Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০৭ || মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)|| - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)|| ৬ষ্ঠ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০৭ || মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)|| - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)|| ৬ষ্ঠ পর্ব

    আত্তিবয়ান পাবলিকেশন্স কর্তৃক পরিবেশিত

    মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা
    (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)||
    - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)||
    এর থেকে = ৬ষ্ঠ পর্ব
    ==================================================
    =====

    কাফিরদের বিরুদ্ধে দুই ধরনের জিহাদঃ

    ১. আক্রমণাত্মক জিহাদ (যেখানে শত্রুকে তার নিজ এলাকায় আক্রমণ করা হয়):


    ২. আত্মরক্ষামূলক জিহাদঃ

    আমরা এখন এ ব্যাপারে ৪ মাযহাবের মতামত দেখবো যারা সবাই এ বিষয়ে একমত ছিলেন।

    মাযহাব গুলোর মতামত সমূহঃ

    হানাফি মাযহাবঃ

    ইবন আবেদীন বলেছেন, “যদি শত্রুরা মুসলিমদের সীমানায় আক্রমণ চালায় এমতাবস্থায় জিহাদ করা র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায় এবং এই র্ফাদ আ’ইন হয় তাদের উপর যারা ঐ আক্রান্ত এলাকার নিকটে অবস্থান করছে। যদি নিকটবর্তীদের সাহায্যের প্রয়োজন না হয়, তাহলে আক্রান্ত এলাকা হতে যারা দূরে অবস্থান করছে তাদের জন্য এটি র্ফাদ কিফায়া। আর যদি তাদের সাহায্যের প্রয়োজন পড়ে তাহলে তাদের পরবর্তী নিকটবর্তী যারা আছে তাদের উপর এটি র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে হতে পারে যে, সীমান্তবর্তী এলাকার মুসলিমদের প্রচেষ্টায় শত্রুরা প্রতিহত হচ্ছে না অথবা, তারা অলসতায় বসে আছে অথবা জিহাদ করছে না। তাহলে এটি তাদের পরবর্তী নিকটবর্তী মুসলিমদের উপর ফারদ্ আ’ইন হয়ে যাবে; ঠিক যে রকমভাবে তাদের উপর সলাত ও সিয়াম ফারদ্। এই হুকুমকে পরিত্যাগ করার তাদের কোনই সুযোগ নেই। যদি তারাও অক্ষম হয়ে পরে তাহলে এটি র্ফাদ আ’ইন হবে পরবর্তী নিকটবর্তীদের উপর এবং এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত পুরো মুসলিম উম্মাহের উপর র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায়।”

    আল কাসানি, ইবনে নাজিম, ইবনে হাম্মাম-এর পক্ষ থেকেও ঠিক একই ফাতওয়া দেয়া হয়েছে।


    মালিকী ফিকহ:

    হাশিয়াত আদ দুসুকী-তে বলা হয়েছে যে, “জিহাদ র্ফাদ আ’ইন হয় তখন, যখন শত্রুপক্ষ হতে আকস্মিক আক্রমণ করা হয়।”

    দুসুকী বলেন, “যখন এমনটি ঘটে তখন প্রত্যেকের উপর জিহাদ র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায়। এমনকি মহিলা, শিশু, দাস-দাসীদের উপরও যদিও তারা তাদের অভিভাবক, স্বামী অথবা ঋণদাতার পক্ষ হতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।”


    শাফেঈ মাযহাব:

    রামলী লিখিত ‘নিহায়াত আল মাহতাজ’ নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, “যদি তারা (কাফিররা) আমাদের ভূমিতে আক্রমণ চালায় এবং তাদের ও আমাদের মধ্যকার দূরত্ব হয় যতটুকু দূরত্বে সফর সলাতের বিধান রয়েছে তা অপেক্ষা কম, তাহলে ঐ ভূমির মুসলিমদের উপর তাদের ভূমিকে রক্ষা করা র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায়। এমনকি এটি তাদের উপরেও ফারদ্ আ’ইন হয়ে যায়, যাদের উপরে কোন জিহাদ নেই, যেমনঃ মহিলা, শিশু, দাস-দাসী, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি।”

    হাম্বলী মাযহাবঃ

    ইবনে আল কুদামা লিখিত কিতাব ‘আল-মুঘনি’-তে তিনি বলেছেন, “জিহাদ তিনটি অবস্থায় র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায়ঃ
    ১. যদি উভয় পক্ষ যুদ্ধে মিলিত হয় এবং একে অপরের মুখোমুখি হয়।
    ২. যদি কাফিররা কোন মুসলিমদের ভূমিতে প্রবেশ করে, তখন সেখানকার মুসলিমদের উপর জিহাদ র্ফাদ আ’ইন হয়।
    ৩. যদি ইমাম অথবা খলিফা মুসলিমদেরকে অগ্রসর হওয়ার জন্য আদেশ দেন, তখন তাদের উপর এটি র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায়।”
    এবং ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ্)-এর উক্তি, “এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যদি কোন শত্রু মুসলিম ভূমিতে প্রবেশ করে তবে ঐ ভূমির নিকটবর্তীদের, অতঃপর নিকটবর্তীদের উপর তাদেরকে বহিষ্কার করা র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায় কারণ, মুসলিমদের ভূমিসমূহ হল একটি ভূমির মত। তাই এক্ষেত্রে জিহাদে বের হওয়ার জন্য পিতা-মাতা অথবা ঋণদাতার কাছ থেকে অনুমতি ব্যতীতই অগ্রসর হওয়া হল র্ফাদ। এবং বর্ণনাগুলো আহমদ হতে এসেছে এবং তিনি এ বিষয়ের সাথে একমত পোষণ করেছেন।”

    এই পরিস্থিতিটি সাধারণ অভিযান নামে পরিচিত।


    সাধারণ অভিযানের দলিল সমূহ এবং এর সমর্থনঃ

    ১) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা বলেন,

    انْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ

    অভিযানে বাহির হয়ে পড় হালকাঅবস্থায় হোক অথবা ভারী এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে তোমাদের সম্পদ ও জীবনদ্বারা। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে।”

    যারা সম্মুখ অভিযানে বের না হবে, আল্লাহ তা’আলা তাদের জন্য চরম শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন এবং তাদেরকে অন্য জাতি দ্বারা স্থলাভিষিক্ত করে দিবেন যারা ইসলামের সত্যিকার বাহক হবে -এটি হল তাদের প্রতিদান স্বরূপ; এবং এ রকম আরেকটি আয়াত পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ শুধুমাত্র তাদেরকেই শাস্তি দিবেন যারা তাদের র্ফাদ সমূহকে পরিত্যাগ করেছে এবং হারাম কাজে লিপ্ত থেকেছে। মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন,


    إِلا تَنْفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلا تَضُرُّوهُ شَيْئًا وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

    যদি তোমরা অভিযানে বের না হও, তবে তিনি তোমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দান করবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদেরস্থলাভিষিক্ত করবেন এবং তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহসর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।”

    ইবনে কাছির (রহিমাহুল্লাহ্) বলেছেন, “আল্লাহ তা’য়ালা আদেশ দিয়েছিলেন যে, প্রত্যেকেই যেন আল্লাহর রসূল -এর সাথে তাবুক যুদ্ধে শত্রুদের (যারা রোমানের আহলে কিতাব ছিল) সাথে যুদ্ধ করার জন্য অভিযানে বের হয়ে পরে।”

    ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ্ বুখারী শরীফেরসম্মুখ অভিযানের শর্ত ও জিহাদের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় এবং এর জন্য নিয়্যত’ নামক অধ্যায়ে এই আয়াতটিতে (সূরা তাওবাহ্ঃ ৩৯) উল্লেখ করেছেন। তাবুকের যুদ্ধের এই আদেশ ছিল সর্ব সাধারণের জন্য কেননা মুসলিমরা জানতে পেরেছিল যে, রোমানরা আরব উপদ্বীপের সীমানাগুলোতে জমা হচ্ছে এবং তারা মদিনা আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাহলে তখন কি করা উচিত যখন কাফিররা মুসলিমদের ভূমির ভিতরে প্রবেশ করেছে; ঐ মুহুর্তে সম্মুখে অভিযান চালানো কি আরো বেশি অগ্রাধিকার পায় না?

    আবু তালহা (রদিআল্লাহু আনহু) এই আয়াতটি সম্পর্কে (সূরা তাওবাহ্ঃ ৩৯) বলেন আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনে, “…হালকা অথবা ভারী…” দ্বারা বুঝিয়েছেন যে, “তিনি বৃদ্ধ অথবা যুবক কারও অযুহাত শুনবেন না।”

    হাসান-আল-বসরী বলেন, “কঠিন অথবা সহজ অবস্থায়।”

    ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ্) বলেন, “যদি শত্রুরা মুসলিমদের উপর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুতি নেয়, তখন আক্রান্ত মুসলিমদের উপর ঐ সকল শত্রুদেরকে বহিষ্কার করা র্ফাদ হয়ে যায়। ঠিক একইভাবে, যে সকল মুসলিমরা আক্রান্ত হয়নি তাদের উপরও এটি ফারদ্। কেননা আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,


    إِنَّ الَّذِينَ آَمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آَوَوْا وَنَصَرُوا أُولَئِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَالَّذِينَ آَمَنُوا وَلَمْ يُهَاجِرُوا مَا لَكُمْ مِنْ وَلايَتِهِمْ مِنْ شَيْءٍ حَتَّى يُهَاجِرُوا وَإِنِ اسْتَنْصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ إِلا عَلَى قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِيثَاقٌ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

    “…আর দ্বীন সম্বন্ধে যদি তারা তোমাদের সাহায্য প্রার্থনা করে তবে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য…।”

    এজন্যই রসূল আদেশ দিয়েছেন যে, মুসলিমদের সহযোগীতা করার জন্য যখন তাদের প্রয়োজন হয়। এতে কেউ বেতনভুক্ত যোদ্ধা হোক বা না হোক, এবং এটাও দেখার বিষয় নয় যে তার ক্ষমতা কতটুকু আছে, বরং এটি সবার উপরে র্ফাদ যে, প্রত্যেকে তার জান ও মাল দিয়ে, সংখ্যায় অল্প হোক অথবা বেশী, যানবাহনে চড়ে হোক অথবা পায়ে হেঁটে তাদের সাহায্য করবে। আর এ কারণেই, আহযাব-এর যুদ্ধে যখন শত্রুরা মদিনা আক্রমণ করেছিল, তখন আল্লাহ তা’য়ালা কাউকে এ দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দেননি।

    আয্ যুহুরী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

    সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব একচোখ অন্ধ অবস্থায় জিহাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তখন লোকেরা তাকে বলল, ‘আপনি তো ওযর প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত।’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘আল্লাহ বৃদ্ধ ও যুবক উভয়কেই জিহাদে বের হওয়ার আদেশ করেছেন। আমার পক্ষে যদি যুদ্ধ করা সম্ভব নাও হয় অন্তত মুজাহিদদের সংখ্যা তো বৃদ্ধি করতে পারবো অথবা তাদের মালের দেখাশোনা করতে পারবো।’”




    আরও পড়ুন



    Last edited by tahsin muhammad; 10-27-2023, 09:35 PM.

  • #2
    সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব একচোখ অন্ধ অবস্থায় জিহাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তখন লোকেরা তাকে বলল, ‘আপনি তো ওযর প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত।’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘আল্লাহ বৃদ্ধ ও যুবক উভয়কেই জিহাদে বের হওয়ার আদেশ করেছেন। আমার পক্ষে যদি যুদ্ধ করা সম্ভব নাও হয় অন্তত মুজাহিদদের সংখ্যা তো বৃদ্ধি করতে পারবো অথবা তাদের মালের দেখাশোনা করতে পারবো।”

    আল্লাহু আকবার! আমরা উম্মাহ হিসাবে যদি এমন চিন্তার অধিকারী হতে পারতাম, তাহলে উম্মাহর ভাগ্যাকাশে খিলাফাহর রক্তিম সূর্য আরও অনেক আগেই হেসে উঠত ইনশাআল্লাহ
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X