(বিগত পর্বসমূহে যে সকল কারণে শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ করা ওয়াজিব হয়ে যায়, তার দুটি কারণ- নামায ত্যাগ করা ও মানবরচিত বিধান দ্বারা শাসন করা- নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি, এ পর্বে শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব হওয়ার তৃতীয় কারণ নিয়ে আলোচনা করবো, ইনশাআল্লাহ।)
যে সকল কারণে শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ করা ওয়াজিব হয় তার একটি হলো, শাসকের পাপাচার ও অন্যায়-অবিচার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া, যার কারণে মুসলমানদের দ্বীন-দুনিয়া উভয়টি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং যদিও জালেম শাসকের বিপক্ষে মূল বিধান হলো, তার জুলুম অত্যাচার সহ্য করে নেয়া- কিন্তু এ হুকুম ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ তা সীমার মধ্যে থাকে। কিন্তু যখন তার পাপাচার ও জুলুম-অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যায় এবং তাকে বহাল রাখলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বহুগুণ বেশি হয়, তবে তাকে অপসারণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
আল্লামা শামী রহ. বলেন,
وفي المواقف وشرحه: إن للأمة خلع الإمام وعزله بسبب يوجبه، مثل أن يوجد منه ما يوجب اختلال أحوال المسلمين وانتكاس أمور الدين كما كان لهم نصبه وإقامته لانتظامها وإعلائها، وإن أدى خلعه إلى فتنة احتمل أدنى المضرتين. (رد المحتار: 4/264)
“শাসককে অপসারণ করার মত কোন বৈধ কারণ পাওয়া গেলে উম্মত শাসককে পদচ্যুত করতে পারবে। যেমন শাসকের কাজের কারণে যদি উম্মতের অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে যায় কিংবা দ্বীনি বিষয়াদি উলট-পালট হয়ে যায়, তাহলে তাকে অপসারণ করা যাবে। কেননা শাসককে নিয়োগই করা হয়েছিল দ্বীনি বিষয়াদির দেখাশোনা করার জন্য। (সুতরাং যদি তার দ্বারা দ্বীনের কোন কল্যাণ হওয়ার পরিবর্তে শুধু ক্ষতিই হতে থাকে তাহলে তাকে ক্ষমতায় রেখে কি লাভ?) তবে যদি তাকে অপসারণ করতে গেলে যুদ্ধবিগ্রহ ও ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হওয়ার আশংকা থাকে তাহলে যেটা মন্দের ভালো সেটা অবলম্বন করতে হবে। (অর্থাৎ তার দ্বারা যে ক্ষতি হচ্ছে তা যদি যুদ্ধ-বিগ্রহ ও ফিতনা-ফাসাদের ক্ষতির চেয়েও বেশি হয় তবে যুদ্ধ করেই তাকে অপসারণ করবে। আর যদি তার কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তাকে অপসারণ করতে গেলে তার থেকেও বেশি ক্ষতির আশংকা থাকে তবে তাকে অপসারণ করবে না।) –রদ্দুল মুহতার, ৪/২৬৪
শাফেয়ী মাযহাবের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব ইমামুল হারামাইন আবুল মাআলী জুয়াইনী রহ (মৃ: ৪৭৬ হি.) বলেন,
فأما إذا تواصل منه العصيان، وفشا منه العدوان، وظهر الفساد، وزال السداد، وتعطلت الحقوق والحدود، وارتفعت الصيانة، ووضحت الخيانة، واستجرأ الظلمة، ولم يجد المظلوم منتصفا ممن ظلمه، وتداعى الخلل والخطل إلى عظائم الأمور، وتعطيل الثغور، فلا بد من استدراك هذا الأمر المتفاقم على ما سنقرر القول فيه على الفاهم – إن شاء الله عز وجل – وذلك أن الإمامة إنما تعنى لنقيض هذه الحالة، فإذا أفضى الأمر إلى خلاف ما تقتضيه الزعامة والإيالة، فيجب استدراكه لا محالة.
وترك الناس سدى، ملتطمين لا جامع لهم على الحق والباطل أجدى عليهم من تقريرهم على اتباع من هو عون الظالمين، وملاذ الغاشمين، وموئل الهاجمين، ومعتصم المارقين الناجمين، وإذا دفع الخلق إلى ذلك، فقد اعتاصت المسالك، وأعضلت المدارك، فليتئد الناظر هنالك، وليعلم أن الأمر إذا استمر على الخبال، والخبط والاختلال، كان ذلك لصفة في المتصدي للإمرة، وتيك هي التي جرت منه هذه الفترة، ولا يرتضي هذه الحالة من نفسه ذو حصافة في العقل، ودوام التهافت في القول والفعل مشعر بركاكة الدين في الأصل، أو باضطراب الجبلة، وهو خبل، فإن أمكن استدراك ذلك، فالبدار البدار قبل أن تزول الأمور عن مراتبها وتميل من مناصبها، وتميد خطة الإسلام بمناكبها. (غياث الأمم في التياث الظلم ص: 107 ط. مكتبة إمام الحرمين: 1401)
وترك الناس سدى، ملتطمين لا جامع لهم على الحق والباطل أجدى عليهم من تقريرهم على اتباع من هو عون الظالمين، وملاذ الغاشمين، وموئل الهاجمين، ومعتصم المارقين الناجمين، وإذا دفع الخلق إلى ذلك، فقد اعتاصت المسالك، وأعضلت المدارك، فليتئد الناظر هنالك، وليعلم أن الأمر إذا استمر على الخبال، والخبط والاختلال، كان ذلك لصفة في المتصدي للإمرة، وتيك هي التي جرت منه هذه الفترة، ولا يرتضي هذه الحالة من نفسه ذو حصافة في العقل، ودوام التهافت في القول والفعل مشعر بركاكة الدين في الأصل، أو باضطراب الجبلة، وهو خبل، فإن أمكن استدراك ذلك، فالبدار البدار قبل أن تزول الأمور عن مراتبها وتميل من مناصبها، وتميد خطة الإسلام بمناكبها. (غياث الأمم في التياث الظلم ص: 107 ط. مكتبة إمام الحرمين: 1401)
“যদি শাসক সর্বদা পাপাচারে লিপ্ত থাকে; তার জুলুম-অত্যাচার ব্যাপক হয়ে যায়; যমিনে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে; মানুষের হক বিনষ্ট হয়; হুদুদ-কিসাস পরিত্যক্ত হয়; …. যালেমদের দুঃসাহস বেড়ে যায়; মাযলুম যালেম থেকে হক উদ্ধার করার মত কাউকে না পায়; গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিতেও ক্রটি-বিচ্যুতি দেখা দেয়; সীমান্ত অনিরাপদ হয়ে পড়ে; তখন এই ভয়াবহ বিষয়ের প্রতিবিধান করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। কেননা শাসককে নিয়োজিত করা হয় এর বিপরীত উদ্দেশ্যে। সুতরাং যখন শাসক থেকে উদ্দেশ্যের বিপরীত কার্যাবলী ঘটতে থাকে তখন তার প্রতিকার করা জরুরী।
জনগণকে শাসকবিহীন ভাবে ছেড়ে রাখা এমন শাসকের অধীনে রাখার চেয়ে উত্তম যে যালেমদের সহায়ক, অপরাধীদের আশ্রয়দাতা, দুর্বৃত্তদের রক্ষাকারী। যদি মানুষকে এমন শাসকের অধীনে থাকতে বাধ্য করা হয়ে তবে তো বিষয়টি খুবই জটিল আকার ধারণ করবে। সুতরাং যে এ মাসয়ালা নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে সে যেন গভীরভাবে ভেবে দেখে এবং জেনে রাখে যে, মুসলমানদের দ্বীন-দুনিয়ার বিরামহীন অধঃপতন শাসকের খারাবীর কারণেই হয়ে থাকে। তাই কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি এই অবস্থাকে মেনে নিতে পারে না। …. সুতরাং যদি এর প্রতিকার করা সম্ভব হয় তবে ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পূর্বেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয়া দরকার।” -গিয়াসুল উমাম, পৃ: ১০৭
উযীর ইয়ামানী রহ. (মৃত্যু: ৮৪০ হি.) বলেন,
الفصل الثاني: في بيان أنّ منع الخروج على الظّلمة استثنى من ذلك من فحش ظلمه، وعظمت المفسدة بولايته، مثل: يزيد بن معاوية، والحجّاج بن يوسف، وأنّه لم يقل أحدّ منهم ممّن يعتدّ به بإمامة من هذه حاله، وإن ظنّ ذلك من لم يبحث، لإيهام ظواهر عباراتهم في بعض الموضع، فقد نصّوا على بيان مرادهم وخصّوا عموم ألفاظهم، فممّن ذكره الإمام الجويني ....) ثم ذكر رحمه الله قول الجويني رحمه الله المارُّ آنفا. (الروض الباسم في الذب عن سنة أبي القاسم، 2/381 ط. دار عالم الفوائد للنشر والتوزيع).
“যালেম শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ করা যাবে না’ এ বিধান এমন শাসকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় যার জুলুম-অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং তার শাসনের ক্ষতি ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। যেমন ইয়াযীদ বিন মুয়াবিয়া এবং হাজ্জাজ বিন ইউসুফ। উল্লেখযোগ্য কোন আলেম এমন শাসকের শাসনকে বৈধ বলেননি। যদিও তাদের বক্তব্যের বাহ্যিক বিবরণ হতে কখনো কখনো এমন সংশয় সৃষ্টি হয়। কেননা তারা (অন্যত্র) নিজেদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যারা এ বিষয়টা উল্লেখ করেছেন তাদের একজন হলেন ইমাম জুয়াইনী ...।” এরপর তিনি ইমাম জুয়াইনী রহ. -র উপরোক্ত বক্তব্য নকল করেন। -আলরওযুল বাসেম, ২/৩৮১
আলী রাযি. বলেন,
عن ليث قال: قال علي بن أبي طالب: «لا يصلح الناس إلا أمير بر أو فاجر»، قالوا: يا أمير المؤمنين، هذا البر فكيف بالفاجر؟ قال: «إن الفاجر يؤمن الله عز وجل به السبل، ويجاهد به العدو، ويجبي به الفيء، وتقام به الحدود، ويحج به البيت، ويعبد الله فيه المسلم آمنا حتى يأتيه أجله». رواه الإمام البيهقي رحمه الله في شعب الإيمان (7102) وروى ابن أبي شيبة نحوه في «المصنف» (39086) بإسناد آخر، وقال الشيخ عوامة حفظه الله في تعليقه على المصنف: (إسناده حسن، إن كان حبيب العبسي هو ابن سليم المترجم في التهذيبين).
“মানুষ শাসক ব্যতীত সু্ষ্ঠুরূপে জীবনযাপন করতে পারে না, চাই শাসক নেককার বা ফাসেক। লোকেরা বললো, হে আমীরুল মুমিনীন! নেককার শাসকের প্রয়োজনীয়তা তো আমরা বুঝি, কিন্তু ফাসেক শাসক থাকার কি প্রয়োজন? আলী রাযি. বললেন, ফাসেক শাসকের মাধ্যমেও আল্লাহ তায়ালা পথ-ঘাট নিরাপদ রাখেন, তার মাধ্যমে কাফেরদের সাথে জিহাদ জারী থাকে; কর-ট্যাক্স আদায় হয়; হুদুদ-কিসাস কায়েম হয়; (তার ব্যবস্থাপনায়) হজ হয় এবং মুমিন তার শাসনাধীনে মৃত্যু পর্যন্ত নিরাপদে ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকে।” -শুয়াবুল ইমান, ইমাম বাইহাকী রহ. হাদিস নং:- ৭১০২ ইবনে আবী শাইবা রহ. ভিন্ন সনদে কাছাকাছি অর্থে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, ৩৯০৮৬।
হাসান বসরী রহ. বলেন,
وقال الحسن في الأمراء: هم يلون من أمورنا خمسا: الجمعة والجماعة والعيد والثغور والحدود، والله ما يستقيم الدين إلا بهم، وإن جاروا وظلموا، والله لما يصلح الله بهم أكثر مما يفسدون. (جامع العلوم والحكم للإمام ابن رجب الحنبلي رحمه الله 2/117 ط. مؤسسة الرسالة)
“শাসকরা আমাদের পাঁচটি জিনিষের যিম্মাদারী পালন করে:- জুমা, জামাত, ইদ, সীমান্তরক্ষা ও হুদুদ-কিসাস কায়েম করা। আল্লাহর শপথ তাদের দ্বারাই দ্বীন ঠিক থাকে। যদিও তারা জুলুম-অত্যাচার করে, কিন্তু তাদের দ্বারা যে লাভ হয় তা তাদের ক্ষতির চেয়ে বেশি।”
এখানে লক্ষণীয়, আলী রাযি. ও হাসান বসরি রহ. জালেম শাসকের আনুগত্য করতে উৎসাহিত করছেন এবং তার বিপক্ষে বিদ্রোহ করতে নিষেধ করছেন এ কথা বলে যে, “তাদের দ্বারা শত্রুদের সাথে জিহাদ ও সীমান্ত রক্ষা হয়। চোর-ডাকাত নির্মূল হওয়ার কারণে মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য ও জীবনযাপন নিরাপদ হয়। মুমিন নির্বিঘ্নে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করতে পারে। জালেম শাসকদের দ্বারাও হুদুদ কায়েমের মতো গুরুত্বপূর্ণ দ্বীনি বিষয়াদি সম্পাদিত হয় এবং তাদের দ্বারা যা কল্যাণ সাধিত হয় তা তাদের ক্ষতির চেয়ে বেশী।” কিন্তু বর্তমান শাসকদের দ্বারা যেহেতু জিহাদ, সীমান্তরক্ষা-হুদুদ কায়েম ইত্যাদি কিছুই হচ্ছে না। বরং উল্টো তারা আইন করে হুদুদ কায়েম করা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ছত্রছায়ায় থেকেই আজ চোর-ডাকাত-চাঁদাবাজ ও দলীয় ক্যাডাররা মানুষদের যিম্মী করে রেখেছে। শত্রুর সাথে জিহাদ ও সীমান্ত রক্ষা তো তাদের দ্বারা হচ্ছেই না, বরং উল্টো তারাই শত্রুর সাথে গলাগলি করে দেশকে ধীরে ধীরে শত্রুর হাতে তুলে দিচ্ছে। দুর্নীতি-লুটপাট ও অর্থপাচার করে দেশ ও জাতিকে ফতুর বানিয়ে দিচ্ছে। ওদের মাধ্যমে মুমিন নিরাপদে আল্লাহর ইবাদত করতে পারা তো দূরে থাক- বরং ওদের কারণেই আজ মুমিনের দুনিয়া-আখেরাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। যদি মেনে নিই ওদের দ্বারা দুনিয়াবী কিছু কল্যাণ হচ্ছে, তবুও ওদের দ্বারা যে অকল্যাণ হচ্ছে (বিশেষ করে মানুষের দ্বীনি বরবাদি যা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী কল্যাণ-অকল্যাণ হতে অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ) তা ওদের দ্বারা হওয়া কল্যাণের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। তাই –বর্তমান শাসকদের ফাসেক বলা হোক বা মুরতাদ- সর্বাবস্থায় ওদের বিপক্ষে যুদ্ধ করা ওয়াজিব হবে।
দেখুন, উলামায়ে কেরাম মোল্লা উমরের নেতৃত্বে তালেবানদের জিহাদকে সমর্থন করেছেন। অথচ তালেবানরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি। বরং তালেবান প্রতিষ্ঠাই হয়েছে রাশিয়া আফগান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী আফগান কমান্ডাররা যখন আফগানিস্তানে যুলুমের রাজ্য কায়েম করে, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ব্যাপক আকার ধারণ করে, তখন মোল্লা উমর এই কমান্ডারদের বিপক্ষে জিহাদ শুরু করেন। অথচ তখন আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বুরহানুদ্দীন রব্বানী ছিল। যদিও তার ক্ষমতা দুর্বল ছিল। (মোল্লা উমরের আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও তালিবান, মাওলানা উবাইদুল্লাহ নদভী, পৃ: ১৯-৩৭)
পাকিস্তানের বরেণ্য আলেম মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানবী শহিদ রহ. বলেন,
جهاں تك مجھے معلوم هے طالبان كي تحريك صحيح ہے، أفغانستان كي جن جماعتوں أور ان كے ليڈروں نے روس كے خلاف لڑائي كي وه تو صحيح تھي، ليكن بعد ميں ان ليڈروں نے اپنے اپنے علاقه ميں اپني حكومت بنالي- اور ملك ميں طوائف الملوكي كا دور دوره هوا، ملك ميں نه امن قائم هوا، نه پورے ملك ميں كوئي مركزي حكومت قائم هوئي، نه اسلامي نظام نافذ هوا-
طالبان نے جهاد افغانستان كو رائگان هوتے هوۓ ديكھا تو اسلامي حكومت قائم كرنے كے لۓ تحريك چلايئ، اور جو علاقے ان كے زير نگيں آۓ ان ميں اسلام نظام نافذ كيا، افغانستان كے تمام ليڈروں كا فرض تھا وه اس تحريك كي حمايت كرے، مگر وه طالبان كے مقابله ميں آگۓ، اب افغانستان ميں لڑايئ اس نكته پر هےكه يهاں اسلامي نظام نافذ هو يا نهيں؟ طالبان كي تحريك اسلامي نظام كے نفاذ كے لۓ هے اور ان كے مخالفين كي حيثيت باغيوں كي هے، اس لۓ طالبان كے جو لوگ مار ےجاتے هيں وه اعلاء كلمة الله كے لۓ جان ديتے هيں بلا شبه وه شهيد هيں- آبكي مسائل : (7/ 375 – 376 ط. مكتبة لدهيانوي 1999 هـ.)
طالبان نے جهاد افغانستان كو رائگان هوتے هوۓ ديكھا تو اسلامي حكومت قائم كرنے كے لۓ تحريك چلايئ، اور جو علاقے ان كے زير نگيں آۓ ان ميں اسلام نظام نافذ كيا، افغانستان كے تمام ليڈروں كا فرض تھا وه اس تحريك كي حمايت كرے، مگر وه طالبان كے مقابله ميں آگۓ، اب افغانستان ميں لڑايئ اس نكته پر هےكه يهاں اسلامي نظام نافذ هو يا نهيں؟ طالبان كي تحريك اسلامي نظام كے نفاذ كے لۓ هے اور ان كے مخالفين كي حيثيت باغيوں كي هے، اس لۓ طالبان كے جو لوگ مار ےجاتے هيں وه اعلاء كلمة الله كے لۓ جان ديتے هيں بلا شبه وه شهيد هيں- آبكي مسائل : (7/ 375 – 376 ط. مكتبة لدهيانوي 1999 هـ.)
“আমার জানামতে, তালেবানদের (জিহাদি) আন্দোলন সঠিক। আফগানিস্তানে যে দল ও তাদের নেতারা রাশিয়ার বিপক্ষে যুদ্ধ করেছিলো তাদের যুদ্ধ তো ঠিক ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারা নিজ নিজ এলাকায় সরকার গঠন করে। দেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্য গড়ে তুলে পরস্পর হানাহানি শুরু করে। ফলে দেশে কোন নিরাপত্তা ছিলো না, পুরো দেশে কোন কেন্দ্রীয় সরকারও গঠিত হয়নি, ইসলামী আইনও বাস্তবায়িত হয়নি।
তালেবানরা আফগান জিহাদ নিষ্ফল হতে দেখে ইসলামী হুকুমত কায়েম করার জন্য (জিহাদি) আন্দোলন শুরু করে। যেসব এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে তাতে ইসলামী শাসন চালু করে। সকল নেতার কর্তব্য ছিলো, এই আন্দোলনের সাহায্য করা। কিন্তু তারা সাহায্যের পরিবর্তে তাদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে। বর্তমানে আফগানিস্তানে ইসলামী আইন বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ হচ্ছে। তালেবানদের আন্দোলন ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য আর তাদের বিরোধীরা হচ্ছে বিদ্রোহী। সুতরাং তালেবানদের মধ্য হতে যারা নিহত হবেন তারা আল্লাহর দ্বীনকে সুউচ্চ করার জন্যই নিহত হবেন। তাই নিঃসন্দেহে তারা শহিদ বলে গণ্য হবেন।” -আপকে মাসায়েল, ৭/৩৭৫-৩৭৬
চলবে ইনশাআল্লাহ
***
যে সকল ক্ষেত্রে মুসলিম শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব (পর্ব-১ প্রথম ক্ষেত্র- নামায পরিত্যাগ করা) https://dawahilallah.com/showthread....%26%232535%3B)
যে সকল ক্ষেত্রে মুসলিম শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব (পর্ব-২) https://dawahilallah.com/showthread....%26%232536%3B)
যে সকল ক্ষেত্রে মুসলিম শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব (পর্ব-৩ দ্বিতীয় ক্ষেত্র- মানবরচিত বিধান দ্বারা দেশ শাসন করা)
https://dawahilallah.com/showthread....%26%232472%3B)
যে সকল ক্ষেত্রে মুসলিম শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব (পর্ব-৪ আল্লামা তাকী উসমানী দা. বা. এর মত পর্যালোচনা)
Comment