গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আন্তঃসরকার বন্ধুত্বের রিদ্দা এবং
মুসলিমের রক্ত ঝরানোর ‘‘কুফর ফাওকা কুফর’’
মুসলিমের রক্ত ঝরানোর ‘‘কুফর ফাওকা কুফর’’
অবশেষে মূর্তিপূজারী নাপাক মোদীকে বাংলাদেশের পাক ভূমিতে নিয়ে আসায় গণতান্ত্রিক সরকারের ইরতিদাদের তথা দ্বীনত্যাগের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটল! যদিও এ সরকার তাওয়াল্লীর মাধ্যমে (সম্পর্ক, মেলামেশা, বন্ধুত্ব, মৈত্রী, অভিভাবকত্ব) অনেক আগে থেকেই মুরতাদ হয়ে ছিল, দেশের মাটিতে থেকে কিংবা ভারতে যেয়ে- যা সচেতন জনগণের অজানা কিছু নয়; তবে দরকার ছিল এই সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটা! সেটাও সম্পন্ন হল ২৬ এ মার্চে! শুধু প্রকাশ নয় বরং হাতেকলমে (অর্থাৎ রাইফেল, কাঁদানে, লাঠিতে..) মুসলিমদের পবিত্র রক্ত ঝরিয়ে! কাফিরের সাথে মুওআলাত বা মেলামেশা একজন ব্যাক্তিকে মিল্লাতে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়; এটি সুস্পষ্ট কুফর। এর সাথে সাথে মুসলিমের রক্ত ঝরানো হল কুফর ফাওকা কুফর (কুফরের উপর আরেক কুফর)। এখন প্রশ্ন হল, এটা গণতান্ত্রিক সরকার মুসলিম সরকার তো আর নয়, আন্তঃসরকার সম্পর্ক হল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অতএব, এজন্য আমাদের উদ্বিগ্ন হতে হবে কেন?
উত্তর হলঃ মুসলিমদের মাঝে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব এক সেকেন্ডের জন্যও কাম্য নয়। আর মুসলিমরা গণতন্ত্রেও বিশ্বাসী নয়। এ সরকার তার অবলম্বিত সিস্টেমের কারণে পূর্ব থেকেই মুরতাদ হয়ে আছে এবং পূর্ব থেকেই আমরা চেষ্টায় নিয়োজিত আছি একে উৎখাতের; সুতরাং, সে যদি আগেবেড়ে কোন কুফরী কাজ করতে চায় যা ইসলাম ও মুসলিমদের ধ্বংসাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনে, তা সর্বোপায়ে দমন করার চেষ্টা করা হবে। তাদের তথাকথিত মূল্যবোধের মূল্য আমাদের কাছে নেই।
হ্যাঁ আন্দোলনকারী ইসলামি দলের যেসব নেতারা যে তাদের সমাবেশকে ‘‘শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক’’ বলেন, তারা এটা বলেন হয় অজ্ঞতাবশত নতুবা গণতন্ত্রের প্রকৃত বাস্তবতা এড়িয়ে গিয়ে কপটতাবশত। এক্ষেত্রে তাদের প্রতি আমাদের আহ্বান হল, আপনারা আপনাদের আন্দোলনকে অন্তত ‘‘নিয়মতান্ত্রিক’’ বলুন! আন্দোলনকে নিয়মতান্ত্রিক বোঝাতে আপনারা যে ‘‘গণতান্ত্রিক’’ শব্দ ব্যবহার করছেন, স্বীকার করুন আর না-ই করুন এর দ্বারা প্রকারান্তরে কুফরী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে সহনশীলতাই দেখান হচ্ছে! এটা কি কুফরের সামনে নতজানুতা নয়? এটা কত বড় অন্যায় ভেবে দেখবেন কি? এমন কৌশলের উদ্দেশ্য যদি হয় গণতান্ত্রিকদের ধোঁকা দিয়ে মুরতাদ বাহিনীর জুলুম থেকে বাঁচা; তাহলেও কি এই কৌশল নিপীড়ন-গুম-হত্যা থেকে আপনাদেরকে বাঁচাচ্ছে? অতএব, শব্দের এরূপ কপট ব্যবহারের দরকার নেই। আপনারা বাঁচতে হলে শরীয়াহ নিয়েই বাঁচুন।
অতঃপর কথা হল, ‘‘ভারত গোলাবারুদ সমৃদ্ধ অতি বিশাল রাষ্ট্র তাই বন্ধুরাষ্ট্র হয়ে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চলা সম্ভব নয়’’ এমন ওযর শরীয়াহ আইন অনুযায়ী দেশ পরিচালনার জন্য প্রতিবন্ধক বিবেচনা করা বৈধ কিনা? মুসলিমদের মাঝে অবস্থান করেও কোন শাসক কি ভয় ও যুদ্ধাশঙ্কার কারণে মুশরিকদের সাথে মুওআলাত বা বন্ধুত্ব করতে পারে?
উত্তর হলঃ না। মহাপ্রজ্ঞাবান অন্তর্যামী প্রতিপালক আল্লাহ মানুষের দুষ্কৃতির সে সুযোগের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেনঃ
فَتَرَى الَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ يُسٰرِعُونَ فِيهِمْ يَقُولُونَ نَخْشٰىٓ أَن تُصِيبَنَا دَآئِرَةٌ ۚ فَعَسَى اللَّهُ أَن يَأْتِىَ بِالْفَتْحِ أَوْ أَمْرٍ مِّنْ عِندِهِۦ فَيُصْبِحُوا عَلٰى مَآ أَسَرُّوا فِىٓ أَنفُسِهِمْ نٰدِمِينَ
‘সুতরাং তুমি দেখতে পাবে যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে (অর্থাৎ কথিত ঈমানের দাবিদারদেরকে), তারা কাফিরদের দিকে দ্রুতগতিতে ছুটছে! এই বলে যে, ‘‘আমাদের আশঙ্কা হয় আমাদের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটবে’’। অতএব আল্লাহ হয়তো দান করবেন বিজয় অথবা তাঁর পক্ষ থেকে এমন কিছু, যার ফলে তারা তাদের অন্তরে যা লুকিয়ে রেখেছিল, তাতে লজ্জিত হবে।’
وَيَقُولُ الَّذِينَ ءَامَنُوٓا أَهٰٓؤُلَآءِ الَّذِينَ أَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمٰنِهِمْ ۙ إِنَّهُمْ لَمَعَكُمْ ۚ حَبِطَتْ أَعْمٰلُهُمْ فَأَصْبَحُوا خٰسِرِينَ
‘আর ঈমানদাররা বলবে, ‘‘এরাই কি তারা, যারা আল্লাহর নামে কঠিন শপথ করেছে যে, নিশ্চয় তারা তোমাদের সাথেই আছে?’’ তাদের আমলসমূহ বরবাদ হয়েছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ [আল মায়িদাঃ ৫২,৫৩]
এ কারণেই, মদীনা সনদ দিয়ে দেশ পরিচালনার দাবিদার, তাহাজ্জুদ গুজার, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযী মুনাফিকদের ব্যাপারে আজ মু’মিনদের বক্তব্য হল, ‘‘এতদিন এরাই না মুসলিম জনতাকে ধোঁকা দিয়ে আসছিল!! এরা যে ইসলাম ত্যাগ করে কাফিরে পরিণত হয়েছে এতে আর সন্দেহ কী! এদের সকল আমলই বাতিল হয়েছে যেহেতু এরা তাওয়াল্লীর মাধ্যমে কুফরি করেছে! ওহে, তোমরা যতই নামায পড়া ও দান-সাদাকা করার দাবী কর না কেন- আমরা কখনোই তোমাদেরকে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না তোমরা ঈমানের দাবীসমূহ পূরণ কর! তোমরা তো মুরতাদ- জাহান্নামের জ্বালানী।’’ অতএব, মুওয়ালাতি আহলিল ইশরাক অর্থাৎ শরীকপন্থীদের সাথে সম্পর্কের মতো আনুষ্ঠানিক এ বিপর্যয় নিশ্চিতভাবে ঈমান ও কুফরকে আলাদা করে! আমরা কার পক্ষে- ‘‘জয় বাংলা জয় শ্রীরাম’’ এর নাকি, ‘‘নারায়ে-তাকবীর-আল্লাহু-আকবার’’ এর? সময় এসেছে এর উত্তর খুঁজে নেয়ার।
***********
Comment