Announcement

Collapse
No announcement yet.

অজ্ঞাত আমীরের হাতে বাইয়াত: ইমামের পরিচয় কতটুকু জরুরী?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • অজ্ঞাত আমীরের হাতে বাইয়াত: ইমামের পরিচয় কতটুকু জরুরী?

    এক ভাই জানতে চেয়েছিলেন,

    ‘আমরা অজ্ঞাত আমীরের হাতে বাইয়াত দিয়ে জিহাদের কাজ করি, এটা কতটুকু শরীয়তসম্মত’?



    প্রশ্নটা শুধু ভাইয়েরই নয়, আরো অনেকেরই হয়তো। বিশেষত যারা জিহাদের সাথে জড়িত না, তাদের অনেকের এ প্রশ্ন। আবার যারা মুজাহিদদের বাঁকা চোখে দেখেন, তারা প্রশ্নটা করে থাকেন মুজাহিদের আক্রমণ করার উদ্দেশ্য।


    প্রথমত এখানে মনে রাখা চাই যে, আমীর অজ্ঞাত- এই বাহানায় জিহাদ তরক করার কোন সুযোগ নেই। যেমন, ইমাম কে তা না জানার কারণে নামায মাফ হয়ে যায় না।


    দ্বিতীয়ত: জিহাদের ফরয আদায়ের জন্য কোন একটা হক জিহাদি জামাতে যোগ দেয়া আবশ্যক। সকল মুসলমানেরই এটা দায়িত্ব। জিহাদি জামাত খুঁজে বের করা সবার দায়িত্ব। আমীর অজ্ঞাত- এই বাহানায় জামাতে যোগ দেয়ার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার কোন সুযোগ নেই।


    তৃতীয়ত: আমীর অজ্ঞাত- কথাটাও মুশকিল। একেবারে যারা জিহাদ থেকে গাফেল ও বেখবর হয়ে বসে আছেন, তাদের কাছেই মূলত আমীর অজ্ঞাত। নতুবা যারা দুনিয়ার কিছুটা খবরাখবর রাখেন, মুসলিম উম্মাহর অবস্থা নিয়ে ফিকির করেন, জিহাদের সত্য তামান্না রাখেন, এর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেন- তাদের নিকট আমীর অজ্ঞাত থাকার কথা নয়। জিজ্ঞেস করি- মোল্লা উমরকে কে না চেনে? শায়খ উসামার ব্যাপারে কার জানা শুনা নেই? আলকায়েদার আমীর যে আইমান আযযাওয়াহিরি তা কার না জানা? আসেম উমার হাফিযাহুল্লাহ যে উপমহাদেশে আলকায়েদার আমীর কথাটা কে জানে না? একজন সচেতন মুসলমান তো পরের কথা; দ্বীনের দুশমনরাও তো তাদেরকে ভাল করে চেনে। এমনকি তাদের বয়ান-বক্তৃতা, লেখা-লেখি ও নির্দেশনাগুলোও তারা জানে। কিন্তু হায়! আমি এমনই দ্বীনসচেতন (!!) মুসলমান, আমি এদের কাউকেই চিনি না। জিহাদের ফরয দায়িত্ব থেকে একেবারেই যারা বেখবর, কিংবা জিহাদ থেকে একেবারেই বিমুখ- তারাই কেবল চেনে না। নতুবা বর্তমান দুনিয়ার অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদেরকে না চেনার কথা না।



    ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আমীর – বর্তমান আমীরুল মু’মিনীন হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা হাফিযাহুল্লাহ - যাকে আমরা চিনি না বলে বাহানা খোঁজছি, মূলত তিনি অপরিচিত কেউ নন। অতি গোপনে কোন অন্ধকার প্রকোষ্ঠে অজ্ঞাত ক’জন লোক কোন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আমীর নির্ধারণ করেনি। আফগানের আহলুল হল ওয়াল আকদ এর বাইয়াতের মাধ্যমে সকলের নিকট সুপরিচিত একজন বিশিষ্ট মুজাহিদ আলেমে দ্বীনকে আমীর নির্ধারণ করা হয়েছে। তাকে না চেনা মূলত তিনি অজ্ঞাত হওয়ার কারণে নয়, আমার নিজের বেখবরি আর গাফলতির কারণে।



    তদ্রূপ, ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের অধীনস্ত আন্তর্জাতিক জিহাদি সংগঠন আলকায়েদার আমীর শায়খ আইমান আযযাওয়াহিরি হাফিযাহুল্লাহও অপরিচিত কেউ নন। তিনি মিশরের সম্ভ্রান্ত এক পরিবারের উচ্চশিক্ষিত প্রসিদ্ধ একজন ব্যক্তি। তার রাজনৈতিক ও জিহাদি জীবন আরব বিশ্বে অতি পরিচিত। তিনি প্রসিদ্ধ জিহাদি সংগঠন জামাআতুল জিহাদের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। প্রকাশ্যে দ্বীন কায়েমের জন্য জিহাদ করেছেন। জেল খেটেছেন। নির্যাতন সহ্য করেছেন।



    আলকায়েদা উপমহাদেশের আমীর আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহও অপরিচিত কেউ নন। তিনি কোথায় কোথায়ে লেখাপড়া করেছেন, কোথায় কোথায় জিহাদ করেছেন সবই জানা। ইমারতে ইসলামিয়ার সিদ্ধান্তে স্পষ্টভাবেই তাকে আলকায়েদা উপমহাদেশের আমীর নির্ধারণ করা হয়েছে।



    এমনিভাবে যে দেশে যাকে আমীর নির্ধারণ করা হয়েছে, তারা প্রকৃতপক্ষে সবাই প্রসিদ্ধ ও পরিচিত। সুস্পষ্ট ও পরিষ্কার ঘোষণার মাধ্যমেই তাদের আমীর বানানো হয়েছে। এভাবে প্রসিদ্ধ ব্যক্তিবর্গকে আমীর নির্ধারণ করে জামাত গঠন করে তাদের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবৎ জিহাদের কাজও চলছে। এর চেয়ে বেশি আর কতটুকু জানার দরকার আছে?



    এ গেল বাহিরের লোকদের কথা। আর তানজীমে জড়িতরা তো তাদেরকে ভাল করেই চেনেন। তাদের বয়ান বক্তৃতা নিয়মিত শুনেন। নির্দেশনার দিলে সেগুলো সবার কাছে পৌঁছে যায়। মেনে চলার চেষ্টা করেন। প্রচারেও সচেষ্ট হন যথেষ্ট। প্রশ্ন করি- এর চেয়েও অতিরিক্ত চেনার আবশ্যকতা আছে কি?


    এখানে আরেকটি কথা বলে রাখি। সেটা হল, তানজীমের অধস্তন আমীর উমারাদের ব্যাপারে। আমরা সাধারণত যাদের নির্দেশনায় কাজ করে থাকি। যাদের ভায়া হয়ে কেন্দ্রীয় উমারাদের নির্দেশনা আমাদের পর্যন্ত পৌঁছায়। নিরাপত্তার স্বার্থে কাটআফ সিস্টেমের কাজ হওয়ায় তাদের সকলকে আমরা চিনি না। তবে এটা মূলত জিহাদের একটা কৌশল। জিহাদের স্বার্থে এ ধরণের কৌশল গ্রহণ করার অধিকার আছে। বরং অনেক ক্ষেত্রে জরুরী। কৌশল ও গোপনীয়তার ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুদ্ধনীতি দেখলে তাতে আর সংশয় থাকবে না ইনশাআল্লাহ।



    তবে এতটুকু কথা অবশ্যই সত্য যে, আমার উর্ধ্বতন প্রথম আমীর, তথা আমার যিনি সরাসরি আমীর, তাকে আমি ভাল করেই চিনি। কারণ, তার সাথে দীর্ঘ দিনের পরিচয়, জানা শুনা আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক না থাকলে তিনি আমাকে তানজীমে জড়িত করতেন না। দীর্ঘ পরিচয় ও যাচাই বাছাইযের পর যখন আমি যোগ্য ও নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত হয়েছি, তখনই আমাকে তানজীমে নেয়া হয়েছে। তদ্রূপ, আমার আমীরের ব্যাপারেও আমার পূর্ণ আস্থা আছে বলেই আমি তার কথায় তানজীমে যোগ দিয়েছি। এরপর যখন তিনি আমাকে নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং সেগুলো উর্ধ্বতন উমারাদের নির্দেশনা বলে জানাচ্ছেন এবং সেগুলো শরীয়ত বিরোধীও মনে হচ্ছে না- তখন তার কথামত চলতে আমার আর কোন বাধা নেই। তদ্রূপ, তিনি যদি আমাকে অন্য কোন আমীরের হাতে সোপর্দ করেন, তাহলেও আমি আশ্বস্ত যে, তিনি উপযুক্ত কারো হাতেই আমাকে সোপর্দ করেছেন। এরপর শরীয়তসম্মত সকল বিষয়ে তাকে মেনে চলতে আমার কোন সমস্যা নেই। জিজ্ঞেস করি, এর চেয়ে অতিরিক্ত আর কতটুকু জানার আবশ্যকীয়তা শরীয়তে আছে?



    মুহতারাম ভাইয়েরা, আমীর অজ্ঞাত- এটা মুলত তেমন কোন ফেক্টর-ই নয়। আমরা যতটুকু জানি, ততটুকু আমাদের কাজের জন্য যথেষ্ট। এর অতিরিক্ত না আমাদের কাজের জন্য প্রয়োজন আছে, আর না শরীয়তের পক্ষ থেকে বাধ্যবাধকতা আছে।



    মুহতারাম ভাইয়েরা, সাহাবায়ে কেরামের সীরতের দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারি- এর বেশি দরকার নেই। আপনি তাকিয়ে দেখুন, হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন মদীনায় খলিফা নির্ধারণ হলেন, তখন বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্যের কত জন তাকে চিনতো? আজ আমরা মোল্লা উমরকে, শায়খ উসামাকে, আইমান আযযাওয়াহিরিকে, আসেম উমরকে যতটুকু চিনি, হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এর চেয়ে বেশি কিংবা এই পরিমাণও হয়তো অনেকে জানতো না। শুধু নামটুকুই হয়তো জানতো। কিংবা কিছু গুণ-সিফাত হয়তো জানতো। কিন্তু হযরত উমরকে দেখেছে কত জন? সুদূর মদীনা থেকে সেই রোম, সেই পারস্যের, সেই ইরাকের সকল মুসলিম কি তাকে চিনতো? সবাই কি তাকে দেখেছে? কিন্তু বাইয়াত তো সকলেই দিয়েছে। তদ্রূপ, হযরত উমর ইসলামী বিশ্বের প্রান্তে প্রান্তে যে উমারাদের নিযুক্ত করেছিলেন, তাদের সকলকেই কি সকলে চিনতো? সকলেই কি তাদেরকে দেখেছে? কিন্তু আদেশ তো সকলেই পালন করেছে। পরবর্তী সকল খলিফার বেলায়ও একই ঘটনা। বরং ইসলামী সাম্রাজ্য যত বেশি বিস্তৃতি লাভ করেছে, খলিফা ও উমারাদের ব্যাপারে জানা শুনা ততই কঠিন হয়ে এসেছে।



    অধিকন্তু বর্তমান যামানায় তো মিডিয়ার আদলে আমরা আমীর উমারাদের দেখতে পাচ্ছি, তাদের কথা বার্তা শুনতে পারছি। কিন্তু সে যামানায় তো এটার চিন্তাও করা যেত না। এতদসত্ত্বেও বাইয়াত তো ঠিকই হয়েছে। আদেশও পালন করে চলেছে। এতএব, এর চেয়ে বেশি জানা শুনার প্রয়োজন নেই। সাধারণ মুজাহিদ ও মুসলমানদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট।



    হ্যাঁ, এখানে আরেকটা কথা আছে। যারা আহলুল হল ওয়াল আকদ; তথা যারা খলিফা নিয়োগ দেবেন, তাদের জন্য আবশ্যক খলিফার ব্যাপারে ভাল করে জানা শুনা। কেননা, একজন যোগ্য ইমাম নিয়োগ দিতে হলে যেসব সিফাত লক্ষ রাখতে হয়, সেগুলো ঠিকঠিক মতো আছে কি’না জানার জন্য ইমামকে চেনা জরুরী। তাদের ব্যাপারটা ভিন্ন। বাকি সকল মুসলমানের জন্য এর প্রয়োজন নেই।



    কাযি আবু ইয়ালা রহ. (৪৫৮ হি.) বলেন,
    ولا يجب على كافة الناس معرفة الإمام بعينه واسمه، إلا من هو من أهل الاختيار الذين تقوم بهم الحجة وتنعقد بهم الخلافة. ويجوز أن يسمي خليفة لمن عقد له الأمر. اهـ
    “সরাসরি ইমামের ব্যক্তি সত্তাকে চেনা বা তার নাম জানা সকলের জন্য আবশ্যক নয়। তবে যারা আহলুল হল ওয়াল আকদ, যারা দলীলরূপে গণ্য হবেন এবং যাদের (বাইয়াতের) মাধ্যমে খেলাফত সংগঠিত হবে- তাদের কথা ভিন্ন।” – আলআহকামুস সুলতানিয়্যাহ্: ১/২৭



    ইমাম মাওয়ারদি রহ. (৪৫০ হি.) বলেন,
    فإذا استقرت الخلافة لمن تقلدها إما بعهد أو اختيار لزم كافة الأمة أن يعرفوا إفضاء الخلافة إلى مستحقها بصفاته ولا يلزم أن يعرفوه بعينه واسمه إلا أهل الاختيار الذين تقوم بهم الحجة وببيعتهم تنعقد الخلافة .
    وقال سليمان بن جرير : واجب على الناس كلهم معرفة الإمام بعينه واسمه كما عليهم معرفة الله ومعرفة رسوله .
    والذي عليه جمهور الناس أن معرفة الإمام تلزم الكافة على الجملة دون التفصيل ، وليس على كل أحد أن يعرفه بعينه واسمه إلا عند النوازل التي تحوج إليه ، كما أن معرفة القضاة الذين تنعقد بهم الأحكام والفقهاء الذين يفتون في الحلال والحرام تلزم العامة على الجملة دون التفصيل إلا عند النوازل المحوجة إليهم ، ولو لزم كل واحد من الأمة أن يعرف الإمام بعينه واسمه للزمت الهجرة إليه ولما جاز تخلف الأباعد ولأفضى ذلك إلى خلو الأوطان ولصار من العرف خارجا وبالفساد عائدا ، وإذا لزمت معرفته على التفصيل الذي ذكرناه فعلى كافة الأمة تفويض الأمور العامة إليه من غير افتيات عليه ولا معارضة له ليقوم بما وكل إليه من وجوه المصالح وتدبير الأعمال. اهـ
    “পূর্ববর্তী খলিফার অসিয়তের মাধ্যমে কিংবা আহলুল হল ওয়াল আকদের নির্বাচনের মাধ্যমে যখন দায়িত্বগ্রহণকারী ইমামের জন্য খেলাফত সংগঠিত হবে, তখন উম্মাহর সকলের জন্য এতটুকু জানা আবশ্যক যে, উপযুক্ত ব্যক্তির হাতে খেলাফতের দায়িত্ব সমর্পিত হয়েছে। সরাসরি ইমামের ব্যক্তি সত্তাকে চেনা বা তার নাম জানা তাদের জন্য আবশ্যক নয়। তবে যারা আহলুল হল ওয়াল আকদ, যারা দলীলরূপে গণ্য হবেন এবং যাদের (বাইয়াতের) মাধ্যমে খেলাফত সংগঠিত হবে- তাদের কথা ভিন্ন।

    তবে সুলায়মান ইবনে জারির বলেন, আল্লাহকে এবং তার রাসূলকে চেনা যেমন আবশ্যক, সকলের জন্য সরাসরি ইমামের ব্যক্তি সত্তাকে চেনা এবং তার নাম জানাও তেমনই আবশ্যক।

    তবে জুমহুর আইম্মার মতামত হল, ইমামের পরিচয় বিস্তারিত জানা জরুরী নয়, এক রকম জানাই যথেষ্ট। সরাসরি ইমামের ব্যক্তি সত্তা বা তার নাম জানা প্রত্যেকের জন্য জরুরী নয়। তবে যদি বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যার ফলে চেনার দরকার পড়ে, তাহলে ভিন্ন কথা। যেমন- কাযি, যাদের মাধ্যমে বিচার আচারের ফায়সালা হয় এবং ফুকাহায়ে কেরাম, যারা হালাল হারামের ব্যাপারে ফতোয়া দিয়ে থাকেন: জনসাধারণের জন্য তাদের ব্যাপারে এক রকম জানা শুনা আবশ্যক, বিস্তারিত নয়। তবে যদি বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যার ফলে চেনার দরকার পড়ে, তাহলে ভিন্ন কথা।

    যদি উম্মাহর সকলের জন্য সরাসরি ইমামের ব্যক্তি সত্তাকে চেনা এবং তার নাম জানা জরুরী হতো, তাহলে (তাকে চেনার জন্য) হিজরত করার দরকার পড়তো। দূরবর্তীদের জন্য না যাওয়ার সুযোগ থাকতো না। ফলত সকল এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়তো। আর তখন এটা একতো স্বাভাবিক প্রচলনের পরিপন্থী হতো, অপর দিকে এর ফলে ফাসাদ ও বিশৃংখলার সৃষ্টি হতো।

    উপরোক্ত যে বিবরণ আমি দিয়েছি, সে অনুযায়ী ইমামের পরিচিতি লাভের পর, কোন ধরণের বিরোধিতা এবং স্বেচ্ছাচারিতা না দেখিয়ে প্রজাসাধারণের পরিচালনার সকল দায় দায়িত্ব তার হাতে সমর্পণ করা উম্মাহর সকলের অবশ্য কর্তব্য। যাতে তার প্রতি সমর্পিত মাসআলাহাত ও পরিচালনায় দায় দায়িত্ব তিনি আঞ্জাম দিতে পারেন।” – আলআহকামুস সুলতানিয়্যাহ্: ১/২৪




    লক্ষ করুন-
    “উম্মাহর সকলের জন্য এতটুকু জানা আবশ্যক যে, উপযুক্ত ব্যক্তির হাতে খেলাফতের দায়িত্ব সমর্পিত হয়েছে। সরাসরি ইমামের ব্যক্তি সত্তাকে চেনা বা তার নাম জানা তাদের জন্য আবশ্যক নয়।”


    ব্যস, এতটুকুই সাধারণ জনগণ ও সাধারণ মুজাহিদদের দায়িত্ব। এর বেশি নয়। না শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে প্রয়োজন আছে, না কাজের জন্য প্রয়োজন আছে।




    এখানে আরেকটি বিষয় মনে করিয়ে দেয়া মুনাসিব মনে করছি। সেটি হল, এ যে বাইয়াতের কথা গেল, সেটা হল খেলাফতের বাইয়াত। যে বাইয়াত ফরয। যে বাইয়াত না দিয়ে মারা গেলে জাহিলি মরা মরবে বলে হাদিসে ধমকি এসেছে। পক্ষান্তরে আমাদের বর্তমান যে বাইয়াত সেটা খেলাফতের বাইয়াত না। সেটা মূলত জিহাদের বাইয়াত। খেলাফতের বাইয়াতের বেলায়ই যখন এতটুকু যথেষ্ট, তখন জিহাদের বাইয়াতের জন্য এর চেয়ে বেশির কি আবশ্যকতা আছে?



    মোটকথা-
    আহলুল হল ওয়াল আকদের বাইয়াতের মাধ্যমে আফগানের সুপ্রসিদ্ধ আলেমে দ্বীনকে ইমারতে ইসলামিয়ার আমীর নির্ধারণ করা হয়েছে। ইমারতে ইসলামিয়ার অধীনে আলকায়েদার কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক আমীর নির্ধারণ করা হয়েছে। তাদের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবৎ জিহাদ চলে আসছে। আমি একজন সাধারণ মুসলমান বা প্রাথমিক মুজাহিদ হিসেবে আমার দায়িত্ব তানজীমে জড়িত হয়ে জিহাদের ফরয আঞ্জাম দেয়া। জামাত নেই, আমীর নেই, আমীর চিনি না- এগুলো সব নিতান্তই বাহানা।


    বি.দ্র

    এখানে আরো একটি বিষয় পরিষ্কার করে দেয়া জরুরী মনে হচ্ছে। সেটা হল, আমরা যখন বলছি, ‘আমীরের পরিচয় এর চেয়ে বেশি জরুরী নয়’- তখন এর অর্থ এই নয় যে, যে কেউ আলকায়েদার কথা বললে বা কোন জিহাদি তানজীমের কথা বললেই তাতে কোন তাহকীক ছাড়া যোগ দিয়ে দিতে হবে। বরং আমার উদ্দেশ্য, যখন আমি যথাযথ তাহকিকের পর তানজীমে যোগ দিতে চাচ্ছি বা যোগ দিয়েছি, তখন আর এর চেয়ে বেশি জানা জরুরী নয়। অতএব, তানজীমে যোগ দেয়ার আগে ভালভাবে তাহকিক করে নিতে হবে। তাহকিকের পর তানজীমে যোগ দেয়া হলে এরপর আর উমারাদের ব্যক্তিপরিচয়ের তেমন জরুরত নেই।

    কথাটা আরেকটু খুলে বলি: আলকায়েদা কোন ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত সদস্য বানায় না, যতক্ষণ না তার ব্যাপারে যাচাই বাছাইয়ের পর নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তিনি জিহাদের এবং তানজীমের সাথী হওয়ার উপযুক্ত। হ্যাঁ, কখনোও যদি বাছাইয়ে ভুল হয়ে যায় সেটা ভিন্ন কথা। অতএব, যে কেউ জিহাদের যোগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেই তানজীম তাকে সদসদ্য বানিয়ে নেবে না। তার ব্যাপারে যাচাই বাছাই করবে যথেষ্ট। এ গেল এক দিক।
    অপর দিকে যিনি তানজীমে যোগ দিতে চাচ্ছেন, তারও উচিৎ, যিনি তাকে জিহাদের দাওয়াত দিচ্ছেন, তার ব্যাপারে ভালভাবে তাহকিক করে নেয়া যে, তিনি আসলেই সত্য বলছেন কি’না? আসলেই তিনি হক জামাতের এবং তিনি যে তানজীমের কথা বলছেন, সেটার সদস্য কি’না? না’কি কোন গোয়েন্দা মুজাহিদের বেশ ধরে এসেছে? এসব বিষয় ভালভাবে যাচাইয়ের পরই কেবল তিনি তানজীমে যোগ দেবেন।

    উভয় পক্ষ থেকে এভাবে যাচাইয়ের পর যখন কোন ব্যক্তি তানজীমে যোগ দেয়ার উপযুক্ত বিবেচিত হবেন এবং তিনিও তানজীমে যোগ দিতে মনস্থির করবেন, তখন তার জন্য তানজীমের উমারাদের ব্যাপারে অতিরিক্ত জানার প্রয়োজন নেই। তানজীমের উমারাদের সুনির্দিষ্টভাবে চেনেন না- এটা যেন তার তানজীমে যোগ দেয়ার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। বরং মোটামুটি পরিচয়ই যথেষ্ট। আইমান আযযাওয়াহিরি, আসেম উমর, মোল্লা উমর, শায়খ উসামা সহ আরো যারা প্রসিদ্ধ, তাদের ব্যাপারে মোটামুটি জানা শুনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। না থাকলে যতটুকু প্রয়োজন তাদের ব্যাপারে জেনে নিতে পারে। এই মূহুর্তে তারা কোথায় আছেন- ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় প্রশ্নে যাওয়া উচিৎ নয়। এটার না শরয়ী দিক থেকে দরকার আছে, না কাজের জন্য দরকার আছে। এরপরও এসব বিষয় মোটামুটি সবারই জানা থাকে। যেমন, ইমারাতে ইসলামী আফগানিস্তানের প্রধান আমীরুল মু’মিনীন যিনি হন, তিনি সাধারণত আফগানেই থাকেন। এটা মোটামুটি সকলেরই জানা। এ ধরণের বিষয়াদি এর চেয়ে অতিরিক্ত জানার তেমন কোন দরকার নেই। কাজের জন্য দরকার না পড়লে এসব বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটির দরকার নেই এবং এগুলো না জানার অজুহাতে তানজীমে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকারও কোন হেতু নেই।

    যাহোক, এই আমার উদ্দেশ্য। অর্থাৎ- উভয় পক্ষ থেকে যাচাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে গেলে, উমারাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট বা বিস্তারিত জানা না থাকার কারণে তানজীমে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকার কোন হেতু নেই। তদ্রূপ, যোগ দেয়ার পর কাজের জন্য বিশেষ দরকার না পড়লে সেগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটিরও প্রয়োজন নেই। আমার উদ্দেশ্য এমনটাই। নতুবা, যে কেউ তানজীমে যোগ দিতে বললেই অন্ধভাবে তাহকিক ছাড়া তার কথা মেনে নিতে হবে- এটা আমার উদ্দেশ্য নয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সত্য সঠিক বুঝ দান করুন।


    ওয়াল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তাআলা আ’লাম


  • #2
    মাশাল্লআহ ভাই। অনেক উত্তম কথা বলেছেন। অনেক সুন্দর হয়েছে। জাঝাকাল্লাহ খাইরন।

    Comment


    • #3
      আল্লাহ পাক আপনাদের মেহনত কে কবুল করুন, এবং শহিদ হওয়ার তাওফিক দান করুন আমিন।
      আমি হতে চাই খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা এর মত রণকৌশল ও ওমর (রা এর মত কাফেরদের প্রতি কঠোর।

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ
        আল্লাহ্* আপনাকে কবুল করুক আমীন
        আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করার তৌফিক দান করুক।

        Comment


        • #5
          বে-নামাজীর বায়াত্তর ওজর।
          ফিরে এসো দ্বীনের পথে।

          Comment


          • #6
            আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় মহান আলেম ভাইকে অসংখ্য জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ আমার পক্ষ থেকে সকল মুজাহিদগণের পক্ষ থেকে এবং সকল মুসলনাদের পক্ষ থেকে ভাইকে উত্তম প্রতিদান করুন!! ভাল আলেম না থাকলে আমাদের কি দুর্দশাই না হত!! সুবহানাল্লাহ!!

            সম্মানিত ভাইকে শুকরিয়া জানাচ্ছি। ভাই আপনি আল্লাহর হুজ্জত পূর্ণ করে দিয়েছেন- যেন যে ধ্বংস হওয়ার, সে প্রমাণ সহই ধ্বংস হয়। আর যে বাচার সে প্রমাণ সহই বাচে। ليهلك من هلك عن بينة ويحي من حي عن بينة

            Comment


            • #7
              Originally posted by salahuddin aiubi View Post
              আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় মহান আলেম ভাইকে অসংখ্য জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ আমার পক্ষ থেকে সকল মুজাহিদগণের পক্ষ থেকে এবং সকল মুসলনাদের পক্ষ থেকে ভাইকে উত্তম প্রতিদান করুন!! ভাল আলেম না থাকলে আমাদের কি দুর্দশাই না হত!! সুবহানাল্লাহ!!

              সম্মানিত ভাইকে শুকরিয়া জানাচ্ছি। ভাই আপনি আল্লাহর হুজ্জত পূর্ণ করে দিয়েছেন- যেন যে ধ্বংস হওয়ার, সে প্রমাণ সহই ধ্বংস হয়। আর যে বাচার সে প্রমাণ সহই বাচে। ليهلك من هلك عن بينة ويحي من حي عن بينة

              আল্লাহ,আপনি কবুল করুন,আমিন।
              والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

              Comment


              • #8
                Originally posted by salahuddin aiubi View Post
                আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় মহান আলেম ভাইকে অসংখ্য জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ আমার পক্ষ থেকে সকল মুজাহিদগণের পক্ষ থেকে এবং সকল মুসলনাদের পক্ষ থেকে ভাইকে উত্তম প্রতিদান করুন!! ভাল আলেম না থাকলে আমাদের কি দুর্দশাই না হত!! সুবহানাল্লাহ!!

                সম্মানিত ভাইকে শুকরিয়া জানাচ্ছি। ভাই আপনি আল্লাহর হুজ্জত পূর্ণ করে দিয়েছেন- যেন যে ধ্বংস হওয়ার, সে প্রমাণ সহই ধ্বংস হয়। আর যে বাচার সে প্রমাণ সহই বাচে। ليهلك من هلك عن بينة ويحي من حي عن بينة
                vai aponader uttorer nomona amader mogdho koreche sotto bolte allah amader hefajot koron emon mufti theke ze kina ummahke proth brostho korche .

                Comment


                • #9
                  Originally posted by salahuddin aiubi View Post
                  আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় মহান আলেম ভাইকে অসংখ্য জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ আমার পক্ষ থেকে সকল মুজাহিদগণের পক্ষ থেকে এবং সকল মুসলনাদের পক্ষ থেকে ভাইকে উত্তম প্রতিদান করুন!! ভাল আলেম না থাকলে আমাদের কি দুর্দশাই না হত!! সুবহানাল্লাহ!!

                  সম্মানিত ভাইকে শুকরিয়া জানাচ্ছি। ভাই আপনি আল্লাহর হুজ্জত পূর্ণ করে দিয়েছেন- যেন যে ধ্বংস হওয়ার, সে প্রমাণ সহই ধ্বংস হয়। আর যে বাচার সে প্রমাণ সহই বাচে। ليهلك من هلك عن بينة ويحي من حي عن بينة
                  বানানের প্রতি আমাদের খেয়াল করা উচিত কি লিখেছেন আপনি নিজে পরে দেখেছেন কি? দেখুন কি লিখছেন

                  Comment


                  • #10
                    আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ কবুল করুন।

                    আল্লাহর দ্বীনের জন্য আরো বেশী বেশী খেদমত নসীব করুন।
                    কথা ও কাজের পূর্বে ইলম

                    Comment


                    • #11
                      আলহামদুলিল্লাহ।
                      আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করুন,আমিন।

                      Comment


                      • #12
                        প্রিয় শায়েখ,
                        জিহাদী জামাতকে বায়াত দেওয়া ফরজ, ওয়াজিব না মুস্তাহাব। ব্যাপারটা দলীল সহকারে বললে ভাল হত।

                        Comment


                        • #13
                          জাযাকাল্লাহু খাইরান, অনেক ফায়দা হলো, বিষয়টা আরো স্পষ্ট হলো, এই প্রশ্নের জাওয়াব দিতে দিতে কাহিল! আজকে পূর্ণ একটি আরটিক্যাল পেলাম আলহামদুলিল্লাহ।
                          দ্বীনকে আপন করে ভালোবেসেছে যারা,
                          জীবনের বিনিময়ে জান্নাত কিনেছে তারা।

                          Comment


                          • #14
                            মাশা আল্লাহ। আপনি উত্তম আলোচনা করেছেন।
                            জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা।

                            Comment


                            • #15
                              মহান আল্লাহ তা‘আলা আপনার ইলমে আরো বারাকাহ দান করুন এবং উম্মাতের আরো বেশী করে খেদমতের তাওফিক দিন। শাহাদাতের জীবন দান করুন।...আমীন
                              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                              Comment

                              Working...
                              X