সালাম প্রদান সংক্রান্ত আদাব ও মাসায়েলঃ
১। আগে সালাম দেয়া উত্তম। কারন প্রথমে সালাম প্রদানকারী অধিক সওয়াব প্রাপ্ত হয়। [আবু দাউদ : ২/৭০৬ তিরমিযি, হাদিস-২৬৯৫]
২। পরিচিত-অপরিচিত, ছোট-বড়, নিকাটাত্মীয়-দুরাত্মীয়, মাতা-পিতা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তানাদী সকলকেই সালাম দিবে। [মুসলিম : ২/২১৪; আবু দাউদ : ২/৭০৬-৭০৭; মিশকাত : ৩৯৯; হিন্দিয়া : ৫/৩৩০]
৪। সালামের একটি আদব হলো, ছোট বড়কে, আরোহী পদচারীকে, চলন্ত ব্যক্তি উপবিষ্ট ব্যক্তিকে, আগুন্তুক অবস্থানকারীকে অগ্রে সালাম করবে। [মুসলিম : ২/২১২; আবু দাউদ : ২/৭০৬]
৫। একাধিক ব্যক্তি কি বা পুরো মাহফিলের পক্ষে থেকে একজন সালাম করলে সকলের পক্ষ হতেই আদায় হবে। [হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; আদাবুল মুআশারাত : ২৮]
৬। সালামের সময় হাত দিয়ে ইশারা করা, হাত কপালে ঠেকানো, ও মাথা-ঝুকানো শরিয়ত সম্মত নয়। তাই এপ্রথা পরিত্যাজ্য। তবে দূরবর্তী লোককে সালাম বা উত্তর দিলে যার পর্যন্ত আওয়াজ না পৌছার সম্ভবনা রয়েছে সেরূপ ক্ষেত্রে মুখে সালাম বা উত্তর দিয়ে শুধু বুঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইশারা করার অনুমতি রয়েছে। [তিরমিয়ী ২/৯৯; মিরকাত : ৪/৫২২; আল কাউকাবুদ্ দুররি : ২/১৩৬; আহকামুল কুরআন : ৩/২৬০; মাহমুদিয়া : ২৮/১৮৭]
৭। অমুসলিমকে সালাম দেয়া জায়িয নেই। কোন অমুসলিমের সঙ্গে সাক্ষাত হয়ে গেলে আর সালাম দেয়ার প্রয়োজন হলে, সেই শব্দই ব্যবহার করবে, যা তারা এ জাতীয় মুহূর্তে ব্যবহার করে থাকে। [মুসলিম : ২/২১৪; আবু দাউদ : ২/৭০৭; ইসলাহি খুতুবাত : ৬/১৩১]
৮। কোন মজলিস কিংবা অনুষ্ঠানে মুসলিম-অমুসলিম উভয় প্রকারের লোক থাকলে শুধু মুসলমানের নিয়তে সালাম দিবে কিংবা “আস-সালামু আলা মানিত তাবাআল হুদা ”বলে সালাম দিবে। [বুখারি : ২/৭২৪; নববী-আলাল মুসলিম : ২/২১৪; হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; আল বাহরুর রায়েক : ৯/৩৮০]
৯। নিচের ব্যক্তিদেরকে সালাম দেয়া মাকরুহ। এরূপ ব্যক্তিদেরকে সালাম দিলে সালামের জবাব দেয়া জরুরি নয়। (ক) কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে। ২. পেশাব-পায়খানায় রত ব্যক্তিকে (গ) পানাহারকারী ব্যক্তিকে (তার মুখে খাদ্য-পানীয় থাকা অবস্থায়)। (ঘ) কোনো ইবাদত যেমন- নামায, তিলাওয়াত, যিকির, দীনি কিতাব নিয়ে আলোচনায় রত ব্যক্তিকে (ঙ) কোন মজলিসে আলোচনা চলা অবস্থায়। সারকথা কেউ যদি কোন কাজে ব্যস্ত থাকে, আর সালামের কারণে সেই কাজে বিঘœ ঘটার আশংকা থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় সালাম না দেয়া উচিৎ। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৪; ৯/৫৯৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬]১০। গায়রে মাহরাম নারী-পুরুষের মধ্যে যেসব ক্ষেত্রে ফেতনার আশংকা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে সালাম আদান প্রদান নিষেধ। [বুখারি : ২/৯২৩; আবু দাউদ : ২/৭০৭; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৩০ আল বাহরুর রায়েক : ৮/২০৭; মাহমুদিয়া : ২৮/২০০।]
১১। কোন খালি ঘরে প্রবেশ করলেও সালাম দিবে তখন সালাম দিবে এই বলে; আস-সালাম আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহহিছ ছালিহিন। [সূরা-নুরঃ ৬১; রদ্দুল মুহতারঃ ৯/৫৯৬-৫৯৭; হিন্দিয়াঃ ৫/৩২৫]
১২। মসজিদে প্রবেশের পর যদি দেখা যায় যে, সকলেই আমলে রত, তাহলে সালাম দেয়া অনুচিৎ। যদি আমলে রত না থাকে, তাহলে সালাম দেয়া যেতে পারে। আর যদি কিছুলোক আমলে থাকে আর বাকীরা আমলে না থাকে, তাহলে সালাম দেয়া-না দেয়া উভয়টারই সুযোগ রয়েছে। [রুদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; মাহমুদিয়া : ২৮/১৯৭; আদাবুল মুআশারাত : ২৭]
১৩। সাক্ষাতৎ ও বিদায় উভয় সময়ই সালাম দেয়া সুন্নাত। [তিরমিযি : ২/১০০; আবু দাউদ : ২/৭০৭; আদাবুল মুআশারাত : ২৭]
১৪। কবরস্থানে গেলে কবরবাসীকে সালাম দিবে এই বলে, “আস-সালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর আন্তুম লানা সালাফুন ওয়া নাহনু লাকুম তাবিউন।” [আল-বাহরুর রায়েক : ৯/৩৮০; আদাবুল মুআশারাত : ২৭]
১৫। যার উপর গোসল ফরজ-এমন ব্যক্তি সালাম ও সালামের উত্তর দিতে পারবে। [রুদ্দুল মুহতার : ১/৪৮৮; হিন্দিয়া : ১/৩৮]
১৬। মোবাইল/ফোনে কথা বলার সময় প্রথমে সালাম দিবে। এরপর অন্য কথা বলবে। [তিরমিযি : ২/৯৯; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৯২; আল ফিকহুল ইসলামি : ৩/৫৭৮]
সালামের উত্তর প্রদান সংক্রান্ত আদাব ও মাসায়েলঃ
১। সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব। পুরো জামাতের মধ্য হতে একজন উত্তর দিলে সকলের পক্ষ থেকেই আদায় হয়ে যাবে। [আবু দাউদ : ২/৭০৮; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৯৪; হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; আল বাহরুর রায়েক : ৯/৩৮০]
২। সালামদাতা যা বলবে, উত্তরদাতা তার চেয়ে বাড়িয়ে উত্তর দেয়া উত্তম। যেমন সালাম দাতা বলল- “আস-সালামু আলাইকুম, উত্তর দাতা এর সাথে ওয়া রাহমাতুল্লাহ বা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” বাড়িয়ে বলবে। [নিসা : ৮৬; আবু দাউদ : ২/৭০৬; তিরমিযি : ২/৭৭]
৩। অন্যের মাধ্যমে প্রেরিত সালামের জবাবে বলবে- “ওয়া আলাইকুম ওয়া আলাইহিমুস সালাম বা ওয়া আলাইকা-ওয়া আলাইহিস সালাম”। [রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৯৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬; ইসলাহি খুতুবাত : ৬/১৩১]
৪। কোন অমুসলিম যদি সালাম দিয়ে দেয়, তাহলে জবাবে শুধু “ওয়া আলাইকুম” বলবে এবং মনে মনে তার হেদায়াত ও ইসলাম গ্রহনের দোয়া করবে। [বুখারী]
***
মুসাফাহার আদাব ও মাসায়েলঃ
১। সাক্ষাতের সময় মুসাফাহা করা সুন্নাত। বিদায়ের সময়ও মুসাফাহা হতে পারে। [আবু দাউদ : ২/৭০৮, তিরমিযি : ২/১০২; রদ্দুল মুহতার : ৭/৫৪৭; রহিমিয়া : ১০/১২৪; আল আযকার : ২৩৬]
২। মুসাফাহা সালামের পরিপূরক। তাই মুসাফাহা করবে সালামের পর। [তিরমিযি : ২/১০২; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৪৭, ৫৪৮ রহীমীয়া : ১০/১২৪]
৩। উভয় হাতে মুসাফাহা করা সুন্নাত। এক হাতে মুসাফাহা করা কিংবা হ্যান্ডশেক করা সুন্নাত পরিপন্থী ও বিজাতীয় অনুকরণ। তাই এটি পরিতাজ্য। তবে অনন্যোপায় অবস্থায় এক হাতে করা যেতে পারে। [বুখারি : ২/৭২৬; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৪৮; মাহমুদিয়া : ২৮/২০৫; ইসলাহি খুতুবাত : ৪/১৪০]
৪। মুসাফাহা খালি হাতে করা সুন্নাত : [রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৪৮; আদাবুর মুআশারাত :৩২]
৫। মুসাফাহার পর হাতে চুমু খাওয়া, হাত বুকে লাগানো বিদআত। তাই এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা উচিৎ। [রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৫০; রহীমীয়া : ১০/১২১; আদাবুল মুআশারাত : ৩২]
৬। কোন মজলিশে গিয়ে সকলের সাথে একাধারে মুসাফাহা করে মজলিসের বিঘœতা ঘটানো অনুচিত। একজনের সাথে কিংবা যার উদ্দেশ্যে গিয়েছে তার সাথে মুসাফাহা করেই ক্ষ্যান্ত হবে। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৪; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬; আদাবুল মুআশারাত : ৩৫]
৭। মুসাফাহা করতে গিয়ে কাউকে কষ্ট দেয়া অনুচিত। কারণ মুসাফাহা করা সুন্নাত আর কাউকে কষ্ট দেয়া হারাম। তাই যেসব ক্ষেত্রে মুসাফাহা করতে গেলে যার সঙ্গে মুসাফাহা করা হবে সে বা অন্য কেউ কষ্টের শিকার হয় সেসব ক্ষেত্রে মুসাফাহা থেকে বিরত থাকতে হবে। [ইসলাহী খুতুবাত : ৬/১৪১]
৮। যে সব অবস্থায় সালাম দেয়া নিষেধ সেসব অবস্থায় মুসাফাহা করাও নিষেধ। [তিরমিযি : ২/১০২; রদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৪; ৯/৫৯৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬; আদাবুল মুআশারাত : ৩৮]
৯। মুসাফাহার একটি আদব হলো, প্রথমে হাত না সরানো। তিরমিযি : ২। ইসলাহি খুতুবাত : ৬/১৪৩[/color]
১। আগে সালাম দেয়া উত্তম। কারন প্রথমে সালাম প্রদানকারী অধিক সওয়াব প্রাপ্ত হয়। [আবু দাউদ : ২/৭০৬ তিরমিযি, হাদিস-২৬৯৫]
২। পরিচিত-অপরিচিত, ছোট-বড়, নিকাটাত্মীয়-দুরাত্মীয়, মাতা-পিতা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তানাদী সকলকেই সালাম দিবে। [মুসলিম : ২/২১৪; আবু দাউদ : ২/৭০৬-৭০৭; মিশকাত : ৩৯৯; হিন্দিয়া : ৫/৩৩০]
৪। সালামের একটি আদব হলো, ছোট বড়কে, আরোহী পদচারীকে, চলন্ত ব্যক্তি উপবিষ্ট ব্যক্তিকে, আগুন্তুক অবস্থানকারীকে অগ্রে সালাম করবে। [মুসলিম : ২/২১২; আবু দাউদ : ২/৭০৬]
৫। একাধিক ব্যক্তি কি বা পুরো মাহফিলের পক্ষে থেকে একজন সালাম করলে সকলের পক্ষ হতেই আদায় হবে। [হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; আদাবুল মুআশারাত : ২৮]
৬। সালামের সময় হাত দিয়ে ইশারা করা, হাত কপালে ঠেকানো, ও মাথা-ঝুকানো শরিয়ত সম্মত নয়। তাই এপ্রথা পরিত্যাজ্য। তবে দূরবর্তী লোককে সালাম বা উত্তর দিলে যার পর্যন্ত আওয়াজ না পৌছার সম্ভবনা রয়েছে সেরূপ ক্ষেত্রে মুখে সালাম বা উত্তর দিয়ে শুধু বুঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইশারা করার অনুমতি রয়েছে। [তিরমিয়ী ২/৯৯; মিরকাত : ৪/৫২২; আল কাউকাবুদ্ দুররি : ২/১৩৬; আহকামুল কুরআন : ৩/২৬০; মাহমুদিয়া : ২৮/১৮৭]
৭। অমুসলিমকে সালাম দেয়া জায়িয নেই। কোন অমুসলিমের সঙ্গে সাক্ষাত হয়ে গেলে আর সালাম দেয়ার প্রয়োজন হলে, সেই শব্দই ব্যবহার করবে, যা তারা এ জাতীয় মুহূর্তে ব্যবহার করে থাকে। [মুসলিম : ২/২১৪; আবু দাউদ : ২/৭০৭; ইসলাহি খুতুবাত : ৬/১৩১]
৮। কোন মজলিস কিংবা অনুষ্ঠানে মুসলিম-অমুসলিম উভয় প্রকারের লোক থাকলে শুধু মুসলমানের নিয়তে সালাম দিবে কিংবা “আস-সালামু আলা মানিত তাবাআল হুদা ”বলে সালাম দিবে। [বুখারি : ২/৭২৪; নববী-আলাল মুসলিম : ২/২১৪; হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; আল বাহরুর রায়েক : ৯/৩৮০]
৯। নিচের ব্যক্তিদেরকে সালাম দেয়া মাকরুহ। এরূপ ব্যক্তিদেরকে সালাম দিলে সালামের জবাব দেয়া জরুরি নয়। (ক) কোনো গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে। ২. পেশাব-পায়খানায় রত ব্যক্তিকে (গ) পানাহারকারী ব্যক্তিকে (তার মুখে খাদ্য-পানীয় থাকা অবস্থায়)। (ঘ) কোনো ইবাদত যেমন- নামায, তিলাওয়াত, যিকির, দীনি কিতাব নিয়ে আলোচনায় রত ব্যক্তিকে (ঙ) কোন মজলিসে আলোচনা চলা অবস্থায়। সারকথা কেউ যদি কোন কাজে ব্যস্ত থাকে, আর সালামের কারণে সেই কাজে বিঘœ ঘটার আশংকা থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় সালাম না দেয়া উচিৎ। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৪; ৯/৫৯৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬]১০। গায়রে মাহরাম নারী-পুরুষের মধ্যে যেসব ক্ষেত্রে ফেতনার আশংকা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে সালাম আদান প্রদান নিষেধ। [বুখারি : ২/৯২৩; আবু দাউদ : ২/৭০৭; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৩০ আল বাহরুর রায়েক : ৮/২০৭; মাহমুদিয়া : ২৮/২০০।]
১১। কোন খালি ঘরে প্রবেশ করলেও সালাম দিবে তখন সালাম দিবে এই বলে; আস-সালাম আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহহিছ ছালিহিন। [সূরা-নুরঃ ৬১; রদ্দুল মুহতারঃ ৯/৫৯৬-৫৯৭; হিন্দিয়াঃ ৫/৩২৫]
১২। মসজিদে প্রবেশের পর যদি দেখা যায় যে, সকলেই আমলে রত, তাহলে সালাম দেয়া অনুচিৎ। যদি আমলে রত না থাকে, তাহলে সালাম দেয়া যেতে পারে। আর যদি কিছুলোক আমলে থাকে আর বাকীরা আমলে না থাকে, তাহলে সালাম দেয়া-না দেয়া উভয়টারই সুযোগ রয়েছে। [রুদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; মাহমুদিয়া : ২৮/১৯৭; আদাবুল মুআশারাত : ২৭]
১৩। সাক্ষাতৎ ও বিদায় উভয় সময়ই সালাম দেয়া সুন্নাত। [তিরমিযি : ২/১০০; আবু দাউদ : ২/৭০৭; আদাবুল মুআশারাত : ২৭]
১৪। কবরস্থানে গেলে কবরবাসীকে সালাম দিবে এই বলে, “আস-সালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর আন্তুম লানা সালাফুন ওয়া নাহনু লাকুম তাবিউন।” [আল-বাহরুর রায়েক : ৯/৩৮০; আদাবুল মুআশারাত : ২৭]
১৫। যার উপর গোসল ফরজ-এমন ব্যক্তি সালাম ও সালামের উত্তর দিতে পারবে। [রুদ্দুল মুহতার : ১/৪৮৮; হিন্দিয়া : ১/৩৮]
১৬। মোবাইল/ফোনে কথা বলার সময় প্রথমে সালাম দিবে। এরপর অন্য কথা বলবে। [তিরমিযি : ২/৯৯; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৯২; আল ফিকহুল ইসলামি : ৩/৫৭৮]
সালামের উত্তর প্রদান সংক্রান্ত আদাব ও মাসায়েলঃ
১। সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব। পুরো জামাতের মধ্য হতে একজন উত্তর দিলে সকলের পক্ষ থেকেই আদায় হয়ে যাবে। [আবু দাউদ : ২/৭০৮; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৯৪; হিন্দিয়া : ৫/৩২৫; আল বাহরুর রায়েক : ৯/৩৮০]
২। সালামদাতা যা বলবে, উত্তরদাতা তার চেয়ে বাড়িয়ে উত্তর দেয়া উত্তম। যেমন সালাম দাতা বলল- “আস-সালামু আলাইকুম, উত্তর দাতা এর সাথে ওয়া রাহমাতুল্লাহ বা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” বাড়িয়ে বলবে। [নিসা : ৮৬; আবু দাউদ : ২/৭০৬; তিরমিযি : ২/৭৭]
৩। অন্যের মাধ্যমে প্রেরিত সালামের জবাবে বলবে- “ওয়া আলাইকুম ওয়া আলাইহিমুস সালাম বা ওয়া আলাইকা-ওয়া আলাইহিস সালাম”। [রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৯৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬; ইসলাহি খুতুবাত : ৬/১৩১]
৪। কোন অমুসলিম যদি সালাম দিয়ে দেয়, তাহলে জবাবে শুধু “ওয়া আলাইকুম” বলবে এবং মনে মনে তার হেদায়াত ও ইসলাম গ্রহনের দোয়া করবে। [বুখারী]
***
মুসাফাহার আদাব ও মাসায়েলঃ
১। সাক্ষাতের সময় মুসাফাহা করা সুন্নাত। বিদায়ের সময়ও মুসাফাহা হতে পারে। [আবু দাউদ : ২/৭০৮, তিরমিযি : ২/১০২; রদ্দুল মুহতার : ৭/৫৪৭; রহিমিয়া : ১০/১২৪; আল আযকার : ২৩৬]
২। মুসাফাহা সালামের পরিপূরক। তাই মুসাফাহা করবে সালামের পর। [তিরমিযি : ২/১০২; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৪৭, ৫৪৮ রহীমীয়া : ১০/১২৪]
৩। উভয় হাতে মুসাফাহা করা সুন্নাত। এক হাতে মুসাফাহা করা কিংবা হ্যান্ডশেক করা সুন্নাত পরিপন্থী ও বিজাতীয় অনুকরণ। তাই এটি পরিতাজ্য। তবে অনন্যোপায় অবস্থায় এক হাতে করা যেতে পারে। [বুখারি : ২/৭২৬; রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৪৮; মাহমুদিয়া : ২৮/২০৫; ইসলাহি খুতুবাত : ৪/১৪০]
৪। মুসাফাহা খালি হাতে করা সুন্নাত : [রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৪৮; আদাবুর মুআশারাত :৩২]
৫। মুসাফাহার পর হাতে চুমু খাওয়া, হাত বুকে লাগানো বিদআত। তাই এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা উচিৎ। [রদ্দুল মুহতার : ৯/৫৫০; রহীমীয়া : ১০/১২১; আদাবুল মুআশারাত : ৩২]
৬। কোন মজলিশে গিয়ে সকলের সাথে একাধারে মুসাফাহা করে মজলিসের বিঘœতা ঘটানো অনুচিত। একজনের সাথে কিংবা যার উদ্দেশ্যে গিয়েছে তার সাথে মুসাফাহা করেই ক্ষ্যান্ত হবে। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৪; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬; আদাবুল মুআশারাত : ৩৫]
৭। মুসাফাহা করতে গিয়ে কাউকে কষ্ট দেয়া অনুচিত। কারণ মুসাফাহা করা সুন্নাত আর কাউকে কষ্ট দেয়া হারাম। তাই যেসব ক্ষেত্রে মুসাফাহা করতে গেলে যার সঙ্গে মুসাফাহা করা হবে সে বা অন্য কেউ কষ্টের শিকার হয় সেসব ক্ষেত্রে মুসাফাহা থেকে বিরত থাকতে হবে। [ইসলাহী খুতুবাত : ৬/১৪১]
৮। যে সব অবস্থায় সালাম দেয়া নিষেধ সেসব অবস্থায় মুসাফাহা করাও নিষেধ। [তিরমিযি : ২/১০২; রদ্দুল মুহতার : ২/৩৭৪; ৯/৫৯৫; হিন্দিয়া : ৫/৩২৬; আদাবুল মুআশারাত : ৩৮]
৯। মুসাফাহার একটি আদব হলো, প্রথমে হাত না সরানো। তিরমিযি : ২। ইসলাহি খুতুবাত : ৬/১৪৩[/color]
-----------------------------------
Comment