প্রশ্ন- কাফেরদের নারী শিশুকে কখন হত্যা করা জায়েয? এর দলীল কি?
অপর হাদিসে এসেছে: রাবাহ ইবনে রবি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
উল্লিখিত হাদিসদ্বয় ও এ মর্মে বর্ণিত অন্যান্য হাদীসের নির্দেশানুসারে স্বাভাবিক অবস্থায় ইচ্ছাকৃত নারী-শিশুদের হত্যা নাজায়েয। তবে হত্যা নিষেধ হওয়ার কারণ হল, নারী-শিশুদের শরীর যুদ্ধের উপযুক্ত নয় এবং সাধারণত তারা যুদ্ধে আসে না। পুরুষরাই যুদ্ধের উপযোগী এবং সাধারণত তারাই যুদ্ধে এসে থাকে। অতএব, কাফেরদের বয়স্ক পুরুষরাই স্বাভাবিক মুসলমানদের জন্য হুমকি স্বরূপ, নারী-শিশুরা নয়, বরং তারা বন্দী হওয়ার পর মুসলমানদের গনিমতে পরিণত হবে। তাই হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন, রাবাহ ইবনে রবি রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসে দেখেছি যে, হত্যা নিষেধের কারণ বলেছেন,
কাসানী রহ. (৫৮২ হি.) বলেন-
ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন-
সারকথা হল, স্বাভাবিক অবস্থায় কাফিরদের নারী-শিশুদের হত্যা করা অবৈধ। তবে তারা যদি কোন না কোন ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তবে তাদের হত্যা করা বৈধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে মূলনীতি উল্লেখ করতে গিয়ে কাসানী রহ. বলেন-
বি.দ্র.
উপরোক্ত মাসআলা অনুযায়ী বর্তমান মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান, এমপি, মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেত্রীদের হত্যা যাবে। সেনাবাহিনি, র*্যাব, পুলিশ বিভাগ বা গোয়েন্দা বিভাগসহ অন্য যে কোন সামরিক বিভাগে কর্মরত মহিলাদের হত্যা করা যাবে। তদ্রূপ, বাহিনির সেবা-যত্নের জন্য বা ফাহেশা কাজের জন্য যেসব মহিলাকে বাহিনির সাথে রাখা হয়, তাদেরকেও হত্যা করা যাবে। এসব নারী যদি না থাকতো, তাহলে আমেরিকা থেকে এসে এসব সৈন্য আফগানের মতো দূর দেশে থাকতে পারতো না। এতএব, এরাও প্রকারান্তরে বাহিনিরই লোক। এদেরকেও হত্যা করা যাবে। [বিস্তারিত দেখুন- মাসায়িল মিন ফিকহিল জিহাদ; শায়খ আবু আব্দুল্লাহ আলমুহাজির, মাসআলা নং ৬, যে সকল হারবী কাফিরদের ইচ্ছাকৃত হত্যা করা বৈধ নয়]
بسم الله الرحمن الرحيم
যুদ্ধ বা যুদ্ধের বাইরে সর্বাবস্থায় কাফেরদের নারী-শিশুদের ইচ্ছাকৃত হত্যা করা নাজায়েয। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদিসে এসেছে-«وجدت امرأة مقتولة في بعض مغازي رسول الله صلى الله عليه وسلم، «فنهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن قتل النساء والصبيان».
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন এক যুদ্ধে এক মহিলাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল। (তা দেখে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহিলা ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করে দেন।” -সহিহ বুখারী ৩০১৫, সহিহ মুসলিম ১৭৪৪অপর হাদিসে এসেছে: রাবাহ ইবনে রবি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
كنا مع رسول الله -صلى الله عليه وسلم- في غزوة، فرأى الناس مجتمعين على شيء، فبعث رجلا، فقال: "انظر علام اجتمع هؤلاء" فجاء، فقال: على امرأة قتيل. فقال: "ما كانت هذه لتقاتل"، قال: وعلى المقدمة خالد بن الوليد، فبعث رجلا، فقال: "قل لخالد: لا يقتلن امرأة ولا عسيفا". (قال شعيب الأرنؤوط: إسناده صحيح)
“আমরা এক যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। তিনি লোকদেরকে একটা কিছুর পাশে একত্রিত দেখতে পেলেন। তখন তিনি একজনকে এ বলে পাঠালেন যে, ‘দেখো তো এরা কেন একত্রিত হয়েছে’? লোকটি এসে জানালেন, (তারা) একজন নিহত মহিলার পাশে একত্রিত হয়েছে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আপত্তির সুরে) বললেন, ‘এ তো লড়াই করার মতো ছিল না’। বর্ণনাকারী বলেন, সেনাবাহিনীর সম্মুখভাগের দায়িত্বে খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন লোককে তার কাছে এ নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন যে, খালিদকে বলবে সে যেন কোন মহিলাকে বা শ্রমিককে হত্যা না করে।” –সুনানে আবু দাউদ ২৬৬৯উল্লিখিত হাদিসদ্বয় ও এ মর্মে বর্ণিত অন্যান্য হাদীসের নির্দেশানুসারে স্বাভাবিক অবস্থায় ইচ্ছাকৃত নারী-শিশুদের হত্যা নাজায়েয। তবে হত্যা নিষেধ হওয়ার কারণ হল, নারী-শিশুদের শরীর যুদ্ধের উপযুক্ত নয় এবং সাধারণত তারা যুদ্ধে আসে না। পুরুষরাই যুদ্ধের উপযোগী এবং সাধারণত তারাই যুদ্ধে এসে থাকে। অতএব, কাফেরদের বয়স্ক পুরুষরাই স্বাভাবিক মুসলমানদের জন্য হুমকি স্বরূপ, নারী-শিশুরা নয়, বরং তারা বন্দী হওয়ার পর মুসলমানদের গনিমতে পরিণত হবে। তাই হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন, রাবাহ ইবনে রবি রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসে দেখেছি যে, হত্যা নিষেধের কারণ বলেছেন,
ما كانت هذه لتقاتل
‘এ তো যুদ্ধ করার মতো ছিল না’।
যাদের বেলায় এর ব্যতিক্রম হবে; তথা যেসব নারী-শিশু প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ কোনভাবে যুদ্ধে শরীক হবে, তাদের হত্যা করতে সমস্যা নেই। খাত্তাবী রহ. (৩৮৮ হি.) বলেন-‘এ তো যুদ্ধ করার মতো ছিল না’।
فيه دليل على أن المرأة إذا قاتلت قتلت ألا ترى أنه جعل العلة في تحريم قتلها أنها لا تقاتل فإذا قاتلت دل على جواز قتلها.اهـ
“হাদিসটি প্রমাণ করে, মহিলা যদি যুদ্ধ করে তবে তাকে হত্যা করা হবে। দেখছো না হাদিসে হত্যা করা হারাম হওয়ার কারণ বলা হয়েছে, মহিলা যুদ্ধ করার মতো লোক নয়। অতএব, সে যদি যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে হাদিস বুঝাচ্ছে যে, তাকে হত্যা করা জায়েয।” -মাআলিমুস সুনান ২/২৮০কাসানী রহ. (৫৮২ হি.) বলেন-
ولو قاتل واحد منهم قتل، وكذا لو حرض على القتال، أو دل على عورات المسلمين، أو كان الكفرة ينتفعون برأيه، أو كان مطاعا، وإن كان امرأة أو صغيرا؛ لوجود القتال من حيث المعنى.اهـ
“(যাদের হত্যা করা নিষেধ) তাদের কেউ যুদ্ধে লিপ্ত হলে তাকে হত্যা করা যাবে। তদ্রূপ তাদের কেউ যদি (কাফেরদেরকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করে, মুসলমানদের গোপন খবরাখবর তাদের অবগত করে বা কাফেররা তার বুদ্ধি-পরামর্শের মাধ্যমে উপকৃত হয় কিংবা সে নেতৃস্থানীয় কোন ব্যক্তি হয় তাহলে নারী হোক শিশু হোক- তাকেও হত্যা করা হবে। কারণ, তার থেকে (সরাসরি না হলেও) পরোক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ পাওয়া গেছে।” -বাদায়িউস সানায়ে ৭/১০১ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন-
وكذلك يقتل من قاتل من كل من قلنا إنه لا يقتل كالمجنون والصبي والمرأة.اهـ
“পিছনে আমরা পাগল, শিশু ও নারী যাদের হত্যা করা নিষিদ্ধ বলেছি, তারা যদি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তাহলে তাদেরও হত্যা করা যাবে।” -ফাতহুল কাদীর ৫/৪৫৪সারকথা হল, স্বাভাবিক অবস্থায় কাফিরদের নারী-শিশুদের হত্যা করা অবৈধ। তবে তারা যদি কোন না কোন ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তবে তাদের হত্যা করা বৈধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে মূলনীতি উল্লেখ করতে গিয়ে কাসানী রহ. বলেন-
وكل من لم يكن من أهل القتال لا يحل قتله إلا إذا قاتل حقيقة أو معنى بالرأي والطاعة والتحريض، وأشباه ذلك على ما ذكرنا.اهـ
“যারা যুদ্ধের উপযুক্ত নয় তাদের হত্যা করা অবৈধ। তবে তারা যদি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে কিংবা মতামত, নেতৃত্বদান, উদ্বুদ্ধকরণ বা এ জাতীয় অন্য কোন মাধ্যমে -যা আমরা উল্লেখ করেছি- পরোক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তাহলে তাদেরকেও হত্যা করা বৈধ হয়ে যাবে।” -বাদায়িউস সানায়ে ৭/১০১বি.দ্র.
উপরোক্ত মাসআলা অনুযায়ী বর্তমান মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান, এমপি, মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেত্রীদের হত্যা যাবে। সেনাবাহিনি, র*্যাব, পুলিশ বিভাগ বা গোয়েন্দা বিভাগসহ অন্য যে কোন সামরিক বিভাগে কর্মরত মহিলাদের হত্যা করা যাবে। তদ্রূপ, বাহিনির সেবা-যত্নের জন্য বা ফাহেশা কাজের জন্য যেসব মহিলাকে বাহিনির সাথে রাখা হয়, তাদেরকেও হত্যা করা যাবে। এসব নারী যদি না থাকতো, তাহলে আমেরিকা থেকে এসে এসব সৈন্য আফগানের মতো দূর দেশে থাকতে পারতো না। এতএব, এরাও প্রকারান্তরে বাহিনিরই লোক। এদেরকেও হত্যা করা যাবে। [বিস্তারিত দেখুন- মাসায়িল মিন ফিকহিল জিহাদ; শায়খ আবু আব্দুল্লাহ আলমুহাজির, মাসআলা নং ৬, যে সকল হারবী কাফিরদের ইচ্ছাকৃত হত্যা করা বৈধ নয়]
Comment