Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ১৬ || “আকীদাতুল ওয়ালা ওয়াল-বারা” ।। শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ || শেষ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ১৬ || “আকীদাতুল ওয়ালা ওয়াল-বারা” ।। শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ || শেষ পর্ব

    আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
    আকীদাতুল ওয়ালা ওয়াল-বারা ।।
    শাইখ
    আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ
    এর থেকে || শেষ পর্ব

    ===================


    উপসংহার


    পরিশেষে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করতে চাই।

    ০১. মু’মিনদের সাথে বন্ধুত্ব করা এবং কাফেরদের সাথে শত্রুতা করা ইসলামী আকীদার গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়। তা ছাড়া ঈমান পূর্ণ হবে না। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارٰى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ ﴿المائدة: ٥١﴾


    হে মু’মিনগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো নাতারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে; সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদেরকে পথপ্রদর্শন করেন না।” (সূরামায়িদা: ৫১)



    কাফেরদের সাথে শত্রুতা পোষণ, এটি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার মৌলিক বিষয় এবং এটি তাগুতকে অস্বীকার করা ছাড়া পূর্ণ হয় না। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    فَمَن يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى لَا انفِصَامَ لَهَا وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ﴿البقرة: ٢٥٦﴾

    অতএব, যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নেবে এমন সুদৃঢ় হাতল; যা ভাঙবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, প্রজ্ঞাময়।” (সূরাবাকারাহ: ২৫৬)

    আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-


    أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آمَنُوا بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَن يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَن يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا ﴿النساء: ٦٠﴾


    আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবি করে যে, আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে; তারা তাতে ঈমান এনেছে। (কিন্তু) তারা বিরোধীয় বিষয়ে তাগুতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়; অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ করা হয়েছিল, যাতে তারা তাকে (তাগুত) প্রত্যাখ্যান করে। প্রকৃতপক্ষে, শয়তান তাদেরকে প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।” (সূরানিসা: ৬০)

    সুতরাং তাগুত ও তাদের সহযোগীদেরকে অবশ্যই বর্জন করতে হবে এবং তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-


    قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآءُ مِنكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتّٰى تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ إِلَّا قَوْلَ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ وَمَا أَمْلِكُ لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن شَيْءٍ رَّبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ﴿الممتحنة: ٤﴾

    তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তাঁরা তাঁদের সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে। কিন্তু ইবরাহীমের উক্তি তাঁর পিতার উদ্দেশে এর ব্যতিক্রম, তিনি বলেছিলেন, আমি অবশ্যই তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব। তোমার উপকারের জন্য আল্লাহর কাছে আমার আর কিছু করার নেই। হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা তোমারই উপর ভরসা করেছি, তোমারই দিকে মুখ করেছি এবং তোমারই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন।” (মুমতাহিনা: )

    ০২. এই মৌলিক আকীদার ক্ষেত্রে শিথিলতার কারণে, সেই বিচ্ছেদটি ঘটে; যার মাধ্যমে ইসলামের শত্রুরা মুসলমান জাতিকে খতম করা, তাদের সাথে প্রতারণা করা, ভয় প্রদর্শন করা এবং বিভিন্ন মুসীবত-দুর্যোগে পতিত করার জন্য ঢুকে পড়ার সুযোগ পায়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    لَوْ خَرَجُوا فِيكُم مَّا زَادُوكُمْ إِلَّا خَبَالًا وَلَأَوْضَعُوا خِلَالَكُمْ يَبْغُونَكُمُ الْفِتْنَةَ وَفِيكُمْ سَمَّاعُونَ لَهُمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمِينَ ﴿التوبة: ٤٧﴾

    যদি তোমাদের সাথে তারা বের হত; তবে তোমাদের অনিষ্ট ছাড়া আর কিছু বৃদ্ধি করত না, আর অশ্ব ছুটাত তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। আর তোমাদের মাঝে রয়েছে তাদেরকে মান্যকারী। বস্তুত আল্লাহ জালিমদের ভালভাবেই জানেন।” (সূরাতাওবা: ৪৭)

    ০৩. এ মৌলিক আকীদায় শৈথিল্য প্রদর্শন মুসলমানের আকীদাকে ভেঙে দেয় এবং তার থেকে ঈমান ছিনিয়ে নেয়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تُطِيعُوا الَّذِينَ كَفَرُوا يَرُدُّوكُمْ عَلٰى أَعْقَابِكُمْ فَتَنقَلِبُوا خَاسِرِينَ ﴿آل‌عمران: ١٤٩﴾

    হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি কাফেরদের আনুগত্য কর; তাহলে তারা তোমাদেরকে পেছনে ফিরিয়ে দেবে, তাতে তোমরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়বে।” (সূরাআলে-ইমরান: ১৪৯)

    ০৪.আমাদেরকে এ পার্থক্যটি জানতে হবে- ইসলামের পক্ষে প্রতিরোধকারী ইসলামের বন্ধু, মুসলমানদের উপর জুলুমকারী ইসলামের শত্রু। সেই ইতস্ততকারীকে চিনতে হবে; যারা শুধু নিজের স্বার্থটাই দেখে, উম্মাহর প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে হেয় করা এবং বাস্তব ময়দান থেকে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়াই যাদের কাজ। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    وَإِذَا رَأَيْتَهُمْ تُعْجِبُكَ أَجْسَامُهُمْ وَإِن يَقُولُوا تَسْمَعْ لِقَوْلِهِمْ كَأَنَّهُمْ خُشُبٌ مُّسَنَّدَةٌ يَحْسَبُونَ كُلَّ صَيْحَةٍ عَلَيْهِمْ هُمُ الْعَدُوُّ فَاحْذَرْهُمْ قَاتَلَهُمُ اللَّهُ أَنّٰى يُؤْفَكُونَ ﴿المنافقون: ٤﴾

    আপনি যখন তাদেরকে দেখেন, তখন তাদের দেহাবয়ব আপনার কাছে প্রীতিকর মনে হয়। তারা যখন কথা বলে, আপনি সাগ্রহে তাদের কথা শুনেন। যদিও তারা প্রাচীরে ঠেকানো কাঠ সদৃশ। প্রত্যেক শোরগোলকে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, অতএব তাদের সম্পর্কে সতর্ক হোন। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। বিভ্রান্ত হয়ে তারা কোথায় চলেছে?” (সূরামুনাফিকুন: )

    তিনি আরও ইরশাদ করেছেন-

    مُّذَبْذَبِينَ بَيْنَ ذَٰلِكَ لَا إِلَىٰ هَٰؤُلَاءِ وَلَا إِلَىٰ هَٰؤُلَاءِ وَمَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَلَن تَجِدَ لَهُ سَبِيلًا ﴿النساء: ١٤٣﴾

    এরা দোটানায় (ঈমান ও কুফরের মাঝখানে) দোদুল্যমান, এদিকেও নয় ওদিকেও নয়বস্তুত যাকে আল্লাহ গোমরাহ করে দেন, তুমি তার জন্য কোনো পথই পাবে না।” (সূরানিসা: ১৪৩)

    ০৫.আমরা কীভাবে মুসলিম উম্মাহর শত্রুদের সামনে ময়দান খালি করে দিয়ে মডারেটদের আহ্বানে সাড়া দিতে পারি?

    মুসলমানদের শত্রুদেরকে প্রতিরোধ করার অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টায় আমরা কীভাবে চুপ থাকতে পারি??

    এটি প্রত্যেক মানুষের অধিকার। যে অধিকার প্রত্যেকে পেয়ে থাকে। আমরা কীভাবে তাদেরকে বাধা দানে চুপ থাকতে পারি? অথচ উম্মাহ সত্যিকারের মুজাহিদীনকে যথাসাধ্য সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে।

    আমরা কীভাবে তাদের আহ্বান গ্রহণ করতে পারি? অথচ অপরাধীরা সব ধরনের পন্থায় আমাদের উপর জুলুমবাজি করে চলছে?? আমাদের ইজ্জত-সম্মানের কোনো তোয়াজ করা হচ্ছে না

    পূর্বে উল্লিখিত সম্ভাবনাসমূহ থাকা সত্ত্বেও ইসলামের বিজয়কামী কোনো মুসলমানই জিহাদ বন্ধ করা এবং উম্মাহকে তা থেকে বিরত রাখার আহ্বানে সাড়া দিতে পারে না। অথচ শত্রুরা প্রতিদিন আমাদের পবিত্র স্থানসমূহ, আমাদের জান-মাল-সম্পদে আঘাত হানছে।

    আল্লাহ ইরশাদ করেছেন-

    لَا يَرْقُبُونَ فِي مُؤْمِنٍ إِلًّا وَلَا ذِمَّةً وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُعْتَدُونَ ﴿التوبة: ١٠﴾

    তারা কোনো মুমিনের ক্ষেত্রে আত্মীয়তার মর্যাদা দেয় না, আর অঙ্গীকারেরও না। আর তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।” (সূরাতাওবা: ১০)

    হযরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-

    إِذَا تَبَايَعْتُمْ بِالْعِينَةِ وَأَخَذْتُمْ أَذْنَابَ الْبَقَرِ وَرَضِيتُمْ بِالزَّرْعِ وَتَرَكْتُمْ الْجِهَادَ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلًّا لَا يَنْزِعُهُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى دِينِكُمْ

    যখন তোমরা ঈনা নামক সুদি লেনদেনে জড়াবে, গরুর লেজ ধরে থাকবে, কৃষি কাজে সন্তুষ্ট হবে এবং জিহাদ পরিত্যাগ করবে। আল্লাহ তোমাদের উপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দেবেন, তা ওঠিয়ে নেবেন না, যতক্ষণ না তোমরা দ্বীনের পথে ফিরে আস।” (সুনানে আবু দাউদ: ৩৪৬২)

    ০৬.আমরা জিহাদ বন্ধের আহ্বানকে শুধু প্রত্যাখ্যানই করি না; বরং উম্মাহর সকল দল ও জামাআতকে জিহাদী কাফেলায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই। জিহাদের পথে তাদেরকে চলতে বলি। জিহাদ প্রতিষ্ঠায় প্রতিযোগিতা করতে বলি। এ পথে অটল থেকে শত্রুদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বলি। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَارَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ ﴿الصف: ١٠﴾ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿الصف: ١١﴾ يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ﴿الصف: ١٢﴾ وَأُخْرَىٰ تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ ﴿الصف: ١٣﴾

    হে মু’মিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান দেব, যা তোমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম; যদি তোমরা বুঝতে পার। তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং এমন জান্নাতে দাখিল করাবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটা মহাসাফল্য। এবং আরও একটি অনুগ্রহ দেবেন, যা তোমরা পছন্দ কর। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়। মু’মিনদেরকে এ সুসংবাদ দান করুন (সূরা সফ্ফ: ১০-১৩)

    ০৭. তেমনিভাবে আমরা ইসলামের বিজয় প্রত্যাশী যে কোনো মুসলমানের প্রতি আমাদের হাত প্রসারিত করে দেই। এমনকি উম্মাহকে এ কঠিন দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার জন্য এমন যে কোনো কাজে আমরা আছি; যে কাজ উম্মাহকে এ যন্ত্রণাদায়ক বাস্তবতা থেকে জাগ্রত করা, তাগুতের থেকে মুক্ত হওয়া, কাফেরদের সাথে শত্রুতা পোষণ, মু’মিনদের সাথে বন্ধুত্ব এবং জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহর উপর ভিত্তি করে হবে।

    এমন পরিকল্পনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী প্রত্যেক ব্যক্তি দান করবে এবং ব্যয় করবে মুসলিমদের ভূমিগুলো স্বাধীন করার জন্য, ইসলামী ভূখণ্ডে ইসলামী কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য, অতঃপর সারাবিশ্বে ইসলামের দাওয়াত প্রচারে।


    ০৮. আমরা মুসলিম উম্মাহকে আমাদের বুকের ওপরে চেপে বসা এসব বিপদকে হালকা মনে করা থেকে সতর্ক করছি। ইয়াহুদী ক্রুসেডার বাহিনী বায়তুল মুকাদ্দাস দখলে নিয়েছে। মক্কার হারাম থেকে নব্বই কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে মার্কিন সেনাবাহিনী। পুরো মুসলিম বিশ্বকে ঘেরাও করে রেখেছে তাদের ঘাঁটি, বাহিনী এবং রণতরীগুলোতাদের নিকট আত্মসমর্পণকারী শাসকদের কাঁধের উপর ভর করে চলছে তাদের আক্রমণ।

    আমরা অন্য কোনো গ্রহে গিয়ে বাস করতে চাই না। বিপদ যেন আমাদের থেকে হাজার বছর এগিয়ে। আমরা একদিন সকালে চোখ খুলে দেখি, যেসব ইসরাইলী ট্যাংক গাজা ও জেনিনে বাড়ি-ঘর আর নিষ্পাপ শিশুদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়, তা আমাদের বাড়িটাও ঘেরাও করেছে।

    ইরাক আগ্রাসন, ইয়েমেনে আবু আলী আল-হারেসীকে মার্কিন বোমায় হত্যা- সবই আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত যে, ফিলিস্তিনে মুজাহিদীন হত্যার ইসরাইলী এজেণ্ডায় আরব বিশ্বে ঢুকে পড়েছে। আমাদের প্রত্যেকেই আগামীকাল মার্কিন বোমারু বিমানের টার্গেট হবে। আমেরিকার অভিযোগ থেকে রেহাই পাবে এমন মুখলিস দাঈ ও ভদ্র লেখক পৃথিবীতে নেই। তাই আমাদেরকে আর সময় নষ্ট না করে দ্রুত জেগে ওঠতে হবে।

    মুসলিম যুবকরা যেন কারো অনুমতির অপেক্ষায় না থাকে। কারণ, আমেরিকা, ইসরাইল ও তাদের মুনাফিক-মুরতাদ সহযোগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ফরযে আইন হয়ে গেছে। যেমনটি পূর্বে আলোচিত হয়েছে। প্রত্যেক যুব সম্প্রদায়কে স্বীয় জাতির দায়িত্ব নিতে হবে। শত্রুকে প্রতিহত করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ভূখণ্ডে যোদ্ধাদের পায়ের তলায় আগুন জ্বালাতে হবে; তারা যেন অন্যদিকে না হাঁটে।


    ০৯. পরিশেষে মুসলিম জাতি বিশেষত, মুজাহিদ ভাইদেরকে সবর ও ইয়াকীনের উপর অটল থাকার আহ্বান করছি। দ্বীনি ব্যাপার বিশেষত, দ্বীনের শীর্ষ চূড়া জিহাদের ব্যাপারে সবর করবেন। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ﴿آل‌عمران: ٢٠٠﴾

    হে মু’মিনগণ ধৈর্য্যধারণ কর, মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর এবং সীমান্তরক্ষায় স্থিত হয়ে থাক। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক; যাতে তোমরা সফল হতে পার।” (সূরাআলে-ইমরান: ২০০)

    আল্লাহর ওয়াদার প্রতি নিশ্চিত বিশ্বাস করবেন। তিনি ইরশাদ করেছেন-


    كَتَبَ اللَّهُ لَأَغْلِبَنَّ أَنَا وَرُسُلِي إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ ﴿المجادلة: ٢١﴾

    আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, আমি এবং আমার রাসূলগণ অবশ্যই বিজয়ী হব। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।” (সূরামুজাদালা: ২১)

    উকবা ইবনে আমিরের সূত্রে ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-


    لَا تَزَالُ عِصَابَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى أَمْرِ اللَّهِ قَاهِرِينَ لِعَدُوِّهِمْ، لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ


    আমার উম্মতের একটি দল আল্লাহর পথে কিতাল করতে থাকবে। শত্রুদেরকে প্রকম্পিত করতে থাকবে। তাদের বিরোধীরা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। এমনকি কিয়ামত এসে যাবে আর তারা এ পথেই অটল থাকবে।” (সহীহমুসলিম, হাদীসনং-৫০৬৬)

    وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين

    وصلى الله علي سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم.




    আরও পড়ুন
    ১৬তম পর্ব

  • #2
    আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, আমি এবং আমার রাসূলগণ অবশ্যই বিজয়ী হব। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।” (সূরা মুজাদালা: ২১)
    মুমিনদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট

    Comment


    • #3
      আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের সকল পরিস্থিতিতে আল ওয়ালা ওয়াল বারা'আর উসুল মেনে চলার তাওফিক দিন, আমীন

      Comment

      Working...
      X