লোন উলফ ম্যাগাজিন পড়ার পর এক ভাইয়ের প্রশ্ন ছিল:
১. “তুরস্ক ছাড়া ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলোর যে কোন অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করা জায়েয” কথাটি কোরআন হাদিসের দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক কি’না?
২. তুরস্ক ছাড়া কেন?
৩. অমুসলিম ও তাগুতের অনুসারীদের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেওয়া জায়েয কি’না? হলে কিভাবে জায়েয?
এক.
প্রথমে তুরস্কের বিষয়টাতে যাই। লোন উলফের উদ্দেশ্য এমনসব সুস্পষ্ট কাফের, যাদের কুফরির ব্যাপারে সাধারণত কারো সংশয় নেই এবং যাদেরকে হত্যা করলে সাধারণত আপত্তি হবে না বা কম হবে। এ ধরণের কাফের-মুরতাদ লোন উলফের টার্গেট। কোন মুসলমান কোনক্রমেই টার্গেট নয়। এজন্য আপনি হয়তো ম্যাগাজিনে লক্ষ করেছেন যে, বার বার সতর্ক করা হয়েছে: যেন মুসলমানদের কোন ক্ষতি না হয়। আক্রমণ যে রাষ্ট্রেই হোক, কোন মুসলমান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমেরিকা-ইসরাঈলে হামলা হলেও মুসলমান ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভবত ন্যাটো-জোটভুক্ত সবগুলো রাষ্ট্রই কাফের রাষ্ট্র। একমাত্র তুরস্কই ব্যতিক্রম যে, মুসলিম রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ব-কুফরি-সামরিকজোট ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে। তুরস্ক মুসলিম রাষ্ট্র হওয়ায় এবং তার নাগরিকরা মুসলমান হওয়ায় তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। যদি অন্য কোন মুসলিম রাষ্ট্র ন্যাটোতে থাকতো, তাহলে ম্যাগাজিনে তাকেও বাদ দেয়া হতো। শুধু তুরস্ক নিয়েই কথা না।
তবে বাদ দেয়ার দ্বারা আসলে অন্য কাফের রাষ্ট্র থেকে তুরস্কে আগত কিংবা তুরস্কে বসবাসরত কাফেরদের বাদ দেয়া উদ্দেশ্য নয়, বরং মুসলিম নাগরিকদের বাদ দেয়া উদ্দেশ্য। নতুবা আপনি লক্ষ করেছেন যে, ম্যাগাজিনে আমাদের দেশেরও গুরুত্বপূর্ণ কাফেরদের টার্গেট করতে বলা হয়েছে। তুরস্ককে বাদ দেয়ার দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য যে, সাধারণ মুসলিমদের কোন ক্ষতি করা যাবে না; তবে যে কোন দেশের মতো সেখানেও গুরুত্বপূর্ণ কাফেরদের টার্গেট করা যাবে। তবে সংক্ষেপ করতে গিয়ে ম্যাগাজিনে বিষয়টা পরিষ্কার করে বলা হয়নি। অন্যথায় সামগ্রিক ম্যাগাজিন থেকে বিষয়টা স্পষ্ট।
দুই.
সকল হরবি কাফেরের জান-মাল মুসলমানদের জন্য হালাল। একমাত্র দারুল ইসলামে জিযিয়া দিয়ে মুসলমানদের জিম্মি হয়ে যারা থাকে কিংবা অস্থায়ীভাবে মুসলমানদের থেকে যারা আমান নিয়েছে, তারাই এর ব্যতিক্রম। এ ছাড়া সকল হরবি কাফেরের জান-মাল মুসলমানদের জন্য হালাল। যেখানে পাওয়া যাবে হত্যা করা যাবে। লুণ্টন করা যাবে। স্পষ্ট যে, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সকল কাফের হরবি কাফের। তাদের সাথে আমাদের কোন আমানের চুক্তি নেই। তাই তাদের জান-মাল মুসলমানদের জন্য হালাল। এ ব্যাপারে আপনি নিচের লেখাটা দেখতে পারেন-
আমানবিহীন সকল কাফেরের জান-মাল হালাল
লিংক:
https://archive.org/download/AmanbihinKafer/Amanbihin%20kafer.pdf
তিন.
হরবি কাফেরদের জান-মাল যেহেতু মুসলমানদের জন্য হালাল, তাই তাদের যে কোন প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেয়া যাবে। তবে যথাসম্ভব মুসলমানদের যেন ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টা লক্ষ রাখতে হবে। মুসলিম নামধারী তাগুতরাও হরবি কাফের। তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান, যেগুলোতে সাধারণ মুসলিমদের অংশ নেই, সেগুলোর ব্যাপারেও একই কথা। এগুলো জ্বালিয়ে দিতে কোন সমস্যা নেই। আর যেগুলোতে সাধারণ মুসলিমদের অংশ আছে, সেগুলোর কথা ভিন্ন। তবে যেকোন হামলার ক্ষেত্রেই তাতে মাসলাহাত কতটুকু তা বিবেচনায় রাখতে হবে। মুহতারাম ভাই, আশাকরি বুঝতে পেরেছেন। আরেকটু পরিষ্কার হওয়ার জন্য আপনি মিম্বারুত তাওহিদের নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর দুটি দেখুন-
প্রশ্ন নং- ১৫৪৫: আমাদের মুসলিম ভাইদের প্রতিশোধরূপে নাইজেরিয়ান খৃস্টানদের উপর আক্রমণের কি বিধান?
লিংক:
প্রশ্ন নং- ৩১৯০: মিশরের যেসব খ্রিস্টান আমাদের মুসলিম বোনদের অপহরণ করে, তাদের কি কোন ধরণের আমান-অঙ্গীকার বহাল থাকবে?
লিংক:
১. “তুরস্ক ছাড়া ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলোর যে কোন অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করা জায়েয” কথাটি কোরআন হাদিসের দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক কি’না?
২. তুরস্ক ছাড়া কেন?
৩. অমুসলিম ও তাগুতের অনুসারীদের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেওয়া জায়েয কি’না? হলে কিভাবে জায়েয?
উত্তর:
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রহীম
তুরস্ককে বাদ দেয়ার বিষয়টাতে মুহতারাম মডারেটর ভাই সংক্ষেপে জওয়াব দিয়েছেন। [কিছু আলোচিত সংশয়ের জবাবে “গণতন্ত্র, হামাস, জিহাদ, শাসক বাহিনী এবং ভিসা ও আমান” নিয়ে বিশেষ আর্কাইভ] শিরোনামে ফোরামে যে আর্কাইভ দেয়া হয়েছে, সেখানে ইনশাআল্লাহ বিস্তারিত জওয়াব পেয়ে যাবেন। আমি ইনশাআল্লাহ মাঝামাঝি একটা জওয়াব দেয়ার চেষ্টা করছি।বিসমিল্লাহির রাহমানীর রহীম
এক.
প্রথমে তুরস্কের বিষয়টাতে যাই। লোন উলফের উদ্দেশ্য এমনসব সুস্পষ্ট কাফের, যাদের কুফরির ব্যাপারে সাধারণত কারো সংশয় নেই এবং যাদেরকে হত্যা করলে সাধারণত আপত্তি হবে না বা কম হবে। এ ধরণের কাফের-মুরতাদ লোন উলফের টার্গেট। কোন মুসলমান কোনক্রমেই টার্গেট নয়। এজন্য আপনি হয়তো ম্যাগাজিনে লক্ষ করেছেন যে, বার বার সতর্ক করা হয়েছে: যেন মুসলমানদের কোন ক্ষতি না হয়। আক্রমণ যে রাষ্ট্রেই হোক, কোন মুসলমান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমেরিকা-ইসরাঈলে হামলা হলেও মুসলমান ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভবত ন্যাটো-জোটভুক্ত সবগুলো রাষ্ট্রই কাফের রাষ্ট্র। একমাত্র তুরস্কই ব্যতিক্রম যে, মুসলিম রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ব-কুফরি-সামরিকজোট ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে। তুরস্ক মুসলিম রাষ্ট্র হওয়ায় এবং তার নাগরিকরা মুসলমান হওয়ায় তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। যদি অন্য কোন মুসলিম রাষ্ট্র ন্যাটোতে থাকতো, তাহলে ম্যাগাজিনে তাকেও বাদ দেয়া হতো। শুধু তুরস্ক নিয়েই কথা না।
তবে বাদ দেয়ার দ্বারা আসলে অন্য কাফের রাষ্ট্র থেকে তুরস্কে আগত কিংবা তুরস্কে বসবাসরত কাফেরদের বাদ দেয়া উদ্দেশ্য নয়, বরং মুসলিম নাগরিকদের বাদ দেয়া উদ্দেশ্য। নতুবা আপনি লক্ষ করেছেন যে, ম্যাগাজিনে আমাদের দেশেরও গুরুত্বপূর্ণ কাফেরদের টার্গেট করতে বলা হয়েছে। তুরস্ককে বাদ দেয়ার দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য যে, সাধারণ মুসলিমদের কোন ক্ষতি করা যাবে না; তবে যে কোন দেশের মতো সেখানেও গুরুত্বপূর্ণ কাফেরদের টার্গেট করা যাবে। তবে সংক্ষেপ করতে গিয়ে ম্যাগাজিনে বিষয়টা পরিষ্কার করে বলা হয়নি। অন্যথায় সামগ্রিক ম্যাগাজিন থেকে বিষয়টা স্পষ্ট।
দুই.
সকল হরবি কাফেরের জান-মাল মুসলমানদের জন্য হালাল। একমাত্র দারুল ইসলামে জিযিয়া দিয়ে মুসলমানদের জিম্মি হয়ে যারা থাকে কিংবা অস্থায়ীভাবে মুসলমানদের থেকে যারা আমান নিয়েছে, তারাই এর ব্যতিক্রম। এ ছাড়া সকল হরবি কাফেরের জান-মাল মুসলমানদের জন্য হালাল। যেখানে পাওয়া যাবে হত্যা করা যাবে। লুণ্টন করা যাবে। স্পষ্ট যে, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সকল কাফের হরবি কাফের। তাদের সাথে আমাদের কোন আমানের চুক্তি নেই। তাই তাদের জান-মাল মুসলমানদের জন্য হালাল। এ ব্যাপারে আপনি নিচের লেখাটা দেখতে পারেন-
আমানবিহীন সকল কাফেরের জান-মাল হালাল
লিংক:
https://archive.org/download/AmanbihinKafer/Amanbihin%20kafer.pdf
তিন.
হরবি কাফেরদের জান-মাল যেহেতু মুসলমানদের জন্য হালাল, তাই তাদের যে কোন প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেয়া যাবে। তবে যথাসম্ভব মুসলমানদের যেন ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টা লক্ষ রাখতে হবে। মুসলিম নামধারী তাগুতরাও হরবি কাফের। তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান, যেগুলোতে সাধারণ মুসলিমদের অংশ নেই, সেগুলোর ব্যাপারেও একই কথা। এগুলো জ্বালিয়ে দিতে কোন সমস্যা নেই। আর যেগুলোতে সাধারণ মুসলিমদের অংশ আছে, সেগুলোর কথা ভিন্ন। তবে যেকোন হামলার ক্ষেত্রেই তাতে মাসলাহাত কতটুকু তা বিবেচনায় রাখতে হবে। মুহতারাম ভাই, আশাকরি বুঝতে পেরেছেন। আরেকটু পরিষ্কার হওয়ার জন্য আপনি মিম্বারুত তাওহিদের নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তর দুটি দেখুন-
প্রশ্ন নং- ১৫৪৫: আমাদের মুসলিম ভাইদের প্রতিশোধরূপে নাইজেরিয়ান খৃস্টানদের উপর আক্রমণের কি বিধান?
লিংক:
প্রশ্ন নং- ৩১৯০: মিশরের যেসব খ্রিস্টান আমাদের মুসলিম বোনদের অপহরণ করে, তাদের কি কোন ধরণের আমান-অঙ্গীকার বহাল থাকবে?
লিংক:
Comment