Announcement

Collapse
No announcement yet.

কাফের মুরতাদদের উপর হামলায় মুসলিম মারা গেলে কি বিধান

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কাফের মুরতাদদের উপর হামলায় মুসলিম মারা গেলে কি বিধান

    কাফের মুরতাদদের উপর হামলায়

    মুসলিম মারা গেলে কি বিধান


    পিডিএফ: https://mega.nz/file/NnogyShY#TS4uA1...eN9dpi4ngkrGHA

    ***


    অনেক দিন ধরেই মাসআলাটা আলোচনা করতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু আর হয়ে উঠছে না। মাঝখানে একবার এক ভাই এ বিষয়টাতে একটু আপত্তিও করেছিলেন। তখন ইজমালি জওয়াব দেয়া হয়েছিল। বিস্তারিত আলোচনার ফুরসত হয়নি। এখন ফ্রান্স ঘটনার প্রেক্ষিতে মাসআলাটা আলোচনায় আনা উপকারী মনে হচ্ছে। মাসআলাটি হলো,




    কাফের মুরতাদদের উপর হামলায় কোনো মুসলিম মারা গেলে কি বিধান?



    ***


    বর্তমান তাগুতি রাষ্ট্রগুলোতে কাফের মুসলিম একাকার হয়ে বসবাস করে। কাফের মুরতাদদের উপর হামলা করতে গেলে দুয়েকজন মুসলিম অনিচ্ছাকৃত মারা যাওয়া স্বাভাবিক।


    কাফের রাষ্ট্রগুলোতেও মুসলিম সংখ্যা যথেষ্ট। সেগুলোতে হামলা করতে গেলেও কোনো কোনো সময় মুসলিম মারা যাওয়া বা আঘাত পাওয়া অস্বাভাবিক না।

    এখন দু’টি প্রশ্ন:

    ১. মুসলিম আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে কি হামলা বন্ধ রাখা আবশ্যক?

    ২. কোনো মুসলিম মারা গেলে কি কিসাস, দিয়াত বা জরিমানা আসবে?


    ***


    মুসলিমের রক্ত সমগ্র দুনিয়ার চেয়েও দামি

    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    لَزَوَالُ الدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللَّهِ مِنْ قَتْلِ رَجُلٍ مُسْلِمٍ -سنن الترمذي، رقم: 1395؛ ط. شركة مكتبة ومطبعة مصطفى البابي الحلبي – مصر، [حكم الألباني] : صحيح.
    “আল্লাহ তাআলার কাছে (অন্যায়ভাবে) কোনো মুসলিমকে হত্যার চেয়ে সমগ্র দুনিয়া নিঃশেষ হয়ে যাওয়াও তুচ্ছ ব্যাপারে।” –সুনানে তিরমিযি: ১৩৯৫


    এজন্যই অন্যায়ভাবে কোনো মুসলিমকে হত্যা করলে কুরআনে কারীমে ভয়ানক শাস্তির কথা এসেছে।

    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    {وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا} [النساء: 93]
    “যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত কোনো মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম। তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ্ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তার উপর লা’নত বর্ষণ করেছেন এবং তার জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন মহা শাস্তি।” –সূরা নিসা: ৯৩


    অধিকন্তু মুজাহিদ ভাইয়েরা যে নিজেদের জান মাল জিহাদের পথে ব্যয় করছেন তা তো কেবল মুসলিমদেরই স্বার্থে। কাজেই মুসলিমদের রক্তের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। যেনো কোনো অবস্থায়ই কোনো মুসলিম মারা না যায় বা আক্রান্ত না হয়।


    আলহামদুলিল্লাহ, আপনারা হয়তো মুজাহিদদের আচরণ বিধি ও জিহাদের সাধারণ দিক নির্দেশনা দেখে থাকবেন। সেখানে আলকায়েদার নীতি এই সতর্কতার ভিত্তিতেই নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য জনসমাগমস্থলতে (যেমন বাজার, মসজিদ, মাহফিল, অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে) হামলা করতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এজন্য দেখা যায়, এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে গিয়ে মুজাহিদদের প্রোগ্রামে দীর্ঘ দিন লেগে যায় বা কোনো কোনো সময় প্রোগ্রাম বাদও দিতে হয়।
    ***

    কিন্তু সতর্কতা যতই গ্রহণ করা হোক আশঙ্কা কিন্তু থেকেই যায়। কারণ, মুসলিম কাফের একাকার হয়ে আছে। মুসলিমরাও কাফেরদের থেকে দূরে থাকে না, কাফের-মুরতাদরাও মুসলিমদের সাথে মিশে থাকে। ফলে সতর্ক ব্যবস্থা যতই নেয়া হোক আশঙ্কা থেকেই যায়। অনেক সময় এমনও হতে পারে যে, দুয়েকজন মুসলিম নিহত হওয়া ছাড়া অপারেশন সম্ভবই নয়। তখন কি করণীয়?


    কাফের মুরতাদদের থেকে দূরে থাকা কাম্য
    প্রথমত মুসলিম উম্মাহর উচিৎ ওয়ালা বারার ফরিজা যিন্দা করা। কাফের-মুরতাদদের থেকে বারাআত ঘোষণা করা। তাদের থেকে দূরে থাকা। হাদিসেও এ ব্যাপারে নির্দেশ এসেছে। কারণ, আল্লাহ তাআলার সুন্নাহ হলো, আযাব যখন আসে শুধু জালেমদের উপর আসে না, সাথে যারা থাকে তাদের উপরও আসে। হ্যাঁ, জালেমের সহযোগী না হলে আখেরাতে তারা মাফ পেয়ে যাবেন, কিন্তু দুনিয়ার আযাবের বেলায় সুন্নাহ এটাই যে, ব্যাপকভাবে আসে, জালেম পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে না।

    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    وَاتَّقُوا فِتْنَةً لَا تُصِيبَنَّ الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْكُمْ خَاصَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ -الأنفال25
    “তোমরা ঐ আযাবকে ভয় কর যা শুধু তোমাদের মধ্যে যারা জুলুম করেছে বিশেষত তাদের উপরই পতিত হবে না। আর জেনে রাখ, আল্লাহর শাস্তি বড়ই কঠিন।” –আনফাল ২৫


    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    إذا أنزل الله بقوم عذابا أصاب العذاب من كان فيهم ثم بعثوا على أعمالهم
    “আল্লাহ তাআলা যখন কোনো কওমের উপর আযাব নাযিল করেন তাদের মাঝে থাকা (নেককার বদকার) সকলের উপরই আযাব আপতিত হয়। এরপর (কিয়ামতের দিন) প্রত্যেকে তার আপন আমল অনুযায়ী পুনরুত্থিত হবে।” –সহীহ বুখারি ৬৬৯১


    সহীহ ইবনে হিব্বানে এসেছে,
    عن عائشة قالت: قلت: يا رسول الله إن الله إذا أنزل سطوته بأهل الأرض وفيهم الصالحون فيهلكون بهلاكهم؟ فقال: "يا عائشة إن الله إذا أنزل سطوته بأهل نقمته وفيهم الصالحون فيصابون معهم ثم يبعثون على نياتهم وأعمالهم" –صحيح ابن حبان: 7314
    “হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তাআলা যখন কোনো ভূমির অধিবাসীদের উপর আযাব নাযিল করেন আর তাদের মাঝে কিছু নেককার লোকও থাকে তাহলে তারাও কি তাদের সাথে ধ্বংস হয়ে যাবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, হে আয়েশা! আল্লাহ তাআলা যখন তার নাফরমানদের উপর আযাব নাযিল করেন তখন তাদের মাঝে কিছু নেককার লোক থাকলে তাদের সাথে তারাও আযাবের শিকার হয়। এরপর (কিয়ামতের দিন) তারা তাদের আপন নিয়ত ও আমল অনুযায়ী পুনরুত্থিত হবে।” –সহীহ ইবনে হিব্বান ৭৩১৪


    এর বাস্তব দৃষ্টান্ত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত সহীহ বুখারির এক হাদিসে এসেছে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,
    قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( يغزو جيش الكعبة فإذا كانوا ببيداء من الأرض يخسف بأولهم وآخرهم ) . قالت قلت يا رسول الله كيف يخسف بأولهم وآخرهم وفيهم أسواقهم ومن ليس منهم ؟ . قال ( يخسف بأولهم وآخرهم ثم يبعثون على نياتهم )
    “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, একটি বাহিনি আগ্রাসনের জন্য কা’বার উদ্দেশ্যে আসবে। যখন বাইদা নামক স্থানে এসে পৌঁছবে তাদের প্রথম থেকে শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত সকলকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, তাদের প্রথম থেকে শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত সকলকে কিভাবে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে অথচ তাদের মাঝে এমন লোকজনও থাকবে যারা ব্যবসার জন্য এসেছে এবং এমন লোকজন যারা তাদের দলভুক্ত নয়? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন, তাদের প্রথম থেকে শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত সকলকে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে, এরপর (কিয়ামতের দিন) তারা আপন নিয়ত অনুযায়ী পুনরুত্থিত হবে।” –সহীহ বুখারি ২০১২


    বলা হয়, ইমাম মাহদি মক্কায় আত্মপ্রকাশের পর শাম থেকে তার বিরুদ্ধে একটা বাহিনি পাঠানো হবে। আল্লাহ তাআলা মক্কা মদীনার মাঝখানে তাদের সকলকে যমিনে ধ্বসিয়ে দেবেন। এ হাদিসে তাদের কথাই বলা হয়েছে।


    অতএব, মুমিনদের খুবই সতর্ক থাকা উচিৎ। কাফের-মুরতাদদের থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকা উচিৎ। নয়তো তাদের উপর যে আযাব পতিত হবে তা তাদেরকেও পেয়ে বসবে। তখন আপসোস করে কোনো লাভ হবে না। আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের হিফাজত করুন। আমীন।


    এবার আমাদের মূল প্রশ্নে আসি।



    প্রশ্ন ১. মুসলিম আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে কি হামলা বন্ধ রাখা আবশ্যক?
    প্রথমত কথা হলো, যেখানে মুসলিম আক্রান্ত হওয়া ছাড়াই হামলার সুযোগ রয়েছে সেখানে ইচ্ছাকৃত বা অসতর্কতার দরুন কোনো মুসলিমকে হত্যা বা আক্রান্ত করা হারাম। আমাদের আলোচনা সে সূরত নিয়ে, যেখানে কোনো মুসলিম আক্রান্ত হওয়া ছাড়া অপারেশন সম্ভব নয়, কিংবা অন্তত আক্রান্ত হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। অবস্থাটা এমন যে, হয় দুয়েকজন মুসলিম আক্রান্ত হবে বা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, অন্যথায় অপারেশন বন্ধ করে দিতে হবে। এমতাবস্থায় কি অপারেশন চালানো যাবে? না’কি বন্ধ করে দিতে হবে?


    ইনশাআল্লাহ এ বিষয়টি তিনটি দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করবো।


    এক. জিহাদ কাফের মুরতাদদের জন্য আল্লাহর আযাব
    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    {قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ (14)} [التوبة: 14]
    তোমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর; আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদের আযাব দেবেন, তাদেরকে অপদস্থ করবে, তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য করবেন এবং মুমিন কওমের অন্তর জুড়িয়ে দেবেন। -তাওবা: ১৪


    আরও ইরশাদ করেন,
    {قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلَّا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَنْ يُصِيبَكُمُ اللَّهُ بِعَذَابٍ مِنْ عِنْدِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا فَتَرَبَّصُوا إِنَّا مَعَكُمْ مُتَرَبِّصُونَ} [التوبة: 52]
    আপনি বলে দিন, তোমরা আমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের প্রতিক্ষায় আছো তা তো এ ছাড়া কিছু নয় যে, দু’টি মঙ্গলের একটি না একটি আমরা লাভ করবো (অর্থাৎ জয়লাভ করবো বা শহীদ হয়ে যাবো)। আর আমরা তোমাদের ব্যাপারে এই প্রতিক্ষায় আছি যে, আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন সরাসরি নিজের পক্ষ থেকে কিংবা আমাদের হাত দ্বারা। অতএব, তোমরাও প্রতিক্ষায় থাকো, আমরাও তোমাদের সাথে প্রতিক্ষায় আছি। -তাওবা: ৫২


    আরও বলেন,
    {فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ وَلَكِنَّ اللَّهَ قَتَلَهُمْ وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ رَمَى} [الأنفال: 17]
    তোমরা তাদের হত্যা করনি, আল্লাহই তাদের হত্যা করেছেন। আর আপনি যখন নিক্ষেপ করেছিলেন তখন আপনি নিক্ষেপ করেননি, আল্লাহই নিক্ষেপ করেছিলেন। -আনফাল: ১৭



    বুঝা গেল, জিহাদ আল্লাহর আযাব। আগেকার কাফের কওমদেরকে আল্লাহ তাআলা বাতাস, পানি, আগুন ইত্যাদি দিয়ে নিজ হাতে আযাব দিতেন; আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবী হয়ে আসার পর এ আযাবের সূরত ভিন্ন। এখন মুমিনরা আল্লাহর তীর। আল্লাহর অস্ত্র। জিহাদের মাধ্যমে এ অস্ত্র দিয়ে তিনি কাফেরদের আযাব দেন। এ কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের পর ব্যাপক আযাব খুব কমই নাযিল হয়েছে, যেমনটা আগে হতো।
    ইদ্রিস কান্ধলবি রহ. সিরাতে মুস্তফার মাগাজি অধ্যায়ের শুরুতে এ ব্যাপারে খুবই মূল্যবান আলোচনা করেছেন। যাদের সুযোগ হয় দেখে নেয়ার আবেদন।


    আল্লাহর আযাবের ব্যাপারে আল্লাহর সুন্নাহ আমরা দেখেছি যে, তিনি ব্যবধান করে আযাব নাযিল করেন না, ঢালাওভাবে নাযিল করেন। অথচ আল্লাহ তাআলার পক্ষে বেছে বেছে শুধু জলেমদের আযাব দেয়া অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু তিনি তা করেননি। ঢালাওভাবে দিয়ে থাকেন।


    যদি তাই হয়, তাহলে আমরা তো অক্ষম। ব্যবধান করে হামলা করার মতো সামর্থ্য আমাদের নেই। আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের রক্ত আমাদের জন্য হারাম করেছেন। সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছেন। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবো। আমাদের অনিচ্ছায় যদি কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে এর দায়ভার আমাদের না। আর অনিচ্ছায় আমাদের হাতে যেসব মুসলিম নিহত হবেন তারা ইনশাআল্লাহ শহীদ হবেন। যেহেতু তারা দ্বীনি অপারেশনে দ্বীনের খাতিরে নিহত হয়েছেন।


    তাতার বাহিনিতে যেসব মুসলিমকে জবরদস্তি আনা হয়েছিল তাদের হত্যা প্রসঙ্গে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
    وَهَؤُلَاءِ الْمُسْلِمُونَ إذَا قُتِلُوا كَانُوا شُهَدَاءَ وَلَا يُتْرَكُ الْجِهَادُ الْوَاجِبُ لِأَجْلِ مَنْ يُقْتَلُ شَهِيدًا. فَإِنَّ الْمُسْلِمِينَ إذَا قَاتَلُوا الْكُفَّارَ فَمَنْ قُتِلَ مِنْ الْمُسْلِمِينَ يَكُونُ شَهِيدًا وَمَنْ قُتِلَ وَهُوَ فِي الْبَاطِنِ لَا يَسْتَحِقُّ الْقَتْلَ لِأَجْلِ مَصْلَحَةِ الْإِسْلَامِ كَانَ شَهِيدًا. وَقَدْ ثَبَتَ فِي الصَّحِيحَيْنِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: {يَغْزُو هَذَا الْبَيْتَ جَيْشٌ مِنْ النَّاسِ فَبَيْنَمَا هُمْ بِبَيْدَاءَ مِنْ الْأَرْضِ إذْ خُسِفَ بِهِمْ. فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَفِيهِمْ الْمُكْرَهُ. فَقَالَ: يُبْعَثُونَ عَلَى نِيَّاتِهِمْ} فَإِذَا كَانَ الْعَذَابُ الَّذِي يُنْزِلُهُ اللَّهُ بِالْجَيْشِ الَّذِي يَغْزُو الْمُسْلِمِينَ يُنْزِلُهُ بِالْمُكْرَهِ وَغَيْرِ الْمُكْرَهِ فَكَيْفَ بِالْعَذَابِ الَّذِي يُعَذِّبُهُمْ اللَّهُ بِهِ أَوْ بِأَيْدِي الْمُؤْمِنِينَ كَمَا قَالَ تَعَالَى: {قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إلَّا إحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَنْ يُصِيبَكُمُ اللَّهُ بِعَذَابٍ مِنْ عِنْدِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا} . وَنَحْنُ لَا نَعْلَمُ الْمُكْرَهَ وَلَا نَقْدِرُ عَلَى التَّمْيِيزِ. فَإِذَا قَتَلْنَاهُمْ بِأَمْرِ اللَّهِ كُنَّا فِي ذَلِكَ مَأْجُورِينَ وَمَعْذُورِينَ وَكَانُوا هُمْ عَلَى نِيَّاتِهِمْ فَمَنْ كَانَ مُكْرَهًا لَا يَسْتَطِيعُ الِامْتِنَاعَ فَإِنَّهُ يُحْشَرُ عَلَى نِيَّتِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ. -مجموع الفتاوى (28/ 547)
    এ মুসলিমরা নিহত হলে শহীদ হবেন। আর শহীদ হয়ে যাবেন আশঙ্কায় ফরয জিহাদ তরক করা যাবে না। মুসলিমরা কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে মুসলিম বাহিনির যারা মারা যাবে শহীদ হবে। তদ্রূপ বাহিরের কোনো মুসলিম যদি দ্বীনের খাতিরে নিহত হন, অথচ বাস্তবে তিনি হত্যার উপযোগী ছিলেন না, তাহলে তিনিও শহীদ হবেন। সহীহাইনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি ইরশাদ করেন,

    ‘একটি বাহিনি আগ্রাসনের জন্য এই কা’বার উদ্দেশ্যে আসবে। যখন বাইদা নামক স্থানে এসে পৌঁছবে তাদের সকলকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। আরজ করা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাদের মাঝে তো এমন ব্যক্তিও থাকতে পারে যাকে জোরপূর্বক বাহিনিতে নিয়ে আসা হয়েছে? তিনি উত্তর দেন, (কিয়ামতের দিন) তারা আপন আপন নিয়ত অনুযায়ী পুনরুত্থিত হবে’।

    মুসলিমদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনে আসা বাহিনিটির উপর আল্লাহ তাআলা (স্বয়ং নিজে) যে আযাব নাযিল করবেন, তা যখন তিনি যে স্বেচ্ছায় এসেছে আর যাকে জবরদস্তি আনা হয়েছে সকলের উপরই নাযিল করবেন, তাহলে সে আযাবের ব্যাপারে আর কি কথা থাকতে পারে যে আযাব তিনি নিজ হাতে তাদের দেবেন বা (জিহাদের মাধ্যমে) মুমিনদের হাতে দেবেন?! যেমনটা আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

    ‘আপনি বলে দিন, তোমরা আমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের প্রতিক্ষায় আছো তা তো এ ছাড়া কিছু নয় যে, দু’টি মঙ্গলের একটি না একটি আমরা লাভ করবো (অর্থাৎ জয়লাভ করবো বা শহীদ হয়ে যাবো)। আর আমরা তোমাদের ব্যাপারে এই প্রতিক্ষায় আছি যে, আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন সরাসরি নিজের পক্ষ থেকে কিংবা আমাদের হাত দ্বারা। অতএব, তোমরাও প্রতিক্ষায় থাকো, আমরাও তোমাদের সাথে প্রতিক্ষায় আছি’।

    কাকে জবরদস্তি আনা হয়েছে তা আমাদের জানা নেই, তাকে আলাদা করার সামর্থ্যও আমরা রাখি না। আমরা যখন আল্লাহর আদেশে তাদের হত্যা করবো আমরা সওয়াব পাবো এবং মা’জুর গণ্য হবো। আর তারা তাদের নিয়ত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে। যাকে বাস্তবেই জবরদস্তি আনা হয়েছে যে, না এসে পারার কোনো সামর্থ্য তার ছিল না- কিয়ামতের দিন সে তার নিয়ত অনুযায়ী পুনরুত্থিত হবে। -মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৮/৫২৭



    মোটকথা, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যেন কোনো মুসলিম মারা না যায়। কিন্তু যদি অবস্থা এমন হয় যে, দুয়েকজন নিহত হওয়া ছাড়া অভিযান সম্ভব নয়, তাহলে এ কারণে অভিযান বন্ধ রাখা হবে না। অভিযানে তো মুজাহিদরাও মারা যেতে পারেন। এ ভয়ে তো জিহাদ বন্ধ রাখা হচ্ছে না। তাহলে বাহিরের মানুষ মারা যাবে আশঙ্কায় কিভাবে বলা যায় যে, জিহাদ বন্ধ রাখতে হবে?! বাহিরের কারো রক্তের মূল্য অবশ্যই মুজাহিদদের রক্তের চেয়ে বেশি না, যারা সব কিছু ত্যাগ করে দ্বীনের খাতিরে মৃত্যুর পথে পা দিয়েছেন।



    দুই. হত্যা যখমই জিহাদের তবিয়ত, তথাপি আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন
    জিহাদ মানেই রক্ত। জিহাদ মানেই হত্যা। আল্লাহ তাআলা জানেন যে, কাফেরদের আশপাশে কিছু না কিছু মুসলমান থাকেই। কেউ ব্যবসার জন্য যায়, কেউ অন্য প্রয়োজনে যায়, আর কেউ বন্দী থাকে। এতদসত্বেও আল্লাহ তাআলা জিহাদের আদেশ দিয়েছেন। যদি এমন হতো যে, বিলকুল কোনো মুসলিম মারা যেতে পারবে না, তাহলে আল্লাহ তাআলা জিহাদের আদেশ দিতেন না। যেহেতু দিয়েছেন বুঝা গেল, আমাদের সামর্থ্যের বাহিরের দায়িত্ব আমাদের না। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। এরপরও কেউ মারা গেলে আমাদের দায়ভার নেই।

    আল্লামা কাসানি রহ. (৫৮৭হি.) বলেন,
    ولا بأس برميهم بالنبال، وإن علموا أن فيهم مسلمين من الأسارى والتجار لما فيه من الضرورة، إذ حصون الكفرة قلما تخلو من مسلم أسير، أو تاجر فاعتباره يؤدي إلى انسداد باب الجهاد، ولكن يقصدون بذلك الكفرة دون المسلمين؛ لأنه لا ضرورة في القصد إلى قتل مسلم بغير حق.
    وكذا إذا تترسوا بأطفال المسلمين فلا بأس بالرمي إليهم؛ لضرورة إقامة الفرض، لكنهم يقصدون الكفار دون الأطفال، فإن رموهم فأصاب مسلما فلا دية ولا كفارة. -بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (7/ 100)
    যদিও জানা থাকে যে, কাফেরদের মাঝে কিছু বন্দী বা ব্যবসায়ী মুসলিম রয়েছে তথাপি তীর নিক্ষেপে কোনো সমস্যা নেই। কেননা, এখানে জরুরত রয়েছে। কারণ, বন্দী বা ব্যবসায়ী কিছু মুসলিম বলতে গেলে সব সময়ই কাফেরদের দূর্গগুলোতে থাকে। যদি এটার বিবেচনা করতে যাই, তাহলে জিহাদের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে তারা তীর নিক্ষেপের দ্বারা কাফেরদের হত্যা করা উদ্দেশ্যে নেবেন, মুসলিমদের নয়। কারণ, না-হক মুসলিম হত্যার ইচ্ছা করার তো কোনো জরুরত নেই।

    তদ্রূপ যদি মুসলিম শিশুদেরকে কাফেররা মানবঢাল বানিয়ে সামনে ধরে রাখে (যে, কাফেরদের উপর আক্রমণ করতে গেলে আগে মুসলিম শিশুরা মারা পড়বে) তাহলেও তীর নিক্ষেপে সমস্যা নেই। কারণ, ফরয আদায় করতে গেলে এটা ছাড়া উপায় নেই। তবে টার্গেট থাকবে কাফেররা, শিশুরা নয়। কাফেরদের টার্গেট করে নিক্ষেপের পর যদি মুসলিম আক্রান্ত হয় তাহলে কোনো দিয়াতও দিতে হবে না, কাফফারাও দিতে হবে না। -বাদায়িউস সানায়ি: ৭/১০০



    তিন. এ ধরনের পরিস্থিতিতে ঐ মুসলিমরা হারবিদের নারী শিশুদের মতো
    কাফেরদের নারী শিশুদের হত্যা করা নিষেধ, যদি তারা নিজেরা কিতালে না আসে বা সহায়তা না করে।
    আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন-
    «وجدت امرأة مقتولة في بعض مغازي رسول الله صلى الله عليه وسلم، «فنهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن قتل النساء والصبيان».
    “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন এক যুদ্ধে এক মহিলাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল। (তা দেখে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহিলা ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করে দেন।” -সহিহ বুখারী ৩০১৫, সহিহ মুসলিম ১৭৪৪


    রাবাহ ইবনে রবি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
    كنا مع رسول الله -صلى الله عليه وسلم- في غزوة، فرأى الناس مجتمعين على شيء، فبعث رجلا، فقال: "انظر علام اجتمع هؤلاء" فجاء، فقال: على امرأة قتيل. فقال: "ما كانت هذه لتقاتل"، قال: وعلى المقدمة خالد بن الوليد، فبعث رجلا، فقال: "قل لخالد: لا يقتلن امرأة ولا عسيفا". (قال شعيب الأرنؤوط: إسناده صحيح)
    “আমরা এক যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। তিনি লোকদেরকে একটা কিছুর পাশে একত্রিত দেখতে পেলেন। তখন তিনি একজনকে এ বলে পাঠালেন যে, ‘দেখো তো এরা কেন একত্রিত হয়েছে’? লোকটি এসে জানালেন, (তারা) একজন নিহত মহিলার পাশে একত্রিত হয়েছে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আপত্তির সুরে) বললেন, ‘এ তো লড়াই করার মতো ছিল না’। বর্ণনাকারী বলেন, সেনাবাহিনীর সম্মুখভাগের দায়িত্বে খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন লোককে তার কাছে এ নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন যে, খালিদকে বলবে সে যেন কোন মহিলাকে বা শ্রমিককে হত্যা না করে।” –সুনানে আবু দাউদ ২৬৬৯


    কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা হলো ঐ সময় যখন নারী শিশুরা আক্রান্ত হওয়া ব্যতীতই কাফেরদের উপর হামলা করা সম্ভব। পক্ষান্তরে যখন পরিস্থিতি এমন হয় যে, নারী শিশুদের বাঁচিয়ে হামলা করা সম্ভব নয় –ভারী অস্ত্র দিয়ে ব্যাপক হামলার সময় সাধারণত যেমনটা হয়ে থাকে- তখন এ নিষেধাজ্ঞা নেই। যতটুকু বাঁচানো সম্ভব ততটুকু সতর্কতা রেখে হামলা করে দেবে। এরপর যদি নারী শিশু মারা যায় তাহলে এর দায়ভার আমাদের নেই।

    হাদীসে এসেছে-
    سئل النبي صلى الله عليه و سلم عن الدار من المشركين؟ يبيتون فيصيبون من نسائهم وذراريهم فقال هم منهم

    “রাতের আঁধারে মুশরিকদের ভূমিতে অতর্কিত আক্রমণের ফলে আক্রান্ত নারী-শিশুদের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দেন, ‘ওরাও ওদের বাপ-দাদাদের অন্তর্ভুক্ত’।” -সহীহ মুসলিম:২/৮৪, হাদীস নং: ৪৬৪৭

    অর্থাৎ এ অবস্থায় ওদের বিধান ওদের কাফের বাপ দাদারই অনুরূপ। কাজেই তারা আক্রান্ত হলে তার দায় আমাদের উপর বর্তাবে না এবং তাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় আক্রমণও বন্ধ রাখা যাবে না।


    উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মাযিরি রহ. (৫৩৬ হি.) বলেন,
    المراد بقوله "هم منهم" أنّ أحكام الكفّار جارية عليهم في مثل هذا، والدّار دار كفر بكل من فيها منهم ومن ذراريهم. وإن اعتُرض هذا بالنّهي عن قتل النّساء والولدان قلنا: هذا وارد فيهم إذا لم يتميّزوا وقتلوا من غير قصد لقتلهم بل كان القصد قتل الكبار فوقعوا في الذّراري من غير عمد ولا معرفة، والأحاديث المتقدمة وردت فيهم إذا تميّزوا. اهـ
    “রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী ‘ওরাও ওদের বাপ-দাদাদের অন্তর্ভুক্ত’ দ্বারা উদ্দেশ্য, এমন ক্ষেত্রে ওদের উপর কাফেরদের বিধানই বর্তাবে। কাফের এবং তাদের সন্তান-সন্ততি সকলকে নিয়েই দারুল কুফর। এখানে যদি আপত্তি করা হয় যে, অন্য হাদীসে নারী-শিশু হত্যায় নিষেধাজ্ঞা এসেছে, তাহলে বলবো, (নারী-শিশু হত্যার বৈধতা প্রদানকারী) এ হাদীসের প্রয়োগক্ষেত্র হচ্ছে, যখন তারা পৃথক ও আলাদা না থাকে এবং তাদেরকে টার্গেট বানিয়ে হত্যা না করা হয় বরং উদ্দেশ্য থাকে পুরুষদের হত্যা করা, কিন্তু অনিচ্ছায় বা অজান্তে নারী শিশুরাও হত্যার শিকার হয়ে যায়। আর নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত পূর্ববর্তী হাদীসগুলোর প্রয়োগক্ষেত্র হল, যখন নারী ও শিশুরা পৃথক ও আলাদা থাকে।” –আলমু’লিম: ৩/১১

    ফুকাহায়ে কেরাম এ মাসআলার উপর মুসলিমদের মাসআলা কিয়াস করেছেন। মুসলিম হত্যা নিষেধ, কিন্তু যখন জিহাদে পরিস্থিতি এমন হবে যে, তারা আক্রান্ত হওয়া ছাড়া অভিযান সম্ভব নয়, তখন কথা ভিন্ন। আমরা কাফের-মুরতাদদের টার্গেট করে হামলা করে দেবো। অনিচ্ছায় যদি মুসলিম মারা যায় তাহলে এর দায়ভার আমাদের না।


    এ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন,

    وجه الإطلاق أمران. الأول أنا أمرنا بقتالهم مطلقا، ولو اعتبر هذا المعنى انسد بابه، لأن حصنا ما أو مدينة قلما تخلو عن أسير مسلم فلزم من افتراض القتال مع الواقع من عدم خلو مدينة أو حصن عادة إهدار اعتبار وجوده فيه، وصار كرميهم مع العلم بوجود أولادهم ونسائهم فإنه يجوز إجماعا مع العلم بوجود من لا يحل قتله فيهم واحتمال قتله وهو الجامع. [فتح القدير:5\431]
    “ব্যাপক আক্রমণ (যেখানে মুসলিমও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তা) বৈধ হওয়ার কারণ দুটি: প্রথমত আমাদেরকে নিঃশর্তভাবে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আদেশ দেয়া হয়েছে। এখন যদি আমরা কাফেরদের ভূমিতে মুসলমান থাকার বিষয়টি বিবেচনা করি, তাহলে জিহাদের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। কেননা এমন দূর্গ বা শহর খুব কমই থাকে, যেখানে কোনো মুসলিম বন্দী থাকে না। সাধারণত কোন শহর বা দূর্গ মুসলিম বন্দী থেকে মুক্ত না থাকা সত্ত্বেও জিহাদ ফরজ হওয়া থেকে আবশ্যিকভাবে এটাই সাব্যস্ত হয়ে যে, মুসলিম বন্দী থাকার বিষয়টা ধর্তব্য নয়। এ বিষয়টা দারুল হারবে কাফেরদের নারী-শিশু বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও হামলা জায়েয হওয়ার অনুরূপ দাঁড়াল। এটি সর্বসম্মতভাবে জায়েয। অথচ জানা কথা যে, সেখানে এমনসব লোক বিদ্যমান, যাদের হত্যা বৈধ নয় এবং হামলা করলে তারা নিহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই কারণ এ মাসআলাতেও বিদ্যমান।” -ফাতহুল ক্বাদীর: ৫/৪৩১

    ***



    প্রশ্ন ২. কোনো মুসলিম মারা গেলে কি কিসাস, দিয়াত বা জরিমানা আসবে?
    উত্তর: যদি কাফের মুরতাদদের টার্গেট করে হামলা করা হয় আর এতে মুসলিম আক্রান্ত হয় তাহলে কিসাস, দিয়াত, কাফফারা বা জরিমানা কিছুই আসবে না- যেমনটা ইমাম কাসানির বক্তব্যে গত হয়েছে। তবে শর্ত হলো মুসলিমকে হত্যা করা উদ্দেশ্যে থাকতে পারবে না। উদ্দেশ্য থাকবে কাফের, যদিও মারা পড়েছে মুসলিম। ওয়াল্লাহু আ’লাম।

    ***


    সারকথা

     মুসলিমের জান সমগ্র দুনিয়ার চেয়েও দামি। ইচ্ছাকৃত কোনো মুসলিমকে হত্যা করা ভয়ানক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

     মুমিনদের উচিৎ কাফের মুরতাদদের থেকে দূরে থাকা। নতুবা এদের উপর যে শাস্তি আপতিত হবে তা তাদের উপর এসে পড়তে পারে।

     জিহাদ আল্লাহ তাআলার অকাট্য ফরয বিধান। জিহাদ কাফেরদের জন্য আল্লাহর শাস্তি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যেন এ শাস্তি শুধু কাফেরদের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে, কোনো মুসলিম যেন আক্রান্ত না হয়।

     মুসলিম আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় জিহাদ বন্ধ রাখা যাবে না। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আমাদের অনিচ্ছায় বা অপারগ অবস্থায় কোনো মুসলিম আক্রান্ত হলে এর দায়ভার আমাদের না। কিসাস, দিয়াত, কাফফারা, জরিমানা কিছুই আসবে না।
    ***



  • #2
    জাযাকাল্লাহ আঁখি, গুরুত্বপূর্ণ একটি মাসআলার সমাধান দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা আপনার ইলমে-আমলে বারাকাহ দান করুন।

    Comment


    • #3
      ====[[[[মাশা-আল্লাহ ]]]]====
      আল্লাহ আপনাদের কাজগুলো কবুল করুন, আমীন।
      আল্লাহ, আমাকে মুজাহিদ হিসেবে কবুল করুন আমীন।

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ
        অনেক তথ্যবহুল আলোচনা করেছেন ৷
        আল্লাহ তাআলা আপনার ইলমে বারাকাহ দান করুন ৷ আমিন
        গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

        Comment


        • #5
          আলহামদুলিল্লাহ্ খুবই উপকৃত হলাম,
          আল্লাহ্ শায়েখ কে উত্তম বিনীময় দান করুন আমীন।

          Comment


          • #6
            মাশা আল্লাহ, দলীলভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর একটি মাসআলা তুলে ধরা হয়েছে।
            আল্লাহ তা‘আলা ভাইয়ের সকল ইলমী খেদমাত কবুল করুন ও এ ধারা জারি রাখুন। আমীন
            মুহতারাম ভাইয়েরা! আমাদের সবার উচিত- তা থেকে উপকৃত হওয়া।
            “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

            Comment


            • #7
              মাশাআল্লাহ৷
              আল্লাহ আপনার ইলমে বারাকাহ দান করুক ৷
              খুবই প্রয়োজনীয় একটি মাসআলা নিয়ে আলোচনা করেছেন ৷
              আমি জঙ্গি, আমি নির্ভীক ৷
              আমি এক আল্লাহর সৈনিক ৷

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লাহ, সময়োপযোগী পোস্ট। জাযাকাল্লাহ
                আল্লাহ ভাইয়ের খেদমতকে কবুল করুন। আমীন
                ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                Comment

                Working...
                X