প্রশ্ন-৮: কি কি গুণসম্পন্ন ব্যক্তিকে জিহাদের আমীর বানানো উচিৎ?
উত্তর:
প্রত্যেকটি পদ একেকটি আমানত। উপযুক্ত ব্যক্তির হাতেই তা সমর্পণ করতে হবে। যে পদের জন্য যে উপযুক্ত তাকেই নিয়োগ দিতে হবে। এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। স্বজনপ্রীতি করে অনুপযুক্ত কাউকে নিয়োগ দেয়া যাবে না। এটি শরীয়তের সার্বজনীন মূলনীতি।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
হাদিসে এসেছে,
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে,
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
অতএব, প্রতিটি পদ এমন ব্যক্তির হাতেই সমর্পণ করতে হবে যে তার উপযুক্ত। জিহাদের বেলায়ও এমনই। এমন ব্যক্তিকেই আমীর নির্ধারণ করবে যে এর উপযুক্ত এবং যার মাধ্যমে উদ্দেশ্য সফল হবে।
ইমাম মুহাম্মাদ রহ. (১৮৯হি.) বলেন,
“এমন ব্যক্তিকে আমীর বানাতে হবে যে রণকৌশলে অভিজ্ঞ। যুদ্ধ পরিচালনায় সুদক্ষ। এমন (দুঃসাহসী) নয় যে, মুজাহিদদেরকে বিপদের মুখোমুখী করে বসবে, আবার এমন (অদক্ষ)ও নয় যে, উপযুক্ত কোনো সুযোগ পেয়ে গেলেও তাদেরকে (হামলা করা থেকে) বারণ করে রাখবে। ইমামুল মুসলিমিন উম্মাহর কল্যাণার্থে নিযুক্ত। আর পরিপূর্ণ কল্যাণ এরই মধ্যে যে, এমন ব্যক্তিকে আমীর বানাবে যার মাঝে এসব গুণ পরীক্ষিত। কেননা, সুযোগের সময় যদি আমীর মুজাহিদদের বারণ করে রাখে তাহলে এমন একটি সুযোগ তাদের হাতছাড়া হয়ে গেল যার ক্ষতিপূরণ আর সম্ভব নয়। বলা হয়, ‘সুযোগ মূহুর্তেই কাজে লাগাতে হয়, নয়তো হাতছাড়া হয়ে যায়’। অপর দিকে দুঃসাহসিকতার কারণে আমীর যখন বাঘের মুখে ঝাঁপ দেবেন অনুসারি মুজাহিদদের জন্য তার অনুসরণ ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। এরপর তিনি হয়তো শক্তিশালী হওয়ায় বেঁচে আসতে পারবেন কিন্তু অন্যরা হয়তো তা পারবে না। ফলে ধ্বংসের শিকার হবে।” –শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/৭৫
ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০হি.) বলেন,
আরো বলেন,
“নাসর ইবনে সাইয়ার রহ. থেকে বর্ণিত যে তিনি বলেন, অনারবের সকল যুদ্ধবিশারদ একমত যে, সেনাপতির মাঝে জানুয়ারের দশটি ভাল গুণ থাকতে হবে: ১. মোরগের মত বাহাদুরি; ২. মুরগির মতো স্নেহ ও দরদ; ৩. সিংহের মতো সাহসী অন্তর; ৪. বাঘের মতো আকস্মিক ক্ষিপ্র আক্রমণ; ৫. শুকরের মতো হামলা; ৬. কুকুরের মতো জখমে ও আঘাতে ধৈর্য ধারণের সক্ষমতা; ৭. সারসের মতো লোভ; ৮. শিয়ালের মতো চতুরতা ও কৌশল; ৯. কাকের মতো সতর্ক দৃষ্টি; ১০. খোরাসানের একটি জন্তুর মতো বলিষ্ট দেহ যে জন্তুটি কখনোও শীর্ণ হয় না।” –শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/৭৬
উত্তর:
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا
“আল্লাহ তাআলা তোমাদের আদেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা অবশ্যই আমানতসমূহ উপযুক্ত ব্যক্তির হাতে সমর্পণ করবে।”- নিসা ৫৮
“আল্লাহ তাআলা তোমাদের আদেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা অবশ্যই আমানতসমূহ উপযুক্ত ব্যক্তির হাতে সমর্পণ করবে।”- নিসা ৫৮
হাদিসে এসেছে,
إنها أمانة
“নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব ও পদসমূহ হচ্ছে আমানত।” –সহীহ মুসলিম ৪৮২৩
“নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব ও পদসমূহ হচ্ছে আমানত।” –সহীহ মুসলিম ৪৮২৩
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে,
قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( إذا ضيعت الأمانة فانتظر الساعة ) . قال كيف إضاعتها يا رسول الله ؟ قال ( إذا أسند الأمر إلى غير أهله فانتظر الساعة )
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমানত যখন নষ্ট করা হবে তখন কেয়ামতের অপেক্ষা করতে থাকবে। সাহাবি জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমানত কিভাবে নষ্ট করা হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব যখন অযোগ্য লোকের হাতে সমর্পণ করা হবে তখন কেয়ামতের অপেক্ষা করতে থাকবে।” –সহীহ বুখারি ৬১৩১ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
وقد دلت سنة رسول الله صلى الله عليه وسلم على أن الولاية أمانة يجب ... وقد أجمع المسلمون على معنى هذا. اهـ
“(কুরআনে কারীমের পাশাপাশি) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সু্ন্নত থেকেও প্রমাণিত যে, নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব ও পদসমূহ আমানত। … এ ধরনের বিষয়াশয়ে সকল মুসলমানের ইজমা বিদ্যমান।” –মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/২৪৮অতএব, প্রতিটি পদ এমন ব্যক্তির হাতেই সমর্পণ করতে হবে যে তার উপযুক্ত। জিহাদের বেলায়ও এমনই। এমন ব্যক্তিকেই আমীর নির্ধারণ করবে যে এর উপযুক্ত এবং যার মাধ্যমে উদ্দেশ্য সফল হবে।
ইমাম মুহাম্মাদ রহ. (১৮৯হি.) বলেন,
وينبغي أن يستعمل على ذلك البصير بأمر الحرب ، الحسن التدبير لذلك ، ليس ممن يقحم بهم في المهالك ، ولا ممن يمنعهم عن الفرصة إذا رأوها ، لأن الإمام ناظر لهم ، وتمام النظر أن يؤمر عليهم من جربه بهذه الخصال ، فإنه إذا كان يمنعهم من الفرصة يفوتهم ما لا يقدرون على إدراكه ، على ما قيل : الفرصة خلسة . وإذا اقتحم في المهالك من جرأته لم يجدوا بدا من متابعته ، ثم يخرج هو بقوته وربما لا يقدرون على مثل ما قدر هو فيهلكون. اهـ
“এমন ব্যক্তিকে আমীর বানাতে হবে যে রণকৌশলে অভিজ্ঞ। যুদ্ধ পরিচালনায় সুদক্ষ। এমন (দুঃসাহসী) নয় যে, মুজাহিদদেরকে বিপদের মুখোমুখী করে বসবে, আবার এমন (অদক্ষ)ও নয় যে, উপযুক্ত কোনো সুযোগ পেয়ে গেলেও তাদেরকে (হামলা করা থেকে) বারণ করে রাখবে। ইমামুল মুসলিমিন উম্মাহর কল্যাণার্থে নিযুক্ত। আর পরিপূর্ণ কল্যাণ এরই মধ্যে যে, এমন ব্যক্তিকে আমীর বানাবে যার মাঝে এসব গুণ পরীক্ষিত। কেননা, সুযোগের সময় যদি আমীর মুজাহিদদের বারণ করে রাখে তাহলে এমন একটি সুযোগ তাদের হাতছাড়া হয়ে গেল যার ক্ষতিপূরণ আর সম্ভব নয়। বলা হয়, ‘সুযোগ মূহুর্তেই কাজে লাগাতে হয়, নয়তো হাতছাড়া হয়ে যায়’। অপর দিকে দুঃসাহসিকতার কারণে আমীর যখন বাঘের মুখে ঝাঁপ দেবেন অনুসারি মুজাহিদদের জন্য তার অনুসরণ ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। এরপর তিনি হয়তো শক্তিশালী হওয়ায় বেঁচে আসতে পারবেন কিন্তু অন্যরা হয়তো তা পারবে না। ফলে ধ্বংসের শিকার হবে।” –শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/৭৫
ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০হি.) বলেন,
وإنما يؤمر عليهم من يكون صالحا لذلك، بأن يكون حسن التدبير في أمر الحرب ورعا مشفقا عليهم سخيا شجاعا. اهـ
“কেবল উপযুক্ত ব্যক্তিকেই আমীর বানাবে। উপযুক্ত হচ্ছেন, যে যুদ্ধ পরিচালনায় সুদক্ষ। আল্লাহভীরু। মুজাহিদদের প্রতি দরদি। প্রশস্ত দিলের অধিকারী। বীর বাহাদুর।” –মাবসূতে সারাখসী ১০/৪আরো বলেন,
ويحكى عن نصر بن سيار مقرب البرامكة الذي أخرجه أبو مسلم عن مرو أنه قال : اجتمع عظماء العجم على أن من كان صاحب جيش فينبغي أن يكون فيه عشر خصال من خصال البهائم : شجاعة كشجاعة الديك ، وتحنن كتحنن الدجاجة يعني الشفقة ، وقلب كقلب الأسد ، وغارة كغارة الذئب ، وحملة كحملة الخنزير ، وصبر كصبر الكلب - أي على الجراحة - وحرص كحرص الكركي ، وروغان كروغان الثعلب - أي الحيل - وحذر كحذر الغراب ، وسمن كسمن الدابة التي لا ترى مهزولة أبدا ، وهي تكون بخراسان. اهـ
“নাসর ইবনে সাইয়ার রহ. থেকে বর্ণিত যে তিনি বলেন, অনারবের সকল যুদ্ধবিশারদ একমত যে, সেনাপতির মাঝে জানুয়ারের দশটি ভাল গুণ থাকতে হবে: ১. মোরগের মত বাহাদুরি; ২. মুরগির মতো স্নেহ ও দরদ; ৩. সিংহের মতো সাহসী অন্তর; ৪. বাঘের মতো আকস্মিক ক্ষিপ্র আক্রমণ; ৫. শুকরের মতো হামলা; ৬. কুকুরের মতো জখমে ও আঘাতে ধৈর্য ধারণের সক্ষমতা; ৭. সারসের মতো লোভ; ৮. শিয়ালের মতো চতুরতা ও কৌশল; ৯. কাকের মতো সতর্ক দৃষ্টি; ১০. খোরাসানের একটি জন্তুর মতো বলিষ্ট দেহ যে জন্তুটি কখনোও শীর্ণ হয় না।” –শরহুস সিয়ারিল কাবির ১/৭৬
***
Comment