Announcement

Collapse
No announcement yet.

তাকফীরের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুলসমূহ-২

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তাকফীরের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুলসমূহ-২

    তাকফীরের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুলসমূহ
    ২য় পর্ব

    মূল: শায়খ আবু মুহাম্মদ আসিম আলমাকদিসী হাফিজাহুল্লাহ


    তাই যে মুসলমান-কাফেরের মাঝে কোন ভেদাভেদ করে না, তার কাছে এসব বিষয়গুলো, বরং পুরো দ্বীনই সংশয়পূর্ণ হয়ে যাবে!!

    এছাড়াও দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা থেকে সাধারণভাবে সতর্ক ও নিষেধ করে অনেক শরয়ী বর্ণনা এসেছে, যেমন: ইমাম আহমদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ ও অন্যান্য ইমামগণ বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেছেন,

    إياكم والغلو في الدين فإنما هلك من قبلكم بالغلو في الدين

    “তোমরা দ্বীনের ব্যপারে বাড়াবাড়ি থেকে বেঁচে থাক, কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করার কারণে ধ্বংস হয়েছে।”

    - ইমাম তবরানী (রহ.) তার আলকাবীরে ও অন্যান্য কিতাবে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেছেন:

    صنفان من أمتي لن تنالهم شفاعتي، إمام ظلوم غشوم، وكل غال مارق

    “আমার উম্মতের দু’টি শ্রেণী আমার সুপারিশ লাভ করবে না: জালেম অত্যাচারী শাসক ও দ্বীন থেকে বিচ্যুত সীমালঙ্ঘনকারী”। (হাদীসটি হাসান)।

    - অনুরূপ অনেক শরয়ী বর্ণনা এসেছে, যা বিশেষভাবে তাকফীরের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করা থেকে সতর্ক করে এবং যারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করে, যেমন:

    - ইমাম বুখারী (রহ.) তার সহীহের কিতাবুল আদাবে বর্ণনা করেন, অধ্যায়: ‘যে তার ভাইকে কোনরূপ বিচার-বিশ্লেষণ ব্যতিত কাফের আখ্যা দেয় সে নিজেই তার কথার অনুরূপ’: আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, إذا قال الرجل لأخيه يا كافر فقد باء به أحدهما “যখন কোনো ব্যক্তি তার ভাইকে বলে ‘হে কাফের’ তখন তাদের দু’জনের একজন অবশ্যই তাতে পতিত হয়।“

    - হযরত সাবেত ইবনুয যাহ্হাক (রহ.)এর সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

    من حلف بملة غير الإسلام كاذباً فهو كما قال، ومن قتل نفسه بشيء عذب به في نار جهنم، ولعن المؤمن كقتله، ومن رمى مؤمناً بالكفر فهو كقتله

    “যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতিত অন্য কোন ধর্মের নামে শপথ করে, সে তার কথার মতই হবে। আর যে নিজেকে কোনো বস্তু দ্বারা হত্যা করে তাকে জাহান্নামে উক্ত বস্তু দ্বারা শাস্তি দেওয়া হবে। মুমিনকে অভিশম্পাত করা, তাকে হত্যা করার ন্যায়। যে কোন মুমিনকে কুফরীর অপবাদ দেয়, এটা তাকে হত্যা করার মতই।“

    তিনি তার সহীহের একই পর্বের ‘গালমন্দ ও অভিশম্পাত করা থেকে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত হাদীসসমূহের অধ্যায়ে’ বর্ণনা করেন: আবু জর রা: থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূল সা: কে বলতে শুনেছেন,

    لا يرمي رجل رجلاً بالفسوق ولا يرميه بالكفر، إلا ارتدت عليه، أن لم يكن صاحبه كذلك

    “যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে ফাসেক বা কাফের বলে অপবাদ দেয়, যদি তার সাথী অনুরূপ না হয়, তবে বিষয়টি তার উপরই ফিরে আসবে।

    - ইমাম মুসলিম রহ.ও তার সহীহের কিতাবুল ঈমানে হযরত আবু জর রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছেন:

    ليس من رجل أدعى لغير أبيه وهو يعلمه إلا كفر ، ومن ادعى ما ليس له فليس منا وليتبوأ مقعده من النار ، ومن دعا رجلاً بالكفر أو قال: عدو الله ، وليس كذلك إلا حار عليه
    “যে ব্যক্তি জেনে শুনে নিজ পিতা ব্যতিত অন্য কারো দিকে নিজেকে সম্পৃক্ত করে সে কাফের হয়ে যাবে। যে এমন জিনিস দাবি করে যা তার মাঝে নেই সে আমাদের মধ্য থেকে নয়। আর সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়। যে কোন ব্যক্তিকে কাফের আখ্যা দেয় অথবা ‘আল্লাহর শত্রু’ বলে, অথচ ওই ব্যক্তি অনুরূপ নয়, তবে বিষয়টি তার উপর প্রত্যাবর্তন করবে।“

    - হাফেজ আবু ইয়ালা হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেছেন,

    إن مما أتخوف عليكم رجل قرأ القرآن حتى إذا رؤيت بهجته عليه، وكان رداؤه الإسلام اعتراه إلى ما شاء الله، انسلخ منه ونبذه وراء ظهره ، وسعى على جاره بالسيف ورماه بالشرك ، قال: قلت: يا نبي الله ، أيهما أولى بالشرك المرمي أم الرامي ؟ قال: بل الرامي
    “আমি তোমাদের ব্যাপারে যে বিষয়গুলোর ভয় করি তার মধে একটি হচ্ছে: একজন লোক কুরআন পড়বে, অত:পর তার মাঝে তার প্রভাবও পরিলক্ষিত হবে। আর সেসময়ও তার চাদরটি থাকবে ইসলামের। অত:পর যতদিন আল্লাহ চাইবেন, ততদিন সে উক্ত চাদরের আড়াল গ্রহণ করবে। কিন্তু সবশেষে সে দ্বীন থেকে ফিরে যাবে, দ্বীনকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করে স্বীয় প্রতিবেশীর উপর তরবারী উত্তোলন করবে এবং তাকে কুফরীর অপবাদ দিবে।

    সাহাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! কোন্জন শিরকের অধিক নিকটবর্তী? যাকে অপবাদ দেয়া হয়েছে সে, না যে অপবাদ দিয়েছে সে? রাসূল সা. বললেন, বরং যে অপবাদ দিয়েছে সে।“

    হাফেজ ইবনে কাসীর রহ: واتل عليهم نبأ الذي آتيناه آياتنا فانسلخ منها فأتبعه الشيطان فكان من الغاوين (“এবং (হে রাসূল!) তাদেরকে সেই ব্যক্তির ঘটনা পড়ে শোনাও, যাকে আমি আমার নিদর্শন দিয়েছিলাম, কিন্তু সে তা সম্পূর্ণ বর্জন করে। ফলে শয়তান তার পিছু নেয়। পরিণামে সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়”) আয়াতটির তাফসীর প্রসঙ্গে উপরোক্ত হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, হাদীসটির সনদ হাসান।

    এ সমস্ত বিশুদ্ধ হাদীসগুলোতে যে ধমকি ও সতর্কবাণী রয়েছে তা অবশ্যই বিবেকবানদেরকে দ্বীনের ব্যাপারে সতর্ক হতে উদ্ধুদ্ধ করবে। বিশেষ করে এই স্পর্শকাতর বিষয়টিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে সাহায্য করবে। কেননা এই হাদীসগুলোর বাহ্যিক ফায়সালা হলো: যে কোন মুসলমানকে এমন বিষয়ের দ্বারা তাকফীর করে, যার দ্বারা আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল তাকফীর করেন না, সে নিজেই এর কারণে কাফের হয়ে যাবে।

    এটা কঠিক ধমকি। উলামায়ে কেরাম এটাকে কঠিন মনে করার কারণে এর একাধিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছেন। তাদের কেউ কেউ যে ব্যাখ্যাটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন তা হচ্ছে:

    “যে এই ধরণের কবীরা গুনাহে লিপ্ত হতে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং তা বলার ব্যাপারে দু:সাহসী হয়ে উঠে, তাকে এ বিষয়টি কুফর পর্যন্ত পৌঁছে দিবে বা কুফরের উপর তার পরিসমাপ্তি ঘটাবে। কেননা গুনাহ হল কুফরের বার্তাবাহক। আর তার মধ্যে বড়গুলো, ছোটগুলো থেকে দ্রুতগামী। আর যে কবীরা গুনাহসমূহের ব্যাপারে অবজ্ঞা করে, তার ব্যাপারে আশংকা রয়েছে, তার অবজ্ঞা তাকে কুফরের উপকরণসমূহে অনুপ্রবেশ করা ও তাতে লিপ্ত হওয়ার দিকে নিয়ে যেতে পারে।”

  • #2
    সম্মানিত ভায়েরা! এই বইটা তানযীমের পক্ষে থেকে গুরুত্ব দিয়ে অনুবাদ করানো হয়েছে। এতে অনেক ইলম ও অতি প্রয়োজনীয় জানার বিষয় আছে। আপনারা নিয়মিত পড়ুন, বেশি সময় তো লাগবে না। কিন্তু জিহাদের পথে চলার ক্ষেত্রে আপনাদের বিরাট পাথেয় হবে ইংশাআল্লাহ। আমি অল্প অল্প করে পোস্ট দিচ্ছি।

    আছে কি কোন ইলম পিপাসু?

    Comment


    • #3
      আছে হে প্রিয় ভাই! আপনি নিয়মিত পোস্ট করুন। এতে আমাদের ও আপনার অনেক উপকার হবে। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

      Comment


      • #4
        ভাই , প্রতি পোস্টের নিচে যদি আগের পর্বের লেখার লিঙ্ক দিতেন তাহলে মনে হয় ভাল হত ।

        Comment


        • #5
          আছে কি কোন ইলম পিপাসু?

          নিশ্চয়ই, মুমিনরা কেয়ামত পর্যন্ত ইলম পিপাসুই থেকে যাবে।
          কখনই পূর্ণ ইলম শিখতে পারবে না!!!
          মুমিনদেরকে ক্বিতালের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন।

          Comment


          • #6
            Originally posted by Umar Faruq View Post
            ভাই , প্রতি পোস্টের নিচে যদি আগের পর্বের লেখার লিঙ্ক দিতেন তাহলে মনে হয় ভাল হত ।

            এই যে ভাই, আগের পর্বের লিংক:

            Comment

            Working...
            X