Announcement

Collapse
No announcement yet.

হরবিরা যদি মুসলমানদের মাল লুণ্টন করে নিয়ে যায়, তাহলে কি মালিক হয়ে যায়? এর দলীল কি?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • হরবিরা যদি মুসলমানদের মাল লুণ্টন করে নিয়ে যায়, তাহলে কি মালিক হয়ে যায়? এর দলীল কি?

    প্রশ্ন: হরবিরা যদি মুসলমানদের মাল লুণ্টন করে নিয়ে যায়, তাহলে কি মালিক হয়ে যায়? এর দলীল কি?

    উত্তর:

    হ্যাঁ! মুসলমানরা যেমন হরবিদের মাল জব্দ করে দারুল ইসলামে নিয়ে আসলে মালিক হয়ে যায়, হরবিরাও যদি মুসলিমদের মাল দখল করে দারুল হরবে নিয়ে যায় বা দারুল হরবে বসবাসরত মুসলিমদের হত্যা করে বা বের করে দিয়ে তাদের সম্পদ দখল করে নেয় তাহলে তারাও তার মালিক হয়ে যায়।


    ফাই এর হকদারদের বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    لِلْفُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ
    “(তাছাড়া এ সম্পদ) সে সব ফকির মুহাজিরদের প্রাপ্য, যাদেরকে (একান্ত আল্লাহর পথে টিকে থাকার অপরাধেই) নিজেদের ভিটে মাটি ও সহায় সম্পদ থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।” –সূরা হাশর: ৮


    মক্কা থেকে হিজরত করে আসা মুহাজির সাহাবায়ে কেরামকে আল্লাহ তাআলা ফকির আখ্যা দিয়েছেন। মক্কায় তাদের অনেকের যথেষ্ট অর্থ-সম্পদ ছিল। এতদসত্ত্বেও ফকির আখ্যা দিয়েছেন, কারণ হিজরতের পর কাফেররা সেগুলো দখলে নিয়ে নিয়েছিল। যদি কাফেররা দখলকৃত সম্পদের মালিক না হতো, তাহলে মুহাজির সাহাবাদের ফকির আখ্যা দিতেন না। ফকির বলা হয় যার কিছুই নেই অথবা আছে; তবে সামান্য। পক্ষান্তরে যার সম্পদ আছে, তবে দূর দেশে থাকার কারণে ভোগ করতে পারছে না, তাকে ফকির বলে না; ইবনু সাবিল বলে। (শরহু মুখতাসারিততহাবি- জাসসাস, ৭/১৪৪; রদ্দুল মুহতার ৪/১৬০)


    হাদিসে এসেছে- ফাতহে মক্কার দিন উসামা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন,
    يا رسول الله، أين تنزل غدا؟ قال النبي صلى الله عليه وسلم: «وهل ترك لنا عقيل من منزل» .
    “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আগামীকাল কোথায় অবতরণ করবেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আকিল কি আমাদের জন্য কোন ভিটে মাটি রেখেছে’?” –সহীহ বুখারী: ৪২৮২


    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হিজরত করেন, আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর ভাই আকিল রাদিয়াল্লাহু আনহু তখনও মুসলমান হননি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরতের পর, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাড়ি-ঘর দখল করে নেন এবং বিক্রি করে দেন। এ জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরোক্ত কথাটি বলেছেন। অর্থাৎ অবতরণ করার মতো কোন জায়গা আকিল অবশিষ্ট রাখেনি, সব বিক্রি করে দিয়েছে। যদি আকিল রাদিয়াল্লাহু আনহু মালিক না হতেন, তাহলে বিক্রি সহীহ হতো না। *


    ইবনে বাত্তাল রহ. (৪৪৯ হি.) বলেন,
    وكان عقيل استولى على دور النبى - صلى الله عليه وسلم - وباعها فلولا أن عقيلا ملكها بالغلبة وباعها لأبطل النبى - صلى الله عليه وسلم - بيعها ولم يجز تصرفه اهـ.
    “আকিল রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘর-বাড়ি দখল করে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। যদি তিনি দখলের দ্বারা মালিক না হতেন এবং (মালিক না হয়েই) বিক্রি করে দিতেন, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিক্রি বাতিল করে দিতেন এবং তাঁর হস্তক্ষেপের বৈধতা দিতেন না।” –শরহে ইবনে বাত্তাল: ৫/২২৮


    অন্য হাদিসে মুরসাল সনদে এসেছে, এক ব্যক্তির একটি উটনী কাফেররা হাতিয়ে নেয়। অন্য একজন কাফেরদের থেকে তা কিনে আনে। মূল মালিক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নালিশ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফায়সালা দেন,
    «إن شئت فخذها بما اشتراها وإن شئت فدع»
    “নিতে চাইলে সে যে মূল্য দিয়ে কিনেছে তা পরিশোধ করে নিয়ে যাও। আর না নিতে চাইলে ছেড়ে দাও।”- মারাসিলু আবি দাউদ ৩৩৯


    অন্য একটি মুরসাল সনদে হযরত উমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে তিনি বলেন,
    ما أحرز المشركون من أموال المسلمين فغزوهم بعد وظهروا عليهم، فوجد رجل ماله بعينه قبل أن تقسم السهام فهو أحق به، وإن كان قسم فلا شيء له.
    “মুশরিকরা মুসলিমদের যে সম্পদ নিজেদের দখলে নিয়ে গেছে, মুসলিমরা লড়াই করে বিজয় অর্জন করলে, মালিক যদি বন্টনের পূর্বেই তার উক্ত মাল পেয়ে যায়, তাহলে সে-ই এর হকদার। আর বণ্টন হয়ে গেলে কিছুই পাবে না।” –মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৩৪০৩৩


    অন্য বর্ণনায় আছে,
    وإن جرت عليه سهام المسلمين، فلا سبيل إليه إلا بالقيمة
    “বণ্টনের পর মূল পরিশোধ ব্যতিত নিতে পারবে না।”- মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ৯৩৫৯


    বুঝা গেল, দখলের দ্বারা কাফেররা মালিক হয়ে যায়। অন্যথায় বণ্টনের পরও মূল মালিক বিনা মূল্যে নিয়ে নিতে পারতো। (মাবসূতে সারাখসী ১০/৫৪)


    আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও বর্ণিত আছে যে, মুসলিমদের যে সম্পদ মুশরিকরা দখল করে নিয়ে যায়, তার ব্যাপারে তিনি বলতেন,
    إنه بمنزلة أموالهم
    “এ সম্পদ কাফেরদের নিজস্ব সম্পদেরই মতো।” –মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৩৪০৩৫


    শেষোক্ত হাদিস ও আছারগুলো মুরসাল। তবে মুরসাল হাদিস আমাদের আইম্মায়ে কেরামসহ আরো অধিকাংশ আহলে ইলমের মতে গ্রহণযোগ্য। (ফাতহুল কাদির ৬/৪) অধিকন্তু কুরআনে কারীমের উল্লিখিত আয়াত ও সহীহ বুখারির হাদিস এর সমর্থক। (ফাতহুল কাদির ৬/৫) সব মিলিয়ে বিষয়টি প্রমাণিত।
    Last edited by Ahkamus Siyar; 12-03-2019, 10:43 AM.

  • #2
    খুব উপকরী পোস্ট হচ্ছে ভাই
    চালিয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ
    জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
    পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

    Comment


    • #3
      হাদিসের উপর একটি বাংলা কিতাবের নাম বলা যাবে ভাইয়েরা??????
      ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ! আল্লাহ ভাইকে কবুল করুন,আমিন
        গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

        Comment

        Working...
        X