Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল্লাহর যিকির : সুফল ও উপকারিতা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল্লাহর যিকির : সুফল ও উপকারিতা

    আল্লাহর যিকির : সুফল ও উপকারিতা
    ====================

    আল্লাহর পবিত্র নামের যে বরকত ও লযযত এবং স্বাদ ও আনন্দ রয়েছে তা অন্য কিছুতে নেই। আল্লাহর যিকির এমন এক শক্তি, যা দুর্বলকে সবল করে এবং সকল বিপদে দৃঢ়পদ রাখে। কারণ আল্লাহর স্মরণকারীর বিশ্বাস এই যে, সব কিছু আল্লাহর হুকুমেই হয় এবং আল্লাহর কোনো ফয়সালা বান্দার জন্য অশুভ নয়। আল্লাহর ফয়সালা মেনে নেওয়ার মাঝেই বান্দার কামিয়াবি ও কল্যাণ। কুরআন মজীদে আল্লাহর যিকির বেশি বেশি করতে বলা হয়েছে। অন্য কোনো ইবাদত সম্পর্কে এমন কথা বলা হয়নি। কুরআন মজীদে আল্লাহর যিকির বেশিবেশি করতে বলা হয়েছে। কারণ আল্লাহর যিকির তথা আল্লাহর স্মরণ এমন এক বিষয়, যা মানুষকে সব ধরনের গুনাহ থেকে রক্ষা করে এবং শরীয়তের হুকুম মোতাবেক চলতে সাহায্য করে। উপরন্তু তা এত সহজ যে, এর জন্য আলাদা করে বেশি সময় ব্যয় করার কিংবা অন্যান্য কাজ স্থগিত রাখার প্রয়োজন হয় না।
    আল্লাহর যিকির হচ্ছে যাবতীয় ইবাদতের রূহ। আবু ওসমান নাহদী রাহ. বলেন, কুরআন মজীদের ওয়াদা অনুযায়ী যখন কোনো বান্দা আল্লাহকে স্মরণ করে তখন আল্লাহ তাকে স্মরণ করেন।
    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব এবং শোকর গোযারি কর, না-শোকরি করো না।-সূরা বাকারা : ১৫২
    সুতরাং আমরা যখন আল্লাহর যিকিরে মশগুল হই তখন একথা স্মরণ করা কর্তব্য যে, স্বয়ং আল্লাহ তাআলাও আমাদেরকে স্মরণ করছেন। এতে যিকিরের স্বাদ ও লযযত বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। যিকিরের ফযীলত সম্পর্কিত কিছু আয়াত ও হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল।
    এক. কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর।-সূরা আনফাল : ৪৫
    দুই. অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, (তরজমা) যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্বরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়, জেনে রাখ আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়।-সূরা রা’দ : ২৮
    তিন. আরো বলা হয়েছে, (তরজমা) যারা ঈমানদার তারা এমন যে যখন তাদের সামনে আল্লাহর নাম নেওয়া হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে।-সূরা আনফাল : ২
    চার. আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, যাদের হৃদয় ভয়ে কম্পিত হয় আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে।-সূরা হজ্ব : ৩৫
    পাঁচ. অন্য আয়াতে বলেন, (তরজমা) আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ।-সূরা আনকাবুত : ৪৫
    ছয়. আল্লাহর অধিক যিকিরকারী পুরুষ ও যিকিরকারী নারী, তাদের জন্য আল্লাহর প্রস্ত্তত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।-সূরা আহযাব : ৩৫
    সাত. হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর।-সূরা আহযাব : ৪১
    আট. আরো বলেছেন, (তরজমা) স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায়।-সূরা আরাফ : ২০৫
    নয়. মুমিনদের সর্ম্পকে বলেছেন, যারা আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় এবং চিন্তা-ভাবনা করে আসমান যমিন সৃষ্টির বিষয়ে। হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি।-সূরা আলে ইমরান : ১৯৯
    দশ. মুনাফিকদের বিষয়ে বলেছেন, যখন তারা নামাযে দাঁড়ায় তখন তারা শিথিলভাবে লোক দেখানোর জন্য দাঁড়ায় এবং তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।-সূরা নিসা : ১৪২
    এগার. আরো বলেন, যারা আল্লাহ ও আখেরাতের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ।-সূরা আহযাব : ২০
    বার. অন্য আয়াতে বলেন, যে তার পালনকর্তার নাম স্মরণ করে অতপর নামায আদায় করে।-সূরা আ’লা : ১৫
    এ জাতীয় আরো আয়াতে যিকিরের কথা বলা হয়েছে। উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট।
    এবার কিছু হাদীস পেশ করা হল।
    এক. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকির করতেন।-সহীহ মুসলিম ১/২৮২; সুনানে আবু দাউদ, পৃষ্ঠা ৪
    দুই. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি বান্দার সাথে ঐরূপ ব্যবহার করি যেরূপ সে আমার প্রতি ধারণা রাখে। সে যখন আমাকে স্মরণ করে আমি তার সাথে থাকি। সে যদি আমাকে অন্তরে স্মরণ করে আমিও তাকে অন্তরে স্মরণ করি। সে যদি কোনো মজলিসে আমার কথা আলোচনা করে তবে আমি তার চেয়ে উওম মজলিসে তার আলোচনা করি।-সহীহ বুখারী ২/৭৪০৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৬৭৫
    তিন. হযরত আবু মুসা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে তার প্রতিপালককে স্মরণ করে আর যে করে না তাদের দৃষ্টান্ত হল জীবিত ও মৃতের মতো। (অর্থাৎ যে আল্লাহকে স্মরণ করে সে জীবিত। আর যে স্মরণ করে না সে মৃত)।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৪০৭; মুসলিম, হাদীস : ৭৭৯
    চার. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার পথে জুমদান পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে চলছিলেন, তখন তিনি বললেন, তোমরা চলতে থাক এই যে জুমদান পাহাড়। মুফাররিদরা অগ্রগামী হয়েছে। সাহাবীরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুফাররিদরা কারা? তিনি বললেন, ঐসব নারী ও পুরুষ, যারা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৬৭৬
    পাঁচ. হযরত আবূ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি জিনিসের কথা বলব না, যা তোমাদের সমস্ত আমলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ; তোমাদের প্রতিপালকের নিকট সবচেয়ে পবিত্র; তোমাদের মর্যাদাকে আরো বুলন্দকারী; আল্লাহর রাস্তায় সোনা-রুপা খরচ করা থেকে এবং জিহাদের ময়দানে শত্রুর প্রাণ নেওয়া ও শত্রুর হাতে প্রাণ দেওয়া থেকেও উওম? সাহাবারা বললেন, অবশ্যই বলুন। তিনি বললেন, তা হল আল্লাহর যিকির।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৩৭৭; ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩৭৯০
    ছয়. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা সাত ব্যক্তিকে আরশের ছায়ায় স্থান দিবেন। … ঐ ব্যক্তি, যে একান্তে আল্লাহকে স্মরণ করেছে এবং তার চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হয়েছে।-বুখারী, হাদীস : ৬৪৭৯
    সাত. হযরত মুআয রা. থেকে বর্ণিত। এক সাহাবী বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে ইসলামের বিধান অনেক মনে হয়। তাই আমাকে এমন একটি বিষয় বলে দিন যার উপর আমি সর্বদা আমল করতে পারি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার জিহবাকে আল্লাহর যিকিরে তরতাজা রাখ।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৩৭৫; ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩৭৯৩
    আট. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আমার বান্দা! তুমি যখন নির্জনে আমাকে স্মরণ কর তখন আমিও তোমাকে নির্জনে স্মরণ করি। আর যখন তুমি আমাকে কোনো মজলিসে স্মরণ কর তখন আমি তার চেয়ে উওম মজলিসে তোমার আলোচনা করি।-শুআবুল ঈমান, হা. ৫৫১
    নয়. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, এক হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, বান্দা যতক্ষণ আমাকে স্মরণ করতে থাকে এবং আমার যিকিরের কারণে তার ঠোঁট নড়তে থাকে, ততক্ষণ আমি তার সাথে থাকি। (অর্থাৎ আল্লাহর রহমত তার সাথে থাকে)।-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১০৯৬৮; ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩৭৯২
    দশ. হযরত আবু হুরায়রা রা. ও হযরত আবু সায়ীদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কিছু মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করে তখন ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে রাখেন,আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে নেয়,এবং তাদের উপর ছাকিনা নাযিল হয়, আর আল্লাহ তাআলা তার নিকটতম ফেরেশতাদের সামনে তাদের কথা উল্লেখ করেন।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৭০০; শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৫৩০
    এগার. হযরত মুআয ইবনে জাবাল রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর যিকিরের চেয়ে আযাব থেকে অধিক নাজাত দানকারী আর কোনো আমল নেই।-মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ১৬৭৪৫
    বার. হযরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কিছু মানুষ আল্লাহর যিকিরের জন্য একত্রিত হয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিই একমাত্র উদ্দেশ্য হয় তখন আসমান হতে একজন ঘোষক ঘোষণা করেন, তোমাদেরকে মাফ করে দেওয়া হয়েছে এবং তোমাদের গোনাহসমূহ নেকীতে পরিণত হয়েছে।- মুসনাদে আহমদ ৩/১৪২, হাদীস : ১২৪৫৩; শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৫৩৪
    তের. হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যখন জান্নাতের বাগানসমূহের নিকট দিয়ে যাও তখন সেখানে খুব বিচরণ কর। সাহাবারা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জান্নাতের বাগান কী? তিনি বললেন, যিকিরের হালকাসমূহ।-তিরমিযী, হাদীস : ৩৫১০; শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৫২৯
    চৌদ্দ. হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশ করার পর জান্নাতবাসীরা দুনিয়ার কোনো জিনিসের জন্য আফসোস করবে না, শুধু ঐসময়ের জন্য আফসোস করবে, যা দুনিয়াতে আল্লাহর যিকির ছাড়া অতিবাহিত করেছে।-শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৫১২; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ১৬৭৪৬
    পনের. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর যিকির এত বেশী করতে থাক যে, লোকেরা পাগল বলে।-মুসনাদে আহমদ ৩/৬৮, ৭১, হাদীস : ১১৬৫৩; ইবনে হিববান, হাদীস : ৮১৪
    ষোল. হযরত আবু হুরায়রা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, দুনিয়া ও দুনিয়ার সকল বস্ত্ত অভিশপ্ত তবে আল্লাহর যিকির ও তার সাথে সং©র্শস্নষ্ট বিষয় এবং আলেম ও তালেবে ইলম ছাড়া।-তিরমিযী, হাদীস : ২৩২২; ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪১১২

  • #2
    বাকী অংশা এখানে .........

    বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. যিকিরের ফযিলত সম্পর্কে ‘আলওয়াবিলুছ ছাইয়িব’ নামে একটা কিতাব লিখেছেন। তাতে যিকিরের ফায়দা ও ফযিলত সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। ঐ কিতাবে তিনি যিকিরের একশরও বেশি ফায়দা উল্লেখ করেছেন। কিছু ফায়দা এখানে তুলে ধরা হল।
    ১. যিকির শয়তানকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং তার শক্তি নষ্ট করে দেয়।
    ২. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়।
    ৩. দুশ্চিন্তা দূর করে।
    ৪. প্রশান্তি দান করে।
    ৫. অন্তর ও শরীরে শক্তি যোগায়।
    ৬. চেহারা ও অন্তরকে নূরানী করে।
    ৭. রিযিকে বরকত আনে।
    ৮. যিকিরকারীর মাঝে মাধুর্য ও গাম্ভীর্য সৃষ্টি করে।
    ৯. আল্লাহর মহববত পয়দা করে। আর মহববতই হচ্ছে ইসলামের রূহ দীনের কেন্দ্র এবং মুক্তি ও সৌভাগ্যের উপায়। যে ব্যক্তি আল্লাহর মহববত পেতে চায় সে যেন বেশী বেশী যিকির করে।
    ১০. যিকির মোরাকাবার পক্ষে সহায়ক, যা যিকিরকারীকে এহসানের মাকামে পৌঁছে দেয়। আর এই মাকামে পৌঁছলে বান্দার এমন ইবাদত নছীব হয় যেন সে আল্লাহকে দেখছে।
    ১১. যিকির মানুষকে আল্লাহমুখী করে। ঘরে বাইরে তার হালত এমন হয় যে, সকল বিষয়ে আল্লাহ তাআলাকে্ই সাহায্যকারী মনে করে এবং যাবতীয় বিপদ আপদে তাঁরই আশ্রয় গ্রহণ করে।
    ১২. আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হয়। যিকির যত বেশী হবে নৈকট্যও তত বৃদ্ধি পাবে। আর যিকির থেকে যতই গাফলতি করা হবে ততই আল্লাহ থেকে দূরে সরে যাবে।
    ১৩. আল্লাহর মারেফাতের দরজা খুলে যায়।
    ১৪. অন্তরে আল্লাহর ভয় ও বড়ত্ব সৃষ্টি হয় এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহ তাকে দেখছেন, এই অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
    ১৫. স্বয়ং আল্লাহ যিকিরকারীকে স্মরণ করেন।
    ১৬. দিলকে জিন্দা করে।
    ১৭. যিকির হল দিল ও রূহের গিযা। খাদ্যের অভাবে শরীর যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে, তেমনি যিকিরের অভাবে দিলও মৃতপ্রায় হয়ে যায়।
    ১৮. দিলের মরিচা দূর করে। দিলের মরিচা হল খাহেশাত ও গাফলত। যিকির তওবা, ইস্তেগফারের মাধ্যমে তা দূর হয়।
    ১৯. গুনাহ মাফ হয়। কারণ যিকির হল সর্বোত্তম নেক আমলসমূহের অন্যতম। আর নেক আমলের মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়ে থাকে।
    ২০. আল্লাহর সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করে এবং সম্পর্কহীনতা দূর করে। গাফিল আল্লাহ থেকে দূরে থাকে, শুধু যিকিরের মাধ্যমেই এই দূরত্ব দূর হয়।
    ২১. বান্দা তার প্রতিপালকের যে সমস্ত তাসবীহ আদায় করে যে কারণে কঠিন মুহূর্তে আল্লাহ তাকে স্মরণ করবেন।
    ২২. যে ব্যক্তি সুখ ও সচ্ছলতায় আল্লাহকে স্মরণ করে, দু:খ ও মুছিবতে আল্লাহ তাকে স্মরণ করেন।
    ২৩. যিকির আল্লাহর আযাব থেকে নাযাত দান করে।
    ২৪. যিকিরের কারণে ছাকিনা ও রহমত নাযিল হয়। ফেরেশতারা চতুর্দিক থেকে যিকিরকারীকে ঘিরে রাখে।
    ২৫. যিকিরের বরকতে গীবত, চোগলখুরী, মিথ্যাকথা, বেহুদা কথা ইত্যাদি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, যিকিরে অভ্যস্ত ব্যক্তি এই সব কাজ কর্মে লিপ্ত হয় না। পক্ষান্তরে যিকিরের বিষয়ে উদাসীন লোকেরা এই সব কর্মে লিপ্ত থাকে।
    ২৬. যিকিরের মজলিস ফেরেশতাদের মজলিস। আর গাফলতি ও বেহুদা কথাবার্তার মজলিস হল শয়তানের মজলিস।
    ২৭. যিকিরের কারণে যেমন যিকিরকারী উপকৃত হয় তেমনি আশেপাশের লোকেরাও উপকৃত হয়। আর বেহুদা কথাবার্তায় লিপ্ত ব্যক্তি নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তার আশেপাশের লোকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
    ২৮. যিকিরকারী কেয়ামতের দিন আফসোস করবে না। হাদীসে আছে, যে মজলিসে আল্লাহর যিকির হয় না। কেয়ামতের দিন তা আফসোস ও ক্ষতির কারণ হবে।
    ২৯. নির্জনে আল্লাহর স্মরণে যার চোখ থেকে অশ্রু ঝরে সে কেয়ামতের দিন আরশের শীতল ছায়ায় স্থান পাবে। যখন মানুষ প্রচন্ড গরমে ছটফট করতে থাকবে।
    ৩০. দোয়াকারী দোয়ার মাধ্যমে যা কিছু পায় যিকিরকারী যিকিরের কারণে তার চেয়ে অনেক বেশি পায়।
    ৩১. যিকির যদিও সহজ ইবাদত কিন্তু তা সমস্ত ইবাদত থেকে উওম। সহজ এই জন্য যে, শুধু যবান নড়াচড়া করা সমস্ত অঙ্গ-পতঙ্গ নড়াচড়া করা থেকে সহজ।
    ৩২. আল্লাহর যিকির জান্নাতের চারাগাছ।
    ৩৩. যিকিরের মাধ্যমে যত পুরুস্কার ও ছওয়াব পাওয়া যায়। অন্য কোন আমলের দ্বারা তা পাওয়া যায় না।
    ৩৪. যে সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করে আল্লাহ তাকে রহমতের সাথে স্মরণ করেন। আর যে আল্লাহকে ভুলে যায় আল্লাহও তাকে ভুলে যান। আল্লাহ যাকে ভুলে যান দুনিয়া ও আখেরাতে তার চেয়ে দুর্ভাগা আর কে হতে পারে? সুতরাং যিকির হল সৌভাগ্য লাভ করার ও দুর্ভাগ্য থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়।
    ৩৫. যিকির মানুষকে সর্বাবস্থায় আল্লাহর রেযামন্দির পথে ধাবমান রাখে। বিছানায়, বিশ্রামে, সুস্থতায়, অসুস্থতায়, দুনিয়ার কাজকর্মে সর্বাবস্থায় যিকিরের মাধ্যমে উন্নতির পথে চলমান থাকা সম্ভব। যিকির ছাড়া আর কোন আমল নেই, যা সর্বাবস্থায় জারি রাখা যায়। ফলে যিকিরকারী বিছানায়, বিশ্রামরত অবস্থায় ও ঐ ব্যক্তির চেয়ে অগ্রগামী হয়ে যায়, যে গাফেল অবস্থায় রাত্রী জাগরণ করে।
    ৩৬. যিকির দুনিয়ার জীবনে নূর ও আলো, কবরের জগতে নূর ও আলো এবং আখেরাতে ও পুলসিরাতে নূর ও আলো। অন্য কিছুই বান্দাকে এত নূর ও নূরানিয়াত দান করে না।
    ৩৭. আল্লাহর স্মরণ ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়।এটি আল্লাহওয়ালাদের তরীকা এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উপায়।অতএব যিকিরের দরজা যার জন্য উন্মুক্ত হয়েছে তার জন্য আল্লাহর নৈকট্যের দরজা উন্মুক্ত হয়েছে। অতএব সে যেন যাহেরী ও বাতেনী পবিত্রতা অর্জন করে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সৌভাগ্য অর্জন করে। যে আল্লাহকে পেল সে সব পেল আর যে আল্লাহকে পেল না সে কিছুই পেল না।
    ৩৮. অন্তরের একটি চাহিদা আছে, যা যিকির ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে পূরণ হয় না। যিকির যখন অন্তরে বদ্ধমূল হয় এবং অন্তরই হয় প্রকৃত যিকিরকারী। আর যবান হয় তার অনুসারী,তখন তা শুধু অন্তরের চাহিদাকেই পূরণ করে না বরং যিকিরকারীকে সম্পদ ছাড়াই ধনী করে দেয়। আত্মীয়-স্বজন ও জনবল ছাড়াই শক্তিশালী বানিয়ে দেয় এবং ক্ষমতা ছাড়াই প্রভাবশালী বানিয়ে দেয়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি যিকির থেকে গাফেল সে ধন সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন ও রাজত্ব থাকা সত্ত্বেও লাঞ্ছিত, অপমানিত ও শক্তিহীন হয়ে যায়।
    ৩৯. যিকির বিক্ষিপ্তকে একত্র করে এবং একত্রকে বিক্ষিপ্ত করে। দূরবর্তীকে নিকটবর্তী করে এবং নিকটবর্তীকে দূরবর্তী করে।বিক্ষিপ্তকে একত্র করার অর্থ হল, মানুষের ইচ্ছা, সংকল্প ও একগ্রতা ফিরিয়ে দেয় এবং তা শক্তিশালী করে। আর একত্রকে বিক্ষিপ্ত করার অর্থ মানুষের অন্তরের দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী দূর করে দেয়। যিকিরের মাধ্যমে পেরেশানি দূর হয় এবং অন্তরে প্রশান্তি আসে। তেমনি কৃতকর্মের ফলে যে পাপরাশি একত্র হয়েছে যিকির তা দূর করে এবং আমলনামাকে পাপমুক্ত করে। তেমনি শয়তানের যে বাহিনী মানুষকে ঘেরাও করে যিকির তাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মানুষ যত আল্লাহর পথে আগুয়ান হয় এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্কে গড়তে সচেষ্ট হয়, ততই শয়তান তার বাহিনীকে মানুষের প্রতি ধাবিত করে। যিকির ছাড়া এই বাহিনীকে পরাস্ত করার আর কোনো উপায় নেই।
    ৪০. যিকির মানুষের অন্তরকে নিদ্রা থেকে জাগ্রত করে। অন্তর যখন ঘুমন্ত থাকে তখন সে লাভ ও পুঁজি দুটো থেকেই বঞ্চিত থাকে। এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর যখন সে জাগ্রত হয় এবং কী হারিয়েছে তা বুঝতে পারে তখন ক্ষতিপূরণের জন্য কোমর বাঁধে। গাফলত ও উদাসীনতার গভীর নিদ্রা থেকে যিকিরই মানুষকে জাগ্রত করতে পারে।
    ৪১. যিকির একটি বৃক্ষ তাতে মারেফাতের ফল ধরে। আল্লাহর মারিফাত ও মহববতই হচ্ছে আল্লাহ প্রেমীদের পরম লক্ষ। সুতরাং যিকির এই লক্ষ্য পূরণের প্রধান অবলম্বন। যিকির বৃক্ষ যত বড় হবে তাতে তত বেশি ফল ধরবে।
    ৪২. যিকির প্রথমে মানুষকে জাগ্রত করে তারপর তাকে তাওহীদ পযন্ত পৌঁছে দেয়।যা সকল মাকাম ও মারিফাতের মূল।
    ৪৩. যে আল্লাহর যিকির করে আল্লাহ তার সঙ্গে থাকেন। অর্থাৎ তাকে ভালবাসেন এবং তার সাহায্য করেন।
    ৪৪. যিকির গোলাম আযাদ করা, আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা ও মুজাহিদকে সওয়ারী দ্বারা সহযোগিতা করার সমতুল্য।
    ৪৫. যিকির হচ্ছে শোকর গোযারির প্রধান উপায়। যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকির করে না প্রকৃতপক্ষে সে তার শোকর আদায় করেনা।
    ৪৬. আল্লাহর নিকট ঐ মুত্তাকি বান্দা বেশি সম্মানিত যার যবান আল্লাহর যিকিরে তরতাজা থাকে। যে আল্লাহর ভয়ে তার আদেশ নিষেধ মেনে চলেছে এবং সর্বদা আল্লাহর যিকির করেছে । তাকওয়া ও পরহেযগারের কারণে আল্লাহ তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। এবং জাহান্নাম থেকে নাযাত দিবেন । এটা হল তার কর্মের প্রতিদান। আর যিকিরের কারণে সে লাভ করবে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য। এটা হল তার বিশেষ মর্যাদা।
    ৪৭. মানুষের অন্তরের কাঠিন্য যিকির ছাড়া অন্য কিছুর দ্বারা দূর হয় না। তাই বান্দার কর্তব্য দিলের কাঠিন্যকে আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে দূর করা।
    ৪৮. যিকির হল দিলের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা। যে দিল আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন তা রোগাক্রান্ত। তার উপশমের উপায় হল আল্লাহর যিকির।
    ৪৯. যিকির হল আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়ার প্রধান উপায়। আর যিকির হতে গাফেল থাকাই আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও নারাজির প্রধান কারণ। সুতরাং বান্দা যখন আল্লাহর যিকির করতে থাকে তখন সে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি উদাসীন থাকে সে ধীরে ধীরে আল্লাহ থেকে দূরে সরে যায় এবং আল্লাহ তাকে অপছন্দ করতে থাকেন।

    -----------------বাকি অংশ নিচে............

    Comment


    • #3
      অবশিষ্ট অংশ----------

      ৫০. যিকিরের মতো আল্লাহর নেয়ামত আকর্ষণকারী এবং আল্লাহর আযাব দূরকারী আর কোনো জিনিস নেই।
      ৫১. যিকিরকারীর উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় এবং ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করে। আর এটাই হল পূর্ণ সফলতা ও কামিয়াবি।
      ৫২. যে ব্যক্তি দুনিয়াতে থেকেই জান্নাতের বাগানে বিচরণ করতে চায় সে যেন যিকিরের মজলিসে শামিল হয়। কারণ এই মজলিস হল জান্নাতের বাগান।
      ৫৩. যিকিরের মজলিস হল ফেরেশতাদের মজলিস। কারণ একমাত্র যিকিরের মজলিসেই ফেরেশতারা শামিল হয়ে থাকেন।
      ৫৪. আল্লাহ তাআলা যিকিরকারীদের নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করেন।
      ৫৫. যে ব্যক্তি যিকিরে অভ্যস্ত সে হাসতে হাসতে জান্নাতে যাবে।
      ৫৬. যাবতীয় আমলের মূল উদ্দেশ্য হল আল্লাহর যিকির ও স্মরণ।
      ৫৭. সমস্ত আমলের মধ্যে সেই আমল সর্বোত্তম, যাতে বেশি বেশি যিকির করা হয়। সুতরাং সর্বোত্তম রোযাদার ঐ ব্যক্তি, যে রোযার হালতে বেশি বেশি যিকির করে। সর্বোওম হাজী ঐ ব্যক্তি, যে হজ্ব আদায়কালে বেশি বেশি যিকির করে। তেমনি সর্বোত্তম মুজাহিদ ঐ ব্যক্তি, যে জিহাদের হালতে বেশি বেশি আল্লাহকে স্বরণ করে। অন্যান্য আমলের অবস্থাও হবে একই রকম।
      ৫৮. আল্লাহর যিকির সকল নফল ইবাদতের স্থলাভিষিক্ত, তা দৈহিক হোক বা আর্থিক।
      ৫৯. যিকিরের মাধ্যমে অন্যান্য ইবাদত সহজ হয়ে যায়। কারণ যে বেশি বেশি যিকির করে সে আল্লাহর ইবাদতে লয্যত অনুভব করে ফলে তার ক্লান্তি ও অবসাদ থাকে না। পক্ষান্তরে যে আল্লাহর যিকির থেকে গাফিল থাকে সে কোনো ইবাদতে লয্যত পায় না। ফলে ইবাদত তার জন্য কষ্ট ও ক্লান্তির বিষয়ে পরিণত হয়।
      ৬০. যিকিরের দ্বারা কঠিন কাজ সহজ হয় এবং বিপদাপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সুতরাং আল্লাহর যিকির এমন এক নেয়ামত, যা সকল মুশকিলকে আসান করে দেয়।
      ৬১. যিকিরের কারণে ভয়ভীতি দূর হয় এবং প্রশান্তি লাভ হয়। এমনকি ভয়ভীতির অবস্থাগুলোও যাকিরের জন্য প্রশান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়ে পরিণত হয়। পক্ষান্তরে যে যিকির থেকে গাফিল থাকে সে সর্বদা ভীতিগ্রস্ত থাকে। এমনকি শান্তি ও নিরাপত্তার উপায় ও উপকরণও তার জন্য ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
      ৬২. যিকিরের দ্বারা মানুষ এক বিশেষ শক্তি লাভ করে, যার দ্বারা অতি কঠিন কাজও তার জন্য সহজ হয়ে যায়।
      ৬২. আখিরাতের জন্য যারা কাজ করে তারা সবাই যেন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত । আর তাদের মধ্যে যিকিরকারীই হল অগ্রগামী। তবে ময়দান যেহেতু ধুলার ঝড়ে আচ্ছন্ন তাই এখনই তা দৃষ্টিগোচর হচেছ না। যেদিন এই ধুলার পর্দা সরে যাবে সেদিন সবাই পরিষ্কার দেখতে পাবে যে, যাকিরীনের জামাত সবার আগে লক্ষ্যে পৌঁছেছে।
      ৬৩. যিকিরকারী আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সত্যবাদিতার সনদ লাভ করে, কারণ যে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং আল্লাহর গুণাবলি বর্ণনা করে সে তার কথায় সত্য এবং আল্লাহ তাকে সত্যবাদী বলেন। আর আল্লাহ যাকে সত্যবাদী বলেন তার হাশর মিথ্যাবাদীদের সাথে হতেই পারে না।
      ৬৪. যিকিরের দ্বারা জান্নাতে ঘর তৈরি হয়। বান্দা যখন যিকির করে ফেরেশতারা জান্নাতে তার জন্য ঘর তৈরি করেন আর যখন যিকির বন্ধ করে তখন ফেরেশতারাও তাদের কাজ বন্ধ রাখেন।
      ৬৫. যিকির হল জাহান্নাম ও আল্লাহর বান্দার মাঝে দেয়াল স্বরূপ। বদআমলের কারণে মানুষ যখন জাহান্নামের পথে চলতে থাকে তখন যিকির তার সামনে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায়। কাজেই যিকির যত বেশি হবে প্রাচীর তত মজবুত ও নিশ্ছিদ্র হবে।
      ৬৬. ফেরেশতারা যেমন তাওবাকারীর জন্য ইস্তিগফার করেন তেমনি যিকিরকারীর জন্যও আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করেন।
      ৬৭. যে ভূখন্ডে আল্লাহর যিকির করা হয় তা অন্যান্য ভূখন্ডের সাথে গর্ব করে থাকে।
      ৬৮. বেশি বেশি যিকির করা মোনাফেকী হতে নিরাপদ থাকার উপায়। কারণ মুনাফেকরা আল্লাহ তাআলাকে খুব অল্প স্মরণ করে।
      ৬৯. যিকিরের মাঝে এক বিশেষ স্বাদ রয়েছে, যা অন্য কোনো আমলে পাওয়া যায় না। এই স্বাদ ও লযযত ছাড়া অন্য কিছুই যদি যিকিরের দ্বারা পাওয়া না যেত তবুও তা তার জন্য যথেষ্ট হত। এই কারণে যিকিরের মজলিসকে জান্নাতের বাগান বলা হয়।
      ৭০. যিকির চেহারায় সজিবতা দান করে। আর আখেরাতে নূর ও আলো দান করবে। এ কারণে দুনিয়াতে আল্লাহর যিকিরকারীর চেহারা থাকে সবচেয়ে সজীব আর আখিরাতে তা হবে সবচেয়ে নূরানী ও আলেকিত।
      ৭১. যে ব্যক্তি ঘরে-বাইরে সব জায়গায় বেশি বেশি যিকির করে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্যদানকারী হবে অনেক বেশি। কারণ এসকল ভূখন্ড, বৃক্ষলতা, ঘরবাড়ি, সব তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে।
      ৭২. যবান যতক্ষণ যিকিরে মশগুল থাকবে ততক্ষণ মিথ্যা, গীবত, বেহুদা কথাবার্তা থেকে নিরাপদ থাকবে। কারণ যবান তো চুপ থাকে না, হয় আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকবে, নতুবা বেহুদা কথাবার্তায় লিপ্ত থাকবে। দিলের অবস্থাও অনুরূপ। দিল যদি আল্লাহর মহববতে মশগুল না হয় তাহলে মাখলুকের মহববতে মশগুল হবে।
      ৭৩. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য দুশমন। সব সময় তাকে আতঙ্কিত করে রাখে এবং চতুর্দিক থেকে তাকে ঘেরাও করে রাখে। এর থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল আল্লাহর যিকির। যে যত যিকির করবে সে তত বেশি শয়তানের হামলা থেকে নিরাপদ থাকবে।
      এই জাতীয় অনেক ফায়দা ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. তার কিতাবে বিভিন্ন পরিচ্ছেদে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বেশি বেশি যিকির করার তাওফীক দান করুন এবং আমাদের অন্তরকে আলোকিত করে দিন। যিকিরের দ্বারা আমাদের জীবন যেন সুন্দর হয় এবং আমরা যেন দুনিয়া ও আখিরাতে এর বরকত লাভ করি।

      Comment


      • #4
        আল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার।
        ভাই এই লিখাটা আবার সামনে আসা দরকার।খুব সুন্দর আলোচনা। মাশা আল্লাহ।
        জাযাকাল্লাহ। ভাই। শুকরান।

        মডারেটর ভাইদেরকে আহবান করছি। লেখাটি সামনে নিয়ে আসার জন্য। ইনশাআল্লাহ।
        জাযাকাল্লাহ।

        Comment

        Working...
        X