Announcement

Collapse
No announcement yet.

মুসলিম ও অমুসলিমদের মাঝে পারস্পরিক আচরণের কিছু দিক

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মুসলিম ও অমুসলিমদের মাঝে পারস্পরিক আচরণের কিছু দিক

    মুসলমানদের সাথে অমুসলিমদের গ্রহণযোগ্য আচরণের রূপরেখা - খলিফা উমর (রাঃ) অনুমোদন




    আব্দুর রহমান ইবনে গানাম রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
    “উমর রা. যখন শামবাসীর সঙ্গে চুক্তি করলেন, আমি তাঁকে লিখলাম, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। এ হচ্ছে শাম দেশের অমুক অমুক নগরের অধিবাসীদের পক্ষ হতে আল্লাহর বান্দা আমীরুল-মুমিনীন উমরকে প্রদত্ত লিখিত চুক্তিপত্র। আপনারা যখন আমাদের নিকট আগমন করলেন, তখন আমরা নিজেদের জন্য, আমাদের সন্তান-সন্ততির জন্য, আমাদের ধন-সম্পদের জন্য এবং আমাদের ধর্মাবলম্বী লোকদের জন্য আপনাদের নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করলাম। উক্ত নিরাপত্তার বিনিময়ে আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, আমরা আমাদের নগরে বা তার চারপাশে কোথাও কোনো নতুন গির্জা ও ইবাদতখানা নির্মাণ করবো না; কোনো পুরাতন গির্জা মেরামত করবো না। ইতিপূর্বে যে গির্জা ও ইবাদতখানা মুসলমানদের নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে, সেগুলোকে পুনরায় গির্জা ও ইবাদতখানায় রূপান্তর করবো না। আমাদের কোনো ইবাদখানায় দিনে বা রাতে কোনো মুসলিম অবস্থান করতে চাইলে তাকে বাধা দিবো না। আমাদের গির্জাগুলোর দ্বারসমূহ পথিক ও মুসাফিরদের জন্য উন্মুক্ত রাখবো। কোনো পথিক মুসলিম আমাদের আবাসস্থলের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলে তিনদিন পর্যন্ত তার মেহমানদারী করবো। আমাদের গির্জায় বা বাসস্থানে কোনো গুপ্তচরকে আশ্রয় দিবো না। অন্তরে মুসলমানদের সাথে কোনরূপ প্রতারণা লালন করবো না। আমাদের সন্তানদের কুরআন শিখাবো না। প্রকাশ্যে কোনো প্রকার শিরক করবো না, কাউকে শিরকের প্রতি আহবানও জানাবো না। আমাদের কোনো আত্মীয় ইসলাম গ্রহণ করতে চাইলে তাকে বাধা দিবো না। মুসলমানদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবো; কোনো মুসলমান আমাদের মজলিসে বসতে চাইলে আমরা উঠে গিয়ে তার জন্য জায়গা করে দিবো। লেবাস-পোশাকে মুসলিমদের সাদৃশ্য অবলম্বন করব না। তাদের মতো টুপি ও পাগড়ি পরা, জুতো পরা, মাথায় সিঁথি কাটা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকব। মুসলিমদের ন্যায় ভাষা ব্যবহার করবো না। মুসলিমদের ন্যায় উপনাম গ্রহণ করবো না। ঘোড়া ও বাহনে গদি ব্যবহার করবো না। গলায় তরবারি ঝুলিয়ে চলাফেরা করবো না; কোনো প্রকার অস্ত্র সঙ্গে রাখবো না; কোনো প্রকার অস্ত্র বহন করবো না। আংটিতে আরবি ভাষায় কিছু লিখব না। মদ বেচা-কেনা করবো না। মাথার সম্মুখভাগের চুল ছেঁটে ফেলবো। যেখানেই থাকি না কেন; সর্বত্র ও সর্বদা নিজেদের বেশ ভূষা অবলম্বন করব। কোমরে পৈতা বাঁধবো। মুসলমানদের রাস্তায় বা তাদের বাজারে ক্রুশ বা নিজেদের ধর্মীয় পুস্তক প্রদর্শন করবো না। গির্জায়ও প্রকাশ্যে ক্রুশ রাখবো না। গির্জায় মুসলিমদের উপস্থিতিতে ঘণ্টা বাজাবো না। ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও উৎসব উপলক্ষে প্রকাশ্যে বের হব না। মৃতদেহ বহন করার সময় উচ্চস্বরে আওয়াজ করবো না। মুসলিমদের পথে মৃতদেহের সঙ্গে আগুন বহন করব না। মুসলমানদের ডিঙ্গিয়ে মৃতদেহ বহন করবো না। মুসলিমদের ব্যবহৃত দাসকে দাস হিসেবে গ্রহণ করবো না। মুসলিম পথিককে পথ দেখিয়ে দিব। কোনো মুসলমানের ঘরে উঁকি মারবো না।

    আবদুর রহমান ইবনে গানাম আশআরী রহ. বলেন, উপরোক্ত চুক্তিপত্র নিয়ে আমি উমর রা. এর নিকট পৌঁছলে তিনি তাতে নিম্নোক্ত শর্তগুলো সংযোজন করেন। আমরা কোনো মুসলমানকে প্রহার করবো না। উক্ত শর্তসমূহ মেনে আমরা নিরাপত্তা লাভ করলাম। আমরা যদি কোনো একটি শর্ত ভঙ্গ করি, আপনাদের ওপর আমাদের নিরাপত্তার কোনো দায়িত্ব থাকবে না। তখন আমাদের সাথে শত্রুর ন্যায় আচরণ করা আপনাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে।” -মুজামে ইবনুল মুকরী, হাদিস: ৩৬৫; সুনানে বাইহাকী: ১৮৭১৭; আহকামু আহলিল মিলাল: ১০০০; তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইফা: ৪/৫৬৬; আহকামু আহলিয যিম্মাহ: ৩/১১৫৯


    ***

    অমুসলমানদের সাথে আচরণের বিধান​





    আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,

    أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «لا تبدءوا اليهود ولا النصارى بالسلام، فإذا لقيتم أحدهم في طريق، فاضطروه إلى أضيقه». -صحيح مسلم: 2167

    “ইহুদি ও খ্রিস্টানদেরকে আগে সালাম দিও না। পথে তাদের কারো মুখোমুখী হলে, এমনভাবে চল, যাতে সে তোমার পথ ছেড়ে সঙ্কীর্ণ হয়ে চলতে বাধ্য হয়।” -সহীহ মুসলিম: ২১৬৭ (ইফা: ৫/১৮৪)

    ***
    ​“এক ভূমিতে দুই ধর্ম থাকতে পারে না।”




    ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,

    لا تصلح قبلتان في أرض واحدة. -رواه الترمذي (2/ 20 رقم: 633 ط. دار الغرب الإسلامي) وابن أبي شيبة (6/560 رقم: 10680 ط. دار القبلة) وابن الجارود في “المنتقى” (ص: 279 رقم: 1107) من طريق جرير بن عبد الحميد عن قابوس عن أبيه، ووقع في رواية ابن الطباع عند ابن الجارود: “لا تصلح ملتان”. وقال الشيخ عوامة في تعليقه على “المصنف: : “وقابوس مختلف فيه، فحديثه حسن.”

    “এক ভূমিতে দুই ধর্ম থাকতে পারে না।” –জামে তিরমিযী: ২/২০ হাদীস: ৬৩৩ (দারুল গরবিল ইসলামী); মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ: ৬/৫৬০ হাদীস: ১০৬৮০ (দারুল কিবলাহ); সহীহ ইবনুল জারুদ, পৃ: ২৭৯ হাদীস: ১১০৭ (মুআসসাতুল কিতাবিস সাকাফিয়্যাহ)

    উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম তূরপুশতি রহিমাহুল্লাহ (৬৬১ হি.) বলেন,

    أي: لا يستقيم دينان بأرض على سبيل المظاهرة والمعادلة، أما المسلم فليس له أن يختار الإقامة بين ظهراني قوم كفار، وأما الذي يخالف دينه دين الإسلام، فلا يمكن عن الإقامة في بلاد الإسلام إلا ببذل الجزية، ثم لا يؤذن له في الإشادة بدينه، والإشاعة بشعائره. -الميسر في شرح مصابيح السنة (3/926)

    “অর্থাৎ একই ভূখণ্ডে দুটি ধর্ম বিজয়ী বেশে এবং সমভাবে চলতে পারে না। কেননা মুসলিমের অধিকার নেই (কাফের রাষ্ট্রে) কাফেরদের মাঝে বসবাস করার। আর কাফেরদের মুসলিম রাষ্ট্রে জিযিয়া ব্যতীত বসবাসের সুযোগ দেয়া হবে না এবং নিজ ধর্ম প্রচার ও প্রকাশ্যে ধর্মীয় শিয়ার পালনের সুযোগ দেয়া হবে না।” -আল-মুয়াসসার: ৩/৯২৬ (মাকতাবাতু মুস্তফা আল-বায)​​

    ***
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 19 hours ago.
    দাওয়াত ও জিহাদের সফরে কলব যখন ইনসাফ থেকে সরে যায় তখন বিনয় অহংকারে, ভাষার শালীনতা অশালীনতায় রূপান্তরিত হয় এবং অন্তরের নম্রতা কাঠিন্যের রূপ ধারণ করে। তারপর সে ব্যক্তি নিজেও গোমরাহির পথে চলে এবং অন্যকেও গোমরাহির পথ প্রদর্শন করে।

Working...
X