Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদ আনিল গাইর

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদ আনিল গাইর

    জিহাদ আনিল গাইর
    হজ্ব আনিল গাইরের মতো জিহাদ আনিল গাইরও হতে পারে।

    কেউ যদি অসিয়ত করে যায়, আমার রেখে যাওয়া সম্পদ দিয়ে যেন আমার মৃত্যুর পর আমার পক্ষ থেকে হজ্ব করানো হয়, তাহলে তার মোট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে তার পক্ষ থেকে একজনকে হজ্বে পাঠানো হবে সে হজ্ব করবে, মৃত ব্যক্তি সওয়াব পাবে

    জিহাদের জন্যও এভাবে অসিয়ত করা যায় যেমন কেউ অসিয়ত করলো, আমার মৃত্যুর পর যেন আমার সম্পদ দিয়ে একটা অভিযান পাঠানো হয় তাহলে তার মৃত্যুর পর তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে একটা জিহাদি অভিযান পরিচালনা করা হবে একটা অভিযানে যতটুকু খরচ লাগে, তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে নেয়া হবে

    কিংবা অসিয়ত করে গেল, আমার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ যেন জিহাদে ব্যয় করা হয় তাহলে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ পুরোটা জিহাদে ব্যয় করা হবে মুজাহিদদের খরচাদি বহন করা হবে এবং অস্ত্রশস্ত্র ক্রয় করে অভিযানে পাঠানো হবে এরপরও সম্পদ থেকে গেলে ক্রমান্বয়ে খরচ করতে থাকা হবে, পুরো এক তৃতীয়াংশ সম্পদ শেষ হওয়া অবধি

    শারহুস সিয়ারিল কাবিরে বলা হয়েছে,
    ولو أن رجلا أوصى عند موته فقال: اغزوا عني غزوة ... فينفق ماله في الغزو، وليصل إليه ثواب النفقة في الغزو ... فإن فضل شيء من النفقة رده على الورثة. ...
    وإن قال اغزوا عني بثلثي في سبيل الله، أعطي ثلثه من يغزو في سبيل الله، يعطون نفقاتهم ويشترى لهم الخيل. لأنه أوصى بجميع ثلثه في نفقة الغزو، فيصرف جميع ذلك إليه، بخلاف الأول فإنه أوصى بغزوة واحدة، فلا يعطي إلا نفقة غزوة واحدة ...
    ثم يعطون الثلث كله في سنة واحدة ليغزوا عنه. لأن ذلك أسرع لتنفيذ وصيته وتحصيل مراده، وهذا والحج سواء. -شرح السير الكبير (ص: 2092-2095)
    কোনো ব্যক্তি মৃত্যুকালে যদি অসিয়ত করে যায়, ‘আমার পক্ষ থেকে একটি জিহাদ করাইয়ো’ …. তাহলে তার সম্পদ জিহাদে ব্যয় করা হবে এবং অর্থ ব্যয়ের সওয়াব সে পেয়ে যাবে (অভিযান শেষে) অতিরিক্ত কিছু থেকে গেলে ওয়ারিসদের ফিরিয়ে দেয়া হবে

    কেউ যদি এভাবে অসিয়ত করে যায়, ‘আমার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দিয়ে ফি সাবিলিল্লাহ জিহাদ করাইয়োতাহলে ফি সাবিলিল্লাহয় জিহাদকারীদের হাতে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দিয়ে দেয়া হবে তা দিয়ে তাদের খরচাদি ঘোড়া খরিদ করা হবে কেননা, সে তার সম্পদের এক তৃতীয়াংশ সম্পূর্ণটাই জিহাদে ব্যয়ের অসিয়ত করে গেছে তাই সবটুকুই খাতে ব্যয় করা হবে পক্ষান্তরে প্রথম সূরতে ব্যক্তি কেবল একটি জিহাদের অসিয়ত করে গিয়েছিল তাই সেখানে একটি জিহাদের বেশি খরচ তার সম্পদ থেকে নেয়া হবে না

    দেয়ার ক্ষেত্রে এক বছরেই এক তৃতীয়াংশ সম্পূর্ণটা দিয়ে দেয়া হবে কারণ, এতে তার অসিয়ত তাড়াতাড়ি আদায় হবে এবং তার উদ্দেশ্য তাড়াতাড়ি হাসিল হবে অসিয়ত এবং হজ্বের অসিয়ত উভয়টা সম পর্যায়ের -শারহুস সিয়ারিল কাবির, পৃষ্ঠা ২০৯২-২০৯৫


    উল্লেখ্য, স্বাভাবিক অবস্থায়ও একজন অন্যজনের মাধ্যমে জিহাদ করাতে পারে। যার আর্থিক সামর্থ্য আছে, সে নিজে যেতে না পারলে অন্যদের অর্থ দিয়ে দিলে, তারা নিজেরা জিহাদ বিন নফসের সওয়াব পাবে আর অর্থদাতা জিহাদ বিল মালের সওয়াব পাবে।

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    من جهز غازيا في سبيل الله فقد غزا ومن خلف غازيا في سبيل الله بخير فقد غزا. -صحيح البخاري (3/ 1045)، الرقم 2688
    যে ব্যক্তি (জিহাদের সরঞ্জাম ও খরচাদি সরবরাহ করে) আল্লাহর রাস্তার কোন মুজাহিদকে (জিহাদের জন্য) প্রস্তুত করে দিল, সেও জিহাদ করল যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তার কোন মুজাহিদের অনুপস্থিতিতে উত্তমভাবে তার পরিবারের দেখাশুনা করল, সেও জিহাদ করল -সহীহ বোখারি ২৬৮৮

    উমার রাদি. এর ব্যাপারে এসেছে,
    عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ ، قَالَ : كَانَ عُمَرُ يُغْزِي الْعَزَبَ وَيَأْخُذُ فَرَسَ الْمُقِيمِ فَيُعْطِيه الْمُسَافِرَ. -مصنف ابن أبي شيبة (235) (12/ 360)، الرقم: 33722
    আবু মিজলায রহ. থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, উমার রাদি. অবিবাহিতদের জিহাদে পাঠাতেন এবং যারা যাবে না তাদের ঘোড়া নিয়ে যারা যাবে তাদের দিতেন। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ৩৩৭২২

    অর্থাৎ সাংসারিক ঝামেলার কারণে বিবাহিত যাদের জিহাদে যাওয়ার সুযোগ হতো না, প্রয়োজন পড়লে তাদের ঘোড়া ধার নিয়ে অবিবাহিতদের জিহাদে পাঠাতেন। একজনের জিহাদ বিন নফস, আরেকজনের জিহাদ বিল মাল।

    শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
    فمن كان له مال وهو عاجز ببدنه فليغز بماله ففى الصحيحين عن النبى انه قال من جهز غازيا فقد غزا ومن خلفه فى اهله بخير فقد عزا ومن كان قادرا ببدنه وهو فقير فليأخذ من اموال المسلمين ما يتجهز به سواء كان المأخوذ زكاة او صلة او من بيت المال او غير ذلك. اهـ
    যার মাল আছে কিন্তু সে শারীরিকভাবে জিহাদ করতে অক্ষম, সে মাল দিয়ে জিহাদ করবে। সহীহাইনে (অর্থাৎ বুখারী ও মুসলিমে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, ‘যে ব্যক্তি কোন যুদ্ধাকে (মাল দিয়ে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য) প্রস্তুত করে দিল সেও যুদ্ধ করল। যে (মুজাহিদ যুদ্ধে চলে যাওয়ার পর) তার পরিবারকে উত্তমভাবে দেখা-শোনা করল সেও যুদ্ধ করল

    আর যে শারীরিকভাবে সক্ষম কিন্তু গরীব, সে যুদ্ধে যাওয়ার প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ অন্যান্য মুসলমানদের থেকে গ্রহণ করবে। চাই উক্ত সম্পদ যাকাত হোক, দান হোক, বাইতুল মাল থেকে হোক বা অন্য কোন সম্পদ হোক।” -মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৪২১
    ***

  • #2
    আলহামদু লিল্লাহ, উপকৃত হওয়ার মত খুবই উপকারী একটি পোস্ট। বারাকাল্লাহু ফি ইলমিকা ও আমালিক।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আরও তাহকীক প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি।
      কেননা, রেখে যাওয়া সম্পদে মু'মিন-মুহাজির (একইভাবে অন্যান্য খাত) অপেক্ষা নিকটাত্মীয় ওয়ারীশ বেশী হক্বদার!
      আর যেহেতু, রাসূল -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- বলেছেন, (সা'দ রাঃ এর অসুস্থতাবস্থায় বলেছিলেন) এক-তৃতীয়াংশ সম্পদও বেশী! তোমার সন্তানদের অন্যের দ্বারস্থ হওয়া অপেক্ষা তাদেরকে ধনশালী রেখে যাওয়া ভাল।

      ওয়ারিশদের সম্মতি ওয়াসিয়াত রক্ষার জন্য জরুরি নয় কি!
      বারাকাল্লাহু ফী ইলমিকা ওয়া আমালিক।

      Comment


      • #4
        Originally posted by Sa'd Ibn Abi Waqqas View Post
        আরও তাহকীক প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি।
        কেননা, রেখে যাওয়া সম্পদে মু'মিন-মুহাজির (একইভাবে অন্যান্য খাত) অপেক্ষা নিকটাত্মীয় ওয়ারীশ বেশী হক্বদার!
        আর যেহেতু, রাসূল -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- বলেছেন, (সা'দ রাঃ এর অসুস্থতাবস্থায় বলেছিলেন) এক-তৃতীয়াংশ সম্পদও বেশী! তোমার সন্তানদের অন্যের দ্বারস্থ হওয়া অপেক্ষা তাদেরকে ধনশালী রেখে যাওয়া ভাল।

        ওয়ারিশদের সম্মতি ওয়াসিয়াত রক্ষার জন্য জরুরি নয় কি!
        বারাকাল্লাহু ফী ইলমিকা ওয়া আমালিক।
        মুহতারাম ভাই, সম্পদের এক তৃতীয়াংশ বা তার কম অসিয়তের জন্য ওয়ারিশদের সম্মতি জরুরী না। তার বেশিতে জরুরী। অবশ্য ওয়ারিশরা গরীব হলে এবং মায়্যিতের রেখে যাওয়া অবশিষ্ট দুই তৃতীয়াংশ সম্পদ তাদের যথেষ্ট না হলে, বাহিরে অসিয়ত না করে পূর্ণ সম্পদ ওয়ারিশদের জন্য রেখে যাওয়া ভাল।

        দুররে মুখতারে বলা হয়েছে,

        وتجوز بالثلث للأجنبي عند عدم المانع وإن لم يجز الوارث ذلك، لا الزيادة عليه إلا أن تجيز ورثته بعد موته. -الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (6/ 650)
        শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো প্রতিবন্ধক না থাকলে বাহিরের কারও জন্য ওয়ারিশদের অনুমোদন ছাড়াই এক তৃতীয়াংশ অসিয়ত করা সহীহ আছে। অনুমোদন ছাড়া এর বেশি সহীহ নয়। -রদ্দুল মুহতার ৬/৬৫০

        Comment

        Working...
        X