শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেছেনঃ মানুষের তৈরি গাড়ি, মানুষের তৈরি পোশাক ব্যবহার করতে পারলে। মানুষের তৈরি আইন মানতে সমস্যা কোথায়?
.
.
#উত্তরঃ
শায়খ আনওয়ার আল আওলাকি (রহ) বলেন, “বর্তমানে মুসলমানদের উপর এমন সব শাসক চেপে বসে আছে যাদের পক্ষে এত বড় মুসলিম অধ্যুষিত ভূখন্ড দূরে থাকুক, এক পাল ভেড়া চড়ানোর সামর্থও এরা রাখে না।“
।
১৬ কোটি মুসলমানের উপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা শেখ হাসিনা সম্প্রতি এমন এক মন্তব্যের অবতারণা করেছেন যা ধৃষ্টতা, অজ্ঞতা ও মূর্খতার সকল সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এই মন্তব্যের ফলে, বাংলার জমিনের সর্বনিকৃষ্ট, ফিরাউনতূল্য শাসক হিসেবে সে নিজেকে প্রমাণিত করেছে...
সুরা মায়েদার, ৪৪ নং আয়াতে আল্লাহ্ আরও বলেনঃ
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
“...যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।”
.
সে আল্লাহ্* তা’আলার সাথে গুণাবলী মানুষকে দিয়েছে। আল্লাহ্* তা’আলা বলেন...
وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا
“..তিনি নিজ হুকুম ও বিধানের কর্তৃত্বে কাউকে শরীক করেন না।” সুরা কাহফ, ২৬
তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পাদ্রী ও ধর্ম-যাজকদেরকে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে এবং মারিয়ামের পুত্র মসীহকেও, অথচ তাদের প্রতি শুধু এই আদেশ করা হয়েছিল যে তারা শুধু এক মা’বুদের ইবাদত করবে যিনি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি তাদের অংশীদারিত্ব স্থির করা হতে পবিত্র। [সূরা তাওবা: ৩১]
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে, যা আপনার প্রতি অবর্তীণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে তার উপর তারা ঈমান এনেছে, ইহা সত্ত্বেও তারা তাগূতের কাছে বিচার প্রার্থনার ইচ্ছা পোষণ করছে। অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল যাতে তারা তকে অস্বীকার করে। পক্ষান্তরে শয়তান ইচ্ছা করছে তাদেরকে পরিপূর্ণ পথভ্রষ্ট করে ফেলতে। [সূরা-নিসা, আয়াত:৬০]
মুসলমানদের ঐক্যমতে, আল্লাহ্* তা’আলা প্রণীত শারিয়াহ ব্যতিরেকে বিচারকারী ব্যক্তি তাগুত এবং তার আনুগত্যকারী কাফির।
নিশ্চয়ই শয়তানরা তাদের বন্ধুদের নিকট ওহী প্রেরণ করে, যাতে তারা তোমাদের সাথে বিতর্ক করে। আর যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, নিশ্চিত তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে। [সূরা আনআম: ১২১]
ইবনে কাসীর (রহঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন :
وقوله تعالى: ﴿وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ﴾ أي حيث عدلتم عن أمر الله لكم وشرعه إِلَى قول غيره ، فقدمتم ذلك، فهذا هو الشرك
আল্লাহর তায়ালার বাণী - “যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে”
অর্থাৎ তোমরা যদি আল্লাহর আদেশ ও শরীয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে অন্য কারো কথার দিকে দৃষ্টি দাও এবং সেটিকেই প্রাধান্য দাও তাহলে সেটি হবে শিরক। [তাফসীরে ইবনে কাছীর, খন্ড:৩, পৃষ্ঠা:৩২৯]
অথচ, এই জালিম মহিলা বলছে কি না মানুষের তৈরি পোশাক পরতে পারলে মানুষের তৈরি আইন মানাতেও সমস্যা থাকার কথা না। নাউজুবিল্লাহ। সুস্পষ্ট কুফরে আপতিত হতে সরাসরি আহ্বান জানাতে দ্বিধা জানাচ্ছে না এই তাগুত মহিলা ! কি নিদারুণ ধৃষ্টতা!!
ইমাম তবারী (রহঃ) তাগূতের সংজ্ঞা দিয়েছেন এইভাবে:
والصواب من القول عندي في"الطاغوت"، أنه كل ذي طغيان على الله، فعبد من دونه، إما بقهر منه لمن عبده، وإما بطاعة ممن عبده له، وإنسانا كان ذلك المعبود، أو شيطانا، أو وثنا، أو صنما، أو كائنا ما كان من شيء.
আমার মতে তাগূতের সঠিক সংজ্ঞা হলো: সেই হলো তাগূত যে আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য হয়। ফলে আল্লাহ তায়ালাকে ব্যতিরেকে তারই উপাসনা করা হয়, হয়তো তার পক্ষ থেকে উপাসনাকারীকে বাধ্য করার কারণে অথবা উপাসনাকারীর তার প্রতি আনুগত্য থাকার কারণে। সেই উপাস্য হতে পারে মানুষ অথবা শয়তান, মূর্তি অথবা ভিন্ন কোন পূজনীয় বস্তু বা অন্য যে কোন বস্তু। [তাফসীরে তবারী, খন্ড:৩, পৃষ্ঠা:২১]
।
।
এই মূর্খ মহিলার যুক্তি মানতে গেলে তো যে মুচি আমার জুতা সেলাই করে দেয় তার নিঃশর্ত আনুগত্য করাও কর্তব্য। যে বাবুর্চি রান্না করে দেয় তার আনুগত্য করাও কর্তব্য।
এই মূর্খ মহিলার কাছে পাল্টা প্রশ্ন থাকবে...
কাপড় তৈরি মূল উপাদান সূতা প্রস্তুত কিভাবে সম্ভব হতো যদি আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা রেশম, তুত সৃষ্টি না করতেন?
গাড়ি তৈরির কোনো উপাদানই তৈরি করা সম্ভব আল্লাহ্* তা’আলা সৃষ্ট তামা, লোহা এবং অন্যান্য ধাতুর সাহায্য না নিয়ে?
মানুষের পক্ষে শুধুমাত্র বস্তুর রূপান্তর সম্ভব। পুরো দুনিয়া একত্রিত হলেও, আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সৃষ্ট বস্তুর সাহায্য ব্যতিরেকে শূন্য থেকে একটা চিনির দানাও সৃষ্টি করা সম্ভবপর হবে না।
মূলতঃ চক্ষুষ্মানদের নিকট এই মূর্খ মহিলার যুক্তির আলোকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ্* তা’আলার আইন না মানা হবে চূড়ান্ত ধৃষ্টতা, অকৃতজ্ঞতা ও অসততা...
“সৃষ্টি যার বিধান তার।“
সুরা কাহফের, ২৬ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহুওয়াতা’আলা বলেছেন-
وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا
“..তিনি নিজ হুকুম ও বিধানের কর্তৃত্বে কাউকে শরীক করেন না।”
বাংলার ফিরাউন শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্ন রইলো,
কার হুকুমে এই বিশ্ব জগতের সৃষ্টি আর হুকুমেই বা এর ধ্বংস?
কার হুকুমে চলে চাঁদ, সূর্য আর সমস্ত অজানা নক্ষত্র?
কার হুকুমে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাত করে?
কার হুকুমে উত্তাল সাগর ফুঁসে উঠে আর কার হুকুমেই বা তা ঠান্ডা হয়?
কার হুকুমে বৃষ্টির সুসংবাদ বহন করে নিয়ে আসা কালো মেঘের বুক ফেটে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়?
কার হুকুমে দুটি সাগরের পানি এক হয়ে মিশে যায়না?
কার হুকুমে জীবিত হয় মৃত আর মৃত হয় জীবিত?
.
.
যদি নিজেকে রব দাবি করতে চাও তাহলে এগুলোর কোন একটা করে দেখাও, পারলে সূর্য কে পশ্চিম থেকে উঠাও, পারলে নিজের মৃত পূর্ব পুরুষ কে মাটির নিচ থেকে জীবিত করে নিয়ে এসো, পারলে সাগরের সমস্ত প্রানী কে একবেলা ভর পেট খাবার খাওয়াও....
.
এগুলোর কোনটাই যদি তোমার হুকুমে না হয় এবং সবই যদি আল্লাহ্*র হুকুমে হয়, এবং আল্লাহ্* তা’আলা যা অতি সহজেই করে থাকেন তার কোনোটিই যদি তোমার সাধ্যের বাইরে হয়ে থাকে, তাহলে.....
.
আরেকবার তোমার নিজের মন গড়া হুকুমে, তোমার নিজের মন গড়া বিধান দিয়ে আল্লাহর রাজত্বে আল্লাহর বান্দাদের উপর জুলুম করার আগে তোমাকে মনে করিয়ে দিতে চাই....
.
তোমার, আমার এবং সৃষ্টি জগতের মালিক সুরা ইউসুফের, ৪০ নং আয়াতে বলেছেন –
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
“... আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না।”
.
ইবন কাসীর (রহ.) তার আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাবে চেঙ্গিস খান এবং তাতারীদের আল ইয়াসেক কিতাব সম্পর্কে লিখেছেন-
“অতএব কেউ যদি খাতুমুন নাবিয়্যিন মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ (সা.) এর উপর নাযিলকৃত শারীয়াহ ছেড়ে, পূর্বে নাযিলকৃত অন্য কোন শারীয়াহ দ্বারা বিচার করে ও শাসনকার্য চালায়, যা রহিত হয়ে গেছে, তবে সে কাফের হয়ে গেছে। তবে (চিন্তা করুন) সেই ব্যক্তির অবস্থা কি রূপ যে ইয়াসেকের ভিত্তিতে শাসন করে এবং একে ইসলামী শারীয়াহ’র উপর স্থান দেয়? এরকম যেই করবে সে মুসলিমদের ইজমা অনুযায়ী কাফের।”
[দেখুন আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ত্রয়োদশ খন্ড, পৃঃ ১১৮-১১৯]
আমাদের সামনে উলামাগনের ইজমা আছে, আমাদের সামনে এই ইজমার ব্যাপারে ইবনে হাযাম (রহ.)’র সাক্ষ্য আছে্ শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ (রহ.) এবং ইবন কাসির (রহ.)’র সাক্ষ্য আছে
– আর এর বাইরে কি আছে?
অর্থাৎ উলামাগনের ইজমা আছে, এবং ইজমা থাকার ব্যাপারে মহান উলামাগনের সাক্ষ্য আছে, তাহলে কিসে তোমাদের এ ব্যাপারে সত্য বলা থেকে বাধা দিচ্ছে?
কিসে তোমাদের বাধা দিচ্ছে? তোমাদের বাধা দিচ্ছে গোমরাহি, বিচ্যুতি, ইরজা, আর আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ নিয়ে খেল তামাশা।
.
.
আর তোমরা যারা আল্লাহ্*র দাসদের মধ্য থেকে কাউকে তোমাদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছো, তোমরা শুনে নাও...
“যেসব লোক আল্লাহ্* তায়ালার বদলে অন্য কাউকে নিজেদের অভিভাবক হিসাবে গ্রহন করে, তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে মাকড়সার ঘরের মত, সে ঘর বানায়, আর দুনিয়ার দুর্বলতম ঘর হচ্ছে এই মাকড়সার ঘর। কত ভালো হত যদি তারা এই সত্যটুকু বুঝতে পারতো।“
(সুরা আনকাবুত, ৪১)
.
.
.
পরিশেষে, সত্য প্রকাশিত হয়েছে। দ্বিধাগ্রস্ত থাকবে শুধুমাত্র বিক্রীত ও বিকৃতরাই। পুরো দুনিয়ার নিকট আজ স্পষ্ট, শেখ হাসিনা নিজেকে ফিরাউনের ন্যায় নিজেকে অহংকারী করে তুলেছে...
.
এবং, প্রতিটি ফিরাউনের জন্যই রয়েছে একজন মুসা (আ)...
প্রতিটি আবু জাহিলের জন্য রয়েছে একজন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)...
প্রতিটি বুশের জন্য রয়েছে একজন উসামা (রাহিমাহুল্লাহ)...
নিশ্চয়ই হাসিনার জন্যও রয়েছে তেমন কেউ... বি’ইজনিল্লাহ...
.
ইয়া আল্লাহ্*! আপনি সাক্ষী থাকুন... আমি পৌঁছে দিয়েছি।
-
facebook Page - জংগীর সাথে কথোপকথন
https://www.facebookcorewwwi.onion/P...vePeaceAChance
.
.
#উত্তরঃ
শায়খ আনওয়ার আল আওলাকি (রহ) বলেন, “বর্তমানে মুসলমানদের উপর এমন সব শাসক চেপে বসে আছে যাদের পক্ষে এত বড় মুসলিম অধ্যুষিত ভূখন্ড দূরে থাকুক, এক পাল ভেড়া চড়ানোর সামর্থও এরা রাখে না।“
।
১৬ কোটি মুসলমানের উপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা শেখ হাসিনা সম্প্রতি এমন এক মন্তব্যের অবতারণা করেছেন যা ধৃষ্টতা, অজ্ঞতা ও মূর্খতার সকল সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এই মন্তব্যের ফলে, বাংলার জমিনের সর্বনিকৃষ্ট, ফিরাউনতূল্য শাসক হিসেবে সে নিজেকে প্রমাণিত করেছে...
সুরা মায়েদার, ৪৪ নং আয়াতে আল্লাহ্ আরও বলেনঃ
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ
“...যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।”
.
সে আল্লাহ্* তা’আলার সাথে গুণাবলী মানুষকে দিয়েছে। আল্লাহ্* তা’আলা বলেন...
وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا
“..তিনি নিজ হুকুম ও বিধানের কর্তৃত্বে কাউকে শরীক করেন না।” সুরা কাহফ, ২৬
তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পাদ্রী ও ধর্ম-যাজকদেরকে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে এবং মারিয়ামের পুত্র মসীহকেও, অথচ তাদের প্রতি শুধু এই আদেশ করা হয়েছিল যে তারা শুধু এক মা’বুদের ইবাদত করবে যিনি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি তাদের অংশীদারিত্ব স্থির করা হতে পবিত্র। [সূরা তাওবা: ৩১]
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা দাবী করে যে, যা আপনার প্রতি অবর্তীণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে তার উপর তারা ঈমান এনেছে, ইহা সত্ত্বেও তারা তাগূতের কাছে বিচার প্রার্থনার ইচ্ছা পোষণ করছে। অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল যাতে তারা তকে অস্বীকার করে। পক্ষান্তরে শয়তান ইচ্ছা করছে তাদেরকে পরিপূর্ণ পথভ্রষ্ট করে ফেলতে। [সূরা-নিসা, আয়াত:৬০]
মুসলমানদের ঐক্যমতে, আল্লাহ্* তা’আলা প্রণীত শারিয়াহ ব্যতিরেকে বিচারকারী ব্যক্তি তাগুত এবং তার আনুগত্যকারী কাফির।
নিশ্চয়ই শয়তানরা তাদের বন্ধুদের নিকট ওহী প্রেরণ করে, যাতে তারা তোমাদের সাথে বিতর্ক করে। আর যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, নিশ্চিত তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে। [সূরা আনআম: ১২১]
ইবনে কাসীর (রহঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন :
وقوله تعالى: ﴿وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ﴾ أي حيث عدلتم عن أمر الله لكم وشرعه إِلَى قول غيره ، فقدمتم ذلك، فهذا هو الشرك
আল্লাহর তায়ালার বাণী - “যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে”
অর্থাৎ তোমরা যদি আল্লাহর আদেশ ও শরীয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে অন্য কারো কথার দিকে দৃষ্টি দাও এবং সেটিকেই প্রাধান্য দাও তাহলে সেটি হবে শিরক। [তাফসীরে ইবনে কাছীর, খন্ড:৩, পৃষ্ঠা:৩২৯]
অথচ, এই জালিম মহিলা বলছে কি না মানুষের তৈরি পোশাক পরতে পারলে মানুষের তৈরি আইন মানাতেও সমস্যা থাকার কথা না। নাউজুবিল্লাহ। সুস্পষ্ট কুফরে আপতিত হতে সরাসরি আহ্বান জানাতে দ্বিধা জানাচ্ছে না এই তাগুত মহিলা ! কি নিদারুণ ধৃষ্টতা!!
ইমাম তবারী (রহঃ) তাগূতের সংজ্ঞা দিয়েছেন এইভাবে:
والصواب من القول عندي في"الطاغوت"، أنه كل ذي طغيان على الله، فعبد من دونه، إما بقهر منه لمن عبده، وإما بطاعة ممن عبده له، وإنسانا كان ذلك المعبود، أو شيطانا، أو وثنا، أو صنما، أو كائنا ما كان من شيء.
আমার মতে তাগূতের সঠিক সংজ্ঞা হলো: সেই হলো তাগূত যে আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য হয়। ফলে আল্লাহ তায়ালাকে ব্যতিরেকে তারই উপাসনা করা হয়, হয়তো তার পক্ষ থেকে উপাসনাকারীকে বাধ্য করার কারণে অথবা উপাসনাকারীর তার প্রতি আনুগত্য থাকার কারণে। সেই উপাস্য হতে পারে মানুষ অথবা শয়তান, মূর্তি অথবা ভিন্ন কোন পূজনীয় বস্তু বা অন্য যে কোন বস্তু। [তাফসীরে তবারী, খন্ড:৩, পৃষ্ঠা:২১]
।
।
এই মূর্খ মহিলার যুক্তি মানতে গেলে তো যে মুচি আমার জুতা সেলাই করে দেয় তার নিঃশর্ত আনুগত্য করাও কর্তব্য। যে বাবুর্চি রান্না করে দেয় তার আনুগত্য করাও কর্তব্য।
এই মূর্খ মহিলার কাছে পাল্টা প্রশ্ন থাকবে...
কাপড় তৈরি মূল উপাদান সূতা প্রস্তুত কিভাবে সম্ভব হতো যদি আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা রেশম, তুত সৃষ্টি না করতেন?
গাড়ি তৈরির কোনো উপাদানই তৈরি করা সম্ভব আল্লাহ্* তা’আলা সৃষ্ট তামা, লোহা এবং অন্যান্য ধাতুর সাহায্য না নিয়ে?
মানুষের পক্ষে শুধুমাত্র বস্তুর রূপান্তর সম্ভব। পুরো দুনিয়া একত্রিত হলেও, আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সৃষ্ট বস্তুর সাহায্য ব্যতিরেকে শূন্য থেকে একটা চিনির দানাও সৃষ্টি করা সম্ভবপর হবে না।
মূলতঃ চক্ষুষ্মানদের নিকট এই মূর্খ মহিলার যুক্তির আলোকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ্* তা’আলার আইন না মানা হবে চূড়ান্ত ধৃষ্টতা, অকৃতজ্ঞতা ও অসততা...
“সৃষ্টি যার বিধান তার।“
সুরা কাহফের, ২৬ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহুওয়াতা’আলা বলেছেন-
وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا
“..তিনি নিজ হুকুম ও বিধানের কর্তৃত্বে কাউকে শরীক করেন না।”
বাংলার ফিরাউন শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্ন রইলো,
কার হুকুমে এই বিশ্ব জগতের সৃষ্টি আর হুকুমেই বা এর ধ্বংস?
কার হুকুমে চলে চাঁদ, সূর্য আর সমস্ত অজানা নক্ষত্র?
কার হুকুমে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাত করে?
কার হুকুমে উত্তাল সাগর ফুঁসে উঠে আর কার হুকুমেই বা তা ঠান্ডা হয়?
কার হুকুমে বৃষ্টির সুসংবাদ বহন করে নিয়ে আসা কালো মেঘের বুক ফেটে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়?
কার হুকুমে দুটি সাগরের পানি এক হয়ে মিশে যায়না?
কার হুকুমে জীবিত হয় মৃত আর মৃত হয় জীবিত?
.
.
যদি নিজেকে রব দাবি করতে চাও তাহলে এগুলোর কোন একটা করে দেখাও, পারলে সূর্য কে পশ্চিম থেকে উঠাও, পারলে নিজের মৃত পূর্ব পুরুষ কে মাটির নিচ থেকে জীবিত করে নিয়ে এসো, পারলে সাগরের সমস্ত প্রানী কে একবেলা ভর পেট খাবার খাওয়াও....
.
এগুলোর কোনটাই যদি তোমার হুকুমে না হয় এবং সবই যদি আল্লাহ্*র হুকুমে হয়, এবং আল্লাহ্* তা’আলা যা অতি সহজেই করে থাকেন তার কোনোটিই যদি তোমার সাধ্যের বাইরে হয়ে থাকে, তাহলে.....
.
আরেকবার তোমার নিজের মন গড়া হুকুমে, তোমার নিজের মন গড়া বিধান দিয়ে আল্লাহর রাজত্বে আল্লাহর বান্দাদের উপর জুলুম করার আগে তোমাকে মনে করিয়ে দিতে চাই....
.
তোমার, আমার এবং সৃষ্টি জগতের মালিক সুরা ইউসুফের, ৪০ নং আয়াতে বলেছেন –
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
“... আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না।”
.
ইবন কাসীর (রহ.) তার আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাবে চেঙ্গিস খান এবং তাতারীদের আল ইয়াসেক কিতাব সম্পর্কে লিখেছেন-
“অতএব কেউ যদি খাতুমুন নাবিয়্যিন মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ (সা.) এর উপর নাযিলকৃত শারীয়াহ ছেড়ে, পূর্বে নাযিলকৃত অন্য কোন শারীয়াহ দ্বারা বিচার করে ও শাসনকার্য চালায়, যা রহিত হয়ে গেছে, তবে সে কাফের হয়ে গেছে। তবে (চিন্তা করুন) সেই ব্যক্তির অবস্থা কি রূপ যে ইয়াসেকের ভিত্তিতে শাসন করে এবং একে ইসলামী শারীয়াহ’র উপর স্থান দেয়? এরকম যেই করবে সে মুসলিমদের ইজমা অনুযায়ী কাফের।”
[দেখুন আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ত্রয়োদশ খন্ড, পৃঃ ১১৮-১১৯]
আমাদের সামনে উলামাগনের ইজমা আছে, আমাদের সামনে এই ইজমার ব্যাপারে ইবনে হাযাম (রহ.)’র সাক্ষ্য আছে্ শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ (রহ.) এবং ইবন কাসির (রহ.)’র সাক্ষ্য আছে
– আর এর বাইরে কি আছে?
অর্থাৎ উলামাগনের ইজমা আছে, এবং ইজমা থাকার ব্যাপারে মহান উলামাগনের সাক্ষ্য আছে, তাহলে কিসে তোমাদের এ ব্যাপারে সত্য বলা থেকে বাধা দিচ্ছে?
কিসে তোমাদের বাধা দিচ্ছে? তোমাদের বাধা দিচ্ছে গোমরাহি, বিচ্যুতি, ইরজা, আর আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ নিয়ে খেল তামাশা।
.
.
আর তোমরা যারা আল্লাহ্*র দাসদের মধ্য থেকে কাউকে তোমাদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছো, তোমরা শুনে নাও...
“যেসব লোক আল্লাহ্* তায়ালার বদলে অন্য কাউকে নিজেদের অভিভাবক হিসাবে গ্রহন করে, তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে মাকড়সার ঘরের মত, সে ঘর বানায়, আর দুনিয়ার দুর্বলতম ঘর হচ্ছে এই মাকড়সার ঘর। কত ভালো হত যদি তারা এই সত্যটুকু বুঝতে পারতো।“
(সুরা আনকাবুত, ৪১)
.
.
.
পরিশেষে, সত্য প্রকাশিত হয়েছে। দ্বিধাগ্রস্ত থাকবে শুধুমাত্র বিক্রীত ও বিকৃতরাই। পুরো দুনিয়ার নিকট আজ স্পষ্ট, শেখ হাসিনা নিজেকে ফিরাউনের ন্যায় নিজেকে অহংকারী করে তুলেছে...
.
এবং, প্রতিটি ফিরাউনের জন্যই রয়েছে একজন মুসা (আ)...
প্রতিটি আবু জাহিলের জন্য রয়েছে একজন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)...
প্রতিটি বুশের জন্য রয়েছে একজন উসামা (রাহিমাহুল্লাহ)...
নিশ্চয়ই হাসিনার জন্যও রয়েছে তেমন কেউ... বি’ইজনিল্লাহ...
.
ইয়া আল্লাহ্*! আপনি সাক্ষী থাকুন... আমি পৌঁছে দিয়েছি।
-
facebook Page - জংগীর সাথে কথোপকথন
https://www.facebookcorewwwi.onion/P...vePeaceAChance
Comment