ই’দাদ ফরয। নামাযের জন্য অজু যেমন জিহাদের জন্য ই’দাদ তেমন। যখন জিহাদ ফরযে কিফায়া তখন ই’দাদও ফরযে কিফায়া। আর যখন জিহাদ ফরযে আইন তখন ই’দাদও ফরযে আইন। তবে এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে, যেটা না বুঝার কারণে কোনো কোনো ভাই সংশয়ে ভুগেন। এমনকি তানজিমের নাফরমানি পর্যন্ত করে বসেন।
জিহাদ ও ই’দাদ একটি সামষ্টিক ইবাদাত। অর্থাৎ সকলে মিলে কাজগুলো আঞ্জাম দিতে হবে। এমন নয় যে, প্রত্যেককে সব কাজ করতে হবে বা সব কাজের যোগ্যতা হাসিল করতে হবে। আমাদের কাজের গণ্ডি অনেক বড়। বর্তমান জিহাদে অনেক শাখা প্রশাখা। সবগুলোতে একজন মানুষ কাজ করতে পারবে না। সবার মাঝে সব রকমের যোগ্যতা থাকেও না। এজন্য কাজ ভাগ করতে হয়। যেমন ধরুন আইটি, ইলমী, মিডিয়া ও আসকারি চারটি বিভাগ। একজনের পক্ষে সবগুলো কাজ করা সম্ভব নয়, সবার মাঝে সবগুলো কাজের যোগ্যতাও নেই। তাই ভাগ করতে হয়। কেউ ইলমী, কেউ আইটি, কেউ মিডিয়া আর কেউ আসকারি। প্রয়োজনীয় বিষয়ে একজন আরেকজন থেকে সহায়তা নেবে।
আবার ধরুন আসকারি। এখানেও কিন্তু অনেক বিভাগ। অস্ত্র শস্ত্রও অনেক। সবগুলো বিভাগে সবাই কাজ করতে পারে না। সবাই সব ধরণের অস্ত্রে বিশেষজ্ঞতাও অর্জন করতে পারে না। এজন্য কাজ ভাগ করতে হয়। কেউ বারুদ বিশেষজ্ঞ, কেউ ট্যাংক বিশেষজ্ঞ, কেউ পাইলট … এভাবে। আবার সাধারণ সৈনিকদেরও সবাই সব অস্ত্র পারবে না। এজন্য গ্রুপ গ্রুপ করতে হয়।
মোটকথা, কাজের শাখাও অনেক, একেক শাখায় আবার উপশাখাও অনেক। সবগুলো একজনের পক্ষে সম্ভব নয়। তাহলে কে কোনটা করবে? এখানে আমরা দু’টো বিষয় ধরতে পারি:
এক. কোন কাজের কতটুকু হাজত।
দুই. কার মাঝে কোন বিষয়ের যোগ্যতা আছে।
স্বাভাবিক এ দু’টি দিক লক্ষ করে আমরা ভাগ করতে পারি। জিহাদের প্রাথমিক স্তরে ইলমী ও মিডিয়ার কাজের দরকার বেশি। তখন আলেম উলামা ও দাওয়াতি ভাইদের বেশি দরকার পড়ে। এর পরের স্তরে যখন ই’দাদ ও রিবাতের স্তর আসে বা কিতালের স্তর আসে তখন হয়তো আসকারি দরকার বেশি। আসলে লাগে সবগুলোই তবে কম বেশ আছে।
আবার যখন শত্রু এমনভাবে হামলা করে বসেছে যে, সকলে বের না হলে আর প্রতিরোধ করা সম্ভব না, তখন আলেম উলামারা আপাতত ইলমী কাজ বন্ধ রেখে সরাসরি ময়দানে কিতালে শরীক হবেন। এভাবে প্রয়োজন অনুপাতে কাজ ভাগ হয়।
কিন্তু অনেকে বিষয়টা এভাবে চিন্তা না করে তালগুল পাকিয়ে ফেলেন। মনে করেন ই’দাদে আসকারি সকলের উপর ফরযে আইন। তাই তানজিম থেকে অন্য কোনো কাজ দিলে তিনি খুশ দিলে করতে পারেন না। কিংবা উমারাদের নিষেধ অমান্য করে আসকারি শুরু করেন। এর পরিণতিতে অনেক সময় তানজীমের বিপুল ক্ষতিও হতে পারে।
আসল কথা হল, আপনাকে যে কাজ দেয়া হয়েছে সেটা আপনার জন্য ফরয। বাকিগুলো সমষ্টিগতভাবে ফরয। অন্যরা করলে আপনার দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। আর আপনাকে যেটা দেয়া হয়েছে সেটা না করে যদি অন্যগুলো নিয়ে টানাটানি করেন তাহলে একেতো তানজিমের নাফরমানির কারণে গোনাহগার হবেন, দ্বিতীয়ত এ কারণে কোনো সমস্যা হলে এর দায়ভারও আপনার উপরই বর্তাবে। এজন্য ভাইদের প্রতি আবেদন, সহীহ করে বিষয়টা বুঝতে চেষ্টা করুন। ই’দাদ ফরযে আইন কথাটা মুতলাক। একটু ভেঙে বিস্তারিত বুঝুন। মুতলাক বিষয়টা ভুল বুঝে ভিন্নপথ ধরে নিজেও গুনাহগার হবেন না, তানজিমকেও মুসিবতে ফেলবেন না। আল্লাহ তাআলা আমাদের সহীহ বুঝ ও সহীহ আমল দান করুন। আমীন।
Comment