ফতোয়া দেয়ার জন্য দুই ধরণের ইলম দরকার:
ক. যে বিষয়ে ফতোয়া দিতে যাচ্ছে, সে বিষয়ের বাস্তবতা বুঝা। সে বিষয়টি পরিপূর্ণ না জেনে ও না বুঝে ফতোয়া দেয়া যাবে না। যেমন, ঝগড়া লেগে স্বামী স্ত্রীকে তালাক জাতীয় কিছু শব্দ বলেছে। মুফতি সাহেবের কাছে জানতে চাওয়া হল, তালাক হবে কি’না? এবং হলে কয় তালাক এবং কোন ধরণের তালাক- রজয়ী না’কি বাইন? এখন মুফতি সাহেবকে প্রথমেই উক্ত ঘটনাটি ভাল করে জানতে ও বুঝতে হবে।
খ. উক্ত বিষয় বা ঘটনার শরয়ী বিধান। যেমন, উপরোক্ত তালাকের মাসআলায় মুফতি সাহেব ঘটনাটি ভাল করে বুঝার পর উক্ত শব্দ দ্বারা ঐ অবস্থায় কি ধরণের তালাক হয় এবং কয় তালাক হয়- সে বিষয়ে তার যথাযথ শরয়ী ইলম থাকতে হবে। ঘটনাটি ভাল করে বুঝার পর এবং সে বিষয়ে শরয়ী বিধান ভাল করে জানা-বুঝার পরই কেবল ফতোয়া দিতে পারবে। এর কোন একটায় কমতি থাকলে ফতোয়া দেয়া জায়েয হবে না।
ইবনুল কায়্যিম রহ. (৭৫১ হি.) বলেন,
“মুফতি বা বিচারক দুই ধরণের জ্ঞান ব্যতীত সঠিক ফতোয়া ও সঠিক বিচার করতে সক্ষম হবে না:
এক. ঘটনার প্রকৃত অবস্থা ভালভাবে জানা ও বুঝা এবং আলামত, নিদর্শন ও সার্বিক অবস্থাদি পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার প্রকৃত ইলম উদ্ধার করা;
দুই. ঘটনার (শরয়ী) বিধান বুঝা। আর তা হচ্ছে, আল্লাহ তাআলা এই ঘটনায় তার কিতাবে বা তার রাসূলের যবানে কি নির্দেশ দিয়েছেন তা বুঝা অতঃপর একটিকে অপরটির উপর প্রয়োগ করা।”- ই’লামুল মুআককিয়িন: ২/১৬৫
উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে জিহাদ বিষয়ে ফতোয়া দিতে হলে প্রথমে জিহাদের বাস্তব ময়দান, মুজাহিদিনে কেরামের অবস্থা এবং তাদের প্রতিপক্ষ তাগুত-কাফের ও মুরতাদদের অবস্থা সম্পর্কে যথাযথ ও নির্ভরযোগ্য ইলম লাগবে। দ্বিতীয়ত বাস্তব ময়দান বুঝার পর জিহাদের ব্যাপারে যথাযথ ও সহীহ শরয়ী ইলম লাগবে। যাদের শরয়ী ইলম নেই তাদের জন্য যেমন ফতোয়া দেয়া জায়েয নেই, ময়দানের জ্ঞান যাদের নেই তাদের জন্যও ফতোয়া দেয়া জায়েয নেই। অতএব, একজন জেনারেল শিক্ষিত ব্যক্তি জিহাদের বাস্তব ময়দানের ব্যাপারে যতই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হোন না কেন, তার জন্য ফতোয়া দেয়া জায়েয নয়। তদ্রূপ, যত বড় আলেমই হোন না কেন, জিহাদের ময়দানের বাস্তবতা জানা না থাকলে তার জন্যও ফতোয়া দেয়া জায়েয নেই। আর যাদের উভয়টাতেই কমতি আছে- যেমনটা বর্তমানে যারা জিহাদ ও মুজাহিদিনের ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন ও ভুল ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের মাঝে দেখতে পাচ্ছি- তাদের জন্য তো এর আগেই নাজায়েয।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
“জিহাদি বিষয়াশয়ে আবশ্যক হল ঐ সকল সহীহ দ্বীনদারদের রায় গ্রহণ করা, সাধারণ দুনিয়াবাসীর অবস্থাদি সম্পর্কে যাদের অভিজ্ঞতা আছে। সাধারণদের রায় গ্রহণ না করা, সাধারণত যারা দ্বীনের ভাসা ভাসা দিকটাই দেখে থাকে। এদের রায় গ্রহণ করা হবে না। তদ্রূপ, ঐসব দ্বীনদারের রায়ও গ্রহণ করা হবে না, দুনিয়ার ব্যাপারে যাদের অভিজ্ঞতা নেই।”- আলইখতিয়ারাতুল ফিকহিয়্যাহ: ৬০৯-৬১০
বর্তমানে যারা জিহাদ ও মুজাহিদিনের ব্যাপারে কথা বলছেন, তারা যদি এ উসূলটি রক্ষা করে কথা বলতেন, তাহলে কতই না ভাল হত!
ক. যে বিষয়ে ফতোয়া দিতে যাচ্ছে, সে বিষয়ের বাস্তবতা বুঝা। সে বিষয়টি পরিপূর্ণ না জেনে ও না বুঝে ফতোয়া দেয়া যাবে না। যেমন, ঝগড়া লেগে স্বামী স্ত্রীকে তালাক জাতীয় কিছু শব্দ বলেছে। মুফতি সাহেবের কাছে জানতে চাওয়া হল, তালাক হবে কি’না? এবং হলে কয় তালাক এবং কোন ধরণের তালাক- রজয়ী না’কি বাইন? এখন মুফতি সাহেবকে প্রথমেই উক্ত ঘটনাটি ভাল করে জানতে ও বুঝতে হবে।
খ. উক্ত বিষয় বা ঘটনার শরয়ী বিধান। যেমন, উপরোক্ত তালাকের মাসআলায় মুফতি সাহেব ঘটনাটি ভাল করে বুঝার পর উক্ত শব্দ দ্বারা ঐ অবস্থায় কি ধরণের তালাক হয় এবং কয় তালাক হয়- সে বিষয়ে তার যথাযথ শরয়ী ইলম থাকতে হবে। ঘটনাটি ভাল করে বুঝার পর এবং সে বিষয়ে শরয়ী বিধান ভাল করে জানা-বুঝার পরই কেবল ফতোয়া দিতে পারবে। এর কোন একটায় কমতি থাকলে ফতোয়া দেয়া জায়েয হবে না।
ইবনুল কায়্যিম রহ. (৭৫১ হি.) বলেন,
ولا يتمكن المفتي [ولا] الحاكم من الفتوى والحكم بالحق إلا بنوعين من الفهم
أحدهما: فهم الواقع والفقه فيه، واستنباط علم حقيقة ما وقع بالقرائن والأمارات والعلامات، حتى يحيط به علمًا
والنوع الثاني: فهم الواجب في الواقع، وهو فهم حُكْم اللَّه الذي حَكَم به في كتابه أو على لسان رسوله -صلى اللَّه عليه وسلم- في هذا الواقع، ثم يطبق أحدهما على الآخر. اهـ
أحدهما: فهم الواقع والفقه فيه، واستنباط علم حقيقة ما وقع بالقرائن والأمارات والعلامات، حتى يحيط به علمًا
والنوع الثاني: فهم الواجب في الواقع، وهو فهم حُكْم اللَّه الذي حَكَم به في كتابه أو على لسان رسوله -صلى اللَّه عليه وسلم- في هذا الواقع، ثم يطبق أحدهما على الآخر. اهـ
“মুফতি বা বিচারক দুই ধরণের জ্ঞান ব্যতীত সঠিক ফতোয়া ও সঠিক বিচার করতে সক্ষম হবে না:
এক. ঘটনার প্রকৃত অবস্থা ভালভাবে জানা ও বুঝা এবং আলামত, নিদর্শন ও সার্বিক অবস্থাদি পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার প্রকৃত ইলম উদ্ধার করা;
দুই. ঘটনার (শরয়ী) বিধান বুঝা। আর তা হচ্ছে, আল্লাহ তাআলা এই ঘটনায় তার কিতাবে বা তার রাসূলের যবানে কি নির্দেশ দিয়েছেন তা বুঝা অতঃপর একটিকে অপরটির উপর প্রয়োগ করা।”- ই’লামুল মুআককিয়িন: ২/১৬৫
উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে জিহাদ বিষয়ে ফতোয়া দিতে হলে প্রথমে জিহাদের বাস্তব ময়দান, মুজাহিদিনে কেরামের অবস্থা এবং তাদের প্রতিপক্ষ তাগুত-কাফের ও মুরতাদদের অবস্থা সম্পর্কে যথাযথ ও নির্ভরযোগ্য ইলম লাগবে। দ্বিতীয়ত বাস্তব ময়দান বুঝার পর জিহাদের ব্যাপারে যথাযথ ও সহীহ শরয়ী ইলম লাগবে। যাদের শরয়ী ইলম নেই তাদের জন্য যেমন ফতোয়া দেয়া জায়েয নেই, ময়দানের জ্ঞান যাদের নেই তাদের জন্যও ফতোয়া দেয়া জায়েয নেই। অতএব, একজন জেনারেল শিক্ষিত ব্যক্তি জিহাদের বাস্তব ময়দানের ব্যাপারে যতই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হোন না কেন, তার জন্য ফতোয়া দেয়া জায়েয নয়। তদ্রূপ, যত বড় আলেমই হোন না কেন, জিহাদের ময়দানের বাস্তবতা জানা না থাকলে তার জন্যও ফতোয়া দেয়া জায়েয নেই। আর যাদের উভয়টাতেই কমতি আছে- যেমনটা বর্তমানে যারা জিহাদ ও মুজাহিদিনের ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন ও ভুল ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের মাঝে দেখতে পাচ্ছি- তাদের জন্য তো এর আগেই নাজায়েয।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
والواجب أن يعتبر في أمور الجهاد برأي أهل الدين الصحيح الذين لهم خبرة بما عليه أهل الدنيا دون أهل الدنيا الذين يغلب عليهم النظر في ظاهر الدين فلا يؤخذ برأيهم ولا برأي أهل الدين الذين لا خبرة لهم في الدنيا. اهـ الاختيارات الفقهية 609-610
“জিহাদি বিষয়াশয়ে আবশ্যক হল ঐ সকল সহীহ দ্বীনদারদের রায় গ্রহণ করা, সাধারণ দুনিয়াবাসীর অবস্থাদি সম্পর্কে যাদের অভিজ্ঞতা আছে। সাধারণদের রায় গ্রহণ না করা, সাধারণত যারা দ্বীনের ভাসা ভাসা দিকটাই দেখে থাকে। এদের রায় গ্রহণ করা হবে না। তদ্রূপ, ঐসব দ্বীনদারের রায়ও গ্রহণ করা হবে না, দুনিয়ার ব্যাপারে যাদের অভিজ্ঞতা নেই।”- আলইখতিয়ারাতুল ফিকহিয়্যাহ: ৬০৯-৬১০
বর্তমানে যারা জিহাদ ও মুজাহিদিনের ব্যাপারে কথা বলছেন, তারা যদি এ উসূলটি রক্ষা করে কথা বলতেন, তাহলে কতই না ভাল হত!
Comment