Announcement

Collapse
No announcement yet.

করোনা মহামারি ০২. প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • করোনা মহামারি ০২. প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থা

    করোনা মহামারি ০২. প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থা- ০১

    গত দুই পর্বে আমরা আলহামদুলিল্লাহ সংক্রমণ নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা দেখেছি যে, কিছু কিছু রোগ এমন আছে যেগুলো আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় সাধারণত একজন থেকে অন্য জনের মাঝে ছড়িয়ে থাকে।


    যখন ছড়িয়ে থাকে তখন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা শরীয়ত বিরোধী হবে না। সাধ্যমতো প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও যদি ছড়িয়ে যায় তখন আল্লাহ তাআলার ফায়সালা মেনে নিয়ে সবর করে থাকা। বেসবর না হওয়া। হা হুতাশ না করা। এতে আল্লাহ তাআলার কাছে অশেষ সওয়াব পাওয়া যাবে। কোনো মুমিনকে আল্লাহ তাআলা বিপদাপদ দেন তার দারাজাত বুলন্দ করার জন্য। মুমিন যখন বিপদে সবর করে তখন তার গুনাহ মাফ হয় এবং দারাজাত বুলন্দ হয়।


    আমরা যদি হাদিসগুলো লক্ষ করি দেখবো যে, শরীয়ত চতুর্দিক থেকে প্রতিরোধ ব্যবস্থার নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে-

    # আক্রান্ত উটের পালকে সুস্থ উটের পালের সাথে মিশাতে না করেছেন।

    لَا يُورِدَنَّ مُمْرِضٌ عَلَى مُصِحٍّ
    “অসুস্থ উটের মালিক যেন তার রোগাক্রান্ত উটগুলোকে নিয়ে গিয়ে (অন্য মালিকের) সুস্থ উটের সাথে মিশ্রিত না করে।” –সহীহ বুখারি ৫৪৩৭

    সংক্রমণ রোগে উটেরই যখন এ বিধান তখন মানুষের বেলায় এমনটা হওয়া তো আরো স্বাভাবিক। অতএব, সংক্রমণ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থদের সাথে মিশতে যাবে না। এ কারণেই উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু জুযাম তথা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে জনসমাগমে মিশতে নিষেধ করেছিলেন। (ফাতহুল বারি ১০/২০৫, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬৪)



    # সুস্থ ব্যক্তিকে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, এমনকি তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেও মানা করেছেন।

    فر من المجذوم كما تفر من الأسد
    “সিংহ থেকে যেমন পলায়ন কর কুষ্ঠ রোগী থেকেও তেমনি পলায়ন করবে।” –সহীহ বুখারি ৫৩৮০

    لا تديموا النظر إلى المجذومين
    “কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে না।” –সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৫৪৩


    এ ধরনের নির্দেশ শুধু কুষ্ঠ রোগের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, সকল সংক্রমণ রোগের বেলায়ই এ ধরনের বিধান প্রযোজ্য।


    # আক্রান্ত এলাকায় যেতে নিষেধ করেছেন এবং আক্রান্ত এলাকা থেকে বের হতেও নিষেধ করেছেন।

    إِذَا سَمِعْتُمْ بِالطَّاعُونِ بِأَرْضٍ فَلَا تَدْخُلُوهَا وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلَا تَخْرُجُوا مِنْهَا
    “কোনো ভূমিতে তাউন দেখা দিয়েছে শুনলে তাতে প্রবেশ করবে না। আর তোমরা কোনো ভূমিতে থাকাবস্থায় যদি সেখানে দেখা দেয় তাহলে সেখান থেকে বের হবে না।” –সহীহ বুখারি ৫৭২৮


    উপরোক্ত হাদিসগুলো থেকে সংক্রমণ রোগের বেলায় আমরা চতুর্দিক থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থার নির্দেশনা পেলাম-
    এক. আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তির সাথে মিশবে না।
    দুই. সুস্থ ব্যক্তিও আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে মিশবে না।
    তিন. আক্রান্ত এলাকায় কেউ যাবে না।
    চার. আক্রান্ত এলাকার কোন লোকও বাহিরে বের হবে না।


    এভাবে এলাকা থেকে এলাকায় বা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে রোগ সংক্রমিত হওয়ার সকল পথ ইসলাম বন্ধ করে দিয়েছে।


    আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান যত সিস্টেমই বের করুক- ইসলামের এ নির্দেশনার বাহিরে যেতে পারবে না। এর চেয়ে সুন্দর কোনো ব্যবস্থাও ইনশাআল্লাহ গ্রহণ করতে পারবে না।


    এলাকা থেকে এলাকায় যেন না ছড়ায় এজন্য লক ডাউন করা হয়েছে- এর ধারণা সর্বপ্রথম ইসলামই দিয়েছে।


    ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে যেন না ছড়ায় এজন্য কোয়ারেনটাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে- এ ধারণাও ইসলামের নির্দেশনার বাহিরে না।



    এছাড়া হাত ধোয়া, পরিষ্কার থাকা, হাঁচির সময় সতর্ক থাকা ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা ও নিয়মকানুন ইসলামের নিত্যদিনের শিক্ষা।


    আজ পত্রিকার পাতা খুললেই আপনি চীনের প্রশংসা দেখতে পাবেন। কিভাবে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগের সংক্রমণ কমিয়ে এনেছে- এ নিয়ে চীনাদের প্রশংসার শেষ নেই। কিন্তু নিমুকহারাম এসব সাংবাদিক কলামিস্টদের যবানে ইসলামের প্রশংসা একবারও বের হয় না। কিন্তু আমরা যারা মুসলমান আমরা যেন আমাদের ধর্ম নিয়ে হীনমন্যতার শিকার না হই।


    বি.দ্র.
    ব্যবস্থা যতই গ্রহণ করা হোক রোগ দেয়া নেয়ার মালিক আল্লাহ। তিনি যতক্ষণ না চাইবেন রোগ যাবে না। এজন্য ব্যবস্থা যতই গ্রহণ করা হচ্ছে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ হচ্ছে না। মৃত্যুও বন্ধ হচ্ছে না। আল্লাহ তাআলার যতটুকু ইচ্ছা ততটুকুতে না পৌঁছা পর্যন্ত কেউ থামাতে পারবে না। অতএব, সকলের উচিৎ তাওবা করে আল্লাহ তাআলা দিকে রুজু হওয়া। দোয়া করা। আর সাধ্যমতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আক্রান্ত হয়ে গেলে সওয়াবের নিয়তে সবর করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের হিফাজত করুন। সুখে দুঃখে সর্বাবস্থায় আল্লাহ তাআলার ফায়সালা সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।

    (চলমান)

  • #2
    জাযাকাল্লাহ। ইনকিলাব পত্রিকা অবশ্য ইসলামের এ অগ্রগামীতার কথা কিছুটা ছাপিয়েছে দেখেছিলাম।

    Comment


    • #3
      যাজাকাল্লহ,
      মাশাআল্লাহ

      Comment


      • #4
        Originally posted by ইলম ও জিহাদ View Post
        এলাকা থেকে এলাকায় যেন না ছড়ায় এজন্য লক ডাউন করা হয়েছে- এর ধারণা সর্বপ্রথম ইসলামই দিয়েছে ৷


        ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে যেন না ছড়ায় এজন্য কোয়ারেনটাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে- এ ধারণাও ইসলামের নির্দেশনার বাহিরে না ৷
        মা শা আল্লাহ
        সুন্দর কথাটা স্বরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে জাঝাকাল্লাহ ৷
        "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

        Comment


        • #5
          আল্লাহ তা'আলা আমাদের হেফাজত করুন,,,
          এবং আক্রান্ত মুমিনদের ধৈর্য্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন,,,
          আমিন
          মুমিনের একটাই স্লোগান,''হয়তো শরীয়াহ''নয়তো শাহাদাহ''

          Comment


          • #6
            করোনা মহামারি ০২. প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থা- ০২

            উপরে আমরা সংক্রমণ ও প্রতিরোধ-প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানে ইনশাআল্লাহ কয়েকজন আইম্মার বক্তব্য এনে আরেকটু স্পষ্ট করতে চেষ্টা করবো।

            এক. ইবনে আবি জামরা আন্দালুসি রহ. (৬৯৯হি.)

            তাউনের এলাকা থেকে বের না হওয়ার যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে আবি জামরা আন্দালুসি রহ. (৬৯৯হি.) বলেন,

            وفيه وجه آخر من طريق النظر والتحقيق. وهو أنه إذا أرسل ذلك العذاب على تلك البقعة التي كان الناس بها فالمقصوب بالعذاب أولئك الناس لا البقعة نفسها. فمن كان قد نفذ حكم الله تعالى فيه بإصابة ذلك البلاء فأين ما فر فأمر الله لا يفارقه حيث كان. فهروبه زيادة فى التعب. وإن كان ممن لم يقدر عليه بشيء من ذلك يحصل في قعوده إذا كان صابرا محتسبا أجر شهيد- كما ذكر فى الحديث بعد هذا- وراحة بدنه –بهجة النفوس 4\55، ونقله الحافظ فى الفتح (10\189-190) بالاختصار

            “এখানে একটি যৌক্তিক দিকও রয়েছে। সেটি হলো, ঐ (আক্রান্ত) এলাকায় আযাবটি যখন এসেছে তখন এর দ্বারা মূলত উক্ত ভূমিটি টার্গেট নয়, ভূমির অধিবাসীরা টার্গেট। যার ব্যাপারে আল্লাহর ফায়াসালা হয়ে গেছে যে সে উক্ত বালায় আক্রান্ত হবে, সে যেখানেই যাক আল্লাহর ফায়াসালা তার পিছু ছাড়বে না। কাজেই ভাগতে যাওয়া (অহেতুক) কষ্ট বৃদ্ধি বৈ কিছু নয়। আর যদি তার ব্যাপারে এর কোনো কিছুর ফায়াসালা না হয়ে থাকে তাহলে সবরের সাথে সওয়াবের নিয়তে অবস্থান করলে (একদিকে) সে (আক্রান্ত না হলে বা মৃত্যু বরণ না করলেও) শহীদের সওয়াব লাভ করবে- যেমনটা হাদিসে এসেছে, অন্য দিকে শারীরিক স্বস্তিও পাবে।” –বাহজাতুন নুফুস ৪/৫৫, ফাতহুল বারি ১০/১৮৯-১৯০


            দুই. ইমাম গাযালি রহ. (৫০৫হি.)

            হাফেয ইবনে হাজার রহ. ইমাম গাযালি রহ. (৫০৫হি.) এর বক্তব্য বর্ণনা করেন,

            الهواء لا يضر من حيث ملاقاته ظاهر البدن بل من حيث دوام الاستنشاق فيصل إلى القلب والرئة فيؤثر في الباطن ولا يظهر على الظاهر إلا بعد التأثير في الباطن فالخارج من البلد الذي يقع به لا يخلص غالبا مما استحكم به –فتح الباري 10\189

            “শরীরের উপরিভাগে বায়ু সংমিশ্রণে ক্ষতি হয় না; ক্ষতি হয় যখন নিয়মিত তা শ্বাসের সাথে গ্রহণ করা হয় এবং হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসে প্রবেশ করে। তখন তা ভিতরে সংক্রমণ ঘটায়। বহিরাংশে তখনই এর প্রভাব দেখা দেয় যখন ইতিমধ্যে তা ভিতরাংশে ক্ষতি করে ফেলেছে। ফলে যে এলাকায় মহামারি দেখা দিয়েছে সেখান থেকে যে ব্যক্তি বের হয়ে যায় সে সাধারণত (আক্রমণ থেকে) বাঁচতে পারে না। কারণ, (ভিতরে ভিতরে) ইতিমধ্যে সে (বেশ ভাল করেই) সংক্রমিত হয়ে গেছে।” –ফাতহুল বারি ১০/১৮৯


            তিন. বদরুদ্দিন যারকাশি রহ. (৭৯৪হি.)

            ইবনে হাজার হাইতামি মক্কি রহ. (৯৭৪হি.) বদরুদ্দিন যারকাশি রহ. (৭৯৪হি.) এর বক্তব্য বর্ণনা করেন,

            الواردون من بلد الطاعون إلى بلد ليس بها، والظاهر أن حكمهم حكم البلد الذي انتقلوا عنه؛ لأنهم بصدد أن يقع بهم ذلك لما قد علق بأجسادهم منه كما شاهدنا ذلك كثيرا –فتاوى ابن حجر الهيتمي المكي (ت 974هـ) 4\14، ط. المكتبة الإسلامية

            “তাউনে আক্রান্ত এলাকা থেকে যারা এমন এলাকায় চলে আসবে যেখানে তাউন দেখা দেয়নি তাদের কি বিধান? স্পষ্ট এটাই যে, তাদের উপর সে এলাকার বিধানই প্রযোজ্য হবে যে এলাকা থেকে তারা এসেছে। কারণ, মহামারির জীবাণু ইতিমধ্যে তাদের শরীরে মিশে গেছে। অচিরেই তারাও আক্রান্ত হবে। যেমনটা আমরা অনেকবার দেখেছি।” –ফাতাওয়া ইবনে হাজার হাইতামি ৪/১৪



            এ তিনটি বক্তব্য আমরা যদি লক্ষ করি দেখতে পাবো, সারকথা দাঁড়াচ্ছে- আক্রান্ত এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়েও আক্রমণ থেকে বাঁচা তো সম্ভব নয়ই, বরং অন্যত্র গিয়ে অন্যদের আক্রান্ত করবে।


            ইবনে আবি জামরা রহ.
            বিষয়টি দ্বীনি দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করেছেন যে, যে এলাকায় মহামারি নেমেছে সে এলাকার বাসিন্দারা টার্গেটে পরিণত হয়ে গেছে। সেখানকার একটা নির্দিষ্ট সংখ্যার ব্যাপারে ফায়সালা হয়ে গেছে যে, তারা আক্রান্ত হবেই; এখানে থাকলেও হবে, পালিয়ে গেলেও হবে। আমরাও দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের দেশের বিদেশ ফেরতরাই প্রথমে আক্রান্ত হয়েছে।


            আর ইমাম গাযালি রহ. এবং যারকাশি রহ.
            বিষয়টি দুনিয়াবি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করেছেন যে, মহামারি দেখা দেয়ার অর্থ ইতিমধ্যে অনেকেই ভিতরে ভিতরে আক্রান্ত হয়ে গেছে। ক্রমে ক্রমে উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। যাদের মধ্যে এখনও দেখা দেয়নি তারা যে আক্রান্ত হয়নি তা বলা যায় না। বরং স্বাভাবিক এটাই যে, ইতিমধ্যে উক্ত এলাকার অধিকাংশ লোকজন বা বড় একটা অংশ আক্রান্ত হয়ে গেছে। তারা যদি পালিয়ে অন্য এলাকায় যায়, তাহলে তাদের সাথে সে জীবাণুও যাবে এবং অন্যদের আক্রান্ত করবে। অতএব, পালানোতে কোনো ফায়দা নেই। যারকাশি রহ. নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন যে, আমি অনেকবার স্বচক্ষে তা দেখেছি।


            সব মিলিয়ে বুঝা গেল, আক্রান্ত এলাকার লোকজন বাহিরে না যাওয়া এবং বাহিরের লোকজন আক্রান্ত এলাকায় না আসাই সকলের জন্য নিরাপদ। অধিকন্তু শরীয়তের নির্দেশ মেনে যাওয়া আসা বন্ধ রাখলে সওয়াবও পাবে। ক্ষেত্র বিশেষে শহীদও হবে।


            তাউনের বিধান কি করোনার বেলায় প্রযোজ্য?

            যাওয়া আসা নিষেধাজ্ঞার যে বিধান উপরে বলা হয়েছে হাদিসে সেটা এসেছে তাউনের ব্যাপারে। তাউন (الطاعون) একটা বিশেষ মহামারি (وباء) এর নাম। হাদিসে এসেছে-

            عن أبي موسى قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " فناء أمتي بالطعن والطاعون ". فقيل: يا رسول الله، هذا الطعن قد عرفناه، فما الطاعون؟ قال: " وخز أعدائكم من الجن وفي كل شهداء "

            “হযরত আবু মূসা (আশআরি) রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমার উম্মত বিরান হবে (কাফের) দুশমনের (অস্ত্রের) আঘাত এবং তাউনের মাধ্যমে। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! দুশমনের আঘাত তো বুঝলাম কিন্তু তাউনটা কি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন, ‘তোমাদের জ্বীন দুশমনদের আঘাত। আর উভয়টাতেই অনেক শহীদ রয়েছে।” –মুসনাদে আহমাদ ১৯৫২৮


            অর্থাৎ তাউন হয়ে থাকে জ্বীনের আঘাতে। এজন্যই এতে মৃত্যু বরণ করলে শহীদ বলা হয়েছে। কাফের শত্রুর আঘাতে মারা গেলে যেমন শহীদ, তাউনে যেহেতু জ্বীন শত্রুর আক্রমণে মারা যায় তাই এখানেও শহীদ। যাওয়া আসার এ নিষেধাজ্ঞা তাউনের ব্যাপারে এসেছে। এ বিধান কি অন্যান্য মহামারির বেলায় প্রযোজ্য?
            আমরা যদি নিষেধাজ্ঞার কারণের দিকে তাকাই তাহলে বলা যায়, অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধির বেলায়ও এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে।

            আব্দুল্লাহ ইবনে আবি জামরা রহ. (৬৯৯হি.) বলেন,

            هل هذا النهي يقصر على الطاعون ليس إلا أو يتعدى ذلك بالعلة؟ وهي حيث يعلم موضع ضرر لا يقدم عليه. لا سيما إذا كان متحققا أو يكون غالبا فى الدين. فالنظر يعطى تعديه من أجل وجود العلة، كما عدوا بذلك أحكاما كثيرة –بهجة النفوس 4\55

            “এ নিষেধাজ্ঞা কি তাউনের মাঝেই সীমাবদ্ধ যে অন্য কোন ব্যাধির বেলায় প্রয়োগ হবে না, না’কি একই কারণে তা অন্যান্য (সংক্রামক) ব্যাধির বেলায়ও প্রযোজ্য? সে কারণটি হলো, বিপদসংকুল এলাকা বলে জানা গেলে সেখানে যাবে না। বিশেষত যখন তা নিশ্চিত হয় বা সাধারণত আক্রান্ত হয়েই থাকে? কিয়াসের দাবি এটাই যে, একই কারণে তা অন্যান্য ব্যাধির বেলায়ও প্রযোজ্য হবে।” –বাহজাতুত নুফুস ৪/৫৫


            ইবনে আবি জামরা রহ. এর বক্তব্য যদিও প্রবেশের ব্যাপারে কিন্তু একই কারণে তা বের হওয়ার ব্যাপারেও প্রযোজ্য হওয়ার কথা। এ কারণেই হয়তো আরবের অনেকে এর উপরই ফতোয়া দিয়েছেন। এতে দ্বিমতও আছে।

            তবে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে নিষেধ হোক বা নাই হোক- ইমামুল মুসলিমিন ইচ্ছা করলে এ ধরণের নিষেধাজ্ঞার কানুন জারি করতে পারেন। জনস্বার্থ রক্ষার্থে মুবাহ বিষয়ে বিধি নিষেধ আরোপ করার অধিকার ইমামুল মুসলিমিনের রয়েছে। ওয়াল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআলা আ’লাম।

            (চলমান ইনশাআল্লাহ)

            Comment


            • #7
              মাশা-আল্লাহ, আল্লাহ কবুল করুন আমীন
              ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

              Comment


              • #8
                আলহামদুলিল্লাহ্ এসপ্তাহের শেরা পোষ্টের মোধ্যে এইটা একটা, আল্লাহ্ ভায়ের ইলমে বারাকাদান করুন,
                আল্লাহ্ মিডিয়ার মুজাহিদ সহ সব মুজাহিদের হেফাযত করুন আমিন ইয়া রব্ব।

                Comment


                • #9
                  আলহামদুলিল্লাহ্ এসপ্তাহের শেরা পোষ্টের মোধ্যে এইটা একটা, আল্লাহ্ ভায়ের ইলমে বারাকাদান করুন,
                  আল্লাহ্ মিডিয়ার মুজাহিদ সহ সব মুজাহিদের হেফাযত করুন আমিন ইয়া রব্ব।

                  Comment

                  Working...
                  X