কিছু করতে পারছি না- পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে
আমাদের সবার হৃদয়ে ফিলিস্তিন। কিন্তু ফিলিস্তিন আজ মৃত্যুপুরী। এমন দরকারী মুহূর্তে, এমন সুবর্ণ সুযোগের ক্ষণেও আমি কিছু করতে পারছি না কেনো?
এই ‘কেনো’টার রহস্য জানা দরকার।
০১. বর্তমান ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু নিয়ে যারা কথা বলছেন, যারা চাকরি হারাচ্ছেন, প্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত হচ্ছেন- তাদের পক্ষে মিডিয়া কথা বলছে না। কিন্তু কেন? ট্রান্সজেন্ডার মতবাদটা তো শুধু ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকেই খারাপ না, জাগতিক দিক থেকেও, বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও। তারা এমন সমাজ গড়তে চায় যেখানে ছেলে মেয়ের কোনো ব্যবধান থাকবে না। বরং ছেলে বা মেয়ে নামে স্বতন্ত্র কিছু থাকবে না। নিজেকে ভাববে ছেলে তো ছেলে। ভাববে মেয়ে তো মেয়ে। বরং আরও উন্নত হবে! জন্তু ভাববে তো জন্তু। এমন একটা পাগল সমাজ গড়ার মতবাদ হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ। এটার বিপক্ষে তো দেশের যেকেউ কথা বলবে। বলতে পারার কথা। কিন্তু হচ্ছে না কেনো?
আমি সেসব মিডিয়ার কথা বলছি না যারা কুফরি ব্যবস্থারই এজেন্ট। যারা সত্যকে সত্য বলার মতো সামান্য হলেও হিম্মত রাখে সেসব মিডিয়াও কথা বলছে না। কেনো? কেউ কেউ গোপনে বলেছেন: বললে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে।
হাঁ, এই চেপে থাকা শব্দটাই শুনতে চাচ্ছিলাম: ‘পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে’।
আমরা ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে কথা বলছি, আমাদের উচিত এই ‘পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে’-টা নিয়েও কথা বলা। যে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে এবং এই পুলিশদের প্রভু যারা, যাদের আদেশে এই পুলিশরা ধরে নিয়ে যাবে: তাদের বিধান কি? ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে আমরা শুধু ব্র্যাককে চিনলে হবে না, এই ‘পুলিশ’ এবং পুলিশদের এই ‘প্রভু’দেরও চিনতে হবে। নইলে কোনোদিন সমাধান আসবে না? আমরা ব্র্যাক মিটিয়ে দিতে চাই, কিন্তু পারি না এই পুলিশ ও পুলিশের প্রভুদের কারণে। তাহলে আমাদের সামনে বড় শত্রু কি ব্র্যাক না এই পুলিশ আর পুলিশের প্রভুরা?
০২. আপনি ফিলিস্তিনসহ সকল জিহাদি ফ্রন্ট ও জিহাদি জামাতগুলোর ব্যাপারটা এবং সকল ভূমিতে নির্যাতিত উম্মাহর সহযোগিতার বিষয়টাও এভাবেই ভাববেন আশাকরি। আমেরিকা ইসরাইল আমাদের শত্রু। আমরা ইসরাইলকে মিটিয়ে দিতে চাই। আমাদের ইচ্ছা আছে। একটা সুযোগও ইতিহাসের মোড় ঘুরে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। কিন্তু আমরা পারছি না। কিন্তু কেনো? কারণ সবখানে একই: ‘পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে’।
তাই শুধু ফিলিস্তিনকে সহযোগিতা করা ফরয ফতোয়া দিয়ে ক্ষান্ত থাকলে হবে না, এই ‘পুলিশ’, এই সব বাহিনি এবং তাদের প্রভুদের বিষয়েও কথা বলা দরকার। এই নাপাকদের আপনি যতদিন সরাতে না পারবেন, ততদিন আপনি না ইসরাইলকে মিটাতে পারবেন, না ফিলিস্তিন আযাদ করতে পারবেন, না কাশ্মির মুক্ত করতে পারবেন; না আরাকান, না উইঘুর। তাহলে এরা কাদের সহযোগী? এরা কাদের লোক? এদের সরানোর কি বিধান? এই ‘এরা’দের বিষয়টাও আশাকরি ফিলিস্তিনপ্রেমীরা এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে ফতোয়া প্রদানকারীগণ ভাববেন।
০৩. গাজায় আপনার ভাইটি ক্ষুধার জ্বালায় ঘাস খাচ্ছে আপনি তার মুখে এক লোকমা খাবার তুলে দিতে পারছেন না এই ‘এরা’র কারণে। পক্ষান্তরে:
- এই বাংলাদেশের ‘এরা’ ইসরাইলের প্রটেকশানে নেভি মোতায়েন করেছে,
- পাকিস্তানের ‘এরা’ শেল পাঠিয়েছে এবং বাণিজ্য রক্ষার নামে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে,
- আরবের ‘এরা’ ইসরাইলে খাবারের ট্রাক পাঠাচ্ছে,
- লেবাননের ‘এরা’ উত্তপ্ত জনতাকে গুলী করছে।
০৪. মুফতি তাকি উসমানি দামাত বারাকাতুহু পাকিস্তান সেনাবাহিনির ব্যাপারে বলেছেন,
“আমি আমাদের সেনাদের ব্যাপারে যতটুকু জানি, মৌলিকভাবে তারা মুসলমান এবং তাদের মাঝে ইসলমী জযবাও রয়েছে। ফলে এমন পরিস্থিতিতে তারা বিলকুল খামোশ থাকবে, এর জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না, আমার কাছে এটা অবাস্তব মনে হয়। আমি আশা করি, তারা অবশ্যই হেকমতে আমলী গ্রহণ করে থাকবেন। আল্লাহ চাহে তো এমন কিছুই হোক।”
এই আশাবাদ ইসলামী ইমারাত, টিটিপি বা আলকায়েদার ব্যাপারে ব্যক্ত করলে যথাস্থানে বলা যায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনির ব্যাপারে আমরা তাই আশা করতে পারি-
- যা তারা বিশ বছর আফগানে কুফরের পক্ষে মুসলিমদের হত্যার মাধ্যমে দেখিয়েছে।
- যা দেখিয়েছে আফিয়া সিদ্দিকীর সাথে।
- যা দেখিয়েছে মুজাহিদদের আমেরিকার হাতে তুলে দিয়ে।
- যা দেখিয়েছে ওয়াজিরিস্তানে হাজার হাজার মুসলিম হত্যা করে।
- যা দেখিয়েছে ইসরাইলে শেল পাঠিয়ে আর ইসরাইলের প্রটেকশানে বাণিজ্য রক্ষার নামে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে।
বরং বাস্তব কথা হচ্ছে: জাতিসঙ্ঘভুক্ত রাষ্ট্রগুলো ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। আপনি তাদের থেকে তখন ভিন্ন কিছু কিভাবে আশা করতে পারেন?!
০৫. সর্বোপরি কিছু ‘করতে পারছি না’ নাকি ‘করতে চাচ্ছি না’ সেটাও বিবেকের কাছে প্রশ্নের বিষয়। এই পুলিশ এবং তাদের প্রভুদের চোখ ফাঁকি দিয়ে, বরং তাদের নাকের ডগায় বসেই সারা দুনিয়াব্যাপী জিহাদী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। আমেরিকার কলিজায় গিয়ে টুইনটাউয়ার ধ্বসিয়ে দিয়েছে। তো আমি কেন পারছি না? নাকি আমার সদিচ্ছা নেই? আমার বিবেককে আমি নিজেই প্রশ্ন করি।
***
Comment