Announcement

Collapse
No announcement yet.

০৩ শাতিমকে হত্যা করবে কে?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ০৩ শাতিমকে হত্যা করবে কে?

    শাতিমকে হত্যা করবে কে?

    শাতিমকে হত্যা করবে কে- এটা অনেকের প্রশ্ন। এর সহজ উত্তর ছিল-

    রাসূলের যামানায় শাতিমকে হত্যা করতো কে?
    সবাই জানেন, সাহাবায়ে কেরাম উপস্থিত মজলিসেই শাতিমকে হত্যা করে দিতেন। রাসূলের কাছ থেকে অনুমতি নেয়ারও প্রয়োজন বোধ করতেন না। বুঝা গেল, শাতিমকে যে কেউ হত্যা করতে পারবে।


    শাতিম হত্যায় কি সরকারের অনুমতি লাগবে?
    কিন্তু সরকারপন্থী কিছু আলেম ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে যে, শাতিম হত্যা হদের অন্তর্ভুক্ত। হদ কায়েমের দায়িত্ব ইমামের। তাই ইমামের অনুমতি ছাড়া সাধারণ জনগণ শাতিমকে হত্যা করতে পারবে না। এ বিষয়টি পুঁজি করে তারা সংশয় ছড়ায়, সরকারের অনুমতি ছাড়া জনগণ শাতিম হত্যা করতে পারবে না।


    সরকার যদি হত্যা না করে?
    যদি আমরা তর্কের খাতিরে মেনেও নেই যে, শাতিম হত্যা সরকারের দায়িত্ব, তখন প্রশ্ন আসবে, সরকার না করলে কে করবে?

    অধিকন্তু সরকার যদি নিজেই শাতিমদের পাহাড়া দেয় এবং নতুন নতুন শাতিম জন্ম দেয়ার পথ করে দেয়, তাহলে কি বিধান?

    এ ধরনের প্রশ্নগুলো তারা এড়িয়ে চলে।

    যেমন নামায না পড়লে মুরতাদ। কিন্তু মন্ত্রী এমপিরা যে নামায পড়ে না, তারা মুরতাদ কি’না- এ প্রশ্নটা তারা এড়িয়ে চলে।


    শাতিম হত্যা কি হদের অন্তর্ভুক্ত?
    স্বাভাবিক বলা হয় মালিকি ও হাম্বলি মাযহাব মতে শাতিম হত্যা হদের অন্তর্ভুক্ত। এ কথাটি পুঁজি করেই সরকারি আলেমরা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে যে, জনগণ শাতিম হত্যা করতে পারবে না।

    আসলে এরা হাকিকতটা উল্টে ধরেছে। ফুকাহায়ে কেরাম যে মাকসাদে হদ বলেছেন, তারা সে মাকসাদের ঠিক বিপরীত বানিয়ে ফেলেছে। শব্দের মারপ্যাঁচে জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে।


    শাতিম হত্যা সব মাযহাব মতেই হদ
    স্বাভাবিক বলা হয় মালিকি ও হাম্বলি মাযহাব মতে শাতিম হত্যা হদ। হানাফি ও শাফিয়ি মাযহাব মতে হদ নয়। তবে বাস্তব হলো, সব মাযহাব মতেই শাতিম হত্যা হদ। তবে একটু বেশকম আছে। সামনে এর আলোচনা আসছে ইনশাআল্লাহ।


    হানাফি মাযহাবে মুরতাদ ও শাতিমের বিধান একই
    উল্লেখ্য, হানাফি মাযহাবে মুরতাদ ও শাতিমের বিধান একই। এ হিসেবে সামনে মুরতাদের যে আলোচনা আসছে তা-ই শাতিমের বেলায় প্রযোজ্য।


    রিদ্দাহর শাস্তি এবং হানাফি মাযহাবে দ্বৈত বক্তব্যের সমন্বয়
    হানাফি মাযহাবে হদ ছয় প্রকার বলা হয়েছে।

    ইবনে আবেদীন শামী রহ. (১২৫২হি.) ইবনে কামাল পাশা রহ. (৯৪০হি.) –এর সূত্রে বলেন,
    وهي ستة أنواع: حد الزنا، وحد شرب الخمر خاصة، وحد السكر من غيرها والكمية متحدة فيهما، وحد القذف، وحد السرقة، وحد قطع الطريق ابن كمال. الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (4/ 3)
    হদ ছয় প্রকার: ১. যিনার হদ। ২. মদপানের হদ। ৩. মদ ব্যতীত অন্য কোন মাদক সেবনে মাতাল হওয়ার হদ। তবে শাস্তির পরিমাণ উভয়টাতে একই। ৪. কজফ তথা যিনার অপবাদ লাগানোর হদ। ৫. চুরির হদ। ৬. রাহাজানির হদ। -রদ্দুল মুহতার: ৪/৩

    এর মধ্যে মুরতাদ বা শাতিমে রাসূলের শাস্তির উল্লেখ নেই।

    অপরদিকে ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
    قتل المرتد على ردته حد. المبسوط للسرخسي (10/ 118)
    রিদ্দাহয় বহাল থাকাবস্থায় মুরতাদকে হত্যা করা হদ। -মাবসুত: ১০/১১৮


    একই কথা বলেছেন শরহুস সিয়ারেও (পৃষ্ঠা: ১৭০৪)।

    قتل المرتد مستحق حدا. شرح السير الكبير (ص: 1704)

    এ দ্বৈততার সমন্বয় হচ্ছে,
    তাওবা করলে যেহেতু মাফ হয়ে যায়, এ দিকটি বিবেচনা করে হদ বলা হয়নি। আবার তাওবার আগ পর্যন্ত যেহেতু মাফের সুযোগ নেই, এ দিকটি বিবেচনা করে হদ বলা হয়েছে। উভয়টিই ঠিক আছে।

    রিদ্দাহর শাস্তি হদ কি হদ নয় এ ব্যাপারে কিছু আলোচনার পর ইবনে আবিদিন রহ. বলেন,
    وبهذا يظهر لك أن قتل المرتد حد ... إنما يسمى حدا ما دام باقيا على ردته. –تنبيه الولاة والحكام: 31، 33
    এ আলোচনা থেকে আপনি বুঝতে পারছেন, মুরতাদ হত্যা হদ। ... তবে হদ বলা হবে যতক্ষণ সে রিদ্দাহয় বহাল থাকবে। -তাম্বিহুল উলাতি ওয়াল হুক্কাম: ৩১, ৩৩

    অর্থাৎ তাওবা করে মুসলিম হয়ে গেলে আর হদ নয়। তখন রিদ্দাহর কারণে হত্যা করা যাবে না। হাঁ, মুফসিদ ফিল আরদ হলে সিয়াসত ও তা’যিরূপে হত্যা করা যাবে, যেমনটা আগে আলোচনা গেছে।


    মুরতাদ ও শাতিম হত্যা হদ- এর কি উদ্দেশ্য?
    দেখলাম, হানাফি মাযহাবেও মুরতাদ ও শাতিমের হত্যা হদের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু এর দ্বারা উদ্দেশ্য কি?
    এটি বুঝতে হলে আপনাকে বুঝতে হবে, হদ কাকে বলে?

    হদ হচ্ছে শরীয়ত নির্ধারিত শাস্তি, যা কেউ মাফ করতে পারে না। যেমন চোরের শাস্তি হাত কাটা। কাযির কাছে চুরি প্রমাণ হওয়ার পর, যার মাল চুরি হয়েছে সে হাত কাটা মাফ করতে পারবে না। মাফ করলেও মাফ হবে না। কাটতেই হবে।

    পক্ষান্তরে কেউ যদি কারো পিতাকে হত্যা করে ফেলে, তাহলে হত্যার বদলে হত্যার বিধান। নিহতের সন্তানেরা ইচ্ছা করলে কিসাস মাফ করে দিয়াত নিতে পারে। আবার ইচ্ছে করলে সম্পূর্ণই মাফ করে দিতে পারে। কারণ, কিসাস হদ নয়। এটা নিহতের অলির হক। ইচ্ছে করলে মাফ করতে পারে। কিন্তু হদ স্বয়ং আল্লাহ তাআলার হক। এটা কেউ মাফ করতে পারবে না।

    শাতিম হত্যা হদের অন্তর্ভুক্ত এ হিসেবেই। অর্থাৎ কেউ মাফ করতে পারবে না।

    তবে বেশকম হলো, মালিকি ও হাম্বলি মাযহাব মতে তাওবার আগেও হদ, পরেও হদ। কাজেই শাতিম তাওবা করলেও হত্যা মাফ হবে না।

    আর হানাফি ও শাফিয়ি মাযহাব মতে তাওবার আগে হদ, পরে হদ নয়। অর্থাৎ তাওবার আগে কেউ মাফ করতে পারবে না। তাওবা না করলে অবশ্যই হত্যা করতে হবে। তাওবা করে ফেললে আর হদ থাকবে না। তখন যদি মুফসিদ ফিল আরদ হিসেবে হত্যার উপযোগী হয়, হত্যা করা হবে। অন্যথায় অন্য শাস্তি দেয়া হবে। হত্যা করা হবে না।


    সংশয়: হদ কায়েম করতে দারুল ইসলাম লাগে, ইমাম লাগে
    এখন তাহলে প্রশ্ন হবে, মুরতাদ ও শাতিমের শাস্তি যদি হদ হয়, তাহলে হদ কায়েমের দায়িত্ব তো ইমামের। আমাদের তো ইমাম নেই। তাহলে মুরতাদ ও শাতিমকে হত্যা করা হবে কি হিসেবে?
    আরও একটা প্রশ্ন আসবে যে, হদ কায়েম করতে তো হানাফি মাযহাব মতে দারুল ইসলাম লাগে। আমরা তো দারুল হারবে আছি।
    এ প্রশ্নের উত্তর সামনের পয়েন্টে-

    মুরতাদ ও শাতিম হারবি কাফের, বিধায় যে কেউ হত্যা করতে পারবে
    হাঁ, হদ কায়েম করতে দারুল ইসলাম লাগে, ইমাম লাগে- সব ঠিক। তবে শাতিম ও মুরতাদের বিষয়টা ব্যতিক্রম। শাতিমই হোক বা অন্য যেকোনো মুরতাদই হোক, সে কাফের।

    এখন প্রশ্ন, সে চুক্তিবদ্ধ কাফের না’কি হারবি কাফের?

    স্পষ্ট যে, হারবি কাফের। কারণ, চুক্তিবদ্ধ কাফের তিন প্রকার:

    এক. যিম্মি: যে জিযিয়ার শর্তে চুক্তিবদ্ধ হয়ে দারুল ইসলামের স্থায়ী বাসিন্দায় পরিণত হয়েছে।
    দুই. মুআহিদ: কাফের রাষ্ট্রের কাফের বাসিন্দা, যাদের সাথে মুসলিমদের সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে।
    তিন. মুস্তামিন: কাফের রাষ্ট্রের কাফের বাসিন্দা, যে সাময়িক আমান নিয়ে দারুল ইসলামে ব্যবসা বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে এসেছে।


    মুরতাদ এ তিন শ্রেণীর কোনো শ্রেণীরই নয়। তার সাথে মুসলিমদের কোনো চুক্তি নেই। কাজেই সে হারবি কাফের। বরং আরও নিকৃষ্ট কাফের। আর হারবি কাফেরকে যে কেউ হত্যা করতে পারে। দারুল ইসলাম, দারুল হারব যেখানেই পাওয়া যাবে সে হালালুদদাম। এ হিসেবেই শাতিম ও মুরতাদকে যে কেউ হত্যা করতে পারবে।


    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    {فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ} [التوبة: 5]
    মুশরিকদের তোমরা যেখানেই পাবে হত্যা করবে। - তাওবা: ৫

    ইমাম সারাখসী রহ. বলেন,
    لأنه بالردة صار كالحربي في حكم القتل، ولكل مسلم قتل الحربي الذي لا أمان له. شرح السير الكبير (ص: 1938)
    (মুনীব তার মুরতাদ গোলামকে হত্যা করতে পারবে) কারণ, মুরতাদ হওয়ার দ্বারা হত্যার বিধানের ক্ষেত্রে সে হারবি কাফেরের মতো হয়ে গেছে। আর মুসলিমদের সাথে যে হারবি কাফেরের আমানের চুক্তি নেই, তাকে প্রত্যেক মুসলিমই হত্যা করতে পারবে। -শরহুস সিয়ারিল কাবির: ১৯৩৮


    মুরতাদ ও মুসলিম শাতিমকে আমান দেয়ার পরও হত্যা করা হবে
    আমরা দেখেছি, মুরতাদ ও মুসলিম শাতিমের হত্যা হদের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ মুসলমান না হলে তাকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে। কেউ মাফ করতে পারবে না। এ হিসেবে কোনো মুরতাদ যদি নাগালের বাইরে চলে যায় এবং মুসলমানরা তার সাথে কোনো নিরাপত্তা চুক্তি করে, তারপর সে নিরাপত্তা নিয়ে মুসলিমদের কাছে আসে, তাহলে তখন আর তাকে ছাড়া হবে না। কারণ, তাকে হত্যা করা আবশ্যক। আর যাকে হত্যা করা আবশ্যক, আমানের মাধ্যমে তার জীবনরক্ষা হবে না।

    ইমাম সারাখসী রহ. বলেন,
    لو طلب قوم من المرتدين أن يؤمنوهم على أن يكونوا ذمة يؤدون الخراج فلا ينبغي أن يؤمنوهم على ذلك لأن قتل المرتد مستحق حدا، ولا يجوز ترك إقامة الحد ولا تأخيره بمال ... فإن أعطوهم ذلك حتى خرجوا إلينا عرض عليهم الإسلام فإن أبوا قتلوا، ولا يجوز ردهم إلى مأمنهم بحال؛ لأن القتل مستحق عينا على المرتد إن لم يسلم، قال – صلى الله عليه وآله وسلم -: «من بدل دينه فاقتلوه» . شرح السير الكبير (ص: 2016-2017)
    মুরতাদদের কোনো দল যদি জিযিয়া আদায়ের শর্তে আমানের চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চায়, তাহলে মুসলিমদের উচিৎ নয় এ শর্তে তাদের আমান দেয়া। কারণ, মুরতাদ হত্যা হদ। মালের বিনিময়ে হদ ছেড়ে দেয়া বা কায়েমে দেরি করা জায়েয নয়। ... তবে যদি আমান দিয়ে দেয় এবং এর ভিত্তিতে তারা আমাদের কাছে চলে আসে, তাহলে তাদেরকে মুসলমান হয়ে যেতে আহ্বান জানানো হবে। যদি না হয়, হত্যা করে দেয়া হবে। কোনো অবস্থায়ই তাদেরকে তাদের নিরাপদস্থলে ফিরে যেতে দেয়া জায়েয হবে না। কারণ, মুসলমান না হলে মুরতাদকে হত্যা করা সুনির্ধারিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার আপন দ্বীন (ইসলাম) পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা করে দেবে’। -শরহুস সিয়ার: ২০১৬-২০১৭


    আরও বলেন,
    والمقصود أن المرتد راجع عن الإسلام بعد ما أقر به فكان قتله مستحقا حدا. (ألا ترى) أنه لو دخل إلينا بأمان أو رسولا، أو غير رسول لم ندعه يرجع إلى دار الحرب، ولكن نعرض عليه الإسلام فإن أسلم وإلا قتل. شرح السير الكبير (ص: 1707)
    মুরতাদ ইসলামকে স্বীকার করে নেয়ার পর তা থেকে ফিরে গেছে। কাজেই তার হত্যাটা হদ। তুমি কি দেখনা, (যেহেতু তা হদ, তাই) মুরতাদ যদি আমান নিয়েও আমাদের কাছে আসে, দূত হিসেবেই আসে বা এমনিতেই আসে, আমরা তাকে দারুল হারবে ফিরে যেতে দেবো না। বরং মুসলমান হতে বলবো। হলে তো ভালো। নইলে হত্যা করে দেয়া হবে। -শরহুস সিয়ার: ১৭০৭


    শাতিমের বিধান মুরতাদের চেয়েও কঠোর
    এ তো গেল সাধারণ মুরতাদের বিধান। আর শাতিমের বিধান তো আরও কঠোর। এ কারণে সাহাবায়ে কেরাম একে উপস্থিত মজলিসেই হত্যা করে দিতেন। রাসূলের অনুমতির অপেক্ষায়ও থাকতেন না।


    শাতিম মহিলা হলেও ছাড় নেই
    হারবি মহিলাদের হত্যা করা শরীয়তে নিষেধ। কিন্তু যদি রাসূলকে নিয়ে কটুক্তি করে তাহলে হত্যা করে দেয়া হবে। সাহাবায়ে কেরাম এমনটিই করেছেন।

    ইমাম সারাখসী রহ. বলেন,
    وكذلك إن كانت تعلن شتم رسول الله – صلى الله عليه وآله وسلم -، فلا بأس بقتلها. شرح السير الكبير (ص: 1417)
    এমনিভাবে হারবি মহিলা যদি প্রকাশ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি করে, তাহলে হত্যা করে দিতে সমস্যা নেই। -শরহুস সিয়ারিল কাবির: ১৪১৭

    এরপর তিনি এ ব্যাপারে দলীল প্রমাণ উল্লেখ করেন।

    ইবনে আবিদিন রহ. বলেন,
    فهو مخصوص من عموم النهي عن قتل النساء من أهل الحرب. الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (4/ 216)
    অতএব, হারবি শাতিম মহিলাকে হত্যা করে দেয়ার বিষয়টা হারবি মহিলাদের হত্যার সাধারণ নিষেধাজ্ঞার বাইরে। -রদ্দুল মুহতার: ৪/২১৬


    শাতিম বাপ হলেও ছাড় নেই
    বাপ মুশরিক হলেও ছেলের জন্য বাপকে হত্যা করা নিষেধ। কিন্তু শাতিম এ হুকুমের আওতাধীন নয়।

    ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন,
    وينبغي أنه لو سمع أباه المشرك يذكر الله أو رسوله بسوء يكون له قتله لما روي «أن أبا عبيدة بن الجراح قتل أباه حين سمعه يسب النبي - صلى الله عليه وسلم - وشرف وكرم، فلم ينكر النبي - صلى الله عليه وسلم - ذلك» . فتح القدير للكمال ابن الهمام (5/ 454)
    যদি মুসলিম তার আপন মুশরিক পিতাকে শুনতে পায় যে, সে আল্লাহ বা তাঁর রাসূলের শানে কটুক্তি করছে, তাহলে তাকে হত্যা করে দেয়া জায়েয হওয়াই সমীচিন। বর্ণিত আছে, আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ রাদি. তাঁর পিতাকে যখন শুনলেন যে, রাসূলকে নিয়ে কটুক্তি করছে, তিনি তাকে হত্যা করে দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে কোনো আপত্তি করেননি। -ফাতহুল কাদির: ৫/৪৫৪


    শাতিম হত্যা হদ বলা হলো কোন হিসেবে?
    আমরা দেখলাম, শাতিম হত্যার জন্য ইমাম দরকার নেই। দারুল ইসলাম দরকার নেই। শাতিম হারবি কাফের। তাকে যে কেউ হত্যা করতে পারে। এমনকি আমান দিয়ে দিলেও, বাগে পাওয়ার পর ছাড়া হবে না।

    তাহলে প্রশ্ন, শাতিম হত্যা হদ বলা হলো কোন হিসেবে?

    উত্তর সেটাই, যা আগে বলা হয়েছে: যেহেতু শাতিম হত্যা মাফ হওয়ার সূরত নেই (মালিকি ও হাম্বলি মাযহাব মতে তাওবার আগে পড়ে সর্বাবস্থায়, আর হানাফি ও শাফিয়ি মাযহাব মতে তাওবার আগে) এ হিসেবে হদ বলা হয়েছে।

    ইমাম থাকতে হবে, দারুল ইসলাম লাগবে- এ হিসেবে বলা হয়নি। অন্যথায় যিনার শাস্তি যেমন দারুল ইসলাম ছাড়া এবং ইমাম ছাড়া কায়েম করা যায় না, মুরতাদের ও শাতিমের হত্যাও এমনই হতো। বুঝা গেল, এ হিসেবে হদ বলা হয়নি। কিন্তু সরকারি আলেমরা এ বিষয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করতে চায়। আল্লাহ তাআলা তাদের গোমড় ফাঁস করে দিন। আমীন।


    তারা যেহেতু সরকারকে উলুল আমর দাবি করে, তাই উচিৎ ছিল সরকারকে চাপ দেয়া যে, শাতিম হত্যা হদ। কিছুতেই তা মাফ করা যাবে না। আপনারা শাতিমদের ধরে হত্যা করুন।

    কিন্তু তা না করে উল্টো শাতিমদের বাঁচিয়ে দেয়ার ফন্দি করেছে। এভাবে আল্লাহর নির্ধারিত একটি হদের বিপক্ষে তাদের অবস্থান। নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক।


    ***

    আল্লাহ তাআলার তাওফিক হলে সামনের পর্বে ইমামের অনুমতি নিয়ে আরও কিছু কথা এবং দাওয়াতের মাসআলা আলোচনা হবে।




  • #2
    মাশাআল্লাহ ।জাযাকাল্লাহ।অনেক সন্দেহের মধ্যে ছিলাম ।

    Comment


    • #3
      আলহামদুলিল্লাহ্ অনেক উপকৃত হলাম প্রিয় শায়েখ! আল্লাহ্ তায়া-লা আপনাকে এর জন্য উত্তম বিনিময় দান করুন.. সর্বদা সুস্থ সবল ও নিরাপদ রাখুন.. জান্নাতে আমাদের সকলকে একত্রিত করুন আমিন ইয়া রব্ব।

      Comment


      • #4
        যদি মুসরিম তার আপন মুশরিক পিতাকে শুনতে পায় যে, সে আল্লাহ বা তাঁর রাসূলের শানে কটুক্তি করছে, তাহলে তাকে হত্যা করে দেয়া জায়েয হওয়াই সমীচিন।
        এখানে ‘মুসরিম’ এর স্থলে ‘মুসলিম’ হবে সম্ভবত।

        আল্লাহ তাআলার তাওফিক হলে সামনের পর্বে ইমামের অনুমতি নিয়ে আরও কিছু কথা এবং দাওয়াতের মাসআলা আলোচনা হবে।
        আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে তাওফীক দান করুন ও উম্মাহকে উপকৃত করুন।
        “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

        Comment


        • #5
          চমৎকার লেখনি,ভাইকে জিহাদের পথে প্রভূ কবুল করেন।
          “দ্বীনের জন্য রক্ত দিতে দৌড়ে বেড়ায় যারা,সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর উত্তরসূরী তারা”–TBangla

          Comment


          • #6
            আলহামদুলিল্লাহ, অনেক উপকৃত হলাম। জাযাকাল্লাহ
            আপনার সামনের পেস্টের অপেক্ষায় রইলাম ভাই...
            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

            Comment

            Working...
            X