হাল্লাজ ও ইবনে আরাবি প্রসঙ্গ:
বিশ্ব ইতিহাসে প্রসিদ্ধ দু’জন যিন্দিক: হাল্লাজ ও ইবনে আরাবি। এদের দ্বারা ইসলামের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সংক্ষেপে এ দু’জনের ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য দু’জন ইমামের বক্তব্য তুলে ধরছি।
ইবনে আরাবি:
ইবনে আবিল ঈজ্ হানাফি রহ. (৭৯২ হি.) ইবনে আরাবির কিছু কুফরি কথা উল্লেখ করার পর বলেন,
وكيف يخفى كفر من هذا كلامه ؟ وله من الكلام أمثال هذا، وفيه ما يخفى منه الكفر ومنه ما يظهر، فلهذا يحتاج إلى نقد جيد ليظهر زيفه، فإن من الزغل ما يظهر لكل ناقد ومنه ما لا يظهر إلا للناقد الحاذق البصير. وكفر ابن عربي وأمثاله فوق كفر القائلين : { لن نؤمن حتى نؤتى مثل ما أوتي رسل الله }
ولكن ابن عربي وأمثاله منافقون زنادقة اتحادية في الدرك الأسفل من النار. والمنافقون يعاملون معاملة المسلمين لإظهارهم الإسلام كما كان يظهره المنافقون في حياة النبي صلى الله عليه و سلم ويبطنون الكفر وهو يعاملهم معاملة المسلمين لما يظهر منهم. فلو أنه ظهر من أحد منهم ما يبطنه من الكفر لأجرى عليه حكم المرتد ولكن في قبول توبته خلاف والصحيح عدم قبولها وهي رواية معلى عن أبي حنيفة رضي الله عنه والله المستعان. اهـ شرح العقيدة الطحاوية لابن ابى العز الحنفي 492
“যে ব্যক্তি এ ধরণের কথা বলে, সে কাফের হওয়ার ব্যাপারে কিভাবে অস্পষ্টতা থাকতে পারে?! এ ধরণের কুফরি কথা তার আরোও আছে। সেগুলোর কিছু এমন যে, তার কুফরিটা অস্পষ্ট। আর কিছু আছে সুস্পষ্ট কুফর (যা সকলেই বুঝবে)। এ কারণে সেগুলোর বাতুলতা প্রকাশ হওয়ার জন্য বিচক্ষণতার সাথে যাচাইয়ের প্রয়োজন পড়ে। কেননা, কিছু বাতিল আছে যা সকল যাচাইকারীর সামনেই ধরা পড়ে। আর কিছু আছে যা অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন বিদগ্ধ পর্যালোচক ছাড়া অন্য কারো চোখে ধরা পড়ে না।
ইবনে আরাবি ও তার সমশ্রেণীর লোকদের কুফর (মক্কার) ঐসব (কাফের) লোকদের চেয়েও বেশি, যারা বলেছিল, ‘আমরা কিছুতেই ঈমান আনবো না, যতক্ষণ না আমাদেরও ঐ জিনিস (অর্থাৎ নবুওয়্যাত) দেয়া হয়, যা আল্লাহর রাসূলদের দেয়া হয়েছিল।’
কিন্তু ইবনে আরাবি ধরণের লোকেরা হচ্ছে ইত্তেহাদি যিন্দিক ও মুনাফিক, যাদের ঠিকানা জাহান্নামের সর্বনিকৃষ্ট স্তরে। মুনাফিকরা যেহেতু বাহ্যত নিজেদের মুসলমান বলে প্রকাশ করে, তাই তাদের সাথে মুসলমানদের মতোই মুআমালা করতে হয়। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় মুনাফিকরা অন্তরে কুফর গোপন রেখে বাহ্যত নিজেদের মুসলমান দাবি করতো। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাদের বাহ্যিক অবস্থার ভিত্তিতে তাদের সাথে মুসলমানদের মতোই মুআমালা করতেন। যদি তাদের কারো থেকে তার লুকানো কুফর প্রকাশ হতো, তাহলে তিনি অবশ্যই তার উপর মুরতাদের বিধান প্রয়োগ করতেন। তবে তার তাওবা কবূল হওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত আছে। সহীহ অভিমত হচ্ছে, কবূল হবে না। মুআল্লা রহ. আবু হানিফা রহ. থেকে এমনটিই বর্ণনা করেছেন।”- শরহুল আকিদাতিত তহাবিয়্যা লি ইবনি আবিল ঈজ্: ৪৯২
হাল্লাজ:
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.)-র কাছে হাল্লাজের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি উত্তর দেন,
من اعتقد ما يعتقده الحلاج من المقالات التي قتل الحلاج عليها فهو كافر مرتد باتفاق المسلمين؛ فإن المسلمين إنما قتلوه على الحلول والاتحاد ونحو ذلك من مقالات أهل الزندقة والإلحاد كقوله: أنا الله. وقوله: إله في السماء وإله في الأرض ...
والحلاج: كانت له مخاريق وأنواع من السحر وله كتب منسوبة إليه في السحر. وبالجملة فلا خلاف بين الأمة أن من قال بحلول الله في البشر واتحاده به وأن البشر يكون إلها وهذا من الآلهة: فهو كافر مباح الدم وعلى هذا قتل الحلاج ...
وما يحكى عن الحلاج من ظهور كرامات له عند قتله مثل كتابة دمه على الأرض: الله الله وإظهار الفرح بالقتل أو نحو ذلك: فكله كذب. فقد جمع المسلمون أخبار الحلاج في مواضع كثيرة ... وما نعلم أحدا من أئمة المسلمين ذكر الحلاج بخير لا من العلماء ولا من المشايخ؛ ولكن بعض الناس يقف فيه؛ لأنه لم يعرف أمره وأبلغ من يحسن به الظن يقول: إنه وجب قتله في الظاهر فالقاتل مجاهد والمقتول شهيد وهذا أيضا خطأ. وقول القائل: إنه قتل ظلما قول باطل فإن وجوب قتله على ما أظهره من الإلحاد أمر واجب باتفاق المسلمين؛ لكن لما كان يظهر الإسلام ويبطن الإلحاد إلى أصحابه: صار زنديقا فلما أخذ وحبس أظهر التوبة والفقهاء متنازعون في قبول توبة الزنديق فأكثرهم لا يقبلها. اهـ مجموع الفتاوى 2\480-483
“হাল্লাজ যেসকল (কুফরি) কথা-বার্তায় বিশ্বাসী ছিল, যেগুলোর কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, যে ব্যক্তি সেগুলো বিশ্বাস করবে, মুসলমানদের সকলের ঐক্যমতে সে কাফের ও মুরতাদ হয়ে যাবে। হুলুল, ইত্তিহাদ এবং যিন্দিক ও মুলহিদদের এ জাতীয় বিভিন্ন কথা-বার্তার কারণে মুসলমানরা তাকে হত্যা করেছে। যেমন, সে বলতো: ‘আমিই আল্লাহ’, ‘আকাশে ইলাহ একজন আর যমিনে ইলাহ আরেকজন (যার দ্বারা সে নিজেকেই উদ্দেশ্য নিতো) ইত্যাদি। ...
হাল্লাজ অনেক অলৌকিক কাণ্ড ঘটাত এবং বিভিন্ন প্রকার যাদু-টোনা জানত। যাদু সম্পর্কে তার নামে কিছু কিতাবও আছে। মোটকথা, যে ব্যক্তি আল্লাহর ব্যাপারে এ আকীদা রাখবে যে, তিনি কোন মানুষের ভিতরে অবতরণ করেন এবং তার সাথে মিশে একাকার হয়ে যান এবং মানুষটি ইলাহ হয়ে যায় এবং সেও (তখন) অনেক ইলাহের মধ্যে একজন ইলাহ: সে ব্যক্তি কাফের এবং তার রক্ত হালাল। হাল্লাজকে এর ভিত্তিতেই হত্যা করা হয়েছে। ...
আর হাল্লাজের ব্যাপারে যা বলা হয় যে, তাকে হত্যা করার সময় তার বেশ কিছু কারামত জাহের হয়েছে; যেমন: তার রক্তের দ্বারা যমিনে আল্লাহ আল্লাহ লেখা উঠেছে, হত্যার কারণে সে খুশির বহিঃপ্রকাশ করেছে, এছাড়াও এ জাতীয় যত কিছু বলা হয়- তার সবগুলোই মিথ্যা। মুসলিম মনীষীগণ অনেক কিতাবে হাল্লাজের কাহিনি বর্ণনা করেছেন; ... কিন্তু উলামা-মাশায়েখদের কোন একজন ইমামের ব্যাপারেও আমাদের এ কথা জানা নেই যে, তিনি হাল্লাজের ব্যাপারে ভাল কিছু বলেছেন।
তবে হ্যাঁ! কেউ কেউ এ ব্যাপারে (পক্ষ-বিপক্ষ কিছু না বলে) চুপ থেকেছেন। তার কারণ, হাল্লাজের বিষয়টা তাদের জানা ছিল না। তার ব্যাপারে যারা ভাল ধারণা রাখেন, বেশির চেয়ে বেশি তারা এ কথা বলেন যে, জাহিরিভাবে তাকে হত্যা করা ফরয ছিল; অতএব, যিনি হত্যা করেছেন, তিনি (তাকে হত্যা করার দ্বারা) মুজাহিদ গণ্য হবেন; আর নিহত ব্যক্তিও শহীদ হবে। তবে বাস্তবে এ কথাটিও ভুল।
আর এ কথা বলা যে, তাকে হত্যা করা জুলুম হয়েছে- এটি একটি বাতিল কথা। কেননা, সে যে ইলহাদ (ও কুফর) জাহের করেছে, সে অনুযায়ী আইম্মায়ে কেরামের সকলের ঐক্যমতে তাকে হত্যা করা ফরয ছিল। কিন্তু যেহেতু সে বাহ্যত নিজেকে মুসলমান প্রকাশ করত আর তার ভক্তবৃন্দের নিকট গোপনে ইলহাদ জাহের করতো, তাই সে ছিল যিন্দিক। এরপর যখন তাকে গ্রেফতার করে বন্দী করা হয়েছে, তখন বাহ্যত তাওবা করেছে। আর যিন্দিকের তাওবা কবূল করা হবে কি’না এ নিয়ে আইম্মায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ আছে। অধিকাংশের মত হল, কবূল হবে না।”- মাজমুউল ফতাওয়া ২/৪৮০-৪৮৩
বিশ্ব ইতিহাসে প্রসিদ্ধ দু’জন যিন্দিক: হাল্লাজ ও ইবনে আরাবি। এদের দ্বারা ইসলামের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সংক্ষেপে এ দু’জনের ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য দু’জন ইমামের বক্তব্য তুলে ধরছি।
ইবনে আরাবি:
ইবনে আবিল ঈজ্ হানাফি রহ. (৭৯২ হি.) ইবনে আরাবির কিছু কুফরি কথা উল্লেখ করার পর বলেন,
وكيف يخفى كفر من هذا كلامه ؟ وله من الكلام أمثال هذا، وفيه ما يخفى منه الكفر ومنه ما يظهر، فلهذا يحتاج إلى نقد جيد ليظهر زيفه، فإن من الزغل ما يظهر لكل ناقد ومنه ما لا يظهر إلا للناقد الحاذق البصير. وكفر ابن عربي وأمثاله فوق كفر القائلين : { لن نؤمن حتى نؤتى مثل ما أوتي رسل الله }
ولكن ابن عربي وأمثاله منافقون زنادقة اتحادية في الدرك الأسفل من النار. والمنافقون يعاملون معاملة المسلمين لإظهارهم الإسلام كما كان يظهره المنافقون في حياة النبي صلى الله عليه و سلم ويبطنون الكفر وهو يعاملهم معاملة المسلمين لما يظهر منهم. فلو أنه ظهر من أحد منهم ما يبطنه من الكفر لأجرى عليه حكم المرتد ولكن في قبول توبته خلاف والصحيح عدم قبولها وهي رواية معلى عن أبي حنيفة رضي الله عنه والله المستعان. اهـ شرح العقيدة الطحاوية لابن ابى العز الحنفي 492
“যে ব্যক্তি এ ধরণের কথা বলে, সে কাফের হওয়ার ব্যাপারে কিভাবে অস্পষ্টতা থাকতে পারে?! এ ধরণের কুফরি কথা তার আরোও আছে। সেগুলোর কিছু এমন যে, তার কুফরিটা অস্পষ্ট। আর কিছু আছে সুস্পষ্ট কুফর (যা সকলেই বুঝবে)। এ কারণে সেগুলোর বাতুলতা প্রকাশ হওয়ার জন্য বিচক্ষণতার সাথে যাচাইয়ের প্রয়োজন পড়ে। কেননা, কিছু বাতিল আছে যা সকল যাচাইকারীর সামনেই ধরা পড়ে। আর কিছু আছে যা অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন বিদগ্ধ পর্যালোচক ছাড়া অন্য কারো চোখে ধরা পড়ে না।
ইবনে আরাবি ও তার সমশ্রেণীর লোকদের কুফর (মক্কার) ঐসব (কাফের) লোকদের চেয়েও বেশি, যারা বলেছিল, ‘আমরা কিছুতেই ঈমান আনবো না, যতক্ষণ না আমাদেরও ঐ জিনিস (অর্থাৎ নবুওয়্যাত) দেয়া হয়, যা আল্লাহর রাসূলদের দেয়া হয়েছিল।’
কিন্তু ইবনে আরাবি ধরণের লোকেরা হচ্ছে ইত্তেহাদি যিন্দিক ও মুনাফিক, যাদের ঠিকানা জাহান্নামের সর্বনিকৃষ্ট স্তরে। মুনাফিকরা যেহেতু বাহ্যত নিজেদের মুসলমান বলে প্রকাশ করে, তাই তাদের সাথে মুসলমানদের মতোই মুআমালা করতে হয়। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় মুনাফিকরা অন্তরে কুফর গোপন রেখে বাহ্যত নিজেদের মুসলমান দাবি করতো। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাদের বাহ্যিক অবস্থার ভিত্তিতে তাদের সাথে মুসলমানদের মতোই মুআমালা করতেন। যদি তাদের কারো থেকে তার লুকানো কুফর প্রকাশ হতো, তাহলে তিনি অবশ্যই তার উপর মুরতাদের বিধান প্রয়োগ করতেন। তবে তার তাওবা কবূল হওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত আছে। সহীহ অভিমত হচ্ছে, কবূল হবে না। মুআল্লা রহ. আবু হানিফা রহ. থেকে এমনটিই বর্ণনা করেছেন।”- শরহুল আকিদাতিত তহাবিয়্যা লি ইবনি আবিল ঈজ্: ৪৯২
হাল্লাজ:
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.)-র কাছে হাল্লাজের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি উত্তর দেন,
من اعتقد ما يعتقده الحلاج من المقالات التي قتل الحلاج عليها فهو كافر مرتد باتفاق المسلمين؛ فإن المسلمين إنما قتلوه على الحلول والاتحاد ونحو ذلك من مقالات أهل الزندقة والإلحاد كقوله: أنا الله. وقوله: إله في السماء وإله في الأرض ...
والحلاج: كانت له مخاريق وأنواع من السحر وله كتب منسوبة إليه في السحر. وبالجملة فلا خلاف بين الأمة أن من قال بحلول الله في البشر واتحاده به وأن البشر يكون إلها وهذا من الآلهة: فهو كافر مباح الدم وعلى هذا قتل الحلاج ...
وما يحكى عن الحلاج من ظهور كرامات له عند قتله مثل كتابة دمه على الأرض: الله الله وإظهار الفرح بالقتل أو نحو ذلك: فكله كذب. فقد جمع المسلمون أخبار الحلاج في مواضع كثيرة ... وما نعلم أحدا من أئمة المسلمين ذكر الحلاج بخير لا من العلماء ولا من المشايخ؛ ولكن بعض الناس يقف فيه؛ لأنه لم يعرف أمره وأبلغ من يحسن به الظن يقول: إنه وجب قتله في الظاهر فالقاتل مجاهد والمقتول شهيد وهذا أيضا خطأ. وقول القائل: إنه قتل ظلما قول باطل فإن وجوب قتله على ما أظهره من الإلحاد أمر واجب باتفاق المسلمين؛ لكن لما كان يظهر الإسلام ويبطن الإلحاد إلى أصحابه: صار زنديقا فلما أخذ وحبس أظهر التوبة والفقهاء متنازعون في قبول توبة الزنديق فأكثرهم لا يقبلها. اهـ مجموع الفتاوى 2\480-483
“হাল্লাজ যেসকল (কুফরি) কথা-বার্তায় বিশ্বাসী ছিল, যেগুলোর কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, যে ব্যক্তি সেগুলো বিশ্বাস করবে, মুসলমানদের সকলের ঐক্যমতে সে কাফের ও মুরতাদ হয়ে যাবে। হুলুল, ইত্তিহাদ এবং যিন্দিক ও মুলহিদদের এ জাতীয় বিভিন্ন কথা-বার্তার কারণে মুসলমানরা তাকে হত্যা করেছে। যেমন, সে বলতো: ‘আমিই আল্লাহ’, ‘আকাশে ইলাহ একজন আর যমিনে ইলাহ আরেকজন (যার দ্বারা সে নিজেকেই উদ্দেশ্য নিতো) ইত্যাদি। ...
হাল্লাজ অনেক অলৌকিক কাণ্ড ঘটাত এবং বিভিন্ন প্রকার যাদু-টোনা জানত। যাদু সম্পর্কে তার নামে কিছু কিতাবও আছে। মোটকথা, যে ব্যক্তি আল্লাহর ব্যাপারে এ আকীদা রাখবে যে, তিনি কোন মানুষের ভিতরে অবতরণ করেন এবং তার সাথে মিশে একাকার হয়ে যান এবং মানুষটি ইলাহ হয়ে যায় এবং সেও (তখন) অনেক ইলাহের মধ্যে একজন ইলাহ: সে ব্যক্তি কাফের এবং তার রক্ত হালাল। হাল্লাজকে এর ভিত্তিতেই হত্যা করা হয়েছে। ...
আর হাল্লাজের ব্যাপারে যা বলা হয় যে, তাকে হত্যা করার সময় তার বেশ কিছু কারামত জাহের হয়েছে; যেমন: তার রক্তের দ্বারা যমিনে আল্লাহ আল্লাহ লেখা উঠেছে, হত্যার কারণে সে খুশির বহিঃপ্রকাশ করেছে, এছাড়াও এ জাতীয় যত কিছু বলা হয়- তার সবগুলোই মিথ্যা। মুসলিম মনীষীগণ অনেক কিতাবে হাল্লাজের কাহিনি বর্ণনা করেছেন; ... কিন্তু উলামা-মাশায়েখদের কোন একজন ইমামের ব্যাপারেও আমাদের এ কথা জানা নেই যে, তিনি হাল্লাজের ব্যাপারে ভাল কিছু বলেছেন।
তবে হ্যাঁ! কেউ কেউ এ ব্যাপারে (পক্ষ-বিপক্ষ কিছু না বলে) চুপ থেকেছেন। তার কারণ, হাল্লাজের বিষয়টা তাদের জানা ছিল না। তার ব্যাপারে যারা ভাল ধারণা রাখেন, বেশির চেয়ে বেশি তারা এ কথা বলেন যে, জাহিরিভাবে তাকে হত্যা করা ফরয ছিল; অতএব, যিনি হত্যা করেছেন, তিনি (তাকে হত্যা করার দ্বারা) মুজাহিদ গণ্য হবেন; আর নিহত ব্যক্তিও শহীদ হবে। তবে বাস্তবে এ কথাটিও ভুল।
আর এ কথা বলা যে, তাকে হত্যা করা জুলুম হয়েছে- এটি একটি বাতিল কথা। কেননা, সে যে ইলহাদ (ও কুফর) জাহের করেছে, সে অনুযায়ী আইম্মায়ে কেরামের সকলের ঐক্যমতে তাকে হত্যা করা ফরয ছিল। কিন্তু যেহেতু সে বাহ্যত নিজেকে মুসলমান প্রকাশ করত আর তার ভক্তবৃন্দের নিকট গোপনে ইলহাদ জাহের করতো, তাই সে ছিল যিন্দিক। এরপর যখন তাকে গ্রেফতার করে বন্দী করা হয়েছে, তখন বাহ্যত তাওবা করেছে। আর যিন্দিকের তাওবা কবূল করা হবে কি’না এ নিয়ে আইম্মায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ আছে। অধিকাংশের মত হল, কবূল হবে না।”- মাজমুউল ফতাওয়া ২/৪৮০-৪৮৩
Comment