শাইখ আতিয়্যাতুল্লাহ রহ. বলেন: ‘আমিরের আনুগত্য বিষয়ক যে নুসুস ও দালাইল বর্ণিত হলো, এতে প্রধান আমিরের অধীনস্ত অন্যান্য আমির ও দায়িত্বশীলদের আনুগত্যও অন্তর্ভুক্ত। যেমন বর্তমান সময়ে জিহাদরত মুজাহিদ জামাতগুলোর আমিরের আনুগত্য কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন ভূখণ্ডে তামকিন ও শাসনক্ষমতা প্রাপ্ত মুজাহিদ নেতৃবৃন্দের আনুগত্য।
দৃষ্টান্ত স্বরূপ আফগানিস্তানের কথা বলা যায় যেখানে তালিবান মুজাহিদরা দেশের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। জিহাদের আমিরের হুকুম তার শাসন ও নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ইমামে আজমের মতো এবং (اَلسَّمْعُ وَالطَّاعَةُ) বিষয়ক হাদিসগুলো তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ তার আনুগত্য ফরজ এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হারাম সাব্যস্ত হবে। তবে জিহাদি জামাতগুলোর শরয়ি হুকুম-আহকাম সর্ব ক্ষেত্রে (اَلْإِمَامَةُ الْعُظْمَى) তথা কেন্দ্রীয় খিলাফাহর মতো নয়। তবে নুসুসের অর্থগত উমুম ও ব্যাপ্তির কারণে অনেক ক্ষেত্রে উভয়ের হুকুম অভিন্ন হবে। যেমন, মুসলমানদের মাঝে বিভেদ তৈরি করে, তাদের ঐক্য বিনষ্ট করে কিংবা তাদের শক্তি ও প্রতিপত্তি ধ্বংস করে এমন সব ধরনের কাজ হারাম। এই কাজগুলো কেন্দ্রীয় খিলাফাহর ক্ষেত্রে যেমন হারাম, তেমনি জিহাদি জামাতগুলোর ক্ষেত্রেও হারাম।
অপর দিকে হকের ওপর ঐক্যবদ্ধ থাকা, যথাসম্ভব এক আমিরের অধীনে কাজ করা ফরজ। কারণ এগুলো ছাড়া জিহাদ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। আর ফিকহি মূলনীতি হলো, (مَا لَا يَتِمُّ الْوَاجِبُ إلَّا بِهِ فَهُوَ وَاجِبٌ) ‘যে কাজ সম্পাদন করা ছাড়া কোনো ফরজের ওপর আমল করা অসম্ভব হয়, সে কাজটিও ফরজ সাব্যস্ত হয়।’
সুতরাং শরিয়াহর মূলনীতি অনুযায়ী অসংখ্য দলিল দ্বারা যেহেতু জিহাদি জামাতগুলোর বৈধতা বরং ফরজ হওয়া সাব্যস্ত হচ্ছে, সেহেতু দ্বীনের কল্যাণের অনিবার্য দাবি হলো, জিহাদি জামাতগুলোর হুকুম অনেক ক্ষেত্রে (اَلْإِمَامَةُ الْعُظْمَى) তথা কেন্দ্রীয় খিলাফাহর মতো হবে। হাদিসে এই ব্যাপারে যত আহকাম এসেছে তার মধ্যে এক বড় অংশ আমিরের আনুগত্যের বিষয়ে। আর এখানে আমির মানে স্বয়ং কেন্দ্রীয় আমিরও হতে পারেন বা কেন্দ্রীয় আমির কর্তৃক নিয়োগকৃত আঞ্চলিক আমির ও মাসউল হতে পারেন বা অন্য কোনো আমিরও হতে পারেন—যেমন সফরের আমির; কিংবা জিহাদের আমিরও হতে পারেন যাকে মুসলমানরা শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য নির্ধারণ করেছেন।’ (আত-তাজাকিরুল জিয়াদ, আলমুজাহিদ আব্দুল্লাহ খালিদ আল-আদম: ৩৬ পৃষ্ঠা)
আমরা কয়েকটি বিষয় বুঝতে পারলাম। জিহাদ পরিচালনা মূলত কেন্দ্রীয় খিলাফাহ ও খলিফাতুল মুসলিমিনের দায়িত্ব। এখন যেহেতু উম্মাহর কেন্দ্রীয় খিলাফাহ নেই, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে যে ফরজে আইন জিহাদ চলছে তা খিলাফাহ ব্যবস্থা পুনর্প্রতিষ্ঠা ও মুসলমানদের ওপর কাফিরদের আগ্রাসন প্রতিরোধের জন্য। জিহাদ ব্যক্তির কাজ নয়, জামাতের কাজ। আর জামাত আমির ছাড়া হতে পারে না। ফরজ জিহাদ পরিচালনা করা যেহেতু জামাত ও আমির ছাড়া সম্ভব নয়, ফিকহের মূলনীতি অনুযায়ী জামাত কায়েম করা ও আমির নির্ধারণ করাও ফরজ। আর কেন্দ্রীয় খিলাফাহর অনুপস্থিতির কারণে শরয়ি নুসুসের উমুম ও ব্যাপকতার দাবি অনুযায়ী জিহাদি জামাতগুলো অনেক ক্ষেত্রে খিলাফাহর স্থলাভিষিক্ত সাব্যস্ত হবে এবং খিলাফাহর অনেক হুকুম-আহকাম জিহাদি জামাতগুলোর ব্যাপারেও প্রযোজ্য হবে। আর জিহাদি জামাতের আমিরও খলিফার মতো (اَلسَّمْعُ وَالطَّاعَةُ) তথা আনুগত্যের অধিকারী হবেন।
প্রিয় ভাই!
জামাতের আমির তৃণমূল পর্যায়ে সরাসরি নেতৃত্ব দেন না। এমনটি করা সম্ভবও নয়। আমিরের নির্দেশগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করে তার অধীনস্ত মাসউল ও দায়িত্বশীলরা। তাই মাসউল ও দায়িত্বশীলদের নির্দেশ মূলত আমিরেরই নির্দেশ। মাসউলের আনুগত্য আমিরেরই আনুগত্য। আনুগত্য ছাড়া কখনো জামাত চলতে পারে না। দায়িত্বশীলদের প্রতিটি বৈধ নির্দেশ পালন করা আপনার জন্য ফরজ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে (اَلسَّمْعُ وَالطَّاعَةُ) এর এই আজিমুশশান ফরজ ইবাদত যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দিন। (আমিন)
مسألة مهمة ذكرها شيخنا الشهيد عطية الله:
قال تقبله الله: وهذه الأحاديث النبوية والنصوص الشرعية التي ذكرت في وجوب السمع والطاعة والوفاء للأمراء بيعاتهم وعدم الخروج عليهم....إلخ أنما هي شاملةٌ للأمراء ممن هم دون الإمام الأعظم، كأمراء الجماعات المجاهدة في وقتنا هذا، أو الممكنة تمكينا غير كامل في بعض نواحي البلاد الإسلامية ونحوها، (كما كانت دولة طالبان في معظم أفغانستان مثلا) فهذه تأخذ في محل ولايتها حكم الإمام الأعظم وتنطبق عليها الأحاديث الواردة في السمع والطاعة والوفاء وتحريم الخروج عليها... أما الجماعات المجاهدة فليس لها حكم الإمامة العظمى في كل ما ورد من أحكام شرعية، ولكن تجتمع معها في بعض الأحكام بمقتضى العموم المعنوي، مثل عموم تحريم الشقاق بين المسلمين وتفريق كلمتهم وإضعافهم وإذهاب ريحهم... وعموم وجوب أضداد ذلك من الاجتماع على الحق وعلى أمير واحدٍ قدر الإمكان والائتلاف... وأن الجهاد لا يقوم ولا يمكن إلا بها فهي واجبةٌ بقاعدة ما لا يتم الواجب إلا به فهو واجب، وأنها جائزة بأصل الشرع بأدلة متعددة، فلما كانت مشروعة، بل واجبةً، اقتضت المصلحة المتحققة الضرورية أن تكون هذه الجماعات المجاهدة تأخذ الكثير من الأحكام التي وردت في الإمامة العظمى، ثم إن الكثير من الأحكام الورادة في الحديث هي معلقة بطاعة الأمير، الذي يشمل كل تأميرٍ سواء كان الإمام الأعظم نفسه، أو أميراً من جهته، أو غيرهما كأمير سفرٍ مثلا، أو أمير جهادٍ وحرب عيّنه المسلمون في حربِ عدوهم.اهـ
দৃষ্টান্ত স্বরূপ আফগানিস্তানের কথা বলা যায় যেখানে তালিবান মুজাহিদরা দেশের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। জিহাদের আমিরের হুকুম তার শাসন ও নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ইমামে আজমের মতো এবং (اَلسَّمْعُ وَالطَّاعَةُ) বিষয়ক হাদিসগুলো তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ তার আনুগত্য ফরজ এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হারাম সাব্যস্ত হবে। তবে জিহাদি জামাতগুলোর শরয়ি হুকুম-আহকাম সর্ব ক্ষেত্রে (اَلْإِمَامَةُ الْعُظْمَى) তথা কেন্দ্রীয় খিলাফাহর মতো নয়। তবে নুসুসের অর্থগত উমুম ও ব্যাপ্তির কারণে অনেক ক্ষেত্রে উভয়ের হুকুম অভিন্ন হবে। যেমন, মুসলমানদের মাঝে বিভেদ তৈরি করে, তাদের ঐক্য বিনষ্ট করে কিংবা তাদের শক্তি ও প্রতিপত্তি ধ্বংস করে এমন সব ধরনের কাজ হারাম। এই কাজগুলো কেন্দ্রীয় খিলাফাহর ক্ষেত্রে যেমন হারাম, তেমনি জিহাদি জামাতগুলোর ক্ষেত্রেও হারাম।
অপর দিকে হকের ওপর ঐক্যবদ্ধ থাকা, যথাসম্ভব এক আমিরের অধীনে কাজ করা ফরজ। কারণ এগুলো ছাড়া জিহাদ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। আর ফিকহি মূলনীতি হলো, (مَا لَا يَتِمُّ الْوَاجِبُ إلَّا بِهِ فَهُوَ وَاجِبٌ) ‘যে কাজ সম্পাদন করা ছাড়া কোনো ফরজের ওপর আমল করা অসম্ভব হয়, সে কাজটিও ফরজ সাব্যস্ত হয়।’
সুতরাং শরিয়াহর মূলনীতি অনুযায়ী অসংখ্য দলিল দ্বারা যেহেতু জিহাদি জামাতগুলোর বৈধতা বরং ফরজ হওয়া সাব্যস্ত হচ্ছে, সেহেতু দ্বীনের কল্যাণের অনিবার্য দাবি হলো, জিহাদি জামাতগুলোর হুকুম অনেক ক্ষেত্রে (اَلْإِمَامَةُ الْعُظْمَى) তথা কেন্দ্রীয় খিলাফাহর মতো হবে। হাদিসে এই ব্যাপারে যত আহকাম এসেছে তার মধ্যে এক বড় অংশ আমিরের আনুগত্যের বিষয়ে। আর এখানে আমির মানে স্বয়ং কেন্দ্রীয় আমিরও হতে পারেন বা কেন্দ্রীয় আমির কর্তৃক নিয়োগকৃত আঞ্চলিক আমির ও মাসউল হতে পারেন বা অন্য কোনো আমিরও হতে পারেন—যেমন সফরের আমির; কিংবা জিহাদের আমিরও হতে পারেন যাকে মুসলমানরা শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য নির্ধারণ করেছেন।’ (আত-তাজাকিরুল জিয়াদ, আলমুজাহিদ আব্দুল্লাহ খালিদ আল-আদম: ৩৬ পৃষ্ঠা)
শাইখ ফকিহ আতিয়্যাতুল্লাহ রহ. এর এই বক্তব্য থেকে আমরা কী বুঝতে পারলাম?
আমরা কয়েকটি বিষয় বুঝতে পারলাম। জিহাদ পরিচালনা মূলত কেন্দ্রীয় খিলাফাহ ও খলিফাতুল মুসলিমিনের দায়িত্ব। এখন যেহেতু উম্মাহর কেন্দ্রীয় খিলাফাহ নেই, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে যে ফরজে আইন জিহাদ চলছে তা খিলাফাহ ব্যবস্থা পুনর্প্রতিষ্ঠা ও মুসলমানদের ওপর কাফিরদের আগ্রাসন প্রতিরোধের জন্য। জিহাদ ব্যক্তির কাজ নয়, জামাতের কাজ। আর জামাত আমির ছাড়া হতে পারে না। ফরজ জিহাদ পরিচালনা করা যেহেতু জামাত ও আমির ছাড়া সম্ভব নয়, ফিকহের মূলনীতি অনুযায়ী জামাত কায়েম করা ও আমির নির্ধারণ করাও ফরজ। আর কেন্দ্রীয় খিলাফাহর অনুপস্থিতির কারণে শরয়ি নুসুসের উমুম ও ব্যাপকতার দাবি অনুযায়ী জিহাদি জামাতগুলো অনেক ক্ষেত্রে খিলাফাহর স্থলাভিষিক্ত সাব্যস্ত হবে এবং খিলাফাহর অনেক হুকুম-আহকাম জিহাদি জামাতগুলোর ব্যাপারেও প্রযোজ্য হবে। আর জিহাদি জামাতের আমিরও খলিফার মতো (اَلسَّمْعُ وَالطَّاعَةُ) তথা আনুগত্যের অধিকারী হবেন।
প্রিয় ভাই!
জামাতের আমির তৃণমূল পর্যায়ে সরাসরি নেতৃত্ব দেন না। এমনটি করা সম্ভবও নয়। আমিরের নির্দেশগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করে তার অধীনস্ত মাসউল ও দায়িত্বশীলরা। তাই মাসউল ও দায়িত্বশীলদের নির্দেশ মূলত আমিরেরই নির্দেশ। মাসউলের আনুগত্য আমিরেরই আনুগত্য। আনুগত্য ছাড়া কখনো জামাত চলতে পারে না। দায়িত্বশীলদের প্রতিটি বৈধ নির্দেশ পালন করা আপনার জন্য ফরজ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে (اَلسَّمْعُ وَالطَّاعَةُ) এর এই আজিমুশশান ফরজ ইবাদত যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দিন। (আমিন)
আশ-শাইখুল মুজাহিদুল ফাকিহ আতিয়্যাতুল্লাহ আল-লিবি রহ. এর আলোচনার মূল আরবি
مسألة مهمة ذكرها شيخنا الشهيد عطية الله:
قال تقبله الله: وهذه الأحاديث النبوية والنصوص الشرعية التي ذكرت في وجوب السمع والطاعة والوفاء للأمراء بيعاتهم وعدم الخروج عليهم....إلخ أنما هي شاملةٌ للأمراء ممن هم دون الإمام الأعظم، كأمراء الجماعات المجاهدة في وقتنا هذا، أو الممكنة تمكينا غير كامل في بعض نواحي البلاد الإسلامية ونحوها، (كما كانت دولة طالبان في معظم أفغانستان مثلا) فهذه تأخذ في محل ولايتها حكم الإمام الأعظم وتنطبق عليها الأحاديث الواردة في السمع والطاعة والوفاء وتحريم الخروج عليها... أما الجماعات المجاهدة فليس لها حكم الإمامة العظمى في كل ما ورد من أحكام شرعية، ولكن تجتمع معها في بعض الأحكام بمقتضى العموم المعنوي، مثل عموم تحريم الشقاق بين المسلمين وتفريق كلمتهم وإضعافهم وإذهاب ريحهم... وعموم وجوب أضداد ذلك من الاجتماع على الحق وعلى أمير واحدٍ قدر الإمكان والائتلاف... وأن الجهاد لا يقوم ولا يمكن إلا بها فهي واجبةٌ بقاعدة ما لا يتم الواجب إلا به فهو واجب، وأنها جائزة بأصل الشرع بأدلة متعددة، فلما كانت مشروعة، بل واجبةً، اقتضت المصلحة المتحققة الضرورية أن تكون هذه الجماعات المجاهدة تأخذ الكثير من الأحكام التي وردت في الإمامة العظمى، ثم إن الكثير من الأحكام الورادة في الحديث هي معلقة بطاعة الأمير، الذي يشمل كل تأميرٍ سواء كان الإمام الأعظم نفسه، أو أميراً من جهته، أو غيرهما كأمير سفرٍ مثلا، أو أمير جهادٍ وحرب عيّنه المسلمون في حربِ عدوهم.اهـ
Comment