আত্মঘাতী হামলা কি বৈধ?
প্রশ্নঃ
একটি মাসিক পত্রিকায় জানুয়ারী ‘০৪ সংখ্যায় ‘ সাওয়াল- জওয়াব ‘ শীর্ষক শিরোনামে ‘ আত্নঘাতী বোমায় নিহত ব্যক্তির হুকুম প্রসঙ্গে ‘
রাফিয়া খাতুন, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, প্রশ্ন করেন-
“আমরা জানি, আত্নহত্যাকারীর পরিণাম জাহান্নাম। কিন্তু বর্তমানে অনেক দেশে মুজাহিদগণ ইহুদী, খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে গিয়ে নিজের দেহে বোমা স্থাপন করে নিজেকে মানব বোমায় পরিণত করে মার যাচ্ছেন। এরুপ আত্নঘাতী বোমা হামলা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয আছে কি ? আত্নঘাতী বোমায় নিহত ব্যক্তিটি কি আত্নহত্যাকারী গণ্য হবে ?”
জবাব দেয়া হয়েছে, ” না, এরুপ আত্নঘাতী বোমায় প্রাণ উৎসর্গ শরীয়তে জায়েয নয়। তা সম্পূর্ণ হারাম। আত্নঘাতী বোমায় নিহত ব্যক্তি অবশ্যই আত্নহত্যাকারী গণ্য হবে। “
প্রশ্ন হলো, উক্ত মাসিকের এই জবাব কি সঠিক ?
শত্রুর বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলা আর আত্নহত্যা কি এক ?
যারা ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে অত্যাচারী কাফের, মুশরিক, ইহুদীদের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলার পথ নিচ্ছে, তারা কি আসলেই জাহান্নামের পথে পা বাড়াচ্ছে ?
এ ব্যাপারে মাননীয় মুফতী সাহেবের মূল্যায়ন কী ? বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তরঃ ‘আত্নহত্যা ‘ আর ‘ আত্নঘাতী হামলা ‘ এদু’টি বিষয় শাব্দিকভাবে যেমন দু’রকম, তেমনি অর্থ ও উদ্দেশ্যের দিক থেকেও সম্পূর্ণ ভিন্ন। দু’টির শরঈ হুকুমও বিপরীতমুখী।
আত্নহত্যা হলো, জীবনের উপর অতিষ্ঠ হয়ে ( অথবা কোন কারণ ছাড়াই ) উদ্দেশ্যহীনভাবে নিজের জন্য মৃত্যুকে বেছে নেয়া।
পক্ষান্তরে ‘ আত্নঘাতী হামলা ‘ হচ্ছে শত্রু পক্ষকে ঘায়েল করার এমন একটি কৌশল, যা অবলম্বন করলে হামলাকারীর জীবনও হুমকীর মুখে পতিত হয় এবং তার মৃত্যুও অনিবার্য হয়ে ওঠে।
প্রথমেই জেনে রাখা ভালো যে, আত্নঘাতী (আত্মোৎসর্গ) বোমা হামলার বিষয়টি নতুন হলেও আত্নঘাতী (আত্মোৎসর্গ) হামলার কৌশল কিন্তু নতুন নয়। বরং ইসলামের শুরুর যুগেও এর নযির রয়েছে।
কুরআনুল কারীমের নির্ভরযোগ্য তাফসীরসমূহ, এ বিষয়ের হাদীস এবং ফিকহ ও ফাতাওয়া গ্রন্থগুলোর সংশ্লিষ্ট অংশ যারা গভীরভাবে অধ্যায়ন করেছেন, তাদের ভালোভাবই জানা থাকবে যে,
ইসলামের শত্রু পক্ষকে ঘায়েল করা, শত্রু শিবিরে আতংক সৃষ্টি করা অথবা অন্য কোনভাবে মুসলমানদের বিশেষ উপকার সাধনের লক্ষে মৃত্যু অনীবার্য জেনেও এককভাবে শত্রুর উপর হামলা করে স্বীয় জীবন বিসর্জন দেয়া শুধু জায়েযই নয় বরং বিরাট ফজিলত ও সওয়াবের কাজও বটে।
এ বিষয়ের দলিল থেকে কয়েকটি পেশ করা হচ্ছে –
সূরা বাকারার ১৯৫ নং আয়াতের তাফসীরে ইমাম বুখারী সাহাবী হযরত হুযাইফা (রাঃ) এর বর্ণনা উল্লেখ করেছেন-
তিনি বলেছেন, আয়াতটি সদকার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। ইমাম কুরতুবী বলেন, আল ইয়াযিদ ইবনে আবু হাবীব আসলামের মাধ্যমে আবু ইমরান থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আমরা কুসতুনতানিয়ার ( ইস্তাম্বুল ) যুদ্ধে ছিলাম। আবদুর রহমান ইবনুল ওয়ালীদ দলের আমীর ছিলেন। রোম সেনাদল ( শত্রু পক্ষ ) শহরের দেয়ালকে পিছনে রেখে প্রস্তুত ছিলো।
এরই মধ্যে একজন মুসলমান শত্রুপক্ষের উপর একা অতর্কিত হামলা করে বসলো। তা দেখে কিছু লোক বলে উঠলো, হায় হায় ! লোকটি কি করলো ? লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ! নিজেকে ধ্বংসে পতিত করলো ( অর্থাৎ আত্নহত্যা করলো ) ?
তখন সাহাবী হযরত আবু আইউব আনসারী (রাঃ) বলেন, সুবাহানাল্লাহ ! … ( তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে পতিত করো না )। এ আয়াতটি আমাদের আনসারদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে।
( তিনি বলেন, ) ধ্বংসের মুখে নিজেকে নিক্ষেপ করার মানে হলো, ধন-সম্পদ নিয়ে ব্যস্ত থাকা ও জিহাদ না করা। ( তাফসীরুল কুরতুবী – ২/ ৩৬১ )
উপরোক্ত রেওয়ায়েতটি তিরমিযী শরীফেও বর্ণিত হয়েছে। এ রেওয়ায়েতে একজন মুজাহিদের একটি শত্রুপক্ষের ভিতর হামলা করতে যাওয়াকে যেখানে তার কিছু সহযোদ্ধা আত্নঘাতী হামলা মনে করে চিন্তিত হয়েছেন, তার জবাবে প্রখ্যাত সাহাবী আবু আইউব আনসারী সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এটিও জিহাদের অংশ।
ইয়ামামার যুদ্ধে হযরত আনাস ইবনে মালেকের ভাই বারা ইবনে মালেক তাঁর সহযোদ্ধাদের বললেন, আমাকে তোমরা চামড়ার থলেতে ঢুকিয়ে শত্রু দলের ভিতরে ফেলে আসো, তারা তাই করলো। হযরত বার একাই তাদের সাথে লড়াই করলেন এবং দূর্গের গেট খুলে দিলেন।
( তারীখে তাবারী ও তাফসীরে কুরতুবী – ২ /৩৬৪ )
তাফসীরে কুরতুবীতে এই মাসআলাটি এভাবে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি নিশ্চিত হয় যে,
শত্রু পক্ষের উপর হামলা করতে গেলে সে নিহত হবে, কিন্তু এর দ্বারা শত্রু ক্ষতিগ্রস্ত হবে অথবা তাদের মধ্যে এমন প্রভাব পড়বে, যার দ্বারা মুসলমানগণ উপকৃত হবে-
একথা ভেবে যদি সে দুশমনের দলের ভিতর একাই হামলা করে বসে, তবুও তা জায়েয।
(ইমাম কুরতুবী এ বক্তব্যের দলীল স্বরুপ বলেন) বর্ণিত আছে যে,
“এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন,
আমি যদি আল্লাহর রাস্তায় সওয়াবের উদ্দেশ্যে সবর করে নিহত হই, তবে আমার হুকুম কি হবে ?
রাসূলু্ল্লাহ (সাঃ) জবাবে বললেন, ‘ এর বিনিময়ে তুমি জান্নাত পাবে। ‘
এ কথা শুনে লোকটি শত্রুদলের ভিতরে ঢুকে পড়লেন এবং শহীদ হয়ে গেলেন।”
( তাফসীরুল কুরতুবী – ২ /৩৬৪ )
ইমাম আবু হানিফার প্রখ্যাত শাগরেদ, হানাফী মাযহাবের মৌলিক ছয়টি কিতাবের রচয়িতা ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান ( রহঃ ) তাঁর কিতাব আস-সিয়ারুল কাবীরে এ ধরনের হামলার সুস্পষ্ট অনুমোদন দিয়েছেন।
(আহকামুল কুরআন, ১১/ ২৯০)
“উপমহাদেশের প্রখ্যাত ফকীহ ও মুহাদ্দিস সুবিখ্যাত হাদীস ভাষা ই’লাউসনুমানের রচয়িতা আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী ( রহঃ ) তাঁর কিতাবে (আহকামুল কুরআন ) বহু আয়াত, হাদীস এবং ইমামদের বক্তব্য উল্লেখ করে এ ধরনের হামলা (মুসলমানদের উপকারের স্বার্থে আত্নঘাতী হামলা ) কে শুধু জায়েযই বলেননি বরং হামলাকারী শাহাদাতের সুউচ্চ মরতবা পাবেন এ কথাও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন”
(দ্রষ্টব্যঃ আহকামুল কুরআন – ১১ / ২৯০- ২৯২)
প্রশ্নোত্তরের এ সংক্ষিপ্ত কলেবরে এর চেয়ে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব নয়। আল্লাহ তা’য়ালা সকলকে সহীহ দ্বীন বুঝার ও বলার তাওফীক দিন।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
উত্তর প্রদানঃ
মুফতী আবুল হাসান মুহাম্মদ আবদুল্লাহ,
মুহতামিম,
মারকাজুদ্ দাওয়াতিল ইসলামিয়া ( উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ) ঢাকা, বাংলাদেশ।
প্রশ্নঃ
একটি মাসিক পত্রিকায় জানুয়ারী ‘০৪ সংখ্যায় ‘ সাওয়াল- জওয়াব ‘ শীর্ষক শিরোনামে ‘ আত্নঘাতী বোমায় নিহত ব্যক্তির হুকুম প্রসঙ্গে ‘
রাফিয়া খাতুন, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, প্রশ্ন করেন-
“আমরা জানি, আত্নহত্যাকারীর পরিণাম জাহান্নাম। কিন্তু বর্তমানে অনেক দেশে মুজাহিদগণ ইহুদী, খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে গিয়ে নিজের দেহে বোমা স্থাপন করে নিজেকে মানব বোমায় পরিণত করে মার যাচ্ছেন। এরুপ আত্নঘাতী বোমা হামলা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয আছে কি ? আত্নঘাতী বোমায় নিহত ব্যক্তিটি কি আত্নহত্যাকারী গণ্য হবে ?”
জবাব দেয়া হয়েছে, ” না, এরুপ আত্নঘাতী বোমায় প্রাণ উৎসর্গ শরীয়তে জায়েয নয়। তা সম্পূর্ণ হারাম। আত্নঘাতী বোমায় নিহত ব্যক্তি অবশ্যই আত্নহত্যাকারী গণ্য হবে। “
প্রশ্ন হলো, উক্ত মাসিকের এই জবাব কি সঠিক ?
শত্রুর বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলা আর আত্নহত্যা কি এক ?
যারা ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে অত্যাচারী কাফের, মুশরিক, ইহুদীদের বিরুদ্ধে আত্নঘাতী হামলার পথ নিচ্ছে, তারা কি আসলেই জাহান্নামের পথে পা বাড়াচ্ছে ?
এ ব্যাপারে মাননীয় মুফতী সাহেবের মূল্যায়ন কী ? বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তরঃ ‘আত্নহত্যা ‘ আর ‘ আত্নঘাতী হামলা ‘ এদু’টি বিষয় শাব্দিকভাবে যেমন দু’রকম, তেমনি অর্থ ও উদ্দেশ্যের দিক থেকেও সম্পূর্ণ ভিন্ন। দু’টির শরঈ হুকুমও বিপরীতমুখী।
আত্নহত্যা হলো, জীবনের উপর অতিষ্ঠ হয়ে ( অথবা কোন কারণ ছাড়াই ) উদ্দেশ্যহীনভাবে নিজের জন্য মৃত্যুকে বেছে নেয়া।
পক্ষান্তরে ‘ আত্নঘাতী হামলা ‘ হচ্ছে শত্রু পক্ষকে ঘায়েল করার এমন একটি কৌশল, যা অবলম্বন করলে হামলাকারীর জীবনও হুমকীর মুখে পতিত হয় এবং তার মৃত্যুও অনিবার্য হয়ে ওঠে।
প্রথমেই জেনে রাখা ভালো যে, আত্নঘাতী (আত্মোৎসর্গ) বোমা হামলার বিষয়টি নতুন হলেও আত্নঘাতী (আত্মোৎসর্গ) হামলার কৌশল কিন্তু নতুন নয়। বরং ইসলামের শুরুর যুগেও এর নযির রয়েছে।
কুরআনুল কারীমের নির্ভরযোগ্য তাফসীরসমূহ, এ বিষয়ের হাদীস এবং ফিকহ ও ফাতাওয়া গ্রন্থগুলোর সংশ্লিষ্ট অংশ যারা গভীরভাবে অধ্যায়ন করেছেন, তাদের ভালোভাবই জানা থাকবে যে,
ইসলামের শত্রু পক্ষকে ঘায়েল করা, শত্রু শিবিরে আতংক সৃষ্টি করা অথবা অন্য কোনভাবে মুসলমানদের বিশেষ উপকার সাধনের লক্ষে মৃত্যু অনীবার্য জেনেও এককভাবে শত্রুর উপর হামলা করে স্বীয় জীবন বিসর্জন দেয়া শুধু জায়েযই নয় বরং বিরাট ফজিলত ও সওয়াবের কাজও বটে।
এ বিষয়ের দলিল থেকে কয়েকটি পেশ করা হচ্ছে –
সূরা বাকারার ১৯৫ নং আয়াতের তাফসীরে ইমাম বুখারী সাহাবী হযরত হুযাইফা (রাঃ) এর বর্ণনা উল্লেখ করেছেন-
তিনি বলেছেন, আয়াতটি সদকার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। ইমাম কুরতুবী বলেন, আল ইয়াযিদ ইবনে আবু হাবীব আসলামের মাধ্যমে আবু ইমরান থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আমরা কুসতুনতানিয়ার ( ইস্তাম্বুল ) যুদ্ধে ছিলাম। আবদুর রহমান ইবনুল ওয়ালীদ দলের আমীর ছিলেন। রোম সেনাদল ( শত্রু পক্ষ ) শহরের দেয়ালকে পিছনে রেখে প্রস্তুত ছিলো।
এরই মধ্যে একজন মুসলমান শত্রুপক্ষের উপর একা অতর্কিত হামলা করে বসলো। তা দেখে কিছু লোক বলে উঠলো, হায় হায় ! লোকটি কি করলো ? লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ! নিজেকে ধ্বংসে পতিত করলো ( অর্থাৎ আত্নহত্যা করলো ) ?
তখন সাহাবী হযরত আবু আইউব আনসারী (রাঃ) বলেন, সুবাহানাল্লাহ ! … ( তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে পতিত করো না )। এ আয়াতটি আমাদের আনসারদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে।
( তিনি বলেন, ) ধ্বংসের মুখে নিজেকে নিক্ষেপ করার মানে হলো, ধন-সম্পদ নিয়ে ব্যস্ত থাকা ও জিহাদ না করা। ( তাফসীরুল কুরতুবী – ২/ ৩৬১ )
উপরোক্ত রেওয়ায়েতটি তিরমিযী শরীফেও বর্ণিত হয়েছে। এ রেওয়ায়েতে একজন মুজাহিদের একটি শত্রুপক্ষের ভিতর হামলা করতে যাওয়াকে যেখানে তার কিছু সহযোদ্ধা আত্নঘাতী হামলা মনে করে চিন্তিত হয়েছেন, তার জবাবে প্রখ্যাত সাহাবী আবু আইউব আনসারী সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এটিও জিহাদের অংশ।
ইয়ামামার যুদ্ধে হযরত আনাস ইবনে মালেকের ভাই বারা ইবনে মালেক তাঁর সহযোদ্ধাদের বললেন, আমাকে তোমরা চামড়ার থলেতে ঢুকিয়ে শত্রু দলের ভিতরে ফেলে আসো, তারা তাই করলো। হযরত বার একাই তাদের সাথে লড়াই করলেন এবং দূর্গের গেট খুলে দিলেন।
( তারীখে তাবারী ও তাফসীরে কুরতুবী – ২ /৩৬৪ )
তাফসীরে কুরতুবীতে এই মাসআলাটি এভাবে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি নিশ্চিত হয় যে,
শত্রু পক্ষের উপর হামলা করতে গেলে সে নিহত হবে, কিন্তু এর দ্বারা শত্রু ক্ষতিগ্রস্ত হবে অথবা তাদের মধ্যে এমন প্রভাব পড়বে, যার দ্বারা মুসলমানগণ উপকৃত হবে-
একথা ভেবে যদি সে দুশমনের দলের ভিতর একাই হামলা করে বসে, তবুও তা জায়েয।
(ইমাম কুরতুবী এ বক্তব্যের দলীল স্বরুপ বলেন) বর্ণিত আছে যে,
“এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন,
আমি যদি আল্লাহর রাস্তায় সওয়াবের উদ্দেশ্যে সবর করে নিহত হই, তবে আমার হুকুম কি হবে ?
রাসূলু্ল্লাহ (সাঃ) জবাবে বললেন, ‘ এর বিনিময়ে তুমি জান্নাত পাবে। ‘
এ কথা শুনে লোকটি শত্রুদলের ভিতরে ঢুকে পড়লেন এবং শহীদ হয়ে গেলেন।”
( তাফসীরুল কুরতুবী – ২ /৩৬৪ )
ইমাম আবু হানিফার প্রখ্যাত শাগরেদ, হানাফী মাযহাবের মৌলিক ছয়টি কিতাবের রচয়িতা ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান ( রহঃ ) তাঁর কিতাব আস-সিয়ারুল কাবীরে এ ধরনের হামলার সুস্পষ্ট অনুমোদন দিয়েছেন।
(আহকামুল কুরআন, ১১/ ২৯০)
“উপমহাদেশের প্রখ্যাত ফকীহ ও মুহাদ্দিস সুবিখ্যাত হাদীস ভাষা ই’লাউসনুমানের রচয়িতা আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী ( রহঃ ) তাঁর কিতাবে (আহকামুল কুরআন ) বহু আয়াত, হাদীস এবং ইমামদের বক্তব্য উল্লেখ করে এ ধরনের হামলা (মুসলমানদের উপকারের স্বার্থে আত্নঘাতী হামলা ) কে শুধু জায়েযই বলেননি বরং হামলাকারী শাহাদাতের সুউচ্চ মরতবা পাবেন এ কথাও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন”
(দ্রষ্টব্যঃ আহকামুল কুরআন – ১১ / ২৯০- ২৯২)
প্রশ্নোত্তরের এ সংক্ষিপ্ত কলেবরে এর চেয়ে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব নয়। আল্লাহ তা’য়ালা সকলকে সহীহ দ্বীন বুঝার ও বলার তাওফীক দিন।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
উত্তর প্রদানঃ
মুফতী আবুল হাসান মুহাম্মদ আবদুল্লাহ,
মুহতামিম,
মারকাজুদ্ দাওয়াতিল ইসলামিয়া ( উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ) ঢাকা, বাংলাদেশ।
Comment