প্রশ্ন: কোনো বাহিনি পাঠাতে হলে আমীর নির্ধারণ করে দেয়া কি আবশ্যক? এর দলীল ও হিকমত কি?
উত্তর:
বাহিনি পাঠাতে হলে আমীর নির্ধারণ করে দেয়া আবশ্যক। আমীর বিহীন কোন বাহিনি পাঠানো উচিৎ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময়ই কোন সেনাদল পাঠানোর পূর্বে আমীর ঠিক করে দিতেন। আমীর ব্যতীত কখনও কোন বাহিনি পাঠাতেন না।
ইমাম মুহাম্মাদ রহ. (১৮৯ হি.) বলেন,
আরো বলেন,
ফাতাওয়া তাতারখানিয়াতে বলা হয়েছে,
ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
তাছাড়া কয়েকজন মিলে সফরে বের হওয়ার ক্ষেত্রেও একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়ার আদেশ এসেছে। যেমন- এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
অন্য হাদিসে এসেছে,
لا يحل لثلاثة نفر يكونون بأرض فلاة الا أمروا عليهم أحدهم (رواه أحمد-6647، تعليق شعيب الأرنؤوط : صحيح لغيره إلا حديث الإمارة فحسن)
‘যে কোন তিন ব্যক্তির জন্য কোন মরু ময়দানে অবস্থান করা জায়েয হবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের একজনকে তাদের আমীর বানিয়ে নেয়।’- মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ৬৬৪৭
যখন সাধারণ সফরের বেলায়ই আমীর বানানো জরুরী, তখন জিহাদের মতো ভীতিজনক কাজে তো এর আগেই জরুরী।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
অর্থাৎ এখানে তো আরো আগেই আমীর নির্ধারণ করতে হবে।
আমীর নির্ধারণের হিকমত
জামাতের ঐক্য বজায় রাখা, নিজেদের প্রয়োজনাদি সুশৃঙ্খলতার সাথে পূর্ণ করা এবং অটল অবিচলতার সাথে একদেহ একপ্রাণ হয়ে সকল বিপদাপদ মোকাবেলা করা।
ইমাম খাত্তাবি রহ. (৩৮৮ হি.) বলেন,
ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
উত্তর:
বাহিনি পাঠাতে হলে আমীর নির্ধারণ করে দেয়া আবশ্যক। আমীর বিহীন কোন বাহিনি পাঠানো উচিৎ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময়ই কোন সেনাদল পাঠানোর পূর্বে আমীর ঠিক করে দিতেন। আমীর ব্যতীত কখনও কোন বাহিনি পাঠাতেন না।
ইমাম মুহাম্মাদ রহ. (১৮৯ হি.) বলেন,
ينبغي للإمام إذا بعث سرية قلت أو كثرت أن لا يبعثهم حتى يؤمر عليهم بعضهم. اهـ
“ইমামুল মুসলিমিন ছোট বা বড় যেকোন বাহিনি রওয়ানা করতে চাইলে আবশ্যক হল, তাদের নিজেদের একজনকে তাদের আমীর বানানো ব্যতীত না পাঠানো।”- শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/৭৪আরো বলেন,
لا يجوز ترك المسلمين سدى ليس عليهم من يدبر أمورهم في دار الإسلام ولا في دار الحرب. اهـ
“দারুল ইসলাম হোক দারুল হরব হোক- সকল বিষয়ের দেখাশুনা করবেন মতো কোন পরিচালক ব্যতীত বিশৃঙ্খল অবস্থায় মুসলমানদের ছেড়ে রাখা জায়েয নেই।”- শরহুস সিয়ারুল কাবীর ২/৪২৮ফাতাওয়া তাতারখানিয়াতে বলা হয়েছে,
وفي تجنيس خواهرزاده: وإذا بعث سرية أمر عليهم واحدا منهم، ولا يصلح أن يخرج قوم بلا أمير. اهـ
“কোন বাহিনি পাঠালে একজনকে আমীর বানিয়ে দেবেন। আমীর ছাড়া কোন বাহিনি রওয়ানা হওয়া জায়েয নয়।”- তাতারখানিয়া ৭/৫২ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
وإنما يجب هذا اقتداء برسول الله عليه السلام فإنه داوم على بعث السرايا وأمر عليهم في كل مرة ولو جاز تركه لفعله مرة تعليماً للجواز. اهـ
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণকরত এটি আবশ্যক। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরাবর বাহিনি পাঠাতেই থাকতেন আর প্রত্যেক বেলায় একজনকে আমীর বানিয়ে দিতেন। যদি আমীর না বানিয়ে পাঠানো জায়েয হতো, তাহলে বৈধতা বুঝানোর জন্য অন্তত একবার হলেও তিনি আমীর না বানিয়ে পাঠাতেন।”- শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/৭৪তাছাড়া কয়েকজন মিলে সফরে বের হওয়ার ক্ষেত্রেও একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়ার আদেশ এসেছে। যেমন- এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
إذا كان ثلاثة في سفر فليؤمروا أحدهم
‘তিন ব্যক্তি সফরে থাকলে তারা যেন তাদের একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়।’- আবু দাউদ, হাদিস নং ২৬০৮অন্য হাদিসে এসেছে,
لا يحل لثلاثة نفر يكونون بأرض فلاة الا أمروا عليهم أحدهم (رواه أحمد-6647، تعليق شعيب الأرنؤوط : صحيح لغيره إلا حديث الإمارة فحسن)
‘যে কোন তিন ব্যক্তির জন্য কোন মরু ময়দানে অবস্থান করা জায়েয হবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের একজনকে তাদের আমীর বানিয়ে নেয়।’- মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ৬৬৪৭
যখন সাধারণ সফরের বেলায়ই আমীর বানানো জরুরী, তখন জিহাদের মতো ভীতিজনক কাজে তো এর আগেই জরুরী।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
فأوجب تأمير الواحد فى الاجتماع القليل العارض فى السفر تنبيها بذلك على سائر أنواع الاجتماع. اهـ
“সফরের হালতে সৃষ্টি হওয়া ছোট্ট একটি জামাআতের বেলায়ও একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন একথা বুঝানোর জন্য যে, সব ধরণের জামাআতের ক্ষেত্রেই আমীর বানিয়ে নেয়া আবশ্যক।”- মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৮/৩৯০ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
وقد بينا أن المسافرين يستحب لهم أن يؤمروا عليهم أميراً فما ظنك في المحاربين. اهـ
“পূর্বে বলে এসেছি যে, মুসাফিরদের জন্য একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়া মুস্তাহাব। তাহলে যারা যুদ্ধ করতে যাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে তোমার কি ধারণা?”- শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/১৮৫অর্থাৎ এখানে তো আরো আগেই আমীর নির্ধারণ করতে হবে।
আমীর নির্ধারণের হিকমত
জামাতের ঐক্য বজায় রাখা, নিজেদের প্রয়োজনাদি সুশৃঙ্খলতার সাথে পূর্ণ করা এবং অটল অবিচলতার সাথে একদেহ একপ্রাণ হয়ে সকল বিপদাপদ মোকাবেলা করা।
ইমাম খাত্তাবি রহ. (৩৮৮ হি.) বলেন,
إنما أمر بذلك ليكون أمرهم جميعا ولا يتفرق بهم الرأي ولا يقع بينهم خلاف فيعنتوا. اهـ
“আমীর নির্ধারণের আদেশ দেয়া হয়েছে যাতে তারা ঐক্যবদ্ধ থাকে। একেক জনের একেক মত না হয় এবং পরস্পর মতবিরোধে লিপ্ত না হয়। এমনটা হলে তারা কষ্টে পড়ে যাবে।”- মাআলিমুস সুনান ২/২৬০ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
ولأنهم يحتاجون إلى اجتماع الرأي والكلمة وإنما يحصل ذلك إذا أمر عليهم بعضهم حتى إذا أمرهم بشيء أطاعوه في ذلك فالطاعة في الحرب أنفع من بعض القتال. اهـ
“তাছাড়া বাহিনির প্রয়োজন পরস্পরে এক ও ঐক্যবদ্ধ থাকা। আর তা তখনই সম্ভব হবে, যখন তাদের একজনকে আমীর বানিয়ে দেবেন; যাতে আমীর তাদের কোন আদেশ দিলে তারা তার আনুগত্য করে। জিহাদে অনেক সময় যুদ্ধের চেয়ে আনুগত্যে উপকার হয় বেশি।”- শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/৩৪
Comment