Announcement

Collapse
No announcement yet.

দারুল হরবে জুমআ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দারুল হরবে জুমআ


    এক ভাই জানতে চেয়েছেন, হানাফি মাযহাব মতে জুমআর নামায সহীহ হওয়ার জন্য ইমাম বা তার নায়েব থাকা শর্ত। আমাদের উপমহাদেশ তো দারুল হরব। ইমাম নেই, নায়েবও নেই। তাহলে আমরা জুমআ আদায় করছি কোন দলীলের ভিতিতে?


    উত্তর:
    জুমআর জন্য ইমাম বা তার নায়েব থাকা শর্ত- কথাটা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এখানে ব্যাখ্যা আছে। মূল কথা হলো, জুমআ আল্লাহ তাআলা সকলের উপর ফরয করেছেন। ইমাম থাকার কোন শর্ত কোথাও নেই। তবে ইমাম থাকলে ইমামের হক হিসেবে তাকে অগ্রগামী রাখতে হবে। ইমাম না থাকলে নিজেদের দায়িত্ব নিজেদেরকেই আদায় করতে হবে। ফিকহের ইবারত থেকে বিষয়টা ইনশাআল্লাহ পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি।


    ইমাম মুহাম্মাদ রহ. (১৮৯হি.) আবু হানিফা রহ. এর বক্তব্য বর্ণনা করেন,
    لا تكون جمعة إلا بإمام. اهـ
    “ইমাম ছাড়া জুমআ হবে না।”- কিতাবুল আছল: ১/৩৬০

    মুহাম্মাদ রহ. আরোও বলেন,
    قلت: أرأيت رجلا صلى بالناس يوم الجمعة ركعتين من غير أن يأمره الأمير؟ قال: لا يجزيهم، وعليهم أن يستقبلوا الظهر. قلت فإن كان الأمير أمره بذلك أو كان خليفة الأمير أو صاحب شرطة أو القاضي؟ قال تجزيهم صلاتهم. اهـ
    “আমি আবু হানিফা রহ. কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার কি অভিমত, যদি কোন ব্যক্তি আমীরের আদেশ ছাড়াই লোকদের নিয়ে জুমআর দিন দুই রাকাআত পড়ে নেয়? তিনি জওয়াব দিলেন, ‘তাদের নামায হবে না। তাদেরকে নতুন করে জোহর পড়তে হবে।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, যদি আমীর তাকে নির্দেশ দিয়ে থাকে, কিংবা ঐ ব্যক্তি (অর্থাৎ যে লোকদের নিয়ে জুমআ পড়েছে) সে আমীরের নায়েব, আইনশৃংখলারক্ষীবাহিনীর প্রধান কিংবা কাযি হয়- তাহলে আপনার কি অভিমত? তিনি জওয়াব দিলেন, তাহলে তাদের নামায হয়ে যাবে।”- কিতাবুল আছল: ১/৩৬০


    ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর বক্তব্য সুস্পষ্ট যে, জুমআ সহী হওয়ার জন্য হয়তো স্বয়ং ইমাম লাগবে, নতুবা তার আদেশকৃত কিংবা নিয়োগকৃত ব্যক্তি লাগবে।


    আরোও দেখুন:
    - মুখতাসারুত তহাবী [ইমাম তহাবী রহ. (৩২১হি.): পৃ ৩৪
    - মুখতাসারুল কুদূরী [ইমাম কুদূরী রহ. (৪২৮হি.): পৃ. ৫১
    - মাবসূতে সারাখসী [শামসুল আইম্মা সারাখসী রহ. (৪৯০হি.)]: ২/৪১


    এ বিধান হলো, যখন ইমাম থাকবেন। পক্ষান্তরে যদি কোন কারণে ইমাম না থাকেন– যেমন মুসলমানদের পারস্পরিক ফিতনা ও মারামারি কাটাকাটির কারণে কিংবা দেশ কাফেরদের করতলগত হয়ে যাওয়ার কারণে- তাহলে জুমআর দায়িত্ব মুসলমানদের নিজেদের উপর বর্তাবে। তাদের জন্য আবশ্যক, জুমআর জন্য ইমাম নিয়োগ দিয়ে জুমআ আদায় করা। পাশাপাশি ইমাম নির্ধারণের প্রচেষ্টা চালানো।


    তদ্রূপ ইমাম থাকাবস্থায় যদি ইমাম জুমআ আদায় করতে নিষেধ করেন, তাহলে তার কথা মানা যাবে না। জুমআর সময় হয়ে গেলে মুসলমানরা নিজেরা একজনকে ইমাম নির্ধারণ করে জুমআ আদায় করে নেবে।


    ইবনে আবিদিন রহ. (১২৫২ হি.) বলেন,
    لو مات الوالي أو لم يحضر لفتنة ولم يوجد أحد ممن له حق إقامة الجمعة نصب العامة لهم خطيبا للضرورة كما سيأتي مع أنه لا أمير ولا قاضي ثمة أصلا وبهذا ظهر جهل من يقول لا تصح الجمعة في أيام الفتنة مع أنها تصح في البلاد التي استولى عليها الكفار. اهـ
    “যদি শাসনকর্তা মৃত্যুবরণ করেন অথবা ফিতনার কারণে উপস্থিত না হতে পারেন এবং এমন কাউকে না পাওয়া যায়, যার জুমআ কায়েমের অধিকার রয়েছে, তাহলে জরূরতের কারণে সাধারণ মানুষ নিজেদের জন্য একজন খতীব নির্ধারণ করে নেবে। ... এ থেকে ঐ ব্যক্তির অজ্ঞতা স্পষ্ট হয়ে গেছে, যে বলে, ফেতনার যামানায় জুমআ সহীহ হবে না, অথচ ঐ সমস্ত দেশেও জুমআ সহীহ, যেগুলো কাফেররা দখল করে নিয়েছে।”- রদ্দুল মুহতার: ২/১৩৮


    সামনে গিয়ে বলেন,
    فلو الولاة كفارا يجوز للمسلمين إقامة الجمعة ويصير القاضي قاضيا بتراضي المسلمين ويجب عليهم أن يلتمسوا واليا مسلما. اهـ
    “যদি প্রশাসকরা কাফের হয় তাহলেও মুসলমানদের জন্য জুমআ কায়েম করা জায়েয আছে। এক্ষেত্রে মুসলমানদের সন্তুষ্টিক্রমে নিয়োগপ্রাপ্ত কাযী শরঈ কাযী গণ্য হবেন। তবে মুসলমানদের উপর ফরয, একজন মুসলমান প্রশাসক তালাশ করা।” - রদ্দুল মুহতার: ২/১৪৪

    আরো বলেন,
    لو منع السلطان أهل مصر أن يجمعوا إضرارا وتعنتا فلهم أن يجمعوا على رجل يصلي بهم الجمعة. اهـ
    “সুলতান যদি কেবল একগুঁয়েমি করে কোন এলাকার লোকজনকে জুমআ আদায়ে বাধা দেন, আর এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য তাদের ক্ষতিসাধন ব্যতীত কিছু নয়, তাহলে তারা নিজেরা সম্মতিক্রমে একজনকে জুমআর জন্য নির্ধারণ করে নিয়ে তার পেছনে জুমআ পড়তে পারবে।”- রদ্দুল মুহতার: ২/১৪৩


    সারকথা দাঁড়াল,
    - হানাফি মাযহাব মতে ইমাম থাকলে ইমাম বা নায়েব জুমআ পড়াবেন। কোন কারণে ইমাম না থাকলেও জুমআ বাদ যাবে না। মুসলমানরা নিজেরা একজনকে ইমাম বানিয়ে জুমআ আদায় করবে। যেসব রাষ্ট্র কাফেরদের দখলে সেগুলোতেও জুমআর ইমাম নিয়োগ দিয়ে জুমআ আদায় করতে হবে।
    - ইমাম থাকাবস্থায় যদি কোন শরয়ী উজর ব্যতীত তিনি জু্মআ আদায় করতে নিষেধ করেন, তাহলে তার আনুগত্য করা যাবে না। সাধারণ জনগণ নিজেরা জুমআর ইমাম নিয়োগ দিয়ে জুমআ আদায় করে নেবে।


    বি.দ্র.
    জিহাদও জুমআর মতো। যদি ইমাম থাকেন, তাহলে তিনি জিহাদের ডাক দেবেন। ইমাম যদি জিহাদের ডাক না দেন বা জিহাদে যেতে বাধা দেন, তাহলে জনসাধারণ নিজেরা জিহাদের আমীর ঠিক করে জিহাদ করবে। আর যখন ইমাম না থাকবে, তখনও জিহাদ মাফ নেই। জিহাদের আমীর ঠিক করে শক্তি অর্জন করত জিহাদ করতে হবে। ওয়াল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআলা আ’লাম।
    *

  • #2
    [SIZE=3]ভাই! আমি আপনাকে দোয়া ব্যতিত অন্য কিছুই দিতে পারিনা।
    কাজেই, দোয়াই দিচ্ছি:
    আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে শহীদদের কাতারে একত্র করুন, আমীন।[/S
    IZE]
    যোদ্ধা হব, যুদ্ধ করব,
    ক্বিতালের জন্য দাওয়াত দিব, ইনশাআল্লাহ।

    Comment


    • #3
      আল্লাহ আপনার এই খেদমতের প্রতিদান অবশ্যই দিবেন ইন্সা-আল্লাহ । আমরা এমনটাই ধারনা রাখি ।

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহু খইরন আহসানাল জাযা... ভাইজান অনেক গুরুত্ব পুর্ণ পোষ্ট এটি।
        আর ভাই আরেকটি প্রশ্নের ও উত্তর কামনা করছি যে... হানাফি মাজহাব মতে এক শহরে একাধিক জামাত ঠিকনা, তাহলে আমারা যে এক এলাকায় 4/5টা জামাতে জুমা পড়ি তা কিভাবে...???
        হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

        Comment


        • #5
          Originally posted by যোদ্ধা হব View Post
          [SIZE=3]ভাই! আমি আপনাকে দোয়া ব্যতিত অন্য কিছুই দিতে পারিনা।
          কাজেই, দোয়াই দিচ্ছি:
          আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে শহীদদের কাতারে একত্র করুন, আমীন।[/S
          IZE]
          আল্লাহু আকবার কী বলবো!!! আমারও একই অভিব্যক্তি। আল্লাহ ভাইয়ের ফুয়ুজাত আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে হাসিল করার তাওফিক দান করুন!!

          Comment


          • #6
            আমি মডারেটর ভাইদেরকে অনুরোধ করছি যে, ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের সমস্ত লেখাগুলো অমূল্য রত্ন। এগুলো আমাদের অনেক বড় সম্পদ। আমাদের সম্বল। আমাদের পুজি। তাই এগুলো বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হোক। যাতে যে কেউ বিভিন্ন প্রয়োজনের সময় এগুলোর কোনটা চাইলে ভাইয়েরা সহজেই দিতে পারেন। আল্লাহ আমাদেরকে ভাইয়ের পরিপূর্ণ কল্যাণ গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন!! ভাইকে নেক হায়াত দান করুন!! ভাইয়ের লেখাগুলো পড়ে আমার বড় আকাঙ্খা জাগে, আমি যদি ভাইয়ের সাথে দেখা করে ভাইয়ের থেকে কিছু হাসিল করতে পারতাম। আল্লাহ যেন সেই তাওফিক দান করেন!! আল্লাহ কবুল করুন!!

            Comment


            • #7
              Originally posted by salahuddin aiubi View Post
              আমি মডারেটর ভাইদেরকে অনুরোধ করছি যে, ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের সমস্ত লেখাগুলো অমূল্য রত্ন। এগুলো আমাদের অনেক বড় সম্পদ। আমাদের সম্বল। আমাদের পুজি। তাই এগুলো বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হোক। যাতে যে কেউ বিভিন্ন প্রয়োজনের সময় এগুলোর কোনটা চাইলে ভাইয়েরা সহজেই দিতে পারেন। আল্লাহ আমাদেরকে ভাইয়ের পরিপূর্ণ কল্যাণ গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন!! ভাইকে নেক হায়াত দান করুন!! ভাইয়ের লেখাগুলো পড়ে আমার বড় আকাঙ্খা জাগে, আমি যদি ভাইয়ের সাথে দেখা করে ভাইয়ের থেকে কিছু হাসিল করতে পারতাম। আল্লাহ যেন সেই তাওফিক দান করেন!! আল্লাহ কবুল করুন!!
              আলহামদুলিল্লাহ, সুন্দর বলেছেন ভাই। আল্লাহ ভাইকে হেফাজত রাখুন...

              তবে আমাদের সকলের খেয়াল রাখা দরকার যে, যে কোন ভাই এর সামনে তার প্রশংসা করা মানে প্রকারান্তরে তার ক্ষতি করা।
              যে সকল মাশোয়ারা আলাদাভাবে ভাই এর অগোচরে দেয়া যায় - সেইগুলো আলাদা দেয়াই ভাল।

              আল্লাহ আমাদের সবার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সহজ করুন।
              কথা ও কাজের পূর্বে ইলম

              Comment


              • #8
                তালিবুল ইলম ভাই সঠিক বলেছেন। কারও লেখা পড়ে উপকৃত হলে শুকরিয়া জানানো যায়। দোয়া করা যায়। এটা ভিন্ন জিনিস। কিন্তু সামনা সামনি প্রশংসা না করাই ভাল।

                Comment


                • #9
                  ইলম ও জিহাদ ভাইকে অনুরোধ করবো আপনি/ আপনারা একটি মিডিয়া খুলতে পারেন, তাহলে আমরা বেশি উপকৃত হতে পারবো। তখন উত্তর দেওয়া হবে মিডিয়া আইডি থেকে যার ওজন বেড়ে যাবে। আপনি/ আপনারা কয়েকজন মিলে একটি মিডিয়া আইডি খুলতে পারেন!এর দ্বারা প্রশ্নের উত্তরগুলো গ্রহণ যোগ্য হওয়ার মান বেড়ে যাবে।
                  আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
                  আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

                  Comment


                  • #10
                    মাশা-আল্লাহ!
                    আল্লাহ সুবঃ আপনার 'ইলমে বারাকাহ দান করুন,আমীন।
                    আমার নিদ্রা এক রক্তাক্ত প্রান্তরে,
                    জাগরণ এক সবুজ পাখি'র অন্তরে।
                    বিইযনিল্লাহ!

                    Comment


                    • #11
                      চমৎকার সংক্ষিপ্ত তাহকীক। মহান রবের কাছে কায়মনোবাক্যে ফরিয়াদ করছি ,আল্লাহ যেনো ভাইয়ের বংশ-ধারায় তাঁর নত মুহাক্কিক আলেমের ছিলছিলাহ জারি রাখে।
                      অবিরাম করাঘাতে বদ্ধ দরজাও খুলে যায়।

                      Comment


                      • #12
                        ফোরামে অনেক আগে শায়খ আহমাদ আল হিন্দি ভাই কুফরে আমালি নামে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন। কোন ভাই এর কাছে থাকলে দেওয়ার অনূরোধ রইল। এছাড়া শায়খের অন্যান্য পোস্ট ও যদি কারো সংরক্ষনে থাকে সেগুলিও দেওয়ার অনুরোধ রইল

                        Comment


                        • #13
                          আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে শহীদ হিসেবে কবুল করুক। আমিন

                          Comment


                          • #14
                            ভাই,আমরা নিজেরাও চেষ্টা করি ওনাদের মত হবার,এর পর নিজ উদ্যগে মিডিয়া খুলে ভাইদেরকে জানালে তানজীমের জন্য অনেক বড় খেদমত হবে ইনশা আল্লহ।
                            "সিদ্ধান্ত গ্রহণে একবার কাপুরুষতা ময়দানে পঞ্চাশবার কাপুরুষতার চেয়েও মারাত্মক" (মাকদিসী)

                            Comment


                            • #15
                              মুহতারাম ভাই! কারাগারের বন্দী ভাইয়েরা কি জুম'আ পড়তে পারবে??
                              বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
                              কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

                              Comment

                              Working...
                              X