, সহীহ মুসলিম: ৭৪৩৪)
পাঁচ. জিহাদ ও কিতালের মাঝে পার্থক্য কি?
উত্তর: জিহাদ ব্যাপকার্থবোধক, যার মাঝে কিতাল এবং কিতাল সংশ্লিষ্ট সকল কাজ অন্তর্ভূক্ত। যেমন- মুজাহিদদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা, খানা-পিনার ব্যবস্থা করা, আহত মুজাহিদদের চিকিৎসা করা, জিহাদে অর্থ প্রদান, বুদ্ধি-পরামর্শ বা টেকনোলোজি দিয়ে মুজাহিদদের সহায়তা- ইত্যাদি সব কিছু জিহাদে শামিল।
আর কিতাল হল জিহাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ মারহালা। অতএব, জিহাদ শুধু কিতালের মাঝেই সীমাবদ্ধ না। কিতাল জিহাদের চূড়ান্ত পর্ব। এই মারহালায় পৌঁছতে এবং তা চালিয়ে নিতে অন্য যত কাজের প্রয়োজন সবগুলোই জিহাদ। তবে তা মনমতো হলে হবে না, আমীরের নির্দেশনায় হতে হবে।
মুহতারাম ভাই, আপাতত এতটুকুই উত্তর দিলাম। যদি আপনার প্রশ্নের অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে ব্যাখ্যা করে বললে ইনশাআল্লাহ উত্তর দেয়া যাবে।
ওয়াসসালাম।
Comment