শাতিমের ব্যাপারে হানাফি মাযহাবের সিদ্ধান্ত
‘শাতেমে রাসূল (ﷺ) এর হত্যা নিয়ে একটি সংশয় নিরসন’ - নামে এক ভাই ফোরামে একটা সুন্দর পোস্ট দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা ভাইকে জাযায়ে খায়র দান করুন। তবে হানাফি মাযহাব বর্ণনা করতে গিয়ে একটু অসঙ্গতি হয়ে গেছে। সেটা তুলে ধরাই আমার উদ্দেশ্য।
হানাফি মাযহাব বর্ণনা করতে গিয়ে ভাই লিখেছেন,
ইমাম আবু হানিফা (রহিঃ) এর মাযহাব:
আল্লামা খাইরুদ্দীন রামালী (রহিঃ) ফতোয়ায়ে বাযযাযিয়ায় লিখেছেন:
“রাসূলের কটূক্তিকারীদের সর্বাবস্থায় হত্যা করা জরুরী। তার তওবা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। চাই সে গ্রেফতারের পরে তওবা করুক বা নিজ থেকেই তওবা করুক। কারণ এমন ব্যক্তির তওবার কোনো পরোয়াই করা যায় না এবং এই মাস’আলায় কোনো মুসলমানের মতভেদ কল্পনাও করা যায় না। এটিই ইমামে আযম আবু হানিফা (রহিঃ), আহলে কুফী ও ইমাম মালেক (রহিঃ) এর মাযহাব।” (তাম্বিহুল উলাতি ওয়াল হুক্কাম, পৃষ্ঠা ৩২৮)
আল্লামা শামী (রহিঃ) তাঁর ফতোয়ায়ে শামীতে উল্লেখ করেন:
“সকল উলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত যে, রাসূলের কটূক্তিকারীকে হত্যা করা ওয়াজিব। ইমাম মালেক (রহিঃ), ইমাম আবুল লাইস (রহিঃ), ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল (রহিঃ), ইমাম ইসহাক (রহিঃ), ইমাম শাফেঈ (রহিঃ), এমনকি হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রহিঃ) সহ সকলের মতেই রাসূলের কটূক্তিকারীর তওবা কবুল করা হবে না।”
ফিকহে হানাফির অন্যতম বড় ফকীহ ইমাম ইবনে হুমাম (রহিঃ) বলেন:
“রাসূল (ﷺ) এর প্রতি বিদ্বেষপোষণকারী ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে যায়। সুতরাং যে কটূক্তিকারী, সে তো আরো আগেই মুরতাদ হয়ে যাবে। আমাদের মতে, এমন ব্যক্তিকে হদ হিসেবে হত্যা করা জরুরী। তওবা গ্রহণ করে তার হত্যা মাফ করা যাবে না।” (ফাতহুল কাদীর, চতুর্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ৪০৭)
আল্লামা খাইরুদ্দীন রামালী (রহিঃ) ফতোয়ায়ে বাযযাযিয়ায় লিখেছেন:
“রাসূলের কটূক্তিকারীদের সর্বাবস্থায় হত্যা করা জরুরী। তার তওবা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। চাই সে গ্রেফতারের পরে তওবা করুক বা নিজ থেকেই তওবা করুক। কারণ এমন ব্যক্তির তওবার কোনো পরোয়াই করা যায় না এবং এই মাস’আলায় কোনো মুসলমানের মতভেদ কল্পনাও করা যায় না। এটিই ইমামে আযম আবু হানিফা (রহিঃ), আহলে কুফী ও ইমাম মালেক (রহিঃ) এর মাযহাব।” (তাম্বিহুল উলাতি ওয়াল হুক্কাম, পৃষ্ঠা ৩২৮)
আল্লামা শামী (রহিঃ) তাঁর ফতোয়ায়ে শামীতে উল্লেখ করেন:
“সকল উলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত যে, রাসূলের কটূক্তিকারীকে হত্যা করা ওয়াজিব। ইমাম মালেক (রহিঃ), ইমাম আবুল লাইস (রহিঃ), ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল (রহিঃ), ইমাম ইসহাক (রহিঃ), ইমাম শাফেঈ (রহিঃ), এমনকি হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রহিঃ) সহ সকলের মতেই রাসূলের কটূক্তিকারীর তওবা কবুল করা হবে না।”
ফিকহে হানাফির অন্যতম বড় ফকীহ ইমাম ইবনে হুমাম (রহিঃ) বলেন:
“রাসূল (ﷺ) এর প্রতি বিদ্বেষপোষণকারী ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে যায়। সুতরাং যে কটূক্তিকারী, সে তো আরো আগেই মুরতাদ হয়ে যাবে। আমাদের মতে, এমন ব্যক্তিকে হদ হিসেবে হত্যা করা জরুরী। তওবা গ্রহণ করে তার হত্যা মাফ করা যাবে না।” (ফাতহুল কাদীর, চতুর্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ৪০৭)
***
শাতিমের ব্যাপারে সাধারণত সবাই এটাই জানে যে, তার তাওবা কবুল হবে না। বিশেষত ইবনে তাইমিয়া রহ. ‘আসসারিমুল মাসলুল’ কিতাবে এ মতকেই তারজিহ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত দীর্ঘ ও দালিলিক আলোচনা করেছেন। মুজাহিদ ভাইরাও সাধারণত এটাই জানেন। হানাফি মাযহাবের কোনো কোনো ইমাম এটাই বলেছেন।
উপরোক্ত আর্টিক্যালে হানাফি মাযহাব হিসেবে ফতোয়ায়ে বাযযাযিয়া ও ইবনুল হুমাম রহ. এর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ দু’জন এটাই মত দিয়েছেন। তবে বাস্তব কথা হলো, ভাই হানাফি মাযহাব বুঝতে এবং বর্ণনা করতে উভয়টাতেই ভুল করেছেন।
বুঝার ভুল
আসলে হানাফি ও শাফিয়ি মাযহাবের রায় হলো, মুসলিম শাতিমের তাওবা কবুল হবে। মালিকি ও হাম্বলী মাযহাব হলো, কবুল হবে না। এ ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ সামনে কথা বলছি।
বর্ণনায় ভুল
ভাই এখানে হানাফি মাযহাব বর্ণনা করতে ফতোয়া বাযযাযিয়া, ইবনুল হুমাম রহ. ও আল্লামা শামি রহ. এর বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। এখানে ভাইয়ের কয়েকটা ভুল হয়েছে-
ক. মাযহাবের কয়েকজনের বক্তব্য মানেই এটা নয় যে, তাদের মতটাই মাযহাবের মুফতা বিহি কওল। আসলে বাযযাযি রহ. ও ইবনুল হুমাম রহ. যদিও মত দিয়েছেন, শাতিমের তাওবা কবুল হবে না, তবে এটা হানাফি মাযহাব নয়। হানাফি মাযহাব হলো, তাওবা কবুল হবে।
খ. ভাই বলেছেন, ‘আল্লামা খাইরুদ্দীন রামালী (রহিঃ) ফতোয়ায়ে বাযযাযিয়ায় লিখেছেন’। আসলে ফাতাওয়া বাযযাযিয়ার প্রণেতা ইমাম ‘মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ বিন শিহাব আলকারদারি আলবাযযাযি (৮২৭ হি.); খাইরুদ্দীন রামালী নয়।
গ. আল্লামা শামির বক্তব্য এখানে উল্লেখ করা সম্পূর্ণ বেমানান। কারণ, শামি নিজে রদ্দুল মুহতার এবং তার রিসালা ‘তাম্বিহুল উলাত’-এ বাযযাযি ও ইবনুল হুমামের বক্তব্য খণ্ডন করে দেখিয়েছেন, এটা হানাফি মাযহাবের খেলাফ। হানাফি মাযহাবের রায় হলো, তাওবা কবুল হবে।
যখন শামি নিজে দুই কিতাবে এ মতটা খণ্ডন করেছেন, তখন এ মতের পক্ষে শামির বক্তব্য উল্লেখ করা বেমানান।
আসলে যতটুকু বুঝতে পারছি, ভাই এখানে ‘তাওবা কবুল হবে না’ এ মতের পক্ষে যাদের বক্তব্য পেয়েছেন উল্লেখ করে দিয়েছেন। এটা সমস্যার কিছু ছিল না। কিন্তু মাযহাবের কয়েকজনের মতকে মাযহাব বলাটা ঠিক হয়নি। তাদের নিজেদের রায় হিসেবে উল্লেখ করাই সমীচিন।
তাওবা কবুল হওয়া না হওয়া দ্বারা কি অর্থ?
শাতিম যদি তাওবা করে মুসলমান হয় তাহলে আখেরাতে সে অবশ্যই মাফ পাবে। তবে দুনিয়াতে মাফ পাবে কি’না সেটাই হলো কথা। হানাফি ও শাফিয়ি মাযহাবে মাফ পেয়ে যাবে। হত্যা করা হবে না। তাওবা কবুল হওয়া দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য। আর মালিকি ও হাম্বলী মাযহাব মতে আখেরাতে মাফ পেলেও দুনিয়াতে মাফ পাবে না। হত্যা করে দেয়া হবে। তাওবা কবুল হবে না দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য। যেমন, কেউ যিনা করে তাওবা করলে আখেরাতে মাফ পাবে, কিন্তু দুনিয়াতে শাস্তি মাফ হবে না। দোররা মারা হবে বা বিবাহিত হলে রজম করে হত্যা করা হবে। তাওবা কবুল না হওয়া দ্বারা দুনিয়াবি শাস্তি মাফ না হওয়া উদ্দেশ্য। নতুবা আখেরাতে যে মাফ পাবে সে ব্যাপারে কারও কোনো দ্বিমত নেই।
তাওবার পরও কোনো কোনো শাতিমকে সিয়াসতরূপে হত্যা করা যাবে
উল্লেখ্য শাতিম তাওবা করলে যে হত্যা করে হবে না বলা হয়েছে এর অর্থ- তার হত্যা তখন হদ থাকবে না। তবে হত্যার উপযোগী মনে হলে সিয়াসতরূপে হত্যা করা যাবে।
কোনো মুসলিম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি করলে সে মুরতাদ। যদি সে তাওবা না করে তাহলে তাকে কতল করা ফরয। এটা হদ। এটা মাফ হওয়ার কোনো সূরত নেই।
তাওবা করলে হানাফি মাযহাব মতে আর হদ থাকবে না। তবে যদি সে ভয়ানক প্রকৃতির খবিস শাতিম হয়, বার বার কটুক্তি করে আর তাওবা করে, তাহলে তাওবা করার পরও হানাফি মাযহাব মতে তাকে হত্যা করা যাবে। তবে তা হদ হিসেবে নয়, তা’যির ও সিয়াসত হিসেবে। অর্থাৎ তাকে হত্যা করতে হবেই- এমন নয়। তবে ভয়ানক খবিস হলে এবং হত্যা করা মুনাসিব মনে হলে মুসলমান হলেও হত্যা করা যাবে।
অতএব, তাওবা করলে কোনো অবস্থায়ই হত্যা করা যাবে না, তা নয়। যদি সে মুফসিদ ফিল আরদ-এর পর্যায়ে চলে যায় তাহলে অন্য দশটা মুফসিদের মতো তাকেও হত্যা করা যাবে। হাঁ, যদি আসলেই তাওবা করে নেয় এবং ভাল মানুষ হয়ে যায় তাহলে তাওবার পর হত্যা করা যাবে না। মালিকি ও হাম্বলী মাযহাব মতে তখনও হত্যা করতে হবে। তাদের মতে তাওবার পরও হত্যাটা হদ হিসেবে থেকে যায়; যেমনটা যিনার শাস্তির বেলায় বিধান।
হদ দ্বারা কি উদ্দেশ্য?
উল্লেখ্য, হদ দ্বারা এখানে এটাই উদ্দেশ্য যে, তাওবা করলেও কতল মাফ হবে না, যেমন যিনার শাস্তি মাফ হয় না। এটা উদ্দেশ্য নয় যে, ইমাম ছাড়া কেউ হত্যা করতে পারবে না, যেমনটা কতক লোক ফিতনা ছাড়ায়। নতুবা যেখানে শাতিমের শাস্তি আলোচিত হয়েছে, সেখানে আশেপাশেই কথাটা আছে যে, জনগণও তাকে হত্যা করতে পারবে। কিন্তু যাদের চোখ অন্ধ তারা ভিন্নরূপ দেখে। ওয়াল্লাহু আ’লাম।
সারকথা
মালিকি ও হাম্বলী মাযহাব মতে শাতিমের হত্যা তাওবা করার আগে ও পরে সর্বাবস্থায় হদ। বিধায় শাতিম তাওবা করলেও মাফ পাবে না, সর্বাবস্থায় হত্যা করতে হবে।
আর হানাফি ও শাফিয়ি মাযহাব মতে তাওবার আগ পর্যন্ত হদ। তাওবার পর হদ নয়। অর্থাৎ তাওবা করলে মাফ পেয়ে যাবে। হত্যা করা আবশ্যক নয়। তবে কোনো শাতিম ভয়ানক খবিস হলে এবং তাওবা করাটাকে একটা পলিসিরূপে গ্রহণ করেছে বুঝা গেলে, তাওবা করার পরও হানাফি মাযহাব মতে হত্যা করা যাবে। এ হত্যা হদ হিসেবে নয়, মুফসিদ ফিল আরদ হিসেবে। তা’যির ও সিয়াসতরূপে।
বি.দ্র.
উপরোক্ত বিধান মুসলিম শাতিমের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ যে লোক মুসলিম ছিল, পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি করে মুরতাদ হয়ে গেছে। যদি কোনো যিম্মি বা হারবি কাফের রাসূলকে নিয়ে কটুক্তি করে, তাহলে তার বিধান কিছুটা অন্য রকম। সেদিকে যাচ্ছি না। তবে এতটুকু কথা সর্বসম্মত যে, তাওবা করে মুসলমান না হলে হত্যা করে দেয়া যাবে।
***
البحر الرائق شرح كنز الدقائق ومنحة الخالق وتكملة الطوري (5/ 135-136)
وأفاد بإطلاقه أنه لا فرق بين ردة وردة من أنه إذا أسلم ويستثنى منه مسائل؛ الأولى: الردة بسبه - صلى الله عليه وسلم - قال في فتح القدير كل من أبغض رسول الله - صلى الله عليه وسلم - بقلبه كان مرتدا فالساب بطريق أولى ثم يقتل حدا عندنا فلا تقبل توبته في إسقاطه القتل قالوا هذا مذهب أهل الكوفة ومالك ونقل عن أبي بكر الصديق - رضي الله عنه - ولا فرق بين أن يجيء تائبا من نفسه أو شهد عليه بذلك بخلاف غيره من المكفرات ...
وعلله البزازي بأنه حق تعلق به حق العبد فلا يسقط بالتوبة كسائر حقوق الآدميين وكحد القذف لا يزول بالتوبة وصرح بأن سب واحد من الأنبياء كذلك وقوله في فتح القدير في إسقاط القتل يفيد أن توبته مقبولة عند الله تعالى وهو مصرح به. اهـ
تعقبه ابن عابدين، فقال تحته في منحة الخالق (5\135-136): (قوله قال في فتح القدير كل من أبغض رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم إلخ) قال تلميذ المؤلف في منح الغفار بعد نقله ذلك وجعله إياه متنا ما نصه: وبمثله صرح الإمام البزازي وبهذا جزم شيخنا في فوائده لكن سمعت من مولانا شيخ الإسلام أمين الدين بن عبد العال مفتي الحنفية بالديار المصرية أن صاحب الفتح تبع البزازي في ذلك وأن البزازي تبع صاحب الصارم المسلول فإنه عزا في البزازية ما نقله من ذلك إليه ولم يعزه إلى أحد من علماء الحنفية اهـ.
وقد نقل ابن أفلاطون زاده في كتابه المسمى بمعين الحكام أنها ردة حيث قال معزيا إلى شرح الطحاوي ما صورته من سب النبي - عليه الصلاة والسلام - أو بغضه كان ذلك منه ردة وحكمه حكم المرتدين اهـ.
وفي النتف من سب رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم فإنه مرتد وحكمه حكم المرتد ويفعل به ما يفعل بالمرتد اهـ.
فقوله ويفعل به ما يفعل بالمرتد ظاهر في قبول توبته كما لا يخفى. وممن نقل أنها ردة عن أبي حنيفة القاضي عياض في كتابه المسمى بالشفاء ونص عبارته: قال أبو بكر بن المنذر - رحمه الله تعالى - أجمع عوام أهل العلم على أن من سب النبي - صلى الله تعالى عليه وسلم - يقتل وممن قال ذلك مالك بن أنس والليث وأحمد وإسحاق وهو مذهب الشافعي - رحمه الله -.
قال القاضي أبو الفضل وهو مقتضى قول أبي بكر الصديق - رضي الله تعالى عنه - ولا تقبل توبته عند هؤلاء وبمثله قال أبو حنيفة وأصحابه والثوري وأهل الكوفة والأوزاعي في المسلم، لكنهم قالوا هي ردة وروى مثله الوليد بن مسلم عن مالك - رحمه الله - وحكى الطبري مثله عن أبي حنيفة وأصحابه فيمن ينقصه - صلى الله تعالى عليه وسلم - أو برئ منه أو كذبه اهـ. إلى هنا كلام صاحب المنح.
لكن قال بعدما يأتي عن الجوهرة في ساب الشيخين أقول: يقوى القول بعدم قبول توبة من سب صاحب الشرع الشريف - صلى الله تعالى عليه وسلم - وهو الذي ينبغي أن يعول عليه في الإفتاء والقضاء رعاية لحضرة صاحب الرسالة المخصوص بكمال الفضل والبسالة اهـ.
وفيه كلام تعرفه وقد حررت المسألة في تنقيح الحامدية فراجعها. ثم جمعت في ذلك كتابا سميته (تنبيه الولاة والحكام على أحكام شاتم خير الأنام أو أحد أصحابه الكرام عليه وعليهم الصلاة والسلام)، وبينت فيه أن قول الشفاء: لكنهم قالوا هي ردة إلخ صريح في قبول توبته لأنه استدراك على قوله قبله: "يقتل ولا تقبل توبته عند هؤلاء" فعلم أن قوله: "وبمثله قال أبو حنيفة" أي قال أنه يقتل لكن قالوا أنه ردة، فحاصله أنه يقتل إن لم يتب كما هو حكم الردة وإلا لم يكن للاستدراك المذكور فائدة.
وممن صرح بقبول توبته عندنا الإمام السبكي في (السيف المسلول) وقال إنه لم يجد للحنفية إلا قبول التوبة. وسبقه إلى ذلك أيضا شيخ الإسلام ابن أمية الحنبلي في كتابه (الصارم المسلول) فصرح فيه في عدة مواضع بقبول التوبة عند الحنفية وأنه لا يقتل. اهـ
شرح السير الكبير (ص: 1938)
3881 -. قال - رحمه الله تعالى -: المرتد يقتل إن لم يسلم حرا كان أو عبدا، لقوله - صلى الله عليه وآله وسلم -: «من بدل دينه فاقتلوه» .
وهو يعم الأحرار والعبيد، ولمولى العبد أن يقتله بنفسه إن شاء، فعل ذلك ابن عمر - رضي الله تعالى عنهما - بعبد له تنصر، ولأنه بالردة صار كالحربي في حكم القتل، ولكل مسلم قتل الحربي الذي لا أمان له، إلا أن الأفضل له أن يرفعه إلى الإمام ليكون هو الذي يقتله؛ لأن فيه معنى الحد. واستيفاء الحدود إلى الإمام. اهـ
من رسالة (تنبيه الولاة والحكام على أحكام شاتم خير الأنام) لابن عابدين رحمه الله تعالى في ضمن (رسائل ابن عابدين، ج1)
قال فى الشاتم المسلم:
نعم لو قيل إذ تكرر السب من هذا الشقي الخبيث بحيث أنه كلما أخذ تاب يقتل، وكذا لو ظهر أن ذلك معتاده وتجاهر به كان ذلك قولا وجيها كما ذكروا مثله في الذمي ويكون حينئذ بمنزلة الزنديق. وأما بدون ذلك فلا يجوز الإفتاء بقتله بعد إسلامه حدا أو تعزيرا. اهـ ص335
الزنديق الذي يقتل ولا تقبل توبته هو المعروف بالزندقة الداعي إليها، وهذا ليس كذلك وإنما كان معروفا بالاسلام ولا يدعو احدا إلى أن يفعل كفعله الشنيع بل الغالب أنه إنما تصدر منه كلمة السب عند شدة غيظة ونكايته ممن خاصمه في أمر ونحو ذلك. نعم لو كان معروفا بهذا الفعل الفظيع داعيا إلى اعتقاده الشنيع فلا شك حينئذ ولا ارتياب في زندقته وقتله وإن تاب. اهـ ص341
أما إذا علم منه حسن التوبة والإيمان وأن ما صدر منه إنما كان من هفوات اللسان فالأولى تعزيره بما دون القتل جريا على مذهبنا الثابت بالنقل. بل ادعى الإمام السبكي أن عدم قتله حينئذ محل وفاق حيث قال: وأرى أن مالكا وغيره من أئمة الدين لا يقولون بذلك أي عدم قبول التوبة إلا في محل التهمة فهو محمل قول مالك ومن وافقه اهـ. ص348
قال فى الشاتم الكافر:
الساب إذا كان كافرا لا يقتل عندنا إلا إذا رآه الإمام سياسة. اهـ ص320
قال-بعد ما ذكر قصة قتل عصماء اليهودية-
لا يقال كيف قتلت مع أن النساء لا يقتلن للكفر عندنا لأنا نقول إنما قتلت لسعيها في الأرض بالفساد لأنها كانت تهجو النبي صلى الله تعالى عليه وسلم وتؤذيه وتحرض الكفار عليه وقد صرحوا بان الساحر يقتل ولو امرأة. ولا شك أن ضرر هذه اشد من الساحر والزنديق وقاطع الطريق. فمن اعلن بشتمه صلى الله تعالى عليه وسلم مثل هذه يقتل. اهـ ص355
فإن قلت: ما الفرق بينه وبين المسلم حيث جزمت بأن مذهب أبي حنيفة وأصحابه أن الساب المسلم إذا تاب وأسلم لا يقتل؟ قلت: المسلم ظاهر حاله أن السب إنما صدر منه عن غيظ وحمق وسبق لسان لا عن إعتقاد جازم، فإذا تاب وأناب وأسلم قبلنا إسلامه. بخلاف الكافر فإن ظاهر حاله يدل على إعتقاد ما يقول وأنه أراد الطعن في الدين، ولذلك قلنا فيما مر أن المسلم أيضا إذا تكرر منه ذلك وصار معروفا بهذا الإعتقاد داعيا إليه يقتل ولا تقبل توبته وإسلامه كالزنديق فلا فرق حينئذ بين المسلم والذمي. اهـ 355
قال –بعد ما ذكر نقولا في قتل الزنديق-
والمقصود من نقله بيان عدم قبول توبة من وقفنا على خبث باطنه وخشية ضرره وإضلاله فلا نقبل اسلامه وتوبته وإن كان يظهر الاسلام، فكيف بمن كان كافرا خبيث الاعتقاد وتجاهر بالشتم والالحاد. ثم لما رأى الحسام بادر إلى الاسلام فلا ينبغي لمسلم التوقف في قتله وإن تاب. لكن بشرط تكرر ذلك منه وتجاهره به كما علمته مما نقلنا عن الحافظ ابن تيمية عن أكثر الحنفية ومما ننقلناه عن المفتي أبي السعود.
فإن قلت: قال ابن المؤيد في فتاواه: كل من سب النبي صلى الله تعالى عليه وسلم أو أبغضه كان مرتدا وأما ذوو العهود من الكفار إذا فعلوا ذلك لم يخرجوا من عهودهم وأمروا أن لايعودوا، فإن عادوا عزروا ولم يقتلوا كذا في شرح الطحاوي اهـ. فهذا مخالف لما مر من القتل سياسة. قلت: قد يجاب بحمل هذا على ما إذا عثر عليهم وهم يكتمونه ولم يتجاهروا به أو يراد بقوله ولم يقتلوا أي حدا لزوما بل سياسة مفوضة إلى رأي الإمام يفعلها حيث رأى بها المصلحة. اهـ ص356
Comment