Announcement

Collapse
No announcement yet.

রাষ্ট্রীয় পদে কাফের: শরীয়ত কি বলে?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রাষ্ট্রীয় পদে কাফের: শরীয়ত কি বলে?

    রাষ্ট্রীয় পদে কাফের: শরীয়ত কি বলে?

    মুসলিমের উপর কর্তৃত্ব করার কোনো অধিকার কাফেরের নেই।

    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

    وَلَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ لِلْكَافِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلًا
    ‘আল্লাহ কিছুতেই কাফেরদের জন্য মু’মিনদের বিরুদ্ধে কোন পথ রাখবেন না।’- নিসা: ১৪১


    আর কোনো কাফেরকে মুসলিমের উপর কর্তৃত্ব দেয়ার অর্থ ইসলাম ও মুসলিমের বিরুদ্ধে তাকে পথ করে দেয়া।

    ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন,

    لا ولاية لكافر على مسلم لقوله تعالى {ولن يجعل الله للكافرين على المؤمنين سبيلا} [النساء: 141]. اهـ
    “কোন মুসলমানের উপর কোন কাফেরের কোন কর্তৃত্ব নেই। কেননা, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘আল্লাহ কিছুতেই কাফেরদের জন্য মু’মিনদের বিরুদ্ধে কোন পথ রাখবেন না’।”- ফাতহুল কাদীর: ৫/২৬৫


    এজন্য রাষ্ট্রীয় পদে কাফের নিয়োগ দেয়া হারাম।


    অধিকন্তু কাফেরকে বন্ধু ও নৈকট্যভাজনরূপে গ্রহণ করতে আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

    ﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لا تَتَّخِذُوا الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ﴾
    “হে মুমিনগণ, তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল, তাদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের দীনকে উপহাস ও খেল-তামাশার বস্তুতে পরিণত করেছে, তোমরা তাদেরকে এবং কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। যদি তোমরা সত্যিকার অর্থে মুমিন হয়ে থাক, তাহলে একমাত্র আল্লাহ তাআলাকেই (বন্ধু বানাও এবং তাকেই) ভয় কর।”- মায়েদা ৫৭


    কাফেরকে পদ দেয়ার অর্থ তাকে নিকটে টেনে আনা। অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করা। তাকে সম্মান করা।

    ইমাম জাসসাস রহ. (৩৭০হি.) বলেন,

    وفي هذه الآية دلالة على أن الكافر لا يكون وليا للمسلم لا في التصرف ولا في النصرة; ويدل على وجوب البراءة من الكفار والعداوة لهم. اهـ
    “এ আয়াত বুঝাচ্ছে, কাফের কোন ক্ষেত্রেই মুসলমানের কর্তৃত্বশীল হতে পারে না। (তার নিজের বা তার মালের উপর) হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রেও না, নুসরতের ক্ষেত্রেও না। এও বুঝাচ্ছে যে, কাফেরদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা এবং তাদের সাথে দুশমনি পোষণ করা আবশ্যক।”- আহকামুল কুরআন ২/৫৫৫


    ইবনুল কায়্যিম রহ. (৭৫১ হি.) বলেন,

    ولما كانت التولية شقيقة الولاية كانت توليتهم نوعا من توليهم وقد حكم تعالى بأن من تولاهم فإنه منهم ولا يتم الإيمان إلا بالبراءة منهم والولاية تنافي البراءة فلا تجتمع البراءة والولاية أبدا والولاية إعزاز فلا تجتمع هي وإذلال الكفر أبدا والولاية صلة فلا تجامع معاداة الكافر أبدا . اهـ
    “যেহেতু পদে নিয়োগ দেয়া বন্ধুরূপে গ্রহণ করারই সমগোত্রীয়, তাই কাফেরদেরকে কোন পদে নিয়োগ দেয়াও তাদের সাথে এক প্রকার বন্ধুত্ব। আর আল্লাহ তাআলা ফায়সালা দিয়ে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। তাদের থেকে সম্পর্কচ্ছেদ ব্যতীত ঈমান পূর্ণ হবে না। আর বন্ধুরূপে গ্রহণ করা সম্পর্কচ্ছেদের পরিপন্থী। সম্পর্কচ্ছেদ আর বন্ধুত্ব কখনই একত্র হতে পারে না। বন্ধুরূপে গ্রহণ করার অর্থই হচ্ছে সম্মান দেয়া। এর সাথে কুফরকে অপদস্তকরণ একত্র হতে পারে না। বন্ধুত্বের অর্থ সম্পর্ক জোড়া। কাফেরের বিরুদ্ধে দুশমনির সাথে এটি কখনই একত্র হতে পারে না।”- আহকামু আহলিযযিম্মাহ ১/২৭৯


    ইমাম বায়হাকি রহ. (৪৫৮ হি.) বর্ণনা করেন,

    أن أبا موسى رضى الله عنه وفد إلى عمر بن الخطاب رضى الله عنهما ومعه كاتب نصرانى فأعجب عمر رضى الله عنه ما رأى من حفظه فقال : قل لكاتبك يقرأ لنا كتابا. قال : إنه نصرانى لا يدخل المسجد. فانتهره عمر رضى الله عنه وهم به وقال : لا تكرموهم إذ أهانهم الله ولا تدنوهم إذ أقصاهم الله ولا تأتمنوهم إذ خونهم الله عز وجل.
    “হযরত আবু মূসা আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে আগমন করলেন। তার সাথে তিনি একটা খৃস্টান কেরানী নিয়ে এসেছিলেন। কেরানীটির নিখুঁত হিসাব নিকাশ দেখে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু মুগ্ধ হলেন। বললেন, তোমার কেরানীকে বল আমাদেরকে খাতা পড়ে শুনাতে। তিনি জওয়াব দিলেন, সে তো খৃস্টান। মসজিদে প্রবেশ করে না। একথা শুনামাত্র *উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে ধমকি দিয়ে উঠলেন; মনে হচ্ছিল যেন তিনি তাকে আঘাতও করবেন; এবং বললেন, ‘যখন আল্লাহ তাদের অপমান করেছেন, তখন তোমরা তাদের সম্মান দিয়োও না। যখন আল্লাহ তাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন, তখন তোমরা তাদের কাছে টেনো না। যখন আল্লাহ আযযা ওয়াজাল্লা তাদের খেয়ানতকারী সাব্যস্ত করেছেন, তখন তোমরা তাদের আমানতদার ভেবো না’।”- সুনানে কুবরা বায়হাকি ২০৯১০

    ইবনে আবিদিন রহ. (১২৫২হি.) বলেন,

    وذكر في شرح السير الكبير أن عمر كتب إلى سعد بن أبي وقاص ولا تتخذ أحدا من المشركين كاتبا على المسلمين، فإنهم يأخذون الرشوة في دينهم ولا رشوة في دين الله تعالى قال وبه نأخذ فإن الوالي ممنوع من أن يتخذ كاتبا من غير المسلمين {لا تتخذوا بطانة من دونكم} [آل عمران: 118] . اهـ. الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 309)
    শরহুস সিয়ারিল কাবিরে বলা হয়েছে, উমার রাদি. সা’দ বিন আবু ওয়াককাস রাদি.র কাছে ফরমান লিখে পাঠান, ‘কোনো মুশরিককে হিসাবরক্ষক পদে নিয়োগ দেবে না। কারণ তারা ঘুষ গ্রহণ করে। আল্লাহর দ্বীনে ঘুষের কোনো স্থান নেই’। ইমাম মুহাম্মাদ রহ. বলেন, এটাই আমাদের মাযহাব। কোনো কাফেরকে হিসাবরক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া ইমামুল মুসলিমিনের জন্য নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না’। -রদ্দুল মুহতার: ২/৩০৯


    ইবনে নুজাইম রহ. (৯৭০হি.) বলেন,

    قال في الغاية: ويشترط في العامل أن يكون حرا مسلما غير هاشمي فلا يصح أن يكون عبدا لعدم الولاية، ولا يصح أن يكون كافرا؛ لأنه لا يلي على المسلم بالآية، ولا يصح أن يكون مسلما هاشميا لأن فيها شبهة الزكاة اهـ. بلفظه
    وبه يعلم حكم تولية اليهود في زماننا على بعض الأعمال، ولا شك في حرمة ذلك أيضا. البحر الرائق شرح كنز الدقائق ومنحة الخالق وتكملة الطوري (2/ 248)
    গায়াতুল বায়ান গ্রন্থকার বলেন, উশুর আদায়ের পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য একটা শর্ত হলো মুসলিম হতে হবে। কাজেই কাফের হলে সহীহ হবে না। কারণ, মুসলিমের উপর কাফেরের কোনো কর্তৃত্ব নেই। … গায়াতুল বায়ান গ্রন্থকারের বক্তব্য থেকে আমাদের যামানায় কোনো কোনো পদে যে ইয়াহুদি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তার হুকুম পরিষ্কার। কোনো সন্দেহ নেই যে, এটাও হারাম। -আলবাহরুর রায়িক: ২/২৪৮


    মুহতারাম পাঠক, আশাকরি বুঝতে পেরেছেন, ছোটখাট পদেও কাফের নিয়োগ দেয়া হারাম; বড় বড় পদে কিংবা মন্ত্রী এমপি হয়ে যাওয়া যে আরও আগেই হারাম তা তো স্পষ্টই। আজকাল যেসব মন্ত্রী এমপি ও নেতা নেত্রী মুরতাদ, সেগুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম, কিন্তু মালউনগুলোর ব্যাপারেও তো কোনো উচ্চবাচ্য শুনি না। প্রশাসনসহ সবগুলো পদ ভরে গেছে মালউন দিয়ে। এরা মুসলিমদের উপর ছড়ি ঘুরাচ্ছে। কিন্তু আলেম সমাজের দুঃখজনক নীরবতা লক্ষ করছি। কেউ বলছে না, এদেরকে নিয়োগ দেয়া হারাম। কাফের এমপি মন্ত্রী হওয়া হারাম। কেউ বলছে না। আল্লাহ আমাদের মাফ করুন।


  • #2
    আহ! খুব দুঃখজনক ব্যাপার! আলেমরা আজ ইসলাম নিয়ে গর্বিত হয় না। কুফরী বিশ্বব্যবস্থা ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সামনে ইসলামের প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে লজ্জাবোধ করে। মনে করে, এটা কেউ খাবে না, এটা অসামাজিক! আল্লাহ হেফাজত করুন!

    Comment


    • #3
      খুবই আফসোস লাগে এই উম্মাহর জন্য! আল্লাহ আমাদেরকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করেন, আমিন।

      Comment


      • #4
        আল্লাহ তায়া-লা সম্মানিত শাইখ কে উত্তম
        বিনিময় দান করুন,খুব ই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে
        ধরেছেন, আল্লাহ্ এ সব জালিম থেকে মুসলিম
        উম্মাহ্ কে পরিত্রাণ দিন, আমিন ইয়া রব্ব।

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহ আঁখি।
          আসলে কী বলব ভাই......।আমরা তাগুতদের অধীনে থাকতে থাকতে এখন হারামকে হারাম আর ফরজকে ফরজ এই পার্থক্যটুকু করার মত সাহস আমরা পাচ্ছি না...।।আল্লাহ আমাদের ইসলাহ করে দিন ।আমিন।

          Comment


          • #6
            Originally posted by mollah View Post
            জাযাকাল্লাহ আঁখি।
            আসলে কী বলব ভাই......।আমরা তাগুতদের অধীনে থাকতে থাকতে এখন হারামকে হারাম আর ফরজকে ফরজ এই পার্থক্যটুকু করার মত সাহস আমরা পাচ্ছি না...।।আল্লাহ আমাদের ইসলাহ করে দিন ।আমিন।
            প্রিয় ভাই!
            একদম মনের কথাটি বলেছেন।
            দাওয়াহ,ইদাদ ও জিহাদের মাধ্যমে ইসলামি খিলাফাহ কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।

            Comment


            • #7
              আমি মিডিয়া ভাইদের সবিনয় অনুরোধ করবো, মালাউন অফিসারদের উপর একটি সিরিজ ডকুমেন্টারি ওপেন করার জন্য। সত্যিই এখন মালাউন অফিসারে দেশটা ভরে গেছে। টেকনাফের সেই সন্ত্রাসী ওসি প্রদিপ একজন আর্মির সাবেক অফিসারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ছিলো।
              اللهم انی اسلک الهدی والتفی والعفافی والغناء

              Comment


              • #8
                তাগুত হাসিনা তো রাষ্ট্রীয় পদে কাফির দিয়ে ভরে ফেলছে। কিন্তু এ ব্যাপারে তেমন কোন উচ্চবাক্য শুনা যায় না।
                আমাদের প্রিয় ভাই- আপনি সময়ের সাহসী উচ্চারণ প্রকাশ করেছেন। জাযাকাল্লাহ
                আশা করি- আমাদের আলিম সমাজ এ বিষয়ে উম্মাহকে সতর্ক করবেন।
                ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                Comment

                Working...
                X