প্রশ্ন- মুছলা কাকে বলে? মুছলা হারাম হওয়ার দলীল কি এবং তা কখন হারাম?
بسم الله الرحمن الرحيم
মুছলা অর্থ অঙ্গহানি করা। নাক, কান বা অন্য কোন অঙ্গ কেটে ফেলা। হাফেজ ইবনে হাজার আসক্বালানী রহ. (৮৫২ হি.) বলেন-
المثلة بضم الميم وسكون المثلثة، وهو قطع الأعضاء من أنف وأذن ونحوها. اهـ
“মুছলা ... অর্থ নাক, কান বা অন্য কোন অঙ্গ কেটে ফেলা।” -ফাতহুল বারী ৬/২৩আমাদের আলোচনায় মুছলা দ্বারা উদ্দেশ্য- কোন কাফেরকে বন্দী করার পর সরাসরি হত্যা না করে অঙ্গহানি করে হত্যা করা, কিংবা হত্যার পর অঙ্গহানি করা। অনেক হাদিসে এর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। যেমন, এক হাদীসে এসেছে-
عن عدي بن ثابت، قال: سمعت عبد الله بن يزيد، عن النبي صلى الله عليه وسلم: أنه نهى عن النهبة والمثلة.
“আব্দুল্লাহ ইবনু ইয়াযিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গনিমতের সম্পদ বন্টন করা ব্যতীত কাড়াকাড়ি করে নিয়ে যেতে ও মুছলা করতে নিষেধ করেছেন।”– সহিহ বুখারী ৫৫১৬
সামুরা ইবনু জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
كان نبي الله صلى الله عليه وسلم يحثنا على الصدقة، وينهانا عن المثلة.
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাদাকা করতে উদ্বুদ্ধ করতেন আর মুছলা করতে নিষেধ করতেন”। – সুনানে আবু দাউদ ২৬৬৭আল্লামা শাওকানী রহ. (১২৫০ হি.) বলেন-
قوله: (ولا تمثلوا) فيه دليل على تحريم المثلة، وقد وردت في ذلك أحاديث كثيرة.
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী- ‘তোমরা মুছলা করো না’ এটি মুছলা হারাম হওয়ার দলীল। এ ব্যাপারে অনেক হাদীস এসেছে।” -নায়লুল আওতার ৭/২৯৩তবে মুছলা হারাম হওয়ার এ মাসয়ালাটি সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। শত্রু মুসলমানদের হাতে বন্দী হওয়ার পর তাকে হত্যা করার ক্ষেত্রে মুছলা করা অবৈধ। কিন্তু যুদ্ধ চলাকালীন হত্যা করার ক্ষেত্রে মুছলা করতে কোন অসুবিধা নেই। কারণ, এক্ষেত্রে তাকে হত্যা করাটাই মূল। কীভাবে হত্যা করা হচ্ছে সেটা বিবেচ্য নয়। ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন-
ثم لا يخفى أن هذا بعد الظفر والنصر، أما قبل ذلك فلا بأس به إذا وقع قتالا كمبارز ضرب فقطع أذنه ثم ضرب ففقأ عينه فلم ينته فضرب فقطع أنفه ويده ونحو ذلك. اهـ
“স্পষ্ট যে, মুছলার নিষিদ্ধতা কাফেরদের উপর বিজয়ী হওয়া এবং তাদেরকে বন্দী করার পর। এর পূর্বে যুদ্ধ চলাকালীন মুছলা করতে কোন সমস্যা নেই। যেমন, দু’জনের যুদ্ধ চলাকালীন মুজাহিদ তার প্রতিপক্ষকে হামলা করে তার কান কেটে ফেলল বা তার চোখ নষ্ট করে দিল। প্রতিপক্ষ এরপরও বিরত হলো না। ফলে তার নাক ও হাত বা অন্য কোন অঙ্গ কেটে ফেলল।” -ফাতহুল কাদির ৫/৪৫২
আরো দেখুন- ১. রদ্দুল মুহতার ৪/১৩১; ২. আলইখতিয়ার ৪/১২০ ও দুরারুল হুক্কাম শরহু গুরারিল আহকাম ১/২৮৩।
Comment