প্রশ্ন-২৯: সাওয়াদুল ইরাক বিজয়ের পর সেখানকার কাফের অধিবাসী ও তাদের ভূমির ব্যাপারে উমার রাদিয়াল্লাহু কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন? এর পক্ষে তিনি কি দলীল দিয়েছেন?
উত্তর:
সাওয়াদুল ইরাক বিজয় করার পর উমর রাদিআল্লাহু আনহু সাহাবাদের সাথে একাধিকবার মাশওয়ারা করেন। মাশওয়ারার পর সিদ্ধান্ত নিলেন, মাথাপিছু জিযিয়া আদায়ের শর্তে কাফের অধিবাসীদের যিম্মি বানানো হবে আর ভূমি খারাজ আদায়ের শর্তে তাদের হাতে বহাল রাখা হবে; মুসলিমদের মাঝে বন্টন করা হবে না। সূরা হাশরের নিম্নোক্ত আয়াত দিয়ে তিনি দলিল দেন,
অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্মের মুসলমানদেরও ফাইয়ের সম্পদে অধিকার আছে। এ দিকটি বিবেচনা করে তিনি মুজাহিদদের মাঝে ভূমি বণ্টন করেননি। খারাজ নির্ধারণ করে যিম্মিদের হাতে রেখে গেছেন। সেখান থেকে যে খারাজ আসতে থাকবে, মুসলমানদের প্রয়োজনে তা ব্যয় হতে থাকবে।
সহীহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে যে, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
ইবরাহীম তাইমী রহ. (৯২হি.) বলেন,
আরো দেখুন: মাবসূতে সারাখসী ১০/১৯, রদ্দুল মুহতার ৪/১৭৮
উত্তর:
مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ ... وَالَّذِينَ جَاءُوا مِنْ بَعْدِهِمْ
“বিভিন্ন জনপদবাসী থেকে (নিয়ে) আল্লাহ তাআলা যে সম্পদ তার রাসূলকে ফাই হিসেবে দিয়েছেন তা আল্লাহ ও রাসূলের প্রাপ্য ... এবং ঐসব মুসলমানদের (প্রাপ্য) যারা তাদের (মুহাজির ও আনসারদের) পর এসেছে ...।” –হাশর ৭, ১০ অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্মের মুসলমানদেরও ফাইয়ের সম্পদে অধিকার আছে। এ দিকটি বিবেচনা করে তিনি মুজাহিদদের মাঝে ভূমি বণ্টন করেননি। খারাজ নির্ধারণ করে যিম্মিদের হাতে রেখে গেছেন। সেখান থেকে যে খারাজ আসতে থাকবে, মুসলমানদের প্রয়োজনে তা ব্যয় হতে থাকবে।
সহীহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে যে, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
أما والذي نفسي بيده لولا أن أترك آخر الناس ببانا ليس لهم شيء ما فتحت علي قرية إلا قسمتها كما قسم النبي صلى الله عليه و سلم خيبر ولكني أتركها خزانة لهم يقتسمونها. –صحيح البخاري – ط. دار ابن كثير ، اليمامة – بيروت؛ الرقم: 3994
“শুনে রাখো! ঐ জাতের কসম যার হাতে আমার প্রাণ! যদি এমন না হতো যে, পরবর্তী প্রজন্মের মুসলমানরা নিঃস্ব থেকে যাবে, তাদের কোনো কিছুই থাকবে না, তাহলে বিজয় হওয়া প্রতিটি এলাকা আমি বণ্টন করে দিতাম, যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার বণ্টন করে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি তা না করে একে মুসলমানদের জন্য সঞ্চিত ভাণ্ডাররূপে রেখে যাচ্ছি। তা থেকে অনবরত তারা তাদের অংশ নিতে থাকবে।” –সহীহ বুখারি ৩৯৯৩ইবরাহীম তাইমী রহ. (৯২হি.) বলেন,
لما افتتح المسلمون السواد قالوا لعمر بن الخطاب: اقسمه بيننا فأبى، فقالوا: إنا افتتحناها عنوة قال: «فما لمن جاء بعدكم من المسلمين؟ فأخاف أن تفاسدوا بينكم في المياه، وأخاف أن تقتتلوا» فأقر أهل السواد في أرضيهم، وضرب على رءوسهم الضرائب - يعني الجزية - وعلى أرضهم الطسق يعني الخراج، ولم يقسمها بينهم –سنن سعيد بن منصور، رقم: 2589؛ قال ابن كثير في مسند الفاروق ، ص: 498، ط. دار الوفاء للطباعة والنشر والتوزيع بالمنصورة: هذا أثر جيد، وفيه انقطاع. اهـ
“সাওয়াদ বিজয়ের পর মুসলিমগণ উমর রাদিআল্লাহু আনহুর নিকট আরজ করলেন, একে আমাদের মাঝে বণ্টন করে দিন। তিনি সম্মত হলেন না। তারা আরজ করলেন, আমরা একে বলপ্রয়োগে (যুদ্ধের মাধ্যমে) বিজয় করেছি (সুতরাং তা আমাদের প্রাপ্য গনিমত)। তিনি উত্তর দেন, তাহলে তোমাদের পরবর্তী মুসলিম প্রজন্মের জন্য কি বাকি থাকবে? ... এরপর তিনি সাওয়াদবাসীকে তাদের ভূমিতে বহাল রাখেন। তাদের উপর মাথাপিছু জিযিয়া ধার্য করে দেন। ভূমিতে খারাজ নির্ধারণ করে দেন। মুসলমানদের মাঝে তা বণ্টন করেননি।” –সুনানে সাইদ বিন মানসুর, ২৫৮৯ আরো দেখুন: মাবসূতে সারাখসী ১০/১৯, রদ্দুল মুহতার ৪/১৭৮
Comment