Announcement

Collapse
No announcement yet.

‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’

    ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ এ কথা বলে আমাদের সমাজে বিবাহ সংক্রান্ত অনেক অন্যায় অপরাধকে সামাজিক বৈধতা দেয়া হয়। মেয়ে দেখা থেকে শুরু করে ওলীমা/বৌভাত পর্যন্ত শত শত অন্যায় অপরাধকে ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ বলে খুব সহজে মেনে নেয়া হয়। বে-পর্দা, বেহায়াপনা, নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা, মদ্যপান এবং হিন্দুয়ানী বিভিন্ন রসম রেওয়াজকে ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ বলে বৈধতা দেওয়া হয়। উঠতি বয়সী পোলাপানের অনেক অন্যায় আবদার পুরা করা হয়। মদপান করতে পর্যন্ত টাকা দেয়া হয়।

    নামকা ওয়াস্তের মুসলমানদের কথা বাদই দিলাম। তারাতো আর আখেরাত ও শরীয়তের ধার ধারে না। তারা যেমন খুশি তেমন চলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের সমাজে যারা প্রাক্টিসিং মুসলিম তাদের অনেকেও বিয়ের মধ্যে হাজারো রসম-রেওয়াজ পালন করে। এমনকি যে কওমী মাদরাসা পড়ুয়াদেরকেই আমরা সাধারণত দ্বীনদার শ্রেণীর মধ্য থেকে প্রথম শ্রেণীর দ্বীনদার মনে করে থাকি। তাদের অনেকের বিয়েতেও গায়ে হলুদ করা হয়, ছবি তোলা হয়, ভিডিও করা হয়। ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ নামক ইমোশনাল কথাটা বলেই তারা এসব করে। দ্বীনের হাকীকী বুঝ কম থাকায় কওমী মাদরাসার অধিকাংশ ছাত্রীও এমন বিয়েই আশা করছে, যে বিয়েতে জমকালো গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান হবে, বিউটি পার্লারে গিয়ে রাজকীয় (?) সজ্জা গ্রহণ করা হবে, চোখ ধাঁধাঁনো লাইটিং করা হবে, কমিউনিটি সেন্টারে বিশাল আয়োজন করে, গানবাদ্য বাজিয়ে মানুষকে খাওয়ানো হবে ইত্যাদি ইত্যাদি আরো কতো অন্যায় আকাঙ্ক্ষা!।

    আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন এবং এমন মুসলিম হতে চান যেমনটা হওয়া আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা আপনার থেকে আশা করেন, তাহলে আপনাকে সর্বক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় ইসলামের সমস্ত বিধান ফলো করতে হবে। বিয়ে একবার করেন কিংবা দশবার করেন সেটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু এ জাতীয় ইমোশনাল কথা বলে শরীয়তগর্হিত কাজ করা, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া এবং নিজের সামনে ঘটতে থাকা অগনিত হারামকে মেনে নেয়ার কোনো সুযোগ শরীয়তে নেই। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পূর্ণাঙ্গরূপে ইসলামে দাখেল হতে বলেছেন। তাই আমাকে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হতে হবে। আল্লাহর সমস্ত বিধান সর্বাবস্থায় পালন করতে হবে। আচ্ছা ধরমাল, বিয়ে আপনি জীবনে একটাই করলেন, একবারই করলেন। আর সেই একবারই যদি সমস্ত হারাম আর অন্যায়কে মিশ্রণ করে করেন, তাহলে বিষয়টা কেমন হবে? আপনার জীবনের মহান একটা কাজের সূচনাই হল হারামের মিশ্রণে। আপনি যদি ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ এর প্রবক্তা হোন, তাহলে তো এটা শুধরানোরও কোনো সুযোগ আপনার থাকবে না। আপনি একটা বিয়েই করলেন, আর সেটা সমস্ত হারামের মিশ্রণেই করলেন, ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না! আল্লাহ তাআলার বান্দা হিসাবে আপনার আমার জন্য কিন্তু বিষয়টা খুবই খারাপ হল। তাই হে প্রিয় ভাই ও বোন! আপনি জীবনে বিয়ে একটা করেন কিংবা একাধিক করেন, আপনি যেহেতু আল্লাহর বান্দা, তাই আপনাকে অন্যান্য কাজের মত বিয়েটাও পরিপূর্ণরূপে শরীয়তের সীমার ভিতর থেকেই করতে হবে। কোনোভাবে কোনো বাহানাতেই বিয়েতে শরীয়তগর্হিত কোনো কাজ করা যাবে না, অন্যকেও করতে দেওয়া যাবে না। আপনি নিজেও করবেন না, আপনার ভাই-ব্রাদারকেও করতে দিবেন না।

    ‘আমার বিয়েটা পরিপূর্ণরূপে কুরআন-সুন্নাহের আলোকে হোক, নবীজী সা. এবং সাহাবায়ে কেরাম রাযি. এর বিয়ের মত সাদামাটাভাবে হোক’-এমন মানসিকতাসম্পন্ন যুবক-যুবতীর আজ খুব অভাব। মুসলিম হয়েও বিয়ের ইসলামী রীতি-নীতিতে আমরা বিশ্বাসী হচ্ছি না; বিয়ে সম্পর্কীয় ইসলামের দিকনির্দেশনা আমরা মেনে চলছি না। উল্টো হিন্দি সিরিয়াল আর সিনেমায় দেখা হিন্দুদের বিয়ের নানান রসম-রেওয়াজ পালনে আমরা প্রতিযোগিতা করছি, বর্গবোধ করছি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাজত করেন। জীবনের সর্বক্ষেত্রে পরিপূর্ণভাবে ইসলামকে মেনে চলার তাওফীক দান করেন। আমীন।

    বিয়ে জীবনে একটাই নয়
    যেহেতু পৃথিবীটা সংঘাতময়। যুদ্ধবিগ্রহ পৃথিবীতে চলছে এবং চলবে। আর যুদ্ধবিগ্রহে নারীদের তুলনায় পুরুষরাই বেশি নিহত হয়, তাই পৃথিবীর শুরু থেকেই পৃথিবীতে নারীদের সংখ্যা বেশি; আর পুরুষের সংখ্যা কম। বর্তমানেও পৃথিবীতে নারীদের তুলনায় পুরুষের সংখ্যা কম। বিশেষত আফগান, আরাকান, কাশ্মীর, সিরিয়া ফিলিস্তীনসহ যেসব এলাকায় যুদ্ধবিগ্রহ চলছে সেখানে তো পুরুষের সংখ্যা অনেক কম। হাদীসে এসেছে, কিয়ামাতের পূর্বে এমন একটা সময় আসবে যখন অধিক পরিমাণে যুদ্ধের কারণে পুরুষের সংখ্যা অনেক কমে যাবে, আর মহিলাদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে, এমনকি ৫০জন নারীর জন্য একজন তত্ত্বাবধায়ক পুরুষ থাকবে। (সহীহ বুখারী হাদীস নং-৮১)

    ‘পুরুষের সংখ্যা কম হওয়া এবং ধারাবাহিক কমতে থাকা, আর নারীর সংখ্যা বেশি হওয়া এবং ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়া’- এই একটা পয়েন্ট যদি আমাদের মা-বোনগণ ইনসাফ, যুক্তি এবং ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখেন, তাহলেই তারা বহুবিবাহের প্রয়োজনীয়তা ভাল রকম বুঝতে পারবেন বলে আশা করি। মনে করুন পৃথিবীতে বর্তমানে পুরুষ আছে ১০০জন। আর নারী আছে ১২০জন। প্রত্যেক পুরুষ যদি একটি করে বিয়ে করে, তাহলে ২০জন মেয়ে অবিবাহিত থেকে যাবে। তাদেরকে বিয়ের করারমত আর কোনো পুরুষ থাকবে না। সারাটা জীবন তাদেরকে অবিবাহিত অবস্থায় কাটিয়ে দিতে হবে। নারী হয়েও নারিত্বের স্বাদ, মাতৃত্বের স্বাদ তারা আস্বাদন করতে পারবে না। স্বামী নামক মহাআশ্রয় থেকে তারা বঞ্চিচ হবে। আচ্ছা আপনি, আপনার বোন কিংবা আপনার মেয়ের ক্ষেত্রে যদি এমনটি ঘটে, তাহলে আপনার কেমন লাগবে? ৩০ বছর হয়ে গেলো তারপরও আপনার মেয়েটার বিয়ে হচ্ছে না। রূপে, গুণে সে কোনো অংশে কম নয়, কিন্তু তারপরও বরের অভাবে তার বিয়ে হচ্ছে না। এমতাবস্থায় মেয়েটার আড়ালে আবডালে চোখের পানি বিসর্জন, দীর্ঘ শ্বাস আর সারাক্ষণ মনমরা হয়ে বসে থাকার দৃশ্যগুলো কি আপনাকে আনন্দিত করবে? নিশ্চয়ই নয়। যে বিষয়টায় আপনি, আপনার বোন ও মেয়ে কষ্ট পাচ্ছে, সেই একই বিষয় আরেকজন মুসলিম বোনের জন্য কি কষ্টকর নয়? মুসলিম আরেক মুসলিম ভাই-বোনের জন্য কল্যাণকামী হওয়া ছাড়া পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হতে পারে না। আপনি নিজের সুখ-শান্তি ষোল আনা পেতে চান, কিন্তু সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আরেক বোনের কষ্ট দূর করতে রাজি নন, তাহলে আপনি আসলে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম নন। যে ২০জন মেয়ে অবিবাহিত থেকে যাচ্ছে তাদের প্রত্যেকেরই বিয়ে হওয়া সম্ভব, যদি যাদের বিয়ে হয়েছে তারা একটু ছাড় দেয়, অবিবাহিতদের প্রতি সাহায্য, সহানুভূতির হস্ত প্রসারিত করে। ১০০ পুরুষের মধ্যে এমন ২০জন পুরুষ অবশ্যই পাওয়া যাবে, যারা একাধিক স্ত্রী চালাতে সক্ষম। যেসব পুরুষের শারীরিক এবং আর্থিক সংগতি আছে, তারা যদি একাধিক বিয়ে করতে আগ্রহবোধ করে এবং তাদের স্ত্রীগণ তাদেরকে উৎসাহিত করে, তাহলে কিন্তু ঐ ২০টি মেয়েকে অবিবাহিত থেকে চোখের পানি ঝরাতে হয় না। ভাই ও বাবার সংসারে ভগ্নহৃদয়ে অপমানিত অবস্থায় দিন গুজরান করতে হয় না। যৌবনের তাড়না থেকে বাঁচতে নফসের সাথে যুদ্ধ করতে হয় না। তারাও কিন্তু নারিত্ব ও মাতৃত্বের স্বাদ আস্বাদন করার সুযোগ পেতে পারে। স্বামীর সংসারে যেতে পারে। নারী জীবনের পূর্ণতা লাভ করতে পারে। হালালভাবে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারে।

    ইসলাম পুরুষকে একত্রে চারটি বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছে। একাধিক বিবাহকে আল্লাহ তাআলা পুরুষের জন্য হালাল করেছেন। বিবাহের আলোচনা আল্লাহ তাআলা শুরুই করেছেন এভাবে ‘‘ তোমরা তোমাদের পছন্দনীয় নারীদের মধ্য থেকে দুই দুই তিন তিন এবং চার চারটি বিয়ে কর, তবে যদি আশংকা করো যে, ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে একটার উপরই ক্ষ্যান্ত করো’’ (নিসা:৩) যেহেতু আল্লাহ তাআলা পুরুষদেরকে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রতি আগ্রহ দিয়েই সৃষ্টি করেছেন, তাই একাধিক স্ত্রী গ্রহণের কথা বলেই বিবাহের আলোচনাটা শুরু করেছেন।

    আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা হল, আমি এ পর্যন্ত কম করে হলেও আমার ৪০-৫০জন সাথী, সহপাঠী ও সহকর্মীর সাথে বৈবাহিক জীবন নিয়ে আলোচনা করেছি। আরেকটি বিয়ে করতে মন চায় কিনা? জানতে চয়েছি। স্ত্রীকে নিয়ে সুখে থাকা সত্ত্বেও তারা সকলেই বলেছেন, ‘ হরে দোস্ত! আরেকটা করতে মন চায়, কিন্তু উপায় কী? ম্যাডামতো কোনোভাবেই মানবে না। আর সমাজের লোকজন তো ছি ছি করবে।’ এই লেখাটা যখন লিখছি, তখনই আমি আমার এক সদ্য বিবাহিত সহকর্মীকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ শাফীন ভাই! আপনি তো কিছু দিন আগেই বিয়ে করলেন, এখন কি আপনার আরেকটা বিয়ে করতে মন চায়? সে অকপটে স্বীকার করল, স্ত্রী যদি রাজী থাকতো আর আমার টাকা পয়সা থাকতো, তাহলে আরেকটা করতাম।’ আসলে প্রত্যেক পুরুষই একাধিক বিয়ের প্রতি আগ্রহ বোধ করে। কিন্তু কেউ অর্থের অভাবে পারে না, কেউ স্ত্রীর কারণে পারে না, আর কেউ সমাজের কারণে পারে না। শরীয়তমতে একাধিক বিবাহে সক্ষম এবং আগ্রহী অনেকে সারা জীবনে ভুল করেও একবার এ কথাটা মুখে উচ্চারণ করার সাহস পায় না। সামর্থ্যবান অধিকাংশ পুরুষ একাধিক বিয়ে সম্পর্কীয় নিজের স্বাদ, আহ্লাদ, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষাকে বুকের ভিতর চেপে রেখেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়। সাধারণত টাকা হলেই পুরুষগণ একাধিক নারীসঙ্গ লাভে উদগ্রীব হয়ে ওঠে। তখন যাদের মধ্যে আখেরাতের ভয় আছে, যার ভিতর আল্লাহর ভয় কাজ করে, তারা অন্যায় পথে পা বাড়ায় না। আবার সমাজ ও স্ত্রীর কারণে সে আরেকটা বিয়েও করতে পারে না। তখন এই পুরুষটা মানসিক এমন এক অশান্তিতে ভুগতে থাকে, যেটা সে অন্য কারো কাছে শেয়ারও করতে পারে না। আমাদের এই পঁচা, ঘুনে ধরা দুষ্ট সমাজের কারণে, সে তার হালাল ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারে না। আর এর ফলশ্রুতিতে আরেকটা বিধবা, বিপদগ্রস্ত মেয়ে, বহুবয়সী একটা কুমারী মেয়ে স্বামীর আশ্রয় থেকে মাহরুম হয়। সমাজের বোঝা হয়, পরিবারের বোঝা হয়। আর অন্যদিকে টাকাওয়ালা যে পুরুষের মধ্যে দ্বীনদারী নেই, আল্লাহর ভয় নেই, সে নিজের চাহিদা মিটানোর জন্য হারাম পথের আশ্রয় নেয়। স্ত্রী, সন্তান ও সমাজের লোকের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে পতিতাপল্লী আর আবাসিক হোটেলগুলোতে গিয়ে পড়ে থাকে। আপনি মানেন আর না মানেন এটাই হল চোখে দেখা বাস্তবতা। গুরুতর বাস্তবতা বুঝানোর জন্য আমি কথাগুলো খোলামেলা বলে ফেললাম। অতএব, আপনি আপনার টাকাওয়ালা স্বামীকে যদি খুশি করতে চান, তার মনের অব্যক্ত আকাঙ্ক্ষা পুরা করতে চান, তাকে যদি হারাম থেকে বাঁচাতে চান, তাহলে নিজ দায়িত্বে তার জন্য পাত্রী চয়ন করে তার বিয়ের ব্যবস্থা করে দিন।

    মূল কথা হলো, নারী জাতির কল্যাণের স্বার্থেই নারীকে একাধিক বিয়ের বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে হবে। আর পুরুষও যেহেতু স্বাভাবিকভাবে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রতি আগ্রহী, তাই সক্ষম পুরুষদেরকেও একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। যাতে মুসলিম সমাজের বিবাহ উপযুক্ত কোনো নারী (চাই সে অল্পবয়স্কা বিধবা হোক, ডিভোর্সি হোক কিংবা বহুবয়সী কুমারী হোক অথবা এতীম, গারীব অসহায় হোক) স্বামী ছাড়া না থাকে। দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা চতুর্থ স্ত্রী হতে যেন মেয়েরা কোনো লজ্জাবোধ না করে সে ব্যাপারে মেয়েদেরকে কাউন্সিলিং করতে হবে। ‘সতীনের ঘর করবো না, প্রয়োজনে সারাজীবন একাকী কাটিয়ে দিবো’- এ জাতীয় জাহিলী চিন্তাভাবনা থেকে মুসলিম রমণীদের বের হয়ে আসতে হবে। হে মুসলিম বোন! একটু ভেবে দেখুন, আপনার চেয়ে হাজারোগুণ দামি ও মর্যাদাবান এই উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযি. এর কন্যা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাযি. কিন্তু সতীনের ঘর করেছেন। একজন দুইজন নয়; নয়জন সতীনের ঘর করেছেন। উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. (যার ব্যাপারে নবীজী সা. বলেছেন, আমার পরে যদি কোনো নবী হতো, তাহলে উমর হতো) এর মেয়ে হাফসা রাযি.ও কিন্তু সতীনের ঘর করেছেন। তাই সতীনের ঘর করা কোনো দোষের বিষয় নয়। দোষের বিষয় হলে, তাঁদেরমত সম্মানিতাগণ সতীনের ঘর করতেন না।

    পুরুষের একাধিক বিবাহকে আমাদের সমাজে যিনা-ব্যভিচারের চেয়েও খারাপ দৃষ্টিতে দেখা হয়। কেউ যিনা করলে তাকে যতটা না খারাপ বলা হয়, কোনো পুরুষ যদি একাধিক বিয়ে করে ফেলে, তাহলে সমাজের লোকজন তাকে যিনাকারীর চেয়েও বেশি খারাপ বলে। তাকে লুইচ্ছা, লম্পট-চরিত্রহীন বলে আখ্যায়িত করে। একজন পুরুষ হালাল পন্থায় জৈবিক চাহিদা পূরণ করায় সে লম্পট ও চরিত্রহীন হবে কেন? যদি হালাল পন্থায় জৈবিক চাহিদা পূরণ করাটা অপরাধই হয়, তাহলে সে একই অপরাধতো প্রথমবার বিয়ের সময়ও করেছে। তখন তাকে লম্পট বলা হচ্ছে না কেন? একাধিক বিয়ে করার কারণে যদি আমরা কাউকে লম্পট বা চরিত্রহীন বলি, তাহলে এই গালিটা সর্বশেষ কোথায় এবং কার উপর গিয়ে পতিত হয় তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণের মধ্য থেকে অধিকাংশ আম্বিয়াই একাধিক বিবাহ করেছেন। আমাদের প্রাণাধিক প্রিয় নবীজী সা. ১১টি বিবাহ করেছেন। চার খলীফা এবং বড় বড় প্রায় সব সাহাবীই একাধিক বিবাহ করেছেন। দ্বীন ও দুনিয়ার ক্ষেত্রে যারা আমাদের আদর্শ তারা সকলেই একাধিক বিবাহ করেছেন। তাই সামর্থ্যবানদের জন্য একাধিক বিবাহকে যদি সুন্নাত বলা হয়, তাহলেও অত্যুক্তি হবে না। সেক্ষেত্রে আমরা একাধিক বিবাহকারীকে কীভাবে কোন সাহসে লম্পট ও চরিত্রহীন বলতে পারি? একটা হালাল বরং সুন্নাত কাজ একজন করেছে, আর আপনি তাকে শুধু সেই হালাল/সুন্নাত কাজ করার কারণেই চরিত্রহীন বললেন, লম্পট বললেন, তাহলে আপনার ঈমানের কী হালত হবে ভেবে দেখেছেন কি? শরীয়তের কোনো হালাল বিধানকে আপনি যদি তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন, আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন, অপছন্দ করেন, বিধানটা যদি আপনার কাছে অসহ্য লাগে, তাহলে কি আপনার ঈমান থাকবে? আপনি কি মুসলিম থাকবেন? আপনার ঈমান কি আল্লাহ তাআলার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? আপনি কি আখেরাতে প্রজ্জলিত জাহান্নামের অগ্নিশিখা থেকে মুক্তি পাবেন? রক্ত, পুঁজ আর গরম পানি ভক্ষণ থেকে বাঁচতে পারবেন? পরকালীন দিবসের তুলনায় একদিন কিংবা অর্ধদিনতুল্য এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার জীবনের সুখ-শান্তি আর স্বার্থপরতা টিকিয়ে রাখার জন্য আপনি আপনার চিরস্থায়ী আখেরাতের সুখ-শান্তিকে হাত ছাড়া করবেন? এটা কোনো জ্ঞানী আর বুদ্ধিমতীর কাজ হতে পারে? এটা কোনো মুত্তাকী আর পরহেযগার বান্দীর কাজ হতে পারে? এমন কাজ আখেরাতে বিশ্বাসী কোনো নারী করতে পারে?!

    এই দুনিয়ার সংক্ষিপ্ত জীবনটা শেষ হলেই কিন্তু আমরা আখেরাতের জীবনে পদার্পণ করবো। আল্লাহ তাআলা যখন আমাদেরকে জান্নাতে নিবেন, তখন কিন্তু সেখানে প্রত্যেক পুরুষকে একাধিক স্ত্রী দান করা হবে। দুনিয়ার স্ত্রী ছাড়াও প্রত্যেককে কমপক্ষে দুইজন হুর দান করা হবে। আমলের কমবেশি হিসেবে হুর প্রাপ্তির মধ্যেও কমবেশি হবে। যারা শহীদ হবে, দুনিয়ার স্ত্রী ব্যতীত তাদেরকে আরও ৭২জন হুরেঈন দান করা হবে। হে বোন! চিরস্থায়ী আখেরাতের জীবন, যে জীবনের শুধু শুরু আছে শেষ নেই, সেই জীবনে কিন্তু আপনাকে সতীনের ঘরই করতে হবে। একজন দুইজন সতীন না, অনেক সতীনের সাথে মিলে মিশে ঘর করতে হবে। দু‘চার বছর নয়, লক্ষ কোটি বছর; বরং অশেষ অসীম সময় ধরে সতীনের ঘর করতে হবে। আগামী কালই চিরস্থায়ীভাবে আপনি যে অবস্থার সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন, আজকেই সেটার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন না কেন? আজকে আপনি যদি সতীনের ঘর করে যান আর আপনার সহমর্মিতায় আরেকজন মুসলিম নারী বিপদ থেকে উদ্ধার হয়, তাহলে আপনার সাওয়াবও হল আর সতীনের সংসার করার প্রাক্টিক্যালও হয়ে গেল। তাই যোগ্য ও উপযুক্ত স্বামীর ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ বিয়ের বিষয়কে খুব বড় করে না দেখে ছোট করে দেখার চেষ্টা করুন। মহিলা সাহাবীগণ এ বিষয়টাকে যেভাবে দেখতেন এবং তাঁরা যেভাবে নিতেন সেভাবে দেখার এবং সেভাবে মেনে নেয়ার সংকল্প করুন। আপনি মহিলা সাহাবীদের থেকে মান-মর্যাদায় বড় নন। তাঁদের মত মান-মর্যাদা অর্জন আপনার পক্ষে সম্ভবও নয়। আমাদের কেউ যদি সারাটা জীবন সালাত আর সিয়ামের মধ্যেই কাটিয়ে দেয়, তারপরও আমরা তাঁদের পায়ের ধূলির সমানও হতে পারবো না। তাঁরা যদি এত বড় মর্যাদার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও স্বামীর একাধিক বিবাহকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেন, তাহলে আপনি কেন পারবেন না? পরকালীন জীবন ও জান্নাতের সুখ-শান্তির বিষয়টা বেশি বেশি ভাবার চেষ্টা করেুন। আখেরাতমুখী জীবন গড়ুন। দেখবেন, তখন দুনিয়া আপনার কাছে তুচ্ছ মনে হবে। দুনিয়ার ঝামেলা থেকে আপনি যতটা দূরে থাকতে পারবেন, আপনার ততটাই ভাল লাগবে। তাই সতীনকে তখন প্রতিপক্ষ মনে হবে না, বরং সাহায্যকারী মনে হবে। তার প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষের পরিবর্তে সহানুভূতি কাজ করবে। কারণ, সে কিছুক্ষণের জন্য হলেও আপনার স্বামীকে সামলে নিয়ে আপনাকে ইবাদাতের সুযোগ করে দিয়েছে; আখেরাত অর্জনের পথটাকে আরো সুগম ও প্রশস্ত করে দিয়েছে।

    সমস্ত আলামত বলছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই (আল্লাহ তাআলা ভাল জানেন, তবে মনে হচ্ছে ২০২৫ইং এর মধ্যেই) আমাদের দেশে বড় রকমের যুদ্ধ-বিগ্রহ ও হত্যাকাণ্ড শুরু হবে। যুদ্ধ শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই মুসলিম নারীদের তুলনায় মুসলিম পুরুষরাই বেশি নিহত হবে। তখন ব্যাপকহারে সমাজে বিধবার সংখ্যা বাড়তে থাকবে। প্রতিপক্ষ যেহেতু আমাদের মুসলিম যুবক শ্রেণীকেই প্রধানত টার্গেট করবে। তাই বলা যায়, যুদ্ধ বাঁধলে যুবতী বিধবার সংখ্যাই ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সেক্ষেত্রে আমাদের বেঁচে যাওয়া সক্ষম বিবাহিত ভাইয়েরা যদি সেই যুবতী বিধবাদেরকে দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা চতুর্থ স্ত্রীরূপে গ্রহণের জন্য এগিয়ে আসে, আর বিধবারাও স্বামীর একক স্ত্রী হওয়ার আশায় বসে না থেকে মাসনা, সুলাসা কিংবা রুবাআ হতে রাজি হয়ে যায় এবং কোনো পক্ষের পরিবার থেকে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া না থাকে, তাহলে কিন্তু আসানীর সাথে অনেক বিধবার সহজসংগতি হয়ে যাবে। স্বামীর আশ্রয় ও স্বামীর ছায়া ছাড়া উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তাহিনতার মধ্যে জীবন টাকাতে হবে না। সাহাবায়ে কেরাম রাযি. এর মধ্যে কিন্তু এমনই হতো। কোনো সাহাবী শহীদ হলে তার স্ত্রীকে অন্য কোনো সাহাবী বিয়ে করে নিতেন। শহীদের স্ত্রীকে স্বামী ছাড়া থাকতে দেওয়া হতো না। আর সেই স্ত্রীও আরেকজনের ২য়, ৩য় *কিংবা ৪র্থ স্ত্রী হতে কোনো লজ্জা বোধ করতেন না; হীনতার শিকার হতেন না। কারণ, আল্লাহ তাআলা যেহেতু বিধানটা দিয়েছেন, তাই এটা কোনো লজ্জা বা হীনতার বিষয় হতেই পারে না। মূলত আমরা আমাদের জাহেলী সমাজ ব্যবস্থা এবং হিন্দুয়ানী রসম-রেওয়াজে নিমজ্জিত হওয়ার কারণে পুরুষের একাধিক বিবাহ এবং মেয়েদের জন্য কারো ২য়, ৩য় বা ৪র্থ স্ত্রী হওয়াকে দুষণীয় মনে করে থাকি। ইসলামী শরীয়তের সাথে আমাদের এই ‘মনে করার’ কোনো দূরতম সম্পর্কও নেই। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পূর্ণাঙ্গরূপে শরীয়তের মধ্যে দাখেল হওয়ার এবং জাহেলী চিন্তা-ভাবনা পরিহার করার তাওফীক দান করেন।

    জিহাদ ও কিতালের বিষয়টা বর্তমানে যেমন পুরুষদের ঈমান পরীক্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, আমি মনে করি বহুবিবাহের বিষয়টা তেমনই মেয়েদের ঈমান পরীক্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে ইসলাম হলো পূর্ণাঙ্গরূপে আল্লাহ তাআলার হুকুমের সামনে আত্মসমর্পণের নাম। চাই সেই হুকুম আমার ইচ্ছা, চাহিদা ও খাহেশাতের পক্ষে হোক কিংবা বিপক্ষে হোক সেটা দেখার বিষয় নয়। পক্ষে হলেও ইসলামকে মানতে হবে, বিপক্ষে হলেও মানতে হবে। ইসলামের কোনো হুকুম আমার চাহিদা ও খাহেশাতের বিপরীত হওয়া সত্ত্বেও আমি তা মানছি কিনা, হুকুমটাকে আমি কবুল করছি কিনা এটা হলো দেখার বিষয়। জিহাদ ও কিতালের হুকুম আদায় কষ্টসাধ্য এবং আমার খাহেশাতের বিপরীত হওয়া সত্ত্বেও আমি যখন আমার সাধ্যমত এ পথে অগ্রসর হলাম, এর অর্থ হলো, আমি এ ক্ষেত্রে আমার খাহেশাতের পূজা না করে, আল্লাহ তাআলার হুকুমকে মেনে নিলাম এবং তাঁর হুকুমের সামনে আত্মসমর্পণ করলাম। ঠিক তেমনি মেয়েদের জন্য স্বামীর একাধিক স্ত্রী গ্রহণের বিষয়টা মেনে নেয়া কষ্টসাধ্য এবং স্বাভাবিকভাবেই তার চাহিদা ও খাহেশাতের বিপরীত কাজ। তা সত্ত্বেও যখন কোনো নারী ‘আল্লাহ তাআলা বহুবিবাহকে হালাল করেছেন এবং নবীজী সা. এর উপর আমলও করেছেন’- এসব বিষয় ভেবে নিজের চাহিদা ও খাহেশাতের পূজা না করে, স্বামীর একাধিক বিবাহকে মেনে নেয়, এর অর্থ হলো, সে আল্লাহ তাআলার শরীয়তের সামনে আত্মসমর্পণ করলো। খাহেশাতের বশবর্তী হয়ে, শরীয়তের বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করলো না।

    অনেক দ্বীনদার নারীও বহুবিবাহের বিষয়ে খেই হারিয়ে ফেলে। এ বিষয়ে কথা উঠলে এমন অসংলগ্ন কথা বলে, এমন আচরণ করে যার দ্বারা স্পষ্টতই বুঝে আসে, সে শরীয়তের এই হালাল বিষয়টাকে হালাল মানতে রাজি নয়। আল্লাহ তাআলা কর্তৃক ঘোষিত এই হালাল বিষয়টাকে সে কোনো ভাবেই গ্রহণ করতে পারছে না। এই হালালকে সে নারী জাতির উপর অন্যায়, অবিচার ও জুলুম মনে করছে। নাঊযুবিল্লাহ। যদি অবস্থা এমনই হয়, তাহলে কিন্তু তার ঈমান ধ্বংসের ব্যাপারে গ্যারান্টি দেওয়া যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের মুসলিম রমণীদেরকে এই অবস্থা থেকে হেফাজত করেন। তবে হ্যাঁ, সতীনের প্রতি স্বভাবজাত ঈর্ষা কোনো দুষণীয় নয় যদি তা হিংসা পর্যন্ত না পৌঁছে এবং তা সতীনের ক্ষতি করার প্রতি উৎসাহিত না করে।

    নোট: আমাদের সমাজের নারীরা বহুবিবাহকে ঘৃণা করার অনেকগুলো কারণের মধ্য থেকে একটা প্রধান কারণ হলো, আমাদের সমাজে ইতোপূর্বে যারা দুই, তিন কিংবা চারটি বিবাহ করেছে, হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া তাদের কেউ-ই স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ ও সমতা রক্ষা করেনি। দ্বিতীয়জন গ্রহণ করে প্রথম জনকে ভুলে গিয়েছে। তৃতীয়জনকে গ্রহণ করে আগের দুই বৌকে ভুলে গিয়েছে। তাদের ভরণ-পোষণ এবং তাদের হক আদায় করেনি। অযথা জুলুম-নির্যাতন করেছে। যেহেতু আমাদের সমাজের মেয়েরা যুগ যুগ ধরে বহু বিবাহের এই চিত্রই দেখে এসেছে, তাই তারা বহুবিবাহকে একটা ভয়ংকর বিষয় ভাবতে বাধ্য হয়েছে। আমরা পুরুষরাই তাদেরকে এরূপ ভাবতে বাধ্য করেছি। সেজন্য বহুবিবাহের ক্ষেত্রে মেয়েদের এই গায়রে শরয়ী দৃষ্টিকোণের দায়ভার এককভাবে তাদের উপর দেয়া যায় না। বরং পুরুষরাও এক্ষেত্রে সমান দায়ি।

    আমরা যদি মেয়েদের থেকে এটা আশা করি যে, বহু বিবাহের ক্ষেত্রে তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুক, এক্ষেত্রে তারা মহিলা সাহাবী এবং উম্মুল মুমিনীন-এর আদর্শে আদর্শবান হোক, তাহলে আমাদের পুরুষদেরকেও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। সাহাবায়ে কেরাম রাযি. স্ত্রীদের মধ্যে যেমন ইনসাফ ও সমতা রক্ষা করতেন, আমাদেরকেও সেইরূপ ইনসাফ ও সমতা রক্ষা করতে হবে। একজনকে পেয়ে আরেকজনকে ভুলে গেলে চলবে না। নবীজী সা. এরমত সকল স্ত্রীকেই ভালবাসতে হবে। ভদ্রোচিতভাবে সকলকে সমহারে ভরণ-পোষন দিতে হবে। রাত্রি যাপনের ক্ষেত্রে সকলকে সমান অধিকার প্রদান করতে হবে। কারো উপর কোনো প্রকার জুলুম করা যাবে না। হ্যাঁ, কারো প্রতি অন্তরে বিশেষ টান ও মুহাব্বত থাকতে পারে, এটা দুষণীয় কিছু নয়। দুষণীয় হলো, অতিরিক্ত মহব্বতের বশে সমতা ও সমবণ্টন পরিহার করা। অতএব, কোনো স্ত্রীর প্রতি মুহব্বত বেশি থাকলেও হাদিয়া-তোহফা, ভরণ-পোষণের ক্ষেত্রে তাকে অন্যদের থেকে বেশি কিছু দেওয়া যাবে না। মুহাব্বত মুহাব্বতের জায়গায় থাকবে, আর আদান-প্রদানও তার জায়গায় ঠিক থাকবে। যাকে বেশি ভালবাসেন, তার কাছে একত্রে দুই রাত থাকলেন, আর অন্যদের কাছে এক রাত, তা চলবে না। যাকে বেশি পেয়ার করেন, তাকে দুই হাজার টাকা দামের থ্রিপিছ দিলেন, আর অন্যদেরকে পনেরশত টাকারটা দিলেন, তাও চলবে না। একজনকে খরচের জন্য দিলেন ৫ হাজার টাকা, আরেকজনকে দিলেন ৪ হাজার টাকা, তাও চলবে না। সকলকে একই দামের জিনিসপত্র দিতে হবে। একই পরিমাণ টাকা দিতে হবে। একই মানের বাসস্থানে সকলকে রাখতে হবে। এভাবে সর্বক্ষেত্রে সমতা ও ইনসাফ কায়েম করতে হবে।
    আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিকভাবে দ্বীনকে বুঝার ও সে মুতাবেক আমল করার তাওফীক দান করেন। আমাদের মুসলিম বোনদেরকে স্বার্থপরতা ত্যাগ করে আরেক বিপদগ্রস্ত বোনের প্রতি সহমর্মী হওয়ার তাওফীক দিন। আর ভাইদেরকে স্ত্রীদের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ইনসাফ কায়েম করার তাওফীক দান করেন। আমীন। ছুম্মা আমীন।


    লিখেছেন: আখূকুম ফিল্লাহ আবু উমার আল-মুহাজির
    ১০.৯.২০১৯ইং

    Last edited by nidaye tawhid; 09-11-2019, 10:21 PM.

  • #2
    জাযাকাল্লাহু খাইরান
    ওত্তম লেখা, আল্লাহ কবুল করুন। আমীন।
    ও আল্লাহ সকলকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন।

    Comment


    • #3
      ভাইদের কলমের চালিকাশক্তি বেড়ে উঠুক - অামিন।

      মাশাঅাল্লাহ। বারাকাল্লাহ।
      সুন্দর উপস্থাপনায় বেশ উপকারী লেখা। ভাইদের থেকে অারোও বেশি উপকৃত হবো ইনশাঅাল্লাহ।
      অাল্লাহ তা'য়ালা ভাইদের কলমের চালিকাশক্তি বৃদ্ধি করে দিন এবং বেশি বেশি খেদমত করবার তাওফিক দেন ও সহজ করে দিন। সবশেষে অামাদের সকলকে সম্মানিত করুন। অামিন ইয়া রব।

      Comment


      • #4
        আখিঁ ফিল্লাহ আবু উমার আল-মুহাজির হাফিযাহুল্লাহ, অনেক চমৎকারভাবে একাধিক বিয়ের উপকারিতা ফুটিয়ে তুলেছেন।
        আশা করি এ জাতীয় আরো অ-নে-ক লেখা শেয়ার করবেন নিয়মিত।
        আল্লাহ তা‘আলা আপনার কলমে আরো বারকাহ দান করুন এবং আপনার সকল মেহনত ও খেদমতকে কবুল করুন। আমীন
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          মাসাআল্লাহ, চমৎকার লিখনী। আল্লাহ তা‘আলা কবুল করুন। আল্লাহুম্মা আমীন
          মুহতারাম ভাইয়েরা- আমরা আমাদের নিজস্ব পরিসরে এটার উপর সাধ্যানুযায়ী আমল করার চেষ্টা করি, ইনশা আল্লাহ। তাহলে এক সময় দেখা যাবে সমাজ বদলে যাবে। তবে তার আগে আমাকেে/আপনাকে বদলাতে হবে।
          আল্লাহ তা‘আলাই তাওফিকদাতা।
          ভাই আবু উমর, ফোরামে আপনার পোষ্ট নিয়মিত চাই। শুকরান, জাযাকাল্লাহ
          “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

          Comment


          • #6
            বিভিন্ন পেরেশানীর মধ্যে রয়েছি। দুআর দরখাস্ত আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা যেন পেরেশানী দূর করে দিয়ে, পরিপূর্ণরূপে দ্বীনের কাজে মনোনিবেশ করার তাওফীক দান করেন।

            Comment


            • #7
              Originally posted by nidaye tawhid View Post
              বিভিন্ন পেরেশানীর মধ্যে রয়েছি। দুআর দরখাস্ত আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা যেন পেরেশানী দূর করে দিয়ে, পরিপূর্ণরূপে দ্বীনের কাজে মনোনিবেশ করার তাওফীক দান করেন।
              হে আল্লাহ, আপনি মুহতারাম ভাইয়ের সকল পেরেশানী দূর করে দিন এবং পরিপূর্ণরূপে দ্বীনের কাজে মনোনিবেশ করার তাওফীক দিন। আল্লাহুম্মা আমীন
              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

              Comment


              • #8
                দু‘টি কথা
                ক. আমরা প্রত্যেকেই আমাদের নিজেদের সাথে সংশ্লিষ্ট মা-বোনদেরকে লেখাটা পড়ানোর ফিকির করি। আর নিজের মাহরাম বোনদেরকে ব্যবহার করে গায়রে মাহরাম মহলেও লেখাটা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। আশা করি অনেক ফায়দা হবে। বোনেরা নতুনকরে ভাবতে শিখবে ইনশাআল্লাহ।
                খ. যাদের পক্ষে সম্ভব তাদের কাছে নিবেদন, আপনারা লেখাটা সোশ্যাল মিডিয়াতে (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদিতে) ছড়িয়ে দিন। বহুবিবাহের ক্ষেত্রে জাহিলী চিন্তাফিকির পরিবর্তন করে ইসলামী ভাবধারা কায়েমে অবদান রাখুন।
                মোট কথা প্রত্যেক ভাই নিজের সাধ্যানুযায়ী লেখাটা বেশি বেশি ছড়ানোর চেষ্টা করুন। আল্লাহ তাআলা সকলকে কবুল করুন। তাওফীক দান করুন। আমীন।

                Comment


                • #9
                  জাযাকাল্লাহ ভাই।
                  আলহামদুলিল্লাহ বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিয়ে / একাধিক বিয়ে নিয়ে ভাল লেখা

                  Comment


                  • #10
                    মাশাআল্লাহ
                    জাযাকাল্লাহ..
                    ভাই সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে কবুল করুন, এবং আমাদেরকে এসব খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুন, আমিন

                    Comment


                    • #11
                      মাশাআল্লাহ !
                      খুবই উত্তম লিখা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আপনার এই মেহনতকে কবুল করুন ও আপনার সব পেরেশানি দূর করে দিন,আমীন।
                      লিখাটি পড়ে খুবই উপকৃত হলাম। আল-হামদুলিল্লাহ।
                      বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
                      কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

                      Comment


                      • #12
                        সময় উপযুগী একটা লেখা,,, জাযাকাল্লাহ, ভালো লাগছে।

                        Comment


                        • #13
                          আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। সমাজের এ সব প্রথা পরিবর্তনে চাই একটি খিলাফাহ আল ইসলামিয়্যাহ। এ ছাড়া পরিবর্তন সম্ভবপর নয়। তাই আমাদের প্রতিটি চিন্তা, প্রতিটি কর্মে, প্রতিটি নসীহায় ব্যাপারটি জোড়ালোভাবে আলোচনা করা উচিত। মূলত বিয়ে করা নিয়েই রয়েছে সমাজে হিন্দুয়ানি ও জাহিলী বর্বরতা, যা থেকে আমরা কেউ বের হতে পারছি না।
                          ভুল-ত্রুটি জানানোর অনুরোধ রইল!!!

                          Comment


                          • #14
                            অনেকদিন ধরে nidaye tawhid ভাইয়ের নতুন কোন লেখা পাচ্ছি না।
                            আশা করি ভাই আমাদেরকে ভুলে যান নি...ভাইয়ের পোস্ট কামনা করছি।
                            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                            Comment


                            • #15
                              খুবই উত্তম পোস্ট ৷
                              আল্লাহ ভাইকে কবুল করুক ৷
                              ইসলামী সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার ৷
                              আমি জঙ্গি, আমি নির্ভীক ৷
                              আমি এক আল্লাহর সৈনিক ৷

                              Comment

                              Working...
                              X